ছাদের কার্ণিশে কাক - ১২

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি
লিখেছেন আনোয়ার সাদাত শিমুল (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৫/২০০৭ - ৩:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বেলা:
কেমন আছেন? কি করছেন?
ভীষণ স্যরি। অনেকদিন আপনাকে মেইল চেক করিনি।
আসলে মেইল চেক করার দরকার হয় নি।
অফিসের মেইলগুলো অফিসের লোটাসে চেক করি।
আর অফিস থেকে একটা মোবাইল ফোন দিয়েছে, ওটা দিয়ে বন্ধুদের সাথে প্রায়ই কথা হয় অনেকক্ষণ!
এর মাঝে ঈদ পার হয়ে গেল।
কী করলেন ঈদে?
মেইলবক্সে দেখছি - আপনার পাঠানো ঈদ কার্ড পড়ে আছে।
খুলতেই সংশয় লাগছে।
আপনি নিয়মিত মেইল করছেন, আর আমি রিপ্লাই করছি অনিয়মিত।
আগের এক মেইলের প্রেক্ষিতে বলি - আপনাকে বেলা বোস বানানোর সাহস নেই। সবার সব সাহস থাকে না, থাকা উচিতও না।
এই তো বেশ ভালোই আছি, নিজের গন্ডির মাঝে, দিন কেটে যাচ্ছে।
কী বলেন?
- সরণ
------------------------------------------

বেলা:
সপ্তাহ দুয়েক পার হলো আপনার কোন খবর নেই।
আপনার মেইলের আশায় প্রতিদিন মেইল চেক করি।
মেইল আসে না।
জাংক মেইল বক্সেও ভালো করে নজর দিই।
ওখানেও নেই।
আপনি কী খুব ব্যস্ত?
নাকি আমার উপর রাগ করলেন?
অসামাজিক মানুষের উপর রাগ করতে হয় নাকি?
হা হা হা।
আমার অফিস চলছে ঠিকমতো।
ব্যাড লাক। আমাকে পার্মানেন্ট করেনি। আমার ব্যাচের চারজন হয়েছে।
ওদের ভালো লিংক ছিল। এটা ওপেন সিক্রেট।
আই হেট দিস কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড।
আমার এক ফ্রেন্ড ব্যাংকে জব করে।
সকাল নয়টা থেকে রাত নয়টা অফিস করে।
ওখানেও নেপোটিজম।
আরো কিছু নোংরা ব্যাপার আছে, আপনার সাথে পরে অন্য সময় শেয়ার করবো।
এবার রাগ অভিমান শেষ করে উঠুন।
কী-বোর্ডে গটাগট আঙুল চালিয়ে লিখে ফেলুন দিন যাপনের গল্প।
একটা জোকস বলে আজ শেষ করি, সর্দারজী সিরিজের
"সর্দারজী লাইব্রেরীতে বই ফেরত দিয়ে গিয়ে ভীষণ মন খারাপ করে ম্যানেজারকে বললো
- ম্যানেজার সাহেব, এই সপ্তায় ভালো একটা বই দেন। গত সপ্তায় কী একটা বই দিলেন, পড়ে কোন মজা পেলাম না। খালি অনেকগুলো মানুষের নাম আর পাশে কতগুলো নাম্বার। কোন কাহিনী নেই, ডায়ালগ নেই। বোরিং - - -।
ম্যানেজার বিরক্ত হয়ে বলে - ধুর মিয়া, আপনিই তাহলে আমার ফোনবুকটা নিয়েছিলেন! পুরা সপ্তাহ আমি ফোনবুক খুঁজে অস্থির হয়ে গেলাম।"

খুব জমলো না মনে হয়, কী বলেন?
হা হা হা।

- সরণ
---------------------------------------

হ্যালো:
আপনার মেইল পড়ে আমি হাসতে হাসতে খুন। আমি এখন ভার্সিটির ল্যাব থেকে মেইল করছি। আমার হাসি দেখে পাশ থেকে সবাই আমাক দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাচ্ছে। হি হি হি। সর্দারজীর জোকসগুলো আসলেই ফানি। একবার চেইন মেইলে এরকম অনেকগুলো পেয়েছিলাম। একটা ছিল এরকম -
"সর্দারজীর ছেলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণা করছে - হে ঈশ্বর, তুমি লন্ডনকে আমেরিকার রাজধানী বানিয়ে দিও, প্লিজ, বানিয়ে দিও।
সর্দারজী শুনে জিজ্ঞেস করে - এই গাধা, লন্ডন কেন আমেরিকার রাজধানী হবে?
ছেলে বলে - বাবা, আমি আজ পরীক্ষার খাতায় ওটাই লিখে এসেছি। এখন ঈশ্বর ছাড়া উপায় নাই।"
নাহ, আমারটা তেমন মজার না, আপনারটা জোশ ছিল।
ঈদে তেমন কিছু করিনি। কয়েক সপ্তাহ পর কোরবানীর ঈদ। আচ্ছা আপনি কী ঈদ ঢাকায় করেন? নাকি দেশে যান? স্রেফ জানার ইচ্ছে, অন্য কিছু না।
আপনার মেইলে জোকস পড়ে একটা কথা মনে পড়লো। সাপ্তাহিক যায়যায়দিনের শেষে দিনের পর দিন কলাম থাকে, শফিক রেহমান লিখতো। ওখানে মঈণ-মিলা ফোনে রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতো। মঈণ প্রায়ই শেষে জোকস বলতো। খুব ফানি ছিল। যায়যায়দিনের বিশেষ সংখ্যাগুলোয় বাজে বাজে গল্প ছাপায়। আমার ছোট ভাই, ক্লাস সেভেনে পড়ে, ও দেখি খুব আগ্রহ নিয়ে যায়যায়দিনের বিশেষ সংখ্যা পড়ে। আম্মু তাই বাসায় যায়যায়দিন রাখা বন্ধ করে দিয়েছে।
আমার এই সেমিস্টারের কোর্সগুলো কঠিন। খুব চাপ যাচ্ছে। আপনি রিপ্লাই করলে তবেই মেইল করবো। নয়তো, এরকম চুপ হয়ে থাকবো, রিপ্লাই করবো না।
থ্রেট দিলাম এবার!
লোল!
গুড বাই
< বেলা >
--------------------------------------------

বেলা:
ভীষণ ভয় পেলাম।
আমি রিপ্লাই না করলে আপনি আর লিখবেন না?
সর্বনাশ।
এই যে আজই রিপ্লাই করছি।
ধমকে কাজ হয়েছে। হা হা হা।
আপনার মেইল পেয়ে অভ্যাস হয়ে গেছে।
মেইল বক্স চেক করতে বসলে মনে আশা থাকে আপনার মেইল পাবো।
আশাটা নষ্ট করতে চাইছি না।
নাহ! মঈণের মতো জোকসও বলতে পারবো না।
শফিক রেহমানের মতো রোমান্টিক মন আমার নেই।
অনেস্টলি স্পীকিং, লোকটাকে আমার কাছে ক্লাউন ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না।
আর যায়যায়দিনের বিশেষ সংখ্যাগুলো নাকি আগামী শতকে বাংলাদেশের সমাজ বিজ্ঞানীদের নিরীক্ষার বিষয় হবে। ওখান থেকে মানুষ জানবে - একুশ শতকে বাংলাদেশের মানুষের জীবন কেমন ছিল। হা হা হা। এ কথাটা কিন্তু আমার না, শফিক রেহমান বিশেষ সম্পাদকীয় লিখে ওটা বলেছিল।

কিন্তু ইদানিং একটা কথা খুব মনে হয়।
বুদ্ধদেব গুহের 'সবিনয় নিবেদন' পড়েছেন?
ওখানে এরকম - বন বিভাগে চাকরী করা রাজর্ষি বসুর সাথে ঋতু রায়ের হঠাৎ দেখা হয় এক ঝলক। তারপর চিঠির মাধ্যমে জানা শোনা। অনেকগুলো চমৎকার চমৎকার চিঠি লিখে শেষে দেখা হয়। বইয়ের শেষ অংশটা দূর্দান্ত। অসাধারণ শৈল্পিক বর্ণনা আছে। আপনি পড়েছেন?
ইদানিং আপনাকে ঋতু রায় আর নিজেকে রাজর্ষি বসু ভাবতে শুরু করেছি। হা হা হা।
শুভকামনা,
- সরণ

(চলবে...)


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

ভাল লাগল হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।