অদ্য অতি প্রত্যুষে আকস্মিকভাবে মিহিকন্ঠের সম্মিলিত সঙ্গীত শুনিলাম:
খাইরুন লো, তোর লম্বা মাথার কেশ/ বাঁকা চোখের হাসি দিয়া/ পাগল করলি দেশ...ইত্যাদি।
কাঁচাঘুম ভাঙিয়া যাওয়ায় মেজাজ খিঁচিয়া গেলো। একে ১২-১৪ ঘন্টার গাধার খাটুনি, তাহার উপর ভোর না হইতেই এই উৎপাত। চোখ ডলিয়া বালিশের পাশ হইতে চশমাখানা লইয়া বাতি জ্বালাইয়া দেখি, একি! আমার শয়ন খাটের নিকট কম্পিউটার টেবিলখানার ওপর রাখা ‘শাহীন আখতারের শ্রেষ্ঠ গল্প’ বইখানার খয়েরী মলাটের ওপর ঢাউস আকৃতির লাল পেটের তিনখানা নধরকান্দী উকুন নাঁচিয়া-কুদিয়া গান ধরিয়াছে!
মনে মনে কহিলাম, আ মলো! কলিকাল বুঝি আর বাকি নাই। দিনে দিনে কতো কী দেখিতে হইবে?
মুখে কহিলাম, রে রাশব, পাণ্ডব কাহিকা! শাখামৃগ কোথাকার! এইক্ষণে বল, তোরা কারা? তোদের নাম, সাং, পরিচয়ই বা কী? অন্যথায় মরটিন, নয়তো হারপিক দিয়া তোদের একেবারে ঝাড়ে-বংশে শেষ করিবো।
ওমা, উকুনত্রয় দেখি পাল্টা তাড়িয়া আসে। পারিলে এই মুহূর্তে মাথায় চড়িয়া বসে। আর একেক জনে একেকখানা বিগ-বাইট বসায়।...
তাহারা পাল্টা মুখ ভেংচাইয়া কহিলো, তবে রে শালা সাংবাদিক! গভীর রাত্রি অবধি আকন্ঠ মদ গিলিয়াছিস বুঝি? আর এই বুঝি তোর দিক-দর্শন? তুই না সচলের প্রোফাইলে গালভরা বাণী লিখিয়াছিস, আমি ভালবাসি ঘাস, ফুল, পাহাড়। আমি অহিংস। আমার টোটেম গৌতম বুদ্ধ--ইত্যাদি সব মুখরোচক চাপাবাজি। আর তুই শালা আমাদের মারিবি?
এতক্ষণে আমার মনে পড়িলো, অনেকটা ওই রকম কথাই খেরোখাতায় লিখিয়াছি বটে। আমি অতিশয় লজ্জিত হইলাম। তড়িৎ গতিতে ব্র্যান্ডির খালি পাইটের বোতলখানা বক্স-খাটের ড্রয়ারে চালান করিয়া দিলাম।
সুর বদলাইয়া বলিলাম, হে মহান অতিথিগণ। আসুন, বসুন; চা-নাশতা খাইতে আজ্ঞা হউক।
উকুনদের রাগ কিন্তু তখনো কমে নাই। তাহারা একই রকম চড়া ও তীক্ষè গলায় কহিল, আরে রাখ শালা তোর চা-নাশতা। আমরা উহার নিকুচি করি। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। চট-জলদি আমাদের জন্য মনুষ্য রক্তের ব্যবস্থা কর!
আমি টেবিলের ওপর হইতে কলমদানি ঝাড়িয়া একখানা সেফটিপিন লইয়া বৃদ্ধাঙ্গুলি হইতে এক ফোঁটা রক্ত উহাদের উদ্দেশ্যে বিসর্জন দিলাম। আঙুলখানা মুখে পুড়িয়া ভাবিলাম, ইহাতে আবার না ইনফেকশন দেখা দেয়! কিন্তু কিছুতেই ভাবিয়া উকুনত্রয়ের হদিশ বাহির করিতে পারিলাম না। ইহারা কী মমতাজ বেগমের গানের নায়িকা খাইরুনের লম্বা মাথার কেশ হইতে নামিয়া আসিয়াছে? না কী লাভ-লাউস নামের কম্পিউটার ভাইরাস?
এদিকে ধেড়ে উকুনত্রয় নাচিয়া-কুঁদিয়া রক্তের ফোঁটা চুষিয়া খাইতে খাইতে শ্লোগান ধরিলো, দিয়াছি তো রক্ত/ আরো দেবো রক্ত/ রক্তের বন্যায়/ ভেসে যাবে অন্যায়...
উত্তেজনা প্রশমিত হইলে উকুনেরা কহিলো, উহু, তুই যা ভাবিতেছিস, মোটেই তাহা নয়। আমাদের সাং খাইরুনের মাথায়ও নয়, কম্পিউটারের অন্তর্জালও নয়। আমরা আসিয়াছি...
এইটুকু শুনিয়াই আমার গায়ে কাঁটা দিয়া উঠিলো। ইহারা অন্তরজামি না কী! মনের কথাও পড়িতে পারে দেখিতেছি!
উকুনেরা কহিলো, এইবার ঠিক ধরিয়াছিস। আমরা তিনজন হইলাম মহাকবি। ওই যে ফরহাদ মজাহার মহাশয় ফরমান ফলাইছেন না: নবির যুগ শেষ; এখন হইতেছে কবির যুগ। আর জানিস তো, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ! আমাদের হইয়াছে সেই দশা। তো আমরা দিবারাত্রি কবি-সঙ্গ করি। ফিটার লীলেন নাুীয় যে সচল কবি আছেন, আমরা উহার দাড়িতে বসবাস করি। তাহারই রক্ত-মাংসে আমরা লালিত। এই করিতে করিতে আমরা এখন উহার মতোই কবিতা কপচাই। সকাল-বিকাল বাংলা ব্লগও কপচাইবো ভাবিতেছি। তুই তো আবার এই সবের মর্যাদা বুঝিবি না।...
উহাদের জ্ঞান-গড়িমা, প্রতিভা, ভাবসাব এবং সর্বশেষ দাদাগিরি দেখিয়া আমার ভিমড়ি খাইবার দশা। বুঝিলাম, ফিটার লীলেনের জীন-প্রাপ্ত উকুন তিনখানার পাল্লায় এইবার জীবন বুঝি যায়। মনে পড়িলো, গতকাল্য রাত্রে লীলেন বাবুর সহিত মোবাইল ফোনে চ্যাট করিয়াছি বটে। তিনি কোনো ফাঁকে ভালবাসিয়া না জানি কী কৌশলে তাহার পোষ্য কাব্য তথা ব্লগ প্রতিভাধর উকুনদের মোবাইল ফোনে পাচার করিয়া দিয়াছেন, কে জানে!
সব মিলিয়া আমি এই রকম আধহাতি জিহ্বা বাহির করিয়া হিক্কার দিয়া বলিলাম, অ্যাঁ!
জবাবে তাহারা আবারো নৃত্য করিয়া তিন-মাত্রার ছন্দে সমস্বরে কহিয়া উঠিলো, ঞঁ!!!
মন্তব্য
সেরম মজা পাইলাম...ফিটার লীলেন, বস্তিবাসী লীলেন, ফেইসওয়াস লীলেন এর আরেক নাম যুক্ত হইলো উকুন লীলেন...
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
লীলেন ভাই সহজ সরল মানুষ (!)
তাকে নিয়ে এতো টানাটানি মানি না, মানবো না।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
- তবে কি তাঁকে ছেড়ে তাঁর পাতলুন নিয়ে...!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঞঁ!!!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
ভদ্রলোকের দিন আর নাই! ফিটার লীলেনের মত মানুষদের এখন চরম দুর্দিন।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
=)) উকুন!!! অনেক মজা লাগলো।
লীলেন ভাইয়া তার PET মোবাইল ফোনে পাচার করে দিল হাহাহাহাহা,
লীলেন ভাই কই?
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
মজা পেলাম। সচল পরিবারকে নিয়ে বেশ কয়েকটি লেখা পড়লাম এই দু'দিনে
দুর্দিনে বন্ধন গাঢ হয়, এটাই আবার প্রমানিত হল।
--------------------------------------
অর্থ নয়, কীর্তি নয় ,স্বচ্ছলতা নয়-
আরো এক বিপন্ন বিস্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভেতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
বেচারী লীলেন ভাইয়া... শেষ মেশ উকুন গুলোকে ও পাচার করে দিতে হল!!
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই,
দুইকে আমি এক করি না এক কে করি দুই৷
কী আর করি
অভাবের দিন উকুন বেচেই খেতে হয়
তবে বিপ্লব রহমানের কপাল ভালো কারণ উকুনগুলো ছিল সিভিল পোশাকের উকুন
তাই এক ফোঁটা রক্ত খেয়েই চলে এসছে
না হলে কিন্তু অতক্ষণে নিউজ হয়ে যেত ত্যাদড় বিপ্লব ক্রস ফায়ারে....
উকুনেরও জাত রহিয়াছে বুঝি?
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
ঞঁ!!!
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
আরিব্বাস্ ! লীলেন ভাই'র এত মাজেজা!?
--------------------------------
সচল আছি, থাকবো সচল!!
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
উকুনগুলো আসলে কেন লীলেন মশাইকে ছেড়ে বিপ্লব রহমানের কাছেই গেলো? সেই রহস্যের একখানা কিনারা দরকার। বিপ্লব রহমানের গোফের লোভে কি?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- এইটা নিয়া ব্লগে একটা গোয়েন্দা গল্পো নিয়া ঝাকানাকা আইলেও আইতে পারে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কেনো সাঁকো নাড়া দিতেছেন ভ্রাতা?
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
- খাইরুন লো আমার পেয়ারে সঙ। হাসান দাদা সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে আমারে গিফট করছিলেন। আপনে এইটারে, আমার পেয়ারের সঙরে উঁকুন দিয়া গাওয়াইলেন, তাও লহুচোষা উঁকুন।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সত্বর আপনার মোবাইল ফোন নং দিন তো হের ধূ. গো. । দেখি এসএমএস-কী চ্যাটিং-এ ওই সঙ্গীত+কাব্য+ব্লগ প্রতিভাধর উকুনত্রয় কে লীলেন বাবুর কাছ হইতে আপনাকে খনিক সময়ের জন্য পাচার/ধার দিতে পারি কী না (এইবার বুঝিবেন, হাউ মেনি প্যাডি ব্রিংস, হাউ মেনি রাইস)!...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
- উঁকুন পালার মতো ধকল আগার সইবে না দাদা। মোফিল নাম্বারেও তাইল কুলাবে না। বরং কোনো ললনা পাঠানোর নিমিত্ত হৈলে আমার সকল নাম্বারই আপনাকে প্রদান করিতে পারি।
একটা জিনিষ বুঝতাছি না, গানটা মিলাইতে পারতেছিনা অনেকক্ষণ ধইরা।
খায়রুন লো তোর লম্বা মাথার চুল,
চিড়ল দাঁতের হাসি দিয়া পাগল করলি দ্যাশ।
- কই, মিলেনাতো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ললনার খবর কহিতে পারি না। বোধকরি এই বিষয়ে মেয়ে ২দি পাওয়ার ইনফিনিটি, ওরফে পরিবর্তনশীল আপনাকে উদ্ধার করিতে পারে। তাহার আবার ভাব-ভালবাসার, ললনা-ছলনার অভাব নাই শুনিতে পাই।
...কী যে কহেন না মহাশয়, ছন্দ মিলিবে কী উপায়? আগে ফিটার লীলেনের মতো দাড়ি রাখুন, সকাল-বিকাল কবিতা ও বাংলা ব্লগ লিখুন, দাড়ি ছাড়াই ০০১, ০০২...০০৭ মাত্রার মন্তব্য লেখা মকশ করুন, দাড়িতে উকুনের ফার্ম গড়িয়া তুলুন, তবেই না...ওই ইয়ে আর কী!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
কী ব্লগার? ডরাইলা?
ফিটার লীলেনের যে সকল কর্মকান্ডের কথা শোনা যায়, সেই তুলনায় পঁচানোর পরিমাণ অনেক কম হয়ে গেলো না?
বিপ্লব ভাই কি নিজের আখিরাতের কথা ভেবে ইচ্ছে করে ছাড় দিলেন নাকি?
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
তাইলে এই হইলো ঘটনা।
(কৃতজ্ঞতাঃ দ্য গ্রেট বদ্দা )
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
অ্যাঁ!
(কৃতজ্ঞতা: হের সুমন চৌধুরী)
---
সবাইকে ধন্যবাদ। নিবেদন ইতি--
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
"লীলেনীয় যুগ" সেই যে শুরু হইসে এখনো দেখি থামবার কোন নাম নাই।
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
বিপ্লব দা, স্বপ্নায়তন লিখেন ভাল কথা। কিন্তু যে কোন আয়তন কিংবা ক্ষেত্রফলের মধ্যে আমার স্বপ্নারে নিয়া যখন তখন টানাটানি করাটা কিন্তু বেশিদিন সহ্য করতে পারবোনা। একটু খিয়াল কইরা...
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
নতুন মন্তব্য করুন