প্রথম পর্ব.
...........................
পাতার হাটে পাতা নাই—ছাতা আছে। এই ছাতা মাথায় দিলে বৈকুণ্ঠে যাওয়া যায়।
--বৈকুণ্ঠ কি রে?
--জানি না, গান্ধিবাবু জানে।
ঝম ঝম করে বৃষ্টি নেমেছে। সোতা খাল দিয়ে এম এল পাতার হাট নদীর ঘাটে এসে থেমেছে। থৈ থৈ নদী। প্রাণ উড়ে যাওয়ার দশা। মুহাম্মদ শালুক চানের এদিকে কোনো খেয়াল নেই। পাড় ভেঙে পড়ছে। একটু বেচাইন হলেই পা পিছলে আলুর দম। সলিল সমাধি।
--সলিল সমাধি কি রে?
--গান্ধিবাব ...
আমার একটা বাগান ছিল। আদর্শ ভেষজ বাগান। দামুদর নদের পাড়ে। তখন শিবকালী ভট্টাচর্যের শিষ্য ছিলাম। গুটি গুটি ঘুরে বেড়াতাম বনে জঙ্গলে। শুপারি বাগান থেকে খুঁজে আনতাম পিপ্পল। গন্ধ ভাদুল। কখনোবা গুনরী শাক। আহা, টাকি মাছ দিয়ে কী স্বাদ।
বাগেরহাটে আরেকটা লতা পাওয়া যায়। বলে--চই ঝাল।পাঠার মাংসে অতুলনীয়। কচি কাঁঠালকে কি বলে জানেন?-...-গাছপাঠা। এঁচোড়ও বলা হয়।
সর্প ...
তপন রায়চৌধুরীকে নিয়ে খুব বিপদে পড়ে গেছি। ভদ্রলোক বুড়ো মানুষ। ছাব্বিশ সালে জন্ম। এখনো বেশ রসে-বসে আছেন। পৃথিবীর তাবত বড়সড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসাইটে প্রফেসর। শ্বেতাঙ্গদেশে দিন কাটিয়েছেন। এখন শেষ বয়সে এসে পুরো ভীমরতিতে হাবুডুবু খাচ্ছেন। ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।
আপনার যারা বরিশালকে চেনেন তারা জানেন অধুনা ঝালকাঠি জেলাটির নদীর নাম সুগন্ধা। সড়কপথে একটু এগুলেই বাঁদিকে একটি পথ ঢু ...
............................................
প্রথম পর্ব--
............................................
কেউ রোদ কুড়ায়। কেউ ছায়া কুড়ায়। মাঝে মাঝে পাতা। কোন পাতা? আমপাতা জামপাতা-- বেনে বউ রূপকথা।। হি হি হি। জলকথা মলকথা। পদতল চুপকথা।। এরপর আকাশ। এরপর বাতাস। এরপর ধরনী, দ্বিধা হও গো মা জননী।এ প্রাণ রাখি কেমনে!
এইখানে এসে সুতো ফুরিয়ে গেছে। সুঁইটা চোখের সামনে ধরলে ফুটোর মধ্য দিয়ে দেখা গেল—বেলা বিলের মাঝখানে উঠে পড়েছে। দরিয়াবানু পাতিলের মধ্ ...
কেউ রোদ কুড়ায়। কেউ ছায়া কুড়ায়। মাঝে মাঝে পাতা। কোন পাতা? আমপাতা জামপাতা-- বেনে বউ রূপকথা।। হি হি হি। জলকথা মলকথা। পদতল চুপকথা।। এরপর আকাশ। এরপর বাতাস। এরপর ধরনী, দ্বিধা হও গো মা জননী।এ প্রাণ রাখি কেমনে!
এইখানে এসে সুতো ফুরিয়ে গেছে। সুঁইটা চোখের সামনে ধরলে ফুটোর মধ্য দিয়ে দেখা গেল—বেলা বিলের মাঝখানে উঠে পড়েছে। দরিয়াবানু পাতিলের মধ্যে হাত দিয়ে বলল, ভাইগো, দুটো খুদ কুড়ো ফুটাই।
ততক ...
লোচনদাস কারিগর আমার খালেস দোস্ত। তার একখানা খেরোখাতা দেখার সুযোগ হয়েছে। নানাবিধ বিষয়ে তার নিজস্ব রচনা আছে। একটি তুলে দিলাম। ইহা রস রচনা নয়---কষ রচনা জাতীয়। পড়ে দেখতে পারেন। আমেন।
টককথা--
যারা টক শো করে তাদের দেখছি রমরমা অবস্থা। তাদের রমের অভাব নেই। ( অন্য উচ্চারণ রাম)। লাল, নীল, গোলাপী, হলুদ—রঙ-রসে টৈটম্বুর। আর একজন নয়—একাধিক রমাদে...
মহাভারত আমার প্রিয় গ্রন্থ। বাল্য যখন এক ঘরে আমাদের জায়গা হত না, আমার তখন স্থান হত আমার জ্যেষ্ঠ ঠাকুরমা আর ঠাকুরদার মাঝে। জ্যেষ্ঠ্ ঠাকুরদাকে বললাম—বড় দাদু। আর জ্যেষ্ঠ ঠাকুরমা—বড়দিদি। এই বড়দাদু ছিলেন পুরো দস্তুর কৃষক। প্রথম স্ত্রী মারা গেলে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন মোল্লাকান্দি। এই বড়দিদি ছিলেন কালো। নিঃসন্তান। তিনি জলের মেয়ে। থৈ থৈ কা...
১.
সমুদ্র নেকড়ে এক সময় আমাকে হরণ করেছিল। তখন তো আমার কৈশোর। স্কুল থেকে তখন সোজা চলে যাই নজরুল পাবলিক লাইব্রেরীতে। সাদা একতলা ভবনটি। শালগাছ লম্বা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর আমাদের মধুমতি নদীটিও এর মধ্যে বুড়ো হয়ে যাচ্ছে। দূর থেকে দেখা যায় কয়েকজন জেলপুলিশ শিকে মাথা রেখে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। চরে ফুট-তরমুজ হচ্ছে। দলদস্যুগুলো অন্যকোথাও পাড়ি দিচ্ছে।
গ্রন্থাগারিক ময়েন স্যার ছিলেন আমার স্ক...
কখনো লেখা হয় নি। লিখে কি লাভ? লেখা হলে প্রকাশের তাড়া থাকে। মাথার মধ্যে একটা যন্ত্রণা কাজ করে। আমার লেখক বন্ধুদের দেখেছি লেখা প্রকাশের জন্য কী দৌড়ঝাপ। লেখা মেইল করছে। সম্পাদকের কাছে ঘোরাঘুরি করছে। প্রেসে ছুটোছুটি করছে। বাপের পকেট মারছে। দোকানে দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞাপনের জন্য। ভয়ংকর দশা।
আমি একবার এক উঠতি সাহিত্য সম্পাদকের কাছে গেলাম। তিনি হাসি হাসি মুখে কথা বললেন। বলল...
আমার বাবা যেদিন মারা গেল সেদিনই আগুনের বিভূতি টের পেলাম। আমাদের চোখের সামনে বাবা একটু একটু আগুনে ভস্মিভূত হচ্ছে। আর আমাদের চোখ থেকে জল ঝরছে। তবু ধরে আছি অগ্নি শলাকা। ঘুরে ঘুরে বাবার মুখে ছুঁইয়ে দিচ্ছি। বলছি-- হে অগ্নি, আমার বাবাকে গ্রহণ কর। একটা জীবনের পাপ নাও। পূণ্য নাও। ভাল নাও। মন্দ নাও। পঞ্চভূতে মিলিয়ে দাও আমার বাবাকে। এই অগ্নিস্নানের মধ্য দিয়ে আমরাও পূনর্জাত হই।
এই তো আগু...