অচলপত্র প্রসঙ্গে যৎকিঞ্চিৎ-১

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন দিগন্ত চৌধুরী [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৮/০১/২০১৫ - ৮:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‍''বড়োদের পড়বার, ছোটদের দুধ গরম করবার একমাত্র মাসিক" এমন ঘোষণাকে শিরে বসিয়ে যে পত্রিকার প্রথম সংখ্যার প্রকাশ, তা অভিনব হবে না, এমনটা কোনও বেরসিকও চল্লিশের দশকের শেষে মনে হয় ভাবতে পারতো না(এখন পারবে অবশ্য, অনায়াসে)। সেই পত্রিকার নাম, অচলপত্র। সম্পাদক, দীপ্তেন্দ্রকুমার সান্যাল। প্রথম প্রকাশ আটচল্লিশ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ওই অভিনব ঘোষণাতেই শেষ নয়। নিচে আরো বিবৃত : "অচলপত্র নিয়মিত বেরুবার কোন প্রতিশ্রুতি আমরা দিতে পারি না। অচলপত্র-এর জন্য কোন কার্টুন, গল্প বা কবিতা আমরা আমন্ত্রণ করি না। বাইরে থেকে আমরা যা চাই তা শুধু বিজ্ঞাপন। অচলপত্র নিছক ব্যঙ্গ বা হাসির পত্রিকা নয়। এর সঙ্গে যথেষ্ট চিন্তার খোরাকও আছে। সে চিন্তা হল কি করে যথেষ্ট বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়। অচলপত্র আপনি যত কম ছাপা হচ্ছে ভাবছেন তা নয়; শুধু তাই নয়---আপনি ভাবছেন, অন্য আর পাঁচজনের মত আমরাও বাড়িয়ে বলছি; তাও সত্যি নয়। আসলে আপনারা যা ভাবছেন তার চেয়েও অনেক কম ছাপা হচ্ছে।"

একালের ন্যাকাচণ্ডী পাঠক কী বলবেন এই বর্ণনা পড়ে? স্টান্টবাজি? নাকি নির্লজ্জতা? আসলে ওই দুই অভ্যাস একালের বাঙালি ন্যাকাচণ্ডীরা এমনভাবে রপ্ত করেছেন যে সর্বত্রই, উহু উহু, সর্বত্র নয়, মানে যেখানে ন্যায়সঙ্গত চপেটাঘাত থাকে, সেখানেই ওই দুই জিনিসকে বসিয়ে নিজের গালে লেপ্টে থাকা চড়ের দাগ মোছার চেষ্টা করতে নিদারুণ উদ্‌গ্রীব হয়ে পড়েন। অচলপত্র তো শুরুটাই করেছিল চপেটাঘাত দিয়ে। তবে নিছক সারহীন অ্যানার্কি তার আরাধ্য নয়, বিদ্রূপের বাণই বরং তার প্রিয়তম। এবং সেই বিদ্রূপও, শৈল্পিক, মোক্ষমও। দীপ্তেন্দ্রকুমার সান্যাল বা দী-কু-সা নিছক নেমপ্লেটধারী সম্পাদক হতে চাননি, হয়েছিলেন নিখুঁত নিশানাভেদী তীরন্দাজ। আর তাঁর লক্ষ্যবস্তু ছিল অবশ্যই বাঙালির তাবৎ ভণ্ডামি।

নাকউঁচু সমালোচকদের দিকটাও অবশ্য ভাবতে ছাড়েননি, তবে প্রশ্রয়দানে নয়, পচানোর বেলাতে। সমালোচকরা অচলপত্রকে বলছিলেন ছেলেমানুষী। দীপ্তেন্দ্রকুমার মুহূর্তেই বাণ ছুঁড়লেন : "মজে, ধ্বসে, ও বুজে যাওয়া প্রাচীনদের কাছে আমরা যেন চিরকালই ছেলেমানুষই থাকি আর অচলপত্র যেন প্রাণ-রসবঞ্চিত এই রামগরুড়ের ছানাদের দেশে অতি সিরিয়াসদের কাছে চিরদিনই অচল থাকে। " অচলপত্র সবসময়ই সচল ছিল তার জীবদ্দশায়, এইরকম ব্যঙ্গের হুল অহর্নিশি ফোটানোয়। প্রচ্ছদেও তাই এক হৃষ্টপুষ্ট কণ্টকধারী ক্যাকটাসের ছবি।

এ তো গেল সম্পাদকীয়-র কথা অল্পস্বল্প। অচলপত্র-র নিয়মিত বিভাগগুলোর দিকে নজর দিলেও নজরে পড়বে এর ব্যঙ্গের ধার ও ভারের ছাপ। যেমন, পাঠকদের চিঠিপত্রের ও সম্পাদকের উত্তরের বিভাগের নাম দেওয়া হয়েছিল "চিঠি পত্তরের জঞ্জাল" । সেখান থেকে কিছু প্রশ্নোত্তর পড়লেই বোঝা যাবে, অচলপত্রের বিদ্রূপের দুর্দান্ত তীক্ষ্ণতার বিষয়টি :

১। বাংলা ছবিতে কি আর্ট নেই, বলতে চান?
-হ্যাঁ আছে, যদি আর্ট মানে হয় কলা। আর্টের নামে এইভাবে কলা দেখানো বাংলা ছবি ছাড়া আর কোথায় সম্ভব, বলুন?

২। পৃথিবীর সভ্য-অসভ্য সমস্ত দেশের মানুষকেই খেতে হয় এমন কোনো খাবারের নাম জানেন?
-আজ্ঞে হ্যাঁ জানি। ধোঁকা!

৩। আপনার অচলপত্র পড়ে আমার হাসি পায়নি!
-আপনার তো হাসি পায়নি! তবু রক্ষে। অনেকের আবার হাসি শুকিয়ে এসেছে অচলপত্র পড়ে। অচলপত্র হাসির কাগজ নয়। চার্লি চ্যাপলিনের ছবিকে যে গাধা হাসির ছবি বলে, অচলপত্র পড়ে তারাই হাসবার চেষ্টা করে।

৪। পৃথিবীর মধ্যে কোথাকার পাগলাগারদ সবচেয়ে বড়?
- পৃথিবীর বৃহত্তম বাতুলালয়ের নামটি খুবই ছোট : U.N.O.

৫। animals without backbone : বইখানা পড়েছ?
-না। নাম শুনে মনে হচ্ছে বাঙালী জাতের ওপর লেখা কোন বই, তাই না?

৬। এ যুগে সাহিত্যিক হতে হলে কি একখানি হাতই যথেষ্ট?
-না, কিছু হাতানোও দরকার।

বলা বাহুল্য, দীপ্তেন্দ্রকুমার স্বয়ং এই বিভাগে আসা চিঠিগুলোর উত্তর লিখতেন। একইভাবে পত্রিকার আরেকটি বিভাগ তিনি সম্পূর্ণতই নিজেই লিখতেন, তিনটে-ছটা-নটায়, এটি ছিল চলচ্চিত্র সমালোচনার বিভাগ। স্বয়ং সত্যজিৎ রায় থেকে আরম্ভ করে হেন চলচ্চিত্রশিল্পী নেই যে তাঁর বিশ্লেষণী-ব্যাঙ্গের তোপের মুখে পড়েননি। "রবীন্দ্রনাথের নষ্টনীড় নয় সত্যজিতের চারুলতা" লেখাটির কথাই ধরা যাক। নষ্টনীড় গল্পটিকে প্রথমত রবীন্দ্রনাথের ভাল গল্পের কাতারে আনতেই নারাজ দীপ্তেন্দ্র। লিখেছেন :

নষ্টনীড় গল্পের বুনন, প্লট, চরিত্রচিত্রণ কিছু নিয়েই আলোচনা হয়নি। এক বালতি দুধে, ওই এক ফোঁটা চোনা---অমলের প্রতি চারুর প্রচ্ছন্ন অনুরাগ----ওইতেই নষ্টনীড় লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বাংলা গল্পের আদিযুগে রবীন্দ্রনাথ নষ্টনীড় লিখে দুঃসাহস দেখিয়েছেন, কেউ কেউ এই কারণে গল্পটিকে আজও উল্লেখ করেন। সাহিত্যের বিচারে কালের দোহাই পাড়া নাচতে না জানলে উঠোন বেঁকার মতো অগ্রহণীয়। রবীন্দ্রনাথের ঢের আগে শেক্সপীয়ার যা লিখে গেছেন তার বিচার করতে বসে কেউ একথা বলবে না যে হ্যামলেটের ত্রুটি কালোচিত। কোনও লেখাই অমুক কালে লিখিত হয়েছে বলে ক্ষমার্হ, এ যুক্তি মাইনর লেখকদের বেলায় চলে। রবীন্দ্রনাথ বা শেক্সপীয়ার, বিশ্বের দুজন যথার্থ লেখকের ক্ষেত্রে কাল কোনও ফ্যাক্টর নয়। ...রবীন্দ্রনাথের নষ্টনীড় থেকে সত্যজিতের চারুলতা, বন্ধ্যা নারীর গর্ভ থেকে জাত নেকড়ার পুতুল মাত্র। খুব সুন্দর, কিন্তু প্রাণহীন।...(শুধু) দুটি জায়গা আমার ভালো লেগেছে। এক : ভূপতি চারুকে বলছে, তোমার লেখা আমার এত ভালো লাগে কেন জানো, আমি বুঝি না বলে! সত্যজিতের ছবি সম্পর্কে দর্শক ভাবনার এই সিম্বলিক ইনটারপ্রিটেশান চমৎকার। দুই : ছবির শেষে ভূপতি আর চারুর হাতের মধ্যে ব্যবধান-দৃশ্য। নষ্টনীড় এবং চারুলতার মধ্যে, নবজাতকের জন্মস্থান মেটার্নিটি ওয়ার্ড আর গোরস্থানের মধ্যে ব্যবধানের, এই সিম্বল চমৎকার।...সত্যজিৎ তাঁর সাকসেসের সিক্রেট খুঁজে পেয়েছেন সেই দর্জির গল্প থেকে। সেই বুদ্ধিমান দর্জি রাজাকে ল্যাংটো করে দিয়ে বলেছিলো যে রাজার গায়ে পোশাক যে দেখতে পাবে না সে নির্বোধ! চারুলতার সত্যজিৎ নষ্টনীড়ের রবীন্দ্রনাথকে ছবির পর্দায় উলঙ্গ করে ছেড়ে দিয়েছেন। চারুলতা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র একথা যার মনে হবে না সেও একথা বলতে সাহস করবে না। কারণ এ ছবিও যদি প্রাইজ পায়!

এমন ব্যাঙ্গের ধার অনেকেরই হয়তো ভাল লাগবে না। কিন্তু ভাবানোর মতো নয় কি?

[চলবে]

ছবি: 
12/04/2012 - 10:02অপরাহ্ন

মন্তব্য

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

দারুণ তো! আহা যদি অচলপত্র ছুঁয়ে দেখতে পারতাম!

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

একটা নির্বাচিত সংকলন পাওয়া যেত একসময়। এখন আর দেখি না। এছাড়া কলকাতার অনুষ্টুপ পত্রিকা একটি বৃহৎ আকারের বিশেষ সংখ্যাও করেছিল অচলপত্র নিয়ে।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

সজারু এর ছবি

বাহ! পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম! জবর জিনিস ‌তো!

_________________________

সর্বাঙ্গ কন্টকিত-বিধায় চলন বিচিত্র

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

কৃতজ্ঞতা আপনাকে। হ্যাঁ, জবর মানে সত্যিই জবর। তীক্ষ্ণ, চাঁছাছোলা সুন্দর।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তিনি কি আরেকজন সজনীকান্ত?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

তা বলা যাবে না। সজনীকান্তর সাথে তাঁরও বহু বিষয়ে দ্বিমত ছিল। অচলপত্রে একবার এক পাঠক অযৌক্তিক গালাগালি দিয়ে চিঠি পাঠানোয় সেই চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন এই লিখে যে, "আপনি কি সজনীকান্তর রুমমেট?"

সজনীকান্ত আমাদের নিকট যেভাবে কিছু উদ্ভট কাজকর্ম দ্বারা বা এক বিভ্রান্ত পথে চলে ভিলেন হয়েছেন, দীপ্তেন্দ্র সেই সর্পিল অকারণ পথের পথিক হননি , তাঁর মধ্যে শ্লেষ-বিদ্রূপ বেশ লভ্য, কিন্তু যুক্তির বেলায় ছাড় দেন না। একদম সূক্ষ্ণ সুতো ধরে তাঁর অনায়াস চলা। ক্লান্তিহীন, বিরামহীন।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

তারেক অণু এর ছবি

বাহ, পড়ার অপেক্ষায় রইলাম

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- অণু ভাই।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বাহ্, দারুণতো! সচলে অচল(পত্র)এর অপেক্ষায় রইাম। হাসি

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

দ্বিতীয় কিস্তি দ্রুতই পাবেন আশা করছি। ধৈর্য ধরে পড়বার জন্যে আপনাকেও কৃতজ্ঞতা জানাই।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

আয়নামতি এর ছবি

দারুণস্য দারুণ! অচলপত্র বা এর সম্পাদক সম্পর্কে একালের ন্যাকাচণ্ডী এই পাঠক একেবারেই অন্ধকারে ছিল।
ঘোষণার লাইনগুলো নড়েচড়ে বসবার মত; আর নষ্টনীড় নিয়ে সমালোচনা মাথা চুলকে ঘা করে ফেলে।
চিঠিপত্রের জবাব তো রীতিমতই লাজবাব! পরের পর্ব জলদি আসুক।
আপনার লিখবার হাত যে বেশ ভালো তা অল্প এট্টু পড়েই বেশ বুঝেছি হে! আরো বেশি বেশি লিখুন।
শুভকামনা।

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

গদ্যের কড়া হাতুড়ির সার্থক উদাহরণ বটে অচলপত্র। দীপ্তেন্দ্রকুমারের নিজের গদ্যরচনাও তাই।

আশা করি এখন থেকে সচলে নিয়মিত লিখবো। অতিথি একাউন্ট চালু হবার পরও বহুদিন স্বভাবসিদ্ধ অলসতায় লিখছিলাম না। এখন গা ঝেড়ে অবশ্যই লিখতে হবে। আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

এক লহমা এর ছবি

পছন্দ হয়েছে। জলদি জলদি পেরে পর্ব আসবে এই আশায় থাকলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ। আশা করি কাল বা পরশুই।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাহ দারুণ! ননসেন্স ক্লাব আর সাড়ে-বত্রিশ ভাজার কথা মনে করিয়ে দিল।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

অনেকটা। তবে একেকজনের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যও ছিল বলা বাহুল্য।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

মাসুদ সজীব এর ছবি

দারুন লাগলো, পরের পর্বের অপেক্ষায়। সব যুগেই এমন একটা অচলপত্র খুব দরকার।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

দিগন্ত চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ। তবে এমনটা আর হবে নাকি বলা মুশকিল। যুগে যুগে তো আর দীপ্তেন্দ্ররা আসেন না।

_______________

মূর্খ থাকি, সামাজিক নয়।

আবদুর এর ছবি

সব যুগে অচলপত্র দরকার মানলাম # মাসুদ সজীব, কিন্তু এখনকার সচল খারাপ কোথায়? বরং আমি বলতে চাচ্ছি সচলে অচলপত্র ধরণের লেখা চলুক।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

দারুণ, অচলপত্র সচল থাকুক।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।