শেরালী-কুড়ি (আড়ি বন্ধু!)

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: সোম, ২৮/০৭/২০০৮ - ৮:৪৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আড়ি বন্ধু!

শেরালীর মত বেদিশায় বেঘোরে আছে আর একটি মানুষ। তার চার পাশের মানুষগুলো তাকে রুদ্রাক্ষীর মালা দিয়ে সব অপশক্তির হাত থেকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু তার গলার সে রুদ্রাক্ষীর মালা কাঁটা হয়ে তার বন্ধুদের গায়ে হুল ফোঁটাচ্ছে। এমন কথা তাকে যারা রুদ্রাক্ষীর মালাটা গলায় ফাঁসের মত পেঁচিয়ে দিয়েছে তারা কখনো বলবে! ভয়ে ভয়ে বন্ধুরা একটু একটু করে দূরে চলেছে। সে ফাঁকা জায়গাটা আবর্জনার মত জলপাই গাছের অনাকাঙ্খিত অঙ্কুরে ভরে উঠছে! এত দায়ীত্ব সে মানুষটি যে কারণে পেল; সে কারন থেকে তাকে ধীরে ধীরে আড়াল করতে লাগল সে আগাছারা। অনেকে ভুল করে এদের বেড়া বলে!
তো একদিন সে স্বপ্নের মানুষটি তার বন্ধুরা কেমন আছে তা জানতে ব্যাকুল হল। তার চার পাশের ভাগ্যদ্রষ্টারা আকুল হয়ে চুন-সুড়কির মোড়কে লোহার জাল দিয়ে বন্ধুদের হাত থেকে তাঁকে রক্ষা করতে এক সুরক্ষীত দুর্গ গড়ে তুলল। শেরালী সে দুর্গের সুরক্ষনে নিরন্তর জল ঢেলে চলেছে। সে দুর্গে সব আছে শুধু বন্ধুরা নেই। নিরাপদ দূরত্বে স্রোতের উপর বালি ফেলে বন্ধুদের জড়ো করার ব্যবস্থা হল।
তিরিশ লাখ বলির বিনিময়ে, দুলাখ মায়ের সম্ভ্রমে, হাজারো মায়ার অবাঞ্চিত আগমনে যে মুক্তির স্রোত বইয়ে দেয়া হল, সে ঝর্ণার উৎসটি সংরক্ষিত রেখেছিল রাজ্যের মানুষ তাদের এক বন্ধুর কাছে। সে বন্ধুকে তার অভিবাবকরা বলল; তোমার বন্ধুদের কোন কৃতজ্ঞতা নেই! তারা যত পায়, তত চায়।

সে দিন বোয়ালমারী বাজারে মধুলোভী মৌমাছির মত মানুষের চাক। বন্ধু আমাদের আশার বাণী শোনাবে। হয়তো অচিরেই দূর্দিন ঘুচবে। অনেক দুঃখের পর আপন মানুষের দেখা পেলে যেমন হয়; অনেকের চোখে আবেগের জল। সুরক্ষিত দুর্গের চারপাশে অরক্ষিত যৌবনের উদ্বেলীত হুংকার; "জয় বাংলা", যাত্রাপালার দোহারীদের মত আরেক দল বলে উঠছে "জয় বঙ্গবন্ধু"। যারা সত্যিকারের বন্ধু তারা সে শোভাযাত্রার নীরব দর্শক মাত্র!
সে দর্শকদের সামনে রাজ দর্শনের মত বন্ধু দেখা দিলেন। খা খা রোদ্দুরে চশমার ভেতর দিয়ে তিনি একদল লোভী মানুষের উদ্দেশ্য বাণী বর্ষণ করলেন:
"কে বলে এদেশে অভাব! আমি ভারতে ষাট টাকা সের গরুর মাংশ খেয়ে এসেছি"!
ঢিল ছুড়লে মৌচাকের যে অবস্থা হয়! বালির মাঠে আশার আলো নেভা মানুষ গুলো চাক ছাড়া মৌমাছির মত উদভ্রান্ত হয়ে দিগ্বিদিক ছড়িয়ে গেল!
(প্রিয় পাঠক বোয়ালমারী বাজারের এ বালির মাঠটি চিনে রাখার অনুরোধ করব, কারন এখানে আবার আপনাদের আসতে হবে। এটা শেরালীর পানিপথ।)
ক্রমশ...


মন্তব্য

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

"কে বলে এদেশে অভাব! আমি ভারতে ষাট টাকা সের গরুর মাংশ খেয়ে এসেছি"!
তাই আমাদের উনারা শায়েস্তা খাঁর আমলে চলে যেতে ভরসা পান?
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

পুতুল এর ছবি

গুরু এই লেখায় রেকর্ড সংখ্যক মন্তব্য।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।