বিউটি

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৮/২০০৮ - ৬:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিউটি আজকাল আধোঘুম আধোজাগরনে দিবা স্বপ্ন দেখে। লোকে বলে আকাশে চাঁদ উঠলে নরলোকে দেখে। বিউটির ভোরের কুয়াশা কেটে সূর্য্য উঠলো বলে। হোকনা সে রাজা মিয়ার ছোট বৌ, তাতে কী! মানুষের দুই বৌ থাকে না! বড় বৌ বিউটিকে রাজা মিয়ার বাড়ীতে জায়গা না দিলেই বা কী। বাপের ভিটায় আরতো কেউ নেই, যে খোঁচা দিয়ে বলবে; নিলোনা তোকে স্বামী, নিজের ঘরে? মাঝে মাঝে রাজা মিয়া এসে একটু আদর সোহাগ করে গেলেই হয়। আদর সোহাগের কথাটা মনে আসতেই বিউটি একটু রাঙ্গা হয়ে উঠে।
পনের টাকা জোগার করতে পারবে না বলেই বিউটির বিয়ের বাজারে তেমন কদর নেই। থাকার ভেতর আছে কেবল বাপের এই ভিটে বাড়ীটি। বড়জোর ঘর তুলে ঘর জামাই থাকা যাবে বিউটির বাপের ভিটায়। ক্ষয় রোগে বুড়ো জায়গাজমি যে একতোলা ছিল, তা বেচে বেচে খেয়েছে আর বৌকে নিজের রোগের ভাগটুকু দিয়ে মেয়ের সাবালক হওয়ার আগেই জমের হাতে তুলে দিয়েছে। তো বিউটিকে বিয়ে করবে কে!এদিকে বুড়ো এক ঠেং গোড়ে দিয়েও পুরোপুরি বিদেয় নিচ্ছে না। যাওয়ার জন্য দুয়ারে দাড়িয়ে আছে বলে বুড়োকে বিদেয় না দিয়ে বিউটিও নিজের সংসার ধর্মে মন দিতে পারছে না।
রাজা মিয়া ব্যস্ত মানুষ আজ এখানে দরবার থাকে তো কাল সেখানে দাওয়াত। এভাবে করছি করব করে করে বিয়েটা শুধু শুধু পিছিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য বিউটিও চায় মরার আগে বুড়ো বিউটির বিয়েটা দেখে শান্তিতে চোখ বুজুক। বাপ হয়ে মেয়েকে অথই সায়রে ভাসিয়ে কি ভাবে যাবে বুড়ো! বিউটি সেটা বুঝতে পারে। বুঝতে পারেই বলেই রাজা মিয়া যে দশ-পাঁচ টাকা প্রায় প্রতি রাতে রেখে যায় তা দিয়ে বুড়োর জন্য, কলাটা দুধটা কিনে আনে।
বুড়ো এতটুকুই খেতে পারে। আজকাল প্রায় দিন-রাত চোখ বুজে বিছানাতেই পড়ে থাকে। দিন কয়েক আগেও একহাতে লাঠি আর হাতে বিউটিকে ধরে পেসাব-পায়খানা করতে ঘরের বাইরে যেত। আজকাল রক্ত বমিও ঘরেই করে। অনেক সময় বিউটি এসে দেখে গু-মুত আর রক্ত বমিতে ঘর একাকার। শব্দ করে ডাক দিয়ে চিলমচিটাও চাইতে পারে না বুড়ো। বিউটি বিরক্ত হয়। তবুও বাপ বলে কথা। সব পরিস্কার করে, নাকে কাপড় দিয়ে।
আজকাল দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। দুপুরে বুড়ো দুধটুকু খেয়ে চাদর মুড়ি দিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। ঘুমোচ্ছে কি জেগে আছে বোঝা যায় না। হয়তো বিউটির মত দিবা স্বপ্ন দেখছে।
ক্ষয়রোগের ভয়ে বিউটিদের এদিকে এম্নিতেই লোকের তেমন চলাচল নেই। সম-বয়সী সব মেয়েরাও অনেকদিন থেকে স্বামীর সংসারে। বিউটির বাপ তখনো একেবারে ঘর-বইডা হয়নি। লাঠিতে ভর করে এদিক সেদিক এমনকি আড়ং পর্যন্ত চলে যেত। রোশনের দোকানে চা খেয়ে লাঠিতে ভর করে সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরতো।
এমনি এক সন্ধ্যায় বিউটি পাশের পাট ক্ষেতের কিছু কচি পাতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে রাজা মিয়ার মুখোমুখি হয়। প্রথমে একটু ভয় পেয়ে যায়। আজকাল পাট শাকটাও তোলা যায় না! লোকে বলে চুরি। বিউটিদের মত মানুষদেরর তাতেই জঘন্য অপরাধ, ভয়ের কারন সেখানেই। কিন্তু রাজা মিয়া তুখোড় খেলোয়ার, তার নজর শাকের দিকে নয়, কুড়োনীর দিকে। কুড়োনীর পক্ষ নিয়ে তাই বলে; শাক তুলছ, আরো তুলো, কয়দিন বাদে বেবাক শাক পানির তলে এম্নিই পঁচব। বিউটির ভয় ভাঙ্গে। কৃতজ্ঞ চোখে বিউটি মানুষটিকে দেখে। সে দৃষ্টিতে রাজা মিয়ার মধু তৃষ্ণা খাঁ-খাঁ করে উঠে। কতদিন হয় কচি মাল খাওয়া হয় না!
মধুর চাক তালাশ করতে রাজা মিয়া জিগায়; কার মাইয়া তুমি?
জবাব শুনে কয়: তোমার বাপের শইলডা বালা? আহারে কত্ত বালা মানুষ তোমার বাপে! কদমপুর গেরামে যাইতাছি দরবার আছে। ফিরতি পথে তোমার বাপেরে দেইখ্যা যামু। তয় রাইত অইবার পারে। মেলা রাইত। আওয়াজ দিলে দুয়ার খুইল!
সে রাতে কুপি জ্বেলে বিউটি দুয়ার খুলে ছিল। বিউটির বাপ উঠে বসে ছিল। রাজা মিয়া দশ গেরামের বিচার করে কত্ত বড় মানুষ! কৃতজ্ঞতায় বাপ মেয়ে আকুল। রাজা মিয়া বিউটির ফাটা ডালিমের রসের লোভে ব্যাকুল। বিউটির বাপ কোন অবস্থাতেই ভাল মন্দ খাওয়ার জন্য রাজা মিয়ার কুড়ি টাকার নোট রাখতে নারাজ। সংকট উত্তরনে রাজা মিয়ার মাথায় নতুন বুদ্ধি আসে। বিউটিরে বাড়ির ঘাটা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে বলে। বিউটি ঘরের বের হতেই রাজা মিয়া পকেট থেকে আরো দুটি নোট বের করে বিউটির হাতে দেয়। বিউটি নিতে চায় না কিছুতেই। রাজা মিয়া এ প্রত্যাখানের অপেক্ষায়ই ছিল। মওকা পেয়ে জোর করেই বিউটির হাতের তালুতে নোট গুলো চেপে ধরে। রাজা মিয়া বিউটির হাত, কাধ, মাথায় মায়া বিলিয়ে, এবার ডান হাতে বা গালটা একটু টিপে দেয়। চিবুকে ধরে মুখটা উঁচু করে বলে; এত শরমের কি অইল! বিউটি চোরাচোখে রাজ দর্শন করে আবার চোখ নিচু করে। এদিকে বিউটির বুকে ভূমিকম্প শুরু হয়। সব অবহেলার শোধ নিতে, বিউটির শরীর, লাভা নির্গমনের ধ্বংশ লীলায় চঞ্চল হয়ে উঠে। রাজা মিয়া বিউটির এ ভাঙ্গনের সংবাদ পেয়ে গেছে। নিশ্চিন্ত মনে সে এবার বাড়ী যেতে পারে। রাজা মিয়া জানে, তার মধু তৃষ্ণা এবার ঘুচবে।
ছনের ঘরের মাঝখানে দারি দিয়ে রান্নার সামগ্রী আলাদা রাখার ব্যাবস্থা ছিল, বিউটি এখন সেখানে বিছানা পেতে রাজা মিয়ার অপেক্ষায় জেগে থাকে। বাপে আজরাইলের চোখ এড়িয়ে গড়গড় শব্দে বাতাস টানে। সেটা শুনে বিউটি আস্বস্ত থাকে। বাবা ঘুমোচ্ছে। বিউটির নতুন সংসারের প্রস্তুতি বাবার অগোচোরে ঘটাই উত্তম।
কিন্তু এভাবে চোরের মত আর কতদিন চলবে বিউটি, রাজা মিয়ার স্বপ্নের সংসারে! এদিকে ফোটা ফুলের মধু খেতে ধূর্ত শেয়ালের মত মৌচাকে রাজা মিয়ার ঘন ঘন আসা যাওয়ায় সে ফুলে ফল ধরেছে! আর দিন কয়েক গেলে সে ফল লোকের চোখে লুকানো কঠিন হয়ে পড়বে। এ নিয়ে বিউটি বেশ বিব্রত।
রাজা মিয়া জুট-মেইলের শ্রমিক নেতা। শ্রমিকদের পক্ষে আন্দোলন করতে তাকে মালিকের স্বার্থ দেখতে হয়। মিছিল করতে করতে মিলের কাঁচের জানালায় ইট-পাটকেল ছুঁড়ে, শীতের দিনে শ্রমিক অফিসের ফ্যান চালিয়ে দিয়ে হাওয়া খেয়ে মাথা ঠান্ডা করে। শ্রমিকরা গদগদ হয়; মালিক পক্ষ একজন তুখোড় খেলোয়ার পেয়ে ধন্য হয়। রাজা মিয়ার সুপারিশে, হজু মজুরা মিলে চাকরি পায়। রাজা মিয়ার পক্ষে শ্রমিকদের সমর্থন বাড়ে। মাসিক দশ হাজারের জায়গায় রাজা মিয়া এখন পনরো হাজার মাসিক ভাতা পায়, মালিকের পক্ষ থেকে।
মোবারক ছিল রক্তে-মাংশে একটা হারামজাদা। শ্রমিকের পক্ষ ছাড়া আর কিছু বুঝতো না। সে জন্য মোবারককে পরকালে পাঠাতে হল। অবশ্য এতে রাজা মিয়ার তেমন ভূমিকা দারোগা বের করতে পারেনি। মোবারকের বৌকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে মামলার বদলে ছেলেপুলের ভবিষ্যত দেখতে উৎসাহিত করেছে রাজা মিয়াই। রাজা মিয়া তখন সহ-সভাপতি ছিল। সে জন্য মালিক পক্ষ টাকাটা রাজা মিয়ার হাত দিয়েই মোবারকের বৌকে পাঠিয়েছে। মোবারকের বৌ-এর সাথে রাজা মিয়াও চোখে জল এনে বলে; ভাউজ আমি আছি না, এত চিন্তা করেন কেন! মোবারক ভাইয়ের ছেলে মেয়ে আমারো ছেলে মেয়ে। এতদিন এক সাথে কত্ত আন্দোলন করছি। অহন আমি মোবারক ভাইয়ের পরিবার দেহুম না! শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন আমি মোবারক ভাইয়ের কাছেই তো শিখলাম। মোবারক ভাই আমাদের সামনে যে আপোষহীন সংগ্রামের দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন, তা আমরা কোন দিন ভূলতে পারব!
এ ভাবে রাজা মিয়ার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। রাজা মিয়া কিছু অতিরিক্ত দায়ীত্ব পেয়ে বলে; আফনেরা কইলে আর না করি কেইম্তে! না করতে পারে না বলে রাজা মিয়া জাকের পার্টির নেতা। আগামী ইলেকশনে মেম্বারীতে দাড়ানোর গোপন ইচ্ছা। এখন গাঁয়ের লোকে দায়ীত্বটা দিলেই হয়।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে রাজা মিয়া কাশ্মিরী শাল গায়ে জড়িয়ে বিউটির পাঁকা ডালিমের রস খেতে ধীরে ধীরে এগুচ্ছে। বাড়িতে বৌ ভাবছে রাজা মিয়া সমাজের মাথা, রাতবিরাতে মানুষের ভাল মন্দের খবরতো রাখতেই হবে! বিউটি অভিমানে আজ রাজা মিয়ার সাথে কথাই বলবে না বলে মনে মনে ঠিক করে রেখেছে। আজ বিয়ের একটা তারিখ রাজা মিয়ার মুখ থেকে আদায় করে তবে, মধুর হাড়ির ঢাকনা খুলবে। অবশ্য বিউটি এ চেষ্টা এর আগেও অনেক বার করেছে, কিন্তু রাজা মিয়ার ওস্তাদি হাতের মালিশের কারনে, ঝর্ণার মত মধু আপনা থেকেই গড়িয়ে পরে বলে, সে সব পরিকল্পনা টেকেনি। এত কাজের শেষে মানুষটা একটু সুখের আশায় বিউটির কাছে আসে, তাকে ফিরিয়েই বা দেয় কি করে! কিন্তু আজ বিউটি একটা পাঁকা কথা আদায় করেই ছাড়বে।
রাজা মিয়ার এত খ্যাতি! যদি কোন ভাবে বিউটির সাথে তার গোপন সম্পর্কের কথা রাষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সব চুলোয় যাবে! সমাজে মুখ দেখানো কঠিন হবে। চরিত্রহীন লোককে কে ভোট দেবে! এত্ত কৌশলে সে আজ এ পর্যন্ত এসেছে। এখন বিউটির জন্য কূলে এসে তরী ডুবাবে!
বিউটি দরজা খুলে চুপ করে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে। রাজা মিয়া বুঝতে পারে একটা বিহিত করার সময় এসেছে। তার তরিকা মতেই রাজা মিয়া বলে, আইয়ে শুক্কুর বার বাদ জুম্মা বিউটিরে শাদি করে ঘরে তুলবে। বড় বিবির সাথে এনিয়ে অনেক কাইজ্যা হয়েছে। কিন্তু রাজা মিয়া বিউটিকে শাদি করবেই। বিউটি পশ্চিম ভিটির ঘরে থাকবে। সে মতে রাজা মিয়া সব ব্যবস্থা পাঁকা করে এসেছে। রাজা মিয়ার কথায় বিউটির চোখ জলে ভেসে যায়। রাজা মিয়াকে জড়িয়ে ধরে আদর করে বিছানায় বসায়।
রাজা মিয়া বলে; শুক্কুর বার পর্যন্ত থাকতে পারবা না! বিউটি ভাবে লোকটা এত ঝামেলা মাথায় নিয়ে তাকে ঘরে তুলবে, তাকে এতদিন যা দিয়েছে আজ ও তার থেকে বেশী কিছুতো আর দিতে হবে না! নিজের বালিশে রাজা মিয়াকে শুইয়ে দেয়, আদর করে। রাজা মিয়া এবার চামড়ার ছোড়াটি নিয়ে বিউটির উপড় চড়াও হয়। বিউটি পা ফাঁক করে রাজা মিয়াকে ছুড়ি চালনায় সুবিধে করে দেয়। রাজা মিয়া ছুড়ি চালাতে চালাতে ভাবে; মোবারকরে কেবল দুইডা পার মারছি। অহন কয়ডা লাগব কে যানে! পার মারতে মারতে রাজা মিয়া আদর করে দু হাতে বিউটির গলা জড়িয়ে ধরে। বিউটি শুক্কুর বার বাদ জুম্মা লাল শাড়ী পরে রাজা মিয়ার বাড়ির দিকে এগুতে থাকে। বিউটির স্বপ্নে রাজা মিয়ার পশ্চিম ভিটির ঘর পরিষ্কার দেখা যায়। বিউটির বাপ জোরে আরো জোরে আজরাইলের বাধা অমান্য করে ফর ফর করে বাতাস টানে।


মন্তব্য

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

এ ভাবে রাজা মিয়ার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়

রাজা মিয়াদের এভাবেই জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে ।

------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

পুতুল এর ছবি

অনু গল্পের প্রভাবটা নিজের উপর টের পাচ্ছি, সে জন্য রাজা মিয়াদের জনপ্রিয়তার ব্যাচ্ছেদটা জুইত করে করতে পারলাম না। কিন্তু দুঃখ হয় বিউটিদের নিয়ে। এরা খুব সহজেই রাজা মিয়াদের কপ্পরে পড়ে যায়। গল্প নিয়ে কিছু বললে ভাল হতো!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মনজুরাউল এর ছবি

নিজের বালিশে রাজা মিয়াকে শুইয়ে দেয়, আদর করে। রাজা মিয়া এবার চামড়ার ছোড়াটি নিয়ে বিউটির উপড় চড়াও হয়। বিউটি পা ফাঁক করে রাজা মিয়াকে ছুড়ি চালনায় সুবিধে করে দেয়। রাজা মিয়া ছুড়ি চালাতে চালাতে ভাবে; মোবারকরে কেবল দুইডা পার মারছি। অহন কয়ডা লাগব কে যানে! পার মারতে মারতে রাজা মিয়া আদর করে দু হাতে বিউটির গলা জড়িয়ে ধরে।

বুঝতে পারলাম না বিউটি অবহেলার 'বদলা' এ ভাবে কেন নেবে?

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

পুতুল এর ছবি

বিউটির পক্ষ থেকে ঠিক বদলা আমি বোঝাতে চাইনি। অবহেলার কারনে এতটুকুতেই বিউটিরা গদগদ হয়ে রাজা মিয়াদের লালসার ফাদে অতি অল্পে সন্তুষ্ট হয়েই বলি হয়। এতটুকু স্বীকৃতি, এতটুকু ভালবাসার ছিটে ফোটায় বিউটিরা ভেসে যায়। একটু আসার ছিটেফোটায় অনেক বড় স্বপ্ন দেখে। বদলা নেয়ার মত কঠিন মানষিক গঠন এদের তেমন একটা দেখা যায় না। হয়তো ভাল কিছু একটা হবে, এ মোহ এদের থাকে বলেই, খুব একটা প্রতিশোধ স্পৃহা জাগানো কঠিন।
খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

...

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

তবে আমি ভিন্ন একটি প্রসঙ্গ টানতে চাই। আর তা হচ্ছে যে, বিউটিরা পিছলে যাচ্ছে তাদের নির্জীব মুরুব্বীদের কারণে। (বিউটির বাবা সবদিকেই অক্ষম।) বিউটিদের যাবতীয় অভাববোধ যখন প্রকট হয়ে ওঠে তখনই তারা শুকনো পথেই পিছলে পড়ে। আর তখনই সুযোগটা গ্রহন করে রাজামিয়ারা। কিন্তু সমাজের অন্য সুবোধ মিয়ারা কোনো পদক্ষেপই নিতে চাননা যাতে করে বিউটিরা বেপথু না হয়।

এই যে আমাদের সমাজ নামক একটি ফালতু ব্যবস্থা তার সুফল থাকলে বিউটি তার বাবার অক্ষমতার জন্য অভাবগ্রস্থ আর আইবুড়ো হতে হতো না। সমাজের যারা বলেন আমরাই তো আছি শত বাপ-ভাই। তারা কিন্তু বিউটিরা নষ্ট হওয়ার আগে এগিয়ে আসেন না। আসেন ছিছি করতে। কিন্তু এমনও গ্রাম-সমাজ আছে এমন বিউটিদের যাবতীয় ভরণ-পোষণ চাঁদা থেকে চলে। ভালো পাত্র দেখে বিয়েও দেওয়া হয়। তবে কিছু নষ্টবীজের হাতে যখন সমাজের কর্তৃত্ব থাকে তখনই বোধ করি বিউটিদের বিকল্প কোনো পথ খোলা থাকে না (একমাত্র মরন ছাড়া।)

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।