সচলে যে হারে সাহিত্যের সুবাতাস বইছে তাতে কিঞ্চিত জাগতিক ঢেউ ওঠাতে চাই। কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে বোমা হামলা হলো সেই ঢেউ। এটা অনুবাদ, লেখক নিজে সোভিয়েত ইউনিয়ন, আফগানিস্তান, তুরস্ক, আফগানিস্তানসহ বেশ কিছু রাষ্ট্রে ভারতের রাষ্টদূত ছিলেন। তাঁর এ বিশ্লেষণটি প্রকাশিত হয়েছে এখানে। এটা তাঁর মূল রচনার অতি সংক্ষিপ্ত রূপ।
'''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে বিভীষিকাময় সন্ত্রাসী আক্রমণ এককথায় নজিরবিহীন। আফগান গৃহযুদ্ধের কালো দিনগুলিতেও এরকমটা ঘটেনি। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের পর অন্য কোনো দূতাবাসেও এরকম হামলা হয়নি। তাহলে কী এমন ঘটলো যার জন্য ভারত এভাবে আক্রান্ত হলো? একটা চড়ুইয়ের মৃত্যুও দুঃখজনক। সেখানে একজন ব্রিগেডিয়ারসহ বেশ কজন ভারতীয়র মৃত্যু ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য বিরাট ক্ষতি ও দুঃখের ব্যাপার।
অথচ ভারতীয় মহল বিশ্লেষণের বদলে একে শুভ'র বিরুদ্ধে অশুভ'র কাজ বলে বর্ণনা করেই ক্ষান্ত হয়েছে। তারা বসবাস করছে এমন এক জগতে যেখানে ভারত হলো বিশুদ্ধ নৈতিক আর তার বিরুদ্ধে নিরন্তর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে অশুভ শক্তিরা। একমটা ভাবার অভ্যেস আমেরিকার। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা এখন এমন এক বর্বর সময়ে বাস করছি যেখানে নৈতিকতা নয় বাস্তব স্বার্থ থেকেই সব কিছু ঘটে। যারা আমাদের শত্রু তারাও তাদের বাস্তব স্বার্থগত কারণেই শত্রু। কিন্তু সেটা কী?
তালেবানরা কেবল লোকদেখানোর জন্য কোনো কাজ করে না। তাদের প্রতিটি কাজেরই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। ভারতীয় দূতাবাসকে অনেক সতর্কতার সঙ্গে বেছে নিয়েছে তারা। এটা ঠিক যে, কোয়ালিশন বাহিনীর মধ্যে ভারতীয় সৈন্য নেই। কিন্তু ভারত সরাসরি আফগান সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সামরিক সহযোগিতা দিচ্ছে। এ মুহূর্তে ভারতের কয়েক হাজার নাগরিক আফগানিস্তানে কর্মরত আছে। বেশিরভাগই করছে নানা ধরনের নির্মাণ কাজ।
আফগান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের ৭০ ভাগই হলো তাজিক। অন্যদিকে তালেবান আন্দোলন প্রধানত পশতুনদের আন্দোলন। এ অবস্থায়, ভারতের সামরিক একাডেমিতে তালেবান দমনের জন্য তাজিক অফিসারদের প্রশিক্ষণ নেয়ার ব্যাপারটাকে তারা মোটেই ভালভাবে দেখবে না। ভারত বিনা কারণেই
আফগানিস্তানের রাজনীতির বিষাক্ত চক্রের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।
মনমোহন সিং-এর সরকার যুক্তরাষ্ট্রের 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' নীতির সঙ্গে মিলিয়ে তার সরকারের আফগানিস্তান নীতি তৈরি করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জঙ্গি ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, রাশিয়া ও মধ্য এশিয়াকে ঘিরে ন্যাটোর প্রসারণ ঘটিয়ে একে বৈশ্বিক রাজনৈতিক সংস্থায় পরিণত করার পরিকল্পনা কিংবা ক্রুসেডের মতো সন্দেহভাজন নীতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার কোনো দরকার ছিল না ভারতের। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কার পত্রিকায় সাংবাদিক সেইমুর হার্শ ফাঁস করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানে ক্ষমতাবদল ঘটানোর জন্য সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ায় আফগানিস্তানকে ব্যবহার করছে।
এসব সত্ত্বেও ভারতের নিরাপত্তা বিশারদদের একটা শক্তিশালী অংশ সজ্ঞানে আমেরিকার যুদ্ধের রণাঙ্গনে সামনের সারিতে দাঁড়াতে চাইছেন। তাদের আরেকটা অংশ মনে করছে, ভারতের এখন সময় হয়েছে উপমহাদেশে তার দাপট প্রদর্শন করার। মার্কিন দেশে তাদের বন্ধুরাও সেটাই চাইছে। অনেকেই বলা শুরু করেছেন যে, আফগানিস্তান হয়ে উঠছে ভারত-পাকিস্তানের বিকল্প যুদ্ধক্ষেত্র। প্রথমত পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করার নখর হিসাবে আফগানদের ব্যবহার করা খুবই আপত্তিকর এবং অমানবিক। দ্বিতীয়ত এটা ভারতের বৃহত্তর আঞ্চলিক নীতিরও বরখেলাপ। ঐ নীতি অনুযায়ী ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের মধ্যেই পাকিস্তানের স্বার্থ নিহিত থাকার নিশ্চয়তা দেয়া ছিল।
আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাববৃদ্ধির জন্য পাকিস্তানী ক্ষমতাবৃত্তের প্রভাবশালী অংশ পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিক্ষুব্ধ হবে এবং উভয় দেশের মধ্যে যে আস্থার সম্পর্ক গড়ে উঠছিল তাতে চিড় ধরবে। চূড়ান্তভাবে, আফগানিস্তানে পাকিস্তানের ন্যায্য স্বার্থের বিষয়টি উপেক্ষা করলে, অন্যরাও শ্রিলঙ্কা, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপে ভারতের স্বার্থবিরোধী অবস্থান গ্রহণের সুযোগ নেবে। পাকিস্তানের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আফগানিস্তান এখন বিরাট হুমকি। সেকারণে, আফগানিস্তানের বৈদেশিক সম্পর্ক নিয়ে পাকিস্তান স্পর্শকাতর। অন্যদিকে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তির লোভ দেখিয়ে আমেরিকা চাইছে ভারত তার হয়ে আফগানিস্তানে কাজ করুক। ইতিমধ্যে তারা সেখানে সৈন্য পাঠানোর অনুরোধও করেছে। কিন্তু মার্কিনীদের অভিশপ্ত বোঝা কাঁধে নেয়ার মতো বিপজ্জনক কিছু আর হয় না। তাছাড়া ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আফগানিস্তানে পাকিস্তান যে সুবিধা দিতে পারবে, ভারতের সরাসরি উপস্থিতি তা দিতে পারবে না। ভারতের ভূমিকা হতে পারে আফগানিস্তানে প্রবেশের দরজায় পাপোশের। এবং আফগানিস্তানে যে পা দিয়েছে, সে-ই ক্ষতবিক্ষত হয়ে পালিয়ে এসেছে। উপনিবেশিক ব্রিটেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বেলায় তা প্রমাণিত হয়েছে এবং এখন আমেরিকার বেলায় প্রমাণ হওয়ার অপেক্ষায়।
তাই তালেবানি বোমার অজুহাত দেখিয়ে ভারতীয় সামরিক কর্তৃপক্ষের মার্কিনপসন্দ অংশটি প্রতিশোধ নেয়ার প্ররোচনা দিচ্ছে। তারা দেখাতে চাইছে যে তালেবানরা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এটা সত্য নয় এবং এতে করে মার্কিনি নকশার মধ্যেই ঢুকে পড়া হবে।
ভারতের প্রতিবেশী এবং রাজনৈতিক ইসলাম নিয়ে ভাবনা-চিন্তার মধ্যে যথার্থ বোঝাপড়ার ঘাটতি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কার্নেগি-পণ্ডিত ফাওয়াজ এ গার্জেস সম্প্রতি জার্নি অব দ্য জিহাদিস্ট নামে একটি বই লিখেছেন। তাতে তিনি পরিষ্কার করে দেখিয়েছেন যে, ইসলামপন্থিদের বড় অংশই গণতান্ত্রিক নীতি গ্রহণ করেছে এবং তারা সন্ত্রাসেরও বিরুদ্ধে। দ্বিতীয়ত, মূলধারার ইসলামপন্থিরা নিজ নিজ সমাজের গণতন্ত্রায়নে তাদের অনেক মৌলিক নীতির সঙ্গে আপস করেছে এবং পূর্বতন অবস্থান থেকে সরে আসছে। তৃতীয়ত, ভেতরের দিক থেকে তালেবানরা যতটা না ইসলামী, তার থেকে বেশি গোষ্ঠীগত রীতি মেনে চলে। ক্ষমতায় বসে তাই তাদের শাসন পরিচালনার নতুন পদ্ধতি রপ্ত করতে বিরাট পরিশ্রম করতে হয়েছিল। এমনকি ২০০১ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাতেও রাজি ছিল। যদি মার্কিন-পাকিস্তান ও সৌদি আরবের উস্কানি না থাকতো তাহলে হয়তো তারা আল-কায়েদাকে স্বাগত জানাতো না। তাই এটা বলা যায় যে, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য তালেবানরা হুমকি নয়। ভারতকে যে তারা শত্রু ভাবতে চায় না, তা তারা নানানভাবে মধ্যস্থতাকারী মারফত জানাতে চেয়েছে। এবং ভারত যাতে মার্কিনীদের হয়ে কাজ না করে সেই অনুরোধও করেছে। কিন্তু ভারত বিভ্রম ও অতি ভীতিবশত তালেবান বিরোধী নর্দান এলায়েন্সকে মদদ দিয়ে বসে।
হয়তো ভারত অতি বিচলিত, হয়তো জম্মু-কাশ্মীরের রক্তাক্ত স্মৃতি তার মনে হানা দিয়েছে, হয়তো ১৯৯৯ সালে কান্দাহারে ভারতীয় বিমান ছিনতাই তাকে প্ররোচিত করছে, হয়তো বামিয়ানে মূর্তি ধ্বংসে সে আহত হয়েছে। কিন্তু তাকে বাস্তববাদী হতেই হবে। এবং পরাজিত ও বিপর্যস্ত পক্ষকেও সমঝোতার মধ্যে আনতে হবে, তাদের প্রাপ্য তাদের দিতে হবে। তার জন্য কাল্পনিক তালেবানি জুজু কিংবা ইসলামি সন্ত্রাসবাদের মিথ থেকে চোখ সরিয়ে খুঁজতে হবে স্থায়ি সমাধানের পথ।
মন্তব্য
লেখাটা প্রয়োজন ছিলো।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
চমত্ কার বিশ্লেষনী লেখা ফারক ওয়াসিফ ।
ভারতের সাম্প্রতিক বিদেশনীতি,উপমহাদেশে তার ভূমিকার নতুন নবায়ন করে মার্কিন-যুক্তরাষ্ট্রের তল্পিবাহক হবার মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলের ইতিহাস যে নতুন এক মোড় নিচ্ছে, তা নিশ্চিত । কিন্তু বিশ্বের সর্ব বৃহত্ গনতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষ,( কাগজে-কলমে ও সংবিধানে হলেও )আর এককালের সমাজতান্ত্রিক বলয়াওতাধীন রাষ্ট্রের এমন অবদমন পীড়াদায়ক , ভায়াবহ !
ধন্যবাদ ।
---------------------------------------------------------
আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
ক'দিন আগে কোনো এক লেখায় প্রচুর বানান ভুল ছিলো বলে আপনি মন্তব্য করেছিলেন। এই জাতীয় গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু সেই আপনার ছোট্ট এই মন্তব্যে এত্তোগুলো ভুল বানান আমার মতো একজন সাধারণ পাঠকের চোখকেও পীড়া দিচ্ছে।
বিশ্লেষনী (বিশ্লেষণী)
গনতান্ত্রিক (গণতান্ত্রিক)
ধর্ম নিরপেক্ষ (ধর্মনিরপেক্ষ)
ভায়াবহ (ভয়াবহ)
সর্ব বৃহত্ (সর্ববৃহত্)
আরো দুটো প্রশ্ন।
১. "নতুন নবায়ন" জিনিসটা কী?
২. "অবদমন" শব্দটি কি সঠিক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
আমার মন্তব্যে আপনি আঘাত পেয়ে থাকলে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
- ধাপে ধাপে
এই কমেন্টটি খারাপ লাগলো।
আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
জনাব / জনাবা ধাপে ধাপে,
আপনার মন্তব্যে আঘাত পাবার কিছু নেই । বরং ফারুক ওয়াসিফের মূল লেখার বিষয়ে একটাও শব্দ ব্যয় না করে,যে গভীর মনোযোগে আপনি আমার মন্তব্যে ভুল বানান খুঁজে নিলেন,নিয়ে,কষ্ট করে বোল্ট করে দিয়ে আমার এবং আরো সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন তাতে বরং কিঞ্চিত শ্লাঘা-ই বোধ করছি ! (মন্তব্যকারী হিসেবে নিজে কে বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে, অল্প যেন,লেখকের চেয়ে ও !!! )
বানান ভুল করার বাজে অভ্যাস যে আছে সেটা স্বীকার করে নিয়েও কিছু বলতে চাই,অজুহাতের মতো শোনালে ও ।
আপনার উল্লেখিত বানানগুলোর মধ্যে কয়েকটা যে 'স্লিপ অব টাং' এর মতোই ' স্লিপ অব ফিঙ্গার 'এর ফল সেটা জানাতে চাচ্ছি । নিজের লেখা কম্পোজ করার ইতিহাস আমার নিতান্তই অল্পদিনের । অনেক কিছুই এখনো সামলে উঠতে পারি নি । আর তাই বাড়তি একটা SPACE পড়ে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যায় ধর্ম নিরপেক্ষ ! সর্ববৃহত্ হয়ে যায় সর্ব বৃহত্ ! একটা অনাহুত আকার এসে ভয়াবহ কে করে ফেলে ভায়াবহ ! আর ন আর ণ পার্থক্য না করতে পারার পুরোনো রোগ এখনো সারাতে না পারার জন্য আপনার মতো শুদ্ধতাবাদী পাঠকদের কাছে আমার মতো ভুল বানানে মন্তব্যকারীর ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কি করারই আছে !
নতুন নবায়ন আর অবদমন'র প্রয়োগ ঠিকই হয়েছে বলে মনে করি । দু'টো শব্দের প্রয়োগই সচেতনভাবে করা । ধন্যবাদ আপনার নিবিড় (মন্তব্য) পাঠের জন্য ।
ভালো থাকুন ।
---------------------------------------------------------
আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
আপনার কি মনে হয়, আঘাত করার মতো কিছু বলেছেন?আপনি তো আমার ভালই করেছেন। আপনি বলার পর লেখাটায় চোখ বুলালাম এবং বুঝলাম ধাপে ধাপে আপনার একটা ভুল হয়েছে। প্রথমত, আমি কখনোই কারো লেখায় প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বানান ভুলের উল্লেখ করিনি। কোথাকার তরবারি আপনি কোথায় রেখেছেন?
দ্বিতীয়ত,
আপনার দাগিয়ে দেয়া শব্দগুলো আমার এই অনুবাদের অংশ নয়। তাহলে কি আগের কোনো লেখার অংশ? হতে পারে। সেটা উল্লেখ করলেই হতো। শুধরে নেয়ার সুযোগ পেতাম।
বানান ভুল বিষয়ে সচলায়তনের মডারেটররা চিন্তা করছেন এবং সেটা শুধরে দেবার পদ্ধতি খুঁজছেন। অতএব ব্যক্তিগত ভাবে সেটা আমাদের না করলেও চলবে। করলে সেটা এসএমএস দিয়েই করা বাঞ্ছণীয়।
আপনাকে অনেক অভিনন্দন যে, আপনি সমালোচনার কাছে গিয়েছেন। এমনিতে আমরা পারতপক্ষে বিতর্ক বা সমালোচনায় যাই না। কিন্তু গঠনমূলকভাবে বিদ্বেষহীন সমালোচনায় ভাল বৈ মন্দ কী? ধন্যবাদ।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
সুপ্রিয় ফারুক ওয়াসিফ,
আপনি, বোধহয়, লক্ষ্য করেননি, আমার আগের মন্তব্যটি একটি মন্তব্যের উত্তরে লেখা। আপনার লেখার পরিপ্রেক্ষিতে নয়।
ধন্যবাদ।
- ধাপে ধাপে
ও আচ্ছা!
তাহলেও আমার মন্তব্যের সাধারণ বার্তাটি কি আপনি ধরতে পেরেছেন?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ফারুক ওয়াসিফকে ধন্যবাদ লেখাটা তুলে দেওয়ার জন্য...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
উদ্ধৃতি
শ্রিলঙ্কা, ভুটান, নেপাল ও মালদ্বীপে ভারতের স্বার্থবিরোধী অবস্থান গ্রহণের সুযোগ নেবে।
উল্লেখিত দেশগুলো তো ভারতের কাছে চুনোপুঁটির চাইতেও ছোট 'চক্কুনি মাছ' (আকারে ছোট মাছ। মাথায় একটি চোখ। সারাক্ষণ পানিতে ভাসে। পুকুরে-ডোবায়।) তারা আর কি বিরোধীতা করবে! ভেবে পাই না।
তবে, আফগান সমস্যায় ভারত জড়িয়ে গেলে আরেকটি সমস্যা প্রকট হয়ে উঠতে পারে। আর তা হলো ভারতের আভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো আরো বিরাটাকার ধারণ করতে পারে।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ওয়াসীফ।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
না, লেখক বলেননি যে, শ্রিলঙ্কা বা নেপাল ভারতকে বিরক্ত করবে, তিনি বলতে চেয়েছেন যে, ভারত যদি অন্যের এখতিয়ারের বলয়ে গিয়ে জ্বালাতন করে, তাহলে তার এখতিয়ারের বলয়েও অন্যেরা (চীন বা পাকিস্তান) এসে জ্বালাতন শুরু করবে।
আমার আপত্তি এই এখতিয়ার বিভাজন নিয়েই। আফগানিস্তান পাকিস্তানের এখতিয়ারে আর ভুটান নেপাল বা বাংলাদেশ ভারতের এখতিয়ারে, এটা কীভাবে মানা সম্ভব?আবার কূটনীতিতে দুটি রাষ্ট্রের পারস্পরিক জটিলতায় তৃতীয় কারো অনাহুত নাক গলানোকে ভালভাবে দেখা হয় না, এই অর্থে হলে ঠিক আছে।
তবে লেখকের বার্তাটি এই যে, ভারত আমেরিকার মতো করেই তার প্রতিবেশীদের মধ্যে নিজের একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারের পথে যাচ্ছে। আফগানিস্তানকে পাকিস্তান বলয় থেকে সরিয়ে নিজের কক্ষপুটে ব্যবহার করে নিতে চাইছে।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
কিছু বিষয়ে প্রকাশিত মতামতের সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি।
"ইসলামপন্থিদের বড় অংশই গণতান্ত্রিক নীতি গ্রহণ করেছে এবং তারা সন্ত্রাসেরও বিরুদ্ধে। "
কোথায়? তাহলে অন্তত নরমপন্থী তালিবানেরা ভোটে আসতে তো পারে। তালিবান শাসনের ক'বছরে ক'বার ভোট বা ভোটের প্রস্তাব হয়েছিল?অথবা মেয়েদের স্বাধীনতার কথা?
"ভারতকে যে তারা শত্রু ভাবতে চায় না, তা তারা নানানভাবে মধ্যস্থতাকারী মারফত জানাতে চেয়েছে। " - এমন কোনো ঘটনার কথা আমার জানা নেই। নর্দান এলায়েন্সকে সাহায্য করার মূল কারণ হল সেই একই ... শত্রুর শত্রু ... আর সোভিয়েত আমলের পুরোনো সখ্যতা।
ভারত মার্কিনীদের হয়ে মনে হয় না কাজ করছে বরং সেই চিরপরিচিত শত্রুর শত্রু পরম বন্ধু নীতি নিয়েছে (এটা মোটেই কাজ করে না আধুনিক রাজনীতিতে)। যদি সেটা না করেও শুধুমাত্র আফগানিস্তানে গুড়োঁ দুধের প্যাকেট পাঠানো, রেললাইন পাতা আর টেলিফোনের টাওয়ার বসানোর কাজও করত তাহলেও সেটা তালিবানদের চোখে 'তাজিক' সরকারের তথা আমেরিকার দলের লোক বলেই তাদের মনে করা হত। গল্প যদি একই পথে হাঁটে তাহলে পথ পরিবর্তন করে লাভ কি? আরেকটা পথ হল দরজা বন্ধ করে রাখো - সেটাও তো বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হয় না।
সবশেষে, বাস্তববাদী কি কি সমাধান সম্ভব এই সমস্যার? আমি তো কিছু দেখি না ... এই ঘটনা এখনও অনেককাল চলবে, যতদিন না এক পক্ষ যুদ্ধে পুরো ক্ষান্ত হচ্ছে। 'তাজিক' সরকারের পক্ষ নিলে তালিবানেরা মারবেই, তালিবানদের আলোচনায় আনতে গেলে আফগান ওয়ারলর্ডরা আর তাজিক সরকার (এই সরকারের মূল উদ্দেশ্য এখন তালিবানদের খতম করা) ক্ষুব্ধ হবে - মানে তল্পিতল্পা গোটাতে হবে ভারতকে (এদেরই ক্ষমতা বেশী)। দেশেও লোকজনে (বিজেপি) তালিবানদের সাথে মধ্যপন্থা নেওয়া পছন্দ করবে না (দেশে অবশ্য এ নিয়ে কেউ মাথাও ঘামায় বলে মনে হয় না)। আর দরজা বন্ধ করে রাখাও সম্ভব নয়। ভারত সরকার হিসাব করেছে ২০৫০ সালেও তাজিকদের প্রাধান্যই বেশী থাকবে। যুদ্ধে যাদের ক্ষান্ত হয়ে আসার সম্ভাবনা বেশী তাদের বিরুদ্ধেই গুঁটি সাজাচ্ছে ভারত সরকার। এখন সরকারের মূলনীতি ব্যবসা, বাকি সব নীতি পেছনের সারিতে। আর আফগানিস্থানে ভাল ব্যবসা করতে গেলে এই তাজিক সরকারের সাথে ভাল সম্পর্ক রাখাটাই জরুরী। সেটাই সরকার এখন করে আসছে। আগে করত আড়ালে, এখন প্রকাশ্যে ... ফল ভবিতব্য ... তবে সমাধানের পথে আলোচনা করলেই বোঝা যায় সমস্যাটা কতটা শক্ত।
অফটপিক - "এমনকি ২০০১ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনাতেও রাজি ছিল।"
আমার তো মনে হয় ২০০১ সালে তালিবানেরা সোজাসুজি আল-কায়দার বিরুদ্ধে মার্কিনদের সাহায্য করলেই নিজেদের পিঠও বাঁচাতে পারত আর আল কায়দাকেও কায়দা করা যেত। এ নিয়ে সবার কি মতামত ?
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
হ্যাঁ ভদ্রকুমারের উল্লেখিত এই মত আমি সমর্থন করি।
আস্তিনের তলায় সবারই ছুরি লুকানো আছে। কিন্তু আজকের যুগে ভঙ্গুর গণতন্ত্রে নির্বাচনের মাধ্যমে আসা সরকারই গণতন্ত্রপন্থি বলে স্বীকৃত। দলের গঠনতন্ত্রে যে মতাদর্শই থাকুক, সাংবিধানিক পথ যতক্ষণ অবলম্বন করা হচ্ছে, ততক্ষণ সে গণতান্ত্রিক। হামাস, ব্রাদারহুড, তুরস্কের জাস্টিস পার্টি, আলেজিরিয়ার ইসলামী দল, এমনকি বাংলাদেশের জামায়াতও তাই। এদের সামাজিক মত খুবই রক্ষণশীল হলেও এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা চলে না। তাতে এদেরকে ঠেলে দেয়া হয় পাল্টা যুদ্ধ-সন্ত্রাসের পথে।
গণতন্ত্র পৃথিবীর সবথেকে মোহনীয় ইউটোপিয়া। সেখান থেকে বিচার করে লাভ নেই। ঊনিশ শতকে যেভাবে গণতন্ত্র মানে সেক্যুলারিজম, জাতীয়তাবাদ, আইনের চোখে সাম্য, সবার সমানাধিকার ইত্যাদি ছিল, আজ সেভাবে নাই। আজ যে অর্থে জর্জ বুশ, ওলমার্ট, পুতিন, গণতন্ত্রী সে অর্থে হামাস বা জাস্টিস পার্টিও গণতন্ত্রী।
এ যাবত কোনো গবেষণা প্রমাণ করতে পেরেছে বলে জানা নেই যে, বিশ্বের বেশিরভাগ মুসলিমপন্থি দল অগণতন্ত্রী!
আমার স্বতন্ত্র মতাদর্শ আছে। আমি এসবের উল্লেখ করলাম, ডমিন্যান্ট ডিসকোর্সে কি পরিমাণ জাতবিদ্বেষ এবং চাপিয়ে দেয়ার ব্যাপার আছে, তা দেখাবার জন্য।
অধিপতির জন্য যা ব্যবসা, ন্যাটিভের জন্য তা-ই শোষণ ও আগ্রাসকের সহযোগিতা। ভারত ন্যাটোর নিরাপত্তায় দালাল সরকারের হয়ে আফগানিস্তানে কাজ করেলে, আফগানদের একটি প্রতিনিধিত্বশীল অংশ যদি মনে করে, সেটা তাদের বা তাদের দেশের জন্য শত্রুতা, তাহলে তার বিরুদ্ধে যে কোনো কর্মসূচি তারা নিতেই পারে। কারণ, সেটা তখন যুদ্ধের নিয়মে চলে যায়। আর আগ্রাসনের শিকার হওয়া দেশে বিদেশিদের ব্যবসা করা কি নিরীহ কাজ? ইরাকে যে ঠিকাদারেরা 'পুনর্গঠনকাজ' করছে, তারা কি নিছকই ব্যবসা করছে?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
দিগন্ত - আপনি সত্যি কি তাই মনে করেন? যে, আমেরিকা সেই সময় আফগানিস্তানকে আক্রমণ না করে ছাড়তো?
আল কায়দা সহ বিন লাদেনকে পেয়ে গেলে অন্যরকম হত। ভেবে দেখতে পারেন একই কারণে কেন আমেরিকা পাকিস্তানকে আক্রমণ করে নি ...
আর আফগানিস্তানকে আক্রমণ তো নয়, আক্রমণ তালিবানদের ... কে আফগানিস্থানের প্রকৃত প্রতিনিধি, সেটাই জানা নেই যেখানে সেখানে আফগানিস্থানের নাম আনার কি দরকার।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
একমত নয় ঠিক, এক-তথ্য হতে পারলাম না।
আপনার মন্তব্যের তলার মতটি মনে হচ্ছে এরকম, টুইন টাওয়ার ভেঙ্গেছে লাদেনরা, অতএব লাদেন ধরতে আফগানগমন এবং ইত্যাদি। লাদেন তত্ত্বে বিশ্বাস নেই, ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বলেও কোনো বৈশ্বিক ফেনমেনন নেই।
বিষয়টা আমার কাছে মার্কিন সামরিক স্ট্যাবলিস্টমেন্টের ভূ-রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন। লাদেন ধরাই যদি উদ্দেশ্য হতো, তাহলে আপনার যুক্তি মতে আমেরিকার তো পাকিস্তানেই পূর্ণ সামরিক আক্রমণ করে বসার কথা। লাদেন তো শুনি সেখানেই আছে_যদি এখনও বেঁচে থেকে থাকে।
জর্জ বুশ কি মার্কিন জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধি, নিছক সাংবিধানিকিতা তথা নির্বাচিত হলেই কি জনগণের প্রতিনিধি হয়? বুশ বা মোল্লা ওমর কেউই জনগণের প্রতিনিধি নয়। তালেবানরা ক্ষমতার জবরদখলকারি হলে তার বিচার করবে তার দেশের মানুষ। একই কথা বুশের বেলাতেও প্রযোজ্য। কেউ চাইলেই কাউকে অবৈধ বলে আক্রমণ করে বসা মেনে নিলে দুনিয়ায় জোর যার মুলুক তার মানতে হয়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ভাল কথা, তা একের পর এক ৯/১১ হতে থাকলে কি সমাধান সূত্র বের করা যেত? আমার তো মনে হয় না আপনার কথা মত চললে সেটার কোনো সমাধান আসত।
"তালেবানরা ক্ষমতার জবরদখলকারি হলে তার বিচার করবে তার দেশের মানুষ।"
এটা তো বড় অদ্ভূত কথা। এই দেশের মানুষের বিচারের মধ্যে অনেকটা ফাঁক রয়ে গেছে আমাদের রাজনীতিক ব্যবস্থায়। ধরা যাক বর্তমান মায়ানমার যে দেশটা, তাতে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছে। কি ভাবে দেশের মানুষের পক্ষে তাদের সরানো সম্ভব তার একটা বাস্তবসম্মত পথ দিন তো? ধরেই নিলাম বাইরের কোনো শক্তি তাতে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করবে না। তাহলেও অস্ত্র হাতে মানুষ আর নিরস্ত্র মানুষের মধ্যে লড়াই চলে না, শাসনই চলে। তালিবানদের বিচার দেশের মানুষ করবে কি ভাবে যদি তাদের হাতে ক্ষমতাই না থাকে? বর্তমানের তাজিক সরকারও কি আফগানিস্থানের মানুষ দিয়েই তৈরী নয় কি?
তার মানে দেশের মানুষ চাইলেও তাদের ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না আর সেই একই অবস্থা বছরের পর বছর চলে আসবে। ব্যাপারটা কি খুব একটা ভাল হবে?
"বিষয়টা আমার কাছে মার্কিন সামরিক স্ট্যাবলিস্টমেন্টের ভূ-রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অর্জন।"
- সেটা কি বর্তমানে আমেরিকার নেই?
"নিছক সাংবিধানিকিতা তথা নির্বাচিত হলেই কি জনগণের প্রতিনিধি হয়? বুশ বা মোল্লা ওমর কেউই জনগণের প্রতিনিধি নয়।"
- আপনার বক্তব্য অনুসারে আপনি জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য কোনো আরো উন্নততর পদ্ধতি বলুন যা দিয়ে প্রমাণ করতে পারি বুশ জনগণের প্রতিনিধি নয় ... যে কোনো ব্যবস্থায় সীমাবদ্ধতা থাকবেই, আমাদের বা মার্কিন ব্যবস্থাতেও আছে। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখলের সাথে তুলনীয় নয়।
"লাদেন ধরাই যদি উদ্দেশ্য হতো, তাহলে আপনার যুক্তি মতে আমেরিকার তো পাকিস্তানেই পূর্ণ সামরিক আক্রমণ করে বসার কথা।"
- কথা নয় বরং, কারণ পাকিস্তান লাদেন ধরার অপারেশনে মার্কিন সাহায্যকারী, ঠিক যেমন আমি বলছিলাম তালিবানেরা মার্কিন সাহায্যকারী হয়ে উঠলে তারাও এ যাত্রায় পার পেয়ে যেত।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এম কে ভদ্রকুমারও একটা পারপাজ সার্ভ করছে।ভারতীয় রাজনীতিতে নানামুখি টানাপোড়েন ছিল ও, আছে ও । ভদ্রকুমারের ভাষ্য একজন আমলার চোখে দেখলে এক রকম আর রাজনীতিকের চোখে দেখলে অন্য রকম মনে হতে বাধ্য। কষ্ট করে অনুবাদ এবং পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ। তবে.............................................
আমাদের দেশের শাসকদের দিয়ে নর্দান এলায়েন্স , ওয়েস্টার্ন এলায়েন্স যে ক্রুর খেলা শুরু করেছে সেসব নিয়ে আরো বেশি বেশি লেখা দরকার । আর সেটা আপনিই পারেন।
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
আমি ইকোনমিক ডিটারমিনিজমবিরোধী হলেও অন্তত গত দেড়শ বছরের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা/ধর্মীয় মৌলবাদকে পুঁজির অর্ন্তদন্দ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখার পক্ষপাতী না। আফগানিস্থান বিশেষ করে ২০০১ পরবর্তী সময়ে এক ধরণের ওপেন সোর্সে পরিণত হয়েছে। যে যেভাবে পারছে সেখান থেকে তেলটানুনটালাকড়িটা তুলে আনছে। ঘরের কাছে এমন গাই থাকতে শেঠজী তাকে ছাড়বে কেন? দৃশ্যমান রাজনীতিতে ভোটের লাভক্ষতিতো প্রতিদিনই বাড়ে কমে, টুপাইস কামাতে একদিন কমলে পরদিন আবার অন্যকোন ধুয়া দিয়ে ম্যানেজ করা যায়। আফগানিস্থানে ভারত না গেলে হয়তো ভালো হতো এটা ভারতের জনগণের শুভাকাঙ্খী হিসেবে হয়তো বলা যায়, কিন্তু ভারতের শাসকগোষ্ঠীর জন্য কতটা ভালো হতো সেটা বুঝতে তাঁদের পকেটের হাল হাড়ির হাল ঠিকঠাক বোঝা দরকার।
এই হইল ঘটনা।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
একমত, যুদ্ধ ও আগ্রাসন তাহলে পুঁজির চাহিদা অনুযায়ীই ঘটছে। এর বিরোধীরা পুঁজির বিরোধী যদি নাও হয়, তাহলেও তাদের বিরোধিতার ন্যায্যতা থাকছে।
আজকের যুগে বৃহত অর্থনৈতিক শক্তি হতে চাওয়া মানেই (কোন যুগেই বা তা ছিল না) ছোট শক্তিকে, ছোট অর্থনীতিকে গিলে খাওয়া। এটাও একধরনের সহিংসতা। ঐ মাও যেমন বলেছিলেন যুদ্ধ হচ্ছে রাজনীতিরই সম্প্রসারণ। সেভাবে রাজনীতি হচ্ছে অর্থনীতিরই কোতোয়াল।
সেকারণে, ছোটো রাষ্ট্রে সে আফগানই হোক আর বাংলাদেশই হোক, বাইরের শক্তির অনুপ্রবেশের কারণ যতই অর্থনৈতিক হোক, সে সেই প্রবেশের পথ তৈরিতে কাউকে মৌলবাদী সন্ত্রাসী (আফগানিস্তান ও ইরান) আর কাউকে স্বৈরশাসক (ইরাক) আর কাউকে দুর্নীতিবাজ (বাংলাদেশ) বলে রাজনৈতিক ডিসকোর্সে তাদের পরাস্থ করে মাঠ দখল করে। এ কাজেই তাকে সাম্প্রদায়িকতা, জাতবিদ্বেষ, ধর্মবিদ্বেষসহ যা-ই কাজে লাগে তারই ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই করতে পারা সম্ভব হয় ঐসব প্রবণতার উপস্থিতি থাকলেই। প্রাচ্যে কিছু একটা আছে যা পাশ্চাত্যের মতো নয়, আর পাশ্চাত্য কিছু একটা লালন করে যা প্রাচ্যকে আহত করে, এমন বাস্তবতা আছে বলেই তো ছদ্মমতাদর্শগুলোকে (জেহাদ-ক্রুসেড বা মুসলিম ভার্সাস খ্রিস্টান-ইহুদি বা গণতন্ত্রী বনাম সন্ত্রাসবাদী) সামনে আনা হয়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আফগানিস্থানে যুদ্ধ করে আমেরিকা বা ব্রিটেনের পুঁজির কি উন্নতি হয়েছে সেটা আমার বোধের বাইরে। বরং ভোটের জন্য "৯/১১ এর পালটা মার" হিসাবে জনগণকে দেখানোর জন্য যুদ্ধ হয়ে থাকতে পারে।
আফগানিস্থানকে অনেককাল আগেই ঠান্ডাযুদ্ধের পটভূমিতে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলা হয়েছে ... গোষ্ঠী-বিভাজন সেখানে চূড়ান্ত। এর পরে এরকম কিছু মোল্লা ওমর আর বিন লাদেন সেখানে না পাওয়া গেলেই অবাক হবার।
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
লেখা এবং মন্তব্য সবই অসাধারণ।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
@ দিগন্ত,
আমি বলেছি ৯/১১ আমেরিকার নিজেরই কাজ। এখন পর্যন্ত এ মতের পাল্লাই তথ্যপ্রমাণে ভারি। অতএব একের পর এক ৯/১১ যদি ঘটে, আমার অনুমান সামনে আরেকটা ঘটবে কোথাও, সেটা পরাশক্তিগুলোর দুনিয়া দখলেরই অজুহাত হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
তালেবানদের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তিও হতে যাচ্ছিল, তারা হোয়াইট হাউসে সফরেও গিয়েছিল তেলের পাইপলাইন বসানোর আলোচনা করতে। কিন্তু সেখানে সমঝোতা না হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র পদ্ধতি পাল্টায়।
দ্বিতীয়ত ভোট ব্যবস্থার বর্তমান ফাঁক ও ফাঁকি নিয়ে কথা বলার অর্থ একে বাতিল করা নয়, এর সমস্যাটাই তুলে ধরা। একচেটিয়া শ্রেণীক্ষমতার মধ্যে গণতন্ত্র কাজ করে না, এতে এই বার্তাই প্রমাণিত হয়।
আফগানিস্তানে তার দরকার ছিল, মার্কিনবিরোধিতা দমন করা, রাশিয়াকে ঘেরাও করা এবং অবশ্যই সেখানে পুঁজির ব্যবসাক্ষেত্র খোলা। ইরাকেও তা-ই হয়েছে। তেল ছাড়াও গোটা অর্থনীতিটাই বিদেশিরা দখল করেছে। যেখানে ইরাক ছিল মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম শিল্পোন্নত দেশ।
মার্কিন আক্রমণের আগে সেখানে নর্দান অ্যালায়েন্স শক্তি অর্জন করছিল এবং তারা ছিল প্রগতিশীল। আমেরিকার যদি তালেবান দমনই উদ্দেশ্য হতো, তাহলে তাদের শক্তিশালী করলে আর আইএসআইকে বিরত করলেই চলতো। তারা তা করেনি কেন?
মায়ানমারের কথা বললেন, মায়ানমার নিয়ে উচ্চবাচ্য কম কেন? অন্য ক্ষেত্রে তো তারা অনেক হাউকাউ করে। এখানে সেটা আজর্যন্ত দায়সারা করে কেন? কারেন বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করলো না কেন? কারণ জান্তা মার্কিন কোম্পানি শেভ্রন ও আরো একাধিক ব্রিটিশ কোমপানিকে সেখানে কাজ করতে দিয়েছে বলে? আমেরিকার হস্তক্ষেপ করার দরকার নাই, চীনকে জাতিসংঘের মাধ্যমে মায়ানমারে অঢেল সমর্থন দান থেকে সরিয়ে আনলেই সরকার অনেক দূর্বল হতো। কারণ, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে ভাগবাটোয়ারায় মার্কিনেরই লাভ বেশি।
খেয়াল করেছেন, আমার যুক্তিতে পোকা থাকতে পারে, কিন্তু আপনার যুক্তিগুলো কায়েমি স্বার্থের পক্ষেই যাচ্ছে?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
নতুন মন্তব্য করুন