পরশুরামের কুঠার অথবা জিন্দা লাশের আয়ুষ্কাল

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি
লিখেছেন ফারুক ওয়াসিফ (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/০৭/২০০৮ - ৯:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভবিষ্যতে যদি এমন অবস্থা আসে, যেখানে হাজার হাজার লোক বিনাবিচারে আটক হচ্ছে, হাজার হাজার লোক কাস্টডিতে থাকা অবস্থায় মারা পড়ছে, সে অবস্থা ঠেকানোর কোনো প্রস্তুতি কি আপনাদের আছে?লরেন্স লিফসুলজ (২৪ জুলাই ২০০৬, সমকাল)

১. পরশুরাম নামে এক পৌরাণিক বীর ছিল। স্বর্গের দেবতাদের বরে সে মহাপুরুষ হয়ে জন্মেছিল। সে মাতৃজঠরে থাকতে মা রেণুকা দেবতাদের কাছে মিনতি করে, সন্তান যেন ক্ষত্রিয় না হয়। দেবতারা হ্যাঁ করে। রাজা জমদগ্নির ঔরসের সন্তান, মাতার মানসপুত্র এবং মর্ত্যে ভগবান বিষ্ণুর ষষ্ঠতম অবতার হয় পরশুরাম। অবতারেরা মর্ত্যে আসেন মানুষিক জীবন-যাপনের জন্য নয়_ মহত উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে। পরশুরামের জীবন সেই উদ্দেশ্য সাধনের অটুট কাহিনী। আসুন আমরা তার গল্প শুনি।

পরশুরামের তরুণ বয়সে মাতা রেণুকার প্রতি পিতা রুষ্ঠ হন। পাঁচ পুত্রকে ডেকে পিতা বলেন মাতাকে হত্যা করতে। একে একে চার পুত্র নারাজ হয়। রাজা জমদগ্নি তাদের শাস্তি দিয়ে নির্বোধ প্রাণীতে পরিণত করেন। এবার পঞ্চম পুত্রের পালা। পুত্র পরশুরাম বিনা বাক্যব্যয়ে মাতার শিরোচ্ছেদে করে। সেই-ই শুরু। এরপর পরশুরাম বিবিধ হিংসায় মত্ত হয়ে একুশবার পৃথিবীকে নিঃক্ষত্রিয় করে।
দেবতারা এ কাজে তাকে পরশু নামক ব্রহ্মাস্ত্র বর দিয়েছিল। সেই পরশু বা কুঠারই ছিল তার নরহত্যার অমোঘ অস্ত্র। দেবতারা বলেছিল, ক্ষত্রিয়নাশে তার পাপ হবে না। তাই পরশুরাম ভেবেছিল সে শুদ্ধচিত্ত। ‘শুদ্ধচিত্তেই’ সে কুঠার চালনা করে যেতে থাকে। কিন্তু সে বোঝে নাই যে, সেই কুঠার আর তাকে ছাড়বে না। ছাড়ে নাই। হাতের সঙ্গে লেগে গিয়েছিল সেই কুঠার; আর সেই অবস্থায় সে পাপস্খালনের জন্য ঘুরতে ঘুরতে এক নদীর তীরে এসে দাঁড়ায়। সেই নদীর জন্ম হয়েছিল শিবের হাত ধোয়া জল থেকে। দেবস্পর্শী সেই জল অতি পবিত্র। পরশুরাম তাতে হাত ডোবায়। এবং দৈববলে, কুঠার তার হাত থেকে খসে যায়।

একদা কলিকাল আসে। এবং অন্য আরেক পরশুরাম তততম অবতার হয়ে দেবতার বর নিয়ে মর্ত্যে নামে। তারও ব্রত হয় ক্ষত্রিয়নাশ। দেবতারা স্বর্গে বসে অঙ্গুলি হেলন করেন, আর মর্ত্যে নতুন বিধান জারি হয়। সেই বিধানের বলে পরশুরামের ফেলে যাওয়া কুঠারটি তুলে দেয়া হয় কলিযুগের এই পরশুরামের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে সেটিও তার অঙ্গ হয়ে যায়। এই কুঠারধারী এখন দিনে-রাতে যত্রতত্র মনুষ্যনাশ করে চলে। তারও পিতা তাকে দিয়েছে অনুশোচনাহীন নির্দয়তা, দেবতারা দিয়েছে অভয় । তার বলে বলীয়ান হয়ে বঙ্গদেশে সে চার বছরে পাঁচশ হত্যা করে। তার ভয়ে দেশের মানুষ জিন্দা লাশ হয়ে ঘোরে। জিন্দা লাশেরা খায়-দায়-কর্ম করে, সাহিত্য করে, সড়কে-সভায় চেঁচায়। আর রাত হলে জান হাতে নিয়ে বসে থাকে, পরশুরামেরা এলে যে তুলে দিতে হবে তা! তারা স্বপ্নে দেখে, অতিকায় কুঠার হাতে অন্ধকারের মূর্তিরা এসে দাঁড়াচ্ছে, কুঠার উঠছে আর নামছে আর শব্দ হচ্ছে।

২. আমার একটা ভিন্নমত আছে। আমার একটা ক্ষোভ আছে, তা আমি প্রকাশ করতে চাই। কেবল এটুকুর জন্যই আমি মারা পড়তে পারি। কারণ রাষ্ট্র সহিংস হয়ে উঠছে, কারণ রাষ্ট্র 'অতিমানবিক' হয়ে উঠছে। মার্কিন মডেলের শাসনকাঠামোয় একদিকে সে র্যাডিক্যাল বিরোধীদের হত্যা-হুমকি-বন্দি-জনবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে অধিকারবাদী নাগরিক-স্পেস সৃষ্টি করছে। সেই নাগরিক মাঠে মতপ্রকাশের অধিকার থাকবে, কিন্তু কেউ বিপরীত মত উচ্চারণ করা মাত্রই তা হাওয়া হয়ে যাবে। বলা যাবে, কিন্তু শোনা হবে না। কেউ শুনবে না তা। বিচারবিভাগ স্বাধীন হবে, কিন্তু আইনের সার্বভৌমত্ব রদ হয়ে যাবে। কিছু দুর্নীতি নিয়ে তাওয়া গরম হবে, কিন্তু রাষ্ট্র নিজেই বহুজাতিক দুর্নীতির একচেটিয়া খুলবে। এই দুনিয়ার সুখী মানুষেরা দেখবে রাষ্ট্র হচ্ছে ডক্টর জেকিলের মতো ভাল। আর ঐ আনন্দলোকের বাইরে যারা, তারা দেখবে মিস্টার হাইডের ভয়াল মুখ। কিন্তু এই দুই তরফের কখনো দেখা হবে না। তাই তারা জানবে না, পর্দার ওপারে 'দুনিয়ার সুখ' হাতোর মুঠোয় নিয়ে কিছু মানুষের সদম্ভ উল্লাস চলছে; ঐ সুখী-সুন্দর-শোভন মানুষেরাও জানবে না পর্দার ওপারে জিন্দা লাশ ছিঁড়ছে হায়েনারা। মিডিয়া-আইন-অধিকার-জনমত সব ঐ আলোকিত মানুষদের কথা বলে। আর যা, তা অন্ধকারে_ ফলত অদৃশ্য। তাই তারা যখন বলে জানি নাই, দেখি নাই, শুনি নাই, তাই প্রতিবাদে নামি নাই; তখন তারা একরত্তি মিথ্যা বলে না। আমাদের বিচারবিভাগ, আমাদের রাজনৈতিক ক্লাস, আমাদের মিডিয়া আমাদের আমলাতন্ত্র পরশুরামের বাকি চারভাইয়ের মতো জড়ভরত হয়ে ব্যবহারের পদার্থমাত্র। তারা বিজ্ঞাপনের সেই বানরদল: যারা নিজ হাতে চোখ ঢেকেছে, মুখ ঢেকেছে, কানে ছিপি চাপা দিয়েছে। কিন্তু তাদের গুহ্যদ্বার খোলা। সেখানে পরশুরামের হাতল পিচ্ছিলানন্দে মাতোয়ারা করছে তাদের। তাদের উপাঙ্গের স্থানে বিদেশ থেকে আনা কামান বসানো। সময়ে সময়ে তারা সেই কামান দেগে চলে। আমরা শুনতে পাই ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে’।

এদের বুদ্ধিজীবীরা সবাই ভগবান কৃষ্ণের সাক্ষাত শিষ্য। তাঁরা জানেন, ঐ যারা তলায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, তারা সব জিন্দা লাশের দল। ভগবান তো বলেইছেন, ‘কার জন্য তুমি শোক করছ, অস্ত্র চালনায় দ্বিধা করছ; তুমি মারবে কি, আমি তো আগেই ওদের মেরে রেখেছি’। ভগবান আরো বলেছেন, ‘যা হচ্ছে তা ভালই হচ্ছে, যা অতীতে হয়েছে তাও ভালই হয়েছে, আর যা যা হবে, তার সবও ভালই হবে’। এবং এরপর ইতিহাসে ভাল মানুষের যুগ শুরু হলো। দুই বছর ধরে আমরা ভাল মানুষদের শাসনে রয়েছি। এবং ভালই আছি। জিন্দা লাশের আবার মন্দ কিছু থাকতে পারে নাকি? কারণ সে তো নিজেই মূর্তিমান মন্দ। আমরা সেই মন্দদের দলে থেকে কাকুতি করি, ‘ভগবান আমাদের মারো ক্ষতি নাই, কিন্তু ভাল রেখো।’

৩. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের ইতালিতে ফ্যাসিস্ত বাহিনী এবং জার্মানির এসএস বাহিনীর লোকেরা যথেচ্ছ রাজনৈতিক হত্যা করতে থাকে। মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত পর্যায়ে তা সাদরে সমর্থিত হয়। তারা যে কোনো প্রকারে নৈরাজ্য ও হতাশা থেকে মুক্ত হতে চাইছিল। ফ্যাসিস্টরা একেই মোক্ষম সুযোগ গন্য করে। জার্মানীর বিপ্লবী মহিয়সী রোজা লুক্সেমবার্গ এবং ইতালির বিপ্লবী নেতা কলিয়াত্তি এই ধাক্কাতেই শহীদ হন। খুন হয় অজস্র বামপন্থি কর্মী। গণতান্ত্রিক শিবির এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে এই বীরত্বকেই জনগণের একটা অংশ যোগ্যতা ভাবতে শুরু করে। এই সাময়িক শিথিলতার ফল তাদের শুধতে হয় লক্ষ গুণ বেশি হারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে দেশ দুটির শাসকেরা নিজের এবং অপর দেশের কয়েক কোটি মানুষকে হত্যা করে। বাংলাদেশে এখন সেই রামও নাই, সেই অযোধ্যাও নাই। তবে মিল আছে একটা বিষয়ে। বিচারবিহর্ভূত হত্যায় দেশের মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের সায় আছে। তারা নিরাপত্তা চান, সুশীল কর্পোরেট-বন্দিত সমাজ চান। কিন্তু এর দোহাই দিয়ে যে কেয়ামতের রাস্তা বাঁধাই করা হচ্ছে, তার দায় যে আমাদের কতভাবে শোধ করতে হবে তা কে জানে? এ ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করার মতো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আমাদের নাই। দিনে গড়ে তোলা বাঁধ রাতের জীবের ধাক্কায় ভেঙ্গে যায়। নাগরিকরা জোটবদ্ধ নয়। নিম্নবর্গের সংগ্রামকে নানান ফোক্করে ফেলে তছনছ করা সারা।

রক্ষী বাহিনীর আমলে বিচার বহির্ভূত হত্যা বা নির্যাতন মোকাবেলায় নাগরিকদের মধ্যে থেকে আইনী সহায়তা কমিটি গঠিত হয়েছিল। সিকান্দার আবু জাফর, বদরুদ্দীন উমর-রা সেসব উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আজকের বুদ্ধিজীবী-শিল্পীরা ফৌজি ভিডিওতে তা রে না রে না গায় আর পাপের মেদ বাড়ায়। ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই, মানুষ নামের মানুষ আছে সেই মানুষ নাই’।

এই সিভিকো-মিলিটারিতন্ত্রের মডেল সবচে ভাল দেখা যায় বুশ প্রশাসনের মধ্যে। এর পরে নাম আসে ইসরায়েলের। এসব সরকার মিয়ানমার আর পাকিস্তানের মতো নিছক সামরিক সরকার নয়। এটি নতুন ধরনের এক ব্যবস্থা। আমেরিকার নতুন বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার মতবাদ নিও লিবারেলিজমের এই-ই হলো তরিকা। আলোকিত বিশেষজ্ঞরা মগজ বেচে এরই খয়েরখাঁগিরি করে। সিভিকো-মিলিটারি জোট কর্পোরেট পুঁজির পথের কাঁটা সরায় বলপ্রয়োগের হস্তে। সাম্রাজ্যবাদের ঢালাইমেশিনে এরা এখন এক ছাঁচে গড়া হচ্ছে। ষাট থেকে আশির দশকে ল্যাটিন আমেরিকায় যে কায়দায় গণআন্দোলন দমন করা হয়েছিল, এখানেও সে কায়দায় এলিট বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রের শঙ্কা নাশ করা হচ্ছে। ভারতে মাওবাদী উত্থান আর মুসলিম মিলিট্যান্সি সামাল দিতে এবং নেপালের মাওবাদী জোয়ার এদিকে যাতে না ছড়ায় তার জন্য অটুট নিরাপত্তাজাল তৈরি করা হচ্ছে। দুই দেশের পরশুরামেরা এই ব্যাপারে ভাই ভাই।

ওদিকে কয়েদখানাগুলিতে বাঘ আর মোষ, সাপ আর বেজি, বিড়াল আর ভোঁদড়, উকুন আর বাঁদর সব একসঙ্গে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সময় মতো পাবলিককে ভাওতায় মজিয়ে রাখার জন্য এদের খাঁচাছাড়া করা হবে। তাদের আমরা চিনি। কিন্তু এই সিভিকো-মিলিটারি জোটের সহিংস ক্ষমতাপনাকে চিনে নেয়া কঠিন। চিনে রাখা দরকার এদের সামাজিক ভিত্তিকেও।

যে সমাজ এদের জন্ম দিয়েছে, এবং মিনতি করেছে এরা যাতে সুবোধ হয়, সেই সমাজকে এরা স্বৈরশাহীর নির্দেশে একজোট হয়ে হত্যা করেছে। বিদেশি ভগবানের বরধন্য হয়ে এরা জাতির সকল সম্ভাবনাকে বারেবারে হত্যা করছে। রাষ্ট্র এখন রক্তের স্বাদ পেয়েছে। রাষ্ট্র সর্বদাই মখমলের নেকাবে ঢাকা বলপ্রয়োগের যন্ত্রমাত্র। দরকারে সেই নেকাব সরতে মুহূর্তও বিলম্ব হয় না। সেই যন্ত্রকে দশ হাতে সশস্ত্র করার জের সহজে শেষ হবার নয়। চাইলেই একে নিরীহ করা যাবে না। সেই উপায় রাখা হয় নাই। কুঠার এখন পরশুরামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। যতক্ষণ না ক্ষত্রিয়কুল নাশ হয়, ততক্ষণ সে আঘাত করতেই থাকবে। তারপর নিজেকে খাবে।

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান একদা দেখতে চেয়েছিলেন যে, সিভিল সোসাইটির উদ্যোগ-আয়োজন সংঘাতের রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাবে (১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০০, ডেইলি স্টার)। সেই চ্যালেঞ্জের ফজিলত যা ফলেছে, তাতে তাদের মনে শোচনা জাগা উচিত। কারণ যা ভোগ করা অবৈধ তা তাঁরা ভোগ করেছেন। যা তাঁদের করার কথা নয়, তা তাঁরা নির্দ্বিধায় করেছেন। আমরা জানি, সেই শোচনা আর জাগবার নয়। একইরকম অপরাধে অয়দিপাউসের নিজের প্রতি ঘৃণায় নিজের দুই চোখ অন্ধ করে পথে পথে মানুষকে হুঁশিয়ার করে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছিলেন; এদের ততটা পাপবোধও নাই। চোখ খোলা রেখেই এরা দেশমার্তৃকার হত্যা ও ধর্ষণ উপভোগ করবে। প্রভুরা বলেছে, যখন ধর্ষণ অনিবার্য তখন উপভোগ করাই শ্রেয়। এমনকি সয়ে গেলে আনন্দও লাভ হতে পারে।

এতদিন পর, দেখা যাচ্ছে তারা পরমানন্দেই আছেন।


মন্তব্য

মনজুরাউল এর ছবি

২. আমার একটা ভিন্নমত আছে। আমার একটা ক্ষোভ আছে, তা আমি প্রকাশ করতে চাই। কেবল এটুকুর জন্যই আমি মারা পড়তে পারি। কারণ রাষ্ট্র সহিংস হয়ে উঠছে, কারণ রাষ্ট্র ‌'অতিমানবিক' হয়ে উঠছে। মার্কিন মডেলের শাসনকাঠামোয় একদিকে সে র‌্যাডিক্যাল বিরোধীদের হত্যা-হুমকি-বন্দি-জনবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। আবার অন্যদিকে অধিকারবাদী নাগরিক-স্পেস সৃষ্টি করছে।

জিন্দালাশের আবার মরার ভয় থাকে নাকি ?একটি ব্যাপারে আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে । তারা মেরে মেরে মনে করছে 'কমছে' । আসলে তো বাড়ছে । নিশ্চিত নির্ধারিত নির্বাচিত মৃত্যু জেনেও কি কেউ 'তওবা-তাহির' করে গুহ্যদ্বার উন্মোচিত করে দিয়েছে ? নাকি ক্ষুদিরামের মতো হাসতে হাসতে পরশুরামের কুঠারতলে এসে ঘাড় পেতে দিচ্ছে ?এর নাম 'উলগুলান '। চলতেই থাকবে ।

সান্দিনস্তা পরবর্তী চিলি তে যা যা হয়েছিল তার সবিশেষ আলামত ফুটে উঠছে ।
জীবন আর মৃত্যুর মাঝে সময় কত? সত্তর...আশি....নব্বই......? মহাকালের বিচারে ওই সময়কাল বড়জোর কয়েক সেকেন্ড...কী বা আসে যায় ক'সেকেন্ড আগে- পরে তে ?

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

রণদীপম বসু এর ছবি

যখন ধর্ষণ অনিবার্য তখন উপভোগ করাই কম কষ্টের। এমনকি সয়ে গেলে আনন্দও লাভ হতে পারে।

অতীব সত্যকথা বলেছেন। আমি তো একে আপ্তবাক্য হিসেবে মনে রাখতে চাই। নইলে যে আত্মহত্যার পথটাই কেবল খোলা থাকে। আপনি কী করতে বলেন ? অনধিক একটা মাত্র জীবনের ওয়ান ওয়ে রোডে বেঁচে থাকাটাই তো জিন্দাবাদ শেষপর্যন্ত। রাষ্ট্র যদি নিরাপত্তা দেয়ার নামে চোরকে চুরি আর গৃহস্থকে সজাগ থাকতে বলেই সুমহান দায়িত্ব পালনের নিষ্ঠা দেখাতে পারে, তবে গর্বিত(?) নাগরিক হিসাবে টিকে থাকার এর চে' ভালো পন্থা আর কী আছে ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমারো পিঠের ওপরে একটা কচ্ছপের খোল পুরু থেকে পুরুতর হচ্ছে। সেই পুরুষ্ঠ খোল নিয়ে স্লথ পায়ে হেঁটে যাওয়াই যখন নাগরকিতা, এর থেকে কৃষক হওয়া ভাল। কিন্তু এ জীবন তো শামুকের মতো, যত চলে তত ক্ষয় হয়। একসময় কেবল খোলটা পড়ে থাকে, এর থেকে একবারে বেশি ক্ষয় হয়ে যাওয়া অযথা কিনা জানি না। তবে তার দরকার হয় কখনো কখনো।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

শ্যাজা এর ছবি

লিখলাম ।মুছলাম। আবার লিখলাম। আবার মুছলাম। আসলে কি লিখব বা কি বলব বুঝতে পারছি না। আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

কখনো কখনো উচ্চারের থেকে নিরুচ্চার অনেক ধ্বনিময়...
..........................................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

অন্য একটি ব্লগে এটা পেলাম এই হলো লিংক

আজ আজিজ মাকেটে গেলাম আড্ডা দিতে। এক সময় কে বা কাহারা লিফলেট বিলির মতো কবিতা বিলি করছিল। আমি হাতে নিয়ে দেখলাম তা সদ্য ক্রসফায়ারে নিহত ডা. টুটুলের ওপর লিখিত কবিতাটি। কবিতাটি হুবহু দেয়া হলো।

কাঁদো মানুষ কাঁদো

অনীক রুদ্র

কাঁদো বাংলার শ্রমিক কৃষক মেহনতি জনতা
কাঁদো ছাত্র- যুবা, আবাল-বৃদ্ধ বনিতা ।
কাঁদো বিবেক তাড়িত সত্য-সন্ধানী মেধা-বুদ্ধির মানুষ
কাঁদো বাংলার পথ-ঘাট, তৃন-লতা, পশু-পাখি, শস্যক্ষেত ।

কাঁদো মানচিত্র কাঁদো-
জননী নভেরা খাতুনের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদো ।
এ দুঃসময়ে কেঁদে কেঁদে শক্ত পাথর হও ।
বিভ্রাট বিভ্রান্তে ভুলে যেতে বসেছে মানুষ স্বজন
গাঢ় অন্ধকারে বুকের দেয়ালে তুলেছে প্রাচীর
জাতির ক্রান্তি কালে দিক ভুল মানুষ একান্তই অন্ধ এবং বধির ।
কতিপয় পচাঁ-গলা নষ্ট মানুষ ভুল বুলি শেখাতে শেখাতে
গিরি খাদের কিনারে দিয়েছে ঠেলে ।
নিয়েছে আয়েশ-আরাম, করেছে লুট সর্বস্ব ।
নিঃস্ব মানুষ কাঁদো । ডুকরে ডুকরে কাঁদো আপাততঃ ।
এ সময়ের চিকিৎসক কমরেড চে টুটুর জন্য কাঁদো ।
অন্ততঃ প্রাণ খুলে কাঁদো ।

এ কোন কালচারে ক্রসফায়ারে(?) অভ্যস্ত স্বদেশ ।
সন্ত্রস্ত সতত -

ক্রসফায়ারে(?) আর কত হবে নিহত?
নাটক গল্পে নায়কের আত্মাহুতি
দেখে মানুষ তুমি কেঁদেছো অনেক ।

জীবন যুদ্ধের নাটকে
সত্যিকার নায়কের প্রস্থানে
মানুষ তুমি সত্যি সত্যি কাঁদো ।
কাঁদো মানুষ কাঁদো ।
কাঁদো মানচিত্র কাঁদো -
জননী নভেরা খাতুনের গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদো ।

২৮ /০৭/ ২০০৮

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মনজুরাউল এর ছবি

আমরা কাঁদছি কমরেড !
বিস্মৃত হচ্ছি না জোহানেসবার্গ !
বিস্মৃত হচ্ছি না পেরুভিয়ান ডেথসেল !
বিস্মৃত হচ্ছি না গুয়ান্তেনামো, সিচুয়ান !

আমরা এক সকালে কান্নাভুলে উঠে দাড়াবার অপেক্ষায়.......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

তানবীরা এর ছবি

ফারুক ভাই, এই চক্র ভানগার উপায় লিখেন। চক্র ভানগতে চাই। সমস্যআ সবাই বুঝি কিন্ত সমাধান কেনো করতে পারছি না।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

যে যা চায় সে তা পায় বলে বিশ্বাস করি। কথাটা ভাববাদী শোনালেও, আমি যদি চাই ভাংব, তাহলে পারব। এখানে সব চাওয়ার ব্যায়াম করে যাচ্ছি, করার ব্যায়াম করা দরকার। লেখাটায় যে ত্রিভূজ (সিভিকো-মিলিটারি-ক্যাপিটাল) এর ঐক্য দেখিয়েছি, তার বাইরে অন্য ত্রিভূজ কারা হতে পারে? কারা সত্যিই পরিবর্তন চায়। আদর্শের জন্য নয়, বাঁচার দরকারেই যারা পরিবর্তন চায়, তাদের ওপর কি আমরা ভরসা করতে পারি?

আমরা গ্রাম নিয়ে কাঁদি, কিন্তু শহুরে পোকাদের সঙ্গে থাকতেই আরাম পাই। আমি মনে করি, বাংলাদেশে আগের যুগের থেকে অন্য এক ধরনের সংগ্রামের ফিসফাস শুরু হয়েছে। এখনকার তরুণরা অন্যভাবে ভাবছে। তারা নিরাবেগী হতে পারে, কিন্তু ঝাড়শুদ্ধ সুবিধাবাদী নয়। তাদের নিয়ে সংগঠিত হওয়া যায়, যারা সংগঠিত তাদের সঙ্গে মৈত্রী করা যায়। এসবের পাশাপাশি দরকার নতুন ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। নতুন ধরনের ইমান ও নিশান। ইতিহাসের গর্ভে তার যে ভ্রুণ বেড়ে উঠছে, তাকে বাড়তে দেয়ার শুশ্রুষা চাই। ক্ষমতার বিপরীতে ক্ষমতা চাই। যাহোক, ব্লগে কি আর ম্যানিফেস্টো রচনা সম্ভব? ভাবছি, কিছু কিছু জিনিষ নিয়ে। অচিরেই জানাব।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আদর্শের জন্য নয়, বাঁচার দরকারেই যারা পরিবর্তন চায়, তাদের ওপর কি আমরা ভরসা করতে পারি?

এসবের পাশাপাশি দরকার নতুন ধরনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। নতুন ধরনের ইমান ও নিশান। ইতিহাসের গর্ভে তার যে ভ্রুণ বেড়ে উঠছে, তাকে বাড়তে দেয়ার শুশ্রুষা চাই।

ভাবছি, কিছু কিছু জিনিষ নিয়ে। অচিরেই জানাব।

এই মন্তব্যটার সাথে পুরোপুরি একমত। অনেক জরুরী কথা বলে দিয়েছেন উদ্ধৃতিগুলোয়। সম্পূর্ণ একমত আপনার অনুভবগুলোর সাথে। ভাবনাগুলোর জানিয়েন, সাধ্যে কুলালে সাথে আছি।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

তানবীরা এর ছবি

যে যা চায় সে তা পায় বলে বিশ্বাস করি। কথাটা ভাববাদী শোনালেও, আমি যদি চাই ভাংব, তাহলে পারব। এখানে সব চাওয়ার ব্যায়াম করে যাচ্ছি, করার ব্যায়াম করা দরকার।

আপনার কথাটায় পূর্ন আস্থা রেখে বলতে চাই, চলুন কলম ফেলে কাস্তে ধরি কিংবা বন্দুক। অনেক অন্যায়ের পেষনেতো এমনিতেই মরমে মরে আছি, পুরো মরে যাওয়ার আগে একবার চেষ্টা করেই যাই। কে কবে কি করে দিবে এনে দিবে সেই আশায় বসে না থেকে, নিজেরাই শুরু করি। আমি গভীর ভাবে নক্সাল আন্দোলনের পটভূমি অনুভব করতে পারি।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মনজুরাউল এর ছবি

আপনার কথাটায় পূর্ন আস্থা রেখে বলতে চাই, চলুন কলম ফেলে কাস্তে ধরি কিংবা বন্দুক। অনেক অন্যায়ের পেষনেতো এমনিতেই মরমে মরে আছি, পুরো মরে যাওয়ার আগে একবার চেষ্টা করেই যাই। কে কবে কি করে দিবে এনে দিবে সেই আশায় বসে না থেকে, নিজেরাই শুরু করি। আমি গভীর ভাবে নক্সাল আন্দোলনের পটভূমি অনুভব করতে পারি।

আপনার এই সাহসীকতার জন্য ধন্যবাদ । হ্যাঁ আমরা এখন ওই যায়গায় দাঁড়িয়ে আছি ।
আমি গভীর ভাবে নক্সাল আন্দোলনের পটভূমি অনুভব করতে পারি।
এই কথাটা শত শত প্রগতিশীল বন্ধু - সুহৃদ কারো মুখে শুনিনি কতকাল ।

আরো একবার আপনাকে ধন্যবাদ ।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমি গভীর ভাবে নক্সাল আন্দোলনের পটভূমি অনুভব করতে পারি।

বাংলাদেশে বোধ হয় এখন সেই পটভূমি তৈরি হচ্ছে। নক্সালদের দৃঢ়তা ও বিপ্লবী স্পৃহার সমান কেউ দেখাতে পারেনি ভারতবর্ষে। কিন্তু আমার বুঝ বলে, ওই পথে হবে না। কিন্তু কোন পথে হবে? আমার কাছে মনে হয়, ক্ষমতা বন্দুক না ব্যালটের মাধ্যমে আসবে তার বিচার জরুরি। কিন্তু তার আগে কোন শ্রেণীর বিরুদ্ধে কোন শ্রেণীর হয়ে আমরা লড়তে চাই, তার এজেন্ডা কি? কোন মতাদর্শকে আমরা অবলম্বন করবো সেসব নিয়ে চিন্তা দরকার। আর এগুলোকে বুঝতে গিয়ে বড় করে দেখা দরকার যে, নিপীড়িত শ্রেণী-গোষ্ঠী-জাতি-লিঙ্গ-এর পক্ষের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামের সঙ্গে তার মেলবন্ধন কীভাবে এবং কারা রচনা করবে।

এখানে সমাজের সমর্থনে প্রতিরোধী প্রতিষ্ঠান-সংগঠন-সংস্থা গঠনই এই মুহূর্তের বড় কাজ।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মনজুরাউল এর ছবি

ফারুক ওই লিংকে আপনার ঠিক নিচে কী ওটা ?
একটু দেখবেন ?

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমারো কিছু বলার নেই এ-ব্যাপারে। এক্সট্রা-জুডিশিয়ারি খুনের পক্ষপাতী আমি কোন কালেই নই। এরা তো আসল লোকেদের মারছে না এমনিতেও।

SWI-এ জবাব দিতে যেয়েন না। ত্রিভুজের কামড়ে জবাব দিতে নেই।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

মাটির ঢিবিটা দেখেছি, ঠিক বলেছেন:
কাঁদলে কীরে ধুলার পাহাড়ে
গঙ্গা বুড়ি গঙ্গা বয়ে যাবে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

আমার ভয় ওখানেই, রাষ্ট্র খুনী-স্বভাবী হয়ে গেলে তা সারাতে যুগের পর যুগ লেড়ে যাবে, তাও যদিবা সারানো যায়। আমি আইনের পূজারি নই, কিন্তু এর মধ্যে যে সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট টা থাকে এক্সট্রা জুডিশিয়াল সেই কন্ট্রাক্টটা ভেঙ্গে ফেলে। তখন মাতসান্যায় নেমে আসে। রাষ্ট্র নিজে আইন ভাঙ্গা শুরু করলে, আইনের বিলয়ে গিয়ে থামবে। সেখানে তখন জনগণকেই নতুন আইন বানিয়ে পাল্টা বলপ্রয়োগের পথে যেতে হতে পারে। যেমন ৬৯, ৭১ বা নব্বইয়ে হয়েছিল।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

RAB তো বাবুল নামের আরেক দোকানদারকে সন্ত্রাসী বলে মেরেই ফেলতে চেয়েছিলো।

তারা যে ইতোপূর্বেকার খুনগুলোর কতটি উদ্দেশ্য প্রতণাদিত হয়ে করেছে আর কতগুলো ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী তালিকা দেখে করেছে তারাই বলতে পারবে।

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

কাঁদছে আকাশ
কাঁদছে শ্রাবণের রোদ
শ্রাবণের সেই তাজা রোদ মেখে
আমরা আরো ধীরে হেঁটে যাই নাগরিক পথে......

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

বাংলাদেশে এখন সেই রামও নাই, সেই অযোধ্যাও নাই। তবে মিল আছে একটা বিষয়ে। বিচারবিহর্ভূত হত্যায় দেশের মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের সায় আছে। তারা নিরাপত্তা চান, সুশীল কর্পোরেট-বন্দিত সমাজ চান।

ছবিসুত্র -সমকাল ২৯ জুলাই ২০০৮

বাংলাদেশে এভাবে আইনবহির্ভূত হত্যাকান্ড- এখন নিয়মিতভাবে চলতে থাকলেও মিডিয়ায় সিভিল আর রেজির্স্টাড বুদ্ধিজীবীদের তরফ থেকে এমনকি বিজ্ঞ ও মাননীয় আইনজীবীদের পক্ষ থেকে এর বিরুব্দে কোনো প্রতিবাদ হয় না। এই সমাজ, এই দেশ যে পরদেশি সাম্রাজ্যবাদীদের প্রভুত্বের বশীভূত হবে, তিরিশ লাখ মানুষের প্রানের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশের স্বাধীনতা যে ভূলুণ্ঠিত হবে, এতে বিস্মিত হবার কিছুই নেই।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

ফূলবাড়ীর অভ্যুত্থানের পর, তিনজন শহীদ আর মেলা মানুষ আহত হওয়ার পর, জনতা এশিয়া এনার্জি (হালে জিসিএম) দালালদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়েছিল। তখন একজন আমাদের সেই ভাঙ্গা বাড়ি দেখিয়ে বলে, ‌'এইটা হলো খাদেমুল ইসলাম কাউয়ার বাড়ি। বিখ্যাত দালাল (আরেকজন পাশ থেকে বলে, বিখ্যাত না কুখ্যাত) এনার বাড়ি আমরা ভাঙ্গ্যা ফেলাছি।'
এই বলার মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস ও বিজয়ের রেশ ছিল। এভাবে যদি অন্য অন্য ভদ্রলোক কাউয়াদের ব্যাপারেও বলতে পারতাম....

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

খেকশিয়াল এর ছবি

আমারও মানিক ভাইয়ের মত অবস্থা , শুধু এটুকু বলতে পারি যে ওয়াসিফ ভাই যা লিখলেন এত ভয়াবহভাবে তুলনা আর ব্যাখা আমি এর আগে পড়ি নাই, আমি মনে করি এই লেখা সবার পড়া উচিত, প্রতিটা পত্রিকায় অন্তত যাওয়া উচিত । আপনাকে লাল সেলাম ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

রাষ্ট্রের মূল চরিত্রটি যতদিন পর্যন্ত না পরিবর্তিত হবে ততদিন পর্যন্ত এই মাৎস্যন্যায় চলতে থাকবে। রাষ্ট্র পরিচালনার ঔপনিবেশিক কাঠামো পরিবর্তন, স্বাধীন দেশ উপযোগী রাজনৈতিক সংগঠণ, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা ও সামরিক বাহিনী গড়ে তোলা, শিক্ষিত ও সচেতন নাগরিক গড়ে তোলার চেষ্টা করা, সর্বোপরি সাধারণ নাগরিকদের সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ এই পরিবর্তন আনতে পারে। মনে রাখতে হবে আমরা রাষ্ট্র বা এস্টাবলিষ্টমেন্টের বিরূদ্ধে নই। বরং তাকে জনোপযোগী করে গড়ে তোলাই আমাদের কাজ।

আপনার লেখাটি বহুল প্রচারের দাবী রাখে। তা কিভাবে হতে পারে তার পদ্ধতি আপনিই বের করতে পারেন। আমরা সচলের পাঠকেরা এর প্রিন্ট-আউট নিয়ে পরিচিতজনদের মাঝে বিলি করতে পারি। কথা বলতে পারি। বাঁচতে হলে জানতে হবে।

===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

রাষ্ট্রের মূল চরিত্রটি যতদিন পর্যন্ত না পরিবর্তিত হবে ততদিন পর্যন্ত এই মাতস্যন্যায় চলতে থাকবে।

সেটাই আসল কথা। কিন্তু সেখানে যাওয়ার জন্য ছোটো ছোটো স্ট্রাগল গুলো থেকে শেখা ও শেখানো, ছোটো ছোটো পরিখা লড়াই, ঝঁাকুনির ভেতর থেকে শত্রু-মিত্র চিনে নেয়া ও চেনানো, কালচারকে ডিকলোনাইজড করার মতো এক গুচ্ছ কাজ রয়ে যায়। বড়টার সাপেক্ষে ছোটোটাকে আর ছোটো লড়াইয়ের যায়গা থেকে বড়টাকে দেখতে পারাই তো আসল। সেই কাজই এখন বেশি দরকার।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মূর্তালা রামাত এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে ভাবতে বাধ্য নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।

মূর্তালা রামাত

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হ্যাঁ, আমাদের এখন অনেক কিছুই চাঁছাছোলা ভাবে ভাবা দরকার। ম্যাট্রিক্স দেখেছেন না, ঐ ম্যাট্রিক্সটা আগে ভাঙ্গা দরকার, যাতে জগতটাকে এবং জগতের বঞ্চিত-লাঞ্ছিত মানুষগুলোকেও নতুন করে চিনে নিতে পারি। তার আগে দরকার নয়, নিজে কোথায় দাঁড়িয়ে আছি তা বুঝে নেয়া? অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

ilajar  islam এর ছবি

Montobbo Nishproyojon. erokom lekha aro chai.
English e type korar jonno khoma prarthi.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।