নতুন যুগ আসছে- নেলসন ম্যান্ডেলা

গৌতম এর ছবি
লিখেছেন গৌতম (তারিখ: বুধ, ১১/০৩/২০০৯ - ১১:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৯৯৩ সালে নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত নেলসন ম্যান্ডেলার নোবেল বক্তৃতার অনুবাদ

মহামান্য রাজা,
রয়্যাল হাইনেস,
নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সদস্যবৃন্দ,
সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী, ম্যাডাম গ্রো হারলেম ব্রান্ডল্যান্ড, মন্ত্রীবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং রাষ্ট্রদূতবৃন্দ,
যৌথভাবে নোবেল বিজয়ী সহযোগী মি. এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ,
বন্ধু, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়বৃন্দ,

নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ীদের সারিতে আমাদের স্থান দেওয়ায় আমি আমার হৃদয়ের গভীর থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

পাশাপাশি আমি আমার স্বদেশী এবং নোবেল শান্তি পুরষ্কারে যৌথভাবে সম্মানিত বিজয়ী, রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এফ. ডব্লিউ ডি ক্লার্ককে অভিনন্দন জানানোর সুযোগটিও এখানে গ্রহণ করতে চাই।

আমরা যৌথভাবে যুক্ত হয়েছি দুই মহান সাউথ আফ্রিকান প্রয়াত চিফ আলবার্ট লুতুলি এবং হিজ গ্রেস আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটুর সাথে, যারা ক্ষতিকর জাতিবিদ্বেষ প্রথার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ সংগ্রাম সূচনার প্রারম্ভিক অবদানের জন্য ইতোপূর্বে নোবেল শান্তি পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এখানে এটা অসঙ্গত হবে না যদি আমরা আমাদের পূর্বসূরীদের মধ্য থেকে বিশিষ্ট নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী প্রয়াত রেভারেন্ড মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের নাম এখানে যুক্ত করি। সাউথ আফ্রিকান হিসেবে আজকে যে সমস্যাগুলো আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তিনি সেগুলোর সমাধান করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন এবং এ-সম্পর্কিত উদ্যোগের ফলেই তাঁকে প্রাণ হারাতে হয়েছে।

আমরা এখানে যুদ্ধ ও শান্তি, সহিংসতা ও অহিংসা, বর্ণবাদ ও মানুষের মর্যাদা, অত্যাচার ও দমননীতি এবং সার্বভৌমত্ব ও মানুষের অধিকার, দরিদ্রতা ও স্বাধীনতা- এই বিভাজনগুলোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলছি। লাখ লাখ মানুষ যারা যুদ্ধ, সহিংসতা, বর্ণবাদ, অত্যাচার, দমননীতি এবং দারিদ্র সৃষ্টিকারী সামাজিক সিস্টেমগুলোর বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকা নিয়েছে, আমরা আজকে এখানে এসেছি তাদের পক্ষ থেকে; আমাদের ভূমিকা তাদের প্রতিনিধির চাইতে বেশি কিছু নয়।

সারা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ, বিভিন্ন দেশের সরকার ও সংস্থাসমূহ যারা একটি দেশ হিসেবে সাউথ আফ্রিকা বা এর মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিয়ে কেবল বর্ণবাদের মতো অপরাধ, মানবতাবিরোধী ও অমানবিক পন্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো এবং বর্ণবৈষম্য দ্রুত দূর করতে অবস্থান নিয়েছিলো এবং আমাদের সপক্ষে যুক্ত হয়েছিলো, আমি এখানে তাদের প্রতিনিধি হিসেবেও এখানে দাঁড়িয়েছি।

কোনো নিজস্ব স্বার্থ ছাড়াই আমাদের দেশের ভেতর ও বাইরের এসব অগণিত মানুষ অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে যে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলো, তার একটি মহত্ত্ব আছে। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছিলো যে, একজনের প্রতি একটি আঘাতের অর্থ হচ্ছে সবার প্রতিই আঘাত; এবং সে কারণে ন্যায়বিচার এবং সাধারণ মানবতাবোধ রক্ষায় তারা একসঙ্গে কাজ করেছে। বহু বছর ধরে তাদের সাহস ও ধৈর্য্যরে কারণে আজকে আমরা এমন একটি ক্ষণ নির্ধারণ করতে পারি যখন সব মানবতা একত্র হয়ে আমাদের শতকের অন্যতম একটি বিশেষ মানবিক বিজয় উদযাপন করতে পারবে। ওই বিশেষ মুহূর্তে আমরা সবাই একত্রে বর্ণবাদ, জাতিবিদ্বেষ এবং শ্বেতাঙ্গদের সংখ্যালঘু নীতির বিরুদ্ধে বিজয়ের আনন্দ উদযাপন করতে পারবো। এই বিজয় একইসাথে পাঁচশ বছরের আফ্রিকায় উপনিবেশবাদের ইতিহাসের সমাপ্তি হিসেবে চিহ্নিত হবে যা শুরু হয়েছিলো পর্তুগিজদের সাম্রাজ্য স্থাপনের মাধ্যমে। এ কারণে এটি ইতিহাসের একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পাশাপাশি বর্ণবাদের বিরুদ্ধে পৃথিবীর মানুষের সংগ্রামের প্রামাণিক দলিল হিসেবে কাজ করবে।

এই দামী মর্যাদা এবং অমূল্য উপহারটি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ দিকের মানুষগুলোর জন্য প্রস্তুতি-সহায়ক হিসেবে কাজ করবে যারা মানবতার জন্য কষ্ট করার পাশাপাশি স্বাধীনতা, শান্তি, মানবিক মর্যাদা এবং মানুষের পরিপূর্ণতা- সবকিছুর জন্য ত্যাগ স্বীকার করছে।

অর্থের বিনিময়ে এই পুরষ্কারকে পরিমাপ করা যাবে না। আমাদের পূর্বপুরুষরা যে আফ্রিকান মাটির ওপর পদক্ষেপ ফেলেছিলেন, আমরা সেগুলোর ওপরই পদস্থাপন করেছি। দুর্মূল্য কিছু ধাতু ও বহুমূল্য পাথরের সমষ্টিগত দাম দিয়ে সেই অবশিষ্টাংশ মাটির সমান মূল্যবিচার করা যাবে না। তবে শিশুদের সুখ ও কল্যাণের নিরিখে এর মূল্যমান অবশ্যই বিচার করা যাবে কারণ শিশুরা যে কোনো সমাজে তাৎক্ষণিক নির্মমতার শিকার এবং আমাদের বহুমূল্য সম্পদ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, শিশুরা অন্তত একটি উন্মুক্ত পরিবেশে বিচরণ করতে পারবে। তাদের ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করতে হবে না, তারা রোগে ধ্বংস হবে না, উপেক্ষা, উৎপীড়ন বা অপব্যবহারের কষ্টকর যন্ত্রণার শিকার হতে হবে না। আজকে এই গুরুত্বপূর্ণ দর্শকদের সামনে আমরা একটি নতুন সাউথ আফ্রিকার প্রতিজ্ঞা করছি যেখানে শিশুদের বেঁচে থাকা, সুরক্ষা এবং উন্নতির লক্ষ্যে বিশ্ব ঘোষণার উদ্দেশ্যগুলোকে যে কোনোভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

শিশুদের পাশাপাশি তাদের পিতামাতাদের সুখ ও কল্যাণের মাধ্যমেও এই পুরষ্কারের মূল্যবিচার করা যাবে যারা পৃথিবীকে চলমান রেখেছেন অপহৃত হওয়ার ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে অথবা রাজনৈতিক বা বস্তুগত লাভের কারণে মৃত্যুবরণ করে বা দারিদ্র্যের কশাঘাতে উপেক্ষিত হয়ে। পাশাপাশি বেকার, গৃহহীন, ক্ষুধার্ত মানুষ যারা হতাশার ভারী বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে, তাদেরকে এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে হবে।

যারা কষ্ট সহ্য করেছে তাদের সবার কাছে এই উপহারের মূল্য রয়েছে। আমাদের দেশের সে সমস্ত মানুষের সুখ ও কল্যাণের দ্বারা এর মূল্যমান বিচার করা হবে যারা এই অমানবিক বিভেদের দেওয়াল উপড়ে ফেলবে, যে দেওয়াল তাদেরকে বিভক্ত করে রেখেছে।

মানুষের মর্যাদার জন্য অবমাননাকর যে বিষয়গুলো কাউকে প্রভু বানায়, কাউকে বা দাস, সেগুলোকে নির্মূল করতে এই মহান মানুষগুলোই এগিয়ে আসবে। এই মর্যাদাহানিকর বিষয়গুলো প্রত্যেককে লুণ্ঠনকারীতে রূপান্তরিত করতে চায় যাদের টিকে থাকা নির্ভর করে কেবল অন্যদের ধ্বংস করার ওপর।

আনন্দঘন শান্তিপূর্ণ অবস্থা ও বিজয়োল্লাসের মাধ্যমেই যৌথভাবে পাওয়া আমাদের এই সম্মান যথাযথ মর্যাদা পাবে। কারণ সাধারণ মানবতা সাদা-কালোকে এক করে একটি অভিন্ন মানবিক গন্তব্যে নিয়ে যাবে। এই বিজয়োল্লাস আমাদের প্রত্যেককে জানাবে- স্বর্গের শিশুরা যেভাবে বাঁচে, আমাদের জীবন হবে তেমনই।

সুতরাং আমাদের বাঁচতে হবে। কারণ আমরা এমন এক সমাজ গড়বো যেখানে প্রত্যেকে সমান অধিকার নিয়ে জন্মাবে এবং একইভাবে জীবনযাপন করার পাশাপাশি প্রতিটি মানুষ স্বাধীনতা, উন্নতি, মানবাধিকার এবং সুশাসনের অধিকারী হবে। এই সমাজ কখনোই চেতনার বন্দীত্ব স্বীকর করবে না কিংবা কারো মানবাধিকার নষ্ট হওয়া বরদাশত করবে না। পাশাপাশি নিজেদের স্বার্থের জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে যারা মানুষের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায়, তারা আর কখনোই শান্তির এই পরিবর্তনকে বাধা দিতে পারবে না।

একই সাথে আমরা আরেক নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী অং সান সু কিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বার্মা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। বার্মার জনগণের কল্যাণের জন্য তাঁকে এবং তাঁর প্রতিনিধিদের আলোচনায় যুক্ত করার আহ্বান জানাই। এই কাজটি করার মতো ক্ষমতা যাদের আছে, আর কোনো বিলম্ব ছাড়া তাঁর মেধা ও শক্তিকে দেশের মানুষের কল্যাণ এবং সার্বিকভাবে মানবতার কল্যাণের কাজে লাগানোর জন্য তাদের অনুরোধ জানাই।

আমাদের দেশের কঠিন ও বিরক্তিকর রাজনীতিকে দূরে রেখে আমি যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মি. এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ককে সম্মান জানানোর সুযোগটি নিতে চাই। আমাদের দেশ যে ভয়াবহ ভুলের মধ্যে ছিলো এবং মানুষকে জাতিবিদ্বেষের এক আরোপিত পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছিলো, সেটি স্বীকার করার সাহস তাঁর রয়েছে। সাউথ আফ্রিকার সব মানুষকে আলোচনার মাধ্যমে যেতে হবে এবং সেখানে সমান অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেদেরই ঠিক করে নিতে হবে- এই বিষয়টি বুঝার মতো অন্তর্দৃষ্টি এবং গ্রহণ করার মানসিকতা তাঁর মধ্যে রয়েছে। তারপরও আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে যে, পরিত্যাজ্য একটি ধারণাকে আঁকড়ে ধরে তারা ন্যায়বিচার ও শান্তির পথে অবদান রাখতে পারবে। সেটি যে নৈরাজ্য ছাড়া আর কিছু সৃষ্টি করে না, তা তো এখন প্রমাণিত। আমরা আশা করি, যথেষ্ট কারণসহকারেই তাদের উপলব্ধি করবে যে, ইতিহাস কখনোই ভুলে যাওয়ার নয় এবং ভয়াবহ অতীতের পুনরুৎপাদনের মাধ্যমে নতুন সৃষ্টি হবে না, নতুন সমাজ হবে পরিশুদ্ধ এবং নতুনভাবে।

ঠিক আজকে যে অবস্থা আছে, আমাদের দেশকে সেরকম গণতান্ত্রিক রূপান্তরের কাছাকাছি আনার আন্দোলনে যেসব দেশপ্রেমিক মুখ এবং সংগঠন মূল ভূমিকা পালন করেছে, তাদের প্রতিও সম্মান জানাতে চাই। আমরা আনন্দিত যে, ’স্বদেশ’ গঠনে যারা কাজ করেছে এবং করছে তারা এবং এসব সংগঠনের অনেক প্রতিনিধি আমাদের সাথে অসলোতে এসেছে। নোবেল শান্তি পুরষ্কার যা আমাদের দিয়েছে, সেগুলো তাদেরও শেয়ার করতে হবে।

আমরা বেঁচে আছি এই আশা নিয়ে যে, সাউথ আফ্রিকা নিজেকে পুনর্গঠিত করতে সচেষ্ট হবে যেমন করে একটি মাইক্রোসোম নতুন পৃথিবীতে আসার জন্য প্রাণপন সংগ্রাম করে। এটা হবে একটি গণতন্ত্রের বিশ্ব, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, দারিদ্র্য, ক্ষুধা, বঞ্চনা ও উপেক্ষার ভয়াবহতা থেকে মুক্ত, গৃহযুদ্ধ ও বাইরের আগ্রাসনের যন্ত্রণা ও হুমকি থেকে মুক্ত, লাখ লাখ উদ্বাস্তুর করুণ অবস্থা থেকে মুক্ত এক বিশ্ব। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে সাউথ আফ্রিকা এবং পুরো আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল। এটি আমাদের সবাইকে উদ্দীপ্ত করছে এমন একটি স্রোতে ভেসে যেতে যেখানে মানুষ তার চেতনায় যেরকম পৃথিবী গড়তে চায়, এ অঞ্চলকে সেরকমভাবে একটি বাসযোগ্য আবাসভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে।

আমরা বিশ্বাস করি না, যে ঘটনাগুলো ঘটে গেছে সেগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য এই নোবেল শান্তি পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। আমাদের বলা দরকার, জাতিবিদ্বেষ পদ্ধতির মৃত্যু ঘটতে যারা দেখেছে, এই নোবেল শান্তি পুরষ্কার তাদের সবার সম্মিলিত হৃদয়ের সাড়া বা আবেদন। আমরা তাদের ডাক বুঝতে পেরেছি। তারা চায় যে, আমাদের জীবনে যা ঘটেছে প্রকৃতপক্ষে মানুষের বেঁচে থাকার স্বাভাবিক অবস্থার শর্ত হচ্ছে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, শান্তি, বর্ণবাদমুক্ত, সবার জন্য উন্নতি, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, লিঙ্গবিভেদমুক্ত এবং মানুষের মাঝে ঐক্য।

এই আবেদনে সাড়া দিয়ে এবং তাদের মহত্ত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে পৃথিবীকে নতুন করে সাজাতে আমাদের যা করণীয় আমরা তা করবো, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আমাদের ‘রেচড অব দ্য আর্থ’ (পৃথিবীর জঘন্য ব্যক্তি) বলতে না পারে। আপনারা আমাদের ওপর এই বিশ্বাসটুকু রাখতে পারেন।

ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন কখনোই বলতে না পারে, গতানুগতিকতা, নিন্দাবাদ বা স্বার্থপরতার কারণে মানবতাবাদের আদর্শ, যা নোবেল শান্তি পুরষ্কারের মূল বিষয়, তা অনুসরণে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।

আমরা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের উক্তিটিকে প্রমাণ করার জন্য সংগ্রাম করতে চাই। তিনি বলেছিলেন, মানবতা খুব বেশিদিন বর্ণবাদ এবং যুদ্ধের নক্ষত্রহীন অন্ধকার রাত্রে দুঃখজনকভাবে বাধা থাকতে পারে না। আমরা আমাদের কাজের মাধ্যমে আরো প্রমাণ করতে চাই যে তিনি কেবল স্বপ্ন দেখছিলেন না যখন তিনি বলেছিলেন- সত্যিকারের ভ্রাতৃত্বের সৌন্দর্য এবং শান্তি হীরে, রুপা বা সোনার চেয়ে অধিকতর দামী। নতুন যুগ আসছে।

ধন্যবাদ।

×××

শখের বশে নেলসন ম্যান্ডেলার নোবেল বক্তৃতা পড়তে গিয়ে মনে হলো অনুবাদ করেই ফেলি। যদিও এতে কপিরাইট আইন ভঙ্গ হয়েছে কিনা বুঝতে পারছি না। এ ব্যাপারে কারও কিছু জানা থাকলে তা জানানোর অনুরোধ করছি। সেক্ষেত্রে লেখাটি সরিয়ে নিবো।

তবে আমি মনে করি, যদি এর ওপর কপিরাইট থাকে, জ্ঞান সৃষ্টি, ব্যবহার ও নেলসন ম্যান্ডেলার যে স্পিরিট তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কপিরাইট আইন কোনো বাধা হওয়া উচিত নয়।

নেলসন ম্যান্ডেলার ছবিটি নেওয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া থেকে।


মন্তব্য

নদী এর ছবি

আমাদের সভ্যতার কুৎসিত দিকগুলো মহামানবেরও জন্ম দিয়েছে । এটাই হয়তো সভ্যতার ইতিহাস।
এই মানুষটিকে যতবারই দেখি ততবারই স্যালুট জানাই। অনেক মহাপুরুষের নাম কবিতায়, গদ্যে আর ইতিহাসে পড়েছি। কিন্তু তিনিই একমাত্র মহাপুরুষ যাকে জীবিত দেখছি।

২৭ বছরের জেল জীবনের প্রতি দিনে তিনি কি কি স্বপ্ন দেখতেন? সেই বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন কেন নিজে দেখতে পারি না?
অনুবাদের জন্য ধন্যবাদ।

নদী

গৌতম এর ছবি

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, নদী।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বছর খানেক আগে কোনো এক সন্ধ্যায় আজীজের ফুটপাথে খাড়ায়া এই প্রকল্পর কথা বলছিলেন। এতদিন পরে শুরু করলেন হপায়?

যা হোক... ধন্যবাদ তবু।

নেত্রকোনায় গিয়া পোলাটার হাত খুলছে দেখা যাইতেছে... চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

গৌতম এর ছবি

হ, আরো কিছু পড়া আছে। দেখি সময় পাইলে দিমুনে।

আর নেত্রকোনা এখনও যাওয়া হয় নাই। বেতন নিয়া আলোচনা চলতাছে। ঠিকঠাক হলে চলে যাবো।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

রানা মেহের এর ছবি

যত কপিরাইট আইন থাক।
ভাষনটার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

গৌতম এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ। কপিরাইট আইনের ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে কারও কোনো কমেন্ট পেলাম না। বিশেষ করে যারা কপিরাইট আইন সম্পর্কে ভালো জানেন, তাদের বক্তব্য আশা করছিলাম।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

কিছু পয়েন্ট কামাই এর ছবি

ভাষন = ভাষণ

গৌতম এর ছবি

ধন্যবাদ। ভুলটি ঠিক করে নিলাম।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

নোবেল বক্তৃতার একটা সিরিজ বানান।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

গৌতম এর ছবি

সিরিজ বানাতে পারবো কিনা বুঝতে পারছি না, কিন্তু আরো কিছু অনুবাদ করার চিন্তা আছে।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।