চিঙ্কু উপাখ্যান

বন্দনা এর ছবি
লিখেছেন বন্দনা [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৭/২০১১ - ১:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি যেই ল্যবে বসি, ওটাকে মোটামুটি চৈনিক অধ্যুষিত এলাকা বলা যায়। আসে পাশে, ডানে বামে, পিছনে যেদিকেই তাকানো যায় সব সিটেই তেনারা আছেন।আজকের এই পোস্ট লিখতে বসলাম আমার চিঙ্কু ল্যবমেটদের কাজ কর্মের বিচিত্র কিছু নমুনা দেবার জন্য। আগে যখন ল্যবে বাংলাদেশি সিনিয়র ভাইরা ছিলেন এসব অত্যাচার সহ্য করা লাগেনাই। ওনারা ও গেছেন, পুরা ল্যব এখন চিঙ্কু দিয়ে ভরে গেসে, সারাদিন তাদের কিচিরমিচির শোনা এখন বাধ্যতামূলক। এখানে আসার পর আমি একবার সুপারভাইজার ও পরিবর্তন করছি এদের যন্ত্রণায়। আগের ল্যবে ও সব চিঙ্কু ছিলো, সুপারভাইজার ও চিঙ্কু, এই সুবাদে আমারে একবার এক্সকিউজ মি বইলা তারা পুরা মান্থলি মিটিং চৈনিক ভাষায় সাইরা ফেলতো। আমিতো কিছুই বুঝিনা, একবার এর দিকে তাকাই তো একবার সুপারভাইজার এর দিকে তাকাই। কাহাতক আর এই জ্বালা সহ্য করা যায়। তার উপর পোষ্ট ডক্টরেট যেই লোকটা ছিলো আমাদের গবেষণা দেখাশোনা করার জন্য, ওর ইংরেজি তো মাশাল্লা এত ভালো যে ও আমার ছায়া দেখলে ও দৌড়ে পালাতো। তবে আমি ও কম যাইনা, তারে ১, ২ দিন পর পর পাকড়াও করা শুরু করলাম। প্রথম প্রথম ও আমাকে কি কি যেন বলতো, সেটা ইংরেজি না চৈনিক ভাষা সেটা বুঝতে বুঝতেই আমাকে রেখে সটকে পড়তো। পরে আর যখন পারতোনা, অন্য একজন ল্যবমেটকে ধরে নিয়ে আসতো অনুবাদ করে দেবার জন্য। এদের ইংরেজি শুনতে শুনতে আমারতো ইংরেজি ভাষা ভোলার মত অবস্থা। তাদের প্রাণান্ত চেষ্টায় ও যখন আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা তারা একরকম আমারে এড়িয়ে চলতে থাকে। আমি ও এক একবার এক একজন ল্যবমেটকে ধরা শুরু করলাম। ফলাফল এই দাঁড়ালো যে শেষমেশ পুরা ল্যব একদিকে আর আমি অন্যদিকে একলা। কেউ আমার সাথে কথা কইতে চায়না। বাধ্য হয়ে তখন আমি সুপারভাইজার পরিবর্তন করে বাংলাদেশি একজন সুপারভাইজারকে রাজি করালাম আমাকে স্টুডেন্ট হিসেবে নিতে। তার জন্য অবশ্য ওনার কাছে গিয়ে ব্যাপক কান্নাকাটি করা লাগছে। যাই হোক আমার এখনকার ল্যবে ফেরত আসি।

চিঙ্কুরা খুব পুষ্টিগুণ হিসেব কইরা খাবার দাবার খায়। ল্যবমেটগুলারে দেখি প্রায়ই কি যেন একটা খায় ডেজার্ট হিসেবে, পুডিং এর মত দেখতে, সয়া-বিন দিয়ে বানানো। যেদিন আমার এক্কেবারে পাশেরজন খায়, সেদিন আমার অবস্থা পুরাই কাহিল। কেমন যেন সুরুত সুরুত করে একটা আওয়াজ করে খাওয়ার সময়, আমার শরীরের লোম সব দাঁড়িয়ে যায়। এই আওয়াজ সহ্য করা মুটামুটি অমানুষিক অত্যাচারের পর্যায়ে পড়ে। আমি লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে কয়েকবার বলে ও ফেললাম ওদেরকে, কিন্তু কোন লাভ হয়নাই। একটু কম শব্দ করে খাওয়ার চেষ্টা করে যদি ও, কিন্তু আমার অবস্থা হোল যেই লাউ সেই কদুর মত। ওরা ও কয়েকদিন পরে ভুলে গিয়ে আবার পুরো উদ্যমে আগের মতই সশব্দে খাওয়া শুরু করে।

ল্যবে একটা ব্যপার চালু ছিলো যে, কেউ নিজ দেশে গেলে সবার জন্য খাবার দাবার নিয়ে আসে। যেমন আমি গেলে হয়ত ওদের জন্য মিষ্টি, নাড়ু কিংবা পিঠা নিয়ে আসি। তো ওরা যখন খাবার নিয়ে আসলো, তা দেখে তো আমার চক্ষু চড়কগাছ। কিসব সিমের বিচি, কুমড়ার বিচি ভাজা নিয়ে আসে। ওদের ওখানে নাকি খুব বিখ্যাত খাবার। কি আর করা, হাসি মুখে ওদের বিখ্যাত সেই শক্ত বিচি ভাজা কামড়ে কামড়ে খেতে হয় ওদের সামনেই, আর বলতে হয় অনেক মজার তো। এটুকু তাও সহ্য করতে পারছিলাম, কিন্তু যখন ডাক লেগ বলে একটা মাংসের পোটলা হাতে ধরিয়ে দিল সেদিন ব্যাপক ভয় পাইছিলাম। একটু সস দিয়ে মাখানো সিদ্ধ হাঁসের মাংস দেখেই আমার পেট ফোলা শুরু করলো, খাওয়া তো দূরে থাক। কোনমতে ওর সামনে থেকে ভাগলাম পরে খাবো বলে।

ডুরিয়ান নামে এখানে একটা ফল পাওয়া যায়, স্থানীয় মানুষজনকে দেখলাম খুব পছন্দ করে খায়। ফলটা অনেকটা কাঁঠালের মত দেখতে এবং তীব্র গন্ধযুক্ত। আমার নাক আবার মাশাল্লা খুবই তীক্ষ্ণ, কোন গন্ধ বা দুর্গন্ধ মিস করেনা। একদিন ল্যবে ঢুকতেই কেমন যেন তীব্র ঝাঁঝালো বিশ্রী রকমের একটা গন্ধ নাকে এসে ধাক্কা মারলো। আমারতো গন্ধে দম বন্ধ হবার যোগাড়। যে গতিতে ল্যবে ঢুকছি তার কয়েকগুণ গতিতে প্রস্থান করলাম। পরে একে তাকে ধরে জানতে পারলাম, ওরা সবাই একটু আগেই পেট-পুরে ডুরিয়ান খাইছে। এই জিনিস যে মানুষ কেমনে খায় আল্লাহ মালুম। তয় আমার কথা হোল তোরা ডুরিয়ান খাবি খা, ল্যবের ভিতরে খাবি কেন। আর অহেতুক আমার নাকের উপর এই অত্যাচার করা কেন বাবা, আমি তোগো কি ক্ষতিটা করছি।

সব চিঙ্কুই দেখলাম কম বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। নিয়ম করে এক্সারসাইজ করেনা বা কিছু একটা খেলাধুলা করেনা এমন খুব কমই দেখলাম ওদের মাঝে। আমার কিছু ল্যবমেট আবার অতিরিক্ত রকমের একটিভ, অফিস আওয়ারেই ওরা জগিং করতে যায়। জগিং করতে যাওয়া নিয়ে আমার কোন প্রব্লেম নেই, প্রব্লেমটা শুরু হয় জগিং করে ফেরার পর। তারা তাদের ঘর্মাক্ত জামাকাপড়গুলো ল্যবের চেয়ারে মেলে দিবে। এই দৃশ্য দেখে প্রথমদিন আমার নাড়িভুঁড়ি বের হয় আসার যোগাড় হয়ছে। ল্যব এর মত বন্ধ একটা ছোট্ট জায়গায় কেও যদি এভাবে জামাকাপড় চেয়ারে মেলে দেয়, ওই জায়গায় মানুষজন টিকে কেমন করে আপনারাই বুঝে দেখুন এই বেলা। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে দেখলাম কারোই কোন মাথাব্যথা নাই।
আমাদের ইউনিভার্সিটিতে রোজই কোন না কোন ও সেমিনার লেগেই থাকে। এইসব সেমিনারে আবার খাবার দাবারের ও ভালোই আয়োজন থাকে। ঠিকঠাক মত খোজ রাখলে সারাবছরই হয়তো আপনি দুপুরের খাবারটা ফ্রিতে পেতে পারেন। তো আমাদের ল্যবের আশেপাশে যেদিন এরকম সেমিনার থাকে, আমার চিঙ্কু ল্যবমেটরদের মাঝে কেমন যেনো একটা অস্থির-ভাব বিরাজ করতে থাকে। কখন সেমিনার শেষ হবে, আর কখন ওরা খাবারের উপর হামলায়ে পড়বে তার প্রতীক্ষায় খাবারের আশে পাশে ঘুরঘুর করতে থাকবে। অবশেষে যখন সেমিনারের পর দুহাত ভর্তি খাবার নিয়ে ল্যবে এসে ঢুকবে, এমন একখান হাসি দিবে যেন কি জানি জয় করে আসছে এক এক জন। ওদের নেটওয়ার্ক এত ভালো যে ফ্রি খাবার এর খোঁজ পাওয়া মাত্র একজন এসে বাকি সবগুলারে খবর দিয়ে নিয়ে যাবে। আর যেখানেই ফ্রি খাবার সেখানেই তারা কেমনে যেন ঠিক পিঁপড়ার মত হাজির হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমারে ও টানাটানি করবে তাদের সাথে যোগ দেবার জন্য।

গতবছর এক চিঙ্কু ল্যবমেটকে নিয়ে কনফারেন্সে গেলাম আমরিকাতে। খুব শখ করে গেলাম এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং দেখতে। গিয়ে দেখি উপরে উঠতে নাকি ২৫ ডলার লাগবে। আমার চিঙ্কু ল্যবমেট বেকে বসলো, সে এত টাকা দিয়ে কিছুতেই উপরে উঠবে না।আমি কইলাম মিয়া আমরিকা তো একবারই আসবা, বারবারতো আসবানা, চলো উপরে উঠি। কে শোনে কার কথা। সে কিছুতেই এত টাকা শুধু উপরে উঠার জন্য খরচ করবেনা, বাইরে থেকেই নাকি অনেক ভালো দেখা যায়। আমি কইলাম ঠিক আছে, তুমি না উঠলে না উঠো, আমি উঠুমই উঠুম, এতদূর আইছি যখন, এম্পায়ার স্টেট না দেইখা বাইত যামুনা। তখন সে কয় তুমি উঠোগা তাইলে, আমি হোস্টেলে যাইগা। এই কইয়া আমারে অই খানে থুইয়া রাত ৭ টার সময় অই পোলা গেলোগা। তারপর থেকে কানে ধরছি চিঙ্কুদের সাথে আর কোথাও যামুনা, এগুলা সব হাড়কিপটে। কিন্তু এমনই কপাল আমার এইসব চিঙ্কুদের সাথেই আমার দৈনন্দিন উঠাবসা করতে হয়।
বন্দনা


মন্তব্য

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

গন্ধের বিরূদ্ধে এয়ার ফ্রেশনার কার্যকরী হতে পারে। বুটকা গন্ধের এয়ার ফ্রেশনার বাংলাদেশ থেকে আমদানী করতে পারেন যাতে বিটকেলে গন্ধে চৈনিকরা পালাতে বাধ্য হয়।
কিছু আতর আছে তাও কার্যকরী হতে পারে।
চৈনিক দেখলেই বলুন "আতর লাগান ভাই, আতর"।
ধন্যবাদ।

এম আব্দুল্লাহ

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ আব্দুল্লাহ ভাই। এই কথাটা আমার মাথায় আগে কেনো আসে নাই বুঝলামনা, আপনার পরামর্শ প্রয়োগ করে দেখবো।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমার আতর ব্যবসায়ী বন্ধু মামুনের দোকানে মুর্দার ফ্লেভারের (মরা লাশের গন্ধওয়ালা) আতর পাওয়া যায়। দাম কিন্তু সাধারণ আতর থেকে অনেক অনেক বেশি। লাগলে আওয়াজ দিয়েন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

বন্দনা- এর ছবি

হাহাহাহা , রাতঃস্মরণীয়দা এইটা কিন্তু ভালো বলছেন, আতরের গন্ধ যদি ও ভালো পাইনা, গন্ধে গন্ধে কাটাকাটি হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ঘ্যাচাং

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অপছন্দনীয় এর ছবি

হাহা, ২৫ ডলার!

এক দর্শনীয় জায়গা দেখতে গেছিলাম এক চিঙ্কুর সাথে, আমার কলিগ ছিলো। সেখানে ঢোকার টিকিট ওখানকার লোকজনের জন্য যা, বিদেশীদের জন্য ২৫ গুণ বেশি (১০ আর ২৫০)। দেখাটেখা সেরে বের হতে গিয়ে গেটের সামনে এসে বললাম পার্কিং লটে একটা টয়লেট দেখেছি, যাওয়ার আগে ওখানে যেতে হবে। ঠিক সামনেই বের হওয়ার গেট, আর পার্কিং লট গেটটা পেরোলেই, টয়লেটও ঠিক গেটের পাশে - ব্যাটা আমার কলার চেপে ধরলো। সে কিছুতেই আমাকে ওই কম্পাউন্ড ছেড়ে বেরোতে দেবে না, প্রায় আধ মাইল পেছনে একটা টয়লেট দেখে এসেছে, এখন এই আধমাইল হেঁটে ওখানে যেতে হবে - কারণ ওটা ওই টিকিটের দামের মধ্যে।

অপছন্দনীয় এর ছবি

তবে সাথে এটাও বোধহয় বলা উচিত, ঠিক এর উল্টোটাও দেখেছি ওই চৈনিকদের একজনের মধ্যেই। আসলে কোন দেশেরই সবাই ভালো বা সবাই খারাপ নয়। খারাপ, কিপ্টে, নোংরা, ম্যানারলেস সবার মধ্যেই আছে।

আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমার দেখা সেরা মানুষটি কে, তিনি একজন চীনা। আর যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ মানুষটি কে, সেটাও চীনা।

বন্দনা- এর ছবি

"আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমার দেখা সেরা মানুষটি কে, তিনি একজন চীনা। আর যদি জিজ্ঞেস করা হয় আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ মানুষটি কে, সেটাও চীনা।"
সহমত।

বন্দনা- এর ছবি

আপনার অভিজ্ঞতা দেখি আমার চেয়ে ও খারাপ :O। যাক আমার মত দুএকজন মানুষ আশে পাশে দেখলে মন্দ লাগেনা পছন্দনীয় ভাই।

বৈচিত্র এর ছবি

প্রকট বর্ণবাদী লেখা।

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ বৈচিত্র আপনার মন্তব্যের জন্য। লিখাটা পুরাটাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লিখা। মাইনোরিটি দৃষ্টিভঙ্গির থেকে লিখার কারনে হয়তো আপনার কাছে লিখাটা বর্ণবাদী মনে হয়েছে, সেজন্য দুঃখিত।

ফাহিম হাসান এর ছবি

রম্য হিসেবে খারাপ না, তবে কিছু জায়গা ভালো লাগে নাই। মজা করার সময় আমরা অনেক কিছু বলি কিন্তু একটা লেখায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই কৌতুকবোধটা ধরে রাখা কঠিন।

"যেখানেই ফ্রি খাবার সেখানেই সবাই কেমনে জানি পিঁপড়ার মত হাজির হয়ে যায়"
"এগুলো সব হাড়কিপ্টে"

এগুলো যে কোন জাতির ক্ষেত্রেই কম বেশি খাটে। Racial Jokes করাটা বেশ কঠিন কারণ এতে খুব তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। russell peters এর কয়েকটা পর্ব দেখতে পারেন।

শুভেচ্ছা

বন্দনা- এর ছবি

"একটা লেখায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই কৌতুকবোধটা ধরে রাখা কঠিন"
আসলেই খুব কঠিন একটা কাজ।
সবাই হার্ট হচ্ছে দেখে নিজের কাছেই খারাপ লাগছে এখন, কাউকে হার্ট করার ইচ্ছে থেকে লিখাটা লিখিনাই। ল্যবে মাইনোরিটি হবার সুবাদে, নিজের অভিজ্ঞতাটা খুব একটা সুখকর না। এইজিনিসগুলোই তুলে ধরতে চেয়েছিলাম লিখাটায় তবে হাল্কাভাবে। russell peters এর পর্বগুলো দেখবো আশা করছি। ।গঠনামুলক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ফাহিম ।

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার কষ্টে কিন্তু আমার হাসি পাইলোনা, কষ্টান্বিত হইলাম দেঁতো হাসি

তবে এই জাতির পৃথিবীর মানচিত্রে আবার দারুন করে ফিরে আসার যে উদাহরন তা আমাকে চমৎকৃত করে, আমি চায়না যেয়ে কাউকে দুদন্ড পেরিয়ে তিনদন্ড দাড়িয়ে থাকতে দেখিনি, সবাই ছুটছে, কাজ করছে আর সারাক্ষন কিচিরমিচির করছে, ইংরেজী বলতে পারেনা বলে আমাদের মত আত্মশ্লাঘা নেই, সরল হাসিতে বলে ‘নো ইংলিত’। শিল্পেও এদের ইতিহাস দারুন সমৃদ্ধ বলে জানতে পাই কিন্ত আমার পড়া হয়ে উঠেনা। আমি খুবই কৌতুহলী এদের ব্যাপারে।

আপনার লেখা পড়ে মনে হলো চৈনিক ভাষা শিখে যাওয়ার একটা দারুন সুযোগের মধ্যে আছেন। ভালো থাকুন, কাম্পে চোখ টিপি

বন্দনা- এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তানিম আমার জন্য কষ্টান্বিত হবার জন্য। আমি ও আপনার সাথে একমত, এরা খুবই পরিশ্রমি জাতি।সকালে ওরা সবার আগে আসবে ল্যবে আর যাবে ও একবারে সবার পরে।
আপনি ও ভালো থাকুন হাসি

guest_writer এর ছবি

হুজুইগা বানং্গালি, হেকমতে চীনা ।
আমার তো মনে হয় অরা বেশ ভালো লোক - অন্তত গ্রা্যড স্টুডেন্ট্গুলা। অগোরে উদ্ধতভাবে কখনো কথা বলতে শুনি নাই,উদ্ধত আচরন করতে দেখি নাই। উদ্ধত আচরনের ভাষা দুনিয়ার সব জাতির মাইনষের জন্য একই । ওইটা বুঝার জন্য চাইনিজ ভাষা জানা লাগে না।
আর ফ্রী ফুড? কন কী !!! আমি তো দেখ্লাম বাকিরাও কম যায় না - আমেরিকানরা সহ। ফ্রী ফুড দেখ্লে সবারই জিহ্বা শুলাইতে দেখছি - নিজেরটা সহ।
ওদের সবচেয়ে বড় শক্তি যেইটা আমার মনে হয় - পারুম না , এই কথাটা ওরা চিনে না, চিন্লেও পুইছা দেখে না। বায়োলজীতে আণ্ডারগ্রা্যড কইরা আইসা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং আর ইলেক্ট্রিকা্যল এ থিসিস মাস্টারস করতাছে, এই রকম দুইটা উদাহরন দেখ্লাম এখন অবদি । আমি কইতাছিনা এইটা খুব একটা মারফতী কাম, কিন্তু, আমার তো মনে হয় আমরা চিন্তাও করতে পারি না এরকম।

-মেফিস্টো

অপছন্দনীয় এর ছবি

সি এস ই তে বি.এসসি. করে বুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যালে অ্যাপ্লাই করেছিলাম মাস্টার্সের জন্য - ভর্তি পরীক্ষায় বসতে দিতেই রাজী হয়নি। অথচ যে কয়টা বিষয়ের উপরে ভর্তি পরীক্ষা ছিলো তার সব কটাই আমার কোর কোর্সের মধ্যে পড়ে। শেষটা অনুরোধ করেছিলাম ভর্তি পরীক্ষাটা দিতে দিতে, তারপরে নাহয় বাদ দিয়ে দিতো। কিন্তু পাবলিক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং অন্যান্যরা হলেন রইস আদমি - ঈশ্বরের বর্তমান অবতার, তাঁরা জানেন না এমন কিছু কি আছে পৃথিবীতে?

আধুনিক চিন্তা করার ক্ষমতা এবং সাহস দু'টোই আমার আছে, কিন্তু দুঃখিত, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামান্য শিক্ষক এবং কর্মকর্তাদের নেই, কোনদিন গজাবে এতটা আশাও করি না।

এইসব রইস আদমিকে ইউনিভার্সিটিগুলো থেকে ঝেঁটিয়ে (আক্ষরিক অর্থে, আসল ঝাড়ু সহযোগে) বিদায় করেন, বাংলাদেশীও বায়োলজি পড়ে কম্পিউটার এঞ্জিনিয়ারিং-এ এম এস করবে। সত্যি বলতে কী, দেশের বাইরে এসে এর মধ্যেই করছে এরকম অন্তত দুইটা উদাহরণও জানি।

ওঃ, আর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি নামে একটা ডিপ্লোমা আছে বাংলাদেশে, সরকারী অর্থায়নে পাঁচটা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে - সেখানে যতদূর জানি যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকেই ভর্তি হওয়া যায়।

guest এর ছবি

ধন্যবাদ। দেখেন আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিগুলাতে এরকম ধুনফুন নিয়ম আছে যে অন্য ডিসিপ্লিন থেইকা আইসা মাস্টার্স করন যাইবো না - সত্য। কিন্তু আমি ইউনিভার্সিটির কথা কই নাই। আমি কইসি "আমরা" মানে গড়পড়তা বাঙ্গালীদের মানসিকতার কথা । বাঙ্গালীদের বা অন্যদেশের পোলাপানের মধ্যে দুই-একটা উদাহরন পাওয়া গেলেও , চীনাদের মধ্যে এটা প্রচুর পাওন যায়। যদিও আমি স্ট্যাটিস্টিকস দেখাইতে পারুম না। খালি চোখে যা দেখসি তাই কইতাসি।

-মেফিস্টো

অপছন্দনীয় এর ছবি

তা ঠিক। এমনকি প্রফেশনাল ক্ষেত্রে কাজ করতে এসেও চৈনিকরা "না" শব্দটা বলে এরকম কখনো দেখিনি। যা-ই বলেন কোমর বেঁধে লেগে যাবে...

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ মেফিস্টো। আপনি ঠিকি বলছেন, না বলে কোন শব্দ ওরা আসলেই চিনেনা। এইজন্য ওরা বাহবা পাবার মত যোগ্যতা রাখে। তবে উদ্ধতভাবে কথা বলে এমন চাইনিজের উদাহরন আমার নিজের ল্যবে ই আছে। এবং আসলেই এই আচরন বুঝার জন্য ওদের ভাষা ও জানা লাগেনা।
ফ্রী ফুড এর কাহিনি আমিরিকায় ও একি নাকি জানা ছিলোনা হাসি

guest এর ছবি

ধন্যবাদ। হ এটা সত্য যে একসাইজের জুতা তো আর সবার পায়ে ফিট হইবো না। তাই সব চীনাই ভালো - এইটা কইতাসিনা। কিন্তু আপনি রেশিও চিন্তা করেন। চীনাদের সংখ্যা , আর তাদের মধ্যে উদ্ধচ আচরন করে এরকম চীনাদের সংখ্যা কতজন , একটু ভাইবা দেখেন। আমার তো মনে হয় অন্যান্য জাতির তুলনায় অনেক কম।
-মেফিস্টো

atreyee এর ছবি

একদম racist লেখা। খুব খারাপ লাগল পরে।

বন্দনা- এর ছবি

কাউকে কষ্ট দেবার জন্য লিখটা লিখিনাই atreyee। খুবি দুঃখিত যে আপনার খারাপ লেগেছে। পুরাটাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লিখা যেটা আসলেই খুব সুখকর না। তবে এটা ঠিক ল্যবের এই ছোট্ট পরিসরে যেসব চাইনিজরা আছেন তারাই আমার কাছে চীনকে রিপ্রেজেন্ট করে। যদি ও ঢালাওভাবে আমি কখনো ওদেরকে খারাপ কিছু বলতে পারিনা, কারন আমার ল্যবমেট মানেই তো পুরা চীন না।

আয়নামতি1 এর ছবি

ফাহিম ফটুরের সাথে সহমত। লেখালেখি জারি থাকুক হাসি

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ আয়নামতি। সবাই যেভাবে আমারে racist কইতাছে লিখালিখি মনে হয় তওবা কইরা ছাইড়া দিতে হবে ওঁয়া ওঁয়া

আয়নামতি1 এর ছবি

বোকা মেয়ে! আপনি রেসিষ্ট সেকথা কিন্তু কেউ বলেনি। প্রকাশভঙ্গির কারণে ওরকমটা হয়েছে...যেটা
কৌস্ত্তভ নীচের মন্তব্য চমৎকার করে বলে দিয়েছেন। তওবা করে লেখালেখি ছাড়লে হবে নাকি? রেগে টং অন্তত ক্যাপচার হাত থেকে বাঁচতে লেখালেখিটা চালিয়ে যেতেই হবে....আমি কোনোদিন লেখালেখি কী জিনিস জানতাম না সেই আমি সোনামুখ করে ছাইপাশ লিখতে চেষ্টা করি আর আপনি বলছেন তওবা করবেন! ককখনো না দেঁতো হাসি হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং জাপটে ধরো জোরে....... চোখ টিপি

কৌস্তুভ এর ছবি

বন্দনা, জ্ঞান দিচ্ছি না মনে করলে দুয়েকটা জিনিস বলি।

এই লেখাটাকে কয়েকটা cue এর জন্য পাঠকদের রেসিস্ট মনে হবে।

১. "তবে এটা ঠিক ল্যবের এই ছোট্ট পরিসরে যেসব চাইনিজরা আছেন তারাই আমার কাছে চীনকে রিপ্রেজেন্ট করে।"
আপনার লেখাটার শিরোনাম যদি 'ল্যাবমেট চিঙ্কু উপাখ্যান' হত তাহলেই কিন্তু এতটা চোখে লাগত না।

২. আমাদের কাছে চিঙ্কু মানে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবাই, আমরা তফাত করতে পারি না কে কোন দেশ থেকে, তাদের চেহারা বা ভাষা থেকে। কিন্তু আমেরিকাতে মূলত একাধিপত্য চীনাদেরই, সম্ভবত আপনার ল্যাবেও তাই। অথচ এরকম ব্যবহারে, মানসিকতায় কিন্তু প্রত্যেকটা দেশের মধ্যে প্রচুর ফারাক আছে। আপনি চিঙ্কু শব্দটা ব্যবহার করে সবাইকে এক কাতারে ফেলে দিয়ে সমালোচনা করেছেন।

৩. কড়া কথাও মজা মিশিয়ে বললে লোকে আর আহত হয় না। কিন্তু অনেকগুলো ঘটনা আপনার লেখায় কেবল বর্ণনা হিসাবেই রয়ে গেছে, রম্য হয়ে ওঠেনি। তাই সেগুলো অস্বস্তিকর।

----

সব মানুষই মূলে রেসিস্ট। আমরা ছোটবেলা থেকেই আত্মীয়পরিজনদের রেসিস্ট কথাবার্তা শুনে শুনে এমনভাবে বড় হয়েছি, আমাদের রেসিজম শনাক্ত করার ক্ষমতাই দুর্বল হয়ে পড়ে। কেবল আমাদের বিরুদ্ধে অনাচার হলে তখনই আমরা খেয়াল করতে পারি। আবার চীনারাও একই ভাবে রেসিস্ট, আমার এক চীনা বান্ধবী বলেছিল, তুমি জানো না, দুনিয়ায় চীনারাই সবচেয়ে বড় রেসিস্ট। আমেরিকানরাও মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি রেসিস্ট। ইউরোপিয়ানরাও ভারতে এসে কম রেসিজম করে নি। আমাদের সচেতনতা আর অভ্যাসের মধ্যে দিয়ে এই প্রচলনটা কাটাতে হবে।

---

দুই নম্বর কথায় আবার ফিরে আসি। এটা সত্যি, যে আমেরিকাতে কিছুদিন কাজ করেছে কিন্তু চারিদিকে অগুন্তি চীনা পরিবেষ্টিত হয়ে থাকে নি, তাদের উপর বিরক্তি বোধ করে নি, এমন লোক পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু এটাকে আমি অন্যভাবে দেখি। আমি প্রশ্ন করি, এরকম কেন? পূর্ব এশিয়ার অন্যদের তুলনায় চীনারা এতটা সফল কেন? প্রায় একই জনসংখ্যা তো ভারতেরও, তারা এত কম কেন? এর উত্তর আমার মনে হয়েছিল তাদের বিশেষ রাজনৈতিক ব্যবস্থায়, যেটা তাদের সমাজ-মানসিকতা সবকে এইভাবে তৈরী করছে। এই নিয়ে একটা সিরিজের দুই পর্ব লিখেছিলাম, দেখতে পারেন। ,

তুলনায় কিন্তু, দীর্ঘ দিনের ইমিগ্রেশনের ফলে, ইউরোপে উলটো অবস্থা, সেখান ছেয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশীয়তে। তাদের নিয়েও মোটাদাগে সাদা মানুষের রেসিস্ট অভিযোগ, যে গড়ে তারা নোংরা, তাদেরও গায়ে গন্ধ, তারা ইউরোপীয় 'পরিশীলিত ভদ্রতা' জানে না, 'লাউড' ব্যবহার তাদের, ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমার নিজের ভারতীয়, চীনা ও অন্য অনেক দেশীয় বন্ধুরাই আছে। আমি দেখেছি, পার্ডন মাই ফ্রেঞ্চ, সবচেয়ে বেশি হারামি, বেশি 'চীপ' কিন্তু আমার ভারতীয় বন্ধুদের কয়েকজনই। তাদের জন্য এখানে গোটা ভারতীয় কমিউনিটিরই একটা খারাপ ইমেজ তৈরি হয়েছে, যেটা আমার জন্য খুবই লজ্জার।

অনেক কথা বলে ফেললাম। আপনার অবস্থার জন্য সহানুভূতি। কিছুটা মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন, আর কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে বারবার আপনার আপত্তির কথা তুলে ধরুন। আর লেখালিখি জারি রাখুন, আমরা রইলাম সমালোচনার জন্য।

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভদা আপনার সবিস্তার এক্সপ্লানেশনের জন্য। পোষ্টটা করে ফেলার পর আমার নিজেরই একবার মনে হয়েছিলো নামের এই বিড়ম্বনার কথা, কিন্তু আমাদের তো এডিট করার ক্ষমতা নেই তাই করা হয়ে উঠেনি। তবে আবার ও বলছি পুরাটাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে লিখা যেটা আসলেই খুব সুখকর না। আর আপনার পরামর্শ মেনে যদি বারবার আপত্তি তুলি ল্যবে টিকে থাকাই ডিফিকাল্ট হয়ে যাবে, জলে থেকে কি আর কুমিরের সাথে যুদ্ধ করা যায় বলেন, মাইনোরিটির সুবিধা অসুবিধা কে কেয়ার করে বলেন।এসব মেনে নিয়েই সহবস্থান করছি।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

বন্দনা তার একটা নির্দিষ্ট পরিসরে তার নিজস্ব অভিজ্ঞতায় লিখেছেন এবং যা তার সামনে পড়েছে তার অধিকাংশই হয়তো ওদের নেতিবাচক আট্রিবিউটস। তবে লেখাটা আমার ভালো লেগেছে। ফ্রি খাওয়া বা হাগা দোষনীয় কিছু মনে হয়না কারণ সেগুলো ফ্রি এবং মানুষের সেগুলো ফ্রি এস্তেমাল করার অধিকার আছে। আমরা উন্নাসিক, ফ্রি খাওয়ার-হাগার ব্যসস্থা থাকলেও তা এস্তেমাল না করে পয়সা অপচয় করে বেড়াই। জেনারেলি বলছি, এই লেখার সাথে অসম্পৃক্ত, চৈনিকদের (এবং অন্যান্যদের) সাথে আমাদের নেগেটিভ এবং পজিটিভ ডিস্টিঙ্কশানগুলো একটু মাঝে মাঝে খুঁটিয়ে দেখা উচিৎ। ছাইয়ের স্তুপের মাঝেও সোনার আঙটি পাওয়া যেতে পারে অথবা বিশাল প্রাসাদের মাঝেও হাগু উপচে পড়া একটা টাট্টিখানা পাওয়া যেতে পারে।

বিভিন্ন ভৌগলিক জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ঠ থাকে বা থাকতে পারে যা অন্যেরা ইতিবাচক বা নেতিবাচক, যে কোনও পয়েন্ট অব ভিউতে দেখতে পারেন। তবে জেনারালাইজ না করে জাজমেন্টাল কমেন্টেসগুলোর ক্ষেত্রে জায়গাটা একটু কনফাইন্ড করে নিলে আর প্রবলেম নেই যেমনটা কৌস্তুভ বলেছেন,

'ল্যাবমেট চিঙ্কু উপাখ্যান'

আমার কিন্তু চৈনিকদের সাথে অভিজ্ঞতা মন্দ না। অবশ্য এই চৈনিকরা অধিকাংশই ইন্দোনেশিয়ান, অধিকাংশেরই দাদা বা পরদাদা চিন, হংকং বা তাইওয়ান থেকে আসা, কারো আবার বাবা এসেছেন। এরা প্রচণ্ড পরিশ্রমী, সৎ এবং বিনয়ী। এরা প্রচুর শুকরের মাংশ এবং পেঁয়াজ খায়, অধিকাংশই ঠিকমতো দাঁত ব্রাস করে না, হেগে পানি নেয় না (চৈনিকের কাছে শুনেছি), সাধারণ মানের পোষাক পরে কিন্তু বেশ ফিটফাট থাকতে পছন্দ করে, বিশেষ করে মেয়েরা (চৈনিক বান্ধবীকূলকে অহরহ দেখতাম)। তবে এদের প্রফেশনালিজম আমাকে মুগ্ধ করেছে। অনেক কিছু শিখেছি এদের কাছ থেকে।

আর ডুরিয়ানের প্রসঙ্গে অনেক কথাই মনে পড়ে যায়, বিশেষ করে এর প্রকট গন্ধ বা দুর্গন্ধ। আমার বাসার গৃহকর্মী লিয়া ডুরিয়ান খুব পছন্দ করতো। আমার স্ত্রী তাকে ডুরিয়ান খাওয়ার জন্যে পয়সা দিতো কিন্তু শর্ত থাকতো যে সে বাইরে থেকে খেয়ে আসবে। প্যাসিফিক রিজিওনের অধিকাংশ এয়ারপোর্ট, হোটেল, অফিস এবং হোটেলে ডুরিয়ান নিয়ে প্রবেশ নিষেধ। কোনও ঘরের মধ্যে একবার ডুরিয়ান ভাঙলে পরবর্তী ৪-৫ দিনেও সে গন্ধ যায়না।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়দা। আপনার মন্তব্য পড়ে ব্যপক মজা পেলাম। ফ্রি খাবার ব্যপারটা একটু বলি। সাধারনত সেমিনারের খাবারগুলো এরেঞ্জ করা হয় যারা ওটাতে এটেন্ড করে তাদের জন্য, ইউনিভার্সিটি তো মাস পিপলের হিসাব করে খাবার দেয়না, এক্সট্রা মানুষজন চলে আসলে খাবারের হিসেবে উলটাপালটা হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। একবার তো একজন সেমিনারে এটেন্ড করা লোক খাবার সময় আর একজনরে বলেই ফেললো, তুমিতো সেমিনারে এটেন্ড করোনাই, খাবারতো আমরা যারা এটেন্ড করছি তাদের জন্য। সেমিনার না করে খাওয়ার সময় হাজির হয়ে যাওয়া তাই আমার কাছে গুড প্রাক্টিস মনে হয়না। আর চিঙ্কু বলতে আমি চায়নার মানুষজনই বুঝাতে চেয়েছি, ইন্দোনেশিয়ান, ভিয়েতনামিজদের আমি ও ভালো পাই। আমার ডুরিয়ানের কাহিনি মনে হয় আপনিই বুঝতে পারছেন, এই গন্ধ না পাইলে বুঝা যাবেনা যে ইহা কি বস্তু ওঁয়া ওঁয়া

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয়দা। আপনার মন্তব্য পড়ে মজা পেলাম। তবে ফ্রি খাবার নিয়ে একটু বলি। সেমিনারগুলিতে যখন খাবার এরেঞ্জ করা হয় কতজন এটেন্ড করবে অই হিসেবে খাবার দেয়া হয়, মাস পিপলের হিসেব করেতো আর ইউনিভার্সিটি খাবার এরেঞ্জ করবেনা। তাই যখন বাড়তি লোকজন চলে আসে খাবারের হিসেবে উলটাপালটা হয়ে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়।একবার তো সেমিনারে এটেন্ড করা এক জন অন্য একজনরে বলেই ফেললো তুমি তো সেমিনারে এটেন্ড করনাই,খাবারতো শুধু যারা এটেন্ড করছে তাদের জন্য। তাই সেমিনারে এটেন্ড না করে শুধু খাবার সময় হাজির হওয়াটা আমার কাছে গুড প্রাক্টিস মনে হয়না দাদা। আর আমি চিঙ্কু বলতে চায়না থেকে আগতদেরই বুঝাইছি, ইন্দোনেশিয়ান, ভিয়েতনামিজদের আমি ও ভালু পাই। আমার ডুরিয়ান কাহিনি বোধহয় আপনি ধরতে পারছেন, এই গন্ধ একবার নাকে না নিলে বুঝা যাবে না ইহা কি বস্তু দাদা মন খারাপ

নাফিস রাজ্জাক এর ছবি

অসাধারণ . ধন্যবাদ . আমার অভিজ্ঞতা প্রায় একইরকম . অসহ্য একটা জাতি "চিঙ্কু" .

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ নাফিস হাসি

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

হাততালি

বন্দনা- এর ছবি

হাসি

মৌনকুহর. এর ছবি

ল্যাবে আপনার একেকদিনের অবস্থা কল্পনা করে ব্যাপক মজা পেলাম হো হো হো

'রেসিস্ট' হয়েছে বলতাম, যদি না উপরে কৌস্তুভদার মন্তব্যে আপনার প্রতিমন্তব্যটা দেখতাম......

লেখা চলুক চলুক

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাদ মৌনকুহর। মন খারাপ

সজল এর ছবি

বুঝা যাচ্ছে, আপনি ল্যাবমেটদের নিয়ে ভালো সমস্যায় আছেন। কোন দেশে আছেন জানি না, তবে আমার মনে হয় এসব ক্ষেত্রে প্রশাসনিক সমাধান থাকার কথা।

আর ব্যাক্তিগত ভাবে আমি চিঙ্কু, কাউলা এই রকম শব্দ ব্যবহার করা বা স্টেরিওটাইপিং এর বিরোধী।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বন্দনা- এর ছবি

ধন্যবাধ সজল আপনার পরামর্শের জন্য। কিন্তু প্রশাসনিক সমাধানে যাওয়াটা খুব ওয়াইজ মনে হয়নি, যেহেতু একবার আমি অলরেডি ল্যব পরিবর্তন করে ফেলছি, আর যেখানেই যাই না কেন, সব জায়গায়ই চাইনিজ, তাই মেনে নেয়ার চেষ্টা করছি।

CannonCarnegy এর ছবি

ডুরিয়ান নিয়ে নিজের এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করি। এর গন্ধের জন‌্য থাইল্যান্ড এবং মালয়াশিয়াতে দেখেছি বহু হোটেল আর অফিসে "এই তল্লাটে ডুরিয়ান আনা নিষেধ" -জাতীয় বড় আকারের সাইনবোর্ড থাকে। বুঝে দেখেন নিজ দেশেই এর কি পরিমান সমাদর।

থাইল্যান্ডে এক বাংলাদেশি ট‌ুরিষ্ট দলে ঘোরার সময় বাসের মাঝে হঠাত আমার পাশে বসা কলিগ আমাকে জিগ্গাসা করলেন "ভাই একটা বিশ্রি গন্ধ পাচ্ছেন? আচ্ছা আমাদের দলে তো কোন ছোট বাচ্চা নাই, কিন্তু এইরকম গন্ধ কোত্থেকে আসছে বলেনতো? আমার মনে হয় আমাদের আগে যারা এই বাস ইউজ করেছে তাদের কেউ বাচ্চার ইউজড ন্যাপি বাসে ফেলে গেছে। বাসের গাইডকে বলেনতো খুজে দেখতে!"

আমি বল্লাম "খারাপ একটা গন্ধ আমিও পাচ্ছি, কিন্তু আপনি শিওর কেস এটাই?"

উনি বল্লেন "ভাই আমার ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর। ওর টাট্টি করা ন্যাপি আমি প্রায়ই পাল্টাই, সো আমি শিওর কেস এটাই।"

আমিও বাই দেন কনভিন্সড। কিন্তু গাইডকে বলে খোজ করে জানা গেল বাসের ড্রাইভার নিজের জন্য একটা ডুরিয়ান কিনে নিজের সিটের নিচে রাখাতেই এই বিপত্তি। পরে সেটা লাগেজ বক্সে সরিয়ে, বাসের ‌কয়েকটা জানালা খুলে কিছুদুর চালানর পর সেই সুগন্ধি থেকে রেহাই পাওয়া গেছিল।

তাই বলে এর ভক্তের সংখ্যা কিন্তু কম না। ইহা থাইল্যান্ডের জাতীয় ফল বিধায় আমিও নাক চেপে ধরে এক পিস ট্রাই করেছিলাম। সোয়াদ কিন্তু বেশ ভালু।

দুর্দান্ত এর ছবি

কোন এক চীনা ব্লগে এই মুহুর্তে বাংলাদেশীদের নিয়ে কিছু রসিকতা লেখা হচ্ছেনা, সেটা নিশ্চিত নয়। ভাবছি, বিদেশে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশী ছাত্রদের জীবনযাত্রা নিয়ে যেসব রসিকতা করা হয়, সেগুলোতে কি দেখতে পাবো - বেহুদা ইংরেজী/হিন্দিবাক, ভাতকেন্দ্রিক, গীবদবাজ, ফুটানিগার ও গন্ধরাজ? (বাজে শব্দচয়ন ক্ষমা করুন)।

চীনা জীবনযাত্রার অনেককিছুই বাংলাদেশী চোখে রসিকতার দাবী রাখে। তবে যদি এই লেখাটিকে অন্য চোখে দেখি, তাহলে পড়ছি, চীনারা খাদ্যরসিক কিন্তু বেশ স্বআস্থ্য সচেতন। বিদেশে গিয়েও এরা নিজেদের ভাষায় কথা বলে, এতে বিদেশী কেউ কি ভাবলো তার ধার তারা ধারেনা। তারা বেশ হিসেব করে চলে। এবার আর হাসি আসছেনা।

লেখাটি সাম্প্রদায়কতার গন্ধ নিয়ে ওপরে মন্তব্য এসে গেছে। তবে কিছু মন্তব্য রম্যতার গন্ডিতে আবদ্ধ থাকতে পারেনি।

অসহ্য একটা জাতি "চিঙ্কু" .
চৈনিক দেখলেই বলুন "আতর লাগান ভাই, আতর"

চীনারা যেহেতু পাকি নয়, তাই তাদের বিরুদ্ধে ঢালাও বিতৃষ্ণা প্রকাশে আমার আপত্তি আছে। এই মন্তব্য়গুলোতে আপত্তি জানালাম।

---

আরো লিখুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা আমার ভালো লেগেছে।
পাঠকরা সবাই বুঝতে পেরেছেন যে, এটা বন্দনার সহকর্মীদের নিয়ে অভিজ্ঞতা। কিন্তু মন্তব্য পড়ে মনে হলো যে, অনেকে জোর করেই লেখাটির গায়ে একটা গন্ধ লাগাতে চাইছেন। যেন বন্দনা সমস্ত চৈনিক জাতির উপর খাপ্পা! জোর করেই যেন এটা প্রমাণ করতে হবে!!
এটা আমার কাছে ভালো লাগলো না।

-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।