স্রষ্টার বেদনা

দীপ্ত এর ছবি
লিখেছেন দীপ্ত [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০১/০৭/২০১২ - ১০:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গল্পের সারাংশ হল যে ছেলেটা মেয়েটাকে অন্ধভাবে ভালবাসবে এবং মেয়েটা ছেলেটাকে পাত্তাও দেবে না। তারপর ছেলেটা বিভোর হতেই থাকবে এবং মেয়েটা বিভোর হওয়ার সমানুপাতে বিরক্ত হতে থাকবে। এই একই কথা বলা হবে এই গল্পে, বিভিন্নভাবে, ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে। সারাংশ বলে দিলাম, মূল গল্পে ঢুকি।

ছেলেটা, যার সাথে মেয়েটার কি করে দেখা হল তা জানা নেই, শুধু জানা আছে, মেয়েটাকে প্রথম দেখাতেই হৃদয়ের এক স্পন্দন মিস করে। ওই মুহুর্তটা দীর্ঘ লাগতে থাকে তার, অনেক লম্বা, মনে হয় শেষ হবে না। তারপর যখন তার হুঁশ হয় তখন সে বুঝতে পারে সর্বনাশ যা হবার তা হয়ে গিয়েছে। সে প্রেমে পড়েছে। মেয়েটা এসময় কি ভাবে তা জানতে আমরা আগ্রহী, কারণ একপক্ষ প্রেমে পড়লে যে ফায়দা হয় না তা আমরা বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে জেনে গেছি। না, মেয়েটা এখানে প্রেমে পড়েনি। যদিও এর উল্টোটাও ঘটে, কদাচিৎ। কিন্তু গল্পের খাতিরে আমরা ধরলাম মেয়েটা যখন ছেলেকে দেখল তখন দ্বিতীয়বার ঘুরে তাকানোর দরকার হয়নি তার। এখানেই গল্পে বিপত্তির শুরু।

ছেলে ভাবল মেয়ের কাছে হৃদয়ের কথা বলতেই হবে। নয়ত রাতে ঘুম হয় না, নয়ত একই বিষাদের গান বারবার বাজাতে ভাল লাগে, পেছন থেকে রিকশা বেল দিলেও কানে ঢোকে না আনমনে পথ হাঁটতে হাঁটতে। ছেলের এসব লক্ষণ দেখা দিল এবং আর সবাই যখন ভালবাসার সেই অদ্ভুত রাজ্যে ঢোকে তখন যে সব উপসর্গ তাদের মাঝে দেখা দেয়, তাও দেখা দিতে থাকল। তার বন্ধুরা বুঝল সে আর সে নেই, কেউ টিটকিরি দিল, কেউ উৎসাহ দিল, কেউ বলল নতুন ভাব। ছেলের কিছুতেই কিছু যায় আসে না। মনে তার সারাদিন মায়াবী মেয়ের ছবি। তাই সব বিদ্রূপ, হাসি-ঠাট্টা, উৎসাহ তার কাছে অর্থহীন লাগে। সে মনমরা হয়ে শহরের ইট কাঠের রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে থাকে।

এমন অবস্থায় তার বাল্যকালের ভাবসম্প্রসারনের অংশ মনে আসে। সে বুঝতে পারে কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে, বুঝতে পেরে সে উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রথমেই মেয়ের ফোন নাম্বার জোগাড় করতে চেষ্টা করে। গল্পের খাতিরে আমরা ধরে নিলাম ওই সময় ফেসবুক ছিল না। তাই ছেলে তার কাছের বন্ধুদের জিগ্যেস করে, তার বন্ধুরা তাকে আশার আলো দেখায় না। ছেলের সাথে অন্য মেয়েদের খুব খাতির ছিল না, তাই তাদের কাছে মেয়েটার ফোন নাম্বার চাইতে তার সঙ্কোচ লাগে। তাই সে ভিতরে ভিতরে পুড়তে থাকে, কিন্তু সঙ্কোচ তাকে আগাতে দেয় না। তারপর একরাত নির্ঘুম কাটানোর পর যখন সে সঙ্কোচকে খাচাবন্দি করে অন্য এক মেয়েকে গিয়ে জিগ্যেস করে, তখন সে তাকে বলে তো না-ই, তার সর্বনাশের পথ আরও প্রশস্ত করে দেয়। ওইদিন ক্লাস শেষে সে দেখে ক্লাসের এক বড় অংশের মেয়েরা তার দিকে অন্যভাবে তাকাচ্ছে এবং নিরা (মেয়েটাকে আমরা এখন থেকে নিরা বলে ডাকব) তার দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে চলে যায়। ভালবাসা-১০১ এর প্রথম পাতার শিক্ষা ছেলেটা জানত না, সে ভুলে গেছিল অন্যের কাছে কন্ট্যাক্ট জানতে চাওয়া সাহসহীনদের কাজ, ভীরুতার প্রকাশ। তাই সঙ্কোচের বশবর্তী হয়ে প্রথম পরীক্ষায় ফেল করে, ফলশ্রুতিতে খেলাতে সে বেশ পিছিয়ে যায়।

পরের কয়কদিন তার উদাস কাটে, প্রথম পদক্ষেপে ভুল করার পর পরের পদক্ষেপে তড়িঘড়ি করার মত ছেলে সে নয়। তাই সে সময় নেয়। এখানে সে আবার একটা ভুল করে, বসে থাকলে যে কোন কাজই হয় না তা যে বুঝে উঠতে পারে না। তার ভুলের মাশুল তাকে যে পরে গুনতে হবে, সে আমরা দেখব। পরের চেষ্টা হিসেবে সে অতীত দিনে মা-খালারা বা মামা-চাচারা যা করতেন তাই করে, চিঠি লিখতে থাকে। ছেলের লেখার হাত নিঃসন্দেহে ভালো, হাতের লেখা ভালো থাকায় তাকে দিয়ে স্কুলের বন্ধুরা বহুবার প্র্যাক্টিকাল করিয়ে নিয়েছে। সুন্দর হাতে লেখার সাথে এই দফা আবেগ যোগ হয়, তাই যে চিঠিটা তৈরি হয় তাকে আমরা দশে সাড়ে সাত দিই। ছেলে একগাদা কবিতা লেখে, স্বরচিত এবং অপর-রচিত, নাটক সিনেমার মতই একবার লিখতে গিয়ে দশবার কাগজ ছিঁড়ে ফেলায়, সারারাত বসে লেখা চিঠি সকালে প্রথম পাখির ডাকের সময় মনঃপুত না হওয়ার বাইরে দলা মোচড়া করে ফেলে দিয়ে আসে এবং নিজের ভাষায় ভাবপ্রকাশের মত যথেষ্ট শব্দ নাই বলে তার মনে হতে থাকে। তাই সে কবিতা খোঁজে, ভিনভাষী কবিদের শরণাপন্ন হয়, সেখানেও সে কিছুই খুঁজে পায়না। সে ভাবে নিরার প্রতি তার যে আবেগ, যে অনুভূতি তা এর আগে অন্য কোন মানুষ অনুভব করেনাই, সামনের অনাগত সময়েও কোন মানুষ কোনদিন বুঝবে বলে তার মনে হয় না। অস্থিরভাবে ঘোরাঘুরি করতে করতে এক সময় সে ঘুমিয়ে পড়ে। এই করে তার তিনরাত কাটে। চতুর্থ রাতে সে লিখে ফেলে, লেখার পরে দ্বিতীয়বার পড়তে গিয়েও পড়ে না। কারণ তার মনে হয় পড়লে বুঝি এবারও সন্তুষ্ট হতে পারবে না, আর কাগজের অপচয়ের খাতা ভারী হবে। পরেরদিন নিরার হাতে তুলে দেয়ার কথা ভেবে ঘুমাতে যায়, এবং আমরা সবাই নিশ্চয়ই জানি যে ওই রাতে তার ঘুম হয় না।

পরেরদিন সকাল নিরার হাতে চিঠি তুলে দেয়ার কথা তার মাথায় ঘুরতে থাকে। নিরার সাথে আগে তার কথা হয়নি। কথা বলার জন্য চেষ্টা করেনি তা না, কিন্তু কি নিয়ে কথা বলবে তা ভেবে বের করতেই তার সময় বয়ে গেছে। সে ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্র না, তার নোটের প্রয়োজন পড়েনি কখনও। সে নাচগানও পারে না তেমন, তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাকে কালেভদ্রেও দেখা যায় না। প্রথম দফা কথা বলেই চিঠি দেয়ার পরিকল্পনা তার কাছে নিজের কাছেও অস্বস্তিকর লাগে। সে জানে না কিভাবে এটা করবে। তবে সারারাত নির্ঘুম কাটায় তার মস্তিষ্কের যুক্তি অংশ সঠিকভাবে কাজ করেনা, তাই বিষয়টা তার জন্য শাপে বর হয়। যে করেই হোক চিঠি দিয়ে দেয়ার চিন্তা করে সে। দুই ক্লাসের মধ্যের সময়টাতে ক্লাসের বাইরের বারান্দাতে সে অপেক্ষা করে, কিন্তু নিরা বেরিয়ে আসে না। পরের ক্লাসে এবং এবং তার পরের ক্লাসেও যখন একই ঘটনা ঘটে, তখন তার অস্থির লাগতে থাকে, কিন্তু একই সাথে কিছুট শান্তি পায় সে। নিরা যদি আসলেই বেরিয়ে আসত তাহলে তার সাহসের যে পরীক্ষা হত তাতে সে পাস করত কিনা সে নিয়ে গোড়া থেকেই তার সন্দেহ ছিল। কিন্তু পরীক্ষার সামনে সে পড়ে যায় একটু পরেই, ক্লাসের পর তার ভবনের সামনের বৃত্তাকার রাস্তাটায় সে যখন মাথাটা সামনে ঝুঁকে হাঁটছিল, তখন একটু সামনেই সে নিরাকে দেখতে পায়, একা। তার আবার একটা স্পন্দন মিস হয়, পাকস্থলি খালি খালি লাগতে থাকে, হাতের তালু ঘামতে থাকে এবং নার্ভাস হলে যে লক্ষণগুলো আমাদের হয় সবই তার হতে থাকে। সারাদিন চিঠি দেয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকার পর এই সুবর্ণ সুযোগ হাতে পেয়ে সে দিশেহারা হয়, তার মস্তিস্ক তাকে বোঝায় যে এই সুযোগ ছাড়া মানে পরে পরিতাপ করা, কিন্তু সাহসের অভাবে তার পা আগায় না। শেষে জেদের বশে হোক বা মরিয়া হয়ে হোক বা নিজের ভীরুতার প্রতি ঘৃণাবশতই হোক সে পা ফেলে এগিয়ে যায়। এর পরে আমরা চূড়ান্ত মুহুর্তের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।

নিরার পাশে গিয়ে সে কেমন আছো জিগ্যেস করে। নিরা কিছুটা অবাক হয়, সেটা সে বুঝতে দেয় না। ভালো আছি বলে বা কিছু একটা বলে যা জরুরি না। তখন ছেলেটা (ছেলেকে এখন থেকে আমরা অতনু ডাকি) কথা বলার অন্য কোন বিষয়ের জন্য স্মৃতি হাতড়ায়। সে ক্লাস নিয়ে কথা বলতে পারত, পছন্দের সিনেমা নিয়ে কথা বলতে পারত বা ফুটবল নিয়েও, কিন্তু তার মাথা শুন্য লাগে। এমন সময়েগুলোতে কেমন অস্বস্তিকর নীরবতা থাকে দুইজনের মাঝে তা আমরা জানি। তাই সে কিছুটা ব্যস্ততা দেখায় এবং কোনমতে চিঠিটা হাতে গুঁজে দিয়েই প্রয়োজনের চেয়ে দ্রুত গতিতে পলায়ন করে। চিঠি দেয়ার সময়ে নিরার মুখের দিকে তাকানোর দরকার ছিল তার, তাহলে দেখত কেমন হালকা লালচে আভা পড়ে মুখে, যদিও ক্ষণিকের জন্যেই ছিল সেটা। কিন্তু সেসব দেখা ছেলেটার ভাগ্যে ছিল না। সাহসের অভাব তাকে আবার পিছিয়ে রাখে।

বাসায় ফিরে অতনুর ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ার মত মনে হয়। মনে হয়, চিঠি দিতে না পারলে আজকে সে মরেই যেত। চিঠির উত্তরে কি আসবে তা নিয়ে সে ভাবে না, অথবা ভাবতে চায় না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই চিন্তাকে ঠেলে রাখা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। একবার মনে হতে থাকে চিঠিতে সে সব লিখে বুঝাতে পারেনি, আরও কত কিছুই লেখা যেত এই নিয়ে তার আফসোস বাড়ে। আবার মনে হয় চিঠিটা দেয়াই উচিৎ হয়নি, নিশ্চয়ই নিরা আর স্বরচিত কবিতা পড়ে মুচকি হাসছে, এই ভেবে তার অস্থির লাগে। রাত তার নানা কল্পনায় কাটে। বেশিরভাগই বাস্তব নয়, কিন্তু প্রেমে পড়ার মুহূর্ত থেকে বাস্তবতা তাকে ছেড়ে যেতে শুরু করেছে, তাই খুব জীবনমুখী, বাস্তবানুগ চিন্তা তার কাছে আশা করা যায় না।

পরের দিন তার ভাগ্য নির্ধারিত হয়। সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে, নিরার দিকে তাকায়, নিরার কাছ থেকে কোন উত্তরের আশা তাকে উতলা করে রাখে। কিন্তু আর সব দিনের মতই কাটতে থাকে এদিনও, নিরা কিছুই বলে না। সে এক মুহুর্তে আশা খুঁজে পায়, তো পরের মুহুর্তে অনাগত প্রত্যাখ্যানের চিন্তায় মুষড়ে যায়। ক্লাস শেষে নিরা তার হাতে যখন একটা ছোট চিরকুট ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়, তখন তার হৃৎপিণ্ডটা লাফ দিয়ে গলার কাছে চলে আসে, বহু কষ্টে ঠেলেঠুলে সে সেটাকে জায়গামত পাঠায়। চিরকুটটা সে ওখানেই পড়তে পারত, বা তাদের ভবনের সামনের গাছতলায় বা ক্যাফেতে। কিন্তু চিরকুটটা হাতে পাওয়ার পর সে সেটাকে যত্ন করে ব্যাগে রাখে। তার পড়তে ইচ্ছা হয়, কিন্তু একই সাথে আশঙ্কাও জন্মায়। এবং পরে নির্জন কোথাও পড়বে বলে সে সেটা ব্যাগে রেখে দেয়। কিন্তু ব্যাগে রাখা চিরকুট তার মন দখল করে থাকে এবং তার মনে হতে থাকে নিষিদ্ধ আপেলের প্রতি আদমের কৌতূহল কেমন ছিল সে কিছুটা বুঝতে পারছে। পরে বাসে উঠে সে চিরকুটটা খুলে, তাতে একবাক্য লেখা দেখে। পড়তে তার বেশি সময় লাগে না। দশ সেকেন্ড লাগে বা তারও কম। তার গোটা জগত অন্ধকার এবং বিস্বাদ লাগতে থাকে।

“সরি, আমি আরকেজনের সাথে এনগেজড” খুব কঠিন কথা না। সরল বাক্য, উপমা, অলঙ্কার, রুপক কিছুই নাই, এক পলক দেখেই বুঝে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই বাক্য অতনুর হৃদয়ে গেঁথে থাকে, সে ভুলতে পারে না। যখন নিরার জন্য তার অনুভূতিকে কিভাবে বাক্যে রুপ দেবে এই চিন্তায় বেলা পার করেছে সে, ততক্ষণে নিরা অন্য কারোর প্রতি ঝুঁকে গেছে। এই অবস্থাকে আমরা বলি পাত্তা না পাওয়া। পাত্তা না পেলে কি করা উচিৎ তা নিয়ে মতভেদ নাই, নব উদ্যমে নতুন কোন দিকে আবেগ এবং কবিতাকে ধাবিত করা। কিন্তু বলা সহজ, করা কঠিন। তাই পরের দিন থেকে সে নব উদ্যম দেখায় ঠিকই কিন্তু ভুল দিকে। নতুন করে কবিতা লিখতে থাকে, আর সেগুলোকে কোনরকমে নিরার হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। বলা বাহুল্য নিরার সেসব মোটেই ভালো লাগেনি। অতনুকে কখনই সে বিশেষ দৃষ্টিতে দেখেনি, এমনকি তারা যে বন্ধু ছিল তাও না। অতনু ক্লাসের মধ্যে তার দিকে তাকিয়ে থাকত এটা সে আজকে খেয়াল করেনি। এবং বিশেষ অনুভূতি না থাকলেও তাকিয়ে থাকাটা তার কখনই খারাপ লাগেনি। স্তুতিতে ঈশ্বর খুশি হন, আর সে তো মানুষ। অতনু যেদিন চিঠি দিয়েছিল ওইদিনও তার বেশ রোমাঞ্চ লেগেছে। ছেলেটার লেখার হাত আছে বটে। কিন্তু যখন সে প্রায়শই ক্লাস শেষে চিঠি ধরিয়ে দিতে থাকে, তখন তার বিরক্তিও বাড়তে থাকে। তাদের ল্যাব গ্রুপ এক ছিল, অজুহাত খাড়া করে অন্য গ্রুপে চলে যায়। তার বান্ধবীদের বলে দেয় কিছুতেই যেন অতনু তার টেলিফোন নাম্বার বা ঠিকানা জানতে না পারে, এমনকি একদিন অতনু তার হাতে চিঠি দেয়ার সময় সে চিঠিটা ছুড়ে ফেলে দেয়। এতটা সিনক্রিয়েট সে করতে চায়নি, এতো কঠোর হতেও তার বাঁধছিল, কিন্তু অতনু নাছোড়বান্দা, তাই সে নিরুপায়।

অতনু আরও কিছু করে যা থেকে বোঝা যায় সে নিরাকে কতটা ভালবাসত, সে নিরার বাসার ঠিকানা জোগাড় করে ফেলে। কি করে করে তা এক রহস্য। কিন্তু ঠিকানা জোগাড় করেই সে নিবৃত্ত হয় না, নিরার বাসার সামনে গিয়ে সে দাঁড়িয়ে থাকে, প্রতিদিন সকাল, বিকাল বা রাতে, কখনো তিন বেলাই। এসময় সে কোথায় ঘুমায় নাকি আদৌ ঘুমায় না, সেটা প্রশ্নবোধক। নিরার বাসায় কেউই এটা প্রথমে খেয়াল করে না। পরে যখন করে তখন নিরা বিব্রত হয়। তাকে বাবা-মার জেরার মুখোমুখি হতে হয়, অতনুর প্রতি তার রাগ বাড়ে। নিরার বড় ভাই বাসা থেকে নেমে অতনুর সাথে কথা বলে। কি কথা হয় নিরা তা জানে না, হয়তো তার ভাই তাদের বাড়ির সামনে এমন করে ঘোরাফেরা করতে নিষেধ করে, হয়তো হুমকি দেয় বা থানাপুলিশের ভয় দেখায় বা নিরার সাথে কোন সম্পর্কের আশা যে দুরাশা সেটা সরাসরি বুঝিয়ে দেয়। পরেরদিন থেকে অতনুকে আর নিরার বাড়ির সামনে দেখা যায় না।

অতনুকে যারা চিনত, ওর বন্ধুরা, তারা বেশ অবাক হয়েছিল। সে যে এতো জেদি হতে পারে, তা তাদের ধারণার বাইরে ছিল। এমনকি অতনুর কোন বান্ধবী নাই এইটা নিয়ে কম বিদ্রূপ শুনতে হয়নি তাকে। অতনুর যারা খুব কাছের, তারাও ভাবেনি মেয়েদের সাথে কথা বলতে গেলে যে ছেলে কথা হাতড়ে ফেরে সে কেমন করে বদলাতে পারে এতটা। কিন্তু ভালবাসা এক আশ্চর্য সঞ্জীবনী- অতনুর কলমে কাব্যধারা ঝড়ের গতিতে আসতে থাকে, তার নির্ঘুম রাতের সংখ্যাও বাড়তে থাকে আর পড়াশোনা নিম্নগামী হয় সঙ্গতি রেখেই। কিন্তু এসব তো হবেই। ঝামেলা বাঁধে, নিরা যেদিন তার কবিতা ছুড়ে ফেলে দেয় সেদিন- সে মৃত্যুচিন্তা করে।

এসব তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মারা যাওয়াটা অর্থহীন এবং পাগলামি একথা যুক্তি মেনে চলা লোক মাত্রই জানেন এবং বিশ্বাস করেন। একথা বোঝানোর মত লোক ওর চারপাশেও কম ছিল না। কিন্তু কে কি ভাবছে তা তো মুখের আঁকিবুঁকিতে বোঝা যায় না। তাই তার বহুদিনের না কামানো দাঁড়ি আর উসকোখুসকো চুলের কারণে ছেলেটা কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা তার বন্ধুরা বুঝতে পারলেও, বেশি মাথা ঘামানোর দরকার মনে করেনি। বরং কেউ কেউ এগুলো দেখে বিরক্ত হয়। তাদের এটা মনে থাকে না যে এই অনুভূতি তাদেরও ছিল একসময়। অথবা তারা সেই সময়টা স্রেফ ভুলে যাওয়ার ভান করে।

নিরা চিঠি ছুঁড়ে ফেলার পরে বেশ কদিন অতনু স্বাভাবিক আচরণ করে। ওর বন্ধুরা কিছুটা নিশ্চিন্ত অনুভব করে, ভাবে প্রথম ধাক্কাটা সামলে উঠেছে সে। কিন্তু লেখক আমার অস্বস্তি কাটে না। অতনু চরিত্র আমার সৃষ্টি, গল্পের খাতিরে ওকে রুপদান, গল্পের প্রয়োজনে নিরার আবির্ভাব এবং অতনুকে নিরার না বলা। অতনুর ভাবনাচিন্তা জানা গল্প চালিয়ে নেয়ার জন্য জরুরি, কিন্তু এই ধাপে এসে ও আমার কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে। ওর দিকে তাই কড়া নজর রাখি। ওর প্রাত্যাহিক চলাফেরা গৎবাঁধা, কোন পরিবর্তন নেই, ক্লাসে ও মনোযোগী ছিল না কখনই। নিরার সাথে ঘটনার পর আরও কমিয়ে দেয় ক্লাসে যাওয়া। নিরাকে দেখলে তার বুকের মধ্যে ঝড় ওঠে বা অন্তত এমনটাই সে বলে বন্ধুদের। তাই দুপুর নাগাদ ঘুম থেকে উঠে, কোনদিন খেয়ে, কোনদিন না খেয়ে সিগারেট টেনে যেত একটার পর একটা। মাঝেমধ্যে ঘর অন্ধকার করে ডেথ মেটাল শুনত। তারপর যখন বন্ধুরা ঘরে ফিরত তখন ঘর থেকে বেরিয়ে যেত সে, ফিরত আবার গভীর রাতে। এর মধ্যে শহরের অলিগলি চষে বেড়াত সে। একই রাস্তা দিয়ে অজস্রবার হেঁটেছে সে, আনমনে। তন্ময় হয়ে কিছু একটা ভাবত সে, অতনু চরিত্রের স্রষ্টা হয়েও আমি তার কিনারা পাইনি। আমার শঙ্কা হত, কিছু একটা বুঝতে না পারার অস্বস্তি বেড়ে উঠত।

তারপর একদিন যখন ও ওষুধর দোকান থেকে বেশ কয়েকপাতা ঘুমের ওষুধ কিনল একসাথে তখন ওর পরিকল্পনা আমার কাছে পরিষ্কার হয়। আমার গল্প টেনে নিতে অতনুর বেঁচে থাকা দরকার , কারণ সে এই গল্পের নায়ক বা মুখ্য চরিত্র। আর সে কিনা নিজে নিজেকে শেষ করে দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই তড়িঘড়ি করে গল্পের প্লট বদলাতে হয় আমাকে। ওইদিন ও যখন ঘরে ফেরে তখন দেখে তাব্লিগের বেশ কিছু বড় ভাই ওর ঘরে এসে দাওয়াত দিচ্ছে, অতনুকে ফিরতে দেখে তারা অতনুকেও তাদের সাথে যেতে বলে। এসব সে বরাবরই এড়িয়ে এসেছে, কিন্তু যুক্তিতর্ক করতেও তার অনীহা হয়। তাই অনুরোধ থেকে বাঁচতে সে যাবে বলে দেয়। এভাবে আমি অতনুকে সম্ভাব্য আত্মহত্যা থেকে ফিরিয়ে আনি। আমার গল্পটাও বেঁচে যায়।

অতনুকে তাব্লিগে পাঠানোর মূল উদ্দেশ্য ছিল ওর মনকে অন্যদিকে ঘোরান। কে না জানে প্রেম-ভালবাসায় ধর্মের চেয়ে বড় মহৌষধ আর কিছু নেই। একবার যদি ওর মাথায় ভালবাসাকে বিদআতি ব্যাপার বলে ঢুকিয়ে দেয়া যেত, তাহলে ওই গ্যাঁড়াকলে ও আর পড়ত না। তাই ও যখন তাব্লিগের দলের সাথে মিশে যায়, তখন ওকে যথাসম্ভব বড় হুজুরের কাছে রাখার চেষ্টা করি আমি। ও নিয়ম করে ইবাদত করে, একসাথে বসে খায় এবং বাকি সময়টাও জিকির-আজকরে কাটে তার। নিরাকে মনে করার সময়ই পায় না সে, অন্তত আমি তাই ভাবি। এবং ভেবে খুশি হই, ওকে নিয়ে পরের গল্পের প্লট ফাঁদতে থাকি। ও মাসখানেক পর তাব্লিগ থেকে ফিরে আসে, এর মধ্যে ওর দাঁড়ি বেড়ে ওঠে, ওকে ক্লান্ত কিন্তু প্রশান্ত দেখায়। ও বহুদিন পরে ক্লাসে যায়। নিরা সামনের দিকে বসতো সবসময়ই, ও এমন জায়গায় বসে যেখান থেকে নিরাকে দেখা যায়না। ও একদিন ক্লাস করে, দুইদিন ক্লাস করে, তৃতীয় দিনে ওর কৌতূহল হয়। ভাবে নিরাকে কতটা ভুলতে পেরেছে পরীক্ষা করে দেখা যাক। ও নিরার দিকে তাকায়। তারপর অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে, চোখ ফেরাতে পারে না, ওর মনে যে কি খেলা করে ও তো ও, আমি ওর স্রষ্টা হয়েও বুঝতে পারি না। শুধু এটুকু বুঝতে পারে বাইরে কচ্ছপের মত যে শক্ত খোলসটা সে লাগিয়েছে তা আসলে বড়ই ঠুনকো, মৃদু ধাক্কাই তার এলোমেলো হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। নিরার আগের চেয়ে সুন্দরী হয়েছে বলে তার মনে হয় এবং এক মাসের কঠোর সাধনা এবং নিয়মাচার সবকিছু কোথায় তলিয়ে যায় সে বুঝতে পারে না। নিরাকে ছাড়া বাঁচা সম্ভব না, আবারও তার মনে হতে থাকে।

সে ভাবে বা আশা করে সবকিছু নতুন করে শুরু করার। নতুন স্বপ্ন দেখে সে। কিন্তু এই পর্বের উপসংহারও আগেভাগেই বলে দিই- অতনুর আশা বা স্বপ্ন পূরণ হয় না। নিরা কখনই অতনুকে ভালবাসেনি। আশেপাশে শত মানুষ যারা প্রতিদিন আমাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যায়, তাদের যেমন আমরা স্মরণে রাখি না বা তাদের নিয়ে দুইবার চিন্তা করি না, তেমনি একজন ছিল অতনু তার কাছে। আর অতনুর কাছে নিরা ছিল বিশেষ একজন। এমন কেউ কেউ থাকে, যারা পাশে থাকলে পুরো ব্রহ্মাণ্ডে কি ঘটে যাচ্ছে তা টের পাওয়া যায় না, শুধু তার মুখের দিকে তাকিয়ে জীবন পার করে দেয়া যাবে বলে মনে হয়, সেইরকম একজন। তাই অতনু নিরাকে নিয়ে যতই ভাবে ততই তার খারাপ লাগে, একসময় খারাপ লাগাটা রাগে রুপ নেয়। একটা মেয়ে তাকে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না, তার আবেগকে কোন সম্মান দিচ্ছে না আর সে আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দিয়ে তার পিছনে ছুটে চলেছে- এই ভেবে নিজের উপর রাগ হতে থাকে। কিন্তু নিরাকে সে ভুলতে পারে না। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা তাকে বহুবার বলেছে নিরার আশা ছেড়ে দিতে, কিন্তু উপদেশে যদি কাজই হত তাহলে বহু আগেই সে সুপথে ফিরতে পারত। গান শুনে সে নিজেকে সান্ত্বনা দেয়, কবিতা পড়ে নিজেকে বোঝায়, উপন্যাস পড়ে গল্পের নায়কের সাথে তার মিল খুঁজে পায়, রাতে ছাদে শুয়ে তারা দেখে মহাকাশের বিশালতা ভেবে নিজেকে তুচ্ছ ভাবে, আর দার্শনিকতায় আশ্রয় খোঁজে। কিন্তু কাজ হয় না, বাইরে বৃষ্টি হলে তার অস্থির লাগে, জ্যোৎস্নার আলোয় তার ঘোর ফিরে আসে, জানালার হাস্নাহেনা গাছে ফুল ফুটলে ও ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। বন্ধুরা অবাক হয়, ওরা ভেবেছিল এসব দুদিনের বিষয়। সম্পর্কের ভাঙাগড়ার নিত্যতায় ওরা আজকাল বিচলিত হতে ভুলে গেছে। কিন্তু অতনুর ঘোর চলতে থাকে। তারপর একদিন না পেরে নেশার দিকে ঝুঁকতে যায়, সব ভুলতে।

এমন অবস্থায় আমার হস্তক্ষেপ করা জরুরি হয়ে যায়। গল্পের প্রধান চরিত্র নেশা করে সব ভুলে গেলে গল্পের ক্ষতি, গল্প শেষ করি কিভাবে? তাই অন্ধকার জমাট বাঁধা রাস্তায় পরিচিত ভঙ্গিতে সামনে ঝুঁকে এগিয়ে চলা ওকে আমি দৈব মারফত নিষেধ করি। ওর বিস্মিত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পাত্তা দেয় না, থামেও না। রাস্তা কিছুটা জনশুন্য হলে মরিয়া আমি ওকে থামাই। আমি ভেবেছিলাম, ওর স্রষ্টা, ওর অবয়বদানকারীকে দেখলে নিশ্চয়ই ভয়ে চমকে উঠবে ও, দীর্ঘক্ষণ কথাই বলতে পারবে না। এর বদলে ও আমাকে চিনতে পেরে, ওর রাতজাগা লাল টকটকে চোখ নিয়ে আমার দিকে সোজা তাকায়। বলে, কেন এভাবে সাজালে তুমি? খুব ভালো লেগেছে তোমার নিরাকে আমার থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে, না? আমি থতমত খাই, অনেক প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি ওকে সান্ত্বনা দেবার, ভেবেছি আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, শান্তি খুঁজে কাঁদবে ও। কিন্তু ওর প্রশ্ন শুনে বিব্রত বোধ করি। জোর করে কর্তৃত্ব ফলানোর ছলে বলি, এগুলো অহরহ হয়, নিরা তোমার ছিল না, কখনই না। নিজেকে সম্বরণ করার, নিজের সীমাবদ্ধতাকে মেনে নেয়ার শিক্ষা তোমাকে দেয়া হয়েছে, তোমার এই অবস্থার জন্য তুমিই দায়ী। ও চুপ করে থাকে। তারপর ধীরে ধীরে বলে, তাহলে তুমি বলতে চাও যে নিরা ছিল ওই ষণ্ডামার্কা বখাটেটার, যার হাত ধরে হাসতে হাসতে চলে গেল আমার সামনে দিয়ে আজ? নিরাকে ও কি ভালবাসতে পারবে আমার শতভাগের একভাগও? আমি গলা চড়িয়ে বলি, ওসব তুমি বুঝবে না, ভালবাসার জগতে এসব ধরাবাঁধা নিয়ম খাটে না। তুমি নিরাকে ভুলে যাও, দেখো সামনে তোমার কি আলোকিত ভবিষ্যৎ। বলে ওকে ওর ভবিষ্যতের কিছু অংশ দেখিয়ে লোভ দেখাই। ও আমার দিকে তাকায়, বিদ্রুপের হাসি দেয় হয়তো, অন্ধকার থাকায় আমি বুঝি না। তারপর আমাকে অগ্রাহ্য করে সামনে হাঁটতে থাকে। আমার রাগ হয়, ক্রোধ জমে, আমার তৈরি চরিত্র আমার কথায় গুরুত্ব দিচ্ছে না ভেবে খেপে উঠি আমি। ওর রাতের পথ বিপদে ভরিয়ে দিতে চাই, ওর প্রতিটা মুহূর্ত দুঃখে ম্লান করে দিতে চাই, ওর হৃদয়কে রুক্ষ, শুষ্ক মরুভুমির মত প্রাণহীন করে ওর শাস্তি দিতে চাই।

হঠাৎ কেউ আমার কানে কানে কথা বলে। “পারবে না” ফিসফিসিয়ে বলে ওঠে, আমি চারদিকে তাকাই, কাউকে দেখি না। ভয় আমাকে চেপে ধরে। ও বলে, আমাকে নিয়ে অনেক খেলেছ তুমি, নিরার প্রতি আমাকে অন্ধ করেছ ওর হৃদয়ে কোন আঁচড় না ফেলেই, কলমের আঁচড়ে আচড়ে আমার ভাগ্য নির্ধারণ করেছ, গল্প লিখেছ আগে থেকেই শেষে কি হবে ঠিক করে। কেন? ভেবেছ আমাকে কল্পনা করেছ বলেই কি আমাকে কিনে নিয়েছ পুরোটা, আমার মনকে, আমার আবেগকে? না, কখনই না। তুমি পারো নি, পারবেও না কখনই, আমার কষ্টকে টের পেতে, যে অসীম বেদনায় প্রতি মুহুর্তে দগ্ধ হয়েছি আমি তার শতাংশও অনুভব করতে। যদি পারতে তাহলে লিখতে পারতে না, দিনের শেষ তুমি একজন কলমপেষা গল্পলেখক মাত্র, কলম তোমার জীবিকা। নিরাদের হারালে কেমন লাগে তা বুঝতে পারলে কলম সরত না তোমার। ...আমি চলে যাচ্ছি, তোমার গল্প শেষ হল না বলে দুঃখ করো না, আরও শত অতনু তুমি সৃষ্টি করতে পারবে, আরও শত নিরাও হয়তো। শুধু জেনে রেখ, যা হারানোর বেদনা তোমার জানা নেই, তা নিয়ে খেলো না। তুমি নিজেও হয়তো কোন একজনের গল্পের একটা ঘুটি বই কিছুই নউ...।

অতনুকে আমি হারিয়ে ফেলি, আমার ওকে শাস্তি দেয়ার কথা খেয়াল থাকে না। যে গল্প হারালাম তার জন্য খেদ হয়না, কেবল কিছুটা অন্যমনস্ক লাগে। সাপ্তাহিক সংখ্যার কালকের লেখাটার জন্য তাগাদা মনে পড়ে, কিন্তু কোন অতনুকে সৃষ্টি করতে হাত সরে না।

দীপ্ত


মন্তব্য

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

প্লটটা পরিচিত, কিন্তু লেখার ভঙ্গির কারনে বেশ ভাল লাগল। চলুক। হাততালি

Atahar এর ছবি

অসাধারণ চলুক

সজল এর ছবি

লেখার ভঙ্গিটা বেশ লাগলো।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বন্দনা এর ছবি

চেনা কাহিনীর ভিন্নরকম উপস্থাপন ভালো লেগেছে।
তবে ট্রাজেডীর লেখকদের আমি ভালু পাইনা খাইছে, একটু কষ্ট করে মিল করায়ে দিলে কি হয় ।শুনেছিলাম তেলেগু মুভিতে নাকি শেষের দিকে নায়ক নায়িকা মিল হলে সিনেমাই চলেনা, আমাদের দেশে আবার মিল না হলে সিনেমা চলেনা দেঁতো হাসি

নিরবতা এর ছবি

চলুক চলুক

কড়িকাঠুরে এর ছবি

লেখার ভঙ্গি অনেক সুন্দর... চলুক

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আপনার লেখার ধরণটা খুব সুন্দর।
নিয়মিত লিখুন।

ইঁদুর এর ছবি

ওহ দারুন লাগছে!=)=)

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ভাল লেগেছে। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

যারা পড়েছেন, শেয়ার করেছেন, মন্তব্য করেছেন- অনেক ধন্যবাদ।
পাঠকের মন্তব্য লেখার প্রেরণা জোগায়।

দীপ্ত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।