মফিজ পর্ব-২:ইসা(আ:)এর স্বরুপ ও ধর্মভিত্তিক দ্্বীপ দুনিয়া

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ২১/০৫/২০০৬ - ৯:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[মফিজ পর্ব-1 লিখেছিলাম 'আস্তমেয়ের' প্রতিক্রিয়ার প্রেরনায় । প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন ওয়ালী ও । ভালোই তো বন্ধু বাড়ছে ]
1। । 'আস্তমেয়ের' অভিযোগ আমি তার পোস্ট গুলো না পড়েই কেবল ধারনা করে যাচেছতাই িলখে ফেলি । ফলত: তার বিরক্তির কারন হই । সবিনয়ে জানাই আপনার পোস্টগুলো আমি পড়ি, বেশীর ভাগ ভাবনার সাথে আমি একমত হই, ভালো লাগে । আপনি কস্ট করে কিছু ওয়েব লিংক ও দেন । আমি পড়ার ও বোঝার চেষ্টা করি । তবে আমি নাসারাদের ভাষা আংরেজিটা সব বোঝতে পারিনা । মুসলমানের ভাষা আরবী একেবারেই না । পবিত্র কোরান ও আমাকে পড়তে হয় যবনের ভাষা বাংলায় । কি আর করা , যাই হোক । আমার আগের পোস্টে 'ভিঞ্চি কোডে'র প্রসঙ্গ এনেছিলাম একটা উদাহরন হিসেবে । 'ভিঞ্চি কোডে' যীশুকে মানবিক না আসমানী রুপে দেখানো হয়েছে সেটা আমার আলোচ্য ছিলোনা । বলতে চেয়েছিলাম এই মুভি'তে যীশুকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে , ক্যাথলিকদের সেটা পছন্দ না হলেও বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি । করতে পারেনি কারন ইউরোপের মানবাধিকার আইন ও তার বাস্তব প্রয়োগের কারনে যার যা খুশি করা যায়না । পাঁচশো বছর আগে হলে কিন্তু ঠিকই করতো । কোপার্নিকাসের মতো 'ভিঞ্চি কোডে' র নির্মাতা কে ও পুড়িয়ে মারতো খ্রীস্টান চার্চ। কিন্তু মুসলিম সমাজে সমালোচনার জবাবে মৃতু্য পরোয়ানা ঘোষনা করা , মাথার দাম নির্ধারন করে ফেলা এসব ঘটমান বর্তমান । আপনি বলছেন যীশুর অতিমানবিক ইমেজটা ক্যাথলিকদের বানানো ।কিন্তু আমি যখন পবিত্র কোরানে পাই 'আমি তোমাদের জন্য মাটি দিয়ে একটি পাখী বানাব তারপর আমি ফুঁ দিলে আল্লাহর ইচ্ছায় তা উড়ে যাবে । আমি জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ভালো করবো আর আল্লার অনুমতি পেলে মৃতকে জীবিত করবো' [ সুরা আল-ই-ইমরান : আয়াত 48] 'নিশ্চয় ঈসার দৃষ্টান্ত আল্লাহর কাছে আদমের মতো । তিনি তাকে মাটি থেকে সৃস্টি করেছিলেন, তারপর তাকে বলা হলো 'হও' আর সে হয়ে যায় । এ সত্য তোমার প্রতিপালকের কাছ থেকে , সুতরাং যারা সন্দেহ করে তুমি তাদের শামিল হয়োনা ।' [সুরা আল-ই-ইমরান : আয়াত 59-60] 'তারপর সে (মরিয়ম) তার(ঈসার) দিকে ইঙ্গিত করলো । ওরা বললো ' যে কোলের শিশু আমরা তার সঙ্গে কেমন করে কথা বলবো?' কিন্তু ঈসা বললো - আমি তো আল্লাহর দাস ।তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন ও নবী করেছেন । যেখানেই আমি থাকিনা কেনো তিনি আমাকে আশিসভাজন করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি ততদিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে এবং আমার মায়ের অনুগত থাকতে । আর তিনি আমাকে উদ্ধত বা হতভাগ্য করেননি । আমার উপর শান্তি ছিলো যেদিন আমি জন্মগ্রহন করেছিলাম ও শান্তি থাকবে যেদিন আমার মৃতু্য হবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমার পুনরুত্থান হবে ।'[সুরা মরিয়ম:আয়াত 30 ] তখন? কোরানের দেয়া এই ইমেজটা কি অতি মানবিক নয়? হ্যাঁ এটা সত্য যীশুর অলৌকিক জন্ম কাহিনীকে পুঁজি করে ক্যাথলিকরা ' ঈশ্বরপুত্র' তত্বটা প্রচার করে । কিন্তু ক্যাথলিকরদের এই মিথ্যাচারের জন্য যীশুর মহিমা মলিন হয়ে যায়না বা তিনি আমাদের মতো সাধারন লেভেলে নেমে আসেননা । । ।2 । । ওয়ালী জানতে চেয়েছেন ইরানের ব্যপারে আমার মন্তব্য মন গড়া কিনা ।জি্ব না মন গড়া না । সুযোগ থাকলে ইরানের কনস্টিটিউশনের 12-14 আটিকেল পড়ে দেখবেন । আর কোনো রাস্ট্র যখন একটা নিদিষ্ট ধর্ম ভিত্তিক হয়ে যায় তখন ভিন্নধর্মাবলম্বীরা সেই রাস্ট্রেদ্্বীতিয় শ্রেনীর নাগরিক হয়ে যাবে, সমানাধিকার পাবেনা --এটা তো খুব সরল একটা অংক । এটা বোঝতে তথ্য প্রমান লাগেনা । যেমন সাংবিধানিক হিন্দু রাস্ট্র নেপাল । নেপালে অন্য ধর্মাবলম্বীদের সমানধিকার যদি থেকে ও থাকে, অন্য ধর্মাবলম্বীরা মানসিক ভাবে কখনোই তা বোধ করবেনা । কারন রাস্ট্রের পরিচয়টাইতো বৈষম্যমুলক ।যেমন বাংলাদেশ । বাংলাদেশ কিন্ তু ইসলামী রাস্ট্রনয়, গনপ্রজাতান্ত্রিক ।সংবিধানে নিশ্চিত আছে 'জাতি , ধর্ম,বর্ন,শ্রেনী,নারী,পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকার ।' সুন্দর ।কিন্তু সমপূর্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যখন সংবিধান সংশোধন করে রাস্ট্রীয় চারমুলনীতির একটা নির্দিস্ট হয় 'আল্লাহর উপর পুর্ন বিশ্বাস' যখনবাংলাদেশের রাস্ট্রধর্মঘোষিত হয় ইসলাম অথবা সবার জন্য সমান অধিকারের ঘোষনা দেয়া সংবিধানের শুরু হয় 'বিসমিল্লাহ ' দিয়ে? তাহলে বাংলাদেশ রাস্ট্রেযারা আল্লাহ র বদলে ভগবান বা গডের উপার বিশ্বাস রাখে অথবা যারা আদৌ কারো উপর কোনো বিশ্বাস ই রাখেনা , তাদের নীতিগত বা সাংবিধানিক অবস্থানটা কোথায় দাঁড়ায়? অথবা 'ধর্ম,বর্ন,শ্রেনী,নারী,পুরুষ নির্বিশেষে সবার সমান অধিকারর্ এই আশ্বাসে একজন হিন্দু যদি দাবী করে সংবিধানের শুরুতে তার ধমের বানী ও সংযোজন করতে হবে? মেনে নেবে 'সো কলড' সমানাধিকারিকরা ? আমরা কি অদুর ভবিষ্যতে এমন একটা পৃথিবী পেতে যাচিছ যেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাস্ট্র সব হয়ে যাবে সাংবিধানিক ইসলামী রাস্ট্র-- কায়েম হবে শরীয়া আইন , হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাস্ট্র সব হয়ে যাবে সাংবিধানিক হিন্দুরাস্ট্র-- কায়েম হবে বজরং আইন , খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাস্ট্র সব হয়ে যাবে সাংবিধানিক খ্রিস্টা নুরাস্ট্র-- কায়েম হবে চাচের আইন , আর ইহুদীরা তো অলরেডী এটা করেই ফেলেছে । ফলে আগামী বিশ্বেপ্রতিটি দেশে সংখ্যালঘুমুসলিম,হিন্দু,খ্রিস্টান,ইহুদী র জন্য অপেক্ষা করছে নিরাপত্তাহীনতা ও হীনমন্যতা । যারা কোনো ধর্মেটর্মেবিশ্বাস করেনা তাদের কথা নাইবা ভাবলাম । এরা তো ওদের সবার কাছেই অস্পশ্য । চমৎকার । মানুষ এগুচেছ ..এটা তা হলে সর্বৈব সত্য নয় । মানুষ পিচাচেছ ও । এবং ভয়ংকর ভাবে । ।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।