যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশঃ নানা পক্ষের ভূমিকা

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বুধ, ২৮/১২/২০১৬ - ১১:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১২ জানুয়ারী ১৯৭২ যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও তার মন্ত্রীপরিষদ গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিলেন তার মাত্র ২৬ দিন আগে নতুন রাষ্ট্রের জন্ম। তারও নয় মাস আগে শুরু হওয়া পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর গনহত্যা এবং গনহত্যার প্রতিরোধে বাঙালীদের মুক্তিযুদ্ধ- এক কোটি মানুষের শরনার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া, দেশের ভেতরে আরো দুই কোটি মানুষের বাস্তুচ্যুতি, ৩০ লক্ষ মানুষের খুন,কম পক্ষে দু লক্ষ নারীর ধর্ষন, রাস্তাঘাট-ব্রীজ কালভার্ট-বাড়িঘর সহ সকল স্থাপনা ধ্বংসের ক্ষত তখন নতুন রাষ্ট্রের পরতে পরতে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, চরম দরিদ্র এক অর্থনীতি নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। একটু পেছনে ফিরলে দেখা যায় ১৯৬৮ সালের বন্যার ফলে ১৯৬৯ সাল এবং ১৯৭০ সালের প্রথম দিকে কৃষিতে অপূরনীয় ক্ষতি সাধিত হয়। অথচ কৃষির উপরেই এদেশের মানুষের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। আবার ১৯৭০ সালের নভেম্বর ঘূর্নিঝড়ে শুধু ২ লাখ প্রান ছিনিয়েই নেয়নি, ১১০ কোটি টাকার ও বেশী সম্পদ এবং অসংখ্য গবাদী পশু এতে বিনষ্ট হয়।
এরপর আসে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত থেকে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোড়ামাটি নীতি। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর দেশীয় দালালদের হাতে নিহত হন ৩০ লক্ষ মানুষ- যাদের মধ্যে ছিলেন সক্ষম পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, শিশু ও নারী। এক কোটি মানুষ প্রান বাঁচাতে ভারতে শরনার্থী হন, দেশের ভেতরে স্থানান্তরিত হন আরো প্রায় দুই কোটি। কেবল পাকিস্তানীদের হাতে নয়- শরনার্থী ও বাস্তহারা হবার পথে ক্ষুধা, দারিদ্র ও রোগেভুগে মারা যান আরো বিপুল সংখ্যক মানুষ। শরনার্থী শিবিরগুলোতে ডায়রিয়া মহামারি হয়ে মারা যান কয়েক লক্ষ।
পাকিস্তানী সেনা ও তাদের দোসরদের পাশবিকতার চরম শিকার হন নারীরা- শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত। যতো ধরনের বর্বর পদ্ধতি সম্ভব তারা প্রয়োগ করেছিলো বাঙ্গালী নারীদের ধর্ষনে। কিশোরীর যোনীপথ ছোট থাকায় বেয়নেট দিয়ে কেটে বড় করে ধর্ষন করার প্রমান ও পাওয়া গেছে। প্রচলিত ভাবে দু লক্ষ নারীর কথা বলা হলে ও বিশিষ্ট গবেষক এম এ হাসান তার গবেষনায় ধর্ষিতার সংখ্যা খুঁজে পেয়েছেন সাড়ে চার লাখ পর্যন্ত। এঁদের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে থাকা নারী দু লাখ দু হাজার পাঁচশো সাতাশ আর শরনার্থীদের মধ্যে এঁদের সংখ্যা এক লাখ একত্রিশ হাজার দুশো পঞ্চাশ।
হত্যা এবং ধর্ষন ছাড়াও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও সর্বস্বান্ত হন বাংলাদেশের মানুষ। পাকিস্তানীরা হাজার হাজার বাড়ি, গ্রামের পর গ্রাম, বাজার দোকান পাট জ্বালিয়ে দেয়।

লক্ষ লক্ষ সক্ষম মানুষই শুধু তারা হত্যা করেনি পাশাপাশি রেলপথ , সেতু, সড়ক, টেলিযোগাযোগ, মিল ও ফ্যাক্টরী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পরিবহন- উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থা তথা দেশের গোটা অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়। পাকিস্তান সরকার এমনকি জাহাজ ও উড়োজাহাজগুলো ও ধ্বংস করে দিয়ে যায়, যা নব্য স্বাধীন দেশের কিছুটা হলে ও কাজে লাগতো। ১৯৭০-৭১ সালে মাথা পিছু আয় আগের বছরের তুলনায় এবং ১৯৭২-৭৩ সালের মূল্যে প্রায় ২২% কমে যায়। একটা ছোট্ট উদাহরন দেয়া যায়। যুদ্ধের আগে বাংলাদেশে ট্রাক ছিলো আট হাজার। যুদ্ধের পরে তার মধ্যে ব্যবহারযোগ্য ছিলো মাত্র এক হাজার। তিন শতাধিক ছোটবড় রেল সেতু ধ্বংস হয়ে পড়েছিলো। প্রায় তিনশো সড়ক সেতু ও বিধ্বস্ত ছিলো। চট্টগ্রাম বন্দরে ঢোকার মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো ২৯টি বিধ্বস্ত জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। এ ছাড়া সমুদ্র বন্দরের চ্যানেলে মাইন বসিয়ে বন্দরকে অকেজো করে দিয়ে যায় পলায়নপর পাকিস্তানী সেনারা।
যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী শিল্পপতিরা বাংলাদেশ থেকে ৭৮৫ কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে যায় এবং আত্মসমর্পণের আগে পাকিস্তানী সেনারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সকল রিজার্ভ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ-রৌপ্য পুড়িয়ে ফেলে। এর আগে দেশের বিভিন্ন গোডাউন থেকে প্রায় ত্রিশ লক্ষ টন খাদ্যশস্য পশ্চিম পাকিস্তানে সরিয়ে নেয় তারা। ফলে সাড়ে সাতকোটি মানুষের দেশকে আক্ষরিক অর্থেই শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করতে হয়।
যে অর্থনৈতিক বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে বাংলাদেশের শুরু, সমগ্র বিশ্ব চেষ্টা করলে ও তাড়াতাড়ি এর উত্তরন সম্ভব ছিলোনা। যেমন সারা পৃথিবী থেকে পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী এলেও তা গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেয়া প্রায় অসম্ভব ছিলো। কারন এর জন্য যে ন্যনতম অবকাঠামো প্রয়োজন সেটা ও অবশেষ ছিলোনা যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে। আমদানী-রফতানী বানিজ্য সহ সমস্ত যোগাযোগ এবং উৎপাদন ও বন্টন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো

বস্তুতঃ এদেশের জীবনপ্রবাহ ও এবং সহায় সম্পদের উপর এই নয়মাসে কি নিদারুন ধ্বংসলীলা বয়ে গেছে, বৈষয়িক ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে তার অতি সামান্য কেবল আঁচ করা সম্ভব।গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘ রিলিফ সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসমুহের উদ্যোগে ক্ষয়ক্ষতির যে প্রাথমিক তথ্য উদঘাটন করা হয় তা দেখে বিস্ময়ে বিমুঢ় হতে হয়।
পরীক্ষামুলক প্রাথমিক হিসেবে দেখা যায়, কেবল সরকারী খাতেই বস্তুগত মুলধন ও বিষয়সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সে সময়ের অর্থমূল্যে ২৭৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এর ফলে আয়ের দিক থেকে ক্ষতি দাঁড়ায় আরো ১২৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ২০ বছরে নিয়োজিত মুলধন থেকে ৫% হারে যে আয় হতো তার ভিত্তিতে এই ক্ষতির হিসাব ধরা হয়।
এছাড়া কৃষিখাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৩৭৬ কোটি টাকা। আমদানী বন্ধ ও বিতরন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার দরুন পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা-বানিজ্যখাতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পরিমান প্রায় ১০০ কোটি টাকা।এসব ক্ষতির হিসাব একত্র করলে দেখা যায়, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উৎপাদনের ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমান আনুমানিক ছয়শো কোটি টাকা। এই ক্ষয়ক্ষতির সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যজনিত ক্ষতি, বেসরকারী বাড়িঘর ও বিষয়সম্পদের ব্যাপক ধ্বংসলীলা এবং প্রাণভয়ে স্থান থেকে স্থানান্তরে পলায়নরত মানুষের ক্ষতির হিসাব স্ংযুক্ত হয়নি।
কৃষি ছাড়া বেসরকারী খাতে বস্তুগত মুলধনের দিক দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ৯০৩ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এর অর্থ আয়ের ক্ষেত্রে আরো ৬১০ কোটি টাকার ক্ষতি। এই ক্ষতির সাথে সরকারী খাতে নির্দিষ্ট কালে আয়ের ক্ষেত্রে ক্ষতি সংযুক্ত করলে নির্দিষ্ট কালে আয়ের ক্ষেত্রে মোট ক্ষতির পরিমান দাঁড়ায় ১২১০ কোটি টাকা।

এ ছাড়া বস্তুগত মুলধন খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ১২৪৯ কোটি টাকা। নীচে এক নম্বর তালিকায় বস্তুগত মুলধন ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রীর যে শতকরা হার প্রদান করা হয়েছে তাতে সরকারী খাতে বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতির আপেক্ষিক গুরুত্ব অনুধাবন করা যাবে। নয়মাসের ধ্বংসযজ্ঞে পরিবহন ব্যবস্থা ভীষনভাবে বিপর্যস্ত হয়। এরপরই উল্লেখযোগ্য বিদ্যুৎ ও শিল্পখাত। বেসরকারী খাতে ৯২১কোটি টাকার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয় ঘরবাড়ির। এরপর পর্যায়ক্রমিকভাবে কারিগর-ব্যবসায়ী, কৃষি ও হাটবাজারের কথা উল্লেখযোগ্য।
[ Ahsan , 1972]

শেখ মুজিব ও তার আওয়ামী লিগ কাজ শুরু করার মুহুর্তে তাৎক্ষনিকভাবে অনেকগুলো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যঃ (১) প্রশাসন সুষমকরন (২) ভারত প্রত্যাগত প্রায় এককোটি শরনার্থীর পুনর্বাসন (৩) দু লক্ষ ধর্ষিতা নারী যাদের অনেকেই গর্ভবতী হয়ে পড়েছিলেন তাদের পুনর্বাসন (৩)আইনশৃংখলা পরিস্থতির বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যান্য সশস্ত্র লোকদের নিয়ন্ত্রন (৪) যুদ্ধকালীন সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, সেতু, রেল সড়ক এবং সমুদ্র ও নদীবন্দর মেরামত এবং (৫) জাতীয় অর্থনীতি বিশেষ করে শিল্প ও অর্থ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সচল করে তোলা।
এছাড়াও বেশ কয়েকটি কারনে জরুরী ভিত্তিতে সমাধানযোগ্য যে কয়েকটি রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যার উদ্ভব ঘটেছিলো সেগুলো হলোঃ (১) বাংলাদেশে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি (২) সীমান্তে চোরাচালান (৩) যুদ্ধকালীন সময়ে পাকবাহিনীকে সহায়তাকারী দালালদের উপস্থিতি এবং (৪) যুদ্ধবন্দী সংক্রান্ত সমস্যা
এসবের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কুটনীতিতে মুজিবের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়- মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য সহযোগীতার প্রেক্ষিতে তিন দিকে ভারত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশ ভূ-খন্ডকে তৎকালীন শীতল যুদ্ধের প্লে গ্রাউন্ড হওয়া থেকে রক্ষা করা।
জোটনিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে দ্রুততম সময়ে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের স্বীকৃতি ও জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ তার জন্য অগ্রাধিকার হয়ে দেখা দেয়।
এছাড়া বাংলাদেশে আটকে পড়া বিহারী অবাঙালী এবং পাকিস্তানে অবস্থানরত বাঙালীদের পুনর্বাসনের প্রশ্নটিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। এসবের পাশাপাশি, মুক্তি সংগ্রামে রাজনৈতিক ও সামরি্ক সফলতা আসার পর দেশের জনগনের আচার আচরনে গগন-চুম্বী আশা-আকাংখার সৃষ্টি হয়।
খুব স্বাভাবিকভাবেই শেখ মুজিব এবং একমাত্র শেখ মুজিবই ছিলেন সেই আশা-আকাংখার কেন্দ্রবিন্দু । দেশের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তাঁর দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলার বাস্তবায়ন- হয়ে উঠে তার নতুন দায়িত্ব, মুক্তি সংগ্রামের মহানায়কের জন্য আরেক নতুন সংগ্রাম। বাংলার দীর্ঘ ইতিহাসে তার আগে, পরে আর কোন নেতা কিংবা শাসককে এতো ভয়ংকর দুরবস্থার সামলে এতো বিশাল স্বপ্ন বাসতবায়নের অতি মানবিক দায়িত্ব পালন করতে হয়নি।
[ মওদূদ, ১৯৮৭]

এরকম বহুমুখী ও জটিল দুরবস্থার মধ্যে শেখ মুজিব যখন বাংলাদেশ পুনর্গঠনের কাজ শুরু করেছেন তখন দেশের অন্য সব রাজনীতিবিদ, আমলাতন্ত্র, বুদ্ধিজীবি, সংবাদপত্র কী ভূমিকা রেখেছিলেন সেই তথ্য বিবেচনা না করলে বাংলাদেশের পুনর্গঠনের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

১৯৭০ এর নির্বাচনের ঐতিহাসিক রায়ে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগকে নিরংকুশ ম্যান্ডেট দিয়েছিলো এদেশের জন গন। এই ম্যান্ডেটই আইনগতভিত্তি ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধের। ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে আওয়ামী লীগের যে নেতৃত্ব পাকিস্তানে বন্দী শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি ঘোষনা করে যুদ্ধকালীন সরকার গঠন করেছিলেন তাদের সকলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন বলেই ভারত সহ অন্যান্য রাষ্ট্রের সমর্থন ও সহযোগীতা পেয়েছিলেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, মুক্তিবাহিনির সর্বাধিনায়ক কর্ণেল ওসমানী ও উপঅধিনায়ক কর্ণেল রব- দুজনেই ’৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
তবু বৃহৎ স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধকে সর্বদলীয় বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয় যেখানে কমিউনিষ্ট পার্টির নেতা কমরেড মনি সিং, ন্যাপ ( মোজাফফর) এর কমরেড মোজাফফর আহমদ এবং ন্যাপ ( ভাসানী) প্রধান মওলানা ভাসানীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় মুজিব নগর সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে।

যদি ও মওলানা ভাসানী তার চীনপন্থী রাজনীতির কারনে আইয়ূব খানকে সমর্থন জানিয়েছিলেন এবং বাঙালীর স্বাধিকার আন্দোলনের ভিত্তি ছয়দফাকে সিআইএ’র চক্রান্ত বলে প্রত্যাখান করেছিলেন তবু ‘৬৯ এর গন অভ্যুত্থান এর সময় তিনি অবস্থান পাল্টান এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে শেখ মুজিবকে সমর্থন দেন। ‘ভোটের আগে ভাত’ এর দাবী তুলে তিনি আবার ১৯৭০ এর নির্বাচন বর্জন করেছিলেন।
প্রকাশ্য রাজনীতির উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ১৯৭০ সালের ১১ই জানুয়ারী আওয়ামী লীগ পল্টন ময়দানে তাদের প্রথম জনসভায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে। সপ্তাহখানেক পর জামাতে ইসলামীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯শে মার্চ সন্তোষে ভাসানীপন্থী ন্যাপ এক বিরাট কৃষক সমাবেশের আয়োজন করে।
পাকিস্তান আমলে পূর্ববঙ্গে দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ অফিসার সিদ্দিক সালিক এই কৃষক সমাবেশের উল্লেখ করে বলেন, সরকারী মহল আওয়ামী লিগ বিরোধী শক্তি হিসাবে ভাসানীপন্থী ন্যাপকে গড়ে তোলার পক্ষপাতি ছিলো। কৃষক সমাবেশকে সফল করার জন্য সরকারী উদ্যোগে কৃষক-কর্মীদের টাঙ্গাইলে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেন চলাচল এবং সম্মেলন কেন্দ্রের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। এই সম্মেলনের মুল শ্লোগান ছিলোঃ ‘মুক্তি আসে কিসে, ব্যালটে না বুলেটে- বুলেটে বুলেটে” ।
[SaliQ Siddiq , 1977]

কিন্তু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে নির্বাচনী জোয়ারে এসব কিছুই ভেসে যায়। ৭ মার্চ ১৯৭১, শেখ মুজিব অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলে ভাসানী ও তার সংগঠন কার্যত নিস্ক্রিয় হয়ে থাকে। ২৫ মার্চের পর পাকিস্তান আর্মি সন্তোষে মাওলানা ভাসানির বাড়ি পুড়িয়ে দেবার পর তিনি যমুনায় নৌকার আশ্রয় নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে আসামের গোয়ালপাড়া জেলার শিশুমারিতে আশ্রয় নেন। সেখানে ইন্দিরা গান্ধির মন্ত্রী মইনুল হকের সাথে বৈঠকের পর তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং পার্ক স্ট্রিটের কোহিনুর ম্যানসনের পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে তার থাকার ব্যবস্থা করা হয়। কিছুদিন পর অসুস্থ হয়ে পড়লে সুচিকিৎসার জন্য দিল্লী নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সুস্থ হবার পর দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সাথে একান্ত বৈঠক শেষে পূর্ণ বিশ্রামের জন্য তাকে দেরাদূনের শৈলবাসে পাঠানো হয়। ২৪ জুন ১৯৭১ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন ‘ একমাত্র পথ পূর্ণ স্বাধীনতা, না হয় মৃত্যু’
৮ সেপ্টেম্বর তিনি দেরাদূন থেকে কলকাতা আসেন এবং মুজিব নগর সরকারের উপদেষ্টা কমিটিতে যোগ দেন।
১৯৭১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মুজিব নগর সরকার কর্তৃক প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলকাতায় অনুষ্ঠিত দুদিন ব্যাপী এক বৈঠকে গনতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে পরামর্শ দানের জন্য আট-সদস্যবিশীষ্ট একটি “কন্সাল্টেটিভ কমিটি” গঠন করা হয়েছে
“ The formation of the Consultative committe would ensure a sense of participation in the liberation struggle to all shades of people and opinion who are actively fighting against the colonial and imperialist exploiters of Bangladesh. the formation of the committe is an expression of the total unity of the rank and file of the freedom-loving people of Bangladesh having faith in the leadership of Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, the Awami Leaugue and the Government of the People’s Republic of Bangladesh which alone constitute legitimacy in Bangladesh”
- Bangladesh Press Release No. PR/47 Mujibnagar, 9 September, 1971

কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মওলানা ভাসানী( ভাসানীপন্থী ন্যাপ), মনি সিং( বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি), মনোরঞ্জন ধর (বাংলাদেশ ন্যাশনাল কংগ্রেস) , অধ্যাপক মুজাফফর আহমদ ( মুজাফফর পন্থী ন্যাপ), তাজউদ্দীন আহমদ ( প্রধানমন্ত্রী), খন্দকার মোশতাক আহমদ( পররাষ্ট্রমন্ত্রী) এবং আওয়ামী লীগের দুজন সদস্য।

১৯৭১ সালে মাওপন্থী দল ও উপদলগুলোর অনেকটিই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়া আটটি গ্রুপ কলকাতার বেলঘাটার একটি স্কুলে দুদিনের সম্মেলন শেষে “বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় পরিষদ” গঠন করে কমরেড বরোদা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে। মওলানা ভাসানী এ সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকলে ও তাকে সমন্বয় পরিষদের প্রধান নির্বাচত করা হয়।
এরপর ভাসানী তাজউদ্দীন আহমদের সাথে দেনদরবার করেন সমন্বয় পরিষদের নেতাদের সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করতে। কিন্তু অত্যন্ত যৌক্তিক কারনেই চীনপন্থীদের উপদেষ্টা নিতে তাজউদ্দীন আহমদ অস্বীকৃতি জানান, এতে ভাসানী তাজউদ্দীন ও মুজিবনগর সরকারের উপর ক্ষেপে যান।
এ সময় লন্ডনে অবস্থানরত তার চীনপন্থী সমর্থকরা গুজব ছড়ায় যে, আওয়ামী লীগের পরামর্শে ভারত সরকার তাকে বন্দী করে রেখেছে।
এই গুজবের প্রেক্ষিতে মওলানা ভাসানী লন্ডনে অবস্থানরত মুজিবনগর সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি বিচারপতি আবু সাইদ চৌধুরীর কাছে একটি চিঠি লিখেন “ হিন্দুস্তান সরকার আমাকে কারাগারে বা অন্তরীন রাখিয়াছে, ইহা মোটেই সত্য নয়,।আমি যেখানে থাকি সেখানে খুব গোপনে অবস্থান করি। প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা বা সাক্ষাৎ করা আমার পক্ষে এই অবস্থায় মোটেই সম্ভব নয়”
তিনি আরো লিখেন “ হিন্দুস্তান নিঃস্বার্থভাবে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠা ও নির্যাতিত শরনার্থীদের জন্য যাহা করিতেছে তাহার কথা বাঙালীরা চিরকাল স্মরন রাখিবে”
অক্টোবর মাসে তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে একটি দীর্ঘ পত্র লিখেন। তাতে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ জানান, বাংলাদেশে ফেলে আসা তার স্ত্রী ও নাতনিদের খোঁজ বের করে দেয়ার জন্য ও ইন্দিরাকে অনুরোধ জানান। নিজের রাজনৈতিক জীবনের কিছু কথা বয়ান করেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কোন বিষয়ে মতভেদ হলে আলোচনার মাধ্যেম তা নিরসনের প্রস্তাব দেন। শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহযোগীতার আশ্বাস ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া আসামে কিছু জমিজমা, বাড়িঘর চেয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।শেষে প্রস্তাব করেন স্বাধীন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কনফেডারেশন গঠনের।
ভারতে অবস্থানকালে মওলানা সাহেব আরো কয়েকবার ভারতের সংগে কনফেডারেশনের কথা উল্লেখ করেন। ১৯৭১ সালের মাঝামাঝি সময়ে হাসপাতালে অবস্থানকালে তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে আরেকটি চিঠি লিখেছিলেন “ আমার শেষ সংগ্রাম বাংলাদেশকে স্বাধীন করা, সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ভারতের সহিত কনফেডারেশন গঠন। এই তিন কাজের সাধন ইনশাল্লাহ আমার জীবিতকালে দেখার প্রবল ইচ্ছা অন্তরে পোষণ করি। “ মওলানার নিজ হাতে লেখা এই বাংলা চিঠির ইংরেজী অনুবাদ মিসেস গান্ধীকে পাঠানো হয়েছিলো।
[সাইফুল;১৯৮৭]

ভারতে অবস্থানকালে মওলানা সাহেব অধিকাংশ সময় হাসপাতালে কিংবা বিভিন্ন স্বাস্থ্যনিবাসে কাটান। ১৯৭২ সালের শেষের দিকে ভারতীয় লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে বলা হয়, ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাস থেকে ১৯৭২ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত ভারত সরকার মওলানা ভাসানীকে ভিআইপি হিসাবে গণ্য করেন। তাঁর থাকা খাওয়া এবং চিকিৎসার সম্পুর্ণ ব্যয়ভার ভারত সরকার বহন করে। তাছাড়া হাতখরচের জন্য তাঁকে মাসিক দুহাজার টাকা ভাতা দেওয়া হয়। শুধু চিকিৎসার জন্য ৪৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়।
[ Jyoiti Sen; 1974]
মুক্তিযুদ্ধ শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসার আগের দিন(২১ জানুয়ারী ১৯৭২) আসামের ফকিরগঞ্জের এক জনসভায় মওলানা বলেন, বাংলাদেশের জনগন মিসেস গান্ধীর মতো দয়ালু মহিলা এবং ভারতীয় জনগনের সহানুভূতির কথা কিছুতেই ভুলতে পারেনা। তিনি আরো বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ, গনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। বাংলাদেশে ফিরে আসার আগে ইন্দিরা গান্ধির সাথে দেখা করতে গেলে, ইন্দিরা নিজ হাতে মওলানাকে নগদ সাত হাজার টাকা প্রদান করেন।
[মতিন; ১৯৮৪]
১২ মার্চ ১৯৭২ ভারতীয়বাহিনী বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরে যায়।১৭ মার্চ ইন্দিরা গান্ধী শুভেচ্ছা-সফরে বাংলাদেশে আসেন। এদিন দু-দেশের মধ্যে ২৫ বছর মেয়াদি মৈত্রী, সহযোগীতা ও শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে ২৪ মার্চ মওলানা বলেন “ ভারতই যে বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু,স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে ভারত তার প্রমান দিয়েছে। আমি তা কখনো ভুলতে পারিনা” তিনি আরো আশা প্রকাশ করেন যে দেশের পাহাড়সম সমস্যার সমাধানকল্পে মুজিব সরকারকে জনগন দুই-তিনবছর সময় দেবে।
[Khatib, 1981]


মন্তব্য

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

একটা সিরিজ হবে নাকি বস?

লেখা -গুড়- হয়েছে

-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ভাসানী একটা চীজ ছিল বটে। বাহাত্তর সালের প্রথম পর্ব থেকেই শুরু হয়েছিল তার রাজনৈতিক ক্যারিকেচার।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাসানী'র রাজনৈতিক অর্ধমৃত্যু ঘটে আওয়ামী লীগ ছেড়ে ন্যাপ করার মাধ্যমে। কী যুক্তিতে উনি ন্যাপ করেছিলেন? পাকিস্তান আমলে সকল আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে কোন না কোন স্টান্ট দিয়ে বা বাগড়া দিয়ে আন্দোলনকে দুর্বল করেছেন, কর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের বিভ্রান্ত করেছেন। তাঁর বাকি অর্ধেক রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার মাধ্যমে। এই কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে ন্যাপ (ভাসানী) না হতে পেরেছে প্রধান বিরোধী দল, না হতে পেরেছে বিরোধী দলীয় জোট গঠনের উদ্যোক্তা। ফলে ফাঁকা মাঠে জাসদের মতো বাম হঠকারী দলের উদ্ভব হতে পেরেছে। ভাসানী সম্পর্কে প্রচুর অতিরঞ্জন আছে, যেমনটা আরও দশজন পীর-ফকিরের ব্যাপারে থাকে। চিন্তায়-বাক্যে-কাজে স্ববিরোধীতায় পূর্ণ, মার্ক্সবাদচর্চ্চা থেকে বহু দূরে থাকা মানুষকে 'রেড মাওলানা' বলা কানা ছেলের নাম পদ্মলোচনের মতো ব্যাপার। এটা ঠিক যে অনেক মার্ক্সবাদী পাকিস্তান আমলে ন্যাপের আশ্রয়ে ছিল। সেটা পরাধীন আমলের প্রেক্ষিতে ঠিক ছিল। স্বাধীন দেশে এই প্রাসঙ্গিকতা না থাকায় মার্ক্সবাদীরা ন্যাপের আশ্রয় ছেড়ে চলে যায়। ন্যাপের জন্ম না হলে তারা পাকিস্তান আমলে আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে যেতো। ভাসানী'র সবচে' ওভাররেটেড আন্দোলন হচ্ছে 'ফারাক্কা লংমার্চ'। এই প্রকার ইস্যুতে সারা দেশব্যাপী জনসচেতনতা তৈরি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাপ সৃষ্টি ইত্যাদি না করে সীমান্ত অভিমুখে লংমার্চ করে এই অতি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনটিকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করা হয়েছে। ওয়ালী খান আর মোজাফফর আহমদ সংক্রান্ত ব্যাপারে ভাসানীর ভূমিকা নিয়ে আর কিছু বললাম না।

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় ১৯৭১ সালের অক্টোবরে ফিরোজ আহমেদের নেয়া অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদের সাক্ষাতকারের লিঙ্কটি এখানে দিলাম। আগ্রহী পাঠকেরা পড়ে দেখতে পারেন, খুবই আগ্রহোদ্দীপক।

http://www.thedailystar.net/prof-muzaffar-ahmed-an-interview-55636

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ভাসানী অদ্ভুত এক রাজনীতিবিদ। তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানটা এত বিচিত্রভাবে নাড়াচাড়া করেছেন যে তাঁর সত্যিকারের অবস্থান বোঝার সাধ্য সাধারণ মানুষের নেই। তিনি ভারতের সাথে কনফেডারেশন করার কথা বলেছেন, এটা জানতাম না। নতুন তথ্যটি তাঁর সম্পর্কে আরো ভাবনার খোরাক যোগালো। যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে তাঁর ভূমিকাটা আরো ভালো হতে পারতো।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

প্রান্ত মৃধা এর ছবি

সবাই ভূমিকা রেখেছে তৎকালীনগণ...
যদি আমাদের সময়কার কেউ তখন কেউ থাকত,তাহলে যুদ্ধ জয় করতে কয়েক বছর লাগত...
আমরা জাতি হিসেবে এতটা নীচ কবে হলাম?
যে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মান তো দূরের কথা
মান ও পাচ্ছে না....

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।