' আর ইউ এফ্রেইড অফ ক্রোকশিয়া?'

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বুধ, ০১/১১/২০০৬ - ১১:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


স্পিলবার্গের ' দ্যা টার্মিনাল' সবচেয়ে পছন্দের মুভিগুলোর একটি ।

সদ্য স্বাধীন মধ্য এশিয়ার এক ছোট দেশের নাগরিক ভিক্টর নভস্কি । স হজ সরল, ভাঙাচোরা ইংরেজী জানা মানুষটা এসেছে জন.এফ.কেনেডী এয়ারপোর্টে, উদ্দেশ্য নিউইয়র্ক সিটি । কিন্তু এর ভেতরই তার দেশে ঘটে গেছে সামরিক কু্য, চলছে হত্যা- ধ্বংস, জারী হয়েছে জাতি সংঘের নিষেধাজ্ঞা, বাতিল হয়ে গেছে পাসপোর্ট।
ফলে ভিক্টর নভস্কি 'এ ম্যান ফ্রম নো হোয়ার' । আটকে পড়ে থাকে দিনের পর দিন এয়ারপোর্টের ইন্টারন্যাশনাল লাউঞ্চে । দেশ নেই, এয়ারপোেের্টর বাইরে যাবার হুকুম নেই, ইংলিশ ভালো জানা নেই --- তবু ভিক্টর বেঁচে থাকে নিজের মতো, নিজের মতো করে সে গড়ে তুলে তার একটা জগৎ, ও ই টার্মিনালের ছোট্ট পরিসরে সে কাজ খুঁজে নেয়, বন্ধু জোটায়, এমনকি প্রেম ও আসে জীবনে ।

এয়ারপোেের্টর এডমিনিষ্ট্রেটর ভিক্টরের জন্য একটা সুযোগ তৈরী করে দেয় নিউইয়র্কে রাজনৈতিক আশ্রয় নেবার ।
ভিক্টরকে প্রশ্ন করে:
'তোমার দেশ ক্রোকশিয়া এখন নিরাপদ নয়, তাইনা?'
--- 'হ্যাঁ'
'দেশে ফেরত গেলে তোমাকে মেরে ফেলতে পারে, তাইনা?'
----'হ্যাঁ, পারে'
'সো , ইউ এফ্রেইড অফ ক্রোকোশিয়া?'
----'নো'
'নো? হোয়াই?'
---- ' নো এফ্রেইড , ক্রোকশিয়া মাই কানট্রি! '

**********************************************


এমন বাংলাদেশ কি দেখেছি এর আগে?

দেখেছি তো । এরকম দেখে দেখেই তো বড় হলাম । স্বৈরাচারের বুটের নীচে আমাদের কৈশোর , তারুন্য । ছাত্রমিছিলে পুলিশের ট্রাক, যখন তখন গুলি । 87-88 আর 90 এর সেই দিন গুলোতে কতো মৃতু্য, কতো হাহাকার!
তারো আগে কমপক্ষে 19টা সামরিক কু্য । শত শত মুক্তিযোদ্ধা সৈনিকের ফাঁসী , গুপ্ত হত্যা...

তবু তো এ আমার বাংলাদেশ ।
ক্ষোভ , রাগ, অভিমান তবু তীব্র ভালোবাসা'র ।
সেই জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত যারা মধুর নামে বিষ ঢেলে দেবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদেরকে বারবারতীব্র উপ হাস করে বেঁচে থাকে এই বাংলাদেশ ।

বেঁচো থাকো বাংলাদেশ ।

I'm not afraid of u!


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।