[is=\০০৩৩PP] | | Svojɇbi

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৩/১১/২০০৬ - ১০:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


[
1975 এর 15 আগস্টের মধ্যরাতের পর ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ক'জন মাঝারী র্যাংকের অফিসার , সম্ভবত: নিজেদের ভাবছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিমান পুরুষ । ইতিহাস সৃষ্টি করা যেমন সাহসের কাজ, ইতিহাসকে ধ্বংস করতে পারা ও তো ভীষন শক্তি'র ব্যাপার ।
তারপর গত 30 বছরে মাঝে মাঝেই এরকম শক্তিমান তারকার উদয় ঘটেছে বাংলার ভাগ্যাকাশে । তাদের কেউ রাজনীতিবিদ, কেউ সামরিক জান্তা, কেউ কেউ বিচারপতি, কেউবা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য....
এঁদের কেউ ক'দিনের জন্য, কেউ ক'মাস কেউবা কয়েকবছর ধরে নিজেদের অজেয়, অব্যয় ভেবেছেন ।

হায়, ইতিহাস বড় পরিহাসপ্রিয় ।
এই সব শক্তিমানদের সময় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে ভাগাড়ে ।

বেচারা আজিজ ... গোলগাল, নাদুস নাদুস.. পঁচা ফল । দেখলে মায়া হয় ।

]
*********************************************

ঘুমিয়ে পড়ুন,খন্দকার । খুলে রাখুন টুপিটা ।
টুপি কালো । অন্ধকার আরো কালো । রাস্তায় একটা
গাছ পড়ে আছে নিখুঁত দুভাগে কাটা । ঠোঁটে ঘাস
কবুতর একটি উড়ছে । এখন তো দিন শেষ----
দিনের অস হ্য আলো,ব্যাস,শেষ! সারাদিন ধরে
টেবিলে যে তাসের বাড়িটা তুলে খেলা করেছেন,
খুলে নিন একে একে,তাসগুলো গুছিয়ে রাখুন ।
এখনি সময় এক ইঁদুর হবার । দেখুন না
এত বড় বাড়ি,সুনসান চারদিক,বাংলাদেশ
বিশাল কিচেন । কই,উঠুন,ছুটুন,খন্দকার,
দেয়ালে বাংলার ম্যাপ ওই যে ঝুলছে,উঠে যান,
কাটুন ।--কী? হাত দিয়ে দেখে নিন আপনার দাঁত
ইতোমধ্যে ইঁদুরের দাঁত হয়ে গেছে ।

এটা কিন্তু
এখনো সকাল নয়,তবু যদি খিদে-খিদে করে--
ওইতো ওখানে এসে দাঁড়িয়েছে বদ্্বীপের নারী,
স্তনে তার তেরোশ নদীর দুধ-- দাঁতটি বসান ।
কিন্তু যাঁকে একদিন নেতা বলে সালাম দিতেন
তিনি তো সিঁড়িতে পড়ে-- এখনো তো রক্ত টপটপ-
ধ্বকধ্বক করছে ওটা কী?হৃদপিন্ড ? বাংলাদেশ?
যথেষ্ট মরেনি বুঝি মুজিবুর?-- কোথায় পিস্তল!!
ওইতো সোফায় শুয়ে কর্নেল সাহেব, হিপে তার
হোলস্টারে আছে আটঘড়ার পিস্তল । টেনে নিয়ে
দুম করে করুন ফায়ার । ইঁদুরের ব্যব হার
অত:পর--মানচিত্র,জননীর স্তন,গর্ভথলি । সমাপ্ত আহার !

খন্দকার, এবার ঘুমোন । আজ
এ থ্রি সিটার সোফাই বিছানা । শুয়ে পড়েছেন?
ঘুম কি আসেনা তবু? বাম হাত তুলে ধরতেই
চমকে যে উঠলেন ! ঘড়ই বন্ধ হয়ে গেছে? নাকি
চলছেই--চোখর ধন্দ--বেড়ালটা কালো মিশমিশে--
সময় হঠাৎ লাফ দিয়ে গিলে ফেলবে ইঁদুর ।
খন্দকার ঘুমোন তো এবার ।

এখন দিনের আলো
মরে গেছে বাংলাদেশ থেকে । এখনো নি:শ্বাস পড়ে,
রক্ত বয় দেহে, এখনো তো কবুতর মৃত্তিকার
বাতর্া আনে ঠোঁটে ঘাস নিয়ে । সে কথা এখন থাক ।
এখন ঘুমোতে যান । রাত দু'টো । তবে তআর আগে
মগজটা খুলে জমা দিতে হবে কর্নেলের কাছে ।
চটপট সরে নিন । এইতো বিছানা বেশ । ব হু
দেরি শেষ বিছানার । খন্দকার, ঘুমোতে যান তো!


আকাশে একটি তারামন্ডল ঝুলে আছে যেন ফাঁস ।
আঁস্তাকুড়ের গাদায় একটি ধেড়ে ইঁদুরের লাশ ।
সোফাটি কি খুব দুলছে ,খন্দকার ?
কিছু না, কিছু না--বেড়ালটা শুধু শানিয়ে নিচ্ছে দাঁত ।
বুড়ো এক তাঁতি ইটিহাস জুড়ে চালিয়ে চলেছে তাঁত ।
পৃথিবীটা খুব দুলছে ,খন্দকার ?

------------------------------------------------
সামপ্রতিক পড়া সৈয়দ হকের কবিতা


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।