আল্লাহর মাল

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ০৫/০৮/২০১৪ - ২:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিয়ম অনুসরণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে একটা ঢিলেঢালা নিয়তিনির্ভর মনোভাব কাজ করে। এক বাক্যে প্রকাশ করতে গেলে, রাখে আল্লাহ মারে কে?

বাংলাদেশের অধিকাংশ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থায় নিরাপত্তার জন্য ইহলৌকিক কোনো ব্যবস্থা বা নিয়মের ধার না ধেরে সরাসরি আল্লাহর ঘাড়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। যে সেতুতে ৫ টনের বেশি ভারবাহী যান চলা নিষেধ, চালকেরা অম্লানবদনে তাতে ১৫ টন নিয়ে উঠে পড়তে পারে। যে লঞ্চে নিরাপত্তার খাতিরে সর্বোচ্চ ৮৫ জন যাত্রী তোলা বৈধ, তাতে আড়াইশো জন যাত্রী আল্লাহর হাতে নাব্যতা ও প্লবতার দায়িত্ব সঁপে দিয়ে উঠে পড়ে। আবহাওয়া বৈরী হয়ে এলে যখন কোনো ক্যাটেগরির লঞ্চের যাত্রা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়, তখনও আল্লাহর হাতেই সবকিছু ছেড়ে দিয়ে পার্থিব টাকাপয়সার পেছনে লঞ্চ ছোটে।

দুর্ঘটনা যদি ঘটেই যায়, তখন আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে দোষারোপের উপায়ও থাকে না। কারণ, মারে আল্লাহ রাখে কে?

পাবলিকের জন্যে বরাদ্দ সবকিছুতে আল্লাহকে চিফ সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি অফিসার হিসাবে নিয়োগই যদি দেওয়া হয়, তাহলে মন্ত্রী-এমপি-নেতারা কেন লটবহর নিয়ে নিরাপত্তা প্রোটোকলসহ চলাফেরা করে?

হয়তো, শুধু পাবলিকই আল্লাহর মাল।

মানুষ কয়েক হাজার বছর ধরে জলচর। কোনো নৌযান কখন পানিতে ভাসবে, কখন ডুবে যাবে, তা নির্ধারণের জন্যে প্রয়োজনীয় জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা এই কয়েক হাজার বছরে সঞ্চিত হয়ে গেছে। সারা দুনিয়াতে কোটি কোটি মানুষ কিছু সরল নিয়ম মেনে চলে নৌকাডুবি এড়িয়ে চলতে পারছে, আমরা পারছি না। কর্তৃপক্ষকে গালি দিতে দিতে মুখ ব্যথা হয়ে যাওয়ার পর টের পাচ্ছি, সমস্যাটা শুধু কর্তৃপক্ষেরই নয়। কর্তৃপক্ষ যেমন পাবলিককে আল্লাহর মাল হিসাবে বিবেচনা করে, যারা ভিকটিম, তারাও কর্তৃপক্ষের মতোই নিজেদের আল্লাহর মাল ভাবে। কপালের নিচে দুটো চোখ থাকলে যে লঞ্চে ৮৫ জন যাত্রী ওঠার কথা, তাতে ঠেসেঠুসে আড়াইশো জন ওঠার কথা নয়। ঐ আড়াইশো জন মানুষের মধ্যেও সবকিছু আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকার প্রবণতা কাজ করেছে।

ডুবে যাওয়া লঞ্চ টেনে তোলা হয়, মানুষগুলো ফিরে আসে না। লঞ্চ মালিকেরও কয়েকটা খ্যাপের টাকা গচ্চা যায়, এরচেয়ে বেশি কিছু হয় না। বরং পাবলিকের কাছ থেকে আদায় করা রাজস্ব থেকে ছাগল কিনে মৃতদের পরিবারকে "ক্ষতিপূরণ" দেওয়া হয়।

কিছুদিন আগে একটি যুগান্তকারী রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। চালকের ভুলে দুর্ঘটনা ঘটলে মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে [সূত্র]। স্থলযানের ক্ষেত্রে এ রায় খাটলে, জলযানের ক্ষেত্রেও খাটার কথা। সাম্প্রতিক লঞ্চডুবিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অন্তত একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে যদি লঞ্চের মালিকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়, নৌপথে আল্লাহর ওপর নির্ভরতা কমে তুচ্ছ ইহলৌকিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে যেতে যদি পারেন, লঞ্চ মালিকদের পকেট থেকে টাকা নিয়ে সেই মালের উত্তরাধিকারীদের মাঝে কি আল্লাহ বণ্টন করে দিতে পারেন না?

একই সাথে সাংবাদিক ভাইদের কাছে আরেকটি নিবেদন। বিশ্বকাপের সময়, বা ভোটের সময় আপনারা বিভিন্ন দলের স্কোর রাখেন। একইভাবে যদি নৌপরিবহন মন্ত্রীদের হাস্যোজ্জ্বল ছবিসহ নিমজ্জনে মৃতদের সংখ্যা দিয়ে স্কোরবোর্ড তৈরি করে যে যার পত্রিকায় টাঙিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে পাঠক ও ভোটারদের গুণতে সুবিধা হবে, কার আমলে কর্তৃপক্ষীয় অবহেলায় কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আল্লাহর মালের হিসাব আল্লাহ রাখেন জানি, আমরাও নাহয় রাখা শুরু করলাম?


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

একদম শেষে দেওয়া আইডিয়াটা চমৎকার। আমরা আম-পাব্লিকেরা যদি আমাদের সামান্য একটু কাণ্ডজ্ঞান ব্যবহার করি তাহলেই বোধকরি অনেক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

গোঁসাইবাবু

অতিথি লেখক এর ছবি

'যদি নৌপরিবহন মন্ত্রীদের হাস্যোজ্জ্বল ছবিসহ নিমজ্জনে মৃতদের সংখ্যা দিয়ে স্কোরবোর্ড তৈরি করে যে যার পত্রিকায় টাঙিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে পাঠক ও ভোটারদের গুণতে সুবিধা হবে, কার আমলে কর্তৃপক্ষীয় অবহেলায় কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আল্লাহর মালের হিসাব আল্লাহ রাখেন জানি, আমরাও নাহয় রাখা শুরু করলাম?'
ভাল প্রস্তাব।

সুস্মিতা শ্যামা রহমান

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাংলাদেশে কয়েকটা উড়োজাহাজ, কয়েকটা স্পেশাল বাস, আর ঢাকা চট্টগ্রামের একটা ট্রেন সার্ভিস বাদে বাকী সবই আল্লার ওয়াস্তে চলে। ট্রেনগুলো বাদে বাকী যানবাহনের সাইজ, টাইপ, রুট, ভাড়া, যাত্রীধারণ ক্ষমতা সবকিছুই নির্ধারিত হয় যানবাহন মালিকদের সিণ্ডিকেট বা সমিতি দ্বারা। তারা যানবাহনের মালিক আবার জানমালেরও মালিক। এদেশের মানুষ কয়েকশো বছর ধরে নৌপথে যাতায়াত করলেও এখানে এখনো পয়সা দিয়েও সেরকম একটা স্টীমার বা লঞ্চ পাওয়া যাবে না যাকে আন্তর্জাতিক মানের বলা যায়। এই সেকটর একদমই আদিম অবস্থায় জোড়াতালি রয়ে গেছে। এখানে বাছাবাছি করতে গেলে লোম বাছতে কম্বল উজাড় হবে। সরকার এবং লঞ্চমালিক উভয়ই বছরে দু দশটা বড় দুর্ঘটনা ঘটবে এটা অনিবার্য বলে ধরেই নেয়। তাদের হিসেব হলো সড়কপথে যদি বছরে ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটে হাজার তিনেক মানুষ মারা যেতে পারে, তাহলে নৌপথে হাজার খানেক মরলে সমস্যা কি। সড়কের মতো নৌ দুর্ঘটনা তো আর প্রতিদিন ঘটে না। যমদুত কি শুধু সড়কপথেই থাকবে, নৌপথে তার কাজ নাই? আল্লার মাল সবখানেই কালেকশান করা যায়।

সত্যি বলতে কি, পরিবহন সেক্টরে আমি কখনোই কোন সরকারের অস্তিত্ব অনুভব করিনি। না বর্তমানে, না অতীতে। এটা আগাগোড়াই স্বাধীন সার্বভৌম বলে বিবেচিত হয়েছে। এখানে সাত না সাতশো খুনও মাফ হতে পারে লাইনঘাট ঠিক থাকলে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনেরা খালি নাফরমানি কথাবার্তা বলেন, হায়াত মউত আল্লাহর হাতে। ওনার কাজে ডিস্টাপ দেয়া ঠিক নয়।

জোক্স অ্যাপার্টঃ আমাদের শুধুমাত্র টপ ডাউন অ্যাপ্রোচের জন্য অপেক্ষা না করে সম্ভবত বটম আপ অ্যাপ্রোচের কথাও চিন্তা করা উচিত। আমরা জানি আমাদের দেশে এমন অনেক লোক আছে যারা এমনে এমনেই পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে করে লংমার্চ করে। এঁরা (এঁদের কথা বলছি এটা ধরে নিয়ে যে তাদের আসলেই কিছু করার ইচ্ছা আছে কিন্ত লংমার্চের বেশি কিছু বুদ্ধি তাদের মাথা থেকে বের হচ্ছে না, হদা স্টান্টবাজি হইলে কথা নাই) এবং অন্যরা সবাই মিলে লংমার্চের সময় বাঁচায়ে এইরকম হিট টাইমগুলাতে সদরঘাট বা বড় বড় কয়েকটা বন্দরে টাইম দিতে পারে। কোন রকম বিপদ সংকেত আছে কিনা এগুলার উপর ভিত্তি করে বন্দরে লোকজনকে উঠতে বাঁধা দিতে পারে, বা কোন উদ্যোগ নিতে পারে। টপ ডাউন থেকে যেহেতু কিছু হচ্ছে না বিকল্প ভাবনা ছাড়া উপায় কী?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এরকম Vigilante বাস্তবায়ন করাটা কঠিন হবে লঞ্চঘাটে। আপনি আমি যাত্রী কম উঠতে দিলে, মালিকের আয় রোজগারে টান পড়বে -তারা এটা মেনে তো নেবেই না, মাস্তান দিয়ে প্যাঁদানি দিতেই তারা উদ্যত হবে। আবার, যাত্রীদের কাছ থেকেও সহযোগিতা পাবেন এমনটা না। তারা লঞ্চঘাটে এসেছে লঞ্চে চড়ার জন্য, আমরা মানা করলে তারা সেটা শুনবে বলে মনে হয় না। হয়ত, মালিকের মাস্তানের সাথে কয়েকজন যাত্রীও মারধোরের কাজে হাত লাগাতে পারে।

আপনার বিকল্প ভাবনাটা ভালো লেগেছে, যদিও।

একগাদা নিরুৎসাহব্যঞ্জক কথা বলে ফেললাম মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

পাবলিকের মাঝে সচেতনাতা নাই কথা সত্য। কিন্তু সেই সচেতনাতা তৈরি করার দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হয়। লঞ্চটা ডুবে গিয়েছে বলে এখন আমরা জানতে পারছি যে এর পরিবহন ক্ষমতা ছিলো ৮৫ আর উঠেছে ৩০০ জন। কিন্তু লঞ্চে উঠার সময় কী জানতো কেউ এই হিসাবটা?সেখানে ২ নম্বর বিপদসংকেত ছিলো। ৬৫ ফুট এর কম দৈর্ঘের কোনো লঞ্চ চলার কথা ছিলোনা সেই রুটে কিন্তু পিনাক-৬(৫৮ ফিট সম্ভবত) আরামে চলে গেলো। পত্রিকা থেকে জানলাম এই সাইজের লঞ্চ দূর্ঘটনার পরেও ছাড়া হয়েছে। এই সকল ট্যাকনিকাল ব্যাপার ত যাত্রীদের জানা থাকার কথা না। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে "অপশন"। ট্রেনের ছাদে মানুষ শখ করে উঠেনা। ঠেলায় পরেই উঠে। একই কথা লঞ্চের বেলাতেও খাটে সম্ভবত।

আমাদের মাঝে ক্যাজুয়ালনেস আছে। কিন্তু সেটি হঠাত তৈরি হয়না। সমাজের কোথাও যেখানে কেউ নিয়ম মানছেনা সেখানে ট্রাফিক আইন মানাটাও আমাদের কাছে এখন হাস্যকর লাগে। রাস্তা পার হইতে ওভারব্রিজে উঠলে বন্ধু হাঁসে, হ্যালমেট,সিটবেল্ট এগুলোর গুরুত্বও আমাদের দেশে নাই। কিন্তু আমার মনে হয় এই "গুরুত্ব" না দেয়াটার পিছনেও কর্তৃপক্ষের ভুমিকা আছে। উন্নত বিশ্বে সিটবেল্ট না বাঁধলে আপনার জরিমানা হবে, হ্যালমেট না পরলে খবর করে দিবে আর আমাদের দেশে সিটব্যাল্ট কি জিনিস কে জানে? হ্যালমেট না পরলে ৫০টাকা ট্রাফিকরে দিলেই ছাইড়া দেয়। তাহলে আমরা ট্রাফিক নিয়া সচেতন হবো কিভাবে?

ট্রাফিক আইন মানাটা শুধু নিজের সেফটির জন্য না। বেশি মানুষ উঠলে আমার সাথে আরেকজন মরতে পারে।হেঁটে রাস্তা পার হইলে গাড়ি আমাকে বাচাইতে গিয়া আরেক গাড়িকে মাইরা দিতে পারে। এই চিন্তাটা আমদের মাঝে নাই।আমার জীবন,আমি বুঝুম টাইপ চিন্তা। নিজে আল্লাহর মাল হওন কিন্তু মানুষকে আল্লাহর মাল বানানির অধিকার আপনার নাই। এই জ্ঞানটা বোধহয় আমাদের মাথায় ঢুকাইতে পারলে কিছুটা কমতে পারে এইগুলা।

----------------------
আশফাক(অধম)

সুবোধ অবোধ এর ছবি

পাবলিকের মাঝে সচেতনাতা নাই কথা সত্য। কিন্তু সেই সচেতনাতা তৈরি করার দায়িত্ব রাষ্ট্রকেই নিতে হয়।

প্রতি বছরই দূর্ঘটনা এবং ব্যাপক পরিমাণ প্রাণ নাশের এত এত উদাহরণের পরও রাষ্ট্র ঠিক কোন কাজটা করলে পাবলিক সচেতন হবে বলে আপনার মনে হয়??

লঞ্চটা ডুবে গিয়েছে বলে এখন আমরা জানতে পারছি যে এর পরিবহন ক্ষমতা ছিলো ৮৫ আর উঠেছে ৩০০ জন। কিন্তু লঞ্চে উঠার সময় কী জানতো কেউ এই হিসাবটা?সেখানে ২ নম্বর বিপদসংকেত ছিলো

৮৫ জন যাত্রীর লঞ্চে ১৫০ জন উঠলেও ধরে নিলাম আমাদের মত সাধারণ মানুষের বোঝার কথা না যে যাত্রী অনেক বেশি উঠেছে, তাই বলে ৩০০ জন উঠলেও কি বোঝার কথা না যে যাত্রী অনেক বেশী উঠেছে??? তার মধ্যে ২নং বিপদ সংকেত ছিল যেখানে???

আমাদের মাঝে ক্যাজুয়ালনেস আছে। কিন্তু সেটি হঠাত তৈরি হয়না। সমাজের কোথাও যেখানে কেউ নিয়ম মানছেনা সেখানে ট্রাফিক আইন মানাটাও আমাদের কাছে এখন হাস্যকর লাগে। রাস্তা পার হইতে ওভারব্রিজে উঠলে বন্ধু হাঁসে, হ্যালমেট,সিটবেল্ট এগুলোর গুরুত্বও আমাদের দেশে নাই। কিন্তু আমার মনে হয় এই "গুরুত্ব" না দেয়াটার পিছনেও কর্তৃপক্ষের ভুমিকা আছে। উন্নত বিশ্বে সিটবেল্ট না বাঁধলে আপনার জরিমানা হবে, হ্যালমেট না পরলে খবর করে দিবে আর আমাদের দেশে সিটব্যাল্ট কি জিনিস কে জানে? হ্যালমেট না পরলে ৫০টাকা ট্রাফিকরে দিলেই ছাইড়া দেয়। তাহলে আমরা ট্রাফিক নিয়া সচেতন হবো কিভাবে?

ধর্ম মতে "আত্মশুদ্ধি ফরজ।" সব কিছুই আল্লাহর কাঁন্ধে চাপায় দেয়া লোকজনের সেটা তো আরও ভালভাবে জানা এবং মানা উচিৎ কে মানল নাকি মানল না তাতে তোয়াক্কা না করে।

ট্রাফিক আইন মানাটা শুধু নিজের সেফটির জন্য না। বেশি মানুষ উঠলে আমার সাথে আরেকজন মরতে পারে।হেঁটে রাস্তা পার হইলে গাড়ি আমাকে বাচাইতে গিয়া আরেক গাড়িকে মাইরা দিতে পারে। এই চিন্তাটা আমদের মাঝে নাই।আমার জীবন,আমি বুঝুম টাইপ চিন্তা। নিজে আল্লাহর মাল হওন কিন্তু মানুষকে আল্লাহর মাল বানানির অধিকার আপনার নাই। এই জ্ঞানটা বোধহয় আমাদের মাথায় ঢুকাইতে পারলে কিছুটা কমতে পারে এইগুলা।

চলুক

দীনহিন এর ছবি

প্রতি বছরই দূর্ঘটনা এবং ব্যাপক পরিমাণ প্রাণ নাশের এত এত উদাহরণের পরও রাষ্ট্র ঠিক কোন কাজটা করলে পাবলিক সচেতন হবে বলে আপনার মনে হয়??

চলুক
সরকারী দায় ষোল আনা স্বীকার করে নিয়েও বলা যায়, সচেনতনা এমন কোন পিল নয় যে চাইলেই কোন সরকার মানুষের ভিতর বাধ্যতামূলকভাবে ঢুকিয়ে দিতে পারে! হাজার চেষ্টা করেও একজনকে সচেতন করা না যেতে পারে! আর কখনই পৃথিবীর সব মানুষ সচেতন হবে না, একটি বড় অংশ অসচেতনই রয়ে যাবে চিরকাল!!!

এজন্য আসলে সরকারকে আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে, তাইলেই সুফল পাওয়া যাবে বেশী; এমন সিস্টেম করতে হবে যে চাইলেও যেন অসচেতন মানুষ নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনতে পারে।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

অতিথি লেখক এর ছবি

অপশন না থাকা এবং "আগের বার গেলাম কিছু হইলোনা" এই চিন্তাই মানুষকে আবার রিস্ক নিতে বাধ্য/লোভী করে। দূর্ঘটনা একবারই হয় এবং একবারই মরে এই সচেতনতা আমাদের মাঝে নাই। কেনো নাই সেটারও অনেক কারন আছে। ট্রাফিক আইনের প্রয়োজনীয়তা এবং ট্রাফিক আইন কেনো মানবো (আমার লেখার শেষের অংশে যা বললাম) সেটা মানুষের মাঝে ঢুকাইতে সরকারী উদ্যোগের দরকার আছে। পাঠ্যবইয়ে কিছু জিনিস ঢুকানো যাইতে পারে, জনসচেতনা তৈরি করা যাইতে পারে মিডিয়ার মাধ্যমে আর সবার চাইতে বেশি দরকার বিকল্প পরিবহন আর ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধ করা।
-------------------------------
আশফাক (অধম)

সুবোধ অবোধ এর ছবি

পাবলিকের জন্যে বরাদ্দ সবকিছুতে আল্লাহকে চিফ সিকিউরিটি অ্যান্ড সেফটি অফিসার হিসাবে নিয়োগই যদি দেওয়া হয়, তাহলে মন্ত্রী-এমপি-নেতারা কেন লটবহর নিয়ে নিরাপত্তা প্রোটোকলসহ চলাফেরা করে?

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।

সাম্প্রতিক লঞ্চডুবিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অন্তত একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে যদি লঞ্চের মালিকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়, নৌপথে আল্লাহর ওপর নির্ভরতা কমে তুচ্ছ ইহলৌকিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে যেতে যদি পারেন, লঞ্চ মালিকদের পকেট থেকে টাকা নিয়ে সেই মালের উত্তরাধিকারীদের মাঝে কি আল্লাহ বণ্টন করে দিতে পারেন না?

খুবই ভাল আইডিয়া।
ঈদের সময় খবরে দেখেছিলাম সদরঘাটে লঞ্চের একজন যাত্রী গাদাগাদি করে লঞ্চে ওঠার ঝুঁকির কথা জিজ্ঞেস করায় ক্যামেরার সামনে বলছেন-" রিস্ক তো নেতেই হইবে, রিস্ক থাকলে আর কি করা?" এই লোকটাই হয়ত দূর্ঘটনা ঘটার পর সব দোষ আল্লাহ আর রাষ্ট্রের কাঁন্ধে দিয়ে বসে থাকবে!!!

ডুবে যাওয়া লঞ্চ টেনে তোলা হয়, মানুষগুলো ফিরে আসে না

এই কথাটা ভাবছিলাম আমিও কাল থেকে। উদ্ধারকারী জাহাজ এসে এই ফিটনেস বিহীন লঞ্চ টেনে তুলবে মানুষ গুলো কখনই আর ফিরবে না। বরং এই ফিটনেস বিহীন লঞ্চ আবার কিছু মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে হয়ত।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশে দরকার কিছু লড়াকু লোক। যেমন জোট সরকারের সময় এহসানুল হক মিলন প্রায় একাই পরীক্ষায় নকলের মহোৎসব বন্ধ করে দিয়েছিলেন , আরেক মন্ত্রী পলিথিন ব্যাবহার কমিয়ে দেন(তখনকার সময়)।এরকম শক্ত লোক দরকার প্রতিটি সেক্টরে। নৌ-পরিবহনে জীবনের মূল্যেও এমন লোক পাওয়া যাচ্ছে না কেন? এটা নিয়ে লংমার্চ, রাজপথে তুমুল আন্দোলন হয় না কেন ?

রাজর্ষি

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে সবাই সবকিছু জানে কিন্তু জানাকে মানায় রূপান্তর করতে পারছে না। এর জন্য দুই তরফা প্রচেষ্টাই দরকার। মানুষ নিজে সচেতন হবে এবং সরকারের আইনও শক্ত করতে হবে। তবে এটা হয়ত বছরে দু একটা লঞ্চ ডুবলে হবে না কারণ এই দুই একশ মৃত্যুর কথা কিছুদিনের মাঝেই সবাই ভুলে যাবে। যা যেভাবে চলছিল সেভাবেই আবার চলতে থাকবে। আবার এই দোয়াও করতে পারছি না যে প্রতি মাসে একটা করে লঞ্চ ডুবি হোক যাতে করে মানুষের সহ্যের সীমা অতিক্রম হয়ে যায়। আর গদি নিয়েই তো আন্দোলনের শেষ নেই এইসব ভালো কাজে আন্দোলন হবে কি করে? কিন্তু তাহলে এই সমস্যার সমাধান হবে কিভাবে? আর একটা কাজ হয়ত করা যায়। যদি নৌ পরিবহন মন্ত্রীদের নিজের সন্তানদের কাউকে ওইসব লঞ্চে বসিয়ে দেয়া যায় তাহলে হয়ত কিছু হলেও হতে পারে। কিন্তু তাও সম্ভব না কারণ তাদের অধিকাংশের সন্তানরা দেশেই থাকে না। তাহলে এর কি কোন সমাধান নাই? তবে আপনার মামলা করার আইডিয়াটা খুবই ভালো।

ফাহিমা দিলশাদ

অতিথি লেখক এর ছবি

একই সাথে সাংবাদিক ভাইদের কাছে আরেকটি নিবেদন। বিশ্বকাপের সময়, বা ভোটের সময় আপনারা বিভিন্ন দলের স্কোর রাখেন। একইভাবে যদি নৌপরিবহন মন্ত্রীদের হাস্যোজ্জ্বল ছবিসহ নিমজ্জনে মৃতদের সংখ্যা দিয়ে স্কোরবোর্ড তৈরি করে যে যার পত্রিকায় টাঙিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে পাঠক ও ভোটারদের গুণতে সুবিধা হবে, কার আমলে কর্তৃপক্ষীয় অবহেলায় কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আল্লাহর মালের হিসাব আল্লাহ রাখেন জানি, আমরাও নাহয় রাখা শুরু করলাম?

চলুক গুল্লি গুল্লি

টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যে জাহাজ গুলো যায় পর্যটক মৌসুমে তার প্রতিটিতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অত্যাধিক যাত্রী যায়। সেই জাহাজগুলো তে নেই যথেষ্ট নিরাপত্তা সরঞ্জাম।দেখা যাচ্ছে ৫০০ যাত্রীর জন্যে লাইফ জ্যাকেট আছে ১০০টি! এতবছরে একটিও যে ডুবেনি সেটাই আমার কাছে এখন বিস্ময়কর লাগে। সমুদ্রে ওগুলো একটা ডুবলে কয়েক হাজার মানুষ মারা যাবে, হয়তো তখন অামাদের টনক নড়বে। এখন কেউ যদি সচেতন হয়ে এই জাহাজগুলোতে উঠতে চায় তাহলে তার আর সেন্টমার্টিন যাওয়া হবে না। সুতরাং নিজেদের সচেতনার পাশাপাশি সরকারকে এগুলো কড়া নজরদারিতে নিয়ে আসতে হবে। আর না হলে এখানেও একদিন বড় কোন দুর্ঘটনা বাংলাদেশ দেখবে। মন খারাপ

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

শুনলাম নৌ পরিবহন মন্ত্রি শাহজাহান খানের তিন ভাগ্নি (খালাত বোনের কন্যা) নাকি এই লঞ্চডুবিতে মারা গেছেন। আমার মনে পড়ে কয়েক বছর আগের কথা, যখন অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে একটি ফোরামের আয়োজন করেছিলেন (তার প্রথম স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাবার পর থেকে তিনি এ ব্যাপারে অনেক সোচ্চার), তখন শাহজাহান খান ইলিয়াস কাঞ্চনকে বেশ তীব্রভাবেই অপমান করেছিলেন। আশা করি নিজের পরিবারে আঘাত লাগার পর কিছুটা হলেও তার টনক নড়বে।

এক লহমা এর ছবি

"লঞ্চডুবিতে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে অন্তত একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে যদি লঞ্চের মালিকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়, নৌপথে আল্লাহর ওপর নির্ভরতা কমে তুচ্ছ ইহলৌকিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি।" - চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন মানুষি জন্মগত ভাবে সব বিষয়ে সচেতন আর আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় না। শিক্ষার পাশাপাশি মানুষ যে সমাজে, যে রাষ্ট্রে বাস করে তার কাঠামো আর শৃঙ্খলাই তাকে সচেতন ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, যে সমাজে কিংবা যে দেশে আইনের প্রয়োগ সর্বোচ্চ সে দেশের মানুষ ততবেশি সচেতন এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। শিক্ষা মানুষকে কিছুটা সচেতন করলেও আইন মানতে বাধ্য করে না। সঠিক আইনের প্রয়োগ না থাকলে শিক্ষিত মানুষও দুর্নীতি করতে পিছু পা হয় না। বাংলাদেশে যেহেতু আইনের শাসনের নেই তাই বাংলাদেশের মানুষ অসচেতন আর আইন অমান্যকারী এটি খুব স্বাভাবিক বিষয়। সেখানে শিক্ষিত আর অশিক্ষিত বলে কোন কথা নেই।

সচেতনতা আর আইন নিয়ে এই ভূমিকা টানার উদ্দেশ্য হলো অনেক মানুষকে ফেবু সহ নানান মাধ্যমে দেখছি পদ্মায় লঞ্চ ডুবির জন্যে সরকারের চেয়ে জনসাধারণের গাঢ়ে বেশি দোষ চাপাচ্ছেন। আগেই স্বীকার করেছি বাংলাদেশের মানুষ আমরা সবাই কমবেশি সবখানেই অসচেতন বিশেষ করে চলাচলের পথে। কিন্তু আমরা কেন অসেচতন হলাম তার কারণটি প্রথমেই ব্যাখ্যা করেছি। এরচেয়ে বড় কারণ হলো আমরা অসচেতন হতে বাধ্য। আমাদের বিকল্প থাকে না। যেমন ধরা যাক কেউ সেন্টমার্টিন যাবে। তাকে টেকনাফ থেকে জাহাজে করে যেতে হবে। সেই জাহাজগুলো সবসময় অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে, এখন কেউ সচেতন হলে তার পক্ষে সেই জাহাজে ওঠা সম্ভব না। আবার প্রতিবাদ করে সে এটির চলাচল বন্ধ করতে পারবে না। একজন-দুজন মানুষ একটা জাহাজের মালিকের কাছে তুচ্ছ বিষয়। ফলাফল তার পক্ষে সেন্টমার্টিন যাওয়া সম্ভব হবে না কোনদিনও। এতো গেলো শখ করে বেড়াতে যাওয়ার কথা, প্রতিদিনের জীবনের কথায় আসুন। ঢাকা শহরে অফিস শেষে আপনি যে ধাক্কাধাকির প্রতিযোগিতা দিয়ে বাসে উঠবেন কখন কার ধাক্কায় সেই বাসের চাকার নিচে চলে যাবেন তার কি কোন গ্যারান্টি আছে? আর যদি সচেতন হোন তাহলে আপনাকে পাঁয়ে হেঁটে কিংবা রিক্সা/সিএনজি করে বাসায় ফিরতে হবে, যা প্রতিদিনের জীবনে আদৌ সম্ভব না।

বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্বরোড়ে করিমন-নসিমন থেকে শুরু করে সিএনজিগুলো চলছে হরদম। অথচ এগুলো কোনটার অনুমতি নেই এই সড়কে ওঠার। তাহলে দোষটা কার? আইনের প্রয়োগ নেই বলেই গাড়িগুলো রাস্তায় নামছে। আর সাধারণ জনগনের কোন উপায় না থাকায় তারাও সেগুলোতে চড়ছে। প্রতিদিন অসংখ্য সিএনজি-নসিমন করিমন সহ ছোট গাড়িগুলো বিশ্বরোড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে এবং অগনিত মানুষ ধারাবাহিক ভাবে মারা যাচ্ছে। আমি নিজে যেখানে থাকি সেখান থেকে অফিস যেতে আমাকে সিএনজিতে যেতে হয় বিশ্বরোড় দিয়ে, কারন এখানে বাসের সংখ্যা খুব কম। সেই বাসের নেই নিদিষ্ট কোন সময়সীমা। তাই বাধ্য হয়েই আমাকে উঠতে হচ্ছে সিএনজিতে। সিএনজিগুলো যদি এমন অবাদে বিশ্বরোড়ে চলতে না পারতো তাহলে বাসের ব্যবসা এতটা মন্দ হতো না, বাসের সংখ্যা কমে যেত না। সিএনজির কারনেই বাসের সংখ্যা অস্বাবিক ভাবে সারা দেশেই কমে গেছে। বাংলাদেশের সবগুলো জেলাতে আন্ত:যোগাযোগের মূল বাহন এই সিএনজি।

এবার দেখা যাক বাংলাদেশে দুর্ঘটনার (সড়ক/নৌপথে) পেছনে মূল কারণগুলো কি কি! এ কারণগুলো জানতে কাউকে আইনস্টাইন হতে হবে না। আমরা কমবেশি সে কারণগুলো জানি আর কারণগুলো জানলেই মানুষ সচেতন হয়।

১। অযোগ্য লোকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি
২। ফিটনেসবিহীন গাড়ির/লঞ্চের অবাধ চলাচল
৩। ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন
৪। সতর্কতা বার্তা অমান্য
৫। দুর্ঘটনা ঘটার পরে কারো শাস্তি না হওয়ার উদাহাণ

মোটামুটি এ কারনগুলোর জন্যে বাংলাদেশে দুর্ঘটনা নিত্য সঙ্গী। সেখানে সাধারণ মানুষ খুব বেশি সচেতন হয়ে দুর্ঘটনা রোধ করে ফেলবে এমন ভাবনাটা বোকার স্বর্গে বাস করলে করা যায়। কিন্তু সত্যি হলো সাধারণ মানুষের পক্ষে এগুলো যাচােই করা সম্ভব নয়। সে ড্রাইভারের লাইসেন্স আছে কি নেই, যোগ্য না অযোগ্য যাচাই করতে পারে না। তেমনি ভাবে গাড়ির ফিটনেস কেমন সেটা জানাও সম্ভব না। ধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা থাকলেও যানবাহনের সংকটের কারণে তাকে যে যাত্রীবোঝাই যানবাহনেই উঠতে হয় বাধ্য হয়ে। প্রতিটি লঞ্চ কিংবা জাহাজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন সেটিও সাধারণ মানুষের পক্ষে বুঝা কখনো সম্ভব নয়। তাই সাধারণ জনগন সচেতন হলে এমন দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে আশা করাটা ভুল। প্রথম আলুর স্লোগন বদলে যাও বদলে দাও কে যদি কেউ ধ্রুব সত্য ভেবে থাকে তাহলে বলতে হয় বাংলাদেশের এই করুণ দশা দেখেই আপনাকে-আমাকে মরতে হবে। জনে জনে বদলে গিয়ে পুরো দেশটাকে বদলাতে শত বছর পেরিয়ে যাবে তবু কাঙ্খিত পরিবর্তন আসবে না। এর চেয়ে সহজ এবং বাস্তব সম্মত পরিবর্তন হলো সরকারি কাঠামোতে পরিবর্তন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। আজকেই সব জায়গা কড়াকড়ি ভাবে আইনের প্রয়োগ ঘটান দেখবেন বছর চার-পাঁচের মাঝেই বাংলাদেশের চেহেরা বদলে যাবে, যেমন করে উন্নত বিশ্বের চেহেরা বদলেছে। শুধুমাত্র সঠিক আইনের প্রয়োগ-ই পারে একটি দেশকে সভ্য আর সু-শৃঙ্খল করতে। এর কোন ব্যাতিক্রম নেই। তাই সচেতনতা সৃষ্টির চেয়ে আইনের প্রয়োগ হাজারগুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং জরুরি। আইনের প্রয়োগ হলেই মানুষ নিজ দায়িত্বে সচেতন হয়ে যাবে।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

অন্তত একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে যদি লঞ্চের মালিকের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়, নৌপথে আল্লাহর ওপর নির্ভরতা কমে তুচ্ছ ইহলৌকিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের সংস্কৃতি গড়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

চলুক চলুক চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চলুক

____________________________

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।