বইমেলা...শমন শেকল ডানা...গ্যাজর গ্যাজর...ফ্যাজর ফ্যাজর...

জুয়েল বিন জহির এর ছবি
লিখেছেন জুয়েল বিন জহির [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২০/০২/২০০৯ - ২:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হাসান মোরশেদের শমন শেকল ডানা'র কথা আগেই জেনেছি। মেলায় বেশ কয়েকবার শুদ্ধস্বরের স্টলে হানাও দিয়েছি। তখনো প্রকাশ হয়নি। গতকাল মেলায় ঢুকেই আগে শমন শেকল ডানা কিনে ক্ষাণিকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। দুপুরে ফেসবুকে ঢুকেই হাসান মোরশেদের মেসেজ দেখতে পেয়েছি। পাঁচটি বই পাঁচজন আদিবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে হবে, শুদ্ধস্বরে নাকি উনি বলে রেখেছেন। বই কেনার পর ভাবছি আহমেদুর রশীদের কথা। উনাকেতো আমি চিনি না। সচলয়াতনের তেমন কাউকেই আমি চিনি না। চিনি না মানে আলাপ-পরিচয় হয়নি; এক নজরুল ইসলাম ছাড়া। ফারুক ভাই (ফারুক ওয়াসিফ), , সবুজ বাঘ (শাপলু'দা), সুমন চৌধুরীকে চিনি জাবি'র ছাত্রত্বের কারণে। যদিও সুমন চৌধুরীর সাথে কখনো আমার আলাপ হয়েছে বলে মনে হয় না; তবে উনাকে আমার বিশেষ ভাবে মনে আছে উনার বিশেষ একটা বৈশিষ্ট্যের কারণে। উনি হাসতেন অদ্ভুত কায়দায়। তবে অনেকের লেখার সাথেই বেশ ভালো পরিচয় ঘটেছে। এককথায় বলতে পারি সচলের এমন কিছু লেখক আছেন যাদের লেখা পড়ার জন্যই আমি সচলায়নে ঢুঁ মারি। যদিও সচলায়নের মডারেটরদের মারফতি কিছু নীতিমালা আমার শুরু থেকেই এক্কেবারে না-পছন্দ! অতিথিদের প্রতি তাঁদের মারফতি নীতিমালার অলি-গলি উনাদের নিজেদের কাছেই স্পষ্ট কিনা সন্দেহ আছে আমার! যাইহোক, স্টলে একজন ভদ্রলোক মুঠোফোনে দারুন ব্যস্ত। চেহারাখানা সচলায়তনের আহমেদুর রশীদের প্রোফাইল পিকের সাথে কাছাকাছিই। তবে খটকা লাগল বয়স নিয়ে। আমার ধারণা ছিল জনাব রশীদ বেশ বয়স্ক ধরনের হবেন, কিন্তু স্টলে বসা ভদ্রলোকের বয়স তেমন বেশি মনে হল না। সমস্যা কাটতে তেমন সময় লাগল না। পাশেই একজন ভদ্র মহিলা ভদ্রলোককে টুটুল বলে সম্বোধন করলেন। আমি নিশ্চিত হলাম। কিন্তু কথা বলার সুয়োগ পাচ্ছিলাম না উনি একটার পর একটা ফোন রিসিভ করতে থাকায়। ফাঁক পেয়ে আমার পরিচয় দিতেই উনি উনার কর্তব্য পালন করলেন আন্তরিকতার সাথেই। এরই মধ্যে স্টলৈর সামনে আরেক চশমা পড়া ভদ্রলোককেও চেনা চেনা মনে হল- সম্ভবত ব্লগার জলিল সাহেব। টুটুল সাহেবের সাথে কথা বলার সময় উনি সামনেই ছিলেন। আমার কাছে জানতে চাইলেন আমি নজরুল ইসলামের পরিচিত কিনা। হ্যাঁ সূচক জবাব দিতেই পরের জিজ্ঞাসা- কোন লাইনের টিভি নাকি ফিল্ম? জানালাম কোন লাইনেই নাই। লাইনহীন আমজনতা। শুদ্ধস্বর থেকে একটু সামনে আসতেই পিয়াসের (কবি পিয়াস মজিদ) সাথে দেখা। বেশ উচ্ছ্বাসের সাথেই জানাল-

জুয়েল ভাই আমার বই বেরিয়েছে, কাটতিও ভাল...
। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই বেশ কিছুক্ষণ আলাপ হলো। ও আমার মোবাইল নাম্বারটা নিল ঢাকা কলেজের একজনকে দিবে নাকি। আমার সাথে আলাপ করবে। আদিবাসীদের নিয়ে নাকি কি সব কাজ করবে। করবেতো করুক না, আমার নাম্বার কেন বাবা! যাগ্গ্যে, নাম্বার দিয়ে ওকে বিদায় জানিয়ে ছবির হাটের সামনে আসতেই মিঠুনের সাথে দেখা। কবি মিঠুন রাকসাম। এবারো ওর একটা বই বেরিয়েছে। চা-পান শেষে গল্প করতে করতে আবার বইমেলায়। লিটল ম্যাগ চত্বরে। লোক থেকে ওর বইটা কিনলাম। লোক এর ওখানে এক আদিবাসী মেয়ে বসে আছে। মিঠুন পরিচয় করিয়ে দিল মধুপুরের মেয়ে। কিছুক্ষণ আচিকেই আলাপের মাধ্যমে জানলাম বাড়ি চুনিয়াতে। চিসিম বাড়ি। নাম অঞ্জনা চিসিম। কিছুক্ষণ পর আবার বেরিয়ে পড়লাম। কিছুদূর আগাতেই পথে দেখা কবি দুপুর মিত্রর লগে।
আরে জুয়েল ভাই চলেনতো, বাশাররা আইব-আড্ডা মারমু
। ওর লগে ফের লিটল ম্যাগ চত্বরে এসে দেখা মিলল বাশার, অমিত ঠাকুর, বন্ধু কবি তারেক রেজা সহ আরো অনেকের সাথেই। আমাদের আড্ডা চলছে বিভিন্ন বিষয়ে। মাঝখানে মামো'র (মাহবুব মোরশেদ) সাথেও দেখা হল। কেমন যেন ক্লান্ত-শ্রান্ত মনে হচ্ছিল। উনাকে এমনটা কখনো দেখিনি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রান্তিক গেটের প্রথম আড্ডা থেকেই তার লগে পরিচয়। এরকম ক্লান্তিহীন-আড্ডাবাজ-কর্মচঞ্চল মানুষ আমি কমই দেখেছি। নানান হ্যাজর-ফ্যাজর শেষে বাস ধরতে ধরতে সাড়ে নয়টা বাজল। বাসে বসেই শমন শেকল ডানা মেলে ধরলাম। বাসে সাধারণত আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই গন্তব্যে পৌঁছাই। ভেবেছিলাম চাষাড়া নামার আগেই শেষ করে ফেলব। পারলাম না। ৫২ পৃষ্ঠা পর্যন্ত হয়েছে। রিক্সা চেপে ফ্যাক্টরিতে পৌঁছতে বাজল এগারোটা। ব্যবসায়িক বন্ধুরা দেখি সব আমার জন্য বসে আছে কাচ্চি বিরিয়ানি সামনে রেখে। ওদের কষ্ট না দিয়ে তাড়াতাড়ি যোগ দিলাম। খাওয়া শেষে সব ঝামেলা শেষ করে আবার শমন শেকল ডানা। বেশিক্ষণ লাগল না। চরিত্রগুলো ঘুরছে মাথার ভেতর। ক্লেমেন্ট মাইলং, হেমলেটদের সাথে হাত ধরে আসতে থাকে অবিনাশ মুড়া, উৎপল নকরেক, সেন্টু নকরেক, উদ্দীপন চাকমা, গিদিতা রেমা, কল্পনা চাকমা, চলেশ রিছিল... আরো কত কত চরিত্র! কতশত ঘটনা! দৃশ্যের পর দৃশ্যের খেলা চলে... একের পর এক...শমন শেকল ডানায়।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

যদিও সচলায়নের মডারেটরদের মারফতি কিছু নীতিমালা আমার শুরু থেকেই এক্কেবারে না-পছন্দ! অতিথিদের প্রতি তাঁদের মারফতি নীতিমালার অলি-গলি উনাদের নিজেদের কাছেই স্পষ্ট কিনা সন্দেহ আছে আমার!

মারফতি নীতিমালাগুলো কি কি?
কোন অলি গলি? আপ্নার কাছে স্পষ্ট হলে আমাকেও একটু বলুন।
পোস্টের বক্তব্য, শিরোনামের মাঝে প্যাচ মেরে এরকম ঝাপসা কথা ভাল লাগলো না।

মুজিব মেহদী এর ছবি

'গ্যাজর গ্যাজর...ফ্যাজর ফ্যাজর..'টা কী?
..................................................................................
ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকালে আমার কেবলই মরে যাচ্ছি বলে মনে হয়

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

জুয়েল বিন জহির এর ছবি

গ্যাজর গ্যাজর= বকর বকর করা
ফ্যাজর ফ্যাজর= ফ্যাল ফ্যাল কইরা তাকান

ভুলও অইবার পারে; আপ্নে ঠিক কইরা নিয়েন।

হিমু এর ছবি

আমারও মাঝে মাঝে দুনিয়াটা ঝাপসা ঠ্যাকে। তখন মনে হয় দুনিয়া কি বোঝে যে সে ঝাপসা? খুব সন্দেহ হয় তখন।


হাঁটুপানির জলদস্যু

শাহ্ আসাদুজ্জামান এর ছবি

যদিও সচলায়নের মডারেটরদের মারফতি কিছু নীতিমালা আমার শুরু থেকেই এক্কেবারে না-পছন্দ! অতিথিদের প্রতি তাঁদের মারফতি নীতিমালার অলি-গলি উনাদের নিজেদের কাছেই স্পষ্ট কিনা সন্দেহ আছে আমার!

গাড়ির চালকের আসনে বসলে প্রথম প্রথম রাস্তার সবকিছুকে ধুলো-ময়লা মনে করার একটা অনুভুতি হয়। আর গাড়ি যদি ছোট্ট কার না হয়ে বাস কিম্বা ট্রাক হয়, তাইলে তো কথাই নাই। ফলে মাঝে মাঝেই রিক্সাঅলারে দেখলে মনে হয়, দেই হালারে একটা গুতা। দিন যায়, চালক দুনিয়া দেখে, চোখ ভারী হয়, আস্তে আস্তে ধুলো-ময়লা না রিক্সা না পথচারী দেখল সেই বিচার বোধ হয়। তদ্দিন নাহয় অপেক্ষাই করলেন।

আমারও মাঝে মাঝে দুনিয়াটা ঝাপসা ঠ্যাকে। তখন মনে হয় দুনিয়া কি বোঝে যে সে ঝাপসা? খুব সন্দেহ হয় তখন।

দুনিয়া ঝাপসা ঠেকে যদি আমার চোখ ঝাপসা হয়। দুনিয়া তো আদতে কখনো ঝাপসা হয়না, তাই তার বোঝার প্রশ্নও অবান্তর।

সচলায়তন এর ছবি

প্রিয় শাহ আসাদুজ্জামান,

আপনার ছয়টি পোস্টের মধ্যে তিনটিতেই সচলায়তনের নীতিমালা নিয়ে আপনার ব্যাপক আগ্রহ ও সমালোচনা দেখা গেল। এখনও সুযোগ পেলেই আপনি নীতিমালা নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা ও অভিমতের প্রকাশ ঘটাচ্ছেন। বিষয়টা উদ্বেগের। অন্য কোন অতিথির মধ্যে এই ধরনের তৎপরতা দেখা যায় না। নীতিমালা নিয়ে আপনাকে পূর্বেও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারপরও আপনার অতিউৎসাহ শঙ্কাজনক।

সচলায়তনে মানুষ লিখতে আসে, সচলায়তনের পিছে লাগতে আসে না। শুরুতেই যে সচলায়তনের পিছে লাগে, তার উদ্দ্যেশ্য কি হতে পারে সেটা ভাববার বিষয়।মডারেটেড ব্লগের নিয়মনীতি না ভালো লাগলে আনমডারেটেড কমিউনিটি ব্লগ আছে একাধিক।

সচলায়তনে আপনাকে আতিথ্য প্রদান করা হয়েছিল আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে। সচলায়তন নিয়ে যেহেতু আপনি নাখোশ তাই আপনার আতিথেয়তা আর দীর্ঘায়িত না করাই শ্রেয়। এই সংক্ষিপ্ত সময়ে আমাদের সাথে থাকবার জন্য ধন্যবাদ
________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ

_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ