বৃষ্টি ভেজা আকাশ - ০

লীন এর ছবি
লিখেছেন লীন [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১২/০৭/২০০৯ - ১০:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


আকাশের সাথে আমার দোস্তি দীর্ঘদিনের। আমাদের মাঝে কোন লুকোছাপা থাকে না বলে তার সবকিছুই আমি জানি। তার অনুরোধে তার ডায়েরী পড়ে আমার এ ছড়্‌ড়া-কাব্য লেখা... তবে ১২/০৭ বৃষ্টির জন্মদিন উপলক্ষে এই পোস্ট করছি... তাই তাড়াহুড়ো করে লেখা শেষ করতে হয়েছে। লেখার মান নিয়ে আমি কিছুটা বিরক্ত, কিন্তু আকাশ খুশি। বাচ্চা গাধা কোথাকার। মন খারাপ

.

বৃষ্টি ভেজা আকাশ

বলেছিলাম তোমায় নিয়ে গাইবোনা আর গান,
তবু যে আজ অকারণেই উঠলো কেঁদে প্রাণ;
তাই ভেবেছি লিখবো এখন তোমার সকল কথা,
যে যাই বলুক লিখেই যাবো, লাগুক বুকে ব্যথা।

জানতো কি কেউ এমন ছিলো ভাগ্যে আমার লেখা,
চলার পথে হোঁচট খেয়ে তোমার সাথে দেখা;
প্রথম দেখায় হয়নি কথা, হয়নি জানা নাম,
আরও ছিলো অজানা সেই চোখের দেখার দাম।

ভাইয়ের সাথে সেই সে বছর মেলাতে যাই যখন,
মুখটা তোমার চোখে পড়ায় থমকে দাঁড়াই তখন;
বজ্রাহত হয়ে আমি ভাইকে ডেকে বলি,
দেখ তাকিয়ে বইয়ের মেলায় একটা গোলাপ কলি।

তোমায় দেখে একটু হেসে ভাই বলে আমাকে,
তোমরা নাকি চেনা মানুষ ছোট্টবেলা থেকে;
বদের হাড়ি ভাইটা আমার আসলে খুব পাজী,
নামটা তোমার বলতে তখন হলোনা সে রাজী।

আবার তোমায় দেখি আমি দু’তিন মাস পরে,
চায়ের কাপে ঝড় তুলেছো টিএসসির মোড়ে;
তোমার সাথে ছিলো আরো এক দঙ্গল মেয়ে,
পরিচিত আছে কি কেউ? খুঁজি আমি চেয়ে।

সেদিন আমি বুঝে গেলাম ভাগ্য ছিলো ভালো,
চেনা একটা মুখ যেন তাই চোখে পড়ে গেলো;
কাছে গিয়ে ডেকে উঠি, “এই ফারাবী আপু!”
আপু বলে, “কোত্থেকে তুই উদয় হলি বাপু?”

কুশলের পর হলো শুরু পরিচয়ের পালা,
নামটা তোমার জানবো কখন মোর মনেতে জ্বালা;
নাম পরিচয় কারুরটা তো রইলোনা মোর মনে,
আড় চোখেতে দেখছি তোমায় সময় গুনে গুনে।

মনে মনে করছি তারিফ, আল্লাহর কি সৃষ্টি!
ভাবনায় ছেদ ঘটালে তুমি, “হাই, আমি বৃষ্টি।”;
সত্যি বুঝি বৃষ্টি তুমি, কন্ঠ এতো কোমল,
এক নিমিষে মনটা আমার করে দিলে শীতল।

এইটুকুই আলাপ মোদের সেইদিনকার মত,
তারও পরে হয়ে গেলো ছয়টি মাস গত;
ফারাপ্পী ঠিক চিনে তোমায়, সেটা এখন জানা
ছুতো খুঁজি, কিভাবে পাই তোমার ঠিকানা।

অবশেষে হলো বটে মজার এক খেলা,
ফারাপ্পীর ছোট বোনের জন্মদিনের বেলা;
আপুকে সব স্বপ্ন বলে খেতে থাকি খাবি
বৃষ্টিকে চাই অনুষ্ঠানে, সেটাও করি দাবী।

তোমায় আবার দেখি আমি সেই অনুষ্ঠানে,
মন আমার ভরে ছিলো ভালোবাসার গানে;
ঝড়ের বেগে এগিয়ে যাই তোমার কাছাকাছি,
মিষ্টি দেখে যেমন করে ছুটে যায় মাছি!

তোমায় আমি হাই দিতেই বললে তুমি, “কে?”
হেসে আমি বলি তখন, “চিনতে পারোনি যে!”
ফারা আপু কাছেই ছিলো, এগিয়ে সে এলো,
দ্বিতীয় দফা তোমার সাথে পরিচয় হলো।

এমনি করেই পেয়ে গেলাম তোমার বন্ধুতা,
সুযোগ খুঁজি বলবো কবে মনেরই কথা;
দিন যায় মাস যায়, বন্ধু মোরা ঠিক,
মনে মনে ভাবি আমি, “আল্লাহ সুযোগ দিক!”

একদিন সাহস করে একটু ঝেড়ে কেশে,
ভালোবাসি বলে দিতেই উড়িয়ে দিলে হেসে;
ভেবেছিলে রসিক আমি করছি নতুন রঙ,
বোঝনি যে ভালোবাসি তোমার সকল ঢং।

তোমার হাসি দেখেছিলাম দেখিনি তোমার চোখ,
চোখের ভাষা হয়নি পড়া, এটাই আমার শোক।
সে চোখেতে কোন সে গানের কলি ছিলো লেখা,
থেকেই গেলো অজানা মোর, হয়নি কভু দেখা।

তোমার সেই ক্যাম্পাসে পাশাপাশি হাঁটা,
বোঝনি যে বুকে আমার বিঁধেছে কোন কাঁটা;
তবুও আমি হাসিমুখে তোমার সাথেই চলি,
“তুমি সুখী”, এইকথাটাই মনে মনে বলি।

সুখ তোমার সইলোনা আর, ভাগ্যে তো নেই হাত,
সে ঘটনা লিখতে গিয়ে কাঁপছে এখন হাত;
বছর শেষে ছুটির বেলা বন্ধুরা সব মিলে,
কোন অজানা কুক্ষণেতে সাগর দেখতে গেলে।

কালো রাতের তারিখ ছিলো নভেম্বরের ছয়,
ভয়াল সেই রাতের কথা বলার মত নয়;
সাঁতার কাটা জানোনি তাও জলকেলিতে গেলে
শুনি পরে, সে কথাটা গোপন করেছিলে।

বন্ধুরা তো ভীষণ বোকা, করেনি কেউ বারণ,
এটাই ছিলো তোমার সেদিন হারিয়ে যাবার কারণ;
বাসতে ভালো সাগরটাকে ভয়াল তাকে জেনে,
সেই সাগর তোমাকে ঠিক নিয়ে গেলো টেনে।

আজও আমি একা একা তোমায় যাই ভেবে,
কে আমাকে তোমায় ভোলার ওষুধ এনে দেবে?
স্বপ্নে দেখি তোমায় আমি পরের জন্মে পাবো,
অন্য পাড়ে আছো তুমি, কভু কি আমায় ভাবো?

রাতের আকাশ জুড়ে দেখি অগণিত তারা,
এদের মাঝে কোনটা তুমি? ভেবে হই সারা;
মায়ার ঘেরা জোছনা দেখে এখন মনে হয়,
তুমিই ছিলে আমার সে চাঁদ, অন্য কেউ নয়।

তোমায় নিয়ে এই যে লেখা পড়বেনা কেউ জানি,
আরও লিখে হবে না কিছু সেই কথাটাও মানি;
দুঃখ যতই থাকুক বুকে, থাকবে হাসি মুখে,
বাইরে থেকে দেখবে সবাই আছি কত সুখে।


আকাশের সম্পর্কে জানতে চাইলে কিছু তথ্য পাবেন এখানে। আমি আকাশের গল্প সিরিজে লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তার প্রথম পর্বটি সচলায়তনে নীড়পাতায় প্রকাশিত না হওয়ায় বুঝতে পেরেছি যে নিম্নমানের গালগল্প করার স্থান এটা নয়। এ নিয়ে আকাশ নির্বিকার, কিন্তু আমি একটু হতাশ। যাই হোক, এই ছড়া বা কবিতাটি নিয়ে কোন মন্তব্য থাকলে করুন। যদিও কথাগুলো আমার সাজানো, কিন্তু ঘটনা তো আকাশকে নিয়েই। আপনাদের মন্তব্য আমি আকাশকে জানিয়ে দেবো।


মন্তব্য

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

উচিত হলনা।


ঝড়ের বেগে এগিয়ে যাই তোমার কাছাকাছি,
মিষ্টি দেখে যেমন করে ছুটে যায় মাছি!

পড়ে ভাবলাম একটু হাসাহাসি করব...
শেষে এসে বলতেই হল , 'উপরওয়ালা বড়ই বেরসিক'
ঘটনা যদি সত্য হয়... তাহলে কি আর বলবরে...

কিন্তু আকাশ না... চিন্তিত

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

যে ছন্দে লুকিয়ে থাকে জীবনের ছড়া, সে ছড়া আর ছড়া থাকেনা, হয়ে যায় কাব্য। আপনার পোস্টের লিংক ধরে আকাশের কথা জানলাম। কী আর বলবো, কিছু বলার নেই। জীবন বড়ই রহস্যময়।

কাজী আফসিন শিরাজী [অতিথি] এর ছবি

লেখাটা খুব মন পসন্দ হৈসে, খুব দীর্ঘ হইলেও পুরা কবিতায় কোথাও বোরিং মনে হয় নাই।

স্বপ্নে দেখি তোমায় আমি পরের জন্মে পাবো,
অন্য পাড়ে আছো তুমি, কভু কি আমায় ভাবো?

এই অংশে বোধের খুবই চমৎকার আবেদন। আগেও বলসি, ভালো লাগে, এই লেখা পইড়া ব্যাতিক্রম মনে হয় না। আরো কবিতার আশায় থাকলাম।

rine এর ছবি

ki r bolbo fantastic হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।