কলারাডো - ধূসর আর সবুজের পাগলপারা মিশ্রন - ১

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: বুধ, ১১/০৭/২০০৭ - ১:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বহুযুগ আগে লোকে জ্ঞান আহরনের জন্য দেশ-বিদেশ ভ্রমনে বেরুতো। প্রতিবার ভ্রমনে গেলে আমার এই কথাটা বারবার মনে হয়। বারবার মনে হয়, আহা কতবড় এই পৃথিবী! কত বিচিত্র এই মানব সম্প্রদায়!! কত কিছু দেখা হলোনা এই জীবনে!!! যাই এক বুক আনন্দ নিয়ে, ফিরে আসি একবুক হাহাকার নিয়ে। কিসের টানে পড়ে থাকি? কিসের আশায় মাথা ঠুকে যাই এই ইট-পাথরের খাঁচায়?

কলারাডো যাবার প্ল্যানটা হুট করেই। মাসখানেক আগে নায়াগ্রা ফলস ঘুরে আসার পরেরদিনই বান্ধবী চিত্রা ফোন করে জিজ্ঞেস করল ৮৮ ডলারে প্লেনে করে কলারাডো যাবার এবং আসবার টিকেট পাওয়া যাচ্ছে - আমরা রাজি কিনা! কলারাডো দেখবার খায়েশ অনেকদিন থেকেই ছিল। টাকা পয়সার কথা চিন্তা না করেই রাজি হয়ে গেলাম।

বেশ কয়েকদিন ধরেই প্ল্যান চলছিল। আটোসাটো প্ল্যান - কয়টায় কে কোথায় থাকবে, কোথাথেকে গাড়ি নিবো, থাকবো কোথায়, করব কি - সব ঠিকঠাক করল গাগান, চিত্রা আর অমিত। অ্যারিজোনা থেকে আমি, মৌটুসী, চিত্রা, শ্বেতা, অ্যারিজোনার উত্তরের আরেক শহর থেকে অমিত, স্যান ফ্র্যানসিসকো থেকে গাগান, রুহি, অস্টিন টেক্সাস থেকে শ্রীকান্ত - মোট আটজন। ৬ তারিখ শুক্রবার রাত ৯টা থেকে ১টার মধ্যে ডেনভার এয়ারপোর্টে একে একে জড়ো হলাম আমরা (ছবি ১-৩)।

১। কলারাডো এয়ারপোর্টে আমি ও মৌটুসী১। কলারাডো এয়ারপোর্টে আমি ও মৌটুসী

২। ডেনভার এয়ারপোর্টে রাতের খাবারের বিলের বিনিময়ে গাগানকে তার থিসিস ফেরত দিচ্ছি২। ডেনভার এয়ারপোর্টে রাতের খাবারের বিলের বিনিময়ে গাগানকে তার থিসিস ফেরত দিচ্ছি

৩। ডেনভার এয়ারপোর্টের একটা ফোয়ারা৩। ডেনভার এয়ারপোর্টের একটা ফোয়ারা

এয়ারপোর্ট থেকে শাটলে করে কার রেন্টালে গিয়ে একটা মিনি ভ্যান (মাইক্রোবাস) ভাড়া করে ঘন্টা দুয়েক দুরের ক্যানিয়ন (Cañon) শহরে গেলাম। সেখানের একটা হোটেলে রাত কাটিয়ে পরেরদিন থেকে ঘোরাঘুরি শুরু করার প্ল্যান আমাদের।

হোটেলে গিয়ে অমিত পট করে কাপড় বদলে চাদর গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়েছে। আমি কাপড় বদলে বেরিয়ে আসতেই অমিত হাসতে শুরু করল। বলে, সস্তা ইন্ডিয়ানের দল সবাই ফ্রী পাওয়া গেঞ্জি পরে ঘুরতে শুরু করলি? আমার গায়ে ছিল ইউনিভার্সিটির সুত্রে পাওয়া একটি ফ্রী গেঞ্জি। আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে হাসতে শুরু করলাম। অমিত গাগানকে দেখাল, যে সে একই ফ্রী গেঞ্জি পরেছে। এবার দুজনে আরো জোরে হাসতে লাগলাম। তারপর অমিত যখন চাদরের নীচ থেকে বেরিয়ে আসল তখন দেখি সেও একই গেঞ্জি পরেছে। আমাদের হাসি তখন দেখে কে! দেঁতো হাসি এই ঘটনাকে স্মরনীয় করে রাখতে ছবি তুললাম আমরা একটা (ছবি ৪)।

৪। শস্তা ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশী কয়েকজন :p৪। শস্তা ইন্ডিয়ান এবং বাংলাদেশী কয়েকজন খাইছে

তারপর একে অপরকে গে সাব্যস্ত করে খাইছে রাতে বিছানার পার্টনারকে সর্তক করে ঘুমিয়ে পড়লাম সেদিনের মতো।

(চলবে...)


মন্তব্য

অমিত আহমেদ এর ছবি

জমছে রে জমছে... পরের পর্ব ছাড়েন

আবার অমিত?
এত অমিতের ছড়াছড়ি কেনরে ভাই?
নাকি ইনি ব্লগের অমিত?


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

না ব্লগের অমিত না। এইটা জম্মুর বাসিন্দা অমিত গুপ্তা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ধন্যবাদ। শিঘ্রী নামাব পরের পর্ব।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হেভি লাগতাছে....
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

চলুক

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

... রাতে দেখা গেলো কেউ দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছে না। মাহবুব মুর্শেদ আড়চোখে তাকিয়ে দেখলো, গাগান পায়জামার নিচে তার থিসিস গুঁজে শুচ্ছে। ওদিকে অমিত গুপ্তা চোরাগুপ্তা ইশটাইলে পায়জামার নিচে গাড়ির নাম্বারপ্লেট গুঁজতে ব্যস্ত। মাহবুব মুর্শেদ মনে মনে হাসে। মনে মনেই হেঁকে বলে, ওরে গোমুখ্যুর দল, বেহুলারও ছিলো লোহার বাসর। লাভ হয় নি, ফুটো দিয়ে সাপ ঠিকই গলে ঢুকে পড়েছিলো! ...


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

শালা! পাজির পা-ঝাড়া!! দেঁতো হাসি

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কনফুসিয়াস এর ছবি

কঠিন মজা পাইছি! হাসি
আপনি আবার নিয়মিত এরকম ভ্রমন কাহিনি লিখেন তো বস!
-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সিরাত এর ছবি

ভালা!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।