মায়াগহ্বর

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ১২/০১/২০১৮ - ১:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সে দেশে শুধু পুরুষ। কোন নারী নেই। বংশবৃদ্ধি কি করে হয় সে এক রহস্য। নারী বলে যে আলাদা এক জাতের মানুষ আছে তাই তারা জানে না।

সে দেশের শেষ মাথায়, যেখান থেকে গহীন বনের শুরু, এক অদ্ভুত গহ্বর ছিলো। লোকে বলা মায়া গহ্বর। ভরা পূর্ণিমার রাতে গহ্বর থেকে ভেসে আসে মায়াবী ডাক- আয়...আয়...আয়। ভয়ে ওদিকে কেউ যায় না। মায়া গহ্বরের ডাকে সাড়া দিয়ে ফেরেনি কোন পুরুষ।

তারপরও মন্ত্রমুগ্ধের মত কত পুরুষ ওদিকে গিয়ে হারিয়ে গেছে। মায়া গহ্বরের ডাকে সব ভুলিয়ে দেয়া সে এক আশ্চর্য মায়া। পূর্ণিমা এলেই কানে গামছা বেঁধে রাখে মানুষ।

সেই দেশের সবচেয়ে বয়োঃবৃদ্ধ গুণিন যার নাম- তার নাম যে কি তা কেউ জানে না, এমনকি নিজের নাম বহু বছর না শুনে নিজের নাম খানাও সে ভুলে গেছে, সেই আশাতিপর বৃদ্ধ প্রতি অমাবস্যার রাতে কূপি জ্বেলে ঘরের দুয়ারে বসে যুবকদের গল্প শোনায়- মায়া গহ্বরের গল্প। কথিত আছে সেই অদ্ভুত গর্তের কাছে গিয়ে একমাত্র সেই ফিরে এসেছিল।

তেমনি এক অমাবস্যার রাতে বুড়োর উঠোনে আসর বসেছে। ভিড়ের ভেতর থেকে একজন প্রশ্ন করে," ও দাদা গর্ত কত বড়?"

বৃদ্ধ কাঁপতে কাঁপতে বিড়বিড় করে বলে,"গর্ত...আমমম...খক খক...গর্ত...বিশাল ছোট গর্ত..."

ভীরের মধ্যে হুল্লোড় উঠে। এটা কেমন কথা?

"এইটা কি কন? গর্ত বিশাল ছোট হয় কেমনে?"

"খক খক...গড় গড়...হ...হ...জঙ্গলে ঢাকা। বুঝনের উপায় নাই। খুক...খুক...দেইখা মনে হয় এক আঙ্গুল সমান গর্ত। কিন্তু পা দিলেই ফুড়ুৎ...।"

ভিড়ের মধ্যে আবার হুল্লোড় উঠে।

একই প্রশ্ন-উত্তর পর্ব চলে প্রতি অমাবস্যায়। তবে যতবারই কোন পুরুষ সে গর্তে হারায় ততবারই কোথাথেকে গ্রামে নতুন এক পুরুষ শিশুর উদয় হয় তা নিয়ে প্রশ্ন করে না কেউ।


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

Sohel Lehos এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

ত্বলেবুল ইলম এর ছবি

"যতবারই সে গর্তে কেউ হারায়, ততবারেই গ্রামে এক নতুন পুরুষ শিশুর উদয় হয়"
এই বিষয়টির রহস্য কি হতে পারে ? কোন বিষয়ে কি এতে ইঙ্গিত দিচ্ছেন ?

---- ত্বলেবুল ইলম

Sohel Lehos এর ছবি

রহস্য উদ্ধার পাঠকের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পাঠক যা ভেবে নেবে ঠিক তাই হাসি ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সোহেল, আপনার গল্প লেখার অনায়াস দক্ষতা আছে, এবং আপনার ভাষা সাবলীল। এই কারণে পাঠক আপনার গল্প আনন্দের সাথে পড়তে পারেন। গল্পের শেষে ট্যুইস্ট দিতেই হবে - এমন প্রলোভনের মায়া কাটাতে পারলে আপনার গল্পগুলো আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। গল্পকে স্বাভাবিকভাবে বাড়তে দিন, ট্যুইস্ট আসার হলে আসবে, না আসলে নাই।

আরও গল্প আসুক, নিয়মিত আসুক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Sohel Lehos এর ছবি

ষষ্ঠ পাণ্ডব, মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। ট্যুইস্ট থাকাটা গল্পের একটা অংশ। সব সময়ই যে থাকতে হবে তাও নয়। আবার ট্যুইস্ট দেয়াতে গল্প অসুন্দর হবে কিংবা অস্বাভিকভাবে বেড়ে উঠবে কিংবা অস্বাভাবিকভেবে থেমে যাবে তাও নয়। অবশ্য সব গল্পের শেষে ট্যুইস্ট দেয়া আমার একটা দুর্বলতা। এতে পাঠক একটা ধারণা পেয়ে যায় যে গল্পের শেষে একটা ট্যুইস্ট আসতে যাচ্ছে। যাহোক গল্পটা যেহেতু একটা অণুগল্প টাইপ তাই ট্যুইস্ট থাকলে ভাল হয় সে চিন্তা মাথায় নিয়ে লিখেছিলাম। ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা।

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

সোহেল ইমাম এর ছবি

আপনার লেখা দেখলে না পড়ে থাকা যায়না। চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

Sohel Lehos এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।