Sohel Lehos এর ব্লগ

ফয়সালা

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৯/০১/২০২২ - ১:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তার নাম রফিক। পাশের যে জন তারও নাম রফিক। একই বাসায় তাদের বাস। তারা ঘরবন্ধু।

তবে তাদের ভেতর বেজায় মালিন্য। তাদের চলে নিত্য নৈমত্তিক বিরতিহীন বচসা। হাতাহাতি। তবুও কোন এক কারণে তারা ভাগাভাগি করে থাকে। বাড়ি বদলায় না। এই একটা জায়গায় তাদের অকথিত বোঝাপড়া।

রোজকারের মতো সেদিনও চলছে তাদের নিরন্তর বাহাস।

এক রফিকঃ শালা কুত্তা কোথাকার! মাত্র তেরো বছরের মেয়ে! তেরো!! কিভাবে পারলি??
অন্য রফিকঃ চুপ শালা! চুপ! একদম চুপ! তাতে তোর কি রে! আমি তোর খাই না পরি?
এক রফিকঃ তুই মানুষ না। তুই জানোয়ার।
অন্য রফিকঃ হ্যাঁ, আমি জানোয়ার।
এক রফিকঃ তুই ইতরেরও নীচের ইতর। মরে যাস না কেন?


বেদী

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১২/০৯/২০১৯ - ১:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগ্নেয়গিরির মতো ধীরালয়ে মুখ থেকে এক রাশ ধোয়া উদগিরণ করে গম্ভীর গলায় আব্দুর রাজ্জাক বললেন,"আরেকটা কথা রাসেল... ।"

টাকার ব্যাগ হাতে নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যাচ্ছিল রাসেল। ঘুরে দাঁড়িয়ে সে বলল,"জ্বি, স্যার।"

ডেস্কের উপর কাঁচের গ্লাসে গলে যাওয়া বরফে মিলেমিশে হুইস্কির রঙ হয়েছে হাল্কা বাদামি। তাতে হাতে ধরা চুরুট খানা ডুবিয়ে দিলেন আব্দুর রাজ্জাক। ছ্যাঁত করে শব্দ হলো।

"আমি একটা খেলা খেলছি।" বললেন আব্দুর রাজ্জাক।


মাছ এবং শিকারী

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: শনি, ১৭/০৮/২০১৯ - ১২:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বড়শি ফেলে বসে আছে লোকটি। নদীর পরিষ্কার পানিতে মাছখানা দেখা যাচ্ছে। বড় এক সরপুটি। লোকটার মুখে মৃদু হাসি ফুটে উঠে। মনেমনে সে বলে,"ধরা তোকে দিতেই হবে।"


নীল নয়না

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৭/২০১৯ - ২:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক জোড়া নীল চোখ সমুদ্রের বিশাল ঢেউ তুলে সুনামির মতো আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ঘটনার শুরু দু'মাস আগে।

রাত এগারোটায় আমার কাজ শেষ হয়। তার দশ মিনিট পরই আমার রুটের বাস এসে থামে। আমার কাজ থেকে ঠিক দুই স্টপ পরেই মেয়েটিও উঠে নিয়ম করে।

তার মাথায় দীঘল সোনালী চুল। তার অদ্ভুত কমনীয় ত্বকে ঝর্ণার পানির সতেজতা। সে যখন হেটে এসে আমার সামনের সিটটায় বসে তখন তার সোনালী চুলগুলো আরব দেশীয় ঘোড়ার কেশরের মত ঢেউ খেলতে থাকে। আর তার সুগভীর অয়াত নীল চোখে মহাশুন্যের কালো গহ্বরের গভীরতা। কে জানে সেখানে হারিয়ে গেছে কত পুরুষ!


নতুন পানির স্রোতে

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৬/০৬/২০১৯ - ১১:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নদীতে নতুন পানি এসেছে। বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটে চলে সে পানি। তার মধ্য দিয়ে ভেসে যায় কত কি? জমাট বাধা খড়ের টুকরো। বিচ্ছিন্ন কচুরিপানা। নোংরা পলিথিনের ব্যাগ। গাছের গুড়ি। আর- আর সে।

সে ভেসে যায়। নাল্লাপাড়ার বাজারের ব্রিজের নীচ দিয়ে। মসৃণ গতিতে। পানিতে মাথা ডুবিয়ে মাছ খোজা কোন শিকারী পানকৌড়ির মতো।


আছর

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০২/২০১৯ - ৫:৩৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পরী রাজ্যের মিস ওয়ার্ল্ড হাফসা বানু একটু জিরিয়ে নেবার জন্য বটতলা গ্রামের বটগাছের নীচে বসে নিজের পাখা চুল্কাচ্ছিল। তার যে কি রুপের বাহার তা বলে বোঝাবার নয়। রুপ হবেইবা না কেন? সেতো আর যেনতেন পরী নয়। পরীদের মিস ওয়ার্ল্ড বলে কথা।


অণুগল্প কেন লিখি? কীভাবে লিখি?

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/০১/২০১৯ - ১০:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অণুগল্প কেন লিখি প্রশ্নটি করার আগে সম্ভবত যে প্রশ্নটি করা উচিত তা হলো আমি কেন লিখি?

আমি কেন লিখি? বিশেষ কোন লাভ-ক্ষতির জন্য আমি লেখালেখি করিনা। আমি লিখি কারণ এতে আমার মনের শান্তি হয়। আনন্দ লাগে। লেখার পর মনে হয় ভাল কিছু একটা করলাম। অনেক কিছু নিয়েইতো লেখা যায়। তবে কেন অণুগল্প লেখা?

শ্রমসাধ্য কাজের ফল প্রায় সময়ই বেশ তুষ্টিকর হয়। অণুগল্প লেখা শ্রমসাধ্য ব্যাপার। আপনার ভ্রু কুঁচকে ওঠার আগেই বলে রাখি- অণুগল্প আকারে ছোট বলেই যে লেখা সহজ তা নয়।


সিংহ, শকুন, এবং মৃত্যুদূত

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২৫/১২/২০১৮ - ১২:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যত দূর দৃষ্টি যায় শুধু ধূ ধূ বিরান ভূমি। তাতে যত্রতত্র দ্বীপের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রোদে পুড়ে খাক হওয়া দুর্বাঘাস। এই এলাকায় কতকাল ধরে বৃষ্টি হয় না কে জানে। হাল্কা বাতাসেই ধূলি ঝড় উঠে।

এর ভেতরেই পাতাবিহীন এক নাম না জানা রুগ্ন গাছ দাঁড়িয়ে আছে। গাছের কংকালসার ছায়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল তার চাইতেও জীর্ণ এক সিংহ। তার পেছনের এক পা ক্ষত-বিক্ষত। অতীতের কোন এক যুদ্ধে সেখান থেকে এক খাবলা মাংস কামড়ে নিয়ে গেছে তারই কোন এক সতীর্থ। ক্ষত জুড়ে কুরুক্ষেত্র বাঁধিয়েছে অসভ্য মাছির দল। তাদেরকে তাড়ানোর মত শক্তি কিংবা উৎসাহ কোনটিই ছিল না হাড্ডিসার প্রবীণ পশুরাজের। এক ছিলিম শ্বাসের জন্যই তার চলছে প্রাণান্তকর সংগ্রাম। কতকাল তার পেটে দানা পড়েনি তাইবা কে জানে।

গনগনে সূর্যকে পিছু রেখে আকাশে চক্কর দিচ্ছিল এক শকুন। তার দৃষ্টি নিবদ্ধ নীচে পড়ে থাকা প্রায়মৃত সিংহের দিকে। অধীর আগ্রহে সময় গুনছিল সে। তার পেটেও দানা পড়েনি বহুকাল।


ফুৎকারে উড়ে যায়

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৩/১১/২০১৮ - ২:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চৈত্রের এক পিচ গলা দুপুরে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে দাড়িয়েছিল সুমন্ত। তার চোখের সামনেই কংক্রিটের শাপলা ফুলটা ধীরে ধীরে ঘোরা শুরু করল। ডানে বামে তাকিয়ে সে দেখল এই অদ্ভুত ঘটানা আর কারোই নজরে আসছে না। সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত।


একটি অণুগল্পের খসড়া

Sohel Lehos এর ছবি
লিখেছেন Sohel Lehos [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০৩/১১/২০১৮ - ৪:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঘুম ভেঙ্গে চোখ মেলতেই ব্যাচেলার মেসের হেলাল মিয়ার দুমড়ানো মোচড়ানো কোলবালিশ খানা লাজুক গলায় তাকে বলল,"অ্যাই শোন......তুমি না বাবা হতে চলেছ।"