ফিফা প্রেসিডেন্ট সেপ ব্ল্যাটারের পদত্যাগ এবং নেপথ্যের ঘটনা

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী (তারিখ: বুধ, ০৩/০৬/২০১৫ - ৩:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

100x
(ছবির ক্রেডিট লেখকের। ২০১৪ সনে জুরিখের ফিফা হেডকোয়ার্টার থেকে তোলা।)

ফিফার প্রেসিডেন্ট ৭৯ বছর বয়সী সুইস নাগরিক সেপ ব্ল্যাটার আজ ঘণ্টা-খানেক আগে মিডিয়াকে জানিয়েছেন তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। যদিও সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনায় এই পদত্যাগের ঘটনাই স্বাভাবিক বলে প্রতীয়মান হতো, কিন্তু বাস্তবে এই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত অনেকের কাছেই বিস্ময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অন্যতম কারণ মাত্রই এক সপ্তাহ আগে ব্ল্যাটার পঞ্চম বারের মত ফিফা প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠায় কেঁপে ওঠে ফুটবল বিশ্ব। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার হেডকোয়ার্টার থেকে গ্রেফতার হয় ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ ১৪ জন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপের ফুটবল ফেডারেশন তথা উয়েফার প্রেসিডেন্ট মিশেল প্লাতিনি নির্বাচনের দুই দিন আগে ব্ল্যাটারকে অনুরোধ করে যেন এবার আর তিনি নির্বাচনে না দাঁড়ান। একই অনুরোধ কিছুটা দাবীর সুরে উচ্চারিত হয় ইংল্যান্ডের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন থেকেও। অথচ তখন ব্ল্যাটার ঠিকই একরোখা মনোভাব দেখিয়ে নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং দুইদিন পর নির্বাচিতও হন। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতেই ব্ল্যাটার কেন তাহলে মত পরিবর্তন করলেন? এই লেখায় নেপথ্যের ঘটনা পর্যালোচনা করার চেষ্টা করা হলো।

পর্যালোচনার শুরুতেই একটা বিষয় পরিষ্কার করে নেয়া ভালো। সেটা হচ্ছে, যদিও ফিফা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কিন্তু ফুটবলের আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ফিফার হাতে একক ভাবে নেই। এই ক্ষমতা যে সংগঠনের হাতে রয়েছে তার নাম International Football Association Board বা সংক্ষেপে IFAB। ফুটবলের সূচনা হয়েছিল ইংল্যান্ডে এবং পরবর্তীতে তা স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলসে ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৯৬ সনে এই চার দেশের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন মিলে IFAB গঠন করে। কিন্তু ফিফা প্রতিষ্ঠার পর ১৯০৪ সনে IFAB তে ফিফাকেও একজন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে এই সংগঠনের কাঠামো এরূপ যে ঐ চার দেশের প্রত্যেকের একটা করে চারটা ভোটাধিকার রয়েছে; অন্যদিকে ফিফার একারই রয়েছে চারটা ভোট। কোন সিদ্ধান্ত তখনই গৃহীত হবে যখন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পড়বে। অর্থাৎ কোরাম পূর্ণ অবস্থায় ন্যূনতম ৫ ভোটের প্রয়োজন। ফলে ফিফার একার পক্ষে যেমন কোন আইন পাশ করা সম্ভব নয়, তেমনই ঐ চারদেশ নিজেরা চাইলেও কোন আইন পাশ করতে পারে না। দুই পক্ষকেই দুই পক্ষের সাহায্য নিতে হয় [১]। ঐ চার দেশের মধ্যে আবার ইংল্যান্ড হচ্ছে মোড়ল ধরনের। ফলে ফিফা এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে একটা রেষারেষি সব সময়ই বজায় থাকে।

এবার আসা যাক সেপ ব্ল্যাটার প্রসঙ্গে। ফিফার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ব্ল্যাটার নির্বাচিত হন ১৯৯৮ সনে। সেই নির্বাচন ছিল বহুল আলোচিত এবং সমালোচিত। ২৪ বছর ফিফার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার পর ব্রাজিলের জোয়াও হ্যাভেলেঞ্জ ১৯৯৮ সনে ঘোষণা দেন তিনি আর নির্বাচন করবেন না। ফলে ইংল্যান্ডের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন (FA) তাদের প্রতিনিধি লেনার্ট জোয়ান্সনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায়। এই জোয়ান্সন এর আগে FA এবং জার্মান ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে একটা সমঝোতা করিয়েছিল। সেই সমঝোতা অনুযায়ী জার্মানি ঠিক করেছিল তারা ইংল্যান্ডকে ১৯৯৬ সনের ইউরো আয়োজনের জন্যে সমর্থন দেবে এবং বিনিময়ে ইংল্যান্ড ২০০৬ সনে জার্মানিকে বিশ্বকাপ আয়োজনে সমর্থন দেবে। কিন্তু হ্যাভেলেঞ্জ চাইছিল ২০০৬ সনের বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্যে ইংল্যান্ড এগিয়ে আসুক। এ বিষয়ে তিনি এতটাই আগ্রহী ছিল যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকেও সরাসরি এই কথা তিনি বলেছিলেন। কিন্তু জোয়ান্সন জার্মানির সাথে করা চুক্তি রক্ষা করার স্বার্থে ২০০৬ সনের বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়া থেকে নিজ দেশ ইংল্যান্ডকে দূরে রাখে যা হ্যাভেলেঞ্জকে অসন্তুষ্ট করে [২]। ফলে হ্যাভেলেঞ্জ যখন জানতে পারে জোয়ান্সনকে FA প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করছে, তখন তিনি তার জেনারেল সেক্রেটারি সেপ ব্ল্যাটারকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেন।

পল ড্যার্বির লেখা Africa, Football, and FIFA: Politics, Colonialism, and Resistance বইতে উল্লেখ আছে ১৯৯৬ সনে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত মিটিং-এর পর ফিফার যে স্ট্যান্ডিং কমিটি দেয়া হয় সেই কমিটি হ্যাভেলেঞ্জ কোন রকম ভোট ছাড়াই নিজের ইচ্ছেমত বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয় [৩]। এ বিষয়ে অবগত থাকার কারণে জোয়ান্সন ফিফার এক্সিকিউটিভ কমিটির মিটিং-এ প্রস্তাব উত্থাপন করেন যে সেপ ব্ল্যাটার যদি প্রেসিডেন্ট পদের জন্যে লড়তে চান, তাহলে তার উচিত হবে জেনারেল সেক্রেটারি পদ থেকে ইস্তফা দেয়া। কিন্তু হ্যাভেলেঞ্জ ঐ প্রস্তাবে বাধা দেন এবং প্রস্তাবের উপর কোন রকম ভোট হবার আগেই মিটিং শেষ করে দেন [২]। পরবর্তীতে নির্বাচনে ১১১ বনাম ৮০ ভোটে সেপ ব্ল্যাটার জোয়ান্সনকে পরাজিত করে ফিফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এন্ডু জেনিংস এর লেখা Foul! The secret world of FIFA: Bribes, Vote rigging and ticket scandals বইতে দাবী করা হয়েছে ঐ নির্বাচনে ব্ল্যাটার ঘুষের মাধ্যমে ভোট কিনেছিল [৪]।

ব্ল্যাটার পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে ইংল্যান্ডের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে বিশেষ করে জোয়ান্সনের কাছ থেকে সমালোচনার শিকার হয়। ২০১১ সনে ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে ফিন্যান্সিয়াল মিসম্যানেজমেন্টের অভিযোগ আনে জোয়ান্সন এবং অন্যান্যরা [৫]। কিন্তু তাতেও ব্ল্যাটারকে তেমন বিচলিত করা সম্ভব হয় নি। পরবর্বিতে ২০১৮ এবং ২০২২ সনের বিশ্বকাপ আয়োজক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্ল্যাটারকে রীতিমত ব্রিটিশ মিডিয়া চেপে ধরে। সম্ভাব্য দুর্নীতির বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশ করে ব্ল্যাটারকে ইংল্যান্ডের পত্রিকাগুলো প্রায় প্রতিদিনই দোষারোপ করতে থাকে। ব্ল্যাটারও প্রতিশোধ নেয় চরম ভাবে। ২০১৮ সনের বিশ্বকাপ যে ইংল্যান্ডে হবে এটা নিয়ে রীতিমত কারো সন্দেহ ছিল না। অথচ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ঠিক আগ মুহূর্তে বদ্ধ কামরায় ব্ল্যাটার ব্রিটিশ মিডিয়ার আচরণের কথা ইংগিতে সবাইকে মনে করিয়ে দেয় ব্ল্যাটার। চার দেশের মধ্যে সেই ভোটাভুটিতে ইংল্যান্ড চতুর্থ হয়েছিল। মাত্র দুই ভোট পাওয়া ইংল্যান্ডের একটা ভোট ছিল নিজেদের। ভোট শেষে ব্ল্যাটার মজা করে ইংল্যান্ডকে bad losers খেতাব দেয় [৬]।

সময় গড়াতে থাকে। ইংল্যান্ডের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন এবং ব্রিটিশ মিডিয়া ব্ল্যাটারের পেছন ছাড়ে নাই তখনও। ধীরেধীরে তারা বের করে আনতে থাকে বিভিন্ন দুর্নীতির খবর। ২০২২ সনের বিশ্বকাপ জেতে কাতার আর ২০১৮ সনের বিশ্বকাপ রাশিয়া। অভিযোগ উঠে দুই দেশই ঘুষ দিয়ে ভোট কিনেছিল। এ বিষয়ে গ্রাসিয়া রিপোর্ট নামে এটা রিপোর্ট লিক হয়। ২০১২ সনে ফিফাই মাইকেল গ্রাসিয়াকে তদন্ত করার ভার দেয় যা ২০১৪ সনের সেপ্টেম্বরে গ্রাসিয়া জমা দেন। কিন্তু তখন ফিফা ঐ রিপোর্টের প্রকাশ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ব্রিটিশ সাংবাদিকরা সেই রিপোর্ট সামনে নিয়ে এলে ফিফা নূতন করে সমালোচনার মুখে পড়ে। এছাড়া কাতারে নিত্য-নূতন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আসতে থাকলে ঐ রিপোর্ট প্রকাশের চাপও বাড়তে থাকে ফিফার উপর। পরে ফিফা ঐ রিপোর্টের একটা দায়সারা গোছের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করলে মাইকেল গ্রাসিয়া পদত্যাগ করেন এবং জানান ফিফায় নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। এই বিতর্ক এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল ২০১৪ সনে যে এ বিষয়ের উপরে উইকিপিডিয়াতে একটা পূর্ণাঙ্গ আর্টিকেলই রয়েছে: http://en.wikipedia.org/wiki/Garcia_Report

যাইহোক, এত নাটকের মধ্যে বারবারই যখন সেপ ব্ল্যাটার জিতে যাচ্ছিল, তখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ব্ল্যাটারের জন্যে সবচেয়ে বড় আঘাতটা আসে অপ্রত্যাশিত ভাবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সাতজন ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তা সহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে FBI দুর্নীতির অভিযোগ আনে। মূলত শুধু নর্থ আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান এলাকায় ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দুর্নীতির অভিযোগ এনে FBI তাদের গ্রেফ্তার করতে চায়। সাথে সাথে সুইস পুলিশ যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যে এগিয়ে আসে এবং ফিফার একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ গ্রেফতার করে ঐ ১৪ জনকে। এই গ্রেফ্তারের এক ঘণ্টার মধ্যে ২০১৮ এবং ২০২২ সনের বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন নিয়ে অফিশিয়ালি ফিফার বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সুইস পুলিশ। এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন এবং উত্তর দিয়ে সাজিয়ে বিস্তারিত ভাবে বিবিসি একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আগ্রহীদের আর্টিকেলটা বিবিসির এই[৭] লিঙ্ক থেকে পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

শুধু যে নর্থ আমেরিকা, তা কিন্তু নয়। বিপদ যখন আসে তখন চারদিক দিয়েই যেন আসে। এই গ্রেফ্তারের পরপরই ফিফা কেঁপে ওঠে আরো বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে। এরই পথ ধরে থলের বেড়াল বের হয়ে আসতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও। ২০১০ সনে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও হয়েছে বিশাল ঘুষ আদান-প্রদান। এ বিষয়ে খোদ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবার নড়েচড়ে বসেছে। যদিও এটা জানা ছিল যে ওইবার বিশ্বকাপ অফ্রিকাতেই হবে কিন্তু সেটা কোন দেশে হবে সেই নির্বাচনেই মূলত দুর্নীতিটা হয়েছে। আজই ফিফা স্বীকার করেছে ১০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ আদান-প্রদান হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার অনুরোধে [৮]।

যদিও ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে সরাসরি কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি এখন কিন্তু বিবিসি জানায় তার বিরুদ্ধেও তদন্ত চলবে। ব্ল্যাটার নিজেও এটা জানতো। তাই এবার নির্বাচনে আবার জেতার পর প্রথম সে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু বিবিসি এবারও খুঁচিয়ে বের করে যে এবারের নির্বাচনেও ব্ল্যাটার জিতেছে মূলত আফ্রিকার ভোটের জোরে। অফ্রিকায় দুর্নীতি এবং আফ্রিকার ভোটের জোর - এই দুইয়ের মধ্যে একটা যোগসূত্র তুলে ধরার পরোক্ষ চেষ্টা ছিল হয়তো মিডিয়ার। এই নিয়ে বিবিসির বিস্তারিত প্রতিবেদন পাওয়া যাবে এখানে [৯]।

ফলে নির্বাচনে জেতার পরও ব্ল্যাটারের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছিল। যদিও একটা সপ্তাহই মাত্র কেটেছে কিন্তু চারদিক থেকে খারাপ খবর ক্রমেই ব্ল্যাটারকে ঘিরে ধরছিল। ব্ল্যাটার কোন ভাবেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে যেই হুঙ্কার মাত্রই সাতদিন আগে দিয়েছিলেন, সেটা এখন রীতিমত এক যুগ আগের কথা বলে মনে হচ্ছে! যেই ব্ল্যাটারকে একটা সময় মনে হচ্ছিল মচকাবে তবু ভাংবে না, সে-ই আজ নতজানু হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলো। কেন পদত্যাগ করছেন সে বিষয়ে তিনি সংক্ষেপে জানিয়েছেন, "My mandate does not appear to be supported by everybody." [১০]। তবে অবস্থাদৃষ্টে যেটা মনে হচ্ছে, ব্ল্যাটারের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া কঠিন হবে না সুইস এবং মার্কিন পুলিশের পক্ষে। হয়তো তারা খুব কাছেই পৌঁছে গিয়েছে এবং সে কারণেই ব্ল্যাটার পদত্যাগ করলেন। এই লেখা যখন লিখে শেষ করে এনেছি তখনই প্রকাশিত হয়েছে বিবিসির এই ব্রেকিং নিউজ:

Fifa's Sepp Blatter 'under investigation in US' [১১]!

দেখা যাক আগামী ২৪ ঘণ্টায় কী কী ঘটে। যেভাবে পুলিশ ঘাটতে শুরু করেছে তাতে ব্ল্যাটারের পক্ষে সম্ভবত 'বাহিরে' থাকাও আর হয়ে উঠবে না।

পুনশ্চ: ঘটনা যেটাই হোক, ইংল্যান্ডে আজ উৎসব লেগেছে। ইংল্যান্ডের ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন এটাকে স্বাগতম জানিয়েছে। কেউ কেউ বিজয়ও বলছে। বিবিসি লাইভ ফিড চালু করেছে। কে কী বলছে সব ঐ ফিডে সাথে সাথে প্রকাশিত হচ্ছে! [১২]

তথ্যসূত্র:

[১] http://en.wikipedia.org/wiki/International_Football_Association_Board
[২] http://news.bbc.co.uk/1/hi/sport/football/68281.stm
[৩] https://books.google.co.uk/books?id=MSRGAQAAQBAJ
[৪] http://www.amazon.co.uk/Foul-Secret-Bribes-Rigging-Scandals/dp/0007208111
[৫] http://news.bbc.co.uk/sport1/hi/football/1974333.stm
[৬] http://news.bbc.co.uk/sport1/hi/football/9269849.stm
[৭] http://www.bbc.co.uk/news/world-europe-32897066
[৮] http://www.bbc.co.uk/news/world-africa-32973049
[৯] http://www.bbc.co.uk/news/world-africa-32928984
[১০] http://www.bbc.co.uk/sport/0/football/32982449
[১১] http://www.bbc.co.uk/news/world-us-canada-32986950
[১২] http://www.bbc.co.uk/sport/live/32888180

২ জুন ২০১৫
মিল্টন কিন্স, ইংল্যান্ড


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

বড়ই আফসোস, কিভাবে পদ আকড়ে থাকতে হয়, এ লোক আমাদের কাছ থেকে তার কিছুই শিখতে পারলোনা! চোখ টিপি

সাজ্জাদূর রহমান

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

নির্বাচনের আগে যেভাবে সরে না দাঁড়ানোর কথা বলেছিল, তাতে মনে হয়েছিল সম্ভবত পদ আকড়েই থাকবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর শিক্ষাটা ঠিক মত নিতে পারে নি চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্রিটেনের "দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট"-এর এই আর্টিকেলটা ব্ল্যাটার সম্পর্কে একটা বিকল্প মত দিচ্ছে। চুম্বক অংশ কোট করলামঃ

I have to say that as far as I can see the Blatter way of doing business may have something to be said for it. He gets all those votes in the Fifa elections from African and Asian countries partly because he makes sure Fifa spends lots of cash in developing – ie poor – countries on building football facilities of one kind or another. Er – that is a “good thing” is it not? What is wrong with helping kids in Kenya or Trinidad become sports stars, or at least enjoy the game as much as German or French kids?

Maybe we feel as though only European football really counts, revealed in the slightly condescending attitude you sometimes saw in the media as nations such as Cameroon and Nigeria started to emerge as footballing forces. If Sepp Blatter was behind that broadening of football world-wide, then that is a plus on his balance sheet. I also wonder whether some of the bile that is sprayed onto this odd little man is due to the fact that England/Britain failed to win the bids to host the next two tournaments, and instead they went to counties we don’t think much of for reasons unconnected with sport – Qatar and Russia.

Emran

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ফুটবলকে ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে আসলেই ব্ল্যাটার সফল ছিল। কাতার এবং রাশিয়ার মত জায়গায় সে বিশ্বকাপকে নিয়ে গেছে। আফ্রিকাকে সর্বোচ্চ লেভেলে ফাইট দেয়ার মত করে গড়ে তুলেছে। এগুলো নিশ্চিত ভাবেই ব্ল্যাটারের ব্যালেন্সশিটে প্লাস পয়েন্ট। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এগুলোর পাশাপাশি দুর্নীতি এত বাজে ভাবে ঘিরে ধরেছে ফিফাকে যে, যদি ধরে নেই ব্ল্যাটার জড়িত না, তবু প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটা তার ব্যর্থতাই। আমার তেমনটাই মনে হয়।

তারেক অণু এর ছবি

অপেক্ষায় আছি পরের কাহিনীর জন্য-

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আর দুইদিন গেলে একটা ফলোআপ যুক্ত করে দিব লেখার শেষে। হাসি

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ফিফার প্রেসিডেন্ট কেউ একবার হলে সে এতদিন ধরে বসে থাকে কিভাবে কে জানে?
আগ্রহীরা জন অলিভারের শো দেখে নিতে পারেন।
(ইউটুবে গিয়ে জন অলিভার ফিফা লিখে সার্চ করুন)

শুভেচ্ছা হাসি

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

এই মাত্র ক্লিপগুলো দেখলাম। পাঠকের সুবিধার জন্যে এখানে সংযুক্ত করলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ, জানানোর জন্যে। হাসি

https://www.youtube.com/watch?v=DlJEt2KU33I
https://www.youtube.com/watch?v=zhAta_OWGZk
https://www.youtube.com/watch?v=zhAta_OWGZk

সাফি এর ছবি

লেখা ভাল হইসে, চুরা ব্ল্যাটার ধরা খাইছে।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

চোর হিসেবে এখনও ধরা খায় নি যদিও; প্রক্রিয়া চলছে হাসি

মরুদ্যান এর ছবি

এত কিছু থাকে এফ বি আই হঠাৎ ফিফা নিয়ে পড়ল কেন? তাদের কোন স্বার্থে ঘা লেগেছে সেটা জানার আগ্রহ হচ্ছে। মোড়লেরা মানে ইংল্যাণ্ড আমেরিকা ফিফার নিয়ন্ত্রণে থাকলে খুব কি ভাল কিছু হবে? ক্রিকেটে তো দেখাই যাচ্ছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অতিথি লেখক এর ছবি

কত অজানারে... তবে দুই মোড়লের এক সুর কেমন সন্দেহ সন্দেহ ঠেকে।

অনেক ধন্যবাদ, লেখাটার জন্য।

স্বয়ম

সুবোধ অবোধ এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।