মায়াময় গ্রোনব্ল।

সুমাদ্রী এর ছবি
লিখেছেন সুমাদ্রী (তারিখ: মঙ্গল, ৩০/০৮/২০১১ - ১০:৪২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শঁবেরী( chambery) স্টেশনে নেমেই শুনলাম ঝামেলা। গ্রোনব্ল( Grenoble) যাবার ট্রেনরুটে নাকি কাজ চলছে। তো কী হবে এখন? " ঘাবড়ানোর কিছু নেই মঁসিয়ু, আপনাদের জন্য আমাদের বিশেষ বাস-সার্ভিস আছে, আসুন আমার সাথে।" কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানো সদাশয় অফিসারটি অভয় দিয়ে বললেন। যাক, আমিতো ভাবনায় পড়ে গিয়েছিলাম। বাসে উঠতে না উঠতেই ড্রাইভার এস্কেলেটরে পা দিল, হুমড়ি খেয়ে পড়লাম সুইস তরুনীটির ওপর (আলাপচারিতায় পরে জেনেছিলাম), মুমুকে বিদায়ও জানাতে পারলাম না ভাল করে, যেন আমার অপেক্ষাতেই এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল দোতলা গাড়িটা।

যাত্রাপথ দুঘন্টার। ইতালী সীমান্তবর্তী ফরাসী শহর গ্রোনব্ল। আল্পস পর্বত দিয়ে ঘেরা মনোরম উপত্যকার উপর গড়ে উঠেছে এ শহর। আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু ডরোথী আর ফ্রঁসোয়া থাকে এখানে। গেল বছর দেশেই ফ্রঁসোয়ার সাথে দেখা হলেও ডরোথীর সাথে শেষ দেখা হয়েছিল ঠিক পাঁচ বছর আগে। গ্রোনব্ল-এ যাওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য তাই বন্ধু দর্শন, তবে ফাঁকতালে শহরটাও ঘুরে ফেলা যাবে এটাও ছিল মনে।

গ্রোনব্ল-কে বলা হয় আল্পসের রাজধানী। মূলতঃ তিনটি বিশাল পর্বতশ্রেণী শার্তোজ, ভের্কোস আর বেলদোন এর মাঝখানে চুপটি মেরে বসে আছে এ শহর যেখানে এসে মিলেছে দ্রাক আর ইজের নদী। ফ্রান্সের অন্যতম প্রধান বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে এ শহরের রয়েছে বেশ খ্যাতি। আর ফরাসী বিপ্লবের মশালটাতো জ্বলেছিল সর্বপ্রথম এ শহরেই। এরকম অনেকগুলো কারনেই এ শহরটা বেশ পরিচিত পর্যটক মহলে। বিশেষকরে স্কি খেলোয়াড়দের স্বর্গরাজ্য এই গ্রোনব্ল, শীতে যখন পাহাড়গুলো বরফের পুরু আস্তরনে ঢেকে যায়, তখন তাদের চূড়া থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে পড়ে দুঃসাহসী স্কি-বাজেরা।

শঁবেরী থেকে গ্রোনব্ল আসার পথটা ভীষণ সুন্দর। ইউরোপীয়ান বিশাল হাইওয়ে, সোজা চলে গেছে ইতালী। রাস্তার দুপাশ জুড়ে কখনও যবের ক্ষেত, কখনও সূর্যমুখীর বাগান, কখনও বা ছোট ছোট বন।DSC_0525
পুরো ফ্রান্স জুড়েই দেখলাম খালি ক্ষেত আর সবুজ বনাঞ্চল। প্রতি ছয় বছর অন্তর এক একটা জায়গার এরকম ছোট বনাঞ্চলগুলো সরকার কেটে ফেলে গাছগুলোকে বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করার জন্য। বনায়ন শুরু হয়ে যায় সাথে সাথেই, পরবর্তী ছয় বছরের ভেতর যখন আবার এখানে ছোট একটা বন তৈরী হচ্ছে, সরকার তখন অন্য জায়গা পরিস্কার করার কাজে ব্যস্ত। DSC_0531
গ্রীষ্মের মধুর বিকেল পড়ে আছে ইউরোপের মাঠে মাঠে।ক্ষেতে ক্ষেতে দেখলাম চাকার মত গোলাকার সব খড়ের গাদা।আমার ফরাসী ভাষার শিক্ষক গুরুপদ চক্রবর্তীর কথা মনে পড়ে যায় তখন। ইউরোপের গ্রামের দিকটা কেমন জিজ্ঞেস করলে তিনি শুধু বলতেন, “ জাস্ট লাইক পিকচার।” বাসের জানালাটাকে আমার কাঁচের ফ্রেম মনে হয়। মনে হয় যেন কোন চলন্ত ছবি দেখছি। DSC_0012

দুঘন্টা যে কোনদিকে ফুরুৎ করে উড়ে গেল টের পেলাম না। হঠাৎ দেখলাম বাস ঢুকে পড়েছে একটা শহরে। গ্রোনব্ল। ডরোথীকে জানালাম মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই আসছি। একেকটা জায়গায় বাস দাঁড়ায় আর আমি উৎসুক চোখে বাইরে তাকাই পরিচিত মুখটাকে খুঁজে পাব বলে। আমার সহযাত্রী তরুনীটি আমায় জানাল আমাদের শেষ গন্তব্য শহরের ট্রেন স্টেশন। স্টেশনে নেমে কাউকেই খুঁজে পেলামনা। না ফ্রঁসোয়া, না ডরোথী। ফোনও ঢুকছে না। একবার এদিকে যাই, আবার উলটোপথে হেঁটে আসি। হঠাৎ শুনলাম পেছন থেকে কে যেন চিৎকার করছে, " সুমাদহী, এ ও, সুমাদহী!" ঘুরতেই দেখি সেই দুষ্টুমিতে ভরপুর হাসিমাখা মুখ। না চেহারা একটুও বদলায়নি এ পাঁচ বছরে। শুধু ওজনটা কমে গেছে। স্বাভাবিক পাঁচ বছর আগের ছাত্রীটা এখন জাঁদরেল উকিল হয়ে গেছে যে। জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে বললাম," এক্সকিউজে-মোয়া মাদমোয়াজেল, নামটা সুমাদ্রী, তোমার ফরাসীটা উচ্চারণটা বড় কানে বাজে।" [ ফরাসীতে 'র' এর উচ্চারণটা বড় বিদঘুটে, 'হ' এবং 'খ' এর মাঝামাঝি একটা উচ্চারণ।]

ডরোথীর বাসায় ব্যাগ রেখে বেরিয়ে পড়লাম। ফ্রঁসোয়া থাকে শহরের কেন্দ্রে।[ এরা বলে সন্তহ দ্য ভিল]। ওর বাসার ঠিক নীচেই কয়েকটা রেস্তোরাঁ। ফ্রান্সের রেস্তরাঁগুলোর বাইরে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে সাজানো থাকে চেয়ার টেবিল, সবাই গ্রীষ্মের মিষ্টি রোদ গায়ে মাখাতে চায়। আমি বাপু ছয় মাস আফ্রিকায় ঢের রোদ খেয়েছি। তাই টেরাসের যে জায়গাটায় একটু ছায়া আছে দেখলাম ওখানটাতে গিয়েই আমরা বসলাম। কিছুক্ষন পর ফ্রঁসোয়া আর ওর বান্ধবী নাতালি এসে যোগ দিল আমাদের সাথে। ফ্রঁসোয়া সাথে নিয়ে এসেছিল ফরাসী একটা ফল " প্রুন"। বেশ মিষ্টি স্বাদ। তারপর এই কথা, সেই কথা। কথার আর শেষ হয়না। একটার পর একটা টোস্ট চলতেই থাকল। ডরোথী আবার এলকোহলের ধারে কাছেও যাবেনা। ঘুরে ফিরে ও কী একটা ফলের রসই চাখছিল দেখলাম। গ্রীষ্মের এই এক মজা। সূর্য ডোবে রাত নটায়। রাত সাড়ে নটা পর্যন্ত আড্ডা মেরে অতঃপর উঠলাম। পরদিন সবাই আবার ভোরেই কাজে ছুটবে।

ফেরার পথে ডরো আমাকে শহরটা একটু ঘুরিয়ে আনল।

গ্রোনব্লে ছিলাম সবমিলিয়ে তিন দিন। ঘোরাঘুরি বলতে তেমন কিছুই হয়নি। আমার বন্ধুগুলো দিনের বেলা ভীষম ব্যস্ত। উকিল চলে যায় কোর্টে আর গলা ফাটিয়ে জজকে বলে, " আপনি এর বিচার করুন বিজ্ঞ বিচারক।" ফিজিওথেরাপিস্ট ফ্রঁসোয়া ক্লিনিকে রোগীদের ম্যাসাজ করতে করতেই কাহিল হয়ে গেল। আমি করি কী? দিনটা ইয়া লম্বা। গ্রোনব্লের যাদুঘরে গেলাম একদিন। ফ্রান্সের প্রতিটা শহরের যাদুঘরগুলো দেখার মত। পুরো দুনিয়ার ইতিহাসটাকে এরা নগরবাসীর জন্য, বিশেষ করে শিশুদের জন্য এনে হাজির করেছে এখানে। কী নেই এতে? মিশরের মমি থেকে শুরু করে মাতিসের ছবি। ডরো একটা ম্যাপ দিয়েছিল শহরের যাতে আমি পথ হারিয়ে না ফেলি। বেশ কাজ দিয়েছিল ওটি। শহরের প্রধান আকর্ষন ইজের নদীর ওপারে পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা শত বছরের পুরোনো দূর্গ বাস্তিই। দুভাবে ওখানটাতে যাওয়া যায়। পায়ে হেঁটে, ট্র্যাক করে। অথবা ক্যাপসুল ট্রামে চড়ে। DSC_0123
আমি কোনটা বেছে নেব ভাবতে ভাবতে আর ঠিক করতে পারলাম না। ইজের নামের ছোট্ট খরস্রোতা নদীটার পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে রাজা দফিন-এর পার্লামেন্ট, এখন এটিও একটি যাদুঘরে রুপান্তরিত হয়েছে। DSC_0125

ইজের ব্রীজ। DSC_0121

সময় ফুরোতে চায়না। শহরের মাঝামাঝি একটা বড় পার্কে ঢুকে পড়লাম। এখানে ওখানে রোদ পোহাচ্ছে ছেলে-বুড়োর দল। প্রেমিক-প্রেমিকাদের চুম্বনালিঙ্গন দেখতে দেখতে বিরক্তি ধরে গেল। যেখানেই বসি সেখানেই দেখি এই ব্যাপার। একা একা সঙ্গীহীন বসে থাকাটা এখানে বড্ড অস্বস্তিকর। কোথাও আবার বাঘের মত বিশাল সাইজের কুকুর। আমার আবার কুকুরে একটু ইয়ে আছে! শান্তিতে তাই কোথাও বসার জো নেই। ঘুরঘুর করতে করতে বেগ পেয়ে গেল, কিন্তু উদ্দিষ্ট জায়গাটি খুঁজে পাচ্ছিনা। ব্যাপারটা ভুলে থাকার জন্য এক গীটার বাদকের কাছাকাছি বসে টুংটাং শুনছি, অমন সময় শুনলাম কারা যেন বলছে, " চল, জায়গাটা তোকে চিনিয়ে দিয়ে আসি।" মাথা ঘোরাতেই দেখি একটু পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দুই তরুন, আর যায় কোথায়! ছুটে গিয়ে ধরলাম। ওপারের। গ্রোনব্লে পড়াশোনা করছে। অনিকেত আর শ্বেতাভ। ওদের পিছু পিছু গিয়ে শান্তিনিকেতনের কাজ সেরে তিনজনে মিলে বসলাম ইজের এর ওপারের একটা ছোট রেস্তোরাঁয়। আর বাঙালী এক হলে যা হওয়ার তাই হতে লাগল।

দ্বিতীয়দিনও ডরো আমাকে ঘরের তালা চাবি দিয়ে কোর্টে চলে গেল। সারাদিন ঘরে আমি ভেরেন্ডা ভাজলাম। দুপুরে খাওয়ার জন্য ডরোর দুঘন্টার বিরতি। একটা রেস্তোরাঁয় বসে মজাসে একটা ফরাসী খাবার " হাবিওলা" খেলাম। ফরাসীদের খাবারের বেশ সুনাম শোনা যায়, কিন্তু আমার মসলামাখানো জিভ ওদের খাবারে কেন জানি কোন স্বাদই খুঁজে পায়না। ফরাসীরা অবশ্য খাবারের ব্যাপারে বেশ সৌখিন। প্রায় প্রতিটা শহরেই দেখেছি সারা পৃথিবীর রান্নাঘর। তবে অনেক খুঁজেও বাংলাদেশী কোন রেস্তোরাঁর হদিস পাইনি আমি কোথাও। ডরো চলে যাওয়ার পর আবার এদিক ওদিক ঘুরঘুর। শহরের ভেতরে ট্রাম চলে। ভাবলাম চেপে বসি। এমন সময় ফিজিওর ফোন, " তৈরী থেক, বিকেলে আল্পস পর্বত দেখাতে নিয়ে যাব।"

বিকেলে ফ্রঁসোয়ার সাথে এল ওর আরেক বন্ধু স্তেফানী। সাথে স্তেফানীর কুকুর লুনা। চারজনে মিলে আমরা স্তেফানীর ছোট্ট গাড়ীতে চেপে রওনা দিলাম। আমার পাশে লুনা। কিছু পরপরই কাঁইকুঁই করে গায়ে লুটিয়ে পরতে চায়। আমি একবার ধমকের মত করে বললাম, " এই কুত্তা!" ফ্রঁসোয়া বাংলাদেশে গেছে দুবার, কিন্তু এর মধ্যেই কুকুর আর কুত্তা'র মধ্যকার সূক্ষ পার্থক্যটা ভাল করেই বুঝে গেছে। আমার দিকে অভিমানী চোখ তুলে বলল," ওর নাম লুনা।" বাপরে!

পরের কয়েক ঘন্টা যেন স্বপ্নের ঘোরে ছিলাম।
DSC_0151

গাড়িটা পাহাড়ের পর পাহাড় ডিঙিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছে। দুপাশে সব অপার্থিব দৃশ্য। ফ্রঁসোয়া জানাল এখানে সে শীতে স্কি করার জন্য ফি বছর আসে। জায়গাটা হাইকিং এর জন্যও বেশ নামকরা। অনেককেই দেখলাম সাইকেল চালিয়ে ঘাম ঝরাতে। কী দরকার বাবা অত কষ্ট করার, একটা গাড়ী নিয়ে শোঁ করে উঠে যাও। প্রায় পৌনে এক ঘন্টা ড্রাইভ করে আমরা পাহাড়ের চূড়াটাকে দেখলাম। ও গড! DSC_0138
গাড়িটাকে একটা সরাইখানার পাশে রেখে আমরা এবার পায়ে হেঁটে উঠতে লাগলাম। এখানে এত উপরে রোদ থাকলেও আমার হাল্কা শীত লাগছিল। লুনার সাথে ইতিমধ্যে আমার বেশ ভাব জমে গেছে। ওকে এখন আর কুত্তা ডাকতে ইচ্ছে করেনা, আদর করে ডাক দিই লুউউউউনাআআআআ। ও ছুটে ছুটে আমাদের সামনে থাকছিল। ক্যাল্কের পাথরের পাহাড়। চারদিকে মিষ্টি সবুজ রঙ। পাহাড়ী ঘাসফুল হাওয়ায় মাথা দোলাচ্ছে। নাতালির বেশ কৌতূহল বাংলাদেশ নিয়ে। সেপ্টেম্বরে ওরা দুজন আবার যাবে চট্টগ্রাম। বললাম বান্দরবান, রাঙ্গামাটি,কক্সবাজার,সিলেট ঘুরে আসতে। DSC_0135
চূড়ামতন জায়গাটায় গিয়ে থামলাম আমরা। এখানেই একটা ছোটখাট পিকনিক করব। এতক্ষণ হাঁটার ফলে খিদেটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছিল।সাথে আনা কিশ, পিজ্জা, বার্গারগুলো তাই আমরা পরমানন্দে সাবাড় করতে লাগলাম। লুনার জন্যও আনা হয়েছে স্পেশাল খাবার। কিন্তু ইশ, পানি আনার কথা কারো মাথাই ছিলনা। কী আর করা কোক দিয়ে হাত ধুয়ে, মুখ মুছে হাসতে হাসতে খুন হবার উপক্রম আমাদের। বেশ কিছুক্ষণ ফুরফুরে বাতাস খেয়ে অন্য একটা পথা ধরে নামতে লাগলাম আমরা। নীচে একটা গোচারণভূমিতে অনেকগুলো গরু ঘাস খেয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের গলায় ঘন্টা বাঁধা। তাদের বিচিত্র ঢং ঢং শব্দে পুরো পাহাড়টা মুখরিত। কী যে অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল তখন। এই দৃশ্য কতবার আমি দেখেছি স্বপ্নে, টিভিতে। DSC_0143
এদিকে অসাবধান হয়ে চলতে চলতে ফ্রঁসোয়া মাড়িয়ে দিয়েছে গোবর। বিটকেল গরুগুলোর কোন স্যানিটারি সেন্স নেই, বলল সে। আমরা তো হাসতে হাসতে কাহিল। অবশেষে সরাইখানায় এসে একটা খালি টেবিলের দিকে আমরা এগিয়ে গেলাম। আমাদের মত আরও অনেকেই এসেছে এখানে গাড়ী নিয়ে। DSC_0128
বেচারী ডরোর জন্য সবাই একটু আফসোস করলাম। এমন সুন্দর বিকেল সে কিনা আসামী জেরা করে কাটিয়ে দিচ্ছে। অনেকক্ষণ আড্ডা মারার পর আকাশের রঙ যখন গোলাপী হতে শুরু করল ভাবলাম নামা যাক। পাহাড়টার দিকে আবার তাকালাম। শত হোক আল্পসের একটা প্রশাখা তো! দ্বিতীয়বার কি আর আসা হবে এখানে? হঠাৎ মনটা যেন একটু উদাস হয়ে গেল।

সে রাতে ডরোথীর বাসায় বাঙালী রান্নার আয়োজন করলাম। শেফ বিশিষ্ট এই অভাজন। ভোজন চলাকালীন এবং খাওয়ার পর ওদের চোখের পানি, নাকের পানি দেখে মনে হল কোথায় যেন একটা গন্ডগোল করে ফেলেছি আমি। হেঁশেলের কাজ কি আর যেন তেন কাজ!

তার পরদিনই গ্রোনব্লের মায়া কাটিয়ে লিওঁ ফিরে এলাম। ট্রেন থেকে অনেক দূর অব্দি দেখা যাচ্ছিল আল্পসের একটা অংশ। DSC_0106


মন্তব্য

কল্যাণF এর ছবি

সুখেই আছেন বুঝতেছি, মজা করে ঘুরতেছেন।

তিমির বিনাশী আলো এর ছবি

মনামি,
লেখা বেশ লেগেছে। কিন্তু ভ্রমণ কাহিনী পড়ার সময় মন আরেকটা জিনিস খোঁজে; সেটা হলো মনকাড়া কিছু ছবি।
যাই হোক বর্ণনা পড়ে দৃশ্যগুলো কল্পনা করে নিয়েছে! হাসি
লেখা আসুক আরো।

তবে, "প্রেমিক-প্রেমিকাদের চুম্বনালিঙ্গন দেখতে দেখতে বিরক্তি ধরে গেল", ক্যান? খাইছে

সুমাদ্রী এর ছবি

মনামি,
কেন আবার? ঈর্ষা। ঈর্ষায় জ্বলে পুড়ে মরে যাচ্ছিলাম। তাই।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

অপছন্দনীয় এর ছবি

ভালো লাগলো হাসি

একটা কথা, লেখার উপরের ট্যাগ/কিওয়ার্ড গুলোর উদ্দেশ্য ক্যাটেগোরাইজেশন, যাতে খুঁজে নেয়ার সময় সহজে একই ধরনের লেখা পাওয়া যায়। আপনার সব লেখাতেই একটা পাঞ্চলাইন থাকে ট্যাগ হিসেবে - যেটা আসলে বোধহয় ট্যাগের উদ্দেশ্য পূরণ করে না।

ভালো থাকুন হাসি

পাগল মন এর ছবি

আপনার চমৎকার ভ্রমণকাহিনী পড়লাম, বেশ ভালো লাগল।
কিন্তু কোন ছবিই দেখতে পাচ্ছি না।

ফ্লিকারের লিংক না দিয়ে ফ্লিকার থেকে বিবিকোডটা কপি করে দিলে সচলে ছবি আসবে।

------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ছবি আসে নাই। পছন্দনীয়ের সাথে একমত - ট্যাগ এভাবে ব্যবহার না করাই ভাল।

আকামের আবদুল এর ছবি

প্রুন (Prune) - বাংলা(?) আলু বোখারা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো লাগলো...
কিছু ছবি ফ্লিকারে গিয়ে দেখে নিলাম

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমাদ্রী এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই। অন্তত আপনি হলেও ছবিগুলো দেখতে পেরেছেন। একটা ব্যাপারে একটু সাহায্য চাই। ছবি জুড়ে দিতে পারছিনা। কী করতে হবে যদি জানাতেন। ভাল থাকবেন। ঈদের শুভেচ্ছা রইল।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে। অবশেষে আল্পসের ন্যাড়া চূড়োটা দেখবার সুখানুভূতি হলো।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তারেক অণু এর ছবি

আমার শঁবেরীর স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন -- হাসি

হাওয়াইমিঠাই এর ছবি

স্মৃতি মনে করিয়ে দিলে আর কাজ কি -- অনু ভাই সুন্দর আর একটা ভ্রমণ কাহিনি উপহার দিন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।