মহামন্দার সঙ্কেত :: পুঁজিবাদের মৃত্যুঘণ্টা

পলাশ দত্ত এর ছবি
লিখেছেন পলাশ দত্ত (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/০৪/২০০৯ - ১০:২৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিশ্বমন্দা, পুজিবাদ, সমাজতন্ত্র। এই ত্রয়ীকে নিয়ে হায়দার আকবর খান রনোর একটি লেখা ছাপা হয়েছে সাপ্তাহিক ২০০০-এর চলতি সংখ্যায়। লেখাটি আমার মতো কম-জানা লোকদের ভালো লাগতে পারে ভেবে তুলে দিচ্ছি।
================================================

মহামন্দার সঙ্কেত, পুঁজিবাদের মৃত্যুঘণ্টা
হায়দার আকবর খান রনো

সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেঙে পড়া এবং সমাজতান্ত্রিক শিবিরের বিপর্যয়ের পর বুর্জোয়া পন্ডিতরা উল্লাসে ফেটে পড়েছিলেন। সাম্রাজ্যবাদের জনৈক তাত্ত্বিক মুখপাত্র, মার্কিন প্রশাসনের সাবেক রাজকর্মচারী ফ্রান্সিস ফুকিয়ামা তো বলেই বসলেন ‘ইতিহাসের পরিসমাপ্তি’ (End of History) ঘটেছে। অর্থাৎ পুঁজিবাদই ইতিহাসের শেষ কথা। সেই বুর্জোয়া পন্ডিত ও সাম্রাজ্যবাদী রাজনীতিকদের কপালে এখন ভাঁজ পড়েছে। পাশ্চাত্যের অনেক পত্রিকা ‘হেড লাইন’ করেছে- ‘পুঁজিবাদের পরিসমাপ্তি’ (End of capitalism)। এতে ইউরোপ ও আমেরিকায় কার্ল মার্কসের ডাস ক্যাপিটালের বিক্রি হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। ভাবিত সাম্রাজ্যবাদের রাষ্ট্রনায়করা। বিশ্বপুঁজির কেন্দ্রেই হাহাকার পড়ে গেছে!

পুঁজিবাদের অস্তিত্ব নিয়ে যে সঙ্কট, তা দেখা দিয়েছে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার নিজস্ব অভ্যন্তরীণ কারণে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বপরিসরে ঘটেছে পুঁজির নজিরবিহীন কেন্দ্রীভবন, আন্তর্জাতিকীকরণ ও ফটকামুখী প্রবণতা। সেই জায়গা থেকেই, বিশেষ করে ফটকা পুঁজির প্রাধান্যের কারণেই আজ পুঁজিবাদের অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ১৯২৯-৩৩-এর চেয়েও ভয়াবহ মন্দার আশঙ্কা করছেন প্রায় সকল অর্থনীতিবিদ। এই মন্দা ও সঙ্কট একদিকে আমাদের মতো গরিব দেশের জনগণের জীবনে সর্বনাশা অর্থনৈতিক অভিশাপ নিয়ে আসবে; অন্যদিকে আজকের বিশ্বপুঁজিবাদী ব্যবস্থার যৌক্তিকতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলে সমাজতন্ত্রের অনিবার্যতাকে সামনে নিয়ে আসবে।

পুঁজিবাদের ইতিহাসে মাঝে মধ্যেই বেশ সুসি'র বিকাশের পর্ব দেখা যায়। বুর্জোয়া পন্ডিতরা তখন বেশ উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। কিন্তু তারপরই শুরু হয় হাহাকার। এটাই পুঁজিবাদের বৈশিষ্ট্য। যেমন নব্বইয়ের দশকে যারা পুঁজিবাদকে ইতিহাসের চূড়ান্ত রায় মনে করে উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিলেন, এখন তাদের মুখের হাসি মিলিয়ে গেছে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে মার্কিন দেশের সমৃদ্ধি এবং ফোর্ড কোম্পানির সস্তা গাড়ি বাজারে আসা, যে গাড়ি কিনছে শ্রমজীবীদের একাংশ, শ্রমিকের মজুরি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি কারণে বুর্জোয়া অর্থনীতিবিদরা বেশ তৃপ্তির হাসি হেসেছিলেন। তারা বলতেন, ফোর্ড মার্কসকে পরাজিত করেছে। কিন' সে হাসি অল্পদিনের মধ্যেই মিলিয়ে গেল। ১৯২৯ সালের মহামন্দা আবার বিশ্বপুঁজিবাদকে পতনের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছিল।

মহামন্দা থেকে পুঁজিবাদকে রক্ষা করার জন্য মেইনার্ড কেইনস কিছু নতুন পথ বাতলেছিলেন ১৯৩৬ সালে। তিনি বলেছিলেন, বাজারের চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি হস্তক্ষেপ দরকার। তিনি মনে করতেন পুঁজিবাদের চরিত্রকে নষ্ট না করেই পুঁজিবাদী অর্থনীতি ঠিকমতো পরিচালনা করার জন্য রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ দরকার। বস্তুত এর আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট কেইনসীয় নীতি কার্যকর করেছিলেন তার দেশে, যা ‘নিউ ডিল’ নামে পরিচিত। এতে মার্কিন অর্থনীতি লাভবান হয়েছিল। তারপরও মহামন্দা দূর হতো না, যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ না বাধত। কেইনসীয় অর্থনীতির অনুগামী অর্থনীতিবিদ জন কোনথ গলব্রেথ সঠিকভাবেই বলেছিলেন যে, ‘মহামন্দা এখনই শেষ হয়নি, বরং তা যুদ্ধ-অর্থনীতিতে বিলীন হয়েছিল।’ অর্থাৎ পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য প্রয়োজন ছিল মহাযুদ্ধের, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ। কিন্তু সে বিনিয়োগ ছিল পাঁচ কোটি মানুষ হত্যা, এটম বোমা নিক্ষেপ ও সম্পদের অকল্পনীয় ধ্বংস সাধনের জন্য। তাই মার্কিন দেশের মার্কসবাদী অর্থনীতিবিদ পল এম সুইজি বলেছিলেন, ‘উন্নত পুঁজিবাদী ব্যবস্থার স্বাভাবিক অবস্থা হলো স্থবিরতা (Stagnation), আর এটা যে প্রকৃত অবস্থা নয় তার ব্যাখ্যা খুঁজতে হবে অর্থনীতিবহির্ভূত শক্তিসমূহের মধ্যে।’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর যুগে পুঁজিবাদের সুসি'র বিকাশ ঘটেছিল সত্তরের দশক পর্যনত্ম। মহাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবির্ভাব ঘটেছিল পুঁজিবাদী জগতের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতারূপে। মার্শাল প্লানের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র জার্মানি ও অন্যান্য পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশে টাকা ঢালল বিপুল পরিমাণে। মূল লক্ষ ছিল সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েতের প্রভাব ঠেকানো। উন্নত পুঁজিবাদী দেশে শ্রমিক শ্রেণীর মজুরিও বেড়েছিল এবং একই সঙ্গে শ্রমিকের ওপর সংস্কারবাদী প্রভাব তৈরি হয়েছিল। বেশ চলছিল। এই সময় কেইনসীয় মতবাদ পুঁজিবাদী দেশগুলো কার্যকর করেছিল। কিন্তু তারপরও সামাল দেওয়া যায়নি। ১৯৭৪ সালে সমগ্র পুঁজিবাদী বিশ্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটের ধাক্কা খেল। আবার সঙ্কট দেখা দেয় আশির দশকে, নব্বইয়ের দশকে এবং সহস্রাব্দের শুরুতে। কিন্তু সেগুলো ২০০৮ সালের মতো এতটা ভয়াবহ ছিল না।

দুই.
গত দুই দশকে পুঁজিবাদের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী বিকাশের যে পর্বে পুঁজিবাদ পৌঁছেছে, তাই-ই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ঘটেছে পুঁজির নজিরবিহীন কেন্দ্রীভবন, আনত্মর্জাতিকীকরণ, ফিন্যান্স পুঁজির অস্বাভাবিক দাপট ও ফটকামুখী প্রবণতা। প্রায় কাছাকাছি সময়ে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের বিপর্যয় ঘটে। আন্তর্জাতিক ফিন্যান্স পুঁজি হয়ে পড়ে বেপরোয়া। পাশ্চাত্যের সবকয়টি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র কেইনসীয় নীতি পরিত্যাগ করে নিয়ন্ত্রণহীন বাজার সর্বস্বতার নীতি অনুসরণ করতে থাকে। এই অবস্থারই আরেক নাম দেওয়া হলো বিশ্বায়ন।

একই সঙ্গে আবির্ভাব ঘটল শিকাগোকেন্দ্রিক একদল তাত্ত্বিকের, যাদেরকে বলা হয় ‘নিও কন’। মিল্টন ফ্রিডম্যানের মতো নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদের চিনত্মাধারা প্রাধান্য লাভ করল। বিশ্বায়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তাত্ত্বিক ফ্রিডম্যান শুধু বাজার সর্বস্বতারই সমর্থক নন, তিনিই প্রথম আর্থিক বাজারকে অর্থাৎ শেয়ার বাজারকে অর্থনীতির প্রধান নিয়ন্তার জায়গায় বসান। অবশ্য এসব তত্ত্ব আকাশ থেকে আসেনি। পুঁজিবাদের মুদ্রানুযায়ী যে পরিণতি হওয়ার কথা, সেটাই তত্ত্বের আকারে যুক্তিসিদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন বুর্জোয়া পন্ডিতগণ।

বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আন্তর্জাতিক পুঁজির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দুটি প্রধান দিক লক্ষণীয়। এক. ফিন্যান্স পুঁজির সর্বোচ্চ মুনাফার তাগিদে জাতীয় সীমানাকে ভেঙে দিতে হবে। ফলে জাতীয় রাষ্ট্রের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক পুঁজির চলাচলের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র আরোপিত বাধাসমূহ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর ফল দাঁড়াচ্ছে এই যে, সঙ্কটকে ঠেকাতে বা সঙ্কটের প্রভাবকে কমিয়ে আনতে রাষ্ট্র ভূমিকা রাখতে পারছে না। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্কট ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। দুই. ফিন্যান্স পুঁজি হয়ে উঠেছে ফটকা অভিমুখী। প্রকৃত উৎপাদনের বা সেবাখাত থেকে সরে এসে তা আর্থিক বাজারে ক্রিয়াশীল হয়েছে এবং ফটকার প্রবণতা অস্বাভাবিক রকমের বেশি। সীমাহীন মুনাফার লালসায় নিয়ন্ত্রণহীন ফিন্যান্স পুঁজি প্রধানত ফটকাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটের সেটাই মূল কারণ।

কিনস্‌ পুঁজিবাদেরই সমর্থক ছিলেন। তিনি সমাজতন্ত্রকে মোটেও পছন্দ করতেন না। কিন্তু সেই তিনিই ফিন্যান্স বা পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ফটকাবাজির বিপদ দেখতে পেয়েছিলেন। ১৯৩৬ সালে তার বিখ্যাত General Theory Employment, Interest and Money' গ্রন্থে বলেছিলেন, ‘উৎপাদন সংস্থার প্রবহমান স্রোতের ওপর ফটকাবাজির বুদবুদ তার কোনও ক্ষতি করতে পারে না। কিন্তু সংস্থাটি যদি নিজেই ফটকাবাজির ঘূর্ণিপাকে বুদবুদে পরিণত হয় তখনই বিপদ দেখা দেয়। একটি দেশের পুঁজির বিকাশ যখন ক্যাসিনোর (জুয়ার আড্ডাখানা) উপজাত বিষয় হয়ে ওঠে, তখন উৎপাদনের কাজটাই ঠিকমতো করা যায় না।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঠিক এই ঘটনাটাই ঘটেছে, যার থেকে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, দেউলিয়া হচ্ছে ব্যাংক, বীমা, শিল্প; থমকে দাঁড়াচ্ছে ব্যবসা, পথে বসছে কোটি কোটি মানুষ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্কট এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে।

এই সঙ্কট কেন ও কীভাবে হলো তা বোঝার জন্য সঙ্কটের উৎসস্থল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নেওয়া যাক।

তিন.
সন্দেহ নেই যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর একমাত্র পরাশক্তি। নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বৃহৎ অর্থনীতি এবং গোটা সাম্রাজ্যবাদের একচ্ছত্র নেতা। কিন্তু প্রথম নজরে অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্য যে, সে দেশটি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রসত্ম দেশ, বিপুল পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতির দেশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গত এক দশকে আয় বৃদ্ধি হয়েছে বার্ষিক তিন শতাংশ হারে। কিন্তু সে দেশে সঞ্চয়ের হার শূন্যের নিচে। আয় বেড়েছে বিদেশ থেকে আসা টাকায়। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বিদেশি পুঁজি আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার কারণ অবশ্য এই নয় যে, এখানে মুনাফার হার বেশি। না, তা নয়। আসল কারণ হলো এই যে, ডলার হচ্ছে আনত্মর্জাতিক বিনিময়ের ড়্গেত্রে প্রধান মুদ্রা। ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ডলারে বিনিয়োগ করাকে কম ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে।

সঞ্চয়ের হার ঋণাত্মক এবং করের হারও কম। ফলে সে দেশে দ্রব্য ও সেবাপণ্যের চাহিদা বিপুল। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে সেই চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না। ফলে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে হয়। আর এই কারণেই দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। কিন্তু তাতে বিশেষ সমস্যা হচ্ছিল না। কারণ অন্য যেসব দেশ বাণিজ্য উদ্বৃত্ত করছে, সে সব দেশের ব্যবসায়ীরা উদ্বৃত্তের অর্থ বিনিয়োগ করছে ডলারে।

এখন প্রশ্ন হলো এই বিনিয়োগ হয় প্রধানত কোন খাতে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি লাভজনক বিনিয়োগের জায়গা হলো আর্থিক বাজার। সেখানে কেনাবেচা হয় নানা ধরনের ঋণপত্র- সরকারি ও বেসরকারি। বিনিয়োগ হয় ঋণপত্রের বাজারে এবং শেয়ারবাজারে। অর্থাৎ দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তেমনভাবে উৎপাদনশীল খাত বা সেবাখাতে বিনিয়োগ করছে না।

দেশটির অভ্যন্তরীণ আয় তিন শতাংশ হারে বৃদ্ধি পায় বলে আমরা জেনেছি। কিন্তু সেই তিন শতাংশের অর্ধেক আসে আর্থিক বাজারে লাভের ওপর থেকে। এমনকি পণ্য উৎপাদনের খাতটিও চাঙ্গা থাকে আর্থিক বাজারের তেজি অবস্থার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এটি একটি বিপজ্জনক অবস্থা। অর্থশাস্ত্রের সাধারণ কথা হচ্ছে যে, আর্থিক বাজার দাঁড়িয়ে থাকবে দ্রব্য ও পণ্যসেবার বাজারের ওপর। এখানে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে আর্থিক বাজার টেকানো যায় না। ঋণপত্র, শেয়ার ইত্যাদি আর্থিক সম্পদের দাম নির্ভর করে ঋণপত্রের পেছনে যে ব্যবসা আছে, অথবা শেয়ারের পেছনে যে উৎপাদন আছে, সেসবের বাজারের ওপর। কিন্তু ফটকা অভিমুখী ফিনান্স পুঁজি এখানে যে উল্টানো অবস্থা তৈরি করেছে তা বেশিদিন টিকতে পারে না। সঙ্কটের উৎপত্তি সেখান থেকেই।

এর সঙ্গে অবশ্যই মার্কিন জনগণের প্রকৃত আয় ও ক্রয়ক্ষমতার দিকটিও বুঝতে হবে। কারণ ‘জনগণের ভোগস্বল্পতা হচ্ছে সকল সঙ্কটের পূর্বশর্ত’ (এঙ্গেলস, অ্যান্টি ডুরিং)। মার্কিন জনগণের চাহিদা ছিল অনেক, মধ্যবিত্ত ও শ্রমিকের ছিল বিত্ত লালসা। কিন্তু তাদের আয় উপার্জন সেভাবে বাড়েনি। এখানেও কার্ল মার্কস যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক, যিনি বলেছেন (ক্যাপিটাল, তৃতীয় খন্ড), ‘সমস্ত সত্যিকারের সঙ্কটের শেষ কারণ সব সময়েই একদিকে জনগণের দারিদ্র্য ও সীমাবদ্ধ পরিভোগ আর তার বিপরীত দিকে উৎপাদিকা শক্তিসমূহের বিকাশের জন্য পুঁজিবাদী উৎপাদনের তাড়না, যেন সমাজের চূড়ান্ত পরিভোগ-ক্ষমতাই হচ্ছে কেবল তাদের সীমা।’

এবার দেখা যাক মার্কিন জনগণের চাহিদার তুলনায় ক্রয়ক্ষমতা কী পর্যায়ে দাঁড়িয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন নিম্ন আয়ের পেশার মানুষের এক-চতুর্থাংশের প্রকৃত মজুরি গত দশ বছরে কমেছে। গত বিশ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রান্তিকভাবে হলেও গড় মজুরির হার কমেছিল। আয় যেটুকু বেড়েছে তা জমা হয়েছে সঙ্কীর্ণ উচ্চবিত্তের ঘরে।

তবে ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও অসুবিধা ছিল না। আয়ের অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য চমৎকার ঋণব্যবস্থা ছিল। ঋণ ছিল সস্তা ও সহজলভ্য। ক্রেডিট কার্ডের ব্যবস্থা ছিল অর্থনীতিজুড়ে। অবশ্য এটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে, জনগণের সুবিধার জন্য এমন ঋণব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। ঋণব্যবস্থা ব্যাংকিং ব্যবসার একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। লাভের জন্যই কর্পোরেট পুঁজি সুচারুরূপে এমন ব্যবস্থা তৈরি করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণের একটা বড় অংশ ঋণ পরিশোধে অপারগ হয়ে উঠল। কারণ তাদের আয় বাড়েনি। এর থেকে আর্থিক বাজারে বিপর্যয় নামল। চেইন প্রতিক্রিয়ায় বড় বড় ব্যবসা, শিল্প সবই মুখ থুবড়ে পড়ল। ধস নামল শেয়ারবাজারে। আর যুক্তরাষ্ট্রে এমন অবস্থা হলে সারা পৃথিবীতেও তার ধাক্কা লাগবে। হয়েছেও তাই। এই হলো এখনকার বিশ্ব অর্থনৈতিক সঙ্কটের আসল কারণ।

চার.
সবাই জানেন যে, শুরুটা হয়েছে রিয়েল এস্টেট (ফ্ল্যাট, ঘরবাড়ি) ব্যবসার সমস্যা থেকে। এই বিষয়ে এ পর্যন্ত প্রচুর লেখালেখি হয়েছে। বিসত্মারিত বিবরণে যাওয়ার দরকার নেই। ঘরবাড়ি, ফ্ল্যাট অগ্রিম বিক্রি হতো সম্পত্তি মর্টগেজ রেখে এবং ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের টাকায়। কিস্তিতে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের দাম পরিশোধ করতে হয়। এই নিয়মটি সাধারণভাবে বেশ মসৃণ। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছিল যখন বিপুলসংখ্যক ক্রেতা কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং যে সম্পত্তি মর্টগেজ রাখা হয়েছিল তাও উপযুক্ত ছিল না। এইসব বাড়ি-ফ্ল্যাট অন্য কোথাও বিক্রি করাও সম্ভব ছিল না। কারণ ক্রেতা নেই। সমস্যাটা জনগণের আয়ের সমস্যা।

এ তো গেল সমস্যার একদিক। অন্যদিকে পুঁজির বাজারে ছিল একটার পর একটা ফটকা কারবার। বন্ধকী ব্যবসায় অর্থ জোগায় ব্যাংক। তার সঙ্গে জড়িত ছিল ঋণপত্রের ব্যবসা। বাড়িঘরের ভবিষ্যৎ দামের ওপর অনুমান করে গড়ে উঠল এক ধরনের ব্যবসা, যাকে বলা হয় সোয়াপ। এই হলো Speculation বা ফটকা। সুদের ওঠা-নামার ওপর নির্ভর করে তৈরি হলো আরেক ধরনের সোয়াপ বা ফটকা ব্যবসা, যাকে বলা হলো ‘ইন্টারেস্ট রেট সোয়াপ’। এমনই আরেকটি ফটকা ব্যবসার নাম ‘ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপ’। এ সবের সঙ্গে যুক্ত হলো আরেকটি ফটকা ব্যবসা। তার নাম ‘অপসন’। এই রচনার সীমাবদ্ধ পরিসরে এ রকম বাড়ি বিক্রির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা একাধিক ফটকা ব্যবসার বিবরণ তুলে ধরা সম্ভব নয়। কেবল ফটকার ধরনটি বোঝানোর জন্য দুই-একটা উল্লেখ করা হলো। রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ভরাডুবির আগে প্রাথমিক ঋণপত্রের মূল্য ছিল ১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। অথচ ক্রেডিট ডিফল্ট সোয়াপের সঙ্গে বাঁধা সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬০ ট্রিলিয়ন ডলার। তার মানে এই ব্যবসার সঙ্গে প্রাথমিক ঋণপত্রের কোনও সম্পর্ক নেই। ফটকা ব্যবসার এটাই সাধারণ বৈশিষ্ট্য।

মোট কথা সাব প্রাইম মর্টগেজ সমস্যায় ব্যাংক, বীমা ও অন্যান্য ব্যবসা- সবই দারম্নণ অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়ল। এই অবস্থায় ২০০৭ সালে বিনিয়োগকারী ব্যাংক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য অন্য আরেকটি ফটকা ব্যবসায় হাত দিল। আন্তর্জাতিক ফিনান্স পুঁজি পাকা জুয়াড়ির মতো আবার জুয়া খেলল। আবারও তা কিনসের ক্যাসিনো অর্থনীতির কথা মনে করিয়ে দেয়। দুটি জুয়া খেলল তারা। একটি হলো জ্বালানি তেলের ভবিষ্যৎ দামের ওপর ফটকা, যার ফলে ৫৫ ডলারের ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম হু হু করে বেড়ে হলো ১৪০ ডলার। আরেকটি হলো খাদ্যশস্যের ভবিষ্যৎ দামের ব্যবসা। এই কারণে সেই সময় সারা পৃথিবীতে খাদ্যের দামসহ সকল জিনিসের দাম দারম্নণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। কর্পোরেট পুঁজির সীমাহীন মুনাফার লালসা ও জুয়াখেলার পরিণতিতে বাংলাদেশের মানুষ ২০০৭ ও ২০০৮ সালে অনাহারে-অর্ধাহারে থেকেছে। গরিব দেশের গরিব মানুষ আরও গরিব হয়েছে। ক্ষুধার জ্বালা পেটে নিয়ে ঘুমাবার ব্যর্থ চেষ্টা করেছে কোটি কোটি মানুষ।

এই হলো আজকের পুঁজিবাদের চেহারা। পুঁজিবাদ যে শুধু অমানবিক তাই-ই নয়, এই পুঁজিবাদ আর টিকেও থাকতে পারবে না। নিজের তৈরি সঙ্কট থেকেই তার মরণদশা ধরেছে। বুশের মতো লোক, যারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে, সেই বুশ এবং অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশের রাষ্ট্রনায়করা রাষ্ট্রীয় ফান্ড থেকে বিপুল পরিমাণে টাকা ঢেলে পুঁজিপতিদের, বড় বড় কর্পোরেশনকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছেন। মুক্তবাজার অর্থনীতি যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। শুধু মুক্তবাজারই নয়, বস্তুত পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থাই অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। হয়তো এই যাত্রায়ও কোনওমতে বাঁচানো যাবে পুঁজিবাদকে। কিন্তু মহামন্দার যে অশনিসঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে পৃথিবীর কত কোটি মানুষ যে আক্রান্ত হবে তা আমরা অনুমানও করতে পারছি না। বেকারত্ব, ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, যুদ্ধ ব্যাপকভাবে দেখা দেবে। কার্ল মার্কসের সেই অমোঘ বাণী 'The Knell of capitalist private property sounds' (পুঁজিবাদী ব্যক্তিগত সম্পত্তির মৃত্যুঘণ্টা বেজে উঠেছে) সত্য হতে চলেছে। এখনই পুঁজিবাদের মৃত্যু ঘটছে না। কিন্তু মরণদশা ধরেছে। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই পতনের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। এবং সমাজতন্ত্রের বস্তুগত ভিত্তিভূমি এখন বিংশ শতাব্দীর চেয়ে পরিপক্ব।

পুঁজিবাদের যে এমন পরিণতি হবে তা কেবল মার্কস বা মার্কসবাদীরাই দেখেননি, অনেক বুর্জোয়া পন্ডিতও পুঁজিবাদের বিকাশের ধারা দেখে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ জোসেফ শুমপেটার, যিনি এক সময় মনে করতেন যে, পুঁজিবাদ বারবার নবীকরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে, তিনিও পুঁজিবাদের অস্তিত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। তারপর তিনি সিদ্ধান্তে এসেছিলেন 'Capitalism will die of its own success'.

জোসেফ শুমপেটারের বিখ্যাত গ্রন্থ Capitalism, Socialism and Democracy থেকে কয়েকটি কথা উদ্ধৃত করেই এই রচনার সমাপ্তি টানা যাক : ‘পুঁজিবাদকে কি বাঁচানো সম্ভব? আমি মনে করি না, বাঁচানো সম্ভব নয়। ...সমাজতন্ত্র কি কার্যকর হতে পারে? সন্দেহাতীতভাবে পারে।’


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

পলাশ ভাই,
একটা আপত্তি আছে:
- প্রথমতঃ সচলায়তনে সবাই আসে মৌলিক লেখা পড়ার জন্য
- দ্বিতীয়তঃ নিজের লেখা না হলে কপিরাইটের প্রসঙ্গ চলে আসে।

আপনাকে অনুরোধ করব এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে অন্য লেখকের লেখা সচলায়তনে প্রকাশ না করতে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

পলাশ দত্ত এর ছবি

প্রিয় মুর্শেদ,

- প্রথমতঃ সচলায়তনে সবাই আসে মৌলিক লেখা পড়ার জন্য
- দ্বিতীয়তঃ নিজের লেখা না হলে কপিরাইটের প্রসঙ্গ চলে আসে।

আপনাকে অনুরোধ করব এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে অন্য লেখকের লেখা সচলায়তনে প্রকাশ না করতে।

আপনার আপত্তি এবং অনুরোধ বিষয়ে কিছু বলে কোনো ধরনের বিতর্কের সূচনা করবো না।

আপত্তি এবং অনুরোধ মাথায় রেখে আমি অন্য লেখকের লেখা সচলায়তনে প্রকাশ করবো না। পাশাপাশি নিজের লেখাও নয়- কারণ ব্লগ জায়গাটা নিজের ভালো লাগা অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগির একটা জায়গা বলেও আমার ধারণা হয়েছিলো। তবে আমি তো ব্লগ জগতে নতুন, আমার ধারণায় ভুল হতেই পারে।

ভুল ধারণা থেকে ভুল কাজ করার জন্য আমি দু:খ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে এ পর্যন্ত অন্য লেখকের যত লেখা প্রকাশ করেছি সেগুলো মুছে দিচ্ছি।

আমার এই সিদ্ধান্তে কিছু মনে না করার অনুরোধ রইলো।

শুভ ইচ্ছা জানবেন।।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনি লেখা ডিলিট সহ আর না লেখার কথা প্রকাশ করে নিজের রাগটাই প্রকাশ করলেন। আমার কথাগুলো মডারেটরের কথা না ভেবে একজন সহ-ব্লগারের কথা হিসেবে নেন। তাহলে জটিলতা কমে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

পুতুল এর ছবি

পুঁজিবাদ নামের এই মৃত্যুপথ যাত্রীকে বাঁচাতে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার সেলাইন দিচ্ছে।
আহা বেচারা, নিজেও মরবে আমাদেরও মারবে!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

কপিরাইট বিষয়টি আমিও ভাল বুঝি না। জ্ঞানের ক্ষেত্রে এমন জিনিষ থাকাই অসভ্যতা। তারপরও যার লেখা কিংবা যেখান থেকে নেওয়া তিনি যদি অনুমতি দেন তো সমস্যা কী।
তারও পরের কথা, আমরা যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ছবি বা গান দিই, কিংবা উদ্ধৃত করি, সেসবের বেলাতেও তো কপিরাইটের প্রশ্ন আসে। তখন কী করা? এবং বেশি বেশি সংগৃহীত লেখা না দেওয়া শ্রেয়।

তবে মানছি, একটা গ্রহণযোগ্য নীতিমালা থাকা ভাল এবং সেটা সর্বদা চর্চিত হওয়া আরো ভাল।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার মনে হয় এক্ষেত্রে পছন্দের লেখার সারাংশ/সারমর্ম লেখাই একমাত্র বাস্তব সমাধান। অনুবাদের ক্ষেত্রে অবশ্য এগুলির কোনটাই সামনে আসবে না। কারণ অনুবাদ অনুবাদকের মৌলিক কাজ।



অজ্ঞাতবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

পলাশ,
লেখাটা পড়লাম।
-অর্জুন মান্না

পলাশ দত্ত এর ছবি

হায়দার আকবর খান রনোর এই কথাগুলি কেমন যেন বিশ্বাসের যোগ্য মনে হয় না মান্না?
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

রানা মেহের এর ছবি

হে আল্লাহ পলাশ দা
সিরিয়াসলি লেখা মুছে দিয়েছেন নাকি?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

পলাশ দত্ত এর ছবি

হ্যা, মুছে দিয়েছি।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

Tusar এর ছবি

আমার মনে একজন লেখক নিজের ভাব অন্যের সাথে শেয়ার করার জন্যই লিখেন। লেখকের অনুমতি সাপেক্ষে অন্যের লেখা প্রকাশে দোষের কিছু দেখিনা।

পলাশ দত্ত এর ছবি

এই প্রসঙ্গে কিছু বলবো না।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।