আবারও আউলফাউল

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: রবি, ২৪/০২/২০০৮ - ৭:২৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার সামনে দিয়ে যে মহিলা হেঁটে যাচ্ছে তার পরণে শিফন শাড়ী, নানাবিধ পুষ্টিকর খাদ্য উপচে পড়ে তার খাবার টেবিলে- স্বাস্থ্য মৌনাক পর্বত তবে সচেতন- আমার সামনে সামনেই হাঁটছে- আমি পেছন থেকে সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না- কথিত আছে পারস্য সম্রাট যখন গ্রীস আক্রমণ করেন তখন সৈন্যদের পদভারে গ্রীসের ভূমি কাঁপছিলো- এটা ২০০৮ এর বাংলাদেশ- ঠিকাদারদের বিশ্বাস নেই- এরা যে বিল্ডিং বানায় তা ভেঙে পড়ে, ব্রীজ বানালে ব্রীজ ধ্বসে যায়- আর রাস্তার বিশ্বাস নেই- রাস্তা রীতিমতো কাঁপছে আর পেছন থেকে আমি ভুমিকম্প দেখছি মহিলার শরীরে-

একটা পা পড়লো মাটিতে সেদিকের শিফন শাড়ী কাঁপছে- এক বার , দুই বার, তিন বার- হুমম হাইলি ড্যাম্পড ভাইব্রেশন, ৩ এর বেশী হচ্ছে না- ওয়েভ ইকুয়েশন কি হতে পারে- শালার এমন বিষয়ে পড়াই উচিত হয় নি-

মহিলার ইনফ্রারেড সেন্সর আছে- তাই একটু পড়েই অনেক কষ্টে তার আঁচল ধরে পিঠ ঢাকলো মহিলা-

আমিও লম্বা পথের পথিক- আস্তে আস্তে চললাম-

হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সমকামী সচেতন হয়ে গেছে- বাংলাদেশে এখনও সমকামীদের নিয়ে কাজ করে এমন এনজিও নেই তবে গজিয়ে উঠবে অচিরেই- হয়তো বন্দর এলাকার কোনো কোনো বৃহৎ এনজিও এটা নিয়ে ভাবছে- আর ভাবছে কাওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে কাজ করে এমন এনজিওরা।

তবে একটা বিষয় হলো মেয়ে সমকামীদের বিষয়ে কেউ তেমন প্রতিক্রিয়াশীল না- কিন্তু পুরুষ সমকামীদের বিষয়টা ন্যাক্কারজনক ভাবে কেউ কেউ-
এলান গীন্সবার্গ হঠাৎ কোনো একদিন বাঁটে পেয়েছে গোলাম আজমকে- গোলাম আজম নিউ ইয়র্কে গিয়েছিলো পুর্ব বাংলাকে পুনরায় পাকিস্তানের অংশ করে নেওয়ার প্রচারণায় চাঁদা তুলতে-

যশোর রোডে দেখা নির্মমতার সাথে তার সহজাত কামনা-

গোলাম আজম কাতর স্বরে বললো এমন করো না তোমার নিশ্চিত নরকবাস হবে-

হলে হবে শালা বাঞ্চোৎ তোকে আগে নরক দেখাই-

পুরুষ হয়ে পুরুষের হোগা মারার বিষয়টা সহজ ভাবে দেখতে না পারা মানুষগুলো যোনীআহারিদের বিষয়ে কিছুটা উদার- তবে চিটাগাংয়ের বিখ্যাত ভাঙারির ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে নাফিসার- বিয়ের সব সাজই আনা হয়েছিলো ঠিকমতোই তবে জুতাটা ঠিক মাপমতো হয় নি- এক সাইজ ছোটো জুতা পড়ে কোনোমতে খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাসর ঘরে পৌছে নাফিসার একমাত্র চিন্তা কিভাবে জুতাটা পা থেকে খুলবে-

বাসর ঘরের বন্ধ দরজার পাশে উৎসাহী মানুষের ভীড়- খানিকক্ষণ ধস্তাধস্তির পরে আহ অবশেষে-
জাহেদের আনন্দিত গলা শোনা গেলো- নাহ খুবই আঁটোসাটো -

বাইরে থকে জাহেদের মা বললেন- বলেছিলাম না একেবারে কুমারী মেয়ে- আমার চোখ কখনও ধোঁকা খায় না-

আরও কিছুক্ষণ পরে আরও কিছু সময় ধস্তাধস্তি শেষে আবারও জাহেদের গলা- ও মা এটা আরও আঁটোসাটো- হাসিমুখে জাহেদের বাবা বললেন-- বাদাইম্যার পোলা বাদাইম্যাই হবে-

তাদের পাশের বাসায় ডাকাত পড়লো একদিন- ডাকাতেরা অনেক সময় নিয়ে ডাকাতি করেছে- পরদিন সকালে পাড়াপরশিরা এসেছে- এসে খুব দুঃখিত মুখে শুনছেন সব ঘটনা- গৃহস্বামী কাতর কণ্ঠে বললেন- শালার মান্দির পুতেরা আমার বৌকেও ছাড়ে নাই-

পরশি হওয়ার কারণে কিছুটা সহমর্মিতা দেখাতেই হয়- তাই সারওয়ার সাহেব বললেন- তো আপনি তো বদমাশগুলোর চেহারা দেখেছিলেন-

গৃহস্বামী খেঁকিয়ে উঠে বললেন- শালার আমি কিভাবে দেখবো আমাকে তো উপ্তা করে .....

দিন যায়- মানুষ বৃদ্ধ হয়- তেমনই বার্ধক্যজনিত কারণে একদিন সারওয়ার সাহেব মারা গেলেন- বিশাল খানাদানা হলো- এর পরে যথারীতি তার ডান কাঁধের হিসাব বাম কাঁধের হিসাব নিয়ে পাপ পূণ্যের হিসাব নিয়ে দেখা গেলো সারওয়ার সাহেবের বেহশত নসীব হয়েছে-

তাকে নিয়ে যাওয়া হলো বেহেশতের দরজায়, সেখানে এদিক ওদিক হাঁটছেন তিনি- দেখা হলো সা'দের সাথে, তার হাতে চাবির ঝোঁকা- সেখান থেকে একটা চাবি খুঁজে নিয়ে সা'দ বললো আপনাকে ৪ নম্বর বাগিচার পাশের বাংলো দেওয়া হয়েছে- আপনি আমার পিছে পিছে আসেন-

হঠাৎ হাত ফস্কে পড়ে গেলো চাবি, তুলবার জন্য ঝুঁকতেই আর সামলাতে পারলেন না সারওয়ার সাহেব- সা'দ বিধস্ত এবং মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হলেও ভাবলো এটা প্রথম ভুল তাই তাকে সাবধান করে দিয়ে বললো- এ রকম আর একবার করলেই তোমাকে নরকে পাঠাবো-

আর একটু সামনে গিয়ে ইচ্ছা করেই চাবির গোছা ফেলে উবু হয়ে তুলতে গেলো সা'দ-

আবার নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ সারওয়ার-
গম্ভীর মুখে সা'দ বললো দান দান ৩ দান এবার এরকম বেয়াদপি করলে সোজা জাহান্নামে পাঠাবো তোমাকে-

বাংলোর গেটে কাছে এসে আবারও চাবি ফেলে পরীক্ষা-

নাহ অভ্যাস যায় না ম'লে- সারওয়ারকে সোজা জাহান্নামে পৌঁছে ফেরত আসলো সা'দ।

এক সপ্তাহ পরে জাহান্নামের খবর নিতে গেলো সা'দ, সেখানে ভীষণ ঠান্ডা, এক পাশে ইবলিস শয়তান কম্বল গায়ে ঠকঠক করে কাঁপছে-
সা'দ ভীষণ ক্ষেপে বললো- কি রে শালা ইবলিশ দোজোখে আগুন নাই কেনো-

হুমম তুমি গিয়া উবু হইয়া কয়লা তুলো যদি সাহস থাকে।


মন্তব্য

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হা হা হা
পড়ে মজা পাইলাম।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ফাটানো!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঠিকাছে...দেঁতো হাসি



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

হে: হে; হে : !

সুজন চৌধুরী এর ছবি

জবর হৈছে।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

ধুসর গোধূলি এর ছবি
অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

দেঁতো হাসি


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে হাসি তো আর থামে না।
রবিন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।