আমাদের প্রতিভোরে বিবাহবিচ্ছেদ, আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর

রাসেল এর ছবি
লিখেছেন রাসেল (তারিখ: শনি, ২৯/০৩/২০০৮ - ২:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চাইলে অনেক ভাবেই যুক্তি সাজানো যায়। পড়ছিলাম অবশ্য ইবনে বতুতার ভ্রমনবৃত্তান্ত। ইবনে বতুতা,পায়ে হেঁটে, উটের পিঠে চেপে, জাহাজে আর ভেলায় ভেসে অর্ধেক পৃথিবী ঘুরেছেন। তার অভিজ্ঞতা ধার করবার একটা ভাবনাও ছিলো। তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিলো তার দিল্লীর প্রধান কাজী হওয়ার ঘটনাটা।

পড়ছিলাম, দাসব্যবসার স্বর্গপুরী এই উপমহাদেশ ছিলো না কখনও, যদিও আর্যেরা দীর্ঘ সময় শোষণ করেছে অনার্যদের, তবে তারা প্রকৃতপক্ষে অনার্যদের বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিলো, দমিয়ে রেখেছিলো, কিন্তু কখনই দাস করে নি।
তারা অচ্ছুত ছিলো, সেবক ছিলো, তবে দাস ছিলো না, সে অর্থে দাস- যার নিজের স্বাধীন অস্তিত্ব নেই, যার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই, এবং যাকে বিনিময় করা যায়।
এই ইতিহাস নেই এখানে, তবে মুসলিম শাসকদের সাথে দাসেরাও উপমহাদেশের ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যায়। কখন কারা প্রথম দাস আমদানী করলো এটা জানা যায় না, সেটা কি মুঘলরা? উত্তর সম্ভবত ঋণাত্বক- দিল্লীর মসনদের দাসের উত্তরাধিকারি বসেছিলো একদা। তারাই হয়তো প্রথাগত অর্থে দাসেদের এনেছিলো উপমহাদেশে, এবং দাসেরা এখানে এসে সেই পরিবেশ পেয়েছে যা ছিলো ১৮২৫ এ নিউইয়র্কে, কিংবা নিউ ইংল্যান্ডে, কিংবা ১৭৫০ সালের পরের ব্রিটেনে। সেখানে কালো চামড়া, মানুষের চামড়ার উপরে মালিকের নাম লিখে রাখবার প্রবনতা কিংবা আটককৃত দাসকে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়বদ্ধতাও ছিলো না।

উপমহাদেশে দাসেদের জীবন নিয়ে কাজ করা যেতে পারে, তবে এ মুহূর্তে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভাবনার কাজ পড়ে আছে। আমাদের রক্তের বিশুদ্ধতার ধারণা সব সময়ই চলমান, তবে সমস্যা হলো এই রক্তের বিশুদ্ধতা রক্ষার্থে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপ মাঝে মাঝেই জেনেটিক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ সমস্যা হয়তো আমজনতার সমস্যা, মহারাজাদের সমস্যা নিজস্ব ঔরসের ক্ষমতায় অধিষ্ঠান, তাই খোঁজা প্রহরীরা সারাক্ষণ পাহারা দিতো রাজার প্রাসাদ আর রাজার হারেম। সেখানে দাসীরা ছিলো না, ছিলো রাজার রক্ষিতারা। তাদের প্রাণভরে ভোগ করবার নানান তরিকা উদ্ভাবনে যতটুকু সৃষ্টিশীল ছিলেন সম্রাটেরা- তার চেয়ে অনেক কম চিন্তিত ছিলেন নিজেদের শাসনের মান উন্নত করবার ব্যবস্থা নিয়ে।

ইবনে বতুতা খোঁজা প্রহরী নিয়ে ঘুরেছেন, যখন ভারতে প্রবেশ করলেন তার সাথে ৪ জন প্রিয় দাসী, এর পরেও তিনি ৬টা বিয়ে করেছেন। এবং তখনও তার ৩ টা দাসী বর্তমান ছিলো। ৬টা বিয়ে একসাথে করেন নি, ৪টা করেছেন, এর পরে ২ মাসের ভেতরে ৪জনকে তালাক দিয়ে আরও ২টা বিয়ে। কখনও কোথাও এই দীর্ঘভ্রমন পথে তার সঙ্গীনির অভাব ছিলো না।
কথাগুলো তখন ঠেকেই মাথায় ঘুরছে,

আমাদের প্রতিভোরে বিচ্ছেদের পর
আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর।

যেকোনো ধার্মিক মানুষই প্রতি রাতে পতিতাগমন করতে পারেন নির্বিঘ্নে, এটা কখনই কোনো রকম পাপ হবে না। কখনই ব্যভিচার হবে না এটা। কারণ বালেগ নারী-পুরুষ নিজের মতামতেই বিবাহের সম্মতি জানাতে পারে- একজন সম্মানিত মানুষের উপস্থিতিতে তারা এ কাজটা করতে পারেন, এবং ২ জন সাক্ষী।
এ জন্য প্রয়োজনীয় দেনমোহস দেওয়া সাপেক্ষে তার স্ত্রীঅঙ্গে প্রবেশ করতে পারবেন বিশ্বাসীরা। নিশ্চই আল্লাহ যে আইন করেন সেটা বান্দার প্রতি সুবিচারের লক্ষেই করে থাকেন।

ঘটনাটা কিভাবে সাজানো যেতে পারে-
সেই সম্মানিত বিশ্বাসী- যেতে পারে মাসীর কাছে। সম্মানিত মাসী হাতে রুল টানা কাগজ- সেখানে বিশ্বাসীর নাম লিপিবদ্ধ করবেন-
বিশ্বাসী একজন মেয়ে পছন্দ করবেন-
অবশিষ্ট পছন্দ না করা ৪ জন মেয়ে সাক্ষী থাকতে পারে- ম
মাসীর হাতে টাকা তুলে দিয়ে পছন্দের মেয়ের দেনমোহর চুকিয়ে দিতে পারেন/
পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তাদের মিলন হতে পারে।
মিলন শেষ হলে কন্ডম ফেলে দেওয়ার পরের অবশিষ্ট বীর্য তিনি কাবিন নামায় মুছে বলতে পারে তালাক তালাক তালাক।
মেয়েটা ইদ্দত পালন করতে বাধ্য নয়- কারণ সে নিশ্চিত তার গর্ভে কোনো কিছু নেই-
আরব উপজাতিদের ভেতরে মেয়েদের সীমিত সম্মান ছিলো কারণ তারাই গোত্রে যোদ্ধা সরবরাহ করতে পারতো প্রজননের দ্বারা। তাই পরপর ৩ বছরে যদি কেউ গর্ভধারণে ব্যর্থ হতো, নতুন বিয়ে করবার রীতি ছিলো, এমন কি ভাইয়ের বিধবা স্ত্রীকেও গ্রভবতী করবার অনুমতি ছিলো অন্য ভাইদের।
সেখানে ইদ্দতের একটা গোত্রগত চাহিদা ছিলো, নিশ্চিত হওয়া গোত্রের জনসংখ্যা বাড়বার একটা সম্ভাবনা ধারণ করে কি না এই মেয়ে। যদি গোত্রের শিশু বাড়বার সম্ভাবনা থাকতো তবে তাকে ভরণপোষণ দিয়ে রাখা হতো।
এই পরিস্থিতিতে, যখন আমাদের জন্মনিয়ন্ত্রনদিদিমনিরা খুব তৎপর, বাড়ী বাড়ী কন্ট্রাসেপটিভ পিল আর কন্ডোমের সাপ্লাই দিয়ে আসছেন, যখন জানালায় টোকা দিলেই বাংলাদেশের কোথাও কোথাও পাওয়া যায় নিরবিচ্ছিন্ন নিরোধ সরবরাহ তখন আমাদের সচেতন যৌনকর্মীরা এবং এইডসের ব্যপক প্রচারণার পরে আমাদের সচেতন ভোগী পুরুষেরা কন্ডম ব্যবহার করে গর্ভ ধারণের ঝুঁকি এড়ানোর চেষ্টা করবেন না এটা ভুল ধারণা।

এইডস অবশ্যই ছোঁয়াচে রোগ তবে অনেক গভীরে গিয়ে নাড়াচাড়া দিতে হয়। আমাদের ব্যস্ত সময়ে এত গভীরে যাওয়ার খায়েশ কারো নেই, তারা স্পর্শ্ব এড়াতে চায়।

আমাদের ধর্মও অক্ষুন্ন থাকে , আমরাও আমাদের ভোগ অব্যহত রাখতে পারি, যদি আমরা নিজেরাই পকেটে করে বিবাহহলফ নামার ফটোকপি নিয়ে ঘুরতে পারি
আমাদের প্রতিভোরে বিবাহবিচ্ছেদ
আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর।

ইশ্বর অবশ্যই সুবিবেচক এবং সুবিচারক, আমাদের নৈতিক অধঃপতন এবং আমাদের রেতস্খলন ঠেকাতে সদাতৎপর ইশ্বর। ইশ্বর ইশ্বরের মঙ্গল করুন।


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

হা ইশ্বর!
----------------------------------------
শমন,শেকল,ডানা

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

উদাস এর ছবি

এত ভাল একটা লেখাতে এখনও কোন মন্তব্য নেই কেন?? গুনাহ্ এর ভয়??
রাসেল, আমি অনেকদিন থেকেই আপনার সবলেখা অনুসরণ করি এবং প্রতিটি লেখার গভীরতা আমাকে স্পর্শ করে। আপনার লেখায় ঘন ঘন অশ্লীল শব্দের ব্যবহারে মাঝে মাঝে হোচট খাই কিন্তু পরমূহুর্ত আবার মনে হয় শব্দগুলো লেখার মাঝে যে তীব্র আবেগ থাকে তার সাথে শব্দগুলো মিলে যায়।

রাখাল এর ছবি

আপনি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন তা সকলের কাছে পরিস্কার হয়নি বলে আমার মনে হয়েছে।
যে বিবাহের কথা আপনি বলেছেন তা প্রাক-ইস্লামিক যুগের কথা। প্রাক ইস্লামিক যুগের সেসব প্রথা অনেক আগেই বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু শিয়াদের মু'তা সম্প্রদায় সম্ভবত এখন এ টাইপের এক রাতে বিয়ে কে "সুযোগ" বানিয়ে ভোগ করে আসছে।
আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে খুন করে ছাড়া পেলেও
"খুনী খুনীই থেকে যায়"
ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে "হায় ঈশ্বর" বলে ঈশ্বরের ঘাড়ে দোষ চাপালেই শুদ্ধ হওয়া যায় না।

রাসেল এর ছবি

ঘনিষ্ট সংস্পর্শ্ব সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। বাঁদরের দেহ থেকে মানুষের দেহে এইডসের জীবানু এনেছে। দীর্ঘ মেয়াদে লোহা চুম্বকের সাথে ঘনিষ্ট থাকলে লোহারও চরিত্র বদলে যায়, তবে গৃহপালিত জীবের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কে মানুষের চরিত্র বদলায় কি না জানতাম না। রাখালের রাজটা একটা দুরত্ব রেখে করলে ভালো হতো।
এইখানে প্রাকইসলামী কিংবা ইসলামপরবর্তী ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া হয় নি, ব্যাখ্যা দেওয়ার কাজটাও আমার না। তবে ইহুদিদের প্রচলিত রীতিনীতিকে গ্রহন করেই মোহাম্মদ অনেক বিধান এনেছিলো, সেটাকে বিবেচনা করলে ইসলামপূর্ববর্তী এবং ইসলাম পরবর্তী বলে কিছু থাকা সম্ভব না।
বৈবাহিক সম্পর্ক এবং সঙ্গমভাবনা নিয়ে এই লেখা নয়- এইটুকু যদি বুঝাতে ব্যর্থ হই তাহলে আমার ব্যর্থতা সীমাহীন।
এ লেখা আসলে একটা ইসলামি সমাজে পতিতাবৃত্তির ইসলামিকরণের উপরে রচিত।
আদতে পতিতাবৃত্তিকে ইসলাম কি সমর্থন করে? ফর্নিকেশন না কি যেনো একটা শব্দ আছে ইংরেজিতে- তবে যদি নাও করে তবে ইসলামসম্মত পতিতাবৃত্তি শুরু করা সম্ভব, এবং এটা ধর্ম এবং কোরানের বিধান মেনেই করা সম্ভব।
আমি এ কাজের সমর্থনে একটা যুক্তি দাঁড়া করানোর চেষ্টা ছিলো।
আফসুস এই কথাটা লিখতে হলো। অবশ্য লেখার সহজপাঠের ধারণাটা আমার নেই। মাঝে মাঝে মেডইজি দিলে ভালো হয় দেখা যাচ্ছে।
-------------------------------------------------------
বাংলায় হাগি, মুতি, বাঁচি

------------------------------------

আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।

রাখাল এর ছবি

সব পাঠক তো আর সব গিলতে পারে না। কেঊ কেঊ আমার মত গিলতে গিয়ে বমি করে দেয়।
মেড ইজি করে দেয়ার পরও টিঊব লাইট ব্রেন এখনো "বুঝ বুঝ" করেও নিবে যাচ্ছে।
আপনার আইডিয়াটা মন্দ না। বিশ্বায়নের (নাকি বেশ্যায়ন) যুগে ভালো করে মারকেটিং করতে পারলে রাতারাতি গুনীজন বনে যাবেন। আমাদের অনেক গুনীজনেরা এভাবে খ্যাত হইয়াছেন। আপনেও হইবেন।
নামটা তো আপনার সাথে মিলিয়েই রাখলুম।তাতেই বাধল গোল!! বেকুব পাঠক।
বলি দাদা "বিধান মানিয়া কর্ম করার" ব্যবহারিক হইলে জানান দিয়েন। বান্দা ভলান্টিয়ার হইবার চায়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনার কথা বুঝতে এতো কষ্ট হইতেছে ক্যান সকাল থিকা ভাবতেছিলাম.....এখনো ভাবতেছি....



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

রাখাল এর ছবি

হায়রে কপাল হায়!!
মেড ইজি করার পরও "এখনো ভাবতেছি"...
কমপ্লেক্স লেখকের পাল্লায় পড়িয়া পাঠকের মন্ত্যব্যও দুর্বোধ্য!!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আমাদের প্রতিভোরে বিবাহবিচ্ছেদ, আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর ।

লেখায় জাঝা

সৌরভ এর ছবি

পড়লাম।


আমাদের প্রতিভোরে বিবাহবিচ্ছেদ
আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

তারেক এর ছবি

চলুক
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

রাসেল এর ছবি

সময়ের সাথে মনস্ক পাঠকের সংখ্যা কমে গেছে, এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার মতো নৈরাশ্যবাদীতা অর্থহীন মেনে নিয়েই আলোচনা শুরু করি।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট এমন যে এখানে উত্তরাধিকার আইন না থাকা স্বত্ত্বেও কতিপয় টুপিওয়ালা জুম্মাবারে বায়তুল মোকাররম থেকে পদযাত্রা শুরু করে, কারণ সাম্প্রতিক ঘোষিত নারী নীতিতে নাকি শরিয়া বিরোধী উপাদান বিদ্যমান। আমাদের ৪ মাননীয় উপদেষ্টাও সেখানে কণ্ঠ মিলিয়ে ৮ জনের একটা কমিটি গঠন করে তাদের বিবেচনার অনুরোধ করেছেন।
উত্তরাধিকার প্রসঙ্গ যেখানে নেই, যেখানে নারীর ক্ষমতায়নের কথা আছে শুধুমাত্র- সেটাও অনুদানভিত্তিক-সংরক্ষিত নারী আসন, চাকুরিতে কোটা এবং নিয়োগ বিধিতে নারীকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিবেচনা আদৌ ইসলামসম্মত হয়েছে কি না এটা যাচাই করতে তাদের ২১ দিন সময় লাগবে।
ইসলামীকরণের ভুত আসলে কাটানো সহজ না। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটেই এটার সূচনা। কথা হলো মানুষের মানসিক প্রশান্তির জন্য মানুষ নানাবিধ নীতিবোধে আক্রান্ত হয়। এবং শব্দ একটা ঋণাত্বক অর্থ নিয়ে নেয়- বীরাঙ্গনা এবং বারাঙ্গনার ভেতরে প্রভেদ থাকলেও আমাদের সামাজিক মনন সেটা মেনে নিতে রাজি হয় না।
সেখানে পতিতাবৃত্তি কেনো ঋণাত্বক একটা শব্দ, শব্দের ব্যবহারিক অর্থ নিয়েও আলোচনা চালানো যায়- তবে সামাজিক বোধ থেকে পতিতাবৃত্তির মতো আদিম পেশার বিরুদ্ধে কোনো কথা আদতে শুরু করা বিপদ্জনক।
পতিতা কেনো পতিতাবৃত্তি করে- তার অন্যসব যোগ্যতা না থাকায় শরীরকে পূঁজি করে গ্রাস যোগানোর চেষ্টা করে তাদের কাজটাকে পতিতাবৃত্তি বলবো?
এ সংজ্ঞায় অনেকেই পড়বে না, যাদের শোভন ভাবে আমরা সোসাইটি গার্ল বলে থাকি, এ সংজ্ঞায় পড়বে না পয়সার বিনিময়ে সঙ্গ দেওয়া মানুষেরা। নারী পুরুষ উভয়ার্থেই এ কথা প্রযোজ্য। যদিও নারীকে হেয় করবার প্রয়োজনেই এটা বলা হয়ে থাকে যে নারীর শরীর ছাড়া কিছু নেই, এবং এখানেই নারীকে আপাদমস্তক যোনীতে রুপান্তরের বিষয়ে কারো আপত্তি থাকে না।

বর্তমানের সময়ে আমরা সবাই কোনো না কোনো ভাবে পতিতাবৃত্তি করছি। নিজেদের যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও বাড়তি একটু অনুগ্রহের জন্য খানিকটা চামচামি করছি- এবং এই বাড়তি অনুগ্রহ লাভের জন্য কৃত কাজটাকে পতিতাবৃত্তি বলতে আপত্তি নেই আমার- নৈতিকতাবিবর্জিত যেকোনো অনুগ্রহ গ্রহনকে পতিতাবৃত্তি বলা চলে,
যে মানুষটা নিজের বিকালঙ্গতাকে পূঁজি করে রাস্তায় করুণা ভিক্ষা করছে সেও তার বিকালঙ্গতার যোনী ঝুলিয়ে ঘুরছে। যে মানুষটা পয়সা দিয়ে একটা এমবিএ ডিগ্রী কিনে ঝোলায় পুড়ছে সেও সেই সার্টিফিকেটের যোনীটা সামনে ঝুলিয়ে আহার যোগার করছে।
আমাদের ভেতরে যে মানুষটা নেতার বংশবদ হয়ে তোষামোদি করছে- সে মানুষটাও একই অর্থে নিজেকে পতিতা হিসেবে তুলে ধরছে।
পতিতাবৃত্তিকে শুধুমাত্র দেহ প্রদানের ভ্রান্তি থেকে বাইরে এনে এর উৎস সন্ধান করে দেখেন ভাইটি। দেখা যাবে সামাজিক ক্ষমতায়নের প্রকৃত সুযোগ না পাওয়ায়, নিজের ভেতরের যোগ্যতার সঠিক ব্যবহার করতে না পারায় হয়তো আমাদের বিবাহিত মেয়েদের অনেকেই নিছক দেহ দিয়েই নিজেদের গ্রাসের যোগার করছে- শুধুমাত্র গৃহীনি যাদের পরিচয়- তার আহার এবং নিদ্রা, মাথার উপরে ছাদ এবং পরণের কাপড় সবই দিচ্ছে তার স্বামী- এবং এ কাজটা করতে তাদের স্বামীকে নিয়মিত দেহ দিতে হচ্ছে । এখানেও পেটে ভাতে আর শরীরের সম্পর্কে একটা বিশাল দায়িত্ব পালন করছে যারা- তাদেরও সংজ্ঞায়িত করা যায় পতিতা হিসেবে।
এখন কথা হলো দেনমোহরানা আমাদের মুসলিম মেয়েদের আজীবন পতিতাবৃত্তির মূল্য প্রদান করে দেওয়া। (অনুগ্রহ করে একটু দেনমোহরানা আদায় সংক্রান্ত হাদিস এবং ঐশী বানি পড়ে দেখেন,
যৌনাঙ্গ ব্যবহার করা না হলে দেন মোহরানা আদায় করতে পারবে না কোনো মেয়ে-শুধুমাত্র যৌনাঙ্গ ছেদন হলেই মেয়ে দেনমোহরানা আদায়ের অধিকারী হয়- )এখানে মুসলিম বিবাহ চুক্তিতে আজীবন যৌনাঙ্গ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েই মেয়েরা নিজেদের দেনমোহরানার অধিকার বৈধ করে-
এক রাতের কয়েক ঘন্টায় যারা হাজার টাকার বিনিময়ে খানিকটা সুখ দিয়ে যায়, মানুষের যৌনতার চাহিদা পুরণ করে- এভাবেই আমাদের বিবাহিত রমনীরা স্বামীদের যৌনতার চাহিদা পুরন করে- এটাকে টেকনিক্যালি পতিতাবৃত্তি বলাটাকে অশোভন হিসেবে দেখলে বিপদ।
মৌল বিবেচনায় এটাও তেমন আলাদা কোনো কাজ না।
রাখাল সাহেব আমার বক্তব্য গ্রহন করতে আপনার আপত্তি আমি সাদরে গ্রহন করলাম,
তবে এইসব বক্তব্যের বাইরে গিয়ে বলতে চেয়েছিলাম যদি কেউ পতিতাবৃত্তি নিয়ে মানসিক সমস্যায় থাকে এবং তার ভেতরে যদি নৈতিকতা এবং ধর্মীয় বিধির ভুতেরা বসবাস করে তবে সে তার নিজের কৃতকর্মকে এভাবে সঠিক এবং ইসলাম সম্মত করতে পারে-
এখানে আমার লাভবান হওয়ার কোনো কারণ থাকলে সেটার উপলব্ধি হওয়ার কথা বায়তুল মোকাররমের খতিবের এবং যাবতীয় মোল্লাদের- যাদের ভেতরে কামনা থাকলেও তারা ইশ্বরের ভয়ে সে কামনা পুরণের তাগিদ বোধ করে না, নৈতিকতাসম্মত পতিতাবৃত্তি বা পতিতাবৃত্তির ইসলামিকরণ সম্ভব-

"বলি দাদা "বিধান মানিয়া কর্ম করার" ব্যবহারিক হইলে জানান দিয়েন। বান্দা ভলান্টিয়ার হইবার চায়।"
এখনও পুরুষে আমার রুচি নেই,

-------------------------------------------------------
বাংলায় হাগি, মুতি, বাঁচি

------------------------------------

আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লিখেছেন, ইরানে এটা এখনও খুব প্রচলিত।
আর, দাস (দাসী) প্রথাটা ইসলাম কখনও বাতিল করেনি। সে হিসাবে কম খরচে ঘরেই কাজ সারার ব্যবস্থা করা যায়।

আলমগীর

অতিথি লেখক এর ছবি

হু ......
আমাদের প্রতিভোরে বিবাহবিচ্ছেদ
আমাদের প্রতিরাতে বিবাহবাসর।
-নিরিবিলি

অতিথি লেখক এর ছবি

আগে মানুষ তারপর সেই মানুষকে পথ দেখাতেই ধর্ম। কিছু মানুষ এখানে দেখলো কোনো ভাবে ধর্মের মাথা হওয়া গেলে কোনো কষ্ট ছাড়াই অনেক গুলো মানুষকে ইচছামত নাচানো যায় ।ধার্মিক আমরা হতে পারিনা কিন্তু ধর্ম ভিরু ! অলৌকিকতার ভীতিতে কাঁপতে থাকি আমরা।বিধাতাকে যতনা ভয় পাই তার থেকে মওলানা,পুরোহিতদের ভয়ে আধমরা হয়ে থাকি আমরা। প্রাচীন থেকেই দিনের অলোয় যারা অস্পৃষ্য রাতের আধারে তাদের ঘরের মেয়েদের ভোগ করায় কোনো দোষ ছিলোনা।সেখানে ধর্ম যেতো না। ভোগের নেশা যত দিন যাবেনা তত দিন এমন রীতি থাকবেই সম্মুখে অথবা আড়ালে। আর খারাপ কাজের প্রবৃত্তি হরিয়ে ফেললে মানুষ হয়তো অন্য কোনো প্রানী হবে....।

(জয়িতা)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।