পলিটিক্যাল ইসলাম কয় কারে?

সাধক শঙ্কু এর ছবি
লিখেছেন সাধক শঙ্কু (তারিখ: মঙ্গল, ২১/১০/২০০৮ - ৯:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঠান্ডা লাড়াই শেষ হওনের পর থিকা আঙ্কেল স্যাম আর মৌলবাদীগো টেকা দেয় না, সেইসূত্রে কাকার পুরানা ওয়াফাদাররা বিলা হইয়া তাগো বিরুদ্ধে বিপ্লবে(!) নামছে, তারপর নিম্নবর্গের ইতিহাস খুইদা (!) নাকি দেখা গেছে তারাই এখন সাম্রাজ্যবাদের অ্যান্টি থিসিস ইত্যাদি বইলা সাম্রাজ্যবাদের কিছু অত্যন্ত শয়তান মুখচেনা দালাল গত দেড় দশক যাবৎ বেশ কিছু মুসলিম প্রধাণ দেশের গণবিরোধী শাসক শ্রেণীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় পলিটিক্যাল ইসলাম নামের একই সঙ্গে একটা অতিশয় নিম্নমানের আর বিপজ্জনক থিউরি কপচাইতাছে। এরা সুযোগমতো গ্রামসী কপচাইয়া লালনপন্থী ভাব ধরে কিন্তু কাম করে লালনের জানি দুষমন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সোল এজেন্ট শাসক শ্রেণীর লগে। ইতিহাসে লালন শাহ নিম্নবর্গের যেই চেতনা ধারণ করে তার লগে মৌদুদী-কুতুবের কী সম্পর্ক এই প্রশ্নের জবাব তারা দেয় না। এগুলা জিগাইলে তারা ফুকু-দেরিদা লইয়া দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। তাগো তৈরী করা বিষাক্ত ধোঁয়া একেকটা গণহত্যার মোটিভ বহুলোকের চোখের আড়ালে লইয়া যায়। লালন শাহ'রে হুজুররা কখনোই সহ্য করতে পারে নাই। ছেউড়িয়াতে হুজুররা গত একশ বছরে বেশ কয়েকবার হামলা করছে। কথা হইল এই হুজুররা আমাগো সোশ্যাল পলিটির প্রতিনিধিত্ব করে? নাকি আউল-বাউল-সহজিয়া ধারার অসাম্প্রদায়িক মানবধর্ম করে? যেই হুজুররা চাইরদিন আগে ভাস্কর্যের রশি ধইরা টানাটানি করতাছিল তারা কী সেইটা সাঁঈজীর প্রতি কোন শ্রদ্ধার জাগা থিকা করতাছিল?

ইসলামী রাজনীতি মানে কী? খায় না মাথায় দেয়। সেই চাইর খলিফারা মুখে মুখে কইছে যে তারা কোরানের রাস্তায় চলে। চাইর জনের মধ্যে আবার তিনজনই মার্ডার হইছে স্বজাতির স্বধর্মের লোকজনের হাতে। এর পর গাবগাছী যুগ গেছে অটোমান যুগ গেছে সবই তো পরিস্কার মনার্কি। ইসলামী রাজনীতি মানে কি তাইলে রাজতন্ত্র? পলিটিক্যাল ইসলাম ওয়ালারা এই কথা কইলে ফাল দিয়া উঠে। ইসলামে রাজতন্ত্রের কোন স্থান নাই ইত্যাদি কইয়া গইড়াইয়া কান্দে। তাইলে কী আছে? কোন তন্ত্র আছে? ইসলামী বিপ্লবের উদাহরণ দিতে কইলে ইতিহাস কাঁচাইয়া সামনে দেয় ১৯৭৯ সালের ইরানী বিপ্লবরে। সেইখানে প্রশ্ন আসে ঐটা কি শিয়া গো বিপ্লব না সুন্নিগো বিপ্লব। যদি শিয়াসুন্নি সবার হয় তাইলে কইতে হয় ঐটা আসলে ইরানি রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে একধরণের জাতীয়তাবাদী অভ্যুত্থান। ইসলাম আবার জাতীয়তাবাদ সমর্থন করে কেমনে? যদি বৃহত্তর স্বার্থে সমর্থনের প্রশ্নই আসে তাইলে কইতে হয় পি.এল.ও. যখন আরব জাতীয়তাবাদ নিয়া ইজরায়লের সাথে যুদ্ধ করতাছিল তখন তুমরা চৌদি বাদশার জাঈঙ্গার তলে কী করো? আবার ইরানের ইসলামী বিপ্লব যদি সমর্থন কইরা থাকো তাইলে তোমাগো ফিনান্সিয়ার চৌদি আরব যখন ১৯৮৭ সালে ব্রাশ ফায়ার কইরা ৩০০০ ইরানী হাজী মারলো তখন তুমরা কোথায় ছিলা? চৌদি বাদশার পুটকীর বাল গুনতে ছিলা?

তুমরা মানে জামাত+মোছলেম বেরাদরহুড বাদ দিলে আর থাকে আইজকার রামছাগল বোমাবাজরা। যারা গায়ে বোমা লাগাইয়া মরতাছে তারা যেকোন বিচারেই রামছাগল। বোমা কিনার টেকা আর লোকেশন যারা দেখাইতাছে তারা কারা? তারা হইল ঐ বোমাবাজীর ঘটনার প্রকৃত বেনিফিসিয়ারী।

কিছু হাউয়ার নাতি আইজকাইল সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একধরণের কাল্পনিক "পলিটিক্যাল ইসলাম" দ্যাহে। কিন্তু ঠিক কে যে এই দুর্বোধ্য রাজনৈতিক ফেনোমেনা ধারণ করে সেইটা আর কয় না। মাঝে মধ্যে ইনাইয়া বিনাইয়া যেইসব বোমাবাজগো কথা কয় তারা নিজেগো ছাগলামী জাহির কইরা কাজ কইরা যাইতাছে একতরফা ভাবে শুধুমাত্র সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে। টুইন টাওয়ার ভাইঙ্গা বা লন্ডনের পাতাল রেলে কোম ফুটাইয়া সাম্রাজ্যবাদের একটা বালও পড়ে নাই। উল্টা আফগানিস্থান আর ইরাকের তেলক্ষেত্রের উপর একতরফা দখল পাইছে।

বাংলাদেশে জামাতে ইসলামীর কথা আর কমু না। কইতে কইতে জিবলা পইচা গেছে। জামাত হইল একই সাথে র্যাবিজ আর শিলেগা আমাশয় আক্রান্ত কুত্তার পুটকী দিয়া বাইর হওয়া কিছু রাজনৈতিক বাস্টার্ড। বাকি থাকলো কওমী মাদ্রাসাওলারা, যারা ফতোয়া দিয়া মানুষ মারে, ৬৪ জেলায় বোম ফুটায়। এরা কারা? জেমবি নামে যেই দলটারে ধরা হইছে তাগোরে প্রত্যক্ষ সহায়তা দিছে চাইরদলীয় জোট সরকারের একাধিক মন্ত্রী। বিএনপি নেতার টেকা খাইয়া কোন বালের পলিটিক্যাল ইসলাম কায়েম করতে চায় ছাগলের গুষ্টি সেইটা তারা এখনো কয় নাই। সবচাইতে বড় সমস্যা এগোরে নিয়া এরা কখনোই প্রকাশ্যে নিজেগো কর্মসূচী স্পষ্ট কইরা কয় না। ঠিক কোন কোন পরিবর্তন ঠিক কী কী ক্ষেত্রে এরা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটাইতে চায় আর সেই সব কাল্পনিক পরিবর্তন মাইসের ঠিক কী কামে লাগবো এই বিষয়ে কিছু জিগাইলেই তারা বুখারি মুসলিমের হাইকোর্ট দেখানো শুরু করে।

আরে ভাইরে টেকা তো আর আল্লায় বানায় নাই! আল্লাহ-ভগবান-গড-শিঙাবোঙা কেউই কোনদিন দাবী করে নাই যে তারা টেকার মতো একটা খাচ্চৈরা জিনিস বানাইছে। টেকা বানাইছে মানুষ। টেকার যাবতীয় বিনিময়ের নিয়মকানুনও মানুষের বানানো। রাজনীতি হইতেছে সেই টেকার নেটওয়ার্কের ম্যানেজমেন্ট, যেইটার নিয়ন্ত্রন লইয়া ঐ নেটওয়ার্কের লাভবান আর ক্ষতিগ্রস্থগো কামড়াকামড়ি চলে। কাজটা খুবই নোংরা কিন্তু হাগামুতার মতোই জরুরি। অন্তত এই সময়ে যখন মানুষের এক খাবলা দমও টেকার নেটওয়ার্কের আওতার বাইরে পড়ে না।

এই বিষয়ে ধর্ম আসলে কী কইছে। কোন ধর্ম? দুনিয়াতে এই রকম কোন ধর্ম কি আসলে আছে যে এই জটিল বিষয়টা নিয়া পরিস্কার খোলাখুলি আলাপ করছে? করলে কি করছে? যেইটা করছে সেইটা কোন যুক্তিতে ভুজুংভাজুং বুজরুকির আড়ালে মহাজনের দালালী না, রাজনৈতিক ইসলামের সমর্থকদের কাছে প্রশ্ন থাকলো।

প্রায় দশমাস আগে সামির আমীন এই বিষয়ে কথা কইছিল


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ধর্মহীন রাজনীতি শোষণের হাতিয়ার। (প্রচারেঃ ছাত্রশিবির)

স্নিগ্ধা এর ছবি

হায়, হায়! এই পোস্ট পড়ে তো আমি প্রচন্ড কনফিউজড! আমি তো এদ্দিন 'পলিটিক্যাল ইসলাম'বলতে সাম্রাজ্যবাদের (বা পাশ্চাত্যকরণের বা পশ্চিমা আগ্রাসনের) বিরুদ্ধে বিদ্রোহ জানতাম না?! আমি তো জানতাম এটা হলো - ধর্মকে ব্যবহার করে, ধর্মকে রাজনীতিতে প্রবিষ্ট করিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক (অবশ্যই রিগ্রেসিভ) পরিবর্তন আনা - অর্থাৎ কিনা, সোজা ভাষায় ধর্ম ধর্ম করে মুখে ফেঁকো তুলে ক্ষমতালাভ বা অন্য কোন স্বার্থোদ্ধারের কাজটি হাসিল করা। এবং ভয়ে ভয়ে বলি, ওই সব গ্রামসি, ফুকো, দেরিদা ফেরিদা থেকেই কিন্তু এই থিওরী আসে।

আর আপনি যেটার কথা বলছেন সেটাকে কেউ কেউ 'নিউ সোশ্যাল মুভমেন্ট' নামক ছাতার নীচে আশ্রয় দেয়/দিতো - যেমন আলজিরিয়াতে কিছু মেয়ে নতুন করে হিজাব পড়তে শুরু করেছে এক সময়কার ফ্রেঞ্চ কলোনিয়ালাইযেশনের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহ তুলে ধরতে, তাদের ইস্লামিক হেরিটেজ ইত্যাদির ওপর চাপিয়ে দেয়া সংস্কৃতিকে অস্বীকার করতে - এইসব।

আমি নিজে অবশ্য বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক অবস্থায়, কোনরকম রিভাইভাল অফ ইসলাম কেই 'সোশ্যাল মুভমেন্ট' আখ্যা দিতে রাজী নই। কিন্তু, এখন কি তার মানে পলিটিক্যাল ইসলাম বলতে এটাই বোঝানো হয়?!

সবুজ বাঘ এর ছবি

ট্যাকার ম্যানেজমেন্টডা খউপ ভালা ধরছ। এই চুদানির পুলাগো সুপ্ফ কারচুপির ফলে কুনো ট্যাকাই আহে না পকটে। এই সিন ক্যাম্নে সামলাই কওতো।

বি. দ্র: তয় ধরো আমরা যুদি নকল দাঁড়ি গোফ নাগিয়া এছলামি/এজমাইলি রাজনীতি ধরি, তাইলে আগামী ছয় মাসের মইদ্যে বাংলাদেশ আমাগো অইয়া যাইব এতে কুনো মিস নাই। আর বছর চারির মইদ্যে মারিকা দহল করাও কুনো ঘটমা না।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

জর্দান যে গুলী করে হাপিস করে দিয়েছিল কয়েকহাজার ফিলিস্তিনী , ইয়াসির আরাফাত পালিয়ে বেঁচেছিল তিউনিশিয়ায় ।

আর প্যালেষ্টাইন প্রতিরোধ যুদ্ধরে ইসলামী জেহাদ বানায় কোন গবেটরা? শুরু থেকেই তো এটা ছিলো বামঘেঁষা ন্যাশনালিষ্টদের যুদ্ধ ।

জর্জ হাবাস(ডাঃ হাকিম) এর নাম উচ্চারন না করে প্যালেষ্টাইন প্রতিরোধ যুদ্ধের ইতিহাস চর্চা তো ঘোর অন্যায় ।

সাধু মাঝে মাঝে দর্শন দিলে ভাল্লাগে হাসি

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

কীর্তিনাশা এর ছবি

খুবই জুইতের লেখা। পইড়া চমকাইছি।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।