গণমুখী কূটনীতি

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: মঙ্গল, ১১/০২/২০১৪ - ৩:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখাটি মূলত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র-শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধের ঢেঁকিতে পাড়া দেয়া। কিছুদিন আগে জামাল হাসান নামে একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর কাছ থেকে আমি একটি ইমেইল পাই। তিনি এই মুহুর্তে কুয়েতে আমেরিকান আর্মীর হয়ে কাজ করছেন। আমার একটি লেখার সাথে প্রাসংগিক মনে হওয়ায় তিনি তার আশির দশকের শেষে লেখা একটি প্রবন্ধের সূত্র দিয়েছেন। মান, বিষয়ের ব্যাপ্তি আর গভীরতা সব দিক দিয়েই ওনার লেখা অনেক অনেক বেশি ভাল। সেটির একটি ব্যাপার আমার খুব নজর কেড়েছে। সেটি হল তিনি দেখিয়েছেন আমেরিকা আফগানিস্তানে তাদের অভিযান চালানোর সময় সেই দেশটির মানুষরা কি চায় সেটি কখনও মাথায় রাখে নি। ওনার এই লেখা আবার আমেরিকান সরকারের কিছু লোক আগ্রহ নিয়ে পড়েছেন এবং তাদের একাধিক ব্যক্তিও ওনার সাথে একমত। এটি অনেকটা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার নেয়া নীতির মত।

সচলায়তনে যারা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র তারা কি একটু ভাল করে ভেবে দেখে আমাদের জানাবেন এখনকার আমেরিকান সরকারের বাংলাদেশের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা কেমন? আমরা নিজেরাও চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আমার লেখা মান আর জামাল হাসানের লেখার মানের পার্থক্যটি দেখুন। আপনাদের পেশাগত আগ্রহের মধ্যে পড়বে বলে লেখাও অনেক ভাল হবে। বিশেষ করে গত এক বছরে আমেরিকান দূতাবাসের বক্তব্যগুলো বিশ্লেষণ করে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে তাদের ও আমাদের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে একটু যদি দেখাতে পারেন ভবিষ্যতে এই সম্পর্কের রুপটি কেমন হতে পারে খুব ভাল হয়।

জামাল হাসানের লেখাটি পড়ে আমার আরেকটি জিনিস মাথায় আসল। কয়েকদিন আগে সুশীল বুদ্ধিসমাজকে দেয়া জাফর স্যারের এই ঝাড়িটি দেখতে পারেন।

স্যার বলেছেন বাংলাদেশে থাকা বিদেশীদের পাকনামির মূল ফোকাস থাকতে হবে বাংলাদেশের মানুষেরা। আমেরিকান দূতাবাসের এখন তথ্য জানারপ্রচারের অনেক মাধ্যম আছে। কাজেই তারা আগের চেয়ে বেশি জানে দেশের মানুষ কি চায়। নিশ্চয়ই ১৯৭১ সালের ভুল থেকেও কিছুনা কিছু শিখছে। বিশেষজ্ঞরা কি একটু দেখবেন একটু বড় ভূরাজনৈতিক (সত্যিকারের ভূরাজনীতি, হাঁটুপানির জলদস্যুর ভূরাজনীতি না!) প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশ আমেরিকান সম্পর্কটি কোন দিকে যাচ্ছে?

আমরা খুব সম্ভবত: পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়েও একই কাজ করেছি। একটি পাহাড় আমাদের কাছে শুধুই সেগুনবাগান করার সম্ভাব্য জায়গা। আমরা কখনও ভাবিনি সেটি হয়তো কোন পাহাড়ীর ছোটবেলার খেলার জায়গা, তার পরিবারের জীবিকার ক্ষেত্র।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

মহান যোদ্ধা-দার্শনিক সুন ৎযু বলেছিলেন, "Know yourself, know your enemy. Your victory will be complete." বাংলাদেশের কয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমেরিকান স্টাডিজ বিভাগ আছে? আমরা উঠতে-বসতে ভারতকে গালি দেই; বাংলাদেশের কয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান স্টাডিজ বিভাগ আছে? ভারত-আমেরিকার কথা বাদ দিলাম; বাংলাদেশের কয়টা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র আছে? রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-কৌশলগত দিক থেকে যেসব রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেসব রাষ্ট্র নিয়ে সিস্টেমেটিক গবেষণা বাংলাদেশে হয় না। আমেরিকার প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এরিয়া স্টাডিজ বিভাগগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; এসব বিভাগের গবেষকরা সরকারের নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, এবং এসব বিভাগে প্রচুর ফেডারেল ফাণ্ড দেয়া হয়। এর সমতুল্য কিছু বাংলাদেশে নাই বললেই চলে। তবে আশা করছি আপনার লেখার সূত্র ধরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সচলেরা এই বিষয়গুলিতে লিখবেন।

শেহাব এর ছবি

আসলেই তো! আমাদের কোন ইন্ডিয়ান স্টাডিজ বিভাগ নেই কেন? যাদের সাথে আমাদের সবচেয়ে বেশি লেনদেন তাদের থেকে ভাল দাও মারতে হলে তো পড়াশোনা করে বুদ্ধি বের করতে হবে!

হিমু এর ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান স্টাডিজ বিভাগ খুললে ঝানু-কলুরা চিল্লাবে, বিশ্ববিদ্যালয়েও সাম্রাজ্যবাদী ভারত ঢুকে পড়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এদিকে ঝানু ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে ঠিকই ভারতে বেড়াতে যায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

তাহলে অন্ততঃ চায়না স্টাডিজ বিভাগ তো বামাতিরা খুলতে পারে! চীনের পাছায় চুমা দিতে তো তাদের কোন সমস্যা নাই, আর চীনও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চায়না স্টাডিজ বিভাগও তো দেখিনা!

Emran (আগের মন্তব্যে নাম লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম)

হিমু এর ছবি

বামাতিরা চায় না স্টাডিজ
কে খুলবে চায়না স্টাডিজ?

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মন মাঝি এর ছবি

বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্ডিয়ান স্টাডিজ বিভাগ খুললে - আগে 'দশ ট্রাক' গেছে, তখন ১০০ ট্রাক যাবে! হাসি

ঢাবিআইআর-এর শাহেদুজ্জামানরা পড়াবে - পাকিস্তান থেকে তাদের যোগসাজসে একটা মিনি ক্যান্টনমেন্ট চালানোর মত বা একটা আস্ত নগরী উড়িয়ে দেয়ার মত অস্ত্রশস্ত্র এনে সেটা চুপিসারে বৃহৎ প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের কাছে পাচার করলে নাকি ইন্ডিয়ার কাছ থেকে নানারকম "সুবিধা" পাওয়া যাবে, "সমীহ" পাওয়া যাবে। তখন বাংলাদেশকে তারা সমঝে চলবে, খায়খাতির করবে, চুমা খাবে। বলবে - হুঁ হুঁ বাবা, বাংলাদেশও পারে!!! কি কাণ্ড! বর্তমান সরকার নাকি এখন সেই "দশ ট্রাকের" সুফলই পাচ্ছে, কিন্তু বুঝতেসে না! এটাকে নাকি কোভার্ট কোয়ের্সিভ ডিপ্লোম্যাসি বলে। এইসব অতি-অতি-অতি উচ্চাঙ্গের সুক্ষাতিসুক্ষ কাটিং-এজ্‌ ভূরাজনৈতিক রণকৌশলগত মহাকূটনীতি, মহাপাকনামি তথা কোয়ের্সিভ ডিপ্লোম্যাসি-র মাজেজা তার মত ঢাবির পুঁথিকীট বিদ্যাদিগ্‌গজ ছাড়া দেশের আনপড় লোকেরা কি বুঝবে (অন্য বিষয়ে যতই শিক্ষিত হোক!) !? তাই তো কোথায় দশ-ট্রাকওয়ালাদের মেডেল দিবে, বীর-শ্রেষ্ঠ খেতাব দিবে, তা না - উলটা আবার বিচার করতেসে, ছিঃ!

মেজর থেকে মেজর জেনারেল, চাপরাশি থেকে এম্বেসেডর সবাই এখন কূটনীতি-ভূরাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে যত বড় মুখ না তত বড় পটর পটর করে। অথচ এসব বিষয়ে কথা বলার একমাত্র অধিকার তো তার মত কূটনীতি বিষয়ে বিদ্যার জাহাজদের। তারা সুযোগ পান না বলেই তো দেশের আজ এই অবস্থা - দশট্রাকওলাদের পুরষ্কার না দিয়ে বিচার করা হয়!

কূটনীতি-ভূরাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে "পড়াশোনা", বুদ্ধি(?)চর্চা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে বিশেষজ্ঞতা বা পাণ্ডিত্য - এসব শব্দ শুনলেই তাই ইদানিং আমার পিলে চমকায় খালি! তো, এখন যদি এর উপর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মত আপনারা আবার 'ইন্ডিয়ান স্টাডিজ' খুলতে চান, তাহলে আর রক্ষা নাই। ট্রাকে-ট্রাকে দেশ সয়লাব হয়ে যাবে মনে হয়। যে দেশের টিভি চ্যানেলগুলা "বিশেষজ্ঞ" নামধারী এইসব সম্পূর্ণ বাস্তবতাবোধহীণ, ডিসওরিয়েন্টেড, বিশ্ববলদদের মানুষের সামনে প্রোমোট করে আর মানুষও তা বিনাবাক্যব্যয়ে হজম করে, আমার মতে সে দেশে 'গবেষণা' দূর অস্ত্‌ - বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতে সবার আগে "কাণ্ডজ্ঞান স্টাডিজ" বিভাগ খোলা দরকার। ধন্যবাদ।

****************************************

হিমু এর ছবি

২০০৩ সালে একবার মৌলভিবাজারের রাজকান্দি রেঞ্জে জঙ্গলের ভেতর হাইকিং করতে গিয়েছিলাম। ফরেস্টাররা জানালেন, একটা নির্দিষ্ট দূরত্বের পর আর যাওয়া যাবে না, কারণ জঙ্গলের গভীরে বাংলাদেশের মাটিতেই মিজো বিদ্রোহীরা ক্যাম্প করে থাকে। বনরক্ষী থেকে সীমান্তরক্ষী, কেউ তাদের ঘাঁটায় না। মিজোদের টেকাটুকার দরকার পড়লে তারা মাঝেমধ্যে বাংলাদেশের লোকজন আটকে মুক্তিপণ আদায় করে।

উলফার পাণ্ডারা বাংলাদেশে বালবাচ্চা নিয়ে থাকে, খায়, ব্যবসা করে, দুই চারটা লতি-মতি পালে। তারা নিজেরাই ব্যবসায় সুবিধা হচ্ছে না দেখে অস্ত্রশস্ত্র আবার কালোবাজারে বেচে দিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে দর কষাকষিতে বসেছে। সেসব বেড়ালপারকরা অস্ত্র শেষতক কার হাতে যায়?

দশট্রাক অস্ত্রের শেষ গন্তব্য বাংলাদেশ নিজেই। ঐসব অস্ত্রশস্ত্র শাহেদুজ্জামানদের পাছার অদূরে গিয়েই ঠেকে। কোভার্ট কোয়ের্সিভ ডিপ্লোমেসি নিয়ে এই ফুটাপণ্ডিতগুলির রাগমোচনের বিলটা চোকাতে হয় গরিব মানুষকে, এইটাই সমিস্যা।

অতিথি লেখক এর ছবি

কূটনীতির দাবায় বাংলাদেশ কখনই কনসিসটেন্ট খেলা দেখাতে পারেনি। মাঝেমধ‌্যে দু'একটা অসাধারণ মুভ দেখালেও সেই ধারা বজায় থাকেনি।
আর, বাংলাদেশের তরফ থেকে বাইরের ক্ষমতাশালী লোকদের সাথে কতটা যোগাযোগ বজায় রাখা হয় সেটাও জানা নেই।
ক'দিন পর পর "অমুক দেশ বাংলাদেশে শান্তি দেখতে চায়" টাইপের হেডলাইন দেখলি মেজাজ তিরিক্ষে উঠে যায়।

একরম একটা ভাইটাল ইস্যু তুলে আনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, শেহাব।

শুভেচ্ছা হাসি

[মেঘলা মানুষ]

অতিথি লেখক এর ছবি

গণমুখী কূটনীতি কীনা জানিনা, তবে ইদানীং কিছু ক্ষেত্রে ভারত যেসব স্ট্যান্ড নিচ্ছে তা থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে। নিউইয়র্কে কুটনীতিক লাঞ্ছণা থেকে শুরু দিল্লী-ওয়াশিংটনের টানাপোড়েনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে সম্প্রতি ভারতের বহুলালোচিত সোলার এনার্জি প্রজেক্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নালিশীর ঘটনা। জাপানের পর যুক্তরাষ্ট্রের সোলার এনার্জির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার বলা হয় ভারতকে, যেখানে শুধু ২০১১ সালের রপ্তানী আয় ১১৯ মিলিয়ন ডলার। ২০১১ সাল থেকে ভারত নিজস্ব প্রযুক্তিতে সক্ষমতা অর্জনের প্রকল্প হাতে নেয়ায় প্রথমে 'থ' হয় ওয়াশিংটন। নানান ভাবে ভারতের মনগলাতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত মামলা ঠুকে দেয় ডাব্লুটিওতে। তাতেও কাজ হয়না। দেবযানীর পর এটি চরতি বছরের দ্বিতীয় ইস্যূ, যার জন্যে উপযাজক হয়ে ভারতকে আলোচনায় ডাকে ওবামা প্রশাসন। কিন্তু ভারত তাতে কান দিচ্ছেনা, তাই বাধ্য হয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরেো একটি মামলা ঠুকে দিয়েছে ডাব্লুটিওতে। এর আগে ইরানের উপর তেল অবরোধের সময়ও যুক্তরাষ্ট্রের নাকের ডগা দিয়ে তেল আমদানীর ব্যাপারে ইরানের সাথে চুক্তি করেছিলো ভারত। একটা পশমও ছিড়ঁতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। কেন্দ্র মার্কিন রিটেইলার (যেমন ওয়ালমার্ট)দের ঢুকতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলে ইউপিএ সরকার থেকে বেড়িয়ে যান মমতা ব্যনার্জী। কারন এটা দেশের শিল্প মালিকদের স্বার্থ ক্ষুন্ন করবে। চীনের সাথে যখন অরুনাচল সীমান্তে কয়েকমাস আগে ঝামেরা হলো ভারতের, যুক্তরাষ্ট্র তালি বাজালো দুরে বসে, এবার কিছু হয় বুঝি! কিন্তু মনমোহন বেইজিং গিয়ে সমিান্ত চুক্তি করে এলে 'থ' হলো ওবামা প্রশাসন। ২০১২ সালের 'এনরিকা লেক্সি' ইনসিডেন্টের জেরে ইটালি এখন রীতিমতো নাকাল হচ্ছে! সে ঘটনায় ইটালিয় মেরিন সেনাদের গুলিতে ভারত মহাসাগরে ফিশিং ট্রলারের দুই মারা যায়। এদের ধরে এনে বিচার করছে দিল্লী। ইটালি নানাভাবে হস্তান্তরের চেষ্টাচেষ্টি করে পারেনি। এমনকি নিহত জেলেদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতের জন্যে এন্টি-পাইরেসি আইনের আওতায় মামলাটি করা হয়েছে সম্প্রতি; এটা নিয়ে ইটালির পিছে এসে দাড়িয়ে গেছে গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আম্রিকাও! কিন্তু দিল্লীকে টলানো যাচ্ছেনা। আফগানিস্তানে সরকারের সাথে নিরাপত্তা চুক্তি "ডিসেম্বরের মধ্যেই চাই, করতে হবে", ওয়াশিংটনের এই মনোভাবের গালে তাদেরই ক্রীড়নক হহামিদ কারজাই জুতা মেরে বলেছে নির্বাচনের আগে কোনোমতেই নয়।

কারজাই সাহেব সেটা আবার বলেছে দিল্লী সফরে গিয়ে! কেশাগ্রও ছিড়তে পারেনি ওবামাপ্রশাসন! পেরেছে ডেপুটি কনসাল পদমর্যাদার দেবযানীর কাপড় ধরে টান দিতে! দেবযানীকে ফেরত আনার পর কেরি ও তার দলকে বলতে শোনা গেছে এটা একটা আন্ডাস্টেঙি, নো হার্ট ফিলিংস! কিন্তু দিল্লীও যে একজন সমমর্যাদার কূটনতিককে ফেরত পাঠিয়েছে দেশে! হিসেবে নিয়েছে সব কূটনীতিকের, লোকসভায় বিরোধী সাংসদরা দাড়িয়ে বলেছেন ভারতের আইনে সমকামীতা নিষিদ্ধ, মার্কিন নাগরিকগুলো যারা গে নিয়ে আসে তাদেরও নাঙা করা হোক! তার কি হবে? কিঙবা দিল্লীতে মার্কিন দূতাবাসের পরিচালিত ক্লাব, সুইমিংপুলসহ সব ব্যবসায়িক কাজকাম বন্ধের সরকারী নির্দেশ কি বার্তা দেয় ওয়াশিঙটনকে? কূটনীতিক দ্বন্দে খেলাটা যদি ড্র হহয়, তাহলে বাড়তি চর থাপপ্পরগুলাই ভারতের লাভ!

এই পটভূমিতে দাড়িয়ে আত্নবিশ্লেষনে গ্লানি আর হতাশার ছবিটা দেখা যাক! কাদের মোল্লার বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব জানাতে ব্যর্থ তথাকথিত প্রধান বিরোধী দল! ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধি যখন স্মৃতিসৌধে সম্মান দেখাতে গেলোনা বিজয় দিবসে, তখন জাতীয়তাবাদের ধ্বজাধারীদাবীকারী এই দল বলে কীনা সরকারের দেওলিয়াত্ত্বের কারনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিদেশীরা! হাসিনারে দিনরাত ভারতের দালাল বইলা গালি দেয় আর রাইতে 'মজিনাদের' সাথে 'বৈঠকে' বসে! জিএসপি বন্ধ করলে হাততালি দেয় দুরে বসে আর বিদেশীদের আহবান জানায় বিদেশী পত্রিকায় প্রকাশ্য নিবন্ধ লিখে যে এই দেশে বিনিয়োগ করতে আইসেননা। এটুকু বলার হেডম রাখেনা যে গার্মেন্টস কর্মীরা কোনো দেশের দয়ায় চলে না, রক্তপানি করা সস্তা শ্রমের টাকায় চলে। এই দামে পোষাক না পুষলে নাঙা থাকেন আপনেরা!

(নৈঋত)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।