প্রযুক্তির যুগ ও হুজুগ

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: শুক্র, ১৭/১১/২০১৭ - ১২:৪০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গত কিছুদিনে দুটি খুবই নতুন ধরণের খবর চোখে পড়ল। প্রথমে অক্টোবরের আঠার তারিখ একটি তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক প্রদর্শনীতে একজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী দেশে ইন্টারনেট অব থিংকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি, রোবোটিকস এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ানোর কথা বলেছেন। এরপর নভেম্বরের ষোল তারিখ জানতে পারলাম ঢাকার একটি রেস্তোঁরা রোবট পরিচারক নিয়োগ দিয়েছে। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কারণ, আমার ধারণা দেশের সব ভাল ভাল আর মজার মজার ব্যাপারগুলো আমি প্রবাসে আসার পরেই হচ্ছে। এ কারণে আমি সবসময়ই ভিতরে ভিতরে হিংসায় জ্বলতে থাকি।

আমার নিজের পড়াশোনা তথ্যপ্রযুক্তিতে। আমার কাজের ক্ষেত্র তাত্ত্বিক হলেও একটু টেনেটুনে তথ্যপ্রযুক্তি বলে চালিয়ে দেয়া যায় (আমার বন্ধুরা মানবে কিনা জানিনা!)। এর ফলে দেখা গেছে কিভাবে কিভাবে আমার পরিচিতদের মধ্যে অনেক মানুষ হয়ে গেছে যাদের তথ্যপ্রযুক্তিতে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ। অনেকেই আবার তার মধ্যে বেশ খ্যাতিমান। দুইজন ডাক্তার যদি আমাদের সামনে বসে অ্যান্টেরোলেটারেল লিগামেন্ট (আমি গুগোল করে মানবদেহের সবচেয়ে কম পরিচিত প্রত্যঙ্গের নামটি খুঁজে বের করেছি!) নিয়ে আলাপ করলে আমরা যেমন কিছুই বুঝবো না, তেমনি আমরা বন্ধুবান্ধবরা যখন নিজেদের মধ্যে প্রযুক্তির খুঁটিনাটি নিয়ে নিজেদের পরিভাষায় কথা বলি অনেকেই তেমনি বুঝবেন না। এর ভাল দিকটি হল আমরা কিছু করে খেতে পারি আবার স্বেচ্ছাসেবী বা পেশাজীবি হিসেবে অন্যদের সাহায্য করতে পারি। আর সমস্যার দিকটি হল আমরা কথাবার্তা, চিন্তাভাবনা সব নিয়ে একই পরিচিত গণ্ডির মধ্যে ঘুর পাক খেতে থাকি। আমরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে কথা বলি, গালিগালাজ করি, যারা প্রযুক্তি কম জানে তাদের নিয়ে হাসাহাসি করি, নিজেদের পিঠ নিজেরাই চুলকাই। নিজের আরামের জায়গা থেকে বের হয়ে ভিন্ন পেশার মানুষের সাথে কোন কারিগরী বিষয় নিয়ে আলাপ করার যে কৌশল সেটি আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কূপমন্ডুকতা থেকে বের হই না ততক্ষণ আয়ত্ত্ব করতে পারি না। অন্য পেশার মানুষরা যখন আমাদের কাজের বিষয় নিয়ে কথা বলে তখন বেশি জানার কারণে আমরা অবচেতন মনেই অহংকারী হয়ে যায় আর ভুল ধরতে শুরু করি। সবাই ভুলে যাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সেমিস্টারে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং পরীক্ষায় কয়বার শূন্য পেয়েছিলাম (আমি দুইবার পেয়েছিলাম)।

সম্ভবত: একারণেই যখনই সরকার তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে কোন কথা বলে তখন আমার ফেসবুকে রীতিমতো ঝড় বয়ে যায়। এমনিতে রাজনীতিবিদদের নিয়ে হাসাহাসি করতে সবারই ভাল লাগে। যেদিন সাতান্ন ধারা বাতিল হবে আমরা ধারণা দেশে রাজনীতিকভিত্তিক স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান বলে একটি নতুন পেশাই তৈরি হয়ে যাবে। কিন্তু শুধুই যদি আমরা হাসতেই থাকি তাহলে একটু সমস্যা। নিজেদের যে অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা সেটি দিয়ে আমরা যদি রাজনীতিবিদ আর নীতিনির্ধারকদের নিজে থেকে এগিয়ে এসে ভুল ধরিয়ে না দেই তাহলে এত হেসে কী লাভ?

আমি অন্য একটি দেশে থাকলেও আমার কাজগুলোর টাকা ঘুরে ফিরে সেই দেশের সরকার থেকেই আসে। প্রযুক্তি নিয়ে হুজুগের ব্যাপারে আমি বাংলাদেশ আর আমেরিকার সরকারের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য পাই নি। এখানেও প্রতিবছর আজেবাজে প্রযুক্তিগত গবেষণায় মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। এখানেও অনেকে ঘাপটি মেরে থাকে আমলাদের বা রাজনীতিবিদদের কম জানার সুযোগ নিয়ে কিভাবে টুপাইস কামানো যায়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তো গত বছর "ক্লিন কোল" নামে ব্যবসায়ীদের চালানো একটি বাজারী কথাকে নতুন প্রযুক্তি হিসেবে ভুজুংভাজুং দিয়ে মিডওয়েস্ট আমেরিকার কয়লা শ্রমিকদের ভোট সব দখল করে নিয়েছেন।

ঘটনাচক্রে আমার কাজের বিষয়টি খুবই নতুন। এতটাই নতুন যে এখনও এর হুজুগ অল্প কিছু আমলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে। রাজনীতিবিদদের হুজুগ বলতে এখন পর্যন্ত গতবছর এপ্রিলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো একটি সংবাদ সম্মেলনে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং নিয়ে একটি প্রশ্নের বেশ সুন্দর উত্তর দেয়া ছাড়া আর কিছু পাইনি। যথারীতি এই উত্তরের পান থেকে যতটুকু চুন খসেছে সেটি নিয়ে নিয়ম মেনে আমরা পেশাজীবিরা নিজেরা নিজেরা যতটুকু হাসাহাসি করার কথা সেটি করেছি।

প্রযুক্তির এই হুজুগ সবসময়ই সব সমাজেই ছিল। প্রথম যখন চাকা আবিষ্কার করা হয়েছিল, আমাদের গুহাবাসী পূর্বপুরুষরা নিশ্চয়ই তরুণ প্রজন্মের জন্য পনেরদিনের চাকা বানানোর প্রশিক্ষণ কর্মসূচী নিয়েছিলেন যার ছাত্রছাত্রীদের অনেকে পরে চারকোণা চাকাও বানাতে পারেনি।

আন্তর্জাতিকভাবে এখন কিসের হুজুগ চলছে এটি বের করা খুব সহজ। আমেরিকান গবেষনা প্রতিষ্ঠান গার্টনার নিয়মিত এই হাইপ সাইকেল বা হুজুগ চক্কর প্রকাশ করে। হুজুগ চক্কর হল একটি দ্বিমাত্রিক লেখচিত্র। এই লেখচিত্রে একটাই বক্ররেখা থাকে। দেখতে একটু ঢেউ খেলানো। রেখাটির উপর বাম থেকে ডানে বিভিন্ন প্রযুক্তির নাম লেখা থাকে। যত ডানদিকে যাবেন তত প্রযুক্তিটি পরিণত। আর যত বামদিকে যাবেন তত প্রযুক্তিটি অপরিণত। একটি হুজুগ চক্করের পাঁচটি পর্যায় থাকে। পর্যায়গুলো হল প্রযুক্তির শৈশব, আজগুবি আশার চূড়া, আশাভঙ্গ হয়ে পপাত ধরণীতল, বুঝেশুনে ধীরে ধীরে আগানো এবং কিছু কাজের কাজ শুরু হওয়া। যারা বাংলাদেশ নিয়ে খুব হতাশ তারা ভাবছেন আমি বাংলাদেশের কথা বলছি। আসলে এটি আন্তর্জাতিক ব্যাপার। সব দেশেই এই চক্কর আছে। সব দেশের মানুষই ভুল করে আর তা থেক শেখে। আমি এ বছরের হুজুগ চক্করটি নিচে দিলাম।

দেখুন তো আমার কাজের বিষয় কোয়ান্টাম কম্পিউটিং খুঁজে পান কিনা? এবার আমি আগের দশকের হুজুগ চক্করটি দিলাম।

দেখুন কোয়ান্টাম কম্পিউটিং তখন কোথায়?

এবার আমি আমার জানার মধ্যে কিছু উদাহরণ দেই কিভাবে প্রযুক্তির হুজুগ সরকারের মধ্যে ঢুকে যায়। আগেই বলেছি আমার কাজের বিষয়। আমরা একটি কম্পিউটার বানানোর চেষ্টা করছি যেটি এখনকার সব কম্পিউটারের চেয়ে ভিন্ন আর শক্তিশালী হবে। কাজটি সহজ নয়। আরো দুই তিনটি প্রতিষ্ঠানও একই রকম কিছু করার চেষ্টা করছে। এসব জায়গায় যারা বিনিয়োগ করেছেন তারা জানেন যে গবেষণা থেকে পণ্যতে নিয়ে যেতে বিশ-ত্রিশ বছর লেগে যেতে পারে। কাজেই সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো শিশু কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানানোর গবেষণায় বিনিয়োগ করছে তারা বুঝে শুনেই করছে। কিন্তু পাশাপাশি কিছু প্রতিষ্ঠান আমরা দেখতে পাচ্ছি যারা অদ্ভুৎ সব গবেষণার প্রস্তাব সরকারের অন্য কিছু প্রতিষ্ঠানকে দিচ্ছে এবং কখনও কখনও টাকাও পেয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে আমার কাছে সবচেয়ে আজগুবী লেগেছে একটি উকিলদের প্রতিষ্ঠান যারা নাকি সরকারকে টাকার বিনিময়ে পরামর্শ দিবে কিভাবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার ব্যবহার করার আইনগত দিকগুলো তারা ঠিক করে দিবে (আমি তাদের একজনের কাছ থেকে কফি খাওয়ার দাওয়াত পেয়েছিলাম কিন্তু ধারে কাছেও যাই নি!)। যে জিনিস মানুষ ত্রিশ বছরের আগে গণহারে ব্যবহার করবে না তার ব্যবহার আইন প্রণয়ন এ বছর করার কী দরকার আমি বুঝিনি।

বাংলাদেশে যখন প্রথম কম্পিউটার মানুষ ঘরে ঘরে কেনা শুরু করে তখন আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে অনেক আমেরিকান আর ভারতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোম্পানীর শাখায় অলিগলি ছেয়ে গিয়েছিল?

আমাদের সরকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকেই এখনকার প্রযুক্তির হুজুগগুলো বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিভাবে করদাতাদেরর অর্থ খরচ করা হবে। যারা যেকোন কারণেই হোক জানেন না কিন্তু কর্মঠ ও আন্তরিক তাদেরকে পেশাজীবি হিসেবে আমাদের উচিৎ সাহায‌্য করা। এর বাইরে যদি কেউ থেকে থাকেন যিনি বুঝেন কিন্তু অন্যদের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে করদাতাদের অর্থের অপব্যবহার করবেন তাহলে আমাদের উচিৎ তাদের বাড়া পোলাওয়ে ছাই দেয়া। এটি সত্য কথা যে আমাদের সবার সব স্তরের কর্মকর্তাদের সাথে পরিচয় নেই। কিন্তু অন্তত:পক্ষে নিজের ব্লগ, ফেসবুক বা অন্য নিয়মিত লেখার জায়গায় একটু গুছিয়ে নিজেরে চিন্তাগুলো রেখে দেয়া যায় যাতে মানুষ পিপীলিকা বা গুগোল করে খুঁজে নিতে পারে।

আমি কিন্তু হাসাহাসি করতে একদমই মানা করছি না। আমরা আমাদের রাজনীতিবিদদের নিয়ে মজা করবো না তো কি আমেরিকার রাজনীতিবিদদের নিয়ে করবো? নাগরিক হিসেবে আমরা রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রের যে বিশাল অচলায়তন তার তুলনায় এতটাই ক্ষুদ্র যে ক্ষমতাধরদের নিয়ে হাসাহাসি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমি কেবল বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবে হাসতে হাসতে কেউ যেন একটি কাজের কথাগুলিও বলে দেন।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার অনেক ভাল লাগ্লো লেখাটি, আপনার মত গুছিয়ে চিন্তা করতে বা বলতে পারতাম না কিন্তু এটা আমার সবসময়ই মনে হয়, এ ধরণের বিষয়ের নিরন্তর হাসাহাসির প্রেক্ষিতে, আমিও হাসি, ব্যাপারটা অনেক টা এরকম অনেক হাসাহাসির পর একটু দম নেয়া শেষ হলে, হাসির রেখা আস্তে আস্তে মিলিয়ে যাচ্ছে আর হঠাৎই চিন্তা আসলো, তারপর? যাই হোক আমার মনে হয়, গঠনমূলক ভাবে ভুল ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা না থাকার মাঝে সম্ভবত আলসেমি আর হতাশা কাজ করে। আলসেমি কারণ হাসা যত সহজ, ভুল স্পেসিফিকেলি ধরিয়ে সঠিক পরামর্শ দেয়া ততটাই হয়তো কঠিন, এভারেজ মানুষ তাতে যেতে চায় না, আর যারাও বা চায়, তারা পথ জানেনা না, বা হয়তো আগে চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন বা খারাপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। যদিও এর মাঝেও দু একজন লেগে থাকেন বা থাকবেন।
অফটপিক আপনার লেখার স্টাইলে জাফর ইকবাল স্যার এর প্রভাব বেশ লক্ষ্যনীয়

শেহাব এর ছবি

আমি ওনার ছাত্র।

হাসিব এর ছবি

ক্ষমতাধরদের (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাজনীতিবিদ) নিয়ে হাসাহাসি, বিদ্রূপ ঠিক আছে। তবে এই শ্রেণীই একমাত্র হাসাহাসি ও বিদ্রূপের পাত্র হয়ে উঠলে সেটা একটা আদারিং-এ রূপ নেয়। এটা বিপদজনক। এটা হাঁটু, মোল্লা এবং নিওলিবারলদের সুবিধা করে দেয়া আর কিছু করে না।

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার লেখা। খুঁজে গিয়ে রোবট রেস্টুরেন্টের খবর পড়ে আসলাম। খুবই ভালো লাগল।

এরকম আরও লিখুন।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে আপনার লেখাটা। অনেকদিন পর লিখলেন।

---মোখলেস হোসেন

অতিথি লেখক এর ছবি

কম্পিউটার ভিত্তিক তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষা, প্রয়োগ বিস্তৃতির নামে বাংলাদেশে যত কীর্তিকান্ড ঘটে তা নিয়ে আমার অভিজ্ঞতায় অন্তত হাজার খানেক দমফাটানো সত্যকাহিনী রয়েছে। এটি স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে আবশ্যক বিষয় হিসাবে যুক্ত হয়। শ্রেণি ও বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিভাজনে বাংলা ইংরেজীর দ্বিতীয় পত্রে ১০০ নম্বরের স্থলে ৫০ করা হয়েছে। ফলে, শিক্ষার্থীরা ভাষাজ্ঞানশূন্য হয়ে পাবলিক পরীক্ষায় সফলতা দেখাচ্ছে। দশ বছরের শিক্ষক(!) হিসাবে আমি অর্ধ-লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর বাস্তবজ্ঞানের বহর দেখেছি। ওইসব শিক্ষার্থীর মধ্যে বেশীরভাগ একাদশ হতে ডিগ্রি পাশ ও অনার্সকোর্সের। ক্লাস সিক্স হতে দ্বাদশ পর্যন্ত কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে পাশ করে এসেও বলে- কমপিটার, মাজারবোর্ড, হিমেল আইটি অর্থাৎ ইমেইল আইডি। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব চালুকরণ, প্রত্যেক শিক্ষককে ল্যাপটপ প্রদান, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ইত্যাদি প্রকল্প এখনও সচল। এছাড়াও, ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্র চালু আছে এবং এজন্য ২৪ ঘন্টার বিদুৎব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে, প্রতি উপজেলা ও জেলা পরিষদে আরো বৃহৎ আকারের তথ্যসেবা চালু করা হয়েছে। মূলত কিছুই নাই। প্রযুক্তির হুজুগ তুলে দেশকে পুরাপুরি রঙ্গভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। বিষয়টিকে নিয়ে সরকারী রঙ্গও কম নয়। বাংলাদেশ টি এন্ড টি বোর্ডকে লিমিটেড কোম্পানী করা হয়, সম্ভবত বিটিসিএল নাম দেওয়া হয়। এই কোম্পানী যাত্রায় চমক দেখাতে মাত্র দশ হাজার টাকায় দেশে তৈরী ল্যাপটপের ঘোষণা দেওয়া হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ল্যাপটপ বিক্রির শুভ উদ্বোধন করেন। কাকতালীয়ভাবে এই যন্ত্রের নাম দেয়া হয়েছিল- দোয়েল। ওইদিন আমি একটি মাধ্যমের স্ট্যাটাসে নোট রেখেছিলাম যে, দোয়েল উড়াল দিবে। আসলেই দোয়েল নামের নেট কিংবা নোটবুক এবং ল্যাপটপ একদিন এবং সীমিত সংখ্যায় বিক্রি করা হয়। এখন দোয়েলের অস্তিত্ব খুজে পাবেন না, কোম্পানীর নিকট জানতে চাইলে এরা প্রথমে বনের দোয়েলের কথা ভাববেন, সরকার কোম্পানী সবাই ভুলে গেছেন ডিজিটাল দোয়েলের নাম। মাঝখানের ব্যাপক দুর্নীতির কথা লিখে শেষ করা যাবে না। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নতির ধারাবাহিকতায় কোন এক রেস্টুরেন্ট রোবট-পরিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ব্যাপার নয়, কোন এক চতুর ব্যবসায়ী রেস্টুরেন্টের বিজ্ঞাপনে একটু বেশী বিনিয়োগ করেছে। কাজও হয়েছে, যেমন আমরাও এর উল্লেখ করছি। এটি বেশীদিন সার্ভিস দিতে পারবে না। দেশের উন্নতির স্মারক হিসাবে রোবটের যাত্রা দেশবাসীকে আরেকবার চিচকে প্রতারণার শিকার করেছে, আর কি? নব্বইভাগ ক্ষেত্রে বাংলা ইংরেজী অক্ষরজ্ঞানহীন জাতিকে প্রযুক্তিবিদ্যায় দক্ষ বলে বাহবা দেয়া হচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারে ঢাকা বিশ্বের শহরগুলোর মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে। আমার মন খারাপ হলে তথ্যটি একবার স্মরন করতে পারলে আধাঘন্টাব্যাপী হাসি উদ্রেক করে।
"প্রযুক্তির যু ও হুজুগ" এর লেখককে ধন্যবাদ। পাঠক হয়ে আমিও ধন্য।

ফারুকুর এর ছবি

তথ্য প্রযুক্তির গোড়া কেটে আগায় পানি ঢালার ফলে বাংলাদেশ সানি লিওন খাতে বিরাট উন্নতি করছে। আমাগ জুয়ান কালে পর্নে যে কোন ষ্টার আছে, সেইটাই জানতাম না। আর এখন সানি লিওন চিনি না কইলে পিচ্চি পুলারাও হাসে। প্রত্যেক শিক্ষককে লেপটপ দেওয়া হলে শিক্ষকের কিশোর পুলাদের ভাগ্য রওশন হবে, তবে স্বাস্থ ক্ষয় হবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার খাতকরণের জন্য ধন্যবাদ। এমন যুৎসই খাতের সন্ধান পেয়ে আরাম বোধ হচ্ছে। বাংলাদেশের নিজস্ব নামও রয়েছে। আমার দেখা শতভাগ ল্যাপটপ বাড়িতে থাকে, স্কুল-কলেজের কম্পুটার যন্ত্রগুলো পলিথিনমোড়ানো থাকে, ডামি বলেও মনে হতে পারে। এদিকে প্রিন্সপাল স্যার শিক্ষাবোর্ডর নতুন ঠিকানা নিয়ে বিব্রত। বোর্ডের ওয়েব সাইট (ওয়াইফসাইট নামও প্রচলিত) ঠিকানা মোবাইল ফোনে শুনেশুনে লিখলেন- ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট-------ডটকম। ২০১৫ সালে ফোনে প্রথম শুনেন এবং থতমত।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মূল বক্তব্যের সাথে একমত। যারা হাসাহাসি করে তাদের বড় অংশ আসলে ঠিকঠাক মতো ভুল ধরিয়ে দিয়ে কাজের কথাগুলো বলতে সক্ষম নয়। তাদের দৌড় ঐ হাসাহাসি, গালাগালি পর্যন্ত। গঠনমূলক সমালোচনা করার সক্ষমতা ও সদিচ্ছাসম্পন্ন মানুষের অভাব আছে। সেইসাথে সমালোচনাকে গ্রহন করার মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানেরও অভাব আছে।

একটি হুজুগ চক্করের পাঁচটি পর্যায় থাকে। পর্যায়গুলো হল প্রযুক্তির শৈশব, আজগুবি আশার চূড়া, আশাভঙ্গ হয়ে পপাত ধরণীতল, বুঝেশুনে ধীরে ধীরে আগানো এবং কিছু কাজের কাজ শুরু হওয়া।

বৃহৎ পর্যায়ের যে কোন কাজে একখানা গড্ডল প্রবাহ আছে - enthusiastically initiation ---> confusion ---> chaos ---> disaster ---> search for the guilty ---> punish the innocent ---> praise who hasn’t participated (এর একটা মজাদার বাংলা করতে পারলে ভালো হতো)।

যে জিনিস মানুষ ত্রিশ বছরের আগে গণহারে ব্যবহার করবে না তার ব্যবহার আইন প্রণয়ন এ বছর করার কী দরকার আমি বুঝিনি।

- ঢাকা শহরে মেট্রো রেল কবে চালু হবে সেটা একমাত্র পাক পরওয়ারদিগার জানেন, কিন্তু মেট্রো রেলে বিনা টিকিটে উঠলে কী শাস্তি দেয়া হবে সেই আইন এখন থেকে আরও কয়েক বছর আগে প্রণীত হয়ে গেছে। এই ব্যাপারে হয়তো এক-আধটা আইনী প্রতিষ্ঠান পরামর্শক হিসেবে নিয়োগও পেয়ে গেছে।

রাজনীতি ও আমলাতন্ত্রের মৌলিক চরিত্রটি যদি লুটেরা হয় তাহলে 'হার্ডওয়্যার ডাউনলোড' প্রকল্পে এখনি বছর বছর কোটি কোটি ডলার বরাদ্দ হবে। এই সংক্রান্ত ট্রেনিং, ওয়ার্কশপও নিয়মিত আয়োজিত হতে থাকবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নাশতারান এর ছবি

উচ্ছ্বাস ---> ধন্দ ---> হুলস্থূল ---> ধ্বংস ---> দোষ কার? ---> কেষ্ট ব্যাটাই চোর ---> অপাত্রে প্রশংসা

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আলতাইর এর ছবি

পান্ডবদা, মেট্রো চালু হইছে দেঁতো হাসি
(সরি, কমেন্ট টা করার লোভ সামাল দিতে পারিনাই"

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অভিনন্দন! মাত্র ৫-প্লাস বছর লেগেছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

অনেকটা আকস্মিক ভাবেই ১৯৮৭ সালে চার বন্ধু মিলে ঢাকায় একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্র চালু করে বসি। চারজনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ষ্ট্যাটিস্টিক্সে পাশ করা একজনেরই শুধু কম্পিউটার সম্পর্কে আগে থেকে কিছুটা জানা শুনা ছিল আইসিবি তে চাকুরী করা এবং তাদের উদ্যোগে পরিচালিত কিছু ট্রেনিং এর কারনে। আর বাকি সবাই আমরা সেই প্রথম কম্পিউটার দেখলাম। বুয়েট, এবং হয়ত বা বিআইটি গুলো ছাড়া দেশের সাধারন অসাধারণ নির্বিশেষে মানুষের তখন বলাই বাহুল্য, কম্পিউটার সম্পর্কে বলতে গেলে কোন ধারনাই নেই, অনেকে কম্পিউটারের নামও শোনে নি। তখনকার সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র ইত্তেফাকে এ সময় নাজিমুদ্দিন মোস্তান নামে একজন কলামিস্ট কিছু কলাম লিখতে থাকেন, যাতে বলা হতে থাকে- সারা বিশ্বে ডাটা এন্ট্রির বিপুল চাহিদা রয়েছে এবং বাংলাদেশ এ থেকে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা আয় করতে পারে। ধীরে ধীরে কিছু কিছু করে কম্পিউটার নিয়ে আগ্রহের সৃষ্টি হতে থাকে, আমাদের ব্যবসাও ধীরে ধীরে জমে উঠতে থাকে।

এ সময়ে আমেরিকা ওপি-ওয়ান নামে একটি প্রোগ্রামের আওতায় সারা বিশ্ব থেকে নাগরিকত্বের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে বসে(এটা পরবর্তীতে ডিভি লটারী নামে পরিচিতই পায়)। যথারীতি এ নিয়ে ইত্তেফাক এক বিশাল নিউজ করে বসে, সেখানেই জানানো হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে এ সব আবেদন যাচাই বাছাই করা হবে। আমাদের একজনের পরামর্শ এবং আগ্রহে আমরা ইত্তেফাকে ছোট্ট করে বিজ্ঞাপন দেই- "এখানে কম্পিউটারে ওপি-ওয়ান দরখাস্ত প্রস্তুত করা হচ্ছে"। যেদিন বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হয়, সেদিন আমাদের আপাত ছোট্ট প্রতিষ্ঠানটিতে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সকাল আট টার মধ্যে শত শত মানুষ এসে ভীড় করে, এরপর ভীড় বাড়তেই থাকে। আমাদের কোন ধারনাই ছিল না যে এতে এমন বাম্পার একটা ব্যবসার সুযোগ আছে, তাই আমাদের কোন প্রস্তুতিই ছিল না। গোটা কয়েক এক্সটি কম্পিউটার, একটি সাধারন মানের ডট ম্যাট্রিক্স প্রিন্টার এবং অপ্রস্তুত জনবল নিয়ে একটা ল্যাজে গোবরে অবস্থার সৃষ্টি হল, আমরা কিছুদিন ধরে হিমশিম খেতে থাকলাম।

এ সময়কালের পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ধীরে ধীরে কম্পিউটারের ব্যবহার শুরু হয়, বিশেষ করে মোস্তফা জব্বারের উদ্যোগে মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পে কম্পিউটারের ব্যবহার ক্রমে ক্রমে বাড়তে থাকে। পঁচানব্বই সালের দিকে লোটাস কামাল শেখ হাসিনাকে একটি কম্পিউটার উপহার দেন এবং খানিকটা অবাক হওয়ার মত ব্যাপার হল- হাসিনা অন্য অনেকের মত কম্পিউটার দেখে ঘাবড়ে গেলেন না, তিনি বেশ আগ্রহ নিয়ে কম্পিউটারের ব্যবহার শিখতে লাগলেন। অবশ্য তাঁর পুত্র তখন যুক্তরাষ্ট্রে কম্পিউটার বিষয়ে পড়াশুনা করছে, সে ব্যাপারটি এ ক্ষেত্রে একটা প্রভাব রাখতে পারে। এর কিছুদিন পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশে ইন্টারনেটের আগমন ঘটে এবং পরবর্তিতে হাসিনার দল ক্ষমতায় আসীন হয়। ৯৬ সাল থেকে শেরাটন সোনারগাঁও হোটেলে বেশ ঘটা করে কম্পিউটার মেলার আয়োজন করা হতে থাকে এবং সরকার সারম্বরে কম্পিউটার সামগ্রীর উপর থেকে সকল ধরনের ট্যাক্স প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রদান করে। একটা সাজ সাজ রব পরে যায়, কম্পিউটার আমদানি এবং বিপননের একটা ধুম পরে যায়। দেশে কম্পিউটার নিয়ে হাইপ তথা হুজুগের সৃষ্টি হয়।

হুজুগ বা হাইপে হাস্যকর অনেক কিছুই থাকে, তবে ইতিবাচকও কিছু থাকে হয়ত। আর কিছু না হোক, কিছু মানুষের এতে ব্যবসা বানিজ্য হয়, অন্য অনেকের কিছু ধান্ধাবাজিরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। কিছু মানুষ এতে বেশ জ্ঞানী হয়ে ওঠেন এবং দার্শনিকের মত মন্তব্য করে সমাজে ঠাঁই করে নিতে পারেন। তবে এতদসত্ত্বেও একটা কথা বোধ হয় বলা চলে যে, প্রযুক্তির এই অত্যাবশকীয় ধারাটায় বাংলাদেশ এখন যে অবস্থানে আছে, তা মোটেই অবজ্ঞার বিষয় নয়। আর তার পিছনে সেই সব হুজুগও একটা বড় ভূমিকা রেখেছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই হুজুগের যুগে আনতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এই দশ বছরকে "হুজুগের দশক"ও বলা যায়। দশকের শুরুতে দেশকে "ডিজিটাল বাংলাদেশ" বলে ঘোষণা ও ডিজিটাল কন্যা-পুত্রদের সঙবর্ধনা অনুষ্ঠান, ব্যানার-পোস্টার, তৈলপার্টি বাবদ শতকোটি টাকার অন্যায় শ্রাদ্ধানুষ্ঠান দেখেছি দশকের শুরুতে। একই প্রক্রিয়ায় সমুদ্র বিজয় বাবদ সমুদ্রকন্যার সঙবর্ধনায় দেশের আরো শতকোটি গচ্ছা। সমুদ্র বিজয়ের ভাওতা এখন বিস্মৃত। এখন ভিডিও কনফারেন্সে পদ্মার ইলিশ নিয়ে কথা হয় যেন ইলিশের থ্রিডিভার্সন। মাঝখানে, বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিটাল ডাকাতি হয়ে গেল। তখন প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্ঠা বিচার বিভাগ নিয়ে কথা বলেন, তথ্যমন্ত্রী ফিরে যান উনসত্তরের সেই উত্তাল দিনে, প্রযুক্তিমন্ত্রী তখন কোমায় ব্যাঙকের পাহারাদার বিড়াল মহাশয়কে বিরল উপাধি দিয়ে বাড়ি পাহারায় নিযুক্ত করা হয়। স্টকে থাকা হুজুগ দিয়ে ব্যাঙক ঘটনাকে সাংস্কৃতিক রূপ দেয়া হয় যেন, ব্যাঙক বিজয়। ডিজিডাল পত্র-কন্যারা আবার ফিরেন আইটি নিরাপত্তার নতুন প্রকল্প নিয়ে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষার খাতিরে আবার চুরি। পাশাপাশি আইটি পার্ক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের নামে হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ একনেকে একদমে পাশ হচ্ছে। এর আগে আমাদের স্মার্ট করে নেওয়া হয়েছে। স্মার্ট রাখাল গরু চরিয়ে দিয়ে, পিন্দের লুঙ্গির একদিকে গিট্টু দিয়ে তাবুর মত করে ঐ লুঙ্গিতাবুর ভেতরে বসে মোবাইল ফোনের একদেড় ইঞ্চি পর্দায় ভিডিও দেখে। এই দৃশ্য দেখে আমার মনে হয় দেশের জাতীয় পোষাক লুঙ্গিখাতের ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প গ্রহন করা জরুরী, যেমন: চাইলে লুঙ্গিকে শাড়ী, তাবু, পর্দা, বিছানা চাদরে রূপান্তর করা যায়। যাই হোক, থেমে নেই অদম্য বাংলাদেশ। যার যত ইঞ্চি আছে তা-ই নিয়ে লুঙ্গির তলে, ঘরের তলে, খাটের তলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। থ্রিজি, ফোরজি, হ্যাজীর হুজুগে মাতোয়ারা নব্বইভাগ যুবক/তরুন জানে না থ্রিজি কি জিনিস। মোবাইল পর্দায় থ্রিজি লেখার ডিসপ্লেতেই এরা গদগদ হয়ে এমবিজিবির রিচার্জে অস্থির। এই জি নিয়ে চলছে লুন্ঠনযজ্ঞ।
পান্ববর্জিত দেশে নামকরা কংস মামা নিযুক্ত আছেন, একটি গেলে আরেকটি আসে। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ এখন দেশীয় সংস্কৃতি। মথুরা-বৃন্দাবনের কৃষ্ণ এখন অন্তর শোবিজের কর্নধার, তিনি রাধা তৈরী করে দেশ-বিদেশে রপ্তানী করেন; মাঝে মাঝে রিজেক্টেড রাধাকে শিপমেন্ট করে ফেলেন। সরকারী-বেসরকারী-বিদেশী সকল শ্রেণির নেপোরা জাতিকে ইঞ্চিমত ডিসপ্লেতে মজিয়ে দই মারায় ব্যস্ত। এই মালাই কাহিনী শেষ হবে না জেনে একটি গানে নচিকেতার আবেদন-"মালসাটা দয়া করে রেখে যাক"।

শেহাব এর ছবি

কি বললেন কিছু বুঝলাম না।

মন মাঝি এর ছবি

নেপোদের দই খাওয়া দেখে বাকি উপোসী ছারপোকাদের জিহবা দিয়ে টস্‌টস্‌ করে নায়াগ্রার জলপ্রপাতের মতো লালা ঝরে, সেকথাও বলুন!

****************************************

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।