একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে এর উপস্থাপন

তানভীর এর ছবি
লিখেছেন তানভীর (তারিখ: সোম, ০২/০৭/২০১২ - ৮:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশে একাত্তরের আন্তর্জাতিক অপরাধের ট্রাইবুনাল চলছে। ট্রাইবুনালে বিচারাধীন বেশিরভাগ ব্যক্তি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য হওয়ায় এই বিচার নিয়ে জামায়াত শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী মূল অপরাধী পাকিস্তানের তৎকালীন সামরিক সরকার বা সামরিক বাহিনীর বিচার আগে না করে কেন তাদের অর্থাৎ সহযোগীদের বিচার করা হবে ইত্যাদি নানা মায়াকান্নাও তারা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এবং অনলাইনে বিভিন্ন ভাষায় ভিডিওতে প্রচার করে আসছে।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে ১ লা জুলাই জবানবন্দী দিয়েছেন। বিডিনিউজে তাঁর বক্তব্য পড়ে মোটামুটি হতাশ হয়েছি। তিনি বলেছেন-

একাত্তরের মার্চ মাসে যেসব রাজনৈতিক দল পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করছিল, তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের বিভিন্ন অংশ, পিডিপি এবং আরও কিছু দলের শাখা অন্যতম। তবে বড় দল হওয়ায় জামায়াত ও মুসলীম লীগের ভূমিকাই ছিল বেশি।

অর্থাৎ জামায়াতকে তিনি মুসলিম লীগ, পিডিপি ও অন্যান্য দল যারা পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলো তাদের সাথে এক কাতারে ফেলেছেন। কিন্তু একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা মোটেও মুসলিম লীগ বা পিডিপি বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সমতুল্য ছিলো না এবং জামায়াতে ইসলামী যে দাবী করে মূল অপরাধীদের বাদ দিয়ে তাদের বিচার করা হচ্ছে এ কথাও সত্য নয়। কারণ, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীরই অংশ ছিলো এবং একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ অর্থাৎ হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, ইত্যাদিতে তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিলো এবং এই সকল সিদ্ধান্ত জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমীর হিসেবে গোলাম আযম এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামি জামিয়াত-ই তুলাবাহ’ (IJT) এর প্রধান কমাণ্ডার হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী এবং তাদের অন্যান্য উর্ধতন নেতারাই নিয়েছিলো।

জামায়াতে ইসলামী পূর্ব পাকিস্তানের চারজন নেতা একাত্তরের সেপ্টেম্বর মাসে সামরিক সরকারে যোগদান করেছিলো। এরা যুদ্ধচলাকালীন সময়ে রাজস্ব, শিক্ষা, বাণিজ্য ও শিল্প, এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলো। অর্থাৎ একাত্তর সালে জামায়াতে ইসলামী গভর্ণর টিক্কা খানের সামরিক সরকারের অংশই ছিলো। কাজেই এখানে জামায়াতে ইসলামীর সাথে অন্য কোনো দলের তুলনা টানলে চলবে না বা তাদেরকে তৎকালীন সামরিক সরকারের ভূমিকা থেকেও আলাদা করে দেখা যাবে না।

In September 1971 the alliance between the Jama‘at and the army was made official when four members of the Jama‘at-i Islami of East Pakistan joined the military government of the province.
The four portfolios given to the Jamaat’s provincial ministers were revenue, education, commerce and industry, and local government
[সূত্রঃ The Vangaurd of the Islamic Revolution:The Jama‘at-i Islami of Pakistan (১৯৯৪), পৃঃ ১৬৯ এবং ২৫৫)]

সেপ্টেম্বর মাসে জামায়াত অফিশিয়ালি সামরিক সরকারে যোগদান করলেও এপ্রিল মাসেই গোলাম আযম সামরিক বাহিনীর কার্যক্রমকে পূর্ণ সমর্থন দেয় (সে সময়কার বিভিন্ন সংবাদপত্রে এর বিবরণ আছে) এবং মে মাসে নিজামি আর্মির সহায়তায় জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামি জামিয়াত-ই তুলাবাহ’র সদস্যদের নিয়ে আল-বদর ও আল-শামস গঠন করে- যেগুলো সম্ভবত ট্রাইবুনালেও অভিযোগ হিসেবে উত্থাপন করা হয়েছে। এখানে যেটা উল্লেখ করার মতো বিষয় তা হলো, আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনীকে পাক-বাহিনীর স্বেচ্ছাসেবক/সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপন করা হলেও এরা আদতে এবং আইনত ছিলো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অংশ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্য হিসেবে বেতনভুক্ত। একাত্তর সালের মে/জুন মাসে তৎকালীন গভর্ণর টিক্কা খান রাজাকার অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে রাজাকার বাহিনী গঠন করে এবং আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকাররা সরাসরি সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। কাজেই এদেরকে যেভাবে শুধুমাত্র 'পাকিস্তানপন্থী সংগঠন' হিসেবে বিডিনিউজের খবরে উল্লেখ করে এদের গুরুত্ব লঘু করা হয়েছে তা সত্যের বিকৃতি, কারণ এরা ছিলো আসলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীরই অংশ।

Initially, the force was under the command of local pro-Pakistani committees, but through the East Pakistan Razakar Ordinance (promulgated by General Tikka Khan on 1 June 1971) and a Ministry of Defence ordinance (promulgated 7 September 1971), Razakars were recognized as members of the Pakistan Army.
Razakars were receiving monthly salary and ration (food supplies). Major General Jamsid was head of Razakar force.
[সূত্রঃ http://pages.rediff.com/razakars--pakistan-/619605]

The Razakar force was created under the Razakar Ordinance promulgated in May 1971 by the Governor of East Pakistan, Lieutenant General Tikka Khan.
Together with the Al-Badr and Al-Shams paramilitary forces, the Razakar were under Pakistani Army command
[উইকিঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Razakars_%28Pakistan%29]

ভ্যানগার্ডে র্আর্মির সহায়তায় নিজামির আল-বদর ও আল-শামস গঠনের বিবরণঃ

in May 1971, when the IJT joined the army’s counterinsurgency campaign in East Pakistan. With the help of the army the IJT organized two paramilitary units, called al-Badr and al-Shams, to fight the Bengali guerrillas. Most of al-Badr consisted of IJT members, who also galvanized support for the operation among the Muhajir community settled in East Pakistan. Muti‘ u’ l- Rahman Nizami , the IJT’s nazim-i a‘la (supreme head or organizer) at the time, organized al-Badr and al-Shams from Dhaka University.
[সূত্রঃ The Vangaurd of the Islamic Revolution:The Jama‘at-i Islami of Pakistan (১৯৯৪), পৃঃ ৬৬)]

একাত্তরে যুদ্ধচলাকালীন সময়ে জামাতে ইসলামীর কুকর্মগুলির সিদ্ধান্ত পূর্ব পাকিস্তানের জামাতে ইসলামীর নেতারাই বিশেষ করে আমীর হিসেবে গোলাম আযমই নিয়েছিল, যা সম্পর্কে বলা আছেঃ

Its position was, in good measure, the result of decisions made by the Jama‘at-i Islami of East Pakistan, then led by Ghulam A‘ zam and Khurram Jah Murad. This branch of the Jama‘at, faced with annihilation, was thoroughly radicalized, and acted with increasing independence in doing the bidding of the military regime in Dhaka.
[সূত্রঃ The Vangaurd of the Islamic Revolution:The Jama‘at-i Islami of Pakistan (১৯৯৪), পৃঃ ১৬৯)]

এছাড়া যুদ্ধচলাকালীন সময়ে তারা ইউরোপে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলো পাকিস্তান আর্মির কার্যক্রমকে ডিফেন্ড ও ব্যাখা করতে। আরেকটি দলকে পাঠিয়েছিলো আরব বিশ্বে সমর্থন আদায় করতে (ট্রাইবুনাল নিয়ে এই কাজ তারা এখনো করে চলেছে)।

A group of Jamaat members went to Europe to explain Pakistan’s cause and defend what the Army was doing in East Pakistan; another group was sent to the Arab World, where Jamaat drew upon its considerable influence to gain support.
[সূত্রঃ The Vangaurd of the Islamic Revolution:The Jama‘at-i Islami of Pakistan (১৯৯৪), পৃঃ ১৬৯)]

একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকাকে তাই তৎকালীন সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকা থেকে আলাদা করে দেখা যাবে না এবং এদের মুসলিম লীগ বা পিডিপির কাতারে ফেলা হলে তা হবে সত্যের অপলাপ। কারণ, এরা তখন শুধু সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর সহযোগীই ছিলো না, এরা ছিলো সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর অংশ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘মূল হোতা’। মিডিয়াতে এবং যারা অপরাধীদের বিপক্ষে ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দেবেন বা আইনজীবি হিসেবে কাজ করবেন সবারই একাত্তরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা সঠিকভাবে উপস্থাপন করা উচিত এবং সে দৃষ্টিকোণ থেকেই এদের বিপক্ষে যুক্তি ও বক্তব্যগুলো তারা দেবেন সে আশা ব্যক্ত করছি।


মন্তব্য

বন্দনা এর ছবি

জামায়াতে ইসলামী যে দাবী করে মূল অপরাধীদের বাদ দিয়ে তাদের বিচার করা হচ্ছে এ কথাও সত্য নয়। কারণ, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীরই অংশ ছিলো এবং একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ অর্থাৎ হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, ইত্যাদিতে তাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ছিলো এবং এই সকল সিদ্ধান্ত জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমীর হিসেবে গোলাম আযম এবং জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামি জামিয়াত-ই তুলাবাহ’ (IJT) এর প্রধান কমাণ্ডার হিসেবে মতিউর রহমান নিজামী এবং তাদের অন্যান্য উর্ধতন নেতারাই নিয়েছিলো।

চলুক
অন্যান্য অপরাধীদের বিচার যদি না ও হয় , তাই বলে এদের বিচার হতে পারবেনা এটা কেমন যুক্তি।যার যার অপরাধের সাজা সে সে পাবে, সেটা আগে হোক আর পরে হোক, ওর বিচার আগে না করতে পারলে আমার বিচার করতে পারবানা এই জাতীয় কথা বলার সাহস ও এরা পায়।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

স্যাম এর ছবি

চলুক

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

"অর্থাৎ জামায়াতকে তিনি মুসলিম লীগ, পিডিপি ও অন্যান্য দল যারা পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন দিয়েছিলো তাদের সাথে এক কাতারে ফেলেছেন"

এই কথাটা কি ঠিক হল? আমি তো পড়লাম মুনতাসির সাহেব বলেছেনঃ

"১)একাত্তরে গোলাম আযমের পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর আল শামসের মতো বাহিনী গঠিত না হলে ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা অনেক কম হতো; বাংলাদেশ আরো আগেই বিজয়ী হতে পারত বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন।

২) তিনি বলেন, একাত্তরে যে রাজনৈতিক নেতারা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে নানাভাবে সহায্য, সহযোগিতা ও পরমর্শ দিয়েছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর তখনকার আমীর গোলাম আযম ছিলেন তাদের অন্যতম।

৩) তারা পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ না করলে হয়ত ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা কম হতো। আমরা হয়তো আরো আগেই বিজয়ী হতে পারতাম।

৪) নুরুল আমীন ও গোলাম আযম এতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিচ্ছিলেন। তাদের পরামর্শেই সে সময় শান্তি কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে গঠন করা হয় রাজাকার, আলবদর, ও আলশামস বাহিনী। এসব বাহিনীতে জামায়াতের সদস্যদেরই প্রাধান্য ছিল।

৫) সেই সময়ের সংবাদপত্রগুলোতেও গোলাম আযমের এই সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায় বলে আদালতকে জানান অধ্যাপক মুনতাসির।

"কারণ, এরা তখন শুধু সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর সহযোগীই ছিলো না, এরা ছিলো সামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর অংশ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের ‘মূল হোতা’।"

এটা আমরা সবাই জানি, এটাই ঘটনা। কিন্তু জামাতকে পাকিস্তান সরকার/সেনাবাহিনীর অংশ হিসাবে দেখিয়ে বিচার করার একটা আইনি জটিলতা থাকতে পারে। মানবতা ট্রাইবুনাল এখন যেটাকে বাংলাদেশের একটি দলের বাংলাদেশের আরেকটি দলের ওপরে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করছে, আপনি যেভাবে বলছেন সেভাবে দেখালে সেটা আন্তর্জাতিক আদালতে এখতিয়ারভুক্ত হতে যেতে পারে কি? এতে করে বর্তমান কাঠামোতে যেরকম বাংলাদেশের একাধারে বাদী, বিচারক ও প্রসিকিউটার হবার সুবিধা রয়েছে - তখন কি সেটা থাকবে? বিবেচনা করুন আমাদের বিচার বিভাগের রাজনইতিক স্বআধীনতাকে আমরা নিজেরাই প্রকাশ্য়ে প্রশ্ন করি, মিডিয়ায় যেমন জামাতের অপরাধের অনেক প্রমান আছে, ঠিক তেমনি বানংলাদেশের বিচার ব্য়াবস্থা বরতমানে যে আওয়ামীলীগের গৃহপালিত, তারও বিস্তর নজির দেখানো জামায়াত ও পাকিস্তানের পক্ষে সম্ভব।

আমি ভীত যে জামায়াতকে পাকিস্তানের অংশ হিসাবে দেখানোর প্রচেষ্টা আদতে পাকিস্তান-জামায়াতকে আমাদের এই জাতীয় ও বিশাল ম্য়ান্ডেটকে একটি হ্রস্ব আকারের (আওয়ামী) রাজনইতিক প্রতিহিংসা হিসাবে আন্তরজাতিক প্রানংগনে প্রচার করার মন্চ উপহার দেবে।

তানভীর এর ছবি

জামায়াতের নেতারা সামরিক সরকারের মন্ত্রীসভায় ছিলো, রাজাকাররা সেনাবাহিনীর অংশ ছিলো- এগুলো তো ফ্যাক্ট। ফ্যাক্ট উপস্থাপনে আইনি জটিলতা থাকবে কেন? উল্লেখ্য, পাকিস্তানে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার নামক 'স্বেচ্ছাসেবক' বাহিনী কিন্তু অনেক আগে থেকেই ছিলো। ওয়েস্ট পাকিস্তান সিভিল ডিফেন্স রুল, ১৯৬৬ তে [গুগলে 'Razakar 1966' সার্চ দিলেই ডকুমেন্ট পাবেন] যে রাজাকারের বর্ণনা দেয়া আছে, এবং টিক্কা খান ১৯৭১ সালে রাজাকার অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে যে রাজাকার বাহিনী গঠন করেছিলো তা কিন্তু এক না। পরেরটাতে রাজাকারদের সেনাবাহিনীর অংশ করা হয়েছে। কাজেই 'শান্তি কমিটি'র সাথে এদের পার্থক্য আছে। মুনতাসীর মামুনের সাক্ষ্য পড়ে মনে হয় গোলাম আজম শান্তি কমিটির মতো পাকিস্তানপন্থী কিছু সংগঠন যেমন- রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস গঠন করতে সহায়তা করেছিলো যারা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছিলো আর তাদের ভূমিকাও ছিলো মুসলিম লীগের মতো। কিন্তু পরেরগুলো ছিলো সেনাবাহিনীর অংশ এবং জামায়াতও ছিলো তখনকার সামরিক সরকারে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আগের কথা জানি না, কিন্তু পচিশে মার্চের পৈশাচিক গণহত্যার পর গো-আজম যেদিন টিক্কা খানের সাথে মিটিং করতে গেলো সেদিন থেকে জামাতে ইসলামী অন্যন্য রাজনৈতিক দল থেকে আলাদা হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বি টিম হয়ে গেছে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

রাজাকাররা পশ্চিম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবেই যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছে। অনেক জায়গায় সম্মুখযুদ্ধে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর নিয়মিত সৈন্যদের সাথে একত্রে যুদ্ধ করেছে এর অজস্র প্রমান আছে। সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার পাশাপাশি এরাই যুদ্ধকালীন খবর হতে শুরু করে আগাম সব ধরনের সংবাদ আদান প্রদানের ব্যবস্থা করে। এরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্তই শুধু ছিলোনা এরা সেনাবাহিনীর ইন্টেলিজেন্স হিসেবেও কাজ করেছে। একইসাথে এরা আল-বদর, আল-শামস এধরনের সব গ্রুপের সাথে মিলিতভাবে হত্যা,ধর্ষণ,নির্যাতন,লুন্ঠন সহ সকল ধরনের মানবতাবিরোধী কাজের সাথে যুক্ত ছিলো।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তারেক অণু এর ছবি
প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক

অমি_বন্যা এর ছবি

জামায়াত ইসলামীর মত এরকম ঘৃন্য রাজনৈতিক দলের মানবতা বিরোধী অপকর্মের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ যখন এসেছে তখন সেটাকে ভালো ভাবেই কাজে লাগানো উচিত । যারা সাক্ষ্য দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তাদের উচিৎ সকল দল মতের উরধে থেকে , কোন কিছু গোপন না করে সকল সত্য সগৌরবে জাতির সামনে তুলে ধরা।

সকল যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হতেই হবে।

রায়হান রশিদ এর ছবি

শিরোনাম প্রসঙ্গে:

বাংলাদেশে কিন্তু এখন "মানবতাবিরোধী অপরাধ" এর বিচার হচ্ছে না, ট্রাইবুনালটিও "মানবতাবিরোধী অপরাধের ট্রাইবুনাল" না। হচ্ছে "আন্তর্জাতিক অপরাধ" এর বিচার, এবং ট্রাইবুনালের নাম "আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল"। আমি জানি মন্ত্রীরা এবং অন্যান্যরা এই বিচারকে সেই থেকে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" হিসেবে অভিহিত করে যাচ্ছেন, সেখান থেকেই আসলে বিভ্রান্তির সূচনা। যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যাসহ যে কয়েক ধরণের অপরাধের বিচার হচ্ছে, তার মধ্যে "মানবতাবিরোধী অপরাধ" হল মাত্র এক জাতীয় অপরাধ - আর বিচার্য এই সব ধরণের অপরাধকে এক কথায় বলা হয় "আন্তর্জাতিক অপরাধ"। শুধু মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বললে পুরো প্রক্রিয়ার স্কোপকে অনেক সংকীর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয়। বিচার সংক্রান্ত বিভিন্ন আলোচনা এবং ডিসকোর্সে যতোটা সম্ভব সঠিক টার্মগুলো ব্যবহার করাটাই হয়তো উচিত হবে আমাদের।

ধন্যবাদ।

তানভীর এর ছবি

ধন্যবাদ রায়হান ভাই। শিরোনাম সংশোধন করলাম।

রায়হান রশিদ এর ছবি
তানভীর এর ছবি

ভ্যানগার্ডের পিডিএফ কপির লিংক পেয়েছি। ডাউনলোড করা যাবে এখান থেকে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি ঠিক বলেছেন, আপনাকে হাজার ধন‌্যবাদ

ওডিন এর ছবি

মুনতাসির মামুনের কথাবার্তা আজকাল ক্যামন ক্যামন জানি হয়ে গেছে। ভয় হয় ।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ওইযে সব আসলে নষ্টদের দখলে চলে যাচ্ছে। সবার কথা বার্তাই পালটে যাচ্ছে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।