একটি নোংরা চলচ্চিত্রঃ রিভিও – দ্য ডার্টি পিকচার

তাপস শর্মা এর ছবি
লিখেছেন তাপস শর্মা [অতিথি] (তারিখ: শনি, ২৪/১২/২০১১ - ১২:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চমকে উঠলাম। ছবির দ্বিতীয় দৃশ্যটা দেখেই। যেমন চমকে উঠেছিলাম তিলোত্তমা মজুমদারের ‘শামুকখোল’ উপন্যাসটা পড়ে। জীবনটাই একটা পরিহাস। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কি বেঁচে থাকে? একটা শূন্যতা, একটা অমলিন বোধ কিংবা একটা অলিখিত প্রত্যয়। সেই বোধ নিয়েই নির্মিত হয় একটা নোংরা মেয়ের জীবনের ভাঙা গড়ার ইতিহাস।

একটা মানুষ কি করে তার আত্মপ্রত্যয় জাগিয়ে তুলতে পারে, আবার কি করে সব কিছুর আলেখ্য হয়ে দিয়ে যেতে পারে একটা পরাবাস্তবের খতিয়ান! দেখলাম 'দ্য ডার্টি পিকচার' । কেন জানিনা বারবার তিলোত্তমা মজুমদারের 'শামুকখোল' উপন্যাসটা এসে তীব্র গতিতে আছড়ে পড়ছে। সিনেমাটার সাথে এই উপন্যাসের কোন যোগাযোগ নেই। কিন্তু সিনেমার সেই ডার্টি গার্ল এর সাথে উপন্যাসের শুভদীপের কি আশ্চর্য মিল...!! যদিও দুজনের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। শেষ বিন্দুতে গিয়ে একটা আগুন ঝড়ে.........

সিনেমার নায়িকা সিল্ক এর জীবনে এটাই শেষ পর্যন্ত সত্য হয়ে আসে, মৃত্যু। সে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছেছিল আর তারপরই জেগে উঠে অন্ধকারের শেষ বার্তা। তিলোত্তমার উপন্যাসের শুভদীপের মতোই সে যেন ভাষা হারিয়ে ফেলে। আর কিছু প্রশ্নের সামনে দাঁড়িয়ে সে নিজেই হেরে যায়। তার শেষ চিঠিটা এই রকম – “জীবনটা যখন উসাসীন হয় তখনই অনুভব করা যায় তাকে। তখন এমন এমন প্রশ্ন সামনে চলে আসে যার জবাব কোন গ্রন্থেই পাওয়া যায়না। মা দরজা খোলার পর কেন জড়িয়ে ধরল না, বুকে টেনে নিলনা। এই কথাটা কেন বুঝিনি একজন স্টারকে ভালোলাগা এবং তাকে ভালোবাসার মধ্যে অনেক পার্থক্য। যাকে তুমি লড়াই করতে শিখিয়েছিলে, সে শেষ পর্যন্ত তোমার জন্য কেন লড়াই করল না। প্রত্যেকেই কোমড়ে হাত দেওয়ার জন্য লোলুপ হয়ে থাকত, কিন্তু কেউ মাথায় হাত কেন রাখল না। নিরবতাতেও একটা ভাষা থাকে। কেননা সাইলেন্স জোন-এও কেউ না কেউ হর্ন বাজায়। কিন্তু হাততালির শব্দ শোনা কানের মধ্যে যখন গালির শব্দও আর আসেনা, তখন জীবনটা একটা খালি থিয়েটার এর মত হয়ে যায়।” যেমন বলছেন তিলোত্তমার গল্পের শুভদীপ। তিলোত্তমার উপন্যাসটা শুরু হয় এই লাইন দিয়ে – “অতএব মৃত্যুকেই মনস্থ করলাম একসময়। জীবনের পীড়ন থেকে মুক্তি পেয়ে যা কিছু সম্ভাব্য উপায়ের কথা তার স্মরণে এসেছিল তারমধ্যে মৃত্যুই ছিল সর্বশ্রেষ্ঠ এবং মহান। যদিও মৃত্যুকে একমাত্র কল্পনা দ্বারাই অনুভব করা যায়। কেন না মৃত্যুর আগমন সঙ্কেত কখনো পৌঁছলেই সেই মুহূর্তে মানুষকে আদ্যন্ত যা আলোড়িত করে, তার নাম জীবন। এমনকী মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রানী সমূহ, একেবারে কীটানুকীট পর্যন্ত এই বোধের অন্তর্গত। সকলকেই ত্রস্ত করে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা।” সিনেমার একেবারে শেষে গিয়ে মৃত সিল্ক(বিদ্যা বালান) এর চিঠি পড়ার দৃশ্যের সাথে কি অদ্ভুত মিল।

আজকের সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে দাঁড়িয়ে আমরা মেয়েদের কোন চোখে দেখি? কয়েক শতাব্দী পূর্বে মনু যা বলে গিয়েছিল তাই কি আজকের সমাজেও সত্য নয়? নারীকে কি এখনও একটা ভোগ্য পণ্য করে রাখা হচ্ছেনা? রাস্তায় একটি মেয়েকে শট স্কাট পড়ে যেতে দেখে এই সভ্য সমাজ গালমন্দ দেয়, কিন্তু রাতের বেলায় ফ্যাশান টিভিতে মিড নাইট হট দেখতে দেখতে শেষ...। যে জায়গায় দরকার সেই জায়গায়ও ওরা আছে, আবার যেখানে দরকার নেই সেখানেও আছে। বিউটি প্রোডাক্ট এর একটা এড এ সুন্দরী লাস্যময়ী একটা মেয়েকে দেখা গেল, তারপর গুটকা এবং সিগারেটের বিজ্ঞাপনেও দেখা গেলো। এবং শেষ পর্যন্ত ছেলেদের ইনার এর বিজ্ঞাপন, এমন কি হাগু করার কমোড এর বিজ্ঞাপনেও মেয়ের আবির্ভাব! মেয়েদের প্রোডাক্ট বানানোর পরও তথাকথিত শালীনতার ভেদটা আসলে কি - তার সংজ্ঞা খুঁজে যাচ্ছি? ৮০-র দশকের দক্ষিণ ভারতের নায়িকা সিল্ক স্মিতার জীবনী অবলম্বনে পরিচালক মিলন লুথরিয়ার ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ এ শেষে সেই জবাবটা কিছুটা পেলাম বলা চলে। আর তাই গোটা ছবিটাই আমার কাছে একটা প্রতিবাদই বলা চলে। সেই প্রতিবাদ এই সমাজ ব্যাবস্থার মুখে উপর। প্রতিবাদ যৌনতার তথাকথিত সংজ্ঞার উপর। তিলোত্তমা মজুমদারের শামুকখোল উপন্যাসটার প্রতিক্রিয়ায় সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার তিলোত্তমাকে ‘পশারিনী’ বলেছিলেন। কেননা উপন্যাসটাতে সরাসরি ভাবে প্রচুর সেক্স এর কথা বলা আছে। আর যেহেতু একজন মেয়ে হয়ে তিলোত্তমা এই কাজ করেছেন তাই তিনি পশারিনী! দ্য ডার্টি পিকচার – সিনেমাতেও অভিনেত্রী সিল্ক একজন পশারিনী। যদিও তার ভাষা আলাদা।

এই নোংরা ছবি (দ্য ডার্টি পিকচার) নিয়ে গত কয়েকমাস ধরেই গোটা বলিউড তোলপাড়। এর কারণ ছবিটির বিষয়বস্তু। একজন নোংরা মেয়ের জীবন কাহিনী। সে সমাজের সভ্য মানুষদের চোখে নোংরা, কিন্তু ফিল্মস্টার সেই নোংরা মেয়ের সিনেমায় তার নোংরা দৃশ্য গুলোই সেই সভ্য মানুষরাই তাদের সভ্য চোখ দিয়ে অসভ্য হয়ে দেখে বারবার। আর সে কথা সিল্ক জোর গলায় বলে সে নোংরা। সে বলে পাব্লিক দেখে বলেই আমি কাপড় খুলি...

ছবিটির বিষয় জুরেই প্রচন্ড বিতর্ক। প্রথমত যার জীবনী নিয়ে ছবিটি গড়ে উঠেছে তিনিই ছিলেন প্রচন্ড বিতর্কিত। তবে এই বিষয়টিকেই চলচ্চিত্রের ভাষায় যথার্থ রূপ দিতে পেরেছেন পরিচালক মিলন লুথরিয়া। সিল্ক এর চরিত্রে অভিনেত্রী বিদ্যা বালান অসাধারণ। এই ছবিতে তিনি একাই একশ। চরিত্রের সঠিক রসায়ন কাকে বলে তাই করে দেখিয়েছেন তিনি। আর সত্যি কথা বলতে ছবিতে অন্যান্যদের ভূমিকা তাতেই গৌন হয়ে পড়েছে।

ছবির গল্পটি মোটামোটি এই রকম- ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি ঝোঁক রেশ্মার। কিন্তু গ্রামের পরিধি তার স্বপ্নের পথে প্রথম বাধা। সে বাধা কাটিয়ে উঠতেই রেশ্মা পাড়ি জমায় শহরে। না খেয়ে থেকেও সে অভিনেত্রী হবার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সুযোগ পায়না। শেষ পর্যন্ত একটা সিনেমার নাচের দৃশ্যে কয়েক মিনিটের জন্য অভিনয় করার সুযোগ পেয়েই সে মাত করে দেয়। তার শরীরের সেই দোলা দেখার জন্য সমস্ত দর্শক হামলে পড়ে। তার শরীর এর ভাষাকে আবিস্কার করে প্রযোজক সিলভা গণেশ এবং তাকে তার ছবিতে কাজ করার অফার করে। নতুন নাম পায়। রেশ্মা হয়ে যায় সিল্ক। তারপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সুপার হিট সিমেমা। তাকে ঘিরে তৈরি হতে থাকে যাবতীয় বিতর্ক। তাকে অসভ্য, বেশ্যা, নগ্ননারী বলা শুরু হয়, তার ছবি হয়ে উঠে নোংরা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, তার সিনেমা রিলিজ করার পরই হিট হয়ে যায়... তাহলে কারা দেখে তার সিনেমা! যারা ওর নিন্দায় পঞ্চমুখ ওরাই ওর সিমেমা দেখে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সে জনপ্রিয় নায়ক সূর্যকান্ত (নাসিরুদ্দিন শাহ) এর আশ্রয় নেয়। গড়ে উঠে একটা পরকীয়া সম্পর্ক। এদিকে জ্বলতেই থাকে সিল্ক এর রঙমশাল। কারণ ডিরেক্টর বলে – “আমাকে পাব্লিককে উত্তেজিত করতে হবে, তাদের ঘুম পাড়াতে চাই না ।” এই দৃশ্যটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে যখন সিল্ক বলে – “ ফিল্ম শুধু তিনটি জিনিষের জন্য চলে – এন্টারটেনমেন্ট - এন্টারটেনমেন্ট - এন্টারটেনমেন্ট। আর আমি একটা এন্টারটেনমেন্ট।”

কিন্তু সব কিছুতেই একদিন ফাটল ধরে। সূর্যকান্তকে ছেড়ে তার ছোট ভাই চন্দ্রকান্ত এর সঙ্গে প্রেম, সিল্ক এর উত্তাল রঙিন জীবন এবং সিল্ক এর শত্রু আব্রাহাম। দীর্ঘদিন ধরে একই শরীর দেখে ক্লান্ত হয়ে পড়ে দর্শক, সেই শরীর এর জায়গায় নতুন শরীর চায়... আর সিল্ক হয়ে পড়ে বাতিল, ফ্লপ। আর তাই ভালোবাসার সন্ধান থেকে চিরবঞ্চিত সেই মেয়েটিকে যখন আব্রাহাম জিজ্ঞাসা করে ভালোবাসার কথা তখন সে বলে “পেয়ার জো বিস্তর পে লে যায়ে হ্যাঁ, পেয়ার জো নিন্দ উড়া দে নেহি ( ভালোবাসা যা বিছানায় নিয়ে যায়, হ্যাঁ; ভালোবাসা যা ঘুম উড়িয়ে দেয়, তা হয়নি)।" একটা নিরাশার কালো চাদরে ঢেকে যায় তার জীবন। শেষে আব্রাহাম এর ভালোবাসাও তার কাছে নিজের সাথে প্রতারণা বলে মনে হয়। আর সব কিছুকে পেছনে ফেলে নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে মসৃণ পথ বেয়ে আসে মৃত্যু।

ছবিটি মূলত সত্য ঘটনার উপর আধারিত। ছবির প্রমোশনে যা যা করা দরকার সবই করেছেন প্রযোজক একতা কাপুর। এমন কি পার্লামেন্টে গিয়েও প্রচার সেরেছিলেন ছবির কুশীলবরা! ডিসেম্বর এর ২ তারিখ মুক্তিপ্রাপ্ত এই চলচ্চিত্রটি এই পর্যন্ত বক্সঅফিস কালশানে বাজিমাত করে দিয়েছে। অভিনয় নিয়ে আলাদা ভাবে কিছু বলার নেই। নাসিরুদ্দিন শাহ্‌, ইমরান হাশমি, তুষার কাপুর প্রত্যেকেই দুর্দান্ত। নিজেকেই ছাপিয়ে গেছেন বিদ্যা বালান। সঙ্গীত পরিচালনায় বিশাল-শেখর, আশির দশকের ছোঁয়া লাগিয়েছেন, বিশেষ করে ‘ওলা লা লা’ গানটি বাপ্পি লাহিড়ি এবং শ্রেয়া ঘোষালের কন্ঠে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। ছবিটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিদ্যা বালান বলেছেন – “নারীকে এ ছবিতে দৃষ্টিকটুভাবে উপস্থাপন করা হয়নি৷ বরং পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা যেভাবে তাঁদের বুদ্ধি ব্যবহার করে নিজেদের অবস্থান গড়ে তুলেছেন – সেটাই দেখানো হয়েছে।”

মিলন লুথিয়া দেখাতে পেরেছেন। কাহিনিতে খুব নতুনত্ব না থাকলেও এই ছবিটিতে কিছু একটা ভাষা আছে যা বারবার ভাবায়। ভাবায় এই সমাজকে, ভাবায় এই সভ্যতাকে। আসল কিংবা নকল কি? আর সভ্যতার এই ডামাডোল সংকীর্তনে মুখের আড়ালে কাদের মুখোশ বারবার আঘাত হানে? প্রকৃত নোংরা কারা?

***

ছবি – দ্য ডার্টি পিকচার
প্রযোজক – একতা কাপুর
নির্দেশক – মিলন লুথিয়া
সঙ্গীত – বিশাল-শেখর
অভিনয় – বিদ্যা বালান, নাসিরুদ্দিন শাহ্‌, ইমরান হাশমি, তুষার কাপুর।

==========================================================

আমার শহর
ডিসেম্বর, ২৩, ২০১১।


মন্তব্য

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিন্দী মুভি এম্নিতেই কম দেখা হয়। সাম্প্রতিককালে যে কয়টা দেখছি প্রত্যেকটা মুভি দেখেই মেজাজ খারাপ হইছে। এইটাও বিশেষ সুবিধার লাগে নাই। তয় রিভিউ ভালই হইছে। কিন্তু সব কাহিনী তো কইয়া ফালাইলেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তাপস শর্মা এর ছবি

সব হিন্দি ছবি আমারও ভালো লাগেনা কবি। কিন্তু কিছু ভালো কাজও কিন্তু হয়, যেগুলি না দেখলে চলেনা। যেমন ধরেন এই সপ্তাহেই আমি পাঁচটা নতুন রিলিজ দেখেছি। এর মধ্যে মাত্র দুইটা ভালো লেগেছে। এর মধ্যে একটা ডার্টি পিকচার। আরকেটা হল - রকস্টার। বাকি গুলি এত রদ্দিমার্কা লেগেছে তা বলে লাভ নেই। দেশি বয়েজ, বডিগার্ড, লেডিস ভার্সেস রিকি বেহেল - এই হল বাকি তিনটা। কি বালছাল যে সিনেমা তা বলে পারব না। কিন্তু তবুও দেখি, এই আরকি। আমি কিছু বাদ দেই না। যা পারি সব দেখে ফেলি......... তবে সব কি আর ভালো লাগে...

* আর কাহিনী সবটা কিন্তু বলেনি। অনেকটাই বলেছি। কিন্তু এই ছবিটা দেখা যায় বিদ্যা বালানের অসাধারণ অভিনয় এবং কাহিনীর জোরে। তবে বস পরিবারের সাথে বসে না দেখাটাই বাঞ্ছনীয়। এটা কিন্তু সত্যিই প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ট্যাগ প্রাপ্ত সিনেমা।

চরম উদাস এর ছবি

বেশ ভালো লাগলো লেখাটা চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ উদাস ভাই হাসি

দ্যা রিডার এর ছবি

আসলেই, নোংরা কারা ? ভেবে দেখার বিষয় ... ভাল রিভিউ হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

ভেবে দেখেন। উত্তর পেলে আওয়াজ দিয়েন হাসি

দ্যা রিডার এর ছবি

হাসি

অবর্ণন রাইমস এর ছবি

রিভিউ ভালো লাগল। ছবিটা দেখব, এবং দেখার এই ইচ্ছা জাগানোর পুরো কৃতিত্ব আপনার লেখাটির। চলুক চলুক

আপনার লেখায় কয়েকটা হিন্দি বাক্য রয়েছে। এগুলো বুঝতে কিছুটা সমস্যা অনুভব করছি। বন্ধনীর ভেতরে বাংলা অর্থটা দিয়ে দেয়া যায় কি?

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ অবর্ণন রাইমস। দেখতে পারেন ছবিটা, আমার ভালো লেগেছে। জানিনা আপনার কেমন লাগবে। তবে এটুকু বলতে পারি - যদি একটা আলাদা দৃষ্টি নিয়ে দেখেন তাহলে ভালো লাগবে, শিওর ।

হিন্দি গুলো বাঙলায় করে দিয়েছি হাসি

মাসুম এর ছবি

ছবিটার ট্রেলার দেখেছিলাম, ভাল লাগেনি। তবে আপনার রিভিউ তেমন খারাপ লাগেনি

masum14

তাপস শর্মা এর ছবি

ওকে। ছবির ট্রেলরটাই অনেক 'র' ছিল।

আপনাকে ধন্যবাদ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ছবিটা দেখার ইচ্ছা আছে...

বেশ কয়েকটা হিন্দী বাক্য লিখেছেন পোস্টে। আমার মতো মূর্খ্যদের দিকে তাকিয়ে সেগুলো একটু বাংলায় তর্জমা করে দিতে পারতেন মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তাপস শর্মা এর ছবি

দেখতে পারেন নজরুল ভাই। আশা করি নিরাশ হবেন না। একটা ম্যাসেজ আছে সিনেমাটাতে যা ভাবায়...

দাদাগো করে দিয়েছি, হিন্দি গুলো বাঙলায় করে দিয়েছি। আসলে আমার মনে হয়েছিল অরিজিন্যালটা রাখলে ব্যাপারটা আরও স্ট্রং হবে, কিন্তু বাংলা তর্জমা করাটাও উচিৎ ছিল। করে দিয়েছি হাসি

achena এর ছবি

আপ্নার লিখাটা পড়লাম। সিনেমাটা দেখার খুব উৎ্সাহ পাছি।।।

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ achena......

দেখতে পারেন। দেখে খারাপ লাগলে কিন্তু আমার দোষ নাই দেঁতো হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বর্নণ অসাধারন, আগ্রহ জাগানিয়া। সিনেমাটি অবশ্যই দেখবো।

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ প্রৌঢ় ভাবনা। দেখে বলবেন কিন্তু কেমন লাগল হাসি

তারেক অণু এর ছবি

শামুক খোল তো একটি পাখির নাম, এর সাথে উপন্যাসের নামকরণের কারণ নিশ্চয় আছে, জানাবেন ব্যাপারটা।

তাপস শর্মা এর ছবি

যাযাবর জীবন এর বোধ কিংবা একটা প্রত্যয়হীনতার কথাই হয়তো লেখিকা বোঝাতে চেয়েছেন। উপন্যাসটা একটা ভাঙা গড়ার পরিবৃত্ত। উড়ানের আশায় গন্তব্যহীন জীবনের হদিশ। আছে ভণ্ডামির উন্মোচন। উড়ান দিতে গিয়ে ছন্দপতন হয়ে যাওয়া এবং মৃত্যুর ঠিকানায় পৌঁছে যাওয়া। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে... একটা কথা লেখিকা বলেছিলেন এই উপন্যাস নিয়ে তা বলতে পারি -

" ... আমি যেভাবে লিখেছি, যতটুকু লিখেছি, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বা কিছু আবহমানকালীন প্রবলেম... সেগুলো কখনোই শুধুমাত্র সমসাময়িক সমস্যা নয়।"

আশরাফুল কবীর এর ছবি

প্রিয় তাপস ভাই,

#সিনেমাটি দেখা হয়নি, তাই মন্তব্য করতে পারছিনা।
#একটু পর রাইফেলস স্কয়ারের মুভি প্লাসে যাচ্ছি কিনতে...পরে মন্তব্য করবো।

#আপনি লিখেছেন, ভালোতো অবশ্যই হবে।

#ভাল থাকুন সবসময়, এ কামনা.. বাঘের বাচ্চা

তাপস শর্মা এর ছবি

বস। এত ভরসা রাইখেন না দেঁতো হাসি । তবে দেখে আপনার অনুভূতিও শেয়ার করলে অনেক ভালো লাগবে...

কিনতে যাচ্ছেন মানে... এটার ডিভিডি প্রিন্ট এসেছে নাকি ? মাত্র সপ্তাহ দুএক তো হল রিলিজের। পাবেন? অবশ্য পাইরেসির কল্যাণে অবশ্য এখন সবই সহজলভ্য খাইছে

আপনিও ভালো থাকুন।

সোহেল এইচ রহমান এর ছবি

চমৎকার সমালোচনা। ধন্যবাদ।

তাপস শর্মা এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

ফারাবী এর ছবি

এই ছবির ডিভিডিপ্রিন্ট কালকেও খুঁজেছি, পাইনি। ভাইয়া, আপনার লেখনীভংগি আমার সবসময়ই ভাল লাগে, আন্তরিকতা থাকে বিষয়বস্তুতে একটা আলাদা। তবে এটা যেহেতু ফিল্ম-রিভিউ, একজন সাধারণ ছবিভুক হিসেবে আমার কাছে মনে হয়েছে ছবির সমালোচনায় বিষয়বস্তু আর অভিনয় ছাড়াও আরো অনেককিছু সমালোচকের মনোযোগের দাবিদার- পরিচালকের কাজের মূল্যায়ন, তার আগের কাজগুলোর একটা সংক্ষিপ্ত আলোচনা (যদি থেকে থাকে) এবং তার সাথে আলোচ্য ছবির তুলনা, সম্পাদনা, স্ক্রিনপ্লে- এবং আরো অনেককিছু যেগুলো সম্পর্কে চলচ্চিত্রের গুরুগম্ভীর পাঠকেরা আরো অনেক ভাল বলতে পারবেন।
সাধারণভাবে দেখলে ডিটেইলস ছাড়াও রিভিউ ভাল লেগেছে। সবসময় ভাল থাকবেন এই কামনা করি।

-----
ফারাবী

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ - ফারাবী।

আসলে চলচ্চিত্র সমালোচনাটা একেকজনের হয়তো একেক রকমের হয়ে থাকে। আসলে এই ছবিটা নিয়ে আমি রিভিও এর বাইতেও অন্য কথা বলতে চেয়েছিলাম। তবে আপনার বলা কথা গুলিরও প্রাসঙ্গিকতা আছে। তবে এটা একটা পিরয়িডিক জাতীয় ফিল্ম ।

আপনিও ভালো থাকুন হাসি

ফারাবী এর ছবি

ছবির নিমিত্তে আপনি যে আরো কিছু গুরুতর বিষয় নিয়ে কথা বলতে চেয়েছেন তা বোঝা গেছে। এবং সে প্রচেষ্টাও প্রশংসার দাবিদার। ফিল্ম রিভিউর কাঠামোতে ফরম্যাল কিছু উপাদানের অভাব বোধ করেছি বলেই মনে করিয়ে দেয়া দায়িত্ব বোধ করছি। তবে হ্যা, এটা একটা পিরিয়ডিক জাতীয় ফিল্ম বটে। কিন্তু যেহেতু সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে (নারীকে পণ্য করা ইত্যাদি), তাই হয়ত কাঠামোগত উপাদানগুলো থাকলেও মন্দ হত না।
একটা আয়রনি খেয়াল করেছেন- নারীর পণ্য করার পেছনে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের মানসিকতা নির্দেশ করে এমন একটি ছবির ট্রেলার, নাম সবকিছুতেই কিন্তু একই ফর্মুলা প্রতিফলিত। ছবিটা এখনো দেখিনি যদিও, প্রচারণায় যা বোঝা যায় আর কি।

তাপস শর্মা এর ছবি

হুম এটা অবশ্যই ঠিক যে এই ছবিটার প্রতিটি স্তরে একটা ইস্যুই সুস্পষ্ট। আপনার যদি এই সিনেমাটি নিয়ে আরও আগ্রহ থাকে তাহলে বলতে পারি যে এই চলচ্চিত্রটা কিন্তু একেবারেই একটা ফিক্সান নয়। হুবহু না হলেও এই সিনেমাটা আশির দশকের এক দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার জীবন থেকে নেওয়া। কিছু সময় পূর্বেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

ছবিটা দেখতে পারেন। আশা করি নিরাশ হবেন না।

জালিস এর ছবি

চলুক চলুক

তাপস শর্মা এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ জালিস

নিটোল এর ছবি

ছবি দেখে ফেলেছি। ভালো লেগেছে। আপনার রিভিউও ভালো লাগল।

_________________
[খোমাখাতা]

তাপস শর্মা এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ নিটোল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।