মেয়েশিশু হত্যা ও মেয়ে-ভ্রূণ হত্যা - বিভিন্ন ধর্মাচারের দৃষ্টিকোন থেকে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি
লিখেছেন প্রৌঢ় ভাবনা [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০২/০৬/২০১২ - ৬:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই একবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে শণৈ শণৈ সভ্যতার বিকাশ ঘটছে। অন্তত এ ধরণের প্রচারে আমরা পিছিয়ে নেই। অথচ এখনও এই পৃথিবীর বিভিন্ন সমাজে লিঙ্গ বৈষম্যের কারনে প্রচুর মেয়ে শিশু ও ভ্রূণ হত্যা হয়েই চলেছে। একে বলা হচ্ছে,

(১) ফিমেল ইনফ্যান্টিসাইড: উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে খুব কম বয়সী মেয়ে শিশু হত্যা করা।

(২) ফিমেল ফী'টাসাইড: আধুনিক জন্মসম্বন্ধীয় লিঙ্গ সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে নির্বাচিত গর্ভপাতের মাধ্যমে মেয়ে ভ্রূণ হত্যা করা।

একে, বিশেষভাবে নির্বাচিত লিঙ্গহত্যা বা 'জেন্ডারসাইড'ও বলা হচ্ছে।

বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন অংশে, সে পরিবর্তিত সামাজিক অবস্থান থেকেই হোক আর আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর সংস্কৃতিতেই হোক এর বিদ্যমানতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বিভিন্ন সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় সংস্কার ও ধারনা মতে লিঙ্গ বৈষম্যের কারনগুলো এরকম:

৹ পুত্র সন্তানের উপরই পারিবারিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকার নিশ্চয়তা নির্ভর করে।
৹ কোন কোন সমাজে মেয়েরা উত্তরাধিকার সূত্রে বিষয়-সম্পত্তির অধিকারী হয়না। সে ক্ষেত্রে সম্পদ রক্ষার প্রয়োজনে পুত্র সন্তান অপরিহার্য।
৹ মেয়েরা হচ্ছে পরিবারের বিদায়ী সদস্য। বিয়ের পরে তাঁরা নিজের পরিবার ত্যাগ করে স্বামীর পরিবার ভুক্ত হয়।
৹ মেয়েরা নিজ পরিবারে অবস্থান করলেও তুলনামূলক ছেলেদের থেকে কম উপার্জন করে।
৹ অনেক সমাজে মেয়ের বিবাহে যৌতুক দেবার রীতি প্রচলিত। সে ক্ষেত্রে পরিবারের সম্পদের একটি অংশ কন্যা সন্তানের জন্য বিয়োজন হয়ে যায়।
৹ পুরুষ সন্তান হলে সে ক্ষেত্রে বরং বিবাহের সময় কিছু সম্পদ পরিবারে সংযুক্ত হয়।
৹ সমাজে, একজন স্ত্রী, পুত্র সন্তানের জন্ম না দেওয়া পর্যন্ত অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও পারিবারিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়না।

শিশুর পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত লিঙ্গ বৈষম্য সুস্পষ্ট ভাবেই দৃষ্টিগোচর হয়। এই বয়স পর্যন্ত শিশুকে বেঁচে থাকার জন্য তার পিতামাতার উপরই নির্ভরশীল থাকতে হয়।

যদিও সরাসরি মেয়ে শিশু হত্যার মত ঘটনা নাও ঘটে তথাপিও পুষ্টিকর খাবার, পারিবারিক যত্ন, সুচিকিৎসা ইত্যাদি ক্ষেত্রে মেয়ে শিশু বঞ্চনার শিকার হয়।

বিভিন্ন ধর্মাচারে লিঙ্গ বৈষম্যের রূপ :

কনফুসিয়ানিজম:
প্রাচীন চৈনিক সমাজে পুত্র সন্তানের প্রতি পক্ষপাতিত্ব পরম্পরাগত ভাবেই চৈনিক মননে প্রোথিত। প্রতিটি পরিবারেই আকাঙ্খা তাঁদের প্রথম সন্তানটি যেন পুত্র হয়।

কনফুসিয়াসের মতানুসারীরা পুরুষ শিশুকে অধিকতর বাঞ্ছনীয় হিসাবে বিবেচনা করে। কারন, পুরুষ শিশুই পরবর্তিকালে পরিবারের বয়স্কদের নিরাপত্তা, প্রতিপালন ইত্যাদির নিশ্চয়তা বিধান করে। তাছাড়া পুর্বপুরুষদের প্রতি ধর্মীয় আচার, ক্রিয়াকর্মাদি সম্পাদনে পুরুষ সন্তানের আবশ্যকতাও, পুরুষ শিশুর প্রতি পক্ষপাতিত্বের একটি বড় কারন।

এ সব কারনেই প্রাচীন চৈনিক সমাজে মেয়ে শিশু হত্যা সংঘঠিত হতো।

এ সব কারন তো বটেই তাছাড়া বর্তমানে চীনে এক পরিবার এক শিশু আইনের কারনে শিশু হত্যা ও আধুনিক জন্মসম্বন্ধীয় লিঙ্গ সনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত গর্ভপাত ঘটিয়ে মেয়ে ভ্রূণ হত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সনাতন ধর্মমত: (এই লেখায় আমি একে হিন্দু ধর্মমত বা হিন্দুইজম হিসাবেই উল্লেখ করছি)

৹ গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রূণ হত্যা করা একজন পুরোহিত হত্যা করার সমান।
৹ গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রূণ হত্যা করা কারও গুরুজনকে হত্যা করার চেয়েও অধিক পাপ।
৹ যে মহিলা গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রূণ হত্যা করে সে যেন তাঁর জাত, কুল সমস্তই বিনষ্ট করে।

হিন্দু শাস্ত্রমতে গর্ভপাতকে চরম নিন্দনিয় কাজ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গর্ভ উপনিষদ অনুযায়ী, একটি আত্মা (জীব), মাতৃগর্ভে ভ্রূণ অবস্থায় থাকাকালীন শেষ মাসে তার বিগত জীবনের স্মৃতি স্মরণে আসে এবং জন্মকালীন নানাবিধ শারিরিক ও মানসীক আঘাতের ফলে সব কিছুর বিস্মরণ ঘটে।

হিন্দুধর্মে, জন্মান্তরবাদের তত্ত্বানুযায়ী মনুষ্য জীবন, জন্ম-মৃত্যু-পুনর্জন্ম, এই ধরনের একটি চক্রে আবদ্ধ। হিন্দু মননে এটি একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।

জন্মান্তরবাদ তত্ত্বকে, গর্ভপাতের বিপক্ষে দৃঢ়ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন:
৹ ভ্রূণ হত্যার মাধ্যমে জীবের ( আত্মার) গুরুত্বপূর্ণ কর্মযোগকে ব্যাহত করে তাকে ক্ষতিগ্রস্থ করা।
৹ সম্ভাব্য মনুষ্য অস্তিত্ব লাভের মাধ্যমে সৎকর্ম করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা এবং
৹ অতিসত্বর জন্মান্তরবাদ চক্রে প্রত্যাবর্তনকে বাধাগ্রস্থ করে তাঁর আধ্যাত্মিক অগ্রগতি বিলম্বিত করা।

আবার গর্ভপাতের পক্ষে সাফাই গাইতে উল্লেখ করা যেতে পারে, জন্মান্তরবাদ তত্ত্বে:
৹ আত্মা, মনুষ্যরূপ ধারণ করে বহুবার জন্মগ্রহন করে থাকে। সেক্ষেত্রে গর্ভপাতের মাধ্যমে মাত্র একটি জন্মকে নিরোধ করা হয়ে থকে।

হিন্দু বিশ্বাস মতে, সমস্ত জীবনই পুতপবিত্র কেননা সকল সৃষ্টিই হচ্ছে পরম সত্ত্বার অস্তিত্বের সুস্পস্ট প্রকাশ। তাঁদের পবিত্র হিসাবে শ্রদ্ধা করা, যত্ন করা, নিজেদের জীবনে অহিংসা ও প্রীতির অনুশীলন করা প্রয়োজন।

হিন্দু সমাজ ব্যবস্থা ও সংস্কৃতির কারনে পুত্র সন্তানের প্রতি পক্ষপাতিত্ব বিশেষ রূপ ধারণ করেছে।
৹ মাতাপিতা, বার্ধক্যে পুত্র সন্তানের উপরই নির্ভরশীল থাকেন।
৹ হিন্দু রীতিতে পিতামাতার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকর্মাদি সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার জন্য পুত্র সন্তান আবশ্যক।
৹ হিন্দু সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কন্যার বিবাহে যৌতুক প্রদান একটি আবশ্যিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। সে ক্ষেত্রে পারিবারিক সম্পদ থেকে কিছুটা বিয়োজন হয়।
৹ পুত্র সন্তান হলে যৌতুক প্রাপ্তির মাধ্যমে কিছু সম্পদ অর্জিত হয়।

হিন্দু সমাজে মেয়ে শিশু ও মেয়ে ভ্রূণ হত্যার এগুলিও বিশেষ কারণ বটে।

ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্য সরকার মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ বাবদ বৎসরান্তে কিছু অর্থ প্রদান করে মেয়ের পিতামাতাকে সমর্থন যোগায়। মেয়ের ২০ বৎসর বয়সকালে এককালীন কিছু অর্থ প্রদান করে যাতে এই অর্থ দ্বারা মেয়ের পিতামাতা যৌতুকের দাবি মেটাতে পারেন অথবা মেয়ের অধিকতর শিক্ষার প্রয়োজনে ব্যয় করতে পারেন।

ইসলাম:

ইসলাম ধর্মমতে মেয়ে শিশু হতা ও ভ্রূণ হত্যা মহাপাপ।

ইসলাম-পূর্ব আরব সমাজে নারীরা ছিল খুবই অবহেলিত। তঁদেরকে অত্যন্ত নিকৃষ্ট জ্ঞান করা হতো। সে সময়ে আরব সমাজে মেয়ে শিশু হত্যা প্রবণতা ছিল অত্যন্ত প্রকট।

কুরআন আবির্ভাবের পর আরবে মেয়ে শিশু হত্যাকে মহাপাপ হিসাবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এবং একে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হত্যার সমান বিবেচনা করা হয়।

কুরআনের কিছু আয়াতের উল্লেখ করে তদানিন্তন সমাজে মেয়ে শিশু হত্যা প্রবণতা রোধের চেষ্টা করা হয়েছে।

"যখন সদ্যপ্রসুত মেয়েটি জিজ্ঞাসিত হবে, কোন অপরাধে তাকে জীবন্ত কবরস্থ করে হত্যা করা হয়েছিল" (সুরা - আত তাকওয়ীর, আয়াত: ৮-৯)।

"তোমরা, তোমাদের সন্তানদের কখনও দারিদ্রের ভয়ে হত্যা করোনা, আমি যেমন তাদের রেযেক দান করি তেমনি তোমাদেরও কেবল আমিই রেযেক দান করি। রেযেকের ভয়ে তাদেরকে হত্যা করা অবশ্যই মহাপাপ।" ( সুরা - বনি ইসরাইল, আয়াত:৩১ )

বর্তমানে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সামাজিক লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে এবং ফতোয়া অনুশীলন ও এর কার্যকর প্রয়োগের কারনেও মেয়ে শিশু হত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের একটি বৃহৎ অংশে এখনও নারী স্বাধীনতা ও নারী অধিকার অনুপস্থিত।

শিখ ধর্মমত:

শিখ ধর্মমতে ভ্রূণ হত্যা নিষিদ্ধ। একে পাপ বলে গণ্য করা হয়। যেহেতু এই ধর্মমতে ঈশ্বর সব কিছুই সৃষ্টি করেন এবং ভ্রূণ সৃষ্টিও ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই ঘটে। ঈশ্বরের সৃষ্টি ধ্বংস করা পাপের কাজ।

শিখ ধর্মমত, একটি অত্যন্ত লিঙ্গ নিরপেক্ষ ধর্মমত। সেখানে নরনারীর সমতা বিধানের কথা বলা হয়েছে।

তারপরও ভারতের বিভিন্ন শুমারি থেকে বিষ্ময়কর ভাবে জানা যায় যে শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে ছেলে শিশুর উপস্থতি মেয়ে শিশুর তুলনায় অনেক বেশী।

প্রচলিত আচার-ব্যবহার থেকে সুস্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, শিখ মানসিকতা, ছেলে সন্তানের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। শিখ সমাজে, পুত্র সন্তান ও তাঁদের পিতামাতকে অধিকতর মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে।

বর্তমানে, শিখ ধর্মীয় সংগঠন 'আকাল তখত' এর পক্ষ থেকে নরনারীর সমতা বিধানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আধুনিক জন্মসম্বন্ধীয় লিঙ্গ সনাক্তকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত গর্ভপাত ঘটিয়ে মেয়ে-ভ্রূণ হত্যা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়ছে।

বৌদ্ধ ধর্মমত:

এই ধর্মমত, গর্ভপাত বা ভ্রূণ হত্যাকে অনুমোদন করেনা। কেননা এটা হচ্ছে, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে জীবন নাশ করা।

বৌদ্ধের শিক্ষামতে হত্যার সংজ্ঞা এইরূপ:

(১) শুধুমাত্র তারই হত্যা হতে পারে যার জীবন আছে।
(২) হত্যাকারীকে জানতে হবে যে এটি একটি জীবিত সত্তা।
(৩) অবশ্যই হত্যার অভিপ্রায় থাকতে হবে।
(৪) অবশ্যই সেখানে হত্যা প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
(৫) পরিণতিতে জীবিত সত্তাটিকে অবশ্যই মরতে হবে।

এবার দেখা যাক গর্ভপাত কিভাবে হত্যা হিসাবে গণ্য হতে পারে।

(১) যখনই গর্ভে ভ্রূণ উৎপন্ন হলো তখনই একটি জীবিত সত্তার অস্তিত্ব সৃষ্টি হলো। (১ম শর্ত পূরণ হলো)।
(২) কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মহিলাটি গর্ভধারণের উপলব্ধি করতে পারে। (এটা ২য় শর্ত পূরণ করে)।
(৩) মহিলাটি যদি গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সে হত্যার উদ্দেশ্য লালন করে। (৩য় শর্ত পূরণ হলো)।
(৪) যখন মহিলাটি গর্ভপাত ঘটান তখনই তিনি হত্যা প্রচেষ্টায় সম্পৃক্ত হন। ( ৪র্থ শর্ত পূরণ হলো)।
(৫) শেষপর্যন্ত গর্ভপাত ঘটানোর কারনে জীব-সত্তাটির মৃত্যু ঘটে। এটা ৫ম শর্তটি পূরণ করলো )।

বৌদ্ধ ধর্মেও মানব জীবন, জন্ম-মৃত্যু-পুনর্জন্ম চক্রে আবদ্ধ। এখানেও কর্মযোগের কথা বলা হয়েছে। হিন্দু ধর্মের মতো, ভ্রূণ হত্যায় জীবের কর্মযোগে ব্যাঘাত ঘটে ফলে জীবের নির্বান প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কেউ কেউ আবার একে একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় হিসাবে দেখতে চান।
যেহেতু বৌদ্ধদের সমস্ত কর্মকান্ডের দায় তাঁদের ব্যক্তিগত দায়িত্ববোধের আওতাভুক্ত এবং এর পরিণতির দায়ও তাঁদেরই বহন করতে হয় তাই গর্ভপাতের বিষয়টিকেও ব্যক্তিগত নীতিবোধের আওতাধীন মনে করা হয়।

ইদানিং জাপানে গর্ভপাতের মাধ্যমে ভ্রূণ হত্যার হার ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটিকে বহুল প্রচলিত একটি জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি হিসাবেই গণ্য করা হচ্ছে। তাই জাপানি বৌদ্ধরা গর্ভপাতকে ধর্মের সাথে সংগতিপূর্ণ করার লক্ষ্যে পন্থা নির্ণয় করেছে। তাঁরা, শিশু ও পথভ্রষ্টদের রক্ষাকর্তা প্রভু 'জিজো'র প্রতি এক প্রার্থনায় তাদেরকে উৎসর্গ করেন। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে, পুনর্জন্ম চক্রে এই শিশুটির পুনরায় জন্মগ্রহণ পর্যন্ত প্রভু 'জিজো' শিশুটির তত্বাবধান করবেন।

গর্ভপাতজনিত কারণে জন্মগ্রহণে ব্যর্থ শিশুদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে 'মাইজুকোকুয়ো' নামে এক ধরনের স্মরণ অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

এই ধর্মাচারটি জাপানি লোকজ ধর্ম, শিনটো ধর্ম এমনকি জাপানি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও প্রচলিত।

জুডা ধর্মমত:

জুডা ধর্মে ভ্রূণ হত্যা নিষিদ্ধ।

৹ ভ্রূণ হত্যা, কিছুটা হলেও ঈশ্বরের প্রতিরূপ ধ্বংসের নামান্তর।
৹ ভ্রূণ হত্যা, ঈশ্বরের, পৃথিবীকে বসতিপূর্ণ করার ইচ্ছাকেই বাধাগ্রস্থ করে।
৹ ভ্রূণ হত্যা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ভাবে ঈশ্বরের সৃষ্টিকেই ধ্বংসের নামান্তর।
৹ ভ্রূণ হত্যা, কোন জীবসত্তাকেই বিনষ্ট করা।
৹ ভ্রূণ হত্যা, একটি মারাত্মক অযৌক্তিক আঘাত সংগঠন করা।

"যে কেউ একটি জীবন বিনষ্ট করে, সে যেন সমস্ত পৃথিবী ধ্বংস করে।
যে কেউ একটি জীবন রক্ষা করে, সে যেন সমস্ত বিশ্বব্রহ্মান্ড রক্ষা করে।" (মিসনাহ - স্যেন-হেড্রিন: ৪-৫)

চীন, ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, আলজিরিয়া, মিসর, জর্ডান, লিবিয়া, মরক্কো, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, তুরস্ক, আলবানিয়া, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান প্রভৃতি দেশে কম বেশী মেয়ে শিশু হত্যা ও মেয়ে-ভ্রূণ হত্যার ধারনা পাওয়া যায়।


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অরফিয়াস এর ছবি

ভারতে ভ্রুণ হত্যার পাশাপাশি কম বয়সী মেয়ে শিশুকে (১/২ বছর বয়স অথবা জন্মের পরে)দুধের মাঝে ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করে কিংবা কাঁচের গুড়ো খাইয়ে হত্যা করা হয়|

এছাড়াও বিভিন্নভাবে মেয়ে শিশু হত্যা অব্যাহত আছে।

পাকিস্থানের কথা বলার মতো মানসিকতা নেই, এইদেশে যত ধরনের উপায় আছে তার সবই মেয়েদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়|

কিন্তু কথা হচ্ছে, ধর্মগুলো প্রায় সব ক্ষেত্রেই নারীদের দ্বিতীয় শ্রেনীর মানুষ বলে গণ্য করে, সেই ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে আর ভালো কি আশা করা যায় এই ব্যাপারে?

তবে মনে হয় সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনাটা হলে সেখানে ধর্মের অবস্থানটাও পরিষ্কার হতো, একই সাথে অন্যান্য বিষয়গুলোও চলে আসতো। লেখাটা বিস্তারিত হতো বিষয়ের দিক থেকে এবং আলোচনার দিক থেকেও|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মরুদ্যান এর ছবি

একতরফা ধর্মকে দোষারোপ করে লাভ নেই। এর সাথে সামাজিক ও পারিবারিক মানসিকতাও জড়িত, অনেক সময় উচ্চ শিক্ষাও সে মানসিকতাকে পরিবর্তন করতে পারেনা। ২ সপ্তাহ আগের ঘটনা বলি।

ভারতে আমাদের এক মামা আছেন, আপন মামা না হলেও উনি আপন মামার চেয়ে কম না। ওনার ছেলের ঘরে নাতনি হয়েছে, বাবুর বাবা মা দাদা দাদী, আমরা সবাই খুব খুশি। কিন্তু নানী দেখতেও আসেনি হাসপাতালে কারণ তার অনেক আশা ছিল মেয়ের ঘরে একটা ছেলে হবে (তার ২ টা মেয়ে, কোন ছেলে নাই।)। এ ধরনের বিদ্বেষের জন্য কি শুধু ধর্ম দায়ী?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অরফিয়াস এর ছবি

আমি একতরফা তো ধর্মকে দোষ দিচ্ছিনা| আমি বলেছি এই বিষয়টি শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে যাচাই/আলোচনা করতে এলে অনেকগুলো জিনিস বাদ যায় এবং আলোচনার পরিধিও সীমিত হয়ে যায়| তাই আমি সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করতে বলেছি যাতে তার মধ্যেই পারিবারিক, ধর্মীয় এই দিকগুলো উঠে আসে|

আর এখানে যেহেতু শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে তাই আমি ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছি| এখানে লেখক যদি মেয়ে শিশু কিংবা ভ্রুণ হত্যার বিষয়টিতে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ এবং এর প্রভাবকে আলাদাভাবে নিয়ামক হিসেবে তুলে ধরেন তাহলে ধর্মকে সরাসরি প্রশ্ন করাটাই সমীচীন মনে করছি|

আমার দাদু কোনদিনই মেয়ে বাড়ি থাকতে চাননা ঘুরতে এলে, তারা ছেলের বাড়িতেই থাকেন| দাদু মারা যাবার পরে এখন দিদা নিজেও একই পথের অনুসরণ করে চলেছেন একজন নারী হয়েও| নারীরা যদি নারীদের অবমাননা না কমাতে পারে এরকম সাধারণ স্তরগুলো থেকে তাহলে কি করে আশা করবো যে এই হত্যা বন্ধ হবে?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দুর্দান্ত এর ছবি

"ইসলাম-পূর্ব আরব সমাজে নারীরা ছিল খুবই অবহেলিত। তঁদেরকে অত্যন্ত নিকৃষ্ট জ্ঞান করা হতো। সে সময়ে আরব সমাজে মেয়ে শিশু হত্যা প্রবণতা ছিল অত্যন্ত প্রকট।"

এই বিষয়ে অনৈসলামিক ও অনৌপনিবেশিক কোন সুত্র দিতে পারেন? মানে মোহাম্মদের প্রথমা স্ত্রী বা মোহাম্মদের প্রধান প্রতিদ্বন্দী আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দ - এদেরকে নারীকে অবহেলা করার মত সমাজের প্রতিনিধি বলে মনে হয় না।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মুহাম্মদের প্রথমা স্ত্রী 'খাদিজা বিনতে খুয়ালিদ' ছিলেন, তৎকালীন একটি প্রভাবশালী আরবীয় গোত্র বনু আসাদের একজন নেতৃস্থানীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, খুয়ালীদ ইবনে আসাদের কন্যা। পিতার মৃত্যুর পর তিনি অনেক ধন-সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন এবং পরবর্তিতে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ীও হয়েছিলেন। ইসলাম পূর্ব সময়ে, ধর্মবিশ্বাসে তিনি ছিলেন আব্রাহামের অনুসারী।
'হিনদ বিনতে উতবা'ও তদানিন্তন আরবের প্রভাবশালী কোরাইশ গোত্রের একটি প্রতাপশালী পরিবারেই জন্মেছিলেন। জন্মসূত্রেই তাঁরা দুজনই সাধারন আরবীয় নারীদের তুলনায় পৃথক ছিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতেই দেখুন না। আমাদের দেশে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী দু'জনই নারী। সেক্ষেত্রে কি এটা ধরে নেওয়া যাবে যে আমাদের দেশর নারীরা অবহেলিত নন।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

Jawad

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার উদ্দেশ্যটা সাধু, তবে শিরোনামেই ঘেঁটে গেছে। "ধর্মাচার" জিনিসটা খুব প্যাঁচালো - আপনার লেখায় আপনি যে নিয়মকানুনের উদ্ধৃতিগুলো দিচ্ছেন, সেগুলো তো ধর্মগ্রন্থ অর্থাৎ শাস্ত্র থেকে। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো শাস্ত্র মানে না, তারা মানে লোকাচার। এবং সেটাকে তালিকাবদ্ধ করা বেশ কঠিন। এবার আপনি শিরোনামে "ধর্মাচার" বলে একটা ককটেল বানাতে চেয়েছেন, কিন্তু লেখায় মূলত ধর্মগ্রন্থের কথাবার্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছেন।

আপনি "বৌদ্ধ ধর্মমতে" বলেছেন কিন্তু রেফারেন্স দেন নি, ঠিক কোন বইয়ের কথা আপনি বলছেন। বা ধরেন হিন্দু মতের কথা, ওই সংক্রান্ত প্রত্যেকটা কথাই কি কেবল গর্ভ উপনিষদ থেকেই পাওয়া?

তা আমার মূল বক্তব্য হচ্ছে, ধর্মগ্রন্থ কয়জন পড়ে, বোঝেই বা কয়জন? কয়টা হিন্দু বেদ-উপনিষদ পড়েছে দেখেন দেখি গুণে? পশ্চিমবঙ্গে তো গীতাই পড়ে না অধিকাংশ লোক। এই অবস্থায় বই থেকে কোট করে আপনি লোকেদের মনে ভ্রুণহত্যা সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণার প্রায় কোনো পরিচিতিই পাবেন না।

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক সহমত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

সৌরভ কবীর

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার আলোচনা শুভ। কিন্তু প্রয়োজনীয়তা কম বলে মনে হল। মানে, ধর্মাচার ইত্যাদি বিষয়ে নির্দোষ লেখা হিসেবে এটা ঠিক আছে। কিন্তু বাস্তবে এইসব উক্তি/উদ্ধৃতিগুলো ধর্মাচারকে মহান করে তোলে না। আর প্রসঙ্গত, ধর্মাচারে নারী শিশু ভ্রুণ হত্যার নিয়ম থাকলেই কি সে গ্রহনযোগ্য হত!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

ধর্মই সকল অধর্মের মূল!

মেয়েশিশু হত্যা ও মেয়ে-ভ্রূণ হত্যার কারনে কিন্তু জনসংখ্যার অনুপাতে ব্যাপক তারতম্য হয়। অমর্ত্য সেন এর ব্যাখ্যা করেছেন- 'মিসিং ওমেন' নামে। তার মতে, ভারতে মিসিং ওমেনের সংখ্যা ১০০ মিলিযন ছাড়িয়ে গেছে। অর্থ্যাৎ, মোট জনসংখ্যার হিসেবেএদের থাকার কথা ছিল কিন্তু এখন নেই- তারা মিসিং। জনসংখ্যার তারতম্য দেখা যায়, দেখা দেয় নানা ভারসাম্যহীনতা- চীনে একজন নারীর বিপরীতে পুরুষ সংখ্যা সম্ভবত ২২! আর মেয়েশিশু হত্যা ও মেয়ে-ভ্রূণ হত্যার আছে নানা কৌশল। এবর্শনেরও আছে নানা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। কিন্তু শিশুটি ভূমিষ্ঠ হবার পর- মুখে ধান কিংবা লবন দিয়ে হত্যা করা খুবই নৃশংস। ভারতেরএক নারীর অভিজ্ঞতা জেনেছিলাম- ৮ বছরে তাকে ৬ বার এবর্শন করানো হয়েছিল। কারন প্রতিবাই ভ্রূণটি ছীল একটি মেয়েশিশুর।

মেয়েশিশু ও ভ্রূণ হত্যা আসলে শ্রেনী-ধর্ম-বর্ণ- শিক্ষিতের হার সব কিছু ছাড়িয়ে পিতৃতান্ত্রিক বৈরিতাকে প্রমোট করে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি 'মিসিং উইমেন'এর প্রসঙ্গটা এনে ভালো করেছেন, কিন্তু আপনার দেওয়া তথ্যগুলোয় সমস্যা আছে। বিশেষ করে, "চীনে একজন নারীর বিপরীতে পুরুষ সংখ্যা সম্ভবত ২২" এই অসম্ভব কথাটা লিখতে কি আপনারই চোখে লাগল না!

অমর্ত্য সেনের ওই কথাটা ভারত না, গোটা এশিয়ার হিসাবে ছিল, ১৯৯০ সালে।

ভারতের জনসংখ্যা এখন ১২১ কোটি মানে ১.২ বিলিয়ন। চীনের ১৩৭ কোটি।

ভারতের ছেলে:মেয়ে সেক্স রেশিও ১.১৩:১ ধরলে (অ্যাডাল্ট নয় কেবল এমন বাচ্চাদের মধ্যে), প্রতি ১০০ জনে ৫ জন মেয়ে মিসিং। তাহলে মোট জনসংখ্যায় হয় ৭০ মিলিয়ন মেয়ে।
চীনে ১.১৭:১ ধরলে, হয় ১০০ মিলিয়ন মেয়ে মিসিং।

উনি ১৯৯০ সালে হিসেবটা করেছিলেন, তখন জনসংখ্যা দুটো দেশেরই অনেকটা কম ছিল, মিলেজুলে ১০০ ছাড়িয়েছিল।

এবং হ্যা, চীনে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের ধরলে, একজন মেয়ে পিছু তাহলে ১.১৭ জন ছেলে। প্রাপ্তবয়স্ক ধরলে আরেকটু কমই হবে। আপনার ২২জনের কথাটা নেহাতই বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। অবশ্য এটাই অনেক অসাম্য।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ধর্মই সকল অধর্মের মূল!

ঝেড়ো মন্তব্য (সুইপিং স্টেটমেন্ট)।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
আমার লেখায় কোন ধর্মমতকে মহিমান্বিত বা খর্ব, কোনটিই করবার অভিপ্রায় আমার ছিলনা। আমি বলতে চেয়েছি , পৃথিবীর মানুষের অধিকাংশই জন্মসূত্রেই কোন না কোন ধর্মদর্শনের অনুসারী, তা সে প্রাত্যহিক জীবনে প্র্যাকটিস না করলেও। সারা পৃথিবীতে নারী অধিকার নিয়ে এত কাজ হচ্ছে, অথচ তাঁদেরকে আমরা, মানুষ হিসাবে মর্যাদা দিতে পারছিনা। পৃথিবী বিভিন্ন অংশে এই মেয়ে শিশু হত্যা, মেয়ে-ভ্রূণ হত্যা আমাকে বড়ই পীড়িত করে। আমার লেখায় হয়তো আমি আমার মনোভাবটা তুলে ধরতে পারিনি, সেটা আমারই ব্যর্থতা, আমি দুঃখিত।
@ অনার্য সঙ্গীত, দু'দিন আগে এরকম একটি ঘটনা আমার পরিচিত একটি পরিবারে ঘটেছে। জানার পরে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছিলাম। তা থেকেই এই লেখাটি।
আবারও ধন্যবাদ সকলকে।

শিশিরকণা এর ছবি

লক্ষ্য করলাম, প্রায় সব ধর্মগুলোতেই ভ্রুণ হত্যার ব্যাপারে বলা হয়েছে যে নারী গর্ভপাতের উদ্যোগ নিল সে অপরাধী। অনেক সময় নারীকে বাধ্য করা হয় বা তার অজ্ঞাতেই গর্ভপাত করানো হয়। গর্ভপাতের দায় কেবল গর্ভধারিনীর উপর চাপানোটা অন্যায়।

লেখার সারমর্ম দাড়াচ্ছে, সব ধর্মেই বলা হচ্ছে মেয়ে শিশু/ ভ্রুণ হত্যা পাপ, কিন্তু লোকাচারের কারণেই এই পাপ প্রথা চালু থাকছে। এখানে ধর্মের চেয়ে সামাজিক প্রথার অপভূমিকা বেশি শক্তিশালী। মাতৃতান্ত্রিক সমাজ, যেমন উপজাতি কিছু সমাজে কি এইরকম কোন চল আছে? যতদিন মেয়েদেরকে বিভিন্নভাবে ব্যাবহারযোগ্য মাংসপিন্ড মাত্র মনে করার মানসিকতা চালু থাকবে ততদিন কোন কিছুই বদলাবে না।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
এখানেও সেই একই মানসিকতা কাজ করে। অধিকাংশ সমাজে একটি মেয়ের বলাৎকার হলে তার দায়, সমাজ, সেই মেয়েটির উপরই চাপায়। আমি, আমার 'পুরাণকথা' সিরিজটিতে মাতৃতান্ত্রিক সমাজের কিছু চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

কৌস্তুভ এর ছবি

অফটপিক: আপনার ছেলে তো বোধহয় আমার (প্রাক্তন) স্টেট ছেড়ে অন্যত্র রওনা দিল, তার সবকিছু ঠিকঠাক?

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

জী, নর্থওয়েষ্টার্ন, শিকাগো যাচ্ছে, পিএইচডি করতে। সে থার্ড ইয়ারটা আপনার বর্তমান শহর, লন্ডনের এলএসই তে করেছিল। আপনার 'চরৈবেতি' পড়ে বেশ নস্টালজিক হয়ে উঠেছিল। আমার ছেলের ইচ্ছা, সে শিক্ষকতা পেশায় লন্ডনেই থিতু হতে চায়। এখনতো বাংলাদেশেই আছে। বাপ-বেটায় আপনার লেখাটার পোস্ট-মর্টেম করেছি।
ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ বেশ। তাকে আমার অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা জানাবেন। হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সুভাবিত পোষ্ট।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অশেষ ধন্যবাদ।
সুস্থ থাকুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।