সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলেরা!

যূথচারী এর ছবি
লিখেছেন যূথচারী (তারিখ: শুক্র, ১৭/১০/২০০৮ - ১১:৩৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছবি:: ভিতরগড় দুর্গছবি:: ভিতরগড় দুর্গ

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে একসময় আমি কাজ করতাম। তার সংগঠন ঐতিহ্য-অন্বেষণের সংবিধান রচনা থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রেশন, প্রজেক্ট প্রোপোজাল তৈরি এবং তারপর এর উদ্যোগে হওয়া নানা কাজের সাথে আমি খুব ঘনিষ্ঠভাবেই যুক্ত ছিলাম। সুতরাং সেই সংগঠনের ফেসবুক গ্রুপ (Amra Puratatvik (We are Archaeologist, http://www.facebook.com/group.php?gid=23497564025) যখন একের পর এক বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন করতে থাকে তখন সত্যিই দুঃখ লাগে।

১.
ভিতরগড় দুর্গের ভিতরে যে স্থাপনা রয়েছে এই বিষয়টি বহু বছর ধরেই বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানেন, এই বিষয়ে লেখালেখি আমার জানামতে সত্তরের দশক থেকেই শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে আকামো যাকারিয়া তার "বাঙলাদেশের প্রত্নসম্পদ" বইয়েও ব্যাপারটি চিত্রসহ উল্লেখ করেছেন। সুতরাং নতুন করে এই প্রত্নস্থানের স্থাপনা আবিষ্কার করার কিছু নেই। কিন্তু রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে "Good news. A great discovery at archaeological site Bhitargarh. Ask questions to know more' এবং "Recently an architectural complex is discovered in Bhitargarh by archaeologist Morshed Rayhan" তথ্যগুলো আমাকে বিভ্রান্ত করে। যারা বিষয়গুলো জানেন না, তারা যে বিভ্রান্ত হবেন, এটা তো স্বাভাবিক। আর সে কারণেই ওই পাতায় রীতিমতো অভিনন্দন জানিয়েও বার্তা এসেছে।


আর সিলেটের জৈন্তাপুরের পাথর বিষয়ে যে বক্তব্য ওই গ্রুপে দেয়া হয়েছে, ওই বিষয়ে অধ্যাপক এবিএম এনায়েত হোসেন, পাভেল পার্থ এবং আমি যে লেখালেখিগুলো করেছি, সেগুলো একটু পড়ে নিলে ভালো হতো। কারণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন প্রত্নতাত্ত্বিক (অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক কামরুল আহসান এবং সহকারী অধ্যাপক বুলবুল আহমেদ) জৈন্তাপুর নিয়ে যে লেখাটি লিখেছেন, সেটি শুধু বাসস্টান্ডের ধারের কয়েকটি পাথর নিয়ে। আমাদের লেখাগুলোতে আমরা দেখিয়েছি, এমন আরো শত শত পাথর আমরা এই অঞ্চলে খুঁজে পেয়েছি এবং সেগুলোর ভিন্ন ব্যবহারিক দিক-ও দেখা যাচ্ছে। সুতরাং শুধু বাসস্টান্ডের কয়েকটি পাথর দেখে, তিনটি দূরবর্তী সম্ভাবনাকে এক মনে করে যারা এগুলোকে মেগালিথিক বারিয়ালস বলছেন, তাদের সাথে আমরা একমত হতে পারিনি। এইসব তাত্ত্বিক বিতর্ক আমরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবেই করছি, ব্লগে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। কিন্তু পপুলার মিডিয়াতে অংশগ্রহণের সুযোগে গণবার্তা পাঠিয়ে এটিকে একটি মেগালিথিক বারিয়াল বলা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার সামিল (There is an important megalithic site in Jaintapur in Sylhet region, Bangladesh. Lot of Megalithic burial are found.)। এবং যিনি এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন তিনি আবার সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের সংগঠন ঐতিহ্য অন্বেষণের প্রতিনিধি।

ফেসবুক গ্রুপেই আমি ব্যাপারগুলো নিয়ে লিখেছি, এই ব্লগে আবারো লেখার কারণ, বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্ন সময়ে যেসব বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেয়া হচ্ছে, সেগুলোর সাথে যে কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক-ও কখনো কখনো যুক্ত থাকেন সেই বিষয়টি জানানো। বিশেষ করে এমন একটি সংগঠন ও ব্যক্তির নামে বিষয়গুলো চালানো হচ্ছে, যে ব্যক্তি এবং সংগঠন বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বে একটি নতুন দরজা উন্মোচন করেছেন।


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আসলে কেউ না কেউ আলামত গুলা নিয়া মাঠে না নামা পর্যন্ত এইরকম নানান কিছু চলতেই থাকবো। কারো না কারো মহিষ তাড়াইয়া মাঠে নামা লাগবো...এই আর কি...



অজ্ঞাতবাস

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বেশি বেশি জায়গায় বলতে হবে । ঠিকাছে ।

রণদীপম বসু এর ছবি

আসলেই তাই। আমরা যারা প্রত্নতত্ত্বের প'ও বুঝি না, তাদের জন্য বিভ্রান্তিকর বৈ কি ! বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন কমিউনিটি ব্লগেও লেখা উচিৎ।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।