বাজে মৃদঙ্গ ভাদ্রের ঐ দিকে দিকে দিগন্তরে…নীরস ধরা সরস হলো কাহার জাদু মন্তরে !!

দৃশা এর ছবি
লিখেছেন দৃশা (তারিখ: শুক্র, ২৪/০৮/২০০৭ - ১:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(সংবিধিবদ্ধ সতর্কিকরণঃ ইহা একটি এবস্ট্রাক্ট আত্মকথন। পড়িলে বিরক্তি উদ্রেকের সম্ভাবনা আছে।)

আজ ভাদ্র মাসের ৯ই তারিখ। অথচ বাইরে তাকালে সেটা কে বলবে? ঝুম বৃষ্টি !!! তবে অবাক হওয়ারও তো কিছু নেই...এতো অঘটনঘটনপটিয়সী যুগ...এ সময়ে সবই সম্ভব। আমার পোস্টের টাইটেল খানায় ছোট্ট একটা ভুল আছে, হয়তো ভুলটা সবাই ধরেও ফেলেছে। কিন্তু ভাদ্র মাসে এমন বর্ষার মতো বৃষ্টি হলে ঋতুর নাম বদলিয়ে মাসের নামে কনভার্ট না করা ছাড়া কি করার আছে কন তো মিয়াভাই? এতে নিশ্চয় কবি নজরুল ক্ষুব্ধ হবেন না...আর হলেও বেশীর চেয়ে বেশি কি বা করবেন....নিভৃতে গজব দিবেন। এটা তেমন বড় বিষয় না...কারন আমি ভাতের চেয়েও বেশী গজব খাই, ব্যান খাই, ব্লক খাই। আই এম কোয়াইট ইউজ টু !!!!!!

প্রথমে ভেবেছিলাম জগাখিচুড়িটা কিছু ক্যারেক্টারের নাম বসিয়ে ঝেড়ে দিই। পরে ভাবলাম কি দরকার বেচারীদের পাপের ভাগীদার করার...“তোর পাপে তুই নিজে বাস কর...অন্যরে আনি না ভাগীদার কর”। আমার ছন্দের দুঃসাহসিক লেঁজেগোবরে সেন্স দেখে হাসান মোরশেদ ভাই, নাজমুল ভাই সহ তাবৎ ব্লগের কবি ভাই-বোনেরা নির্ঘাত কোমাতে চলে যেতে পারেন ভেবেই আর কিছু বললাম না।

আজ সকালে আশ্চর্য্যজনক ভাবে ঘুম ভাঙ্গলো মা’র বকা ঝকা না খেয়েই...ঘর দেখি অন্ধকার...ঘড়িতে ১০টা বাজে। পর্দা সরিয়ে বুঝলাম ঘর অন্ধকার হওয়ার কারন....চারপাশ আঁধার করে নেমেছে ধারা প্রপাত। হঠাৎ করেই মনটা বেশীরকমের ভাল হয়ে গেল। এই প্রবলভাবে না ভাল লাগার সময়টায় আমার এমন একটা উটকো বিষয়ে খুশি হওয়াটাও হয়তো একধরনের অপরাধ। তবুও আমি উপভোগ করতে লাগলাম বৃষ্টি...যাকে ঠেকাতে পারেনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারফিউ...জলপাই চাচ্চুদের কড়া নজর...পুলিশ মামুদের টিয়ার গ্যাস। প্রকৃতি প্রদত্ত প্রতিটি বিন্দু বিন্দু বুলেটরাশি হয়তো সে সব ছেলেমেয়ে যারা নিজেদের অধিকার রক্ষার জন্য ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে পড়েছিল রাস্তায়। এই বৃষ্টি হয়তো টিয়ার গ্যাস আক্রান্ত জ্বলুনি ধরা চোখে এনে দিতে পারে শান্তির পরশ। এই ঝুম বর্ষন হয়ত রাস্তার পিচে লেগে থাকা রিক্সাচালক আনোয়ার সহ অন্যান্যদের রক্ত মুছে নিয়ে যেতে পারবে কিন্তু পারবে না আড়াই হাজার অভিযুক্তের ক্ষোভ ধুয়ে দিতে । এই বৃষ্টি আমার মত স্বার্থপরদের খানিকটা বৃষ্টি বিলাসী হওয়ার সুযোগ করে দিতে পারবে কিন্তু বন্যা কবলিত অসহায় মানুষগুলোকে হয়তো আরো খানিকটা নিঃস্ব করে যেতে ভুলবে না। তাও ভালো লাগছে... অন্যায়ভাবেই ভাল লাগছে......

তীব্রভাবে অকারনে ভাল লাগার ব্যপারটাও অনেকটা শেলের মত এসে পাঁজরে বাধে। পিন পিন করে বিঁধে ওঠা সূক্ষ অনুভূতিখানি বার বার জিজ্ঞেস করে “বলতে পার কেন ভাল লাগে?” নির্বাক আমি অসহায় ভাবে ভাবি ভাল না লাগার মাঝেও কেন ভাল লাগে !!! উত্তর না পাওয়া সময় থমকে যায়......ধীরে ধীরে একসময় ভাল লাগার উটকো রেশটাও কেটে যায়...

আবারও সূর্য জেঁকে বসে... স্থবিরতা কেটে যায়... শুরু হয় বাস্তবতার লড়াই... হয়তো বন্যাকবলিত নিরীহ মানুষগুলোর মুখে ফুটে উঠে স্বস্তির হাসি...হয়তো চড়াদাম হাকা বাজারগুলোয় মানুষজন অসহায় মুখে হেটে বেড়ায় প্রয়োজনীয় জিনিস না কিনতে পারার অক্ষমতায়...আমি দেখি না... যেমন আমি দেখি না এমন আরও অনেক কিছু !!!


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আজ যে কবিতাকে ছুটি দেওয়ার দিন!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

প্রতিটা বৃষ্টির পরেই প্রকৃতি আরো সজীব সতেজ হয়ে জেগে ওঠে। সূর্যের আলো আসে তাকে আরো রাঙাতে। নতুন দিনের এই তো শুরু।

...........
যত বড় হোক সে ইন্দ্রধনু দূর আকাশে আঁকা
আমি ভালবাসি মোর ধরনীর প্রজাপতির পাখা

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

প্যারাগ্রাফগুলায় এন্টার কী চাপেন।
৫ দাগানো হইয়াছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- চিপাচিপি কম কইরা একটা কইরা স্পেস মাইরা দেন।
লেখা ভালৈছে। বৃষ্টি বিলাস করতে পারছেন বইলাই মুদ্রার উল্টা পিঠের দিকেও খানিক আলো ফেলাইছেন, সেইটাই মূখ্য।

_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

দৃশা এর ছবি

কারে যে কার ছুটি দেওয়ার দিন কইতাম ফারি না মামু...
প্রকৃতিপ্রেমিক আপনার নামখানা সেইরকম...ধন্যবাদ ।
শিমুল পিচ্চি ওলয়েজ দাগাদাগির উপরেই আছে...তয় থ্যাংক্স

ওই হয় এইটা কিডা...কি খবর রুমা, সোমার...হইতে না পারা স্বয়ামী? দেখা যায় না কেন??? ধইন্যাপাতা।

দৃশা

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভাল লাগল পড়ে। ভাবনারা এভাবেই অনেকের ভেতরে একসাথে নড়ে উঠে...

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

ঝরাপাতা এর ছবি

সব আবঝাপ, কোন কামের কথা নাই। তারপরেও ৫ দিলাম কারণ পইড়া আমার মাথাও আউলা হইয়া গেছে।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

দৃশা এর ছবি

নাজমুল ভাই এই ভাবনাটাই বড় ভাবাইয়া তুলে...বড় পেচগি লাইগা যায় ভাই।
যাক পাইলাম আমার মত একখান আউলা ঝাউলা পাবলিক...ফলেন পাতা আমগো কমিউনিটিতে স্বাগতম। আপনারে দিয়াই হইবেক। ৫ এর লাইজ্ঞা ৫ টা শুকরিয়া।তাইলে চিন্তা করেন ১০০ দিলে আরো কত পাইতেন ঃ(...সবই হিসাবের খেলা।

দৃশা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।