লোকে বলে, বলে রে ঘর বাড়ি বালা না আমার

কারুবাসনা এর ছবি
লিখেছেন কারুবাসনা (তারিখ: বুধ, ২৯/০৮/২০০৭ - ১০:০৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফ্যানের ব্লেডসকল রাষ্ট্রসকলের দখলদারির অধিক যে মিমাংসার সূচনা করে কোকাকোলার বোতল তাতে নির্লিপ্ত। আগুনের গনগনে শিখা হোল্ডলে গুটিয়ে ট্রেনে চেপে বসলে তার শেষে আছে এক পার্বত্য উপত্যকা। ঝর্ণা, কুয়াশা, মেঘ সব আছে নাচও আছে, গানও আছে, মেষশাবকদের পিছে ছুটে চলা তরুনীর আগে উড়ে যায় শতাব্দী বাতিল প্লাষ্টিকের ঠোঙা।

বহুদিন পাহাড়ে যাই না। স্রোতের কোন মীমাংসা নেই। খুব ভোরে আঁচ দেওয়া উনুনের ধোঁয়ারা বন্ধ জানালার কাঁচে কুয়াশার মত এঁকে দেয় স্মৃতি। যমপটে বাঁকিয়াছে চোখটুকু আঁকা। অজয়ের দুইপারে তুলির গাভীর টান আর সরু জলে মাছেদের মত খেলা করে রূপসী চাঁদেরা। ভাত রান্নার আগে করতোয়া উঁকি মারে কোন কাব্যসমগ্র থেকে।

কোকাকোলা থেকে গেল অবিচল। খোকা বুড়ো হল, কে কাকে বেল্লিক বলল, বিপক্ষের উল্লুক পাটকেলে ঘায়েল হয়ে অবশেষে খালাসিটোলার অস্ত্রাগারে ঝাঁপ দিল পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে। পিকাসোর পুরু গোঁফের তলা দিয়ে যখন বরযাত্রী পৌঁছাল কোন এক কুয়াশার ঘুন ধরা পাহাড়ী শহরে, দিদিশাশুড়ির পিসতুতো বোনের ছোট ননদ এক বোতল কোকোকোলা নিয়ে সবাইকে ঢেলে দিতে লাগল প্লাষ্টিকের অস্বচ্ছ সাদা গ্লাসে। মাংসের গন্ধ মিলে মিশে অন্ধকারকে করে তুলল আরো কালো ঘন।

রাত্তির একটার পরে যখন দরকার পড়ল আরও একটা কম্বলের, কারো চুল থেকে খসে পড়া আধ শুকনো বেলফুলের মালা কিছুতেই আর বাগ মানতে চাইল না। অজয়ের দুই তীর ভর্তি বালি বারে বারে পা টেনে দহরছে সুগন্ধের মত। বরযাত্রীদের দেওয়া গোলাপের একটা একটা করে পাপড়ি খসে সকাল হচ্ছে, পিকচার পোষ্টকার্ডের মত।

এ অবস্থায় বেশি বড় লেখা সম্ভব না। বেশিক্ষণ সম্ভব না রাত্রিকে ধরে রাখা। কম্বল না পেয়ে সারারাত চরে বেড়াতে হল চরে। কিছুতেই সেই ফ্যানের ব্লেডগুলির সংঘর্ষের মধ্যে যদিও সে পাহাড়ে তা ছিল টাওয়ারহীন। তবুও মানুষের আশা বেঁচে থাকে হাঁটাচলার মধ্যে। এই লেখাটা আর কিছুতেই বড় করা যাচ্ছে না। সকাল হয়ে যাওয়ার আগেই কোকোকোলার খালি বোতলে ঠোক্কর লেগেছে পায়ে, ছিপি গড়িয়ে গেছে পায়ে আর বুদ্ধের চারপাশে সুজাতার মত ভোদকার একটা সুন্দর ফ্লেভার উঁকি মেরে যাছ্ছে সারা অজয় জুড়ে। ফুলগুলোর কথা মনে পড়ে না। তারা কবে পচে মরে কথাসরিত সাগরের মত ভেসে গেছে পলিও আক্রান্ত অজয় বরাবর।


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বুদ্ধ ফিরিয়ে দেন কোকাকোলা
আমি বরাবরই র খাই...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সুমেরুকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে,এটা বড়ো ভালো লাগার ব্যাপার।

আর লেখা?
সে আর বলতে?
-----------------------------------
ঢাকার ভূমে ফিরেছে একাত্তর/প্রস্তুতি নে,সময় হলো তোর..

অতিথি এর ছবি

ফ্লেভার্ড ভদকার গুন আছে বলতেই হবে, পুরনো সুমেরুকে ফিরিয়ে নিয়ে এলো!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।