তবু এমন রাত এলে

কারুবাসনা এর ছবি
লিখেছেন কারুবাসনা (তারিখ: রবি, ১৬/০৯/২০০৭ - ১২:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক রাতের পর আমাদের দেখা, কাল রাতে। মহুয়া খেতে খেতে শুভেন্দুদা ফিরে গেল তার নকশাল জীবনে। শুভ স্টকহোমে। আমি বেলপাহাড়িতে। আমরা কেউ সেই চা-শিকড়ের উপর রাখা পুরু কাঁচের টেবিলটা ঘিরে বসে থাকি না, কেবল। সোমনাথদাকে ফোনে ধরা হল। নতুন বিমান ব্যবস্থার কল্যানে প্রতি সপ্তাহেই ছত্তিশগড়- কলকাতা করা যায়, রাজনীতির সাথে বউ-বাচ্চাকাচ্চা।

মহুয়া খেতে খেতে আমার দুই নারীর কথা মনে পড়ল। ছোটবেলার দুই মহুয়া।গাইনকাকুর মেয়ে আর আমার সাথে রবিবার সকালে যে অঙ্ক করতে আসত, সাইকেলের কিড়িং কিড়িং এরমত। শুভেন্দুদারও একগাদা নারীর কথা মনে পড়ে যায়। ফোন চলতে থাকে। কলকাতা, বার্ণপুর, ফিলাডেলফিয়া। উপরন্তু পিকাসো। বিকালে হেঁটে গেছি পিকাসো বীথি বরাবর, সেটাও ইমপর্টেন্ট মনে হচ্ছে, কেননা সেটাই আগে ছিল উত্তকুমার-সুপ্রিয়ার ময়রা স্ট্রিট। এক জারিকেন মহুয়া রক্তাক্ত করে দিচ্ছে চারপাশ। আমরা বৃদ্ধ পিকাসোর মত ছবি এঁকে চলি।

আমাদের কত কথা থাকে, মার্কস প্ল্যাঙ্ক থেকে ওয়ান বাই জিরো। আমি বলছিলাম বেলপাহাড়ি থেকে কাঁকড়াঝোড়ের গপ্পো।ওই কাঁকরের মাটিতে ধান হচ্ছে। সন্তানের মত খেলছিল সকালের রোদে। সুবর্ণরেখার গানটা কথা লিখতে লিখতে মনে পড়ল এমন শৈশব প্রতিমা, ঠিক তো!কথা উঠল দুই বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে।নোবেল পীস , কতসাল থেকে লোকে মারছে, হাতড়ানো হল। তখন আমরা সবাই ইন্টারনেট, সবাই গুগলি ও হাঁস। যখন পানপাত্র শূন্যের দিকে যাচ্ছে, তখন বেরল চিকেনের ঘাস ঘাস সসেজ ও কিছু সালামি। আমাদের মনে পড়ল একজিভিশন ডিজাইনের কথা।চুড়ি ভাঙাগুলো সাজিয়ে সাজিয়ে তখন বানিয়ে নিচ্ছি আমাদের অনেক অদেখা রাত।আমরা কোথায় কখন থাকি ঠিক নেই, কাল সকালে আমি হায়দ্রাবাদ, পরশু শুভেন্দুদা ব্যাঙ্গালোর তবু মাঝেমাঝে এমন একটা রাত এলে কাঁচের গোল টেবিলটাকেই গোটা পৃথিবী বলে মনে হয়।


মন্তব্য

কনফুসিয়াস এর ছবি

তুমি যা জিনিস গুরু আমি জানি আর কেউ জানে না!
-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

কিছু একটা হলেই হল এর ছবি

জেরিক্যান বর্তি মদ থাকলে কাঁচের টেবিলকে তো পৃথিবী বলে মনে হবেই। এ আর এমন কী!

নিঘাত তিথি এর ছবি

হুমম।

--তিথি

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

তবু মাঝেমাঝে এমন একটা রাত এলে কাঁচের গোল টেবিলটাকেই গোটা পৃথিবী বলে মনে হয়

খুব ভাল লাগলো পুরো লেখাটাই। বিশেষ করে এই অংশটুকু।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শুধু মুরগীর জায়গায় হাঁস হলেই জমে উঠতো...
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শ্যাজা এর ছবি

আহা:...হাঁস!!

এই সালামিটা একেবারেই অখাদ্য। তবে যেহেতু হাঁস এখানে পাঁচতারায় ছাড়া জোটে না তাই সালামিকেই সালাম।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।