[b]আগুনের কথা বন্ধুকে বলি...[/b]

বর্ণদূত এর ছবি
লিখেছেন বর্ণদূত [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ১৮/১১/২০০৮ - ৩:৪৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


তার ছবি নেই কেউ কি ছিল
এই ভেবে ডুবে গেছে রাত
প্রশ্নেও নেই উত্তর নেই
মাঝরাতে ডুবেছে মাতাল
নেই কাছে নেই গল্প তোমার
চমকে ওঠে ডাকে আয় কাছে আয়

সঞ্জীব চৌধুরী যখন কোমায়, আশা ছিল। তাঁর হৃদপিণ্ড সচল ছিল, আশা ছিল। মস্তিষ্কে রক্তরণ, তবু কাজ করছিল, আশা ছিল। সমগ্র শরীরে রক্ত চলাচল বাধাপ্রাপ্ত, বাহ্যিক প্রতিক্রিয়ায় তা বোঝা যাচ্ছিল, আশা ছিল। মৃদু শ্বাস-প্রশ্বাস তখনও ছিল, আশা ছিল। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কাগজের শেষ পৃষ্ঠায় 'সঞ্জীব চৌধুরী কোমায়' শিরোনামে হাস্যোজ্জ্বল ছবিসহ ছাপিয়েছি, আশা ছিল। কিন্তু আশাবাদ আর বাস্তবতা হঠাঁত করে দুই মেরুর বাসিন্দা হয়ে গেল। সঞ্জীবদা, প্রিয় সঞ্জীবদা চলে গেলেন অনন্ত ঘুমের দেশে। আজ ১৯ নভেম্বর তাঁর প্রস্থানের এক বছর পূর্ণ হল। কত দ্রুতই না কেটে যায় মানুষের সময়।


খোলা আকাশ একটি গাছ
সবুজ পাতা একটি গাছ
স্মৃতির বৃক্ষ পাতারা জানে
মেঘের চাষবাস

দলছুট'র প্রথম অ্যালবাম 'আহ্!' রিলিজ হওয়ার পর সঞ্জীব চৌধুরী এবং বাপ্পা মজুমদারের বেশ নাম-ডাক হয়ে যায়। কয়েকটি গান ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়। সাদা ময়লা রঙিলা পালে, আউলা বাতাস খেলে....এরকম আরও বেশকিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে। এরই মাঝে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'মহুয়া ফোঁটার উতসব' থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয় কবি ও শিল্পী সঞ্জীব চৌধুরীকে। নির্ধারিত দিনে তিনি আসেন। উতসবে কবি মোহাম্মদ রফিক ও নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন বক্তব্য রাখেন। এরপর তরুণ কবিরা তাদের কবিতা পাঠ করেন। আসে তার পালা। সবাই গান শোনাতে বলে। তিনি সম্ভবত একটু অসংলগ্ন অবস্থাতেই সেখানে হাজির হয়েছিলেন। আর হতে পারে জাহাঙ্গীরনগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও বাস্তবজ্ঞান হারাতে কিছুটা প্রলুব্ধ করেছিল তাঁকে। গিটারটি টেনে নিয়ে কিছুক্ষণ টিউন করার চেষ্টা করেন তিনি। ব্যর্থ হয়ে অতঃপর হারমোনিয়াম বাজাতে চান। কিন্তু কোথায় যেন সুর তাল কেটে গেছে, পারছেন না। দর্শক-শ্রোতার মাঝে উসখুস শুরু হয়। সঞ্জীব চৌধুরী গিটার বাজিয়েই গান গাওয়ার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ গেয়ে থেমে যান। হয়তো তাঁর কেবলই মনে হতে থাকে, হচ্ছে না।
উপরের বর্ণনাটুকু সঞ্জীব চৌধুরীকে দেখার প্রথম অভিজ্ঞতা আমার। সে সময়ের প্রায় আট বছর পর 'দৈনিক যায়যায়দিন' এ সিনিয়র সহকর্মী হিসেবে তাঁকে পাই। সদা হাস্যোজ্জ্বল কম কথার মানুষটিকে সবাই পছন্দ করতো। গুনে গুনে কয়েকবার শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়া তাঁর সঙ্গে আমার তেমন আলাপচারিতা হয়নি কখনো। কিন্তু এরপরও আপন মনে হতো। তাঁকে দেখলে ভেতরে আনন্দ জাগতো।


সঞ্জীব চৌধুরীর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি একজন কবিস্বভাবের শিল্পী। শিল্পী মাত্রই ভীষণ স্পর্শকাতর আর সংবেদনশীল বৈশিষ্ট্য ধারণ করেন। আমি-তুমি থেকে শুরু করে দেশজ ভূগোল ছাড়িয়ে সর্বমানবের জন্যেই নিবেদিত হয় শিল্পী মন। প্রকৃত শিল্পী আপসকামী নন কখনই। কোনো না কোনো উপায়ে শিল্পী তাঁর মনের আবেগ, ক্ষোভ, ঘৃণা, প্রতিবাদ প্রকাশ করে ফেলেন। শিল্পী সমাজ ও রাজনীতি সচেতন হন, দায়বদ্ধতার তাড়না অনুভব করেন। সঞ্জীব চৌধুরীর গাওয়া গান মানুষকে আনন্দ দিত, ভাসাতো স্বপ্নে, ভাবাতো নিভৃতে, কাঁদাতো সমিলতা অনুভবে। কোন্ ধরনের গান তিনি গাইতেন? আধুনিক। তবে সেগুলো মোটেও বস্তাপচা, রদ্দি কথা আর সুরের অনুগামী নয়। তাঁর গাওয়া গান কাব্যময় ভাষা আর সুসংবদ্ধ সুরে নির্মিত। প্রেমের গান, বিরহ-বেদনা, প্রতিবাদী কিংবা সামাজিক দায়বদ্ধতাসম্ভূত এবং ফোক এসব ঘিরেই ছিল তাঁর গানের জগত। তবে সঞ্জীব চৌধুরীর গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর অধিকাংশই মানবীয় একমুখী প্রেম বিচিত্র ধারায় প্রকাশিত। এ প্রসঙ্গে কয়েকটি গানের উদাহরণ টানা যেতে পারে,

আমি তোমাকেই বলে দেব
কী যে একা দীর্ঘ রাত
আমি হেঁটে গেছি বিরাণ পথে
আমি তোমাকেই বলে দেব
সেই ভুলে ভরা গল্প
কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়
ছুঁয়ে কান্নার রঙ
ছুঁয়ে জোতস্নার ছায়া

কিংবা

আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিল চাঁদ
আমাকে নিঃস্ব দিয়েছিল চাঁদ
আমার চোখ কেন ধরেছে সুন্দর

অথবা

তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখে ছিলাম বায়োস্কোপ
বায়োস্কোপের নেশা আমায় ছাড়ে না
ডাইনে তোমার চাচার বাড়ি বায়ের দিকে পুকুর ঘাট
সেই ভাবনায় বয়স আমার বাড়ে না

উপরের গানগুলোর কথা নিঃসন্দেহে চলতিস্রোতে গা ভাসানো নয়। কবিতাধর্মী কথাগুলো নিয়ে নির্মিত এসব গান তাই রুচিবান শ্রোতার মনে বহুদিন ভালোলাগার স্পর্শ নিয়ে বেঁচে থাকবে।
আমাদের এ কালের অধিকাংশ শিল্পী কোনও ধরনের দায়বদ্ধতা অনুভব করেন না। যেন-তেন গেয়ে রাতারাতি তারকা (!) বনে যাওয়াই অধিকাংশের একমাত্র ল্ক্ষ্য বলে মনে হয়। কিন্তু সঞ্জীব চৌধুরী সে ঘরাণার ছিলেন না। যেহেতু তিনি শিক্ষিত, রাজনীতি সচেতন এবং উদার মনের মানুষ ছিলেন, একারণেই নিজেকে প্রকাশের প্রধান মাধ্যম গানে সে ছাপ স্পষ্টরূপেই ধরা দেয়। আর তাই, শহীদ তাজুল, কর্নেল তাহের উঠে আসেন পুনর্বার তাঁর গানের মধ্য দিয়ে। যে স্বদেশ অনেক স্বপ্ন অনেক সম্ভাবনা নিয়ে, অগণিত মানুষের প্রাণ আর অফুরান রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে, সে স্বদেশে যখন স্বপ্ন ভাঙে নিয়ত, যখন মৌলবাদী, স্বাধীনতাবিরোধী আর প্রতিক্রিয়াশীলদের দখলে চলে যায় দেশের মূল নিয়ন্ত্রণ, তখন সঞ্জীব চৌধুরী গেয়ে ওঠেন,

কথা ছিল মানুষ মিছিল পাহাড় নদী
আমাদের হবে, সাক্ষী শপথ
কথা ছিল ফুলের তোড়া মঞ্চজোড়া
বিজয় প্লাবন, সাক্ষী মানুষ
..............
..............
কথা ছিল আকাশছোঁয়া বুকের ভেতর
চাঁদের উঠোন, সাক্ষী জোস্না
কথাছিল সূর্যগুলো মুঠোয় পুরে
আসবো ফিরে, সাক্ষী প্রতীক্ষা

আবার যখন মানবতা যখন ভূলুণ্ঠিত, দিনাজপুরের ইয়াসমিন ধর্ষিতা হন, নিহত হন, যখন কোথাও লজ্জায় মুখ লুকাবো বলে আশ্রয় খুঁজি ঠিক তখনি প্রতিবাদী হয়ে ওঠেন সঞ্জীব চৌধুরী। তিনি কথক এবং গায়ক হিসেবে বর্ণনা করেন সেই ণটির ভয়াবহতা, কিশোরী ইয়াসমিনের কষ্ট আর লজ্জা যেনবা একটি গানের মধ্যেই মূর্ত হয়ে ওঠে। কথকরূপী সঞ্জীব চৌধুরী বলেন,

ঘরে ফিরতে চাইলেই কি ঘরে ফেরা যায়, সবাই কি ঘরে ফিরতে পারে? ইয়াসমিন, দিনাজপুরের ইয়াসমিন, কিশোরী ইয়াসমিন ঘরে ফিরতে চেয়েছিল। কিন্তু কি অন্ধকার সে পথ, কি নিষ্ঠুর সে পথ। ইয়াসমিনের আর কোন দিন বাড়ি ফেরা হয় না। ঢাকা টু দিনাজপুর অন্ধকারে লোপাট হয়ে যায়। আর রকের মুখোশ পড়ে কসাইগুলো হাসে, পুলিশের ব্যাটন হাতে কসাইগুলো হাসে। আর তাকে ধর্ষন করা হয়, তাকে ধর্ষন করা হয়। তাকে মেরে ফেলা হয়। ইয়াসমিন আহ!

এই প্রারম্ভযোজনা শেষে শুরু হয় গান, যে গান আমাদের রক্তে আলোড়ন তোলে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জেগে ওঠে নিজের অভ্যন্তর হতে,

ওরে রক্তচোষা ডাকল পেঁচা অলুক্ষুণে রাত
আসে অন্ধকারে চুপিসারে ভীষণ কালো হাত
লোল ঝড়ে তার লোলুপ জিহ্বা ছিঁড়ল হৃদয় বিণ
আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন
হাত বাড়ালেই বন্ধু মেলে হাত বাড়ালেই সুখ
সুখের ঘরে ভাঙলে পড়ে নিষিদ্ধ অসুখ
রক্তে ভেজা উত্তরই পায় স্বপ্ন হয় বিলীন
আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন

সঞ্জীব চৌধুরী অন্যের লেখা ও সুরে গান করার পাশাপাশি নিজের লেখায়ও গান করেছেন। তবে অন্যের লেখা গান নির্বাচন করার মধ্যেও ছিল রুচিশীলতার ছাপ। সস্তাদরের গান তাঁর কণ্ঠে তেমন একটা নেই বল্লেই চলে। এখানেই প্রাধান্য পেয়েছে কবির সততা, শিল্পের আপসহীনতা। সঞ্জীব চৌধুরী তাই আমাদের গানের ভুবনে বিরলপ্রজ গুণী শিল্পীর কাতারে অনন্তকাল সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত থাকবেন।


চলুন এক বছর আগে ফিরে যাই। সঞ্জীব চৌধুরী অসুস্থ হওয়ার আগে পড়ে কয়েকদিনের পরিস্থিতি স্মরণ করার চেষ্টা করি। ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে বলে সারাদেশ টানটান আতঙ্কে মজ্জমান। ঠিক যেদিন 'সিডর' আঁছড়ে পড়ে উপকূলজুড়ে, সেদিন রাতেই অসুস্থ হন সঞ্জীব চৌধুরী। রাজধানী ঢাকাও বাতাসের তাণ্ডবে অস্থির। তিনি কি তবে তাঁর অন্তিমরাতের কথা আগেভাগেই জানতেন? তাই এমনতরো বর্ণনায় গেয়েছিলেন,

কোথাও বাঁশি বাজচ্ছিল
হাওয়ারা খুব হাসছিল
আমার ছিল বন্ধ কপাট
অন্ধ চোখে রাত ছিল

সঞ্জীব চৌধুরী বিনা চিকিতসায় মারা যাননি। আপাত দৃষ্টিতে সরল অর্থে এ কথা সবাই মেনে নেবে নিশ্চিত। কিন্তু যথাসময়ে যথাচিকিতসা না পাওয়া, বিনা চিকিতসা থেকে খুব বেশি দূরবর্তী কি? ঐদিন রাতে দেশের বিদ্যুত ব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ ভেঙে পড়েছিল। সঞ্জীব চৌধুরী 'কিনিক্যালি ডেড' হয়ে যাওয়ার পর যথাযোগ্য চিকিতসা দেয়ার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু কেন পাননি তিনি প্রয়োজনীয় মুহূর্তে জরুরি সেবাটুকু? আমাদের সর্বোচ্চ চিকিতসায়তনে কয়েকঘণ্টা নিজস্ব বিদ্যুত সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। নেই অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। ঐদিন রাতে কয়েকটি শিশু বিদ্যুতহীনতার অজুহাতে পৃথিবীর আলো বুঝবার আগেই চলে গেছে অন্ধলোকে। এ খবর আমরা শুনেছি। জরুরি অস্ত্রোপচারের অভাবে বেদনায় কাতরাতে কাতরাতে জীবন থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা করেছেন অনেকে। কিন্তু ঐ যে, বিদ্যুত নেই তাই চিকিতসা ব্যাহত! অথচ আমাদের উপাসনালয়ের কোনো কমতি নেই, আমাদের হর্তাকর্তাবৃন্দ বাইরে যান আর উপাসনালয় নেই বলে ক্রন্দন করে অনুদান নিয়ে আসেন। অথচ প্রতিটি মহল্লায় অত্যাধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই কেন এ জন্যে কোনও মাননীয়র চোখে অশ্রু কেউ দেখেনি কখনো। উপাসনালয়ে আলোর কমতি নেই, হাওয়ার কমতি নেই, আবার সর্বসাধারণ্যের যখন-তখন প্রবেশাধিকারও নেই, তালা ঝুলে। কিন্তু আমাদের চিকিতসায়তনে বিদ্যুত ব্যবস্থা ভালো নয়, রোগীর পথ্য অপ্রতুল, ওষুধ দুর্লভ এ বিষয়ে তেমন কোনও ভ্রুপে নেই কারো!
আগুনের কথা বন্ধুকে বলি, আর কাকেই বা বলবো! যদি বলি সঞ্জীব চৌধুরী প্রকৃতঅর্থে বিনা চিকিতসাতেই মারা গেছেন, কতটুকু ভুল বলা হবে! আমাদের বড্ড ঋণী করে, মানবীয় ঔদার্যে নিজের দেহটাও দান করে গেছেন মেডিকেলে। তবুও যদি যথাযথ শিক্ষা আমাদের চিকিতসকগণ, আমাদের মাননীয়গণ উপার্জন করতে পারেন, হয়তো এই আকাঙ্খায়!
এ লেখা লিখতে লিখতে আমার চোখ বেয়ে লবণাক্ত ধারার স্রোত টের পাই। টের পাই সঞ্জীব চৌধুরী নিজের কণ্ঠে এমনতরো এক কবিতা লিখেছিলেন, ভাষা, চিত্রকল্প আর উপমায় যা আত্মমগ্ন চৈতন্য স্পর্শ করে যায় নিমিষেই,

চোখটা এত পোড়ায় কেন
ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও
সমুদ্র কি তোমার ছেলে
আদর দিয়ে চোখে মাখাও
বুকজুড়ে এই ভেজাল শহর
হা হা শূন্য আকাশ কাঁপাও
আকাশ ঘিরে শঙ্খচিলের
শরীরচেঁড়া কান্না থামাও
আমি তোমার কান্না কুড়াই
কান্না উড়াই কান্না তাপাই
কান্নাপানি পান করে যাই
এমন মাতাল কান্না লিখি

সঞ্জীবদা বড় অসময়ে চলে গেছেন। তাঁর এই অকাল চলে যাওয়া, আমাদের কী ভাবাবে, অন্তত কিছুটা?


মন্তব্য

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

মাই গড !
এক বছর হয়ে গেলো? ভালো লাগতো মানুষটাকে। গানগুলোও।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অনিন্দিতা এর ছবি

বড় নিষ্ঠুর, নির্মম এ চলে যাওয়া!

রণদীপম বসু এর ছবি

অসম্ভব সুন্দর লেখা !
একই সাথে আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
আর সঞ্জীব চৌধুরীর জন্য.....

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনিকেত এর ছবি

সঞ্জীব'দা, বড্ড মনে পড়ে তোমাকে-----

চমৎকার লেখার জন্যে বর্ণদূতকে একরাশ শুভেচ্ছা!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হায়, কতো দ্রুত সময় যায়! এক বছর!!!

লেখাটা ভালো লেগেছে। ১ম গানটা কি 'কার ছবি নেই' হবে না?

নিবিড় এর ছবি

অসাধারণ স্মৃতিচারন । শ্রদ্ধা রইল শিল্পীর প্রতি ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সঞ্জীবদা ছিলো আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। সে হিসেবে আগেই টুকটাক পরিচয় ছিলো। তবে ঘণিষ্ঠতার শুরু ৯৫/৯৬ সালের দিকে। আমি তখন ইত্তেফাকে কনট্রিবিউট করি। আর নতুন আসা আনন্দভুবন-এ কাজ শুরু করছি। তখন ভোরের কাগজের মেলায় লেখক চেয়ে অদ্ভূত এক বিজ্ঞাপন। প্রথম কিস্তিতে আমার যাওয়া হয় না। দ্বিতীয় কিস্তিতে সামিল হয়ে যাই মেলা টিমে। তাজিন, সুমন পাটোয়ারি, স্বরূপ সোহান, ওমর শরীফ, শামীম সাহেদ... সঞ্জীবদার ছাত্র হই... শিষ্য হই। সঞ্জীবদা হাতে ধরে ধরে লেখার ভেতরের আনন্দগুলো খুজেঁ দেন। শব্দের নতুন নতুন খেলা মাধূর্য্য চিনিয়ে দেন। আহ্... সেই কি দিন... কাজের চেয়ে আড্ডা বেশি... ডিএফপিতে কর্মশালা... সেখানে কি শিখবো? শেখার জন্য তো সঞ্জীবদাই আছেন। আহ্...

ভোরের কাগজ থেকে আড্ডা গড়ায় শ্যালেতে... পিককে... জিডিতে এখানে সেখানে। ভোরের কাগজে আমার আর জোট বাধা হয় না। আমি আনন্দভুবনে জুটে যাই চাকরি নিয়ে। কিন্তু মেলায় আড্ডা বা লেখায় তো কোনো বাধা নেই। মনে আছে এক বইমেলায় সঞ্জীবদার গানের ক্যাসেট (তখনো দলছুট, বাপ্পাদা আমাদের মনে থাকে না, সঞ্জীবদাই সব) বের হবে। আনিসুল হকের নেতৃত্বে দল বেধে সেই ক্যাসেট কিনতে যাওয়া।

বিটিভি থেকে শুভেচ্ছা প্যাকেজের আওতায় এলে আমি তার কোঅর্ডিনেটর হই। তুষার ভাই-ই প্রস্তাব করেন রঙ্গিলা গানটি দিতে। আমি তো খুশি। তারপর সারারাত শুটিং... সেগুনবাগিচার কচিকাচা মিলনায়তন থেকে শুরু করে, রমনা পার্ক, শিশু একাডেমির সামনে, কার্জন হল (এই শুটিং করতে গিয়ে লাইটের কানেকশন নিতে গিয়ে পুরো কার্জন হলের বিদ্যুত ব্যবস্থা বিকল করে পালিয়েছিলাম সেই রাতে)।

পত্রিকার লাইন ছেড়ে দিয়ে ২০০০ সালে ঢুকে গেলাম নাটকের লাইনে। যোগাযোগ একটু কমে গেলো। গৃহগল্প সিরিয়ালটার জন্য টাইটেল সং বানাতে আবার ফোন... 'বরিশাল থেকে এসেই লিখে দিচ্ছি গান।' আমাকে দিলো না। সন্ধ্যায় ফোন করে বললো বাপ্পার ষ্টুডিওতে চলে আয়। গিয়ে শুনি অসাধারন এক গান লিখে সুর করে বসে আছে। এই উছিলায় আবার জমে ওঠে আড্ডা... জিডিতে, জাকারিয়াতে। কিন্তু এবার স্পষ্টই বুঝলাম দাদার সাথে আড্ডা আড্ডাটা এখন আর সুখকর না।

ব্যাচেলরের প্রিমিয়ার শোর দিন দুপুরে ফোন... নজরুল... শ্যালেতে চলে আয় তিনটায়... খেয়ে দেয়ে আমরা একসাথে প্রিমিয়ারে যাবো। এড়িয়ে যাই। কিন্তু যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়। ''চল একেবারে সামনে গিয়ে বসি। প্রধান অতিথিরও আগে, যেখানে কেউ বসে না। পঞ্চাশটা চেয়ার... সেখানে শুধু দুটো মাথা...'' আমি বলি দাদা... ওখানে বসে তো দেখা যাবে না... ঘাড় ত্যাড়া হয়ে যাবে। কিন্তু তার পাগলামি থেকে কি নিস্তার আছে? পুরো সিনেমা দেখতে হয় ঘাড় ত্যাড়া করেই।

পিককে একদিন খুব ঝগড়া হয়... মারামারি বেধে যাবার উপক্রম। শেষ... সঞ্জীবদার সাথে আর আড্ডা হয়না, খাওয়া হয় না। নতুন মোবাইলে ওঠেনা তার নম্বর। তবু এক সকালে ফোন- ''তুই বিয়ে করলি, বাচ্চা হলো, সে খবর আমার শুনতে হলো অন্য লোকের কাছে? নজরুল... তুই ভুলে গেলেও আমি তো তোকে ভুলতে পারি না। একদিন বাড়িতে দাওয়াত দে... তোকে না... তোর মেয়েটাকে দেখে আসি।''

দিবো দিচ্ছিতে সেই দাওয়াতও দেওয়া হয় না। হঠাত্ সিডরের ঝড় আসে। সারারাতের নির্ঘুমতা শেষে শুক্রবার দুপুরে সেজেগুজে রেডি হই শ্বশুড়বাড়ির দাওয়াতে যাবো বলে। এর মধ্যেই ফোন... সঞ্জীবদা হাসপাতালে। বউ বাচ্চা শ্বশুড়বাড়িতে রেখে ছুটি মিরপুরে... বিদ্যুত নাই, শ্বাসযন্ত্র পাম্প করছে হাতে। অ্যাঁ
সেখান থেকে এ্যাপোলো... রাতের পর রাত, দিনের পর দিন সেখানেই পরে থাকি। সুস্থ হলে দাদাকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মেয়েটাকে আশীর্বাদ করিয়ে নেবো।

দাদা ফেরে না। দাদার লাশ কাঁধে মিরপুরে তার বাড়িতে যাই। তার বাড়ি আর আমার বাড়ি একই এলাকায়। তবু কখনো তার বাড়িতে যাইনি আমি। এই নিয়েও বকুনি শুনেছি। সেদিন গেলাম ঠিকই... তবে তার সঙ্গে আড্ডা দিতে নয়।

দাদার ওপর অনেক ক্ষোভ ছিলো... এখনো আছে। খুব বেশি আছে... কেন তিনি এমন করলেন? কেন এভাবে চলে গেলেন?

আমার বউ আমাকে কোনোদিন এত বেশি কাঁদতে দেখেনি, একবছর আগের এই দিনটিতে যেমন দেখেছিলো... তার জবাবে বলেছিলাম- এই যে আমি লিখে খাই টাই... এই যে আমি একটা মানুষ... ঢাকা শহরে চড়ে করে টরে খাই... সবকিছুর পেছনে একটা মানুষ- সঞ্জীব চৌধুরী। যে আমাকে হাতে ধরে লেখা শেখাতে চেষ্টা করেছিলেন। অপাত্রে মধু ঢালছেন যেনেও যিনি কখনো মধুবর্ষণে ক্লান্ত হননি।
এখনো আমি কাঁদছিই... দাদা... তুমি যে আমাকে কান্নার নানান রংও চিনিয়েছিলে...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

(দাদাকে নিয়ে গতবার একটা পত্রিকা লিখতে বলেছিলো... সারাদিন বসে থেকেও একটা শব্দও লিখতে পারিনি... আজ কেন লেখা থামছে না? )

দাদার গানকীর্তি বিরাট। জনপ্রিয়তাও গানকেন্দ্রিক। কিন্তু দাদাকে আমি গানের বাইরে দাঁড়িয়ে চিনতে চাই। গতবছর একজনের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলাম- দেশের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিও মৃত্যুতে এত মিডিয়া কাভারেজ পান না। কোনো সাংবাদিকো না। সঞ্জীবদা কেন পেয়েছেন? কারন এই লোকটার মতো ইন্সটিটিউট খুব কম আছে, ছিলো, থাকবে। এই লোক মিডিয়াতে পঙ্গপালের দল ছেড়ে দিয়ে গেছেন। সেইটা বেচেই এই ইন্ডাস্ট্রি খেয়ে পরে বাঁচতে পারবে আরো অনেক বছর।

এখন যারা এই গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে করে কেটে খাচ্ছেন তাদের সিংহভাগই প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে সঞ্জীবদার হাতেই তৈরি।
আমাদের মতো গাধারা স্বীকার করে... আর এই মিডিয়ার অনেক মহান বড় বড় ব্যক্তি আছেন তারা অস্বীকার করেন।

নাহ্... আর লেখবো না...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- "যাই পেরিয়ে" সব কিছু, বুঝি, "কার ছবি নেই" মনে, কেবলই মনেহয় "কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরোজায়"!

সময় অতি দ্রুতই চলে যায়। তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

অতিথি লেখক এর ছবি

তখনো দাদার সাথে দেখা হয়নিআমার।রাজশাহি বি আই টি তে পড়ি।আর অধীর অপেক্ষায় থাকি ছুটির জন্য।।ছুটি পেলেই যে বাপ্পা ভাই এর স্টূডিও তে যেতে পারব.।।তখনও দাদা র সাথে দেখা হয় নি আমার......।
ছুটি ত।।ঢাকায় এসেই ছুটলাম বাপ্পা ভাই র বাসায়।।বাপ্পা ভাই কে ঘুম থেকে উঠাতেই কানে গুজে দিল ওয়াকম্যন।বল্লো,'শোন'.. শুনি 'খোলা আকাশ একটি গাছ'...।।গান শেষ হতেই আমি লাফ দিয়ে উঠি।সাঞ্জিব দা আমার গান গাইসে,সাঞ্জিব দা!!!!বাপ্পা ভাই আমার আনন্দ দেখে মুখ টিপে হাসে আর বলে,'দাদা বলসে তোকে জয় গোসামি র বই পরতে।ছুট ছুট বেইলি রোড...।।সে রাতেই পারলে শেষ করে ফেলি বই...।।
তারপর থেকে সঞ্জিব দার সাথে ঘনিস্ঠতা,আড্ডা,সাকুরা,দাদা র বাসা...
গাছ গান গাওয়ার পর থেকে দাদা আর বউদি তখন আমায় ডাকে'ব্ক্ষ রানা'...আমার যে কি ভাল লাগে শুনতে।কি যে ভাল লাগত দাদা......
সময় পেরয়।।দাদা র সাথে কনসারট এ যাই।।দলছুট এর কন্ সা্রট...।।দাদা গান গাইতে
উঠতেই সবার সে কি উল্লাস...গারি চলে না...গারি চলে না...।।দাদা বাবড়ি চুল দুলিএ গেয়ে ওঠে......গারি চলে না,সাদা ময়লা...ফিরে পেতে ছাই,বাইওস্কপ.....।।আমি বেকসটেজ এ দাড়িয়ে মনে মনে বলি,আমার দাদা......।।
দা্দার সোলও এল্বাম বের হবে।।আমি দাদা কে চেপে ধরি,দাদা আমার গান কবে করবেন।আমার ভুলোমন দাদা...।।গান করা হয় না।।আমি দেশান্তরি হয়ে যাই...।বছরখানেকর জন্নো......
ফিরে এসে দাদা র সাথে দেখা বাপ্পা ভাই র বাসায়।।দাদা কে বলি,কেমন আছেন?'উত্তর না দিএ দাদা বলেন'চল,সাকুরায়।'যাই, দাদা র সাথে সেই শেষ বার...দাদা খোশমেজাজে ছিলেন সেদিন।আমায় মাত্রা সেখান।সেই প্রথম আমি বেকরন শিখি গান লিখার।।দাদা র হাত ধরে...
বারি পৌছে দেই দাদা কে।দাদা তখন মহাম্মাদপুর এ থাকেন।।ততক্ষনে দাদা খানিক অসংলগ্ন...রিক্সা থেকে লাফিয়ে পড়তে চান।।আমি ধরে রাখি দাদা কে...বারি পৌছুতেই দাদা ফিরে আসেন নিজের ভিতর,সাভাবিক অবস্থায়,বউদি কে দেখে।বউদি কে বড় বেশি ভালবাসতেন দাদা......।
আবার আমি দেশান্তরি হই।শেষ দেখা সেই বাপ্পা ভাই র স্টূডিও কাম বাসায়।দাদা হঠাৎবলে ওঠেন,'এই বেটা,লিরিক দে।।আমি দেই।।দাদা তিন টা লিরিক আলাদা করে রাখেন...
আমি চলে যাই অনেক দুরে...।।প্রবাসের কঠিন জীবন আর হিসেবি মানুষজন র সাথে খাপ খাওায়তে পারিনা কিছুতেই......কেবলি মনে পরে বাপ্পা ভাই,সঞ্জিব দার কথা...।সব ছেরে ইচ্ছে করে ঢাকায় ফিরে যাই।দাদা র কাছে মন দিএ গান লিখা শিখি,ই্ছছে করে দাদা র বকা শুনি,দাদা র মাঝে মাঝে হঠাৎ ছেলেমানুষী দেখি...।।
আচমকা বাপ্পা ভাই র ফোন পাই...তাজিন,পুতু ভাই...।একটার পর একটা ফোন ...কেউ কিছু বলে না।শুধু বলে ,'দোয়া কর দাদা র জ়ন্য...আমি কিছু বুঝে উঠতে উঠতেই শুনি দাদা নেই........................
দাদা,বিরান পথে আমি এখন একা হাটি.......।।
ব্রিক্ষ রানা বলে কেউ ডাকে না আমায় আর...।।
দাদা,যেখানেই থাক,অনিয়ম কর না...।ভাল থেকো তুমি...।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বস... মন্তব্যের শেষে নামটা দিতেন... নিজেরে লুকাইতে চান তা তো জানি... আপনার নামটা আমার মতোই... কমন নাম... শুধু নাম পড়ে কেউ বুঝতে পারবে না আপনে আসলে কে... অবশ্য আমি চান্স পাইলেই ফাঁস কইরা দিমু... হা হা হা হা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

অনেক ভালো হয়েছে লেখা। অনেক জোরে ছুঁয়ে ধুয়ে উড়িয়ে ভাসিয়ে দিয়ে গ্যাছে। ব্যক্তিপরিচয়ের বাইরেই যতোটুকু চেনাজানা ছিল, সবই ভেসে ভেসে উঠলো, ডুবে ডুবে গেলাম তোমার কথায়, নজরুল ভাইয়ের স্মৃতিতে। নজরুল ভাইয়ের লেখা পড়েও চোখে নোনা ঝরলো দ্বিতীয় কিস্তি। এভাবেই দেরি ক'রে, অসময়ে, ভালোবাসাগুলো ভারী হয়ে যায়, না-ফেরার পাড়ি দেয়, না-পৌঁছানো ডাক পাঠায়, দল বাঁধা কান্না হয়ে যায়- এখানে ওখানে। নানান ভাবনা উঠলো বন্ধু বর্ণদূত, তোমার লেখার আনাচ-কানাচ থেকে। সেই নানানতা লিখে আর কী হবে! হয়তো বলতে পারবোও না ঠিক ক'রে। স্মরণসুধায় একাত্ন হলাম তোমার সাথে, নজরুল ভাইয়ের সাথেও, এবং অন্য সব স্নেহধন্য কিংবা গুণমুগ্ধদের সাথে। আর, ওই না-পৌঁছানো ভেলা ভাসালাম দেহোর্ধ্ব সঞ্জীবদা'র নীরব নীড়ে। মন খারাপ
হ্যাঁ, থামলাম আমি। না পেরেই থামি। আর লিখতে পারবো না।

------------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

বর্ণদূত এর ছবি

কী মন্তব্য করবো। সবাই এত চমতকার লিখেছেন! আপনাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। আজ সঞ্জীবদাকে ভীষণ মনে পড়ছে। আমার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠেনি তেমন করে কখনো। তবু কাছের মানুষ মনে হতো তাঁকে। যাক। নিশ্চয়ই তাঁর কীর্তি তাঁকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখবে আমাদের মাঝে। সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকুন, নিজের যত্ন নিন, সুস্থ্য থাকুন।

রাফি এর ছবি

প্রিয় মানুষকে নিয়ে অসম্ভব সুন্দর একটি লেখা। প্রিয় কিছু নিয়ে লিখতে গেলে আবেগের তোড়ে যুক্তি ভেসে যাওয়ার একটা বড় সম্ভাবনা থাকে। আপনার লেখাটা তা থেকে ঈর্ষনীয়ভাবে মুক্ত।

সঞ্জীব দা'র জন্য শ্রদ্ধা...।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

তানবীরা এর ছবি

কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়
ছুঁয়ে কান্নার রঙ
ছুঁয়ে জোতস্নার ছায়া

আমার সব সময়ের প্রিয় লাইন। আত্মার ধ্বংস নাই তাই যেখানেই আছেন, আশাকরি ভালো আছেন, আমাদের কাছাকাছিই আছেন।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।