প্রতিবেশী (তৃতীয় ও শেষ পর্ব)

দেবোত্তম দাশ এর ছবি
লিখেছেন দেবোত্তম দাশ (তারিখ: সোম, ০৬/১০/২০০৮ - ৮:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রতিবেশী (১ম পর্ব)
প্রতিবেশী (২য় পর্ব)

খাবার টেবিলেই ভদ্রমহিলাকে উনার স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করে জানলাম ভদ্রলোক ঘরের বাইরে এখনো ফেলে রাখা জিনিষপত্র পাহারা দিচ্ছেন। বেচারা ঠাণ্ডায় বাইরে বসে আছেন ভাবতেই খারপ লাগলো তাই কথা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই ভেবে ভদ্রলোককে ভেতরে ডেকে নিয়ে এলাম।

আমার এক আলজেরিয়ান বন্ধু মজা করে বলছিল এই দ্বীপটাকে যদি বড় বড় দুইটা ইঞ্জিন লাগিয়ে আফ্রিকার কাছে টেনে নেয়া যায় তাহলে ঠাণ্ডা একটু কমলেও কমতে পারে।

এবারে ভদ্রমহিলার কাছে জানতে চাইলাম হোমলেস সংস্থা থেকে কথা দিয়েও কি কারনে কথা রাখে নি, আর কি কারণেই বা এখনকার ঘর ছাড়তে হয়েছে ?

উওরে যা শুনলাম তা সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করছি, প্রায় পাঁচ বছর আগে লোকাল কাউন্সিলে (স্থানীয় পরিষদ মণ্ডলী/ সমিতি) আবেদন করার পর কাউন্সিল থেকে এই বাড়ীতে থাকতে দেয় এবং বাড়ী ভাড়ার সত্তর শতাংশ দিয়ে সাহায্য করে (বলে রাখা ভালো দুঃস্থদের সাহায্য করার জন্য এখানকার কাউন্সিল থেকে নানা ভাবে সাহায্য করা হয়ে থাকে)।

কাউন্সিলের নিজস্ব কিছু বাড়ী/ফ্ল্যাট আছে দুঃস্থ বা গরীবদের সাহায্য করার জন্য কিন্তু তার সংখ্যা চাহিদার তুলনায় অনেক অনেক কম তাই কাউন্সিল সাধারনতঃ ব্যক্তিগত মালিকাধীন বাড়ীগুলিও নিজ দায়িত্বে ভাড়া নেয়। মোদ্দা কথা হচ্ছে ব্যক্তিগত বাড়ীর মালিকদের সাথে কাউন্সিলের চুক্তি হয় আর ব্যক্তিগত মালিকের নিজের বাড়ী/ফ্ল্যাট কয়েক বছরের জন্য কাউন্সিলকে বাড়ী ভাড়া দিয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে যাওয়া, কারন ভাড়াটে হচ্ছে কাউন্সিল তাই ভাড়াটেকে নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা বা সমস্যা নেই, কিছু হলে কাউন্সিল বুঝে নেবে, সময় মত ভাড়াও পাওয়া যাবে, এক কথায় সরকারকে ভাড়া দিয়ে নিশ্চন্ত হওয়া আর কি। আর কাউন্সিল দুঃস্থদের থেকে যৎসামান্য ভাড়া নিয়ে বাকিটা নিজের পকেট থেকে দিয়ে সাহায্য করা, এভাবেই সাম্যতা বজায় রাখার চেষ্টা চলে।

এখন আমার প্রতিবেশীনীর বাড়ীর মালিকও কাউন্সিল নয়, আর বাড়ীর আসল মালিক (যিনি কাউন্সিলকে বাড়ী ভাড়া দিয়েছেন) কাউন্সিলের সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাবার পর আর চুক্তি বাড়াতে না চেয়ে বাড়ীর দখল ফেরত চাইছেন।

তা এখন কথা হচ্ছে কাউন্সিলের উচিত ছিল উনাদের আগে জানানো এবং সময় থাক্তেই উনাদের অন্য যায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা। প্রশ্ন হচ্ছে কাউন্সিল থেকে কি উনাদের যথেষ্ট আগে জানানো হয়েছিল ? কাউন্সিল বলছে জানিয়েছে ভদ্রমহিলা বলছেন তিনি জানতেন না।

এবার কাউন্সিল বলছে যেহেতু ওরা অনেক আগেই জানিয়েছে তাই তারা এইমুহুর্তে কোনোভাবেই সাহায্য করতে পারবে না। এখন উনাকে আবার কাউন্সিলের কাছে বাড়ী পাওয়ার জন্য নুতন করে আবেদন করতে হবে

সে যাই হোক, যারই ভূল হোক প্রশ্ন হচ্ছে এখন তাহলে মহিলা উনার স্বামী বাচ্চা নিয়ে যাবেন কোথায় ? তা একমাত্র একমাত্র হোমলেস (গৃহহীনদের) সংস্থা আছে যারা এরকম সময় দুঃস্থদের সাহায্য করে থাকে, মহিলা তাই করেছেন, কিন্তু হোমলেস সংস্থায় উনাকে সারাদিন বসিয়ে শেষে জানালো উনার উচিত ছিল নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাউন্সিলের কাছে যাওয়া এবং যেহেতু উনি কাউন্সিলের কাছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাননি তাই পরিস্থিতিতে ওরা কিছু করতে পারবে না।

মহিলা এই পরিস্থিতে কি করবেন বাচ্চাদের কোথায় নিয়ে যাবেন ওদের জিজ্ঞেস করায় ওরা বিকেল ৬টার নাগাদ একটা নম্বর দিয়ে বলল, এই নম্বরে ফোন করলে ওরা আজ থাকার মত ব্যবস্থা করে দেবে আর কালকে যেনো আবার ওদের কাছে আবার ফিরে যান।

নম্বরটা হচ্ছে ব্রেড এণ্ড ব্রেকফাষ্টের (সোজা ভাষায় সস্তার হোটেল), কিন্তু ওখানেও ফোন করলে নাকি ওরা বললো আজকে আর কোনো ফাঁকা জায়গা নেই সুতরাং ওরাও কিছু করতে পারবে না, শেষমেষ ওদেরকেও যখন জিজ্ঞেস করলেন এই অবস্থায় আর কোথায় যেতে পারেন বা কি করবেন তখন ওরা জানালো উনি পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন ।

সেই চেষ্টাও করা হলে হিমু ভাইয়ের ভাষায় জনৈক চুর্দিভাই মহাশয় জানালেন উনারাও (বাল ছিঁড়তে) কিছু করতে পারবেন না (উনারা নাকি এখন রাণীর জন্য বন্যার জলে ভেসে আসা মাছ ধরতে ব্যস্ত)

একটু বলে রাখা উচিৎ কারো সাথে তর্ক করার মতো ইংরাজী ভাষায় উনার এখনো সেরকম দখল নেই, তাই মনে হচ্ছে যে যা খুশী বলে যে যেভাবে পারছে তাড়িয়ে দিচ্ছে।

আমার হয়েছে মুস্কিল, এসব ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই বা কোনো আইডিইয়াই নেই, আগামাথা কিচ্ছু জানি না, কিন্তু কিছু একটা তো করতে হবে, এখানে আমার প্রচুর জানাশোনাও নেই।

তা যাইহোক বিপদে পড়লে সব সময় একজনকেই ফোন করি, লাগালাম ফোন লুৎফুরভাইকে। তিনি দিলেন আসল লোকের সন্ধান, ফোন লাগালাম ফারহান সাহেবকে, সব শুনে তিনি জিজ্ঞেস করলেন বাড়ীওয়ালা ইভিকশন লেটার দিয়েছে কি না আর দিয়ে থাকলে উনারা সেই চিঠি হোমলেস সংস্থাকে দিয়েছেন কি না? উত্তরে ভদ্রমহিলা যা জানালেন তাতে বুঝলাম হোমলেস সংস্থাকে সব জানানো হয়েছে এবং উৎখাত বা উচ্ছেদ পত্রও দেওয়া হয়েছে। ভদ্রলোক যা বললেন তাতে বুঝলাম এখন আর কাল সকালের আগে কিছু হবার নয়। উনিই আমাকে পরামর্শ দিলেন আজকের মত যদি উনাদের কোথাও থাকার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে কাল উনি কিছু একটা চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে ল্যোকাল সিটিজেন এডভাইসের (নাগরিক পরামর্শদাতা) লোকেদের সাথেও কথা বলে দেখতে পারেন।

ততক্ষনে ভদ্রমহিলা দিদিমনির বাড়ীতে ফোন করে জেনে নিয়েছেন বাচ্চাদের খবর। ক্লান্ত বাচ্চারা খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।

বাগানে রাখা জিনিষ পত্রগুলো টেনে টেনে আমার বাগানে নিয়ে আসা হলো, ঘরে যায়গা নেই তাই একান্ত মূল্যবান জিনিষ ছাড়া সবই বাইরে রাখা হলো, (আমার বাগান অবশ্য ঘেরা আর বাগানের দরজা তালা দেয়া যায়)।

আমরা নিজেরাই থাকি এক বেডরুমের ফ্ল্যাটে, বসার ঘরে পাতা হলো অস্থায়ী বিছানা। আড়ষ্ঠ মহিলাকে বারবার করে সান্তনা দিচ্ছিল বিথী, বলছিল কোনো চিন্তা না করতে। ভদ্রলোক নির্বিকার, যেনো কোনোকিছুতেই বিচলিত নন, উনাকে দেখে কে বলবে উনি মানসিক রোগগ্রস্ত ? তবে খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় উনার মধ্যে কেমন যেনো একটা ছটফটে ভাব যেনো অসহায় এক শিশু।

উনাদের শোবার ব্যবস্থা করে এবং আর দেরী না করে শুভ্ররাত্রি জানিয়ে আমরা আমাদের শোবার ঘরে চলে এলাম, ছেলে আমার ততক্ষনে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে। ভালোই চাপ গেলো আজ, তাই দেরী না ঘুমিয়ে এবার পড়াই ভালো হবে, কাল অফিস থেকে ছুটি নিতেও হতে পারে ?

দুজনে বিছানায় গেলাম ঠিকই, ঘুম আর কিছুতেই আসছে না।

মাথাটা এবার বিথীই আউলাইয়া দিল, ঘুমের গুয়া (বারোটা বাজা) মারা গেল। সন্ধ্যের সময় আমি নিজেই ভাবতে শুরু করেছিলাম, এবার ভাবাতে শুরু করালো বিথী, বিথীর প্রত্যেকটা কথা আবার জীবন্ত হয়ে হাত পা নাড়তে নাড়তে চোখের সামনে ভাসতে লাগলো বা চলমান ছবি হয়ে আমার মস্তিষ্কের নিউরনগুলোকে ক্রমশঃ নাড়া দিয়ে আমাকে জাগিয়ে তুললো।

মন দিয়েই নাকি চলছিল ভদ্রমহিলার স্কুলের কাজ, ফাদার ফিলিপ্স উনার একনিষ্ট কাজে ভীষন খুশী, আলাদা করে নিয়ে বুঝিয়ে বললেন এই সুযোগে যেনো ভালো করে ইংরাজী শেখার চেষ্টা করেন। শুরু হলো স্কুলে আয়ার কাজের সাথে সাথে নিজের জন্য লেখাপড়া, বাড়িতে এসে বড় মেয়ের দেওয়া হোমটাস্ক করা। হাসি পেলেও টাস্কগুলো করে ফেলতে হয়, মাষ্টারণী যে ভীষন কড়া।

খুঁটে খাওয়া ছেলে মেয়েগুলো এর মধ্যেই একটু বড়ো হয়েছে। মার কথার ভীষন বাধ্য বাচ্চারা এইটুকুন বয়সেই নিজেরা নিজেদের সবকিছু করতে শিখে গেছে, নিতে শিখে গেছে নিজেদের দায় দায়িত্ব। যেদিন মা আলু ভরতে চলে যায় সেদিন বড় মেয়েটি ছোটো ভাই বোনের হাতে ধরে স্কুলে নিয়ে যায়, সেদিন স্কুল থেকে বাড়ী ফিরে ফ্রীজ থেকে খাবার বের করে মাইক্রোওয়েভে গরম করে ভাই বোনেদের সাথে সাথে বাবাকেও খেতে দেয়।

কাজ সেরে বাজার করে মহিলার বাড়ী ফিরতে ফিরতে প্রায়দিনই বেশ দেরী হয়ে যায়। কিন্তু সবকিছুই যেনো কোনো অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা, সবকিছু আপন কোনো এক নিয়মে পালন হয়ে চলছে, কোথাও কোনো হেরাফেরি নেই। সবাই সবকিছু সময় মত করে চলেছে।

তথাকথিত অশিক্ষিত ভদ্রমহিলার ছেলেমেয়েদের সাথে কথা বলে আন্দাজ করা মুস্কিল হবে যে এরা এতো ভদ্রতা, মার্জিত রুচিবোধ পেলো কোথেকে? এদের সাথে কথা বলতে অনেক সময় আমার নিজের ঠাকুমার কথা মনে পড়ে যায়। মনে হয় এই মহিলাও খুব সাধারণ পরিবার থেকে আসেননি ( যার পরিচয় অবশ্য আমরা পরে পেয়েছিলাম)।

দ্বিতীয় বারের মতো ঘোর কাটলো ছেলের কান্না শুনে, ছেলের শেষরাতের দুধ খাবার সময় হয়েছে, পানীয় গরম রাখার ব্যগ থেকে দুধের বোতলটা বের করে ঘুমন্ত ছেলের মুখে দিলাম, কান্না বন্ধ করে ছেলে দুধ টানা শুরু করল। বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখি বিথী ঘুমিয়ে একেবারে কাদা।

পর্দার ফাঁক দিয়ে গলে আসা এক চিলতে আলো বলে দিচ্ছিল রাত্রি শেষ হতে আর বাকী নাই। ঘাড়ে মুখে একটু জল দিয়ে কোনোরকমে নিজেকে বিছানায় নিয়ে ফেললাম। শেষ রাত্তিরের চোখ জুড়িয়ে আসা ঘুম আমার সত্তাগুলোকে অসাড় করে দিয়ে যত্ত সব সুখ দুঃখকে সাথে করে নিঃশব্দের রাজ্যে পাড়ি দিল।

প্রতিবেশী (৪র্থ ও শেষ পর্ব)

ঘুম থেকে ডেকে তুললো বিথী। যথারীতি ছেলেকে চাইল্ডমাইণ্ডারের কাছে পৌঁছে দিয়ে ফারহান সাহেবকে আবার ফোন করলাম তার আগে ।

সবকিছু শুনে ফারহান ভাই বললেন কেস অলরেডী কম্পলিকেইটেড হয়ে গেছে, ফারহান ভাই কাউন্সিলকে ফোন করে জেনেছেন যে কাউন্সিল নাকি গত দুইমাস থেকে উনাদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছে, কিন্তু ভাড়াটেদের (আমাদের প্রতিবেশী) তরফ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয় নি। এখন আবার কোর্টে গিয়ে নূতন করে অ্যাপিল করতে হবে কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। কিন্তু তার জন্য কিছুদিন অন্ততঃ সময় দরকার এবং ততদিন উনাদের কোথাও থাকার ব্যবস্থা করতে হবে, অবশ্য উনি যদি কোথাও ভাড়াও থাকেন এবং কাউন্সিলের দোষ প্রমান হলে সেই টাকা ফেরত পাবারও আবেদন করতে পারেন।

এদিকে মহিলা বলছেন উনি কোন চিঠি পত্র কিছুই পান নি, শুধু সপ্তাহ তিনেক আগে কোর্ট থেকে একটা চিঠি পেয়ে স্কুলের ফাদার ফিলিপ্সকে দেখানোর সাথে সাথে উনি বলেছিলেন এটা বাড়ী ছাড়ার নোটীশ, তুমি শিগগিরই কাউন্সিলের সাথে যোগাযোগ করে তোমার এই পরিস্থিতির কথা জানাও।

দেরী না করে ভদ্রমহিলা গেছেন কাউন্সিলে কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি সেখানে, উল্টে ওরা উনাকে হোমলেস ডিপার্টমেণ্টে পাঠিয়ে দিল যেখান থেকে উনাকে সাহায্যের প্রতিশ্রতি দিয়েও শেষ পর্য্যন্ত সাহায্য করেনি বা করতে পারেনি এই বলে যে উনার ক্রাইটেরিয়া নাকি মিট করছে না।

সবাই হতাশ, বললাম, কিন্তু ফারহান ভাই কিছু একটা উপায় তো করতে হবে, এনারা তো আর রাস্থায় থাকতে পারবে না। কি করা যেতে পারে?

মুস্কিল হলো যে, আমাদের এলাকা ফারহান সাহেবের এক্তিয়ারে না পড়ায় আইনতঃ উনি আমাদের সাহায্য করতে পারেন না। ফারহান সাহেবের এলাকায় অন্য কাউন্সিল পড়ে। পড়া গেল এক মহা বিপদে।

এবার ফারহান সাহেব একটা আইডিয়া দিলেন আর সেটা হলো আমি যদি প্রতিবেশী হয়ে উনাদের নিয়ে লোকাল সিটিজেন এডভাইসের (যেখানে এরকম লোকেদের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে) কাছে যেতে পারি বা সোজা হোমলেসেও গিয়ে ওদের সাথে কথা বলে দেখতে পারি।

ঠিক করলাম আমিই ঊনাদের নিয়ে যাব। অফিসে ফোন করে জানিয়ে দিলাম কোন এক বিশেষ কারনে আমি আজ অফিসে যেতে পারছি না। ইয়েলো পেজে ফোন করে লোকাল সিটিজেন এডভাইসের অফিসের ঠিকানা নিলাম। ভদ্রমহিলা বাচ্চাদের খোঁজ নিয়ে জানলেন মিসেস লোরেন্স (স্কুলের দিদিমনি যার বাড়ীতে ওরা রাতে থেকেছে) ওদের স্কুলে নিয়ে চলে গেছেন।

সিটিজেন এডভাইসে প্রায় তিন সাড়েতিন ঘণ্টা বসার পর আমাদের বললো হোমলেস থেকে ঊনাদের থাকার ব্যবস্থা না করার কোনো কারণ নেই, সুতরাং আমরা যেনো অবশ্যই হোমলেসে তাড়াতাড়ি চলে যাই।

প্রায় দুটো বাজে, খিদের চোটে পেটে ইঁদুর ডন মারছে, দেরী না করে স্যাণ্ডুইচ খেয়েই উনাদের নিয়ে ছুটলাম হোমলেসে।

ওখানে আমাদের বসিয়ে রাখলো আরো দুঘণ্টা। এলেন এক মহিলা, উনাদের ডেকে নিলেন, সাথে গেলাম আমিও, সবকিছু বলার পর আবার সেই এক কথা “আগে আসো নি কেন, এখন আর কিছু করা যাবে না, এখন নূতন করে এপ্লাই করতে হবে”।

আমি মুখ খুললাম তাহলে এতদিন উনারা কোথায় থাকবেন, উনাদের কোথাও যাবার মত কোনো জায়গাও নেই তাছাড়া উনাদের কাছে এতো টাকাও নেই যে উনারা কোনো হোটেলে বা কোথাও বাসা ভাড়া করে থাকতে পারেন।

আমার এইসব কথা আর প্রশ্ন শুনে সাদা চামড়ার মহিলার ভ্রুযুগল প্রথমেই কুঁচকে গেল, কে এই হনু আর উনাদের সাথেই বা আমার কি সম্পর্ক? জানতে চাইলে উত্তরে বললাম আমি উনাদের প্রতিবেশী, ভদ্রমহিলার হাসব্যণ্ড মানসিক ভাবে অসুস্থ তাই প্রতিবেশী হিসেবে এবং উনাদের সাহায্য করার একান্ত সদিচ্ছা নিয়েই আমি এখানে এসেছি।

মনে হলো মহিলার আমাকে ঠিক পছন্দ হয় নি (আসলে বোধহয় ওদের সাথে মাথা তুলে ওদের ভাষায় যুক্তির কথা বললে ওরা ঠিক মেনে নিতে পারে না, মনেহয় কেঊই পারে না) প্রত্যেকটা কথায় ভদ্রমহিলা গজগজ করতে লাগলেন আর বিড়বিড় বলতে লাগলেন কোথকে কোথকে সবাই চলে আসে।

ঠাণ্ডা মাথায় আমি বললাম উনার এসব বলা ঠিক হচ্ছে না আর উনি এখানে কাজই করছেন এদের এধরনের সমস্যা দেখার জন্য এবং এরকম দুঃস্থ লোকেদের সাহায্য করার জন্যই উনাকে এখানে রাখা হয়েছে, এসব বলার জন্য নয়। উত্তরে মহিলা বললেন উনাকে আমার শেখাতে হবে না এবং আমার এতই যদি দরদ তাহলে আমার বাড়ীতে রেখে দিই না কেন? কুবুদ্ধি খেলে গেলো মাথায়, মহিলাকে আরো রাগিয়ে তুলতে চাইলাম। কথায় আছে, কথায় কথা বাড়ে মন্থনে বাড়ে ঘী, মহিলা বিচ্ছিরি কথা বলতে শুরু করলেন, কিছুক্ষন শোনার পর বললাম এবার হয় তোমার ম্যনেজার কে ডাকো নাহয় আমিই পুলিশ ডেকে মানহানির মামলা করবো।

গো টু হেল, ডু হোয়াটেভার ইয়ু লাইক।

আমার মোবাইলে রেকর্ড করা কণ্ঠস্বর বেজে উঠলো, নিমেষে সাদা মুখ পাংশুবর্ণ। আবারো ম্যানেজার ডাকতে বললাম এবং অভয় দিলাম উনার বিরুদ্ধে আমার কোনো অভিযোগ নেই বা করবো না। ছলের আশ্রয় নিয়েছি বলে খারাপ লাগলেও ভাবার তখন সময় ছিল না।

ম্যানেজার ন্যাসেল সিদালি কে (অমায়িক মানুষ) সবকিছু খুলে বলার পর, আমাদের কাছে রীতিমত মাপ চেয়ে সাথে সাথে কয়েকটা যায়গায় কি সব ফোন করলেন, কি সব কথা হলো বুঝলাম না। ফোন রেখে আমাকে বললেন মিঃ ডাইশ, (দাশ হয়েছে ডাইশ আর দেবোত্তম কে বলে দে-বটম, ভাবি কতজন কে যে আর বটম দেবো) তুমি কি আজকের মত কষ্ট করে তোমার বাড়ীতে উনাদের থাকার জায়গা দিতে পারবে, তাহলে আমি কথা দিচ্ছি আগামী কালের মধ্যেই আমি এনাদের থাকার একটা ব্যাবস্থা করে দিতে পারবো।

মনে মনে ভাবলাম একটাই তো দিনের কথা আর এতো বড় ম্যানেজার বলছে যখন এবার নিশ্চয়ই উল্টোপাল্টা হবে না, তবু বললাম আমাকে তো কাল কাজে যেতে হবে তাই উনি যদি কষ্ট করে কোনোরকম কনফার্মেশন কিছু দিয়ে দেন। আপনার কোনো চিন্তা নেই আপনাকে আসতেও হবে না। আমি নিজে এই কেস ফলোআপ করবো। আমি নিজে এমিলিকে বলে দিচ্ছি সব হয়ে যাবে।

দেরী করলাম না। আমার প্রতিবেশীনিকে সবকিছু বুঝিয়ে বললাম যে আজকের মত আমাদের ওখানে থাকতে হবে।

বাড়ী ফিরতে ফিরতে মিসেস লোরেন্সকে ফোন করে সব কিছু খুলে বললাম। উনি বললেন সক ঠিক আছে তবে ছোট মেয়ে বাপ মাকে না দেখতে পেয়ে একটু আপসেট আর প্রয়োজনে ওরা আজ রাতেও উনার বাড়ী থাকতে পারে। সন্ধ্যের পর উনাদের বাড়ী যাবো বলে ফেরার পথে আমার ছেলেকে চাইল্ডমাইণ্ডারের বাড়ী থেকে নিয়ে নিজের বাড়ী ফিরলাম।

বিথী অবশ্য আজ বুদ্ধি করে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এসেছে। চা খেয়ে চলে গেলাম মিসেস লোরেন্সের বাড়ী। ছোট মেয়েটা মা বাপকে দেখে হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিল। ঠিক হলো ছোট মেয়েটি মা বাপের সাথে আমাদের বাড়ী চলে আসবে। ওখানে আর দেরী না করে বিদায় নিয়ে বাড়ীতে ফিরে এলাম।

খাওয়া দাওয়া শেষ। বসার ঘরে এসে বসলাম, উনাদের বিছেনা পাতা হবে ভদ্রমহিলা বার বার করে বলছেন আজ এই বিদেশ বিভুঁইয়ে আমরা না থাকলে উনাদের যে কি হতো যদিও উনাদের এর থেকে খারাপ খারাপ অভিজ্ঞতা আরো প্রচুর আছে তবে সেগুলো ছেলে মেয়েদের জন্ম হবার আগে এবং পৃথিবীর নানা দেশে।

কথায় কথায় ঊঠে এলো ভদ্রমহিলার দেশের বাড়ীর কথা, শুরু হলো আমার আবার ঘোর লাগা। কয়েকশ বছর আগে ভারতের তামিলনাড়ু থেকে শ্রীলংকার জাফনা শহরে মাইগ্রেট করা। বাবা ছিলেন কলেজের শিক্ষক। চার ভাই বোনেদের মধ্যে উনিই সবার বড়। দুনম্বর ভাই বাধ্য হয়েই এল টি টি ই তে যোগদান করে, তাছাড়া কোনো উপায় নেই। সিংহলিজদের (শ্রীলংকার আসল অধিবাসীদের সিংহলিজ বলা হয়) সাথে গত কয়েক দশক ধরে চলছে লড়াই কয়েকশ বছর আগে ভারতের তামিলনাড়ু থেকে মাইগ্রট করা তামিল শ্রীলংকানদের। জাফনা শহরটি এল টি টি ই দের জায়গা বলে বিখ্যাত। এল টি টি ই রা বিখ্যাত নারী, পুরুষ, শিশু আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী বলে।

সেই দাদাকে খুঁজতে এসে বাবাকে শ্রীলংকার মিলিটারীরা গুলি করে মারলো, মহিলাদের অবশ্য ওরা ছেড়ে দেয় নি, ভাবলাম পৃথিবীর সব জোয়ানরাই (মিলিটারী) কি এরকম হয়। শাসক শোষন করেই চলেছে। যেনো জোর যার মুলুক তারই।

তারপর, জাফনায় কাজ করতে যাওয়া কোনো এক এনজিওর সাহায্যে প্রথম চলে আসা ফ্রান্সে, তারপর ইটালী সুইজারল্যাণ্ড হয়ে অবশেষে এই যুক্তরাজ্যে (ইউনাইটেড কিংডম) আসা। মাঝখানে স্কটল্যণ্ডেও অবশ্য কিছুদিন থাকতে হয়েছিল। আজ আঠাশ বছর হলো দেশ ছাড়া, আজো যাওয়া হয় নি দেশে আর মনেও হয় না কোনোদিন আদৌ যাওয়া হবে বলে। এক বোন ছাড়া আর কোনো ভাই বোনের খোঁজ নেই।

আমার যে কি হয়েছে !!! খালি ঘোরেই চলে যাই, তৃতীয় বারের মত ঘোর ভাঙ্গলে দেখি সোফায় বসা ভদ্রমহিলার কোলেই মেয়েটি যে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে কেউ বুঝি নি। কখন যে কোন এক ফাঁকে বিথী ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে আবার এসে বসেছে। ভদ্রলোক ঠায় নির্বিকার বসে আছেন, যেনো কিছু ভেবেই চলেছেন।

ঘড়ীর দিকে তাকিয়ে দেখি রাত একটা বেজে পঁচিশ। বুঝলাম এসাইলাম সিকার হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের গল্প শুনতে গেলে আজ সারা রাত কেন কয়েক রাতও বোধহয় যথেষ্ট নয়, তাছাড়া সেগুলো কোনোভাবেই হৃদয়গ্রাহী সুখকর হবে না আর তা শুনে মন আরো খারাপ করার কোনো মানে হয় না। আরো কোনো একদিন শোনা হবে বলে থামালাম।

কাল সকালে উনাদের যেতে হবে তাই সবারই এখন বিছানায় যাওয়া উচিৎ বলে উনাদের শুতে দিয়ে নিজেকে টেনে নিয়ে চললাম বিছানায়। শেষ না হওয়া যুদ্ধের কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম

পরদিন অবশ্য উনাদের অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হলো এবং বলা হলো অতি শীঘ্রই উনাদের পাকাপাকি ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

শুরু হলো আবার বাধাঁধরা একঘেয়ে ম্যান্দামারা জীবন। এরকম চমক অবশ্য জীবনে বার বার আসে না। ভাবি এত আরামে থেকেও সামান্য পান থেকে চুন খসলেই ভাবি মাথায় এই বুঝি পাহাড় ভেঙ্গে পড়লো আর সারা জীবন এতো বড় পাহাড় মাথায় নিয়েও এরা অভিযোগ অনুযোগের ধারও ধারে না। হে সর্বশক্তিমান এদের আরো সহ্য করার ক্ষমতা তুমি দাও।

পুনশ্চ - তাড়াহুড়ো করে শেষ করলাম, হয়তো একটু বড়োও হয়ে গেছে, চেষ্টা করেছি যথাসম্ভব বাহুল্য বর্জন করতে, হয়ত কিছুটা পেরেছি, কিছু পারি নি, কিছু কিছু জায়গায় বোধহয় গলাটিপে দিয়েছি, তবু চেষ্টা করেছি।
একটা জিনিস অবশ্য লক্ষ্যনীয়, ভদ্রমহিলার অতীত আমি তিনবার তিনজনের দৃষ্টি দিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি, প্রথমে নিজের, তারপরে বিথীর শেষে মহিলার নিজের। বর্তমানের সাথে অতীতের এই মিলমিশটা নিয়ে একটা এক্সপেরিমেণ্ট করতে চেয়েছি, হয়তো ঠিক হয়নি, হয়তো বা হয়েছে।


মন্তব্য

তানবীরা এর ছবি

দাদা, তাড়াহুড়া করে শেষ করেছেন, সেটা প্রচন্ডই বোঝা যায়। শেষ পর্বটা আর একটু বিশদ হওয়া দরকার ছিল।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

দিদি, আমি লজ্জিত, আমার আরো একটু সময় নিয়ে লেখা উচিৎ ছিল, আরো একটু সৎ থাকা উচিতৎ ছিল লেখার প্রতি।

------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

পুতুল এর ছবি

ভদ্র মহিলা আশ্রয় পাবার জন্য যত ব্যকুল ছিলেন, লেখাটা শেষ করার জন্য আপনিও তত ব্যকুল ছিলেন।
হায়রে মানুষের কষ্ট!
আপনি জানেন কী ভাবে লিখতে হয়। কিন্তু লেখা বড় হয়ে যাবে সে ভয়ে থাকেন কেন!
বিথীবৌদি আপনার ছেলে আর আপনাকে ধন্যবাদ।
পৃথিবীর সব প্রতিবেশী যেন আপনাদের মত হয়।

**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

পুতুলভাই, আপনাদের সবাইকেও অসংখ্য ধন্যবাদ

তবে আসলেই আমি ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলাম, একটু বেশী ইমোশনাল হলে যা হয় আর কি।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

অমিত আহমেদ এর ছবি

লেখা পড়ে মন খারাপ হয়েছে। অচেনা পরিবারের জন্য আপনি যা করলেন দাদা... আমার শ্রদ্ধা নেবেন।

অপ্রাসঙ্গিক: তামিলদেরকে দেখেছি শ্রীলংকার খেলায় বিপক্ষ দলকে সমর্থন দিতে। নিজেদেরকে বলে তামিল, লংকান বলে না কখনোই। বল্লেও সেটা শুধরে দেয়। টরন্টোতে সবচেয়ে দাঙ্গাবাজ গ্যাংগুলো তামিলদের। এখানে শরনার্থী আইন নমনীয় বলে সেই সুযোগে দলে দলে আসে। এখন অবশ্য কানাডা একটু কঠোর হয়েছে। আমি ক'বছর আগে ওদের এলাকায় কিছুদিন ছিলাম। ওদের নিজেদের মধ্যেই গোলাগুলি করতে দেখেছি। মাঝে কানাডাতে অনেক তামিল এসেছিলো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে। শ্রীলংকা-পাকি পাসপোর্টে ভিসা পায় না। ভারতীয় পাসপোর্ট পাওয়া যায় না। তাই ভরসা বাংলাদেশি পাসপোর্ট।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

আমাদেরও বিনম্র শ্রদ্ধা নেবেন। আপনাদের সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা

প্রশ্ন ঃ - শ্রীলংকানরা বাংলাদেশি পাসপোর্ট পায় কি করে !!!
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

অমিত আহমেদ এর ছবি

টাকা থাকলে বাংলাদেশের কি পাওয়া যায় না বলেন। আর তো পাসপোর্ট!

কানাডায় বাংলাদেশের প্রাক্তন দূত অসংখ্য পাসপোর্ট বেচে বহিষ্কৃত হয়েছেন শুনেছি।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

রণদীপম বসু এর ছবি

না গো দাদা, এতো তাড়াহুড়া করার দরকার ছিলো না। না হয় আরেকটা পর্ব বাড়তো ! আপনি কি আমাদেরকে এতোটাই খারাপ মানুষ ভাবলেন ! লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে এখন !

আপনার এবং আপনার পরিবারের মানবিকবোধকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি আমি।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

লেখার প্রতি আমার সততা না রাখায় আমি লজ্জিত এবং দুঃখিতও। তবে চেষ্টা করবো ভবিষ্যতে।

আপনাদের সবার সাথেই সুখ মিশ্রিত আনন্দ ভাগ করে নিতে কি যে ভালো লাগছে ।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।