আওয়ামী লীগের সেকুলারতলে

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি
লিখেছেন ধ্রুব বর্ণন (তারিখ: রবি, ১০/০৪/২০১১ - ৩:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মুসলমানের অধিকার আছে তার ধর্মকর্ম পালনের। তেমন হিন্দুর আছে অধিকার তার নিজের ধর্ম পালনের। আহমদিয়াদেরও সে অধিকার সমানই আছে। হিন্দু বা মুসলমানের চাইতে কম নাই। কিন্তু বাউলের কি হবে? তার কি এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ার অধিকার নাই? নামাজ পড়ার অধিকার মুসলমানের আছে মানে কি নামাজ পড়ার অধিকার খালি মুসলমানেরই আছে?

শুনেছিলাম দেশ সেকুলার হয়ে উঠছে। সে নিয়ে মৌলবাদীদের হা-হুতাশ। তবে লক্ষণীয় যে, রাষ্ট্রকে সেকুলার করার চেষ্টা মানে কিন্তু রাষ্ট্র এখন ধার্মিক আছে। রাষ্ট্র নিজে ধর্মকর্ম পালন করে। আর রাষ্ট্র নিজে ধর্ম করে বলে অধর্মকে সে প্রতিহত করে। রাষ্ট্রে অধার্মিকের অধিকার নাই। রাষ্ট্রে তো তাইলে ধার্মিকেরও অধিকার নাই!

অধিকার মানে কি? কোনো কিছু করার অধিকার বলতে কি বুঝায়, যখন সেইটা না করার অধিকার আমার নাই? তারে তো অধিকার বলে না। বলে বাধ্যকতা। কথা না বলার অধিকার কোথায়, যেখানে কথা বলার অধিকার থাকে না? নিজ অধিকারে তো নীরব নই। বলতে পারি না বলেই তো না বলতে বাধ্য হই।

তেমনই, যে দেশে নাস্তিকের নাস্তিক্যের অধিকার নাই, সে দেশে মুসলমানেরও মুসলমানিত্বের অধিকার নাই। মুসলমান তার ধর্ম পালনের অধিকার রাখে না। কারণ সে বিধর্ম পালনের অধিকারও রাখে না। ধর্ম তারে পালন করতেই হয়। পালন করতে সে বাধ্য। নইলে নীরব থাকতে হয়। এইসবই হলো বাধ্যকতা।

ফলে নাগরিকের ধর্মাধর্ম পালনের অধিকার থাকার জন্যে রাষ্ট্র নিজে ধর্ম পালন করলে চলে না। রাষ্ট্র নিজে ধর্ম পালন করলে ধার্মিকের ‘অধিকার’ বিনাশ হয়। পালনে সে তখন বাধ্য হয়। রাষ্ট্র মুসলমানের ধর্ম পালনের অধিকার রক্ষা করবে, কারণ সে নাস্তিকের নাস্তিক্যের অধিকারও রক্ষা করবে। সেইটারেই মনে হয় লোকে বলে সেকুলারিজম। কিন্তু সেইটাই কি আওয়ামী লীগের সেকুলারিজম? আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমে তো রাষ্ট্র আর ধর্ম আলাদা না। বরং আরও বেশি মিলমিশ করে। টিভিতে কোরান, বেদ, বাইবেল, ত্রিপিটক সবই পাঠ হয়। কি ক্ষতি হয় তাতে?

তাতে মানুষ চারটা ধর্মের মধ্যে আটকা পড়ে যায়। ব্যক্তির বৈচিত্র্য অস্বীকার যায়। ১৫ কোটি মানুষ ১৫ কোটি রকম হতে পারবে না, বলে দেওয়া হয়। ১৫ কোটি মানুষ হবে খালি চার রকম। কেন? রাষ্ট্রে কি আর রকম নাই? নাকি আর রকম থাকা জায়েজ নাই? যে রাষ্ট্রে মুসলমানে মুসলমান হতে বাধ্য হয়, ওই দেশে মুসলমানের নামাজ কি আদৌ কবুল হয়?

আওয়ামী লীগের সেকুলারিজম হলো একটা চার ধর্মের উপনিবেশ। সে আরও ভয়ানক। সে ব্যক্তির নিজস্বতাকে অস্বীকার করে। চার ধর্মকে প্রধান করে। তারপর আর যে যে বাড়তি অধিকার চাইবে, আহমদি, জৈন, পাহাড়ি, তাদের জন্যে ছোট ছোট আলাদা আলাদা ব্যতিক্রম তৈয়ার করা হবে। মানে লড়াই ছাড়া অধিকার তুমি আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমে পাবে না। একটা একখণ্ড নিয়ম করা যাবে না, যে নিয়মে সবারই সাধারণ অধিকার আছে। আর সংঘবদ্ধ গোষ্ঠির ছায়াতলে নাই এমন একক ব্যক্তিসত্তারও কোনো অধিকার নাই। কারও না কারও তলে তোমারে যাইতেই হবে। একা একা নিজের বুঝে নিজের নিয়মে নির্বিঘ্নে জীবন-আচার পালন করবা, তো তুমি মারা খাবা। সেই সেকুলারিজমে আবার বাউল বা নাস্তিকের অধিকার? দূর ছাই! আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমে উৎসাহীরা কান্দো বইসা বইসা।

রাজবাড়িতে বাউলেরা গান-বাজনা, আচার-প্রচার করতেছিল নিজের ঘরবাড়িতে। আওয়ামী লীগের মুসলমান নেতারা তাদের মসজিদে ধরে নিয়ে গিয়ে তওবা পড়িয়ে দিয়েছে। লম্বা চুল আর গোঁফ কেটে দিয়েছে। মানে একরকম মুসলমানি হয়ে গেছে। কারণ বাউলেরা "... মুসলিম ধর্মীয় রীতি না মেনে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জিন্দা ফয়তা ও এক ওয়াক্ত নামাজ আদায়সহ অনুষ্ঠানের নামে মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করছিল।" মুসলমানের ধর্মীয়-রীতি বাউলরে মানতে হবে কেন? উলু ধ্বনি দিলেও কি মুসলমানের ধর্মীয় রীতি না মানার অভিযোগ আসতো আওয়ামী লীগের মুসলমানদের থেকে? আসতো না। কারণ আওয়ামী লীগের সেকুলারিজম হল চার প্রধান ধর্মের উপনিবেশ। নামাজ পড়লে তাই মুসলমানের নিয়মেই পড়তে হবে। কারণ ধর্মাধর্ম আচারবিধি পালন এখানে অধিকার না। চার নিয়মের এক নিয়মে চলা এখানে একটা বাধ্যকতা।

নিজের ঘরে আমি কার সাথে ফুর্তি করবো, সে বলার অধিকার রাষ্ট্র রাখে না। কিন্তু যারা সেইসব মানে না, বরং জোরপূর্বক মুসলমানি দেয়ার মন মানসিকতা রাখে, তাদের কাছেই রাষ্ট্রের ঠিকাদারি আমরা দিয়ে রেখেছি। ফলে নিজের ঘরে কিংবা নিজের মনের ঘরেও যা করতেছেন সাবধানে করেন। আল্লার কাছে মাফ চাইলেই খালি হবে না, আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমের কাছেও মাফ চাইতে হবে।


মন্তব্য

গরিব মানুষ এর ছবি

কপট ধার্মিকেরা যখন ব্যাক্তি স্বার্থে রাজনীতি করে তখন তা ধর্ম এবং রাজনীতি দুটোরই ক্ষতির কারন হয়। আওয়ামীলীগে এমন প্রচুর আছে, শেখ হাসিনা নিজেও সেই রকম, তার মতো ধর্মান্ধ মানুষের আর যাই হোক আওয়ামীলীগের প্রধান হবার যোগ্যতা থাকেনা। উনি এখনো ধর্মকে নিজের ব্যাক্তিগত বিষয় বলে মনে করতে পারেন নাই, তাই কোরআন অ হাদিস বিরোধী কিছু করতে চান না, তিনি সংবিধান থেকে বিসমিল্লাহ সরাতে চান না, তাহলে সংবিধানের বাঁকি অংশ এডিট করে লাভ আছে? বাউলদের যা করা হয়েছে সেটা শুধু সামাজিক ভাবে খারাপ নয় এটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ধর্ম কতটা ঠুনকো আঘাতেই ভেঙ্গে পড়ে।! বাউলদের জন্য সহমর্মিতা রেখে গেলাম আর বলে গেলাম, উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হতে হলে ধর্মকে আলাদা করতেই হবে রাষ্ট্র থেকে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

তারাপ কোয়াস এর ছবি

নিজের ঘরে আমি কার সাথে ফুর্তি করবো, সে বলার অধিকার রাষ্ট্র রাখে না। কিন্তু যারা সেইসব মানে না, বরং জোরপূর্বক মুসলমানি দেয়ার মন মানসিকতা রাখে, তাদের কাছেই রাষ্ট্রের ঠিকাদারি আমরা দিয়ে রেখেছি।

যথার্থ পর্যবেক্ষণ।

বর্তমানে চলছে নিও আম্লীগ সেকুলারীজম, সামনে হয়তো আসবে হার্ডকোর বিম্পি আল্ট্রা সেকুলারীজম তারপর আবার
আম্লীগ... মাঝে কিছু বোকা অধার্মিক স্বপ্ন দেখে রাষ্ট্র একদিন সত্যিই সেকুলার হবে, কারও মনের ঘরের উপর খবরদারি করবে না!


love the life you live. live the life you love.

স্বাধীন এর ছবি

চমৎকার লিখেছো। ধর্ম না করার অধিকারই যদি না থাকলো তাহলে সকলের অধিকার কিভাবে নিশ্চিত হয়? খবরটি চোখে পড়েনি আগে, নজরে আনার জন্য ধন্যবাদ। সেকুল্যার মানুষের প্রতি বিদ্বেষ অনেক কথিত ধার্মিকের মাঝেই আছে। এই বিদ্বেষ যে শুধু আওয়ামী গুন্ডাই পোষণ করে তা কিন্তু নয়, অনেক কথিত শিক্ষিতের মাঝেও রয়েছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ইসলাম বিদ্বেসী কাজ করার দায়ে ২৮জন বাউল এর চুল দাড়ি কাটা হলো। কিন্তু ইসলাম নিয়ে ব্যবসা করার দায়ে কেন গুআ, আমিনী, নিজামী আর সাঈদীর দাড়ি কাটা হবে না জাতি তা জানতে চায়।

সুপ্রিয় দেব শান্ত

রায়হান আবীর এর ছবি

চলুক

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

প্রতিবাদী লেখা। ভালো লেগেছে।

একজন পাঠক ১ এর ছবি

ভাইয়া,
বোঝলাম, বাউলদের উপর অমানবিক অপমানকর নির্যাতন আর আওয়ামীলীগের ধর্মপ্রীতিতে আপনি হতাশ। ঠিক আছে। কিন্তু এ কথা বলতে গিয়ে আপনি যে সকল যুক্তি ব্যবহার করেছেন তার একটাও তর্কে টিকবে বলে আমার মনে হচ্ছে না। একেবারে বাচ্চামি হয়ে গেলো এ লেখায় মন খারাপ

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বাচ্চাই তো হইতে চাই।

কিন্তু যুক্তি যদি তর্ক করার পরে গিয়াই না টেকে, তারে তর্ক করার আগেই না টিকার ঘোষণা দিয়া রাখার প্রয়োজন পড়ে ক্যান? তর্করে না পাঠাইয়া তর্কের ছায়ারে পাঠাইয়া যুক্তিনাশের এই চেষ্টা ক্যান ভাইয়া?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সেকুলারিজমও দিন দিন একটা ধর্ম হইয়া উঠিতেছে বাংলাদেশে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দুটো ঐতিহাসিক সত্য আছে
১। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে 'মুসলিম' খসে গিয়ে আওয়ামী লীগে রূপান্তরিত হওয়া। সময়টা ১৯৫৫, ধর্মরাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র সাতবছর পর। কমিউনিষ্ট পার্টি ব্যতীত মধ্যপন্থী জাতীয়তাবাদী ঘরানার একমাত্র গনভিত্তিক রাজনৈতিক দলের জন্ম যেখানে অমুসলিমদের প্রবেশ সম্ভব।
২। প্রবল ধর্মাচ্ছন্ন একটা জনপদে অন্ততঃ তাত্বিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহনযোগ্য করে তোলা সম্ভব হয়েছিলো যে কয়টি অনুঘটকের প্রভাবে, এই দলটির মুলনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার সংযোজন তার একটি।

কিন্তু এই ঐতিহাসিক সত্যদুটোর বিপরীতে আরেকটি রাজনৈতিক সত্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কখনোই সেক্যুলার রাজনৈতিক দল নয়, যেরকম সেক্যুলারিজম ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও ব্যক্তিস্বাধীনতার নিশ্চয়তার জন্য জরুরী। তবু সেক্যুলারিজমের দায়/মালিকানা আওয়ামী লীগেরই, যেমন স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় সমাজতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের অথচ আওয়ামী লীগ সমাজতন্ত্র বিরোধী তার শুরু থেকেই।

যে ঘটনাটি ঘটেছে, এটি নতুন কিছু নয়। দুশোবছর ধরেই বে-শরা বাউলরা শরীয়তপন্থী মুসলমান এবং উচ্চবর্ণের হিন্দুদের আক্রমনের শিকার হয়েছেন এই জনপদে। মনসুর হেল্লাজ খুন হয়েছেন আরো আগে, তোকারামকে জ্বলন্ত পুড়িয়ে তার ছাই নদীতে ভাসিয়েছেন ব্রাম্মনেরা, ইউরোপ ডুবেছিলো প্রবল অন্ধকারে।

কোন ধর্মই স্বাতন্ত্র্য ও ব্যতিক্রমকে স্বীকৃতি দেয়না। এটা প্রতিটি ধর্মেরই মৌলিক সমস্যা। এখানে ধর্মের সাথে হাঁটু বাহিনীর একটা মিল পাওয়া যায় :)।
ধর্মতন্ত্র ও সামরিকতন্ত্র- যতোদিন এই দুটোর উপযোগ আছে ততোদিন হাসিনা,খালেদা( এবং অন্য সকলেই) তসবি জপবে, ক্যান্টনমেন্টে সিজদা দেবে- পরিনামে বাউলদের চুল দাঁড়ি আরো উপড়ে যাবে, বিনা বিচারে মানুষ হত্যার লাইসেন্স থাকবে হাঁটুরেদের।

ইউরোপ আশা জাগায়, হয়তো একদিন আফ্রো-এশিয়ার দেশগুলোতে ও মানুষের স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতার ন্যুনতম স্বীকৃতি আদায় হবে।

আপনার এই লেখাটা দরকার ছিলো এই সময়ে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আওয়ামী লীগ কখনোই সেক্যুলার রাজনৈতিক দল নয়, যেরকম সেক্যুলারিজম ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য ও ব্যক্তিস্বাধীনতার নিশ্চয়তার জন্য জরুরী। তবু সেক্যুলারিজমের দায়/মালিকানা আওয়ামী লীগেরই, যেমন স্বাধীনতা পরবর্তী রাজনৈতিক বাস্তবতায় সমাজতন্ত্র ও আওয়ামী লীগের অথচ আওয়ামী লীগ সমাজতন্ত্র বিরোধী তার শুরু থেকেই।

কথা সত্য!

অপছন্দনীয় এর ছবি

পোস্টে চলুক

যে রাষ্ট্রে মুসলমানে মুসলমান হতে বাধ্য হয়, ওই দেশে মুসলমানের নামাজ কি আদৌ কবুল হয়?

এই কথাটা বুঝলে তো অনেক সমস্যা নিজেই সমাধান হয়ে যেত।

ইশান এর ছবি

এত ধর্ম ক্যান বানাইলা মালিক,কি দরকার আছিল???!!!

লেখাটা ভাল লাগল চলুক

রণদীপম বসু এর ছবি

আমরা এখনো ধর্মীয় সীমাবদ্ধ পরিচয় পেছনে ফেলে মানুষ হতে পারিনি শুধু নয়, এই না-পারার লজ্জাবোধও হারিয়ে ফেলেছি।
পোশাক পরা উলঙ্গ প্রাণীই শুধু, এখনো মানুষ নই। কবে হবো তাও জানি না।
খুবই উপযোগী একটি লেখা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সবুজ পাহাড়ের রাজা. এর ছবি

সময়োপযোগী লিখা। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

শরিয়তে আর মারেফতে নাড়াইতো বহু দিনের। আম্লীগ ক্ষ্যামতার ব্যাবহার করছে শরিয়ত ওয়ালারা। অবশ্য মাল-মসল্লাযে আম্লীগের মইধ্যে নাই, এইটা জোর দিয়া বলার সুযোগ নাই। আফায় একবার তছবি টিপা যেই একখান পোজ দিছিল, অইজো ভুলিনাই।

তয়, আম্লিগী সেকুল্যারিজম বাউলের দাড়ি ধইরা টান দিয়ে বইলা মনে হয় না। খাজা বাবার উরসে মাইক পাইতে আম্লীগ আমলেই যা সুবিধা দেহি। বিনপির আমলে উহা কদাচিৎ দেহা যায়। বাকি কতা সইত্য।

mahmud এর ছবি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আপনার লেখাটা অর্ধ সত্য। কারন, এই লেখা পড়ে, একজন মানুষ ভাবতে পারে যে বাংলাদেশের অন্যান্য সবদল সেকুলার কিন্তু আওয়ামি লীগ-ই শুধু সেকুলার হতে পারল না। কিন্তু আদতেই কি তাই?
আর একটি দলের একজন পাতি নেতা কোন অন্যায় করলে সেটা দিয়ে পুরো দলের আদর্শের বিশ্লেষণ করা কি যুক্তি সঙ্গত হয়?
এমন যদি হতো, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে এটা করা হয়েছে বা আওয়ামি লীগের সব নেতাই এটা সাপোর্ট করছে তাহলেও পুরো দলকে দায়ী করা যেতে পারত!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্ম কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যাবহার শুধু অপচেষ্টাই না সংকীর্ণমনা রাজনৈতিক চিন্তা চেতনারও পরিচয়, সমগ্র পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে,ধর্ম নিয়ে এখন বাগারম্বর দিনে দিনে কমছে,ব্রিটেনে এখন দুই তৃতীয়াংশ মানুষ নিজেকে কোনো তথাগত ধর্মের অনুসারী মনে করেনা,শুধু ব্রিটেনই না এরকম তথ্য পাওয়া গেছে আরও কিছু উন্নত দেশে,যেখানে পুরো দুনিয়াতে মানুষের আসল পরিচয়ের মাপকাঠি এখন তার কাজ,সমাজে তার অবদান,সেখানে আজও আমাদের দেশে ধর্মকে একটা বড় ফ্যাক্ট করে রাখাটাকে আমি শুধুই রাজনৈতিক উদ্দেস্য হাসিলের ষড়যন্ত্র মনে করি,আমরা স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও সেই একই বলয়ে ঘুরে চলেছি,সেটা থেকে বাইরে আসার কোনো ইচ্ছা আমাদের ক্ষমতাধরদের আছে বলে আমার মনে হয়না,তারা সাধারণ মানুষকে "কুয়োর ব্যাং" করে রাখাটাকেই নিরাপদ মনে করে বলে আমার বিশ্বাস ...

-অর্ফিয়াস

দুর্দান্ত এর ছবি

হতাশ হয়েছেন বোঝা গেল। সহানুভূতি। কিন্তু ঠিক কিসের ভিত্তিতে আপনি আওয়ামীলীগের কাছ থেকে সেকুলারি আচরন আশা করেছিলেন সেটা আরেকটু বিস্তারিত বললে ভাল হত।

নাহয় কোন এক কুক্ষণে আওয়ামী চার মূলনীতির ফর্দে সেকুলারিজম কথাটা লেখা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে তো জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজবাদ ও ছিল। যে আওয়ামী লীগ আজতক পার্টিনেতৃত্ব বাছাইয়ে গণতন্ত্রিক প্রকৃয়াকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এসেছে, যে পার্টির প্রথমসারির নেতৃবৃন্দ বাংলায় কথা বলতে বিব্রতবোধ করেন, (কারো কারো তো বাংলাদেশী নাগরিকত্বই প্রশ্নবিদ্ধ), যে পার্টির হাল ধরে আছে দেশের কুখ্যাত পুঁজি-অপরাধীরা সেখানে আর যাই থাকুক জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজবাদ - এগুলোর গন্ধও নেই। এই একই কথাগুলোতে আওয়ামী লীগের জায়গায় বি এন পি বসান - অর্থের হেরফের পাবেন না।

যেখানে কোন ধরনের নীতি মানার প্রচলনই দেশের রাজনীতিতে নেই, সেখানে একটি পার্টি তার চারচারটি মূলমন্ত্রের একটিকে যদি না মানে, তাহলে সেটা আলাদা করে হতাশ হবার কারন বনে যায় কেন?

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমি তো হতাশ নই। আমি "শুনেছিলাম দেশ সেকুলার হয়ে উঠছে।" কিন্তু আমি মানি নাই যে সেকুলারিজম বলতে যা বুঝি "সেইটাই আওয়ামী লীগের সেকুলারিজম"। আমি বরং "আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমে উৎসাহী"দের বলছি "কান্দো বইসা বইসা।" বহুলোকে এখনো আওয়ামী লীগের সেকুলারিজমের মুরিদ কিনা! তাদের জন্যে আওয়ামী লীগের অন্যান্য চরিত্র বাদ দিয়ে তাদের সেকুলারিত্বটাকে আলাদা করে বিশ্লেষণ করা হলো। বিএনপি সেকুলারিত্বের দাবীই করে নাই, ওদেরকে এ জায়গায় বসাবেন কি করে? বিএনপি বরং তাদের ঘোষিত মূলনীতির প্রতি আওয়ামী লীগের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশিই সৎ আছে বলে মনে হয়।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

ধর্ম একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার। আমি কেনো ধর্ম পালন করিনা এইটা নিয়া ঘাঁটানো যেমন একটা বজ্জাতি, ঠিক তেমনভাবেই কেনো ধর্ম পালন করি সেটা নিয়া ঘাঁটানোটাও একটা বজ্জাতি ... এবং এই দুই দলই আমার দৃষ্টিতে 'মৌলবাদী'। আমি ধর্ম নিয়া রাষ্ট্র তো বহু দূরের আলাপ, আমার বাপের কাছেও জবাব দিতে রাজী না। একজন ব্যাক্তির জীবনে রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া বাধ্যবাধকতার বাইরেও তাঁর নিজস্ব কিছু মতামত আছে এবং সেই সকল মতামতকে পরিপূর্ণ স্বাধীনভাবে সে প্রকাশ ও পালন করতে পারে - এটা যতদিন পর্যন্ত আমাদের নেতৃত্ব বুঝতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত আমরা এরকম বাক্সবন্দি হয়েই বেঁচে থাকবো।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।