দক্ষিণ কোরিয়া বনাম দক্ষিণ এশিয়া

দিগন্ত এর ছবি
লিখেছেন দিগন্ত (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০৮/২০০৭ - ১১:২১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দক্ষিণ এশিয়া গত পঞ্চাশ বছরে কতটা পিছিয়ে গেছে তা সবাই মনে রাখে না। কিন্তু কিভাবে অন্যেরা এগিয়ে গেছে তা সত্যিই বিস্ময়কর।

ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে ৯% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরকম পঞ্চাশ বছর চলতে পারলে দেশ কোথায় পৌঁছতে পারে তা বোঝা যায় এই তুলনায়। বোঝা যায় কিভাবে আমরা নিজেদের ধোঁকা দিয়ে নিজেদেরই ছোটো করেছি - একটা উদাহরণ দিয়ে। দক্ষিণ কোরিয়া এখন এশিয়ার দ্বিতীয় ধনীতম দেশ (বড় দেশগুলোর মধ্যে)। দেখা যাক তারা কিভাবে এত ধনী হয়ে গেল।

auto

ছবিতে দেখুন নিতান্ত ষাটের দশক অবধি দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে আমাদের বিশেষ একটা পার্থক্য ছিল না। কিন্তু ১৯৬২ থেকে ১৯৮৯ অবধি তাদের অর্থনীতি ৮% হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে তাদের মাথাপিছু গড় আয় মাত্র ৮৭ ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৪,৮৩০ ডলারে।

একটা প্রবন্ধে সেদিন পড়লাম ওদের 'সাক্সেস স্টোরি'। মূল কারণ বলা হয় চারটি -
১) ভাল সরকার, শিক্ষা আর পরিকাঠামোমুখী নীতি।
২) জাপান ও আমেরিকার সাহায্য।
৩) শিল্পক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার
৪) শক্তিশালী প্রাইভেট সেক্টর

আমার এতসব লেখার লক্ষ্য একটাই। যারা মনে করেন পুঁজীবাদী ব্যবস্থা খারাপ আর এই ব্যবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটে না, তারা কিভাবে এর ব্যাখ্যা দেবেন? মানুষের উন্নতি কি অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়া সম্পূর্ণ হয়?

তাছাড়া আমাদের কলোনিয়াল হ্যাংওভারের কারণে আমরা বিদেশী পুঁজী ভয় পাই। দক্ষিণ কোরিয়া বিদেশ থেকে পুঁজী বা প্রযুক্তি দুই-ই নিয়ে দেশ গঠন করেছে। তাতে তাদের কি সার্বভৌমত্বের ক্ষতি হয়েছে?

মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। আমাদের দেশগুলোর নীতি-নির্ধারকের সেটা মাথায় রেখে নীতি নির্ধারণ করেন না। কবে যে সুদিন আসবে এখানে ...


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

যারা মনে করেন পুঁজীবাদী ব্যবস্থা খারাপ আর এই ব্যবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটে না, তারা কিভাবে এর ব্যাখ্যা দেবেন? মানুষের উন্নতি কি অর্থনৈতিক উন্নতি ছাড়া সম্পূর্ণ হয়?

আপনি কাদের দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করলেন সেইটা বোঝা গেলো না । কারা বলে যে পুঁজীবাদী ব্যবস্থায় মানুষের জীবনযাত্রার উন্নতি ঘটে না ? আমি যদ্দুর বুঝি পুঁজিবাদের বিপক্ষ শিবিরের লোকেরা এটা স্বীকার করে যে পুঁজিবাদ মানুষের জীবনের উন্নতি করে । তবে সেটা আরেকজনের এক্সপেন্সে । এইখানেই তাদের আপত্তি বলে আমি জানি ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পুঁজিবাদ,সমাজবাদের কুটচালে যাওয়ার দরকার নাই- কথা সোজা সিদ্ধান্ত গ্রহন ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা যাদের আছে,তারা প্রো-পিপল কিনা?

-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ঝরাপাতা এর ছবি

সেটাই প্রো-পিপল কিনা?

দাদার পুরো নাম কি দিগন্ত সরকার?


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

দিগন্ত এর ছবি

আমার বক্তব্য খুবই পরিষ্কার। পুঁজীবাদী ব্যবস্থাও ইচ্ছা করলেই প্রো-পিপল ভাবে চালানো যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার গড়ে সব মানুষই এখন অনেক ভালো আছে ৪০ বছর আগের তুলনায়, কেউ কারোর এক্সপেন্সে নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

আমার নাম দিগন্ত সরকার - কিন্তু আপনি কোথা থেকে জানলেন? ঃ-)


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ঝরাপাতা এর ছবি

আমার নাম অভ্র। ওয়ার্ডপ্রেসের ব্লগ দেখে অর্কুটে ঢু মারলাম। তারপর ঢিল ছুড়লাম। তার আগে সামহয়্যারে রাগিব ভাইয়ের সাথে আপনার আলোচনাতে চোখ বুলিয়ে এসেছি।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

অয়ন এর ছবি

দ্বিতীয় মুল কারণের সাথে আরো কিছু যোগ করা যায়। দক্ষিণ কোরিয়া ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটা চ্যালেন্জ। প্রমাণ করতে হবে সমাজতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়া থেকে পুজিবাদী দক্ষিণ কোরিয়া কতোটা সফল। সেই লক্ষ থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উদার হস্তে সাহায্য করে গেছে দক্ষিণ কোরিয়াকে, এবং ঠিক উল্টোভাবে নানাভাবে বাধাগ্রস্থ করেছে কিউবা অথবা উত্তর কোরিয়ার মতো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে।

দিগন্ত এর ছবি

একদমই ঠিক বলেছেন। কিন্তু চ্যালাঞ্জে তারা কতখানি সফল সেটা দুটো কোরিয়ার তফাতে বোঝা যায়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সিরাত এর ছবি

পড়লাম। ইন্টারেস্টিং।

ওদের 'ব্রডব্যান্ড ইকোনমির' ভূমিকা নিয়ে জানার বড় ইচ্ছা! কি যে কানেক্টেড একটা দেশ, আর সেই রকম ফাস্ট স্পীড!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।