কৃষি কাব্য!!!

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: শনি, ২৮/০৩/২০০৯ - ৬:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আরো ধান
ভগবান তের পদের হিন্দু পয়দা করিয়াছেন, এই অভিযোগে ক্ষিপ্ত হইয়া, সনাতনী পদ্ধতির অবসানে ইখতিয়র উদ্দীন মুহম্মদ বীন বখতিয়ার খিলজী অষ্টশতকে, অষ্টাদশ অশ্বে অস্ত্র-সশ্ত্র বোঝাই করিয়া দ্বীনের দাওয়াতে হরিজনকে পাশে পাইয়া দিল্লীর সিংহাসনে তসরিফ আনিলেন। তাহার পর তাজমহলের রূপে ক্ষুব্দ হইয়া বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ও সফল উপন্যাস “আনন্দ মঠ” কড়জোরে বোম্বাই বন্দরে বানিজ্য সফল ইংরেজকে ভারতের সিংহাসনে আরোহনের নমস্কারে নতজানু হইলেন।
বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব গভীর রাতে মুজরার মূর্ছণায় আচ্ছন্ন। লুৎফার অশ্রুতে বালিশ সিক্ত। ঘষেটি বেগম মীর জাফরের সাথে ইষ্টিন্ডিয়া কোম্পানীর আশ্রয়ে বাংলার সিংহাসনে আরোহনের স্বপ্নে বিভোর।
পলাশীর সকল আমের মুকুল কুয়াশায় ঝড়িয়া পরিবার পর পলায়ন কারী নবাব ধৃত ও মীর জাফরের পুত্র মিরনের নির্দেশে মোহাম্মদী বেগ নামক ঘাতকের হস্তে নির্মম ভাবে হত হইবার একশত বছর পর ইংরেজ সৈন্য ঘোড়ার উপর তাম্বুড়া করিয়া বান্জারামপুরে খাজনা আদায় করিতে আসিলেন। খাজনা মাফ করিয়াছিলেন নবাব আলীবর্দী খাঁ, কৃষকদের এই প্রবোদে ইংরেজ রাজা ক্ষিপ্ত হইয়া ধানের জমিতে নীল চাষের এত্তেলা দিয়া আরো অপচয়ের হাত হইতে বাংলাকে রক্ষা করিলেন। শিল্প বিপ্লবের বিপদ মসলিনকে তাড়াইতে শিল্পীদের হস্ত কর্তণ করিয়া বাস্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কর্তারা বিলাতী পন্যের পশরা বিশ্বের দরবারে মেলিয়া ধরিলেন।
তাহাতে ক্ষিপ্ত হইয়া দীন বন্ধু মিত্র নীল দর্পণ রচিলেন। দন্ড-মুন্ডের নতুন প্রভুরা তাহা পঠন-পাঠন ও সংরক্ষণের জন্য রহিত করিলেন। ক্ষনপরে শরৎ চন্দ্র চাটুজ্যে “রবি”-র পাশে গগনে উদিত হইয়া পথের দাবী রচনা করিলেন। নিজের দেশে পরবাশী ইহা কিমতে পশিব! পথের দাবী প্রত্যাক্ষাণের পর, শরৎ বাবু “দুই বিঘা জমি”-র জমিদারের স্বরণাপন্ন হইলেন। তিনি জমিদারীর হালখাতা হইতে দৃষ্টি অসীমের পানে প্রসারিত করিয়া কহিলেন; বৎস্য ইংরেজর মত রাজা জগৎ খুঁজিয়া আর দ্বিতীয়টি পাইবেনা। তাদের মহানুভবতায় আমি চিরস্থায়ী জমিদার হইয়া কাব্য রচিয়া চলিয়াছি। তোমার মত উত্তরাধীকার সূত্রে কেবল সাহিত্য প্রেমে তৃপ্ত থাকিতে হয় নাই!
তাহার পর কত রাজার উদয়-অস্ত গগনে খেলিয়া গেল! শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নাম ধারণ করিয়া কৃষকের ক্লেশ ঘুচিতে প্রাণপাত করিল! তাহার স্বপ্নের সোনার বাংলায় এখন ইষ্টিন্ডিয়া কোম্পানী কৃষকের সম্মুখে হাইব্রীড বীজের মুলাটা ঝুলাইয়া গর্দানটা লইতেছে। কর্পোরেট বানিজ্যের বাংগালী কেরানীর কৃষকের কৃতী সন্তান বিদুৎ-বিভ্রাটের কারণে তাহা দেখিতে না পাইয়া গুমরাইয়া কাঁদিতেছে!


মন্তব্য

তানভীর এর ছবি

ভুলভাল ইতিহাস বর্ণনার কারণে যা বলতে চেয়েছিলেন, সেটা একটু লঘু মনে হল। বখতিয়ার খলজি অষ্টম শতকে দিল্লীর সিংহাসন নয়, ত্রয়োদশ শতকের শুরুতে (১২০৫ সালে) নদীয়ায় রাজা লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বাংলায় মুসলিম রাজত্বের সূচনা করেছিলেন (সূত্র)।
'আনন্দমঠ'কে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ও সফল উপন্যাস বলে কী বোঝাতে চাইলেন, বুঝলাম না। বঙ্কিম তাঁর প্রথম উপন্যাস 'দুর্গেশনন্দিনী' লিখেছিলেন ১৮৬৫ সালে (সেটা কি সফল ও সার্থক নয়?) এবং আনন্দমঠ রচিত হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। তারও আগে (১৮৫৮ সালে) লেখা হয়েছিল প্যারিচাঁদ মিত্রের 'আলালের ঘরের দুলাল' যা মোটামুটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাপিডিয়ায় তারও আগে লেখা আরো তিনটি রচনার নাম পাবেন যেগুলোকে অনেকে উপন্যাস বলে অভিহিত করে থাকেন (নববাবুবিলাস, সফল স্বপ্ন ও অঙ্গুরীয় বিনিময়)। আমি স্কুলে থাকতে পাঠ্যবইয়ে বাংলা সাহিত্যের প্রথম উপন্যাস হিসেবে 'ফুলমণি ও করুণার বিবরণ' নামে আরো একটি উপন্যাসের নাম দেখেছিলাম। কিন্তু কোন তথ্যসূত্রে সেটার উল্লেখ দেখছি না আর।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার জানা মতে হানা ক্যাথেরিন মলেন্স-এর 'ফুলমণি ও করুণার বিবরণ'-ই সর্ব প্রথম। তবে তাকে সার্থক বলা যাবে কিনা তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। এই ব্যাপারে সঠিক তথ্যের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাইছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পুতুল এর ছবি

পান্ডবদা উপন্যাস কি ধরনের রচনাকে বলা হয়?
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

পুতুল এর ছবি

তানভীর সাহেব,
পিথাগোরাসের আগেও জমি ভাগবাটোয়ারার মাধ্যমেই চাষাবাদ হত। খৃষ্টের জন্মের আগেও রাত্রির পর দিন আসতো। তবুও আমরা ধরে নিই প্রথম দিনের প্রথম মাসের প্রথম বৎসরে খৃষ্টের জন্ম হয়েছিল।
এখন এমন অনেক নাদান আছে যারা দিন তারিখ গননার সুবিধার্থে ইংরেজী দিনপুঞ্জী মেনে নেয় কিন্তু প্রথম দিনের প্রথম মাসের প্রথম বৎসরে খৃষ্টের জন্ম হয়েছিল কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে।
ভুল ইতিহাস দিয়ে আমিই শুরু করেছি আপনার ঘাড়ে তার দোষ চাপাতে চাই না। আমার বলা দরকার ছিল, মানুষের পুরো ইতিহাস শোষন আর বঞ্চনার ইতিহাস। আগে শক্তি দিয়ে শোষন হত, এখন বুদ্ধি বা কৌশল তার সাথে যোগ হয়েছে। কিন্তু শোষন শেষ হয়নি। বরং বেড়েছে।
বিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার লোকসান করেও কোন দায়ী ব্যক্তি অপরাধ করেনি। শুধু একটা বিশ্বমন্দার সূচনা করেছে। গনতন্ত্রের সার্থে জনগন তার দায় নিজের কাধে নেয়া ছাড়া আর কোন বিকল্প খূঁজে পায়নি। ঋণ খেলাপিরা বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতা। দেনার দায়ে শুধু কৃষকের গলায় দড়ি দিতে হয়।
আনন্দ মঠ-এ ইংরেজদের নতুন রাজা হিসেবে স্বাগত জানানো হয়, সেজন্য আনন্দ মঠ এসেছে। হয়তো এমন আরো আছে, কিন্তু আমি জানিনা।
দীনবন্ধু বা শরৎ বাবুদের রচনা বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। আমার লেখায় শুধু সঠিক ইতিহাসের পাঠ দিয়ে আপনি সমৃদ্ধ করেছেন।
আপনাকে নমস্কার।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

হরিপদ কেরাণী [অতিথি] এর ছবি

আপনার তথ্যে অনেক গড়মিল আছে!

পুতুল এর ছবি

হরিপদ বাবু, একটাই তথ্য দিতে চেয়েছি যার নাম শোষণ। গড়মিল থাকলে তা সংশোধনের অনুরোধ জানাই।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মূলত পাঠক এর ছবি

নাতিদীর্ঘ লেখায় এতো বানান ভুল দেখলে পীড়া হয় যে!

অস্ত্র-সশ্ত্র
দ্বীনের
ক্ষুব্দ
বানিজ্য
ঝড়িয়া
পরিবার
প্রবোদে
বাস্পীয়
পন্যের
ক্ষনপরে
পরবাশী
প্রত্যাক্ষাণের
স্বরণাপন্ন
উত্তরাধীকার
ঘুচিতে (ঘুচাইতে)
বানিজ্যের
বিদুৎ

লেখার বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে আর মন্তব্য করলাম না।

পুতুল এর ছবি

পাঠক ভাই,
চুল বাছতে আমার কম্বল গেল। কথা যখন উঠলো তখন না হয় বলেই ফেলি।
রেখা বা চিন্হ এঁকে মনের ভাব প্রকাশের পর থেকে পৃথিবীর কিছু চিন্তাশীল মানুষ, ভাবটা সবার বোধগম্য করতে ব্যাকরণ নামের একটা নিতীমালা তৈরী করেছে।
কিন্তু আমার মত চাষার পক্ষে তার সঠিক অধ্যয়ন সম্ভব হয়নি।
জিংলার কলম কানে গুজে হাল বাইতে গিয়া বলদ কলাপাতায় অংকিত রেখাচিত্র খেয়ে ফেলেছে। তবুও চাষা হয়ে রেখেচিত্রে ভাব প্রকাশের সুযোগ যখন হয়েছিল তখন সেটা জ্ঞানী লোকের বোঝার উপযোগী ভাবে শেখা আমার উচিৎ ছিল।
এই ব্যর্থতার কলঙ্ক মাথায় নিয়ে ছোটমুখে বড় একটা কথা বলে যাই।
যে দেশের অর্ধকের বেশী মানুষ পঠন পাঠন শিখে উঠতে পারেনি, সে দেশের চিন্তাশীল মানুষদের ভাবা দরকার, কেন? তার অনেক কারণের মধ্যে সম্ভবতঃ একটা, বাংলা ভাষা খুব জটিল অনেক সময় অকারণে।
যেমন: যে সব শব্দ যে কোন শ দিয়েই লেখা হোক না কেন, তার দ্বিতীয় অর্থ না থাকলে তাকে সঠিক ধরে নিতে হবে। যেমন বাষ্প, যে শ দিয়েই লেখা হোক না কেন, পাঠক বুঝতে পারবেন যে, তাপে তরল জলের বায়বীয় অবষ্থাকে বোঝানো হয়েছে। কিন্তু সব আর শব-এর বেলায় তা প্রযোজ্য হওয়া উচিৎ নয়।
পৃথিবীতে যে সব দেশে লেখতে এবং পড়তে শেখা বাধ্যতা মুলক, সেখানেও সময়ের ব্যাধানে মানুষের বলা ভাষায় লিখিত ভাষাটিকে খাপা খাইয়ে নেয়। আমাদের দেশে লিখিত ভাষায় কয়জন মানুষ তাদের ভাব মুখে শব্দ করে প্রকাশ করে তার হিসেব আমার জানা নেই। কিন্তু আমাদের একটা সার্বজনীন শুদ্ধ ভাষা থাকতে হবে।
এমন একটা শিক্ষা ব্যবস্থার অধীনে, যেখানে আমার মত অনেকের প্রবেশাধিকার নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার এক পেশে নীতির কথা এখানে চেপে গেলাম।
আপনাদের সব সঠিক-এর চাপে আমার মত মূর্খের লেখার মূল উদ্দেশ্য যদি ব্যর্থ হয়ে যায়, তাহলে এত পন্ডশ্রম করে লিখব কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে।
পাঠক ভাই, ভূল ধরার মত একটা দুরহ কাজ করে, আমার মূর্খতার কারণে মূল বক্তব্যের ভূল গুলো ধরিয়ে না দিয়ে, আরো বোকামীর হাত থেকে আমাকে রক্ষা করার জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

গৌরীশ রায় এর ছবি


চুল বাছতে আমার কম্বল গেল। কথা যখন উঠলো তখন না হয় বলেই ফেলি।
রেখা বা চিন্হ এঁকে মনের ভাব প্রকাশের পর থেকে পৃথিবীর কিছু চিন্তাশীল মানুষ, ভাবটা সবার বোধগম্য করতে ব্যাকরণ নামের একটা নিতীমালা তৈরী করেছে।
কিন্তু আমার মত চাষার পক্ষে তার সঠিক অধ্যয়ন সম্ভব হয়নি।

কী চমৎকার কথা! এটা ঠিক সবার পক্ষে সঠিক অধ্যয়ন সম্ভব হয় না।
তাঁরা অন্তত চেষ্টা করেন,
আপনার লিখায় এই চেষ্টার ছিটেফোটাও নেই।
সচলায়তনের নিয়মাবলীতে বোধ করি শুদ্ধ বানানে বাংলা লিখা টাইপ নিয়ম
সংযুক্ত করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

মূলত পাঠক এর ছবি

প্রথমেই দুঃখপ্রকাশ করি আপনাকে আহত করেছি ব'লে। উদ্দেশ্য সেটা ছিলো না। আমার চিঠির শেষ বাক্যটিই সম্ভবতঃ এর কারণ। আমি যে লেখার বিষয় প্রসঙ্গে যাই নি তার কারণ অন্য, ইতিহাসে আমার দখল তেমন নয় বলেই। তবে সেটা আমার লেখার দোষেই অন্যরকম শোনাচ্ছে। আবারও বলি, সেটা লেখার দোষ, উদ্দেশ্য নয়।

বানান প্রসঙ্গে অবশ্য সহমত হতে পারলাম না। রানা মেহের ও অনেকের চিঠি দেখলাম, খুব বিশদে লেখার আর দরকার নেই হয়তো। সংক্ষেপেই বলি। আপনি কী অর্থে নিজেকে "চাষা" বলেছেন জানি না। কিন্তু আপনার লেখাটা ঠিক লোকসাহিত্যের পর্যায়ভুক্ত নয় বলেই মনে হয়, এবং আমার জানামতে আপনার একটি প্রকাশিত বইও আছে। আপনার কাছে সঠিক বানান আশা করাটা কি খুব বেশি চাহিদা হলো?

"যে দেশের অর্ধকের বেশী মানুষ পঠন পাঠন শিখে উঠতে পারেনি, সে দেশের চিন্তাশীল মানুষদের ভাবা দরকার, কেন? তার অনেক কারণের মধ্যে সম্ভবতঃ একটা, বাংলা ভাষা খুব জটিল অনেক সময় অকারণে।" যেসব দেশে শিক্ষার হার ৯৯%-এর কাছাকাছি (এবং এই রকম অনেকগুলো দেশ আছে), তাদের ভাষা কি ব্যাকরণের নিগড় মানে না? আমাদের যে সব দেশে শিক্ষিতের সংখ্যা অনেক কম, সেখানে এই সমস্যার মূল যে আরো গভীরে, সেটা বোধ হয় আমরা সকলেই জানি। কাল যদি ব্যাকরণ তুলেও দেওয়া হয়, এবং বানান-সংক্রান্ত সব নিয়ম দূর করে দেওয়া হয়, তাহলেও কি সবাইকে আনা যাবে পঠন-পাঠনের আওতায়? যার পেটের ভাত জোটে না, তার কাছে বাংলা আর ফরাসির ফারাক কিছু নেই। বরং যদি শিক্ষার সাথে রোজগারের সম্বন্ধ করা যায় তাহলে সে ভাষা শিখতে কোনো বাধা মানবে না বলেই মনে হয়। আর যারা কমিউনিকেশনের উদ্দেশ্যে লিখছে তাদের ওপর মাস্টারি করা ঠিক না হতেই পারে, কিন্তু আপনি যখন কৃষিকাব্য লিখছেন তখন সঠিক ভাষার আশা করা যেতেই পারে। আপনার লেখাটি যে গোত্রের তা পাঠকের মনোযোগ দাবি করে। সেখানে পড়তে বসে পদে পদে বানান ভুলে ঠোক্কর খেলে সমস্যা হয়। লেখককে পাঠকের কথাটা ভাবতে বলাটা কি খুব অসঙ্গত? আর "সব সঠিক-এর চাপে" লেখার মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে কেন, ইতিহাস লেখার সময় কাব্যের ধরণ আনার মতো কঠিন কাজ যদি করতে পারেন, তাহলে বিষয় ও বানান দুটোকে একসাথে খেয়াল করা আপনার পক্ষে সহজ হবে বলেই মনে হয়।

খুব সংক্ষেপে হলো না উত্তর। শেষে বলি, আমার নিজের ভাষা আমার খুব প্রিয়। এর সরলীকরণ যদি কোনো নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দেয়, তাহলে তাকে স্বাগত বলতে আমার বাধা নেই, কিন্তু আপনার এই পথের সাথে আমার মত মিলছে না। আরেকটা কথা, ওপেন ফোরামে লিখতে গেলে অভিমানী হলে মুশকিল। আপনি আমাদের জন্যেই তো লিখেছেন, আমরা মত জানালে তাতে যদি আদৌ আর লিখবেন কিনা এই প্রশ্ন মনে আসে তাহলে আপনার লেখা অনেক পাঠকেরই প্রিয়, তাদের প্রতি অবিচার হয়। সে কথাটাও একটু ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি।

নাজনীন খলিল এর ছবি

চমৎকার এই লেখাটির জন্য অভিনন্দন। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ এবং আপনাকেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

আসলে বক্তব্যের দিকে নজর রাখাটা জরুরী বেশী। পুতুলের সাথে সহমত প্রকাশ করছি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রানা মেহের এর ছবি

প্রিয় পুতুল

লেখায় আপনার ক্ষোভটা বুঝতে পারছি। আপনি শুধু এ লেখায় নন।
আরো অনেক ভাবেই বিশেষ করে কৃষকদের প্রতি শোষন
তাদের প্রতি অত্যাচারের কথা তুলে ধরেছেন।
শ্রদ্ধা জানাই আপনার অবস্থান কে।

কিন্তু ব্লগে যখন আপনি লিখবেন তখন তো পাঠকের কাছে পৌছানোওতো
আপনারই দায়িত্ব, নয় কি?

একটা গুরুত্বপূর্ণ লেখার শুরুতেই যদি পাঠক আমি
তথ্য নিয়ে সংশয়ে ভুগি
কী করে বক্তব্যকে নিজের করতে পারবো বলুন?
আপনি যেহেতু লেখায় সংশোধন করেননি, তাই ভেঙ্গে বলি।

খ্রীষ্টজন্মের আগেও রাত্রি দিন হতো।
তবু খ্রীষ্টের জন্মকে উপলক্ষ্য করে দিন গোনার নিয়ম চালু হয়েছে।
তাই খ্রীষ্টের জন্মের আগের কোন ঘটনা হলে কিন্ত খ্রীষ্টপূর্ব কথাটা বলে দেয়া হয়।
এখানে কিন্তু দিন তারিখ নিয়ে কোন সমস্যা তৈরী হয়না।

আপনার অষ্ঠশতক, আনন্দমঠ সম্পর্কে বিশেষুংলো
একধরনের বিভ্রান্তি তৈরী করছে।
তাই লেখাটা পড়ছি যখন, বক্তব্যে আত্নস্থ করার আগেই
পীড়া দিচ্ছে তথ্যগুলো।
সঠিক তথ্য দিয়েওতো ক্ষোভ প্রকাশ করা যায়, নয় কি?

তবে একটা কথা পুতুল

শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু নাম ধারণ করিয়া কৃষকের ক্লেশ ঘুচিতে প্রাণপাত করিল!

এভাবে কি বলতেই হবে?
বঙ্গবন্ধু কৃষকের জীবনকে ধনধান্যেপুষ্প ভরা করে দেননি, সত্য।
কিন্তু তার সাথে তার বঙ্গবন্ধু উপাধির তো কোন সম্পর্ক নেই।

মূলত পাঠকের মন্তব্যের উত্তরে আপনার বলা কথাগুলো
কেমন বিদ্বেষিত মনে হলো।

আপনি ইদানিং সচল একটু চোখ রাখলে দেখবেন
এখানে ভুল বানানের ব্যাপারে রীতিমতো একটা
যুদ্ধ ঘোষনা হয়েছে।
ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে যে কারো করা ছোট বড় যে কোন বানান ভুল।
এ কাজটা কেউ কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য করছে না।
করছে আমাদের আদরের বাংলা নামের মিষ্টি ভাষাটাকে
কাটাছেড়া থেকে বাঁচানোর জন্য।

মূলত পাঠক কি এর বেশী কিছু করেছেন?
তার বলার ভঙ্গী কি আক্রমনাত্নক ছিল?
না তো। লেখার বক্তব্য নিয়ে বলেন নি বলে কি তিনি
অন্য বিষয় নিয়ে কথাই বলতে পারবেন না?

আর ব্যাকরনের ব্যাপারে আপনি যা বলেছেন, ঠিক।
আমি নিজেই বানান বা ব্যাকারন ভুলের প্রতিযোগীতায় শীর্ষ পাঁচে থাকবো।
কিন্তু পুতুল। ভাষাও আমাদের। ব্যাকরনটাও তাই।
আমরা যদি আমাদের ভাষা আমাদের বানান গুলো না করি ঠিকঠাক যতদুর পারি
তাহলে আর কেন এই ভাষা ভাষা বলে বাঙালির প্রানান্ত চিতকার বলুন?

আর বানান জিনিসটাও কিন্তু তথ্যের মতোই
বক্তব্য পাঠকের কাছে পৌছে দেয়ার খুব গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম।
একটা ভালো বক্তব্য নির্ভর লেখায় যদি বারবার ভুল বানানে হোঁচট খাই
তবে গন্তব্যে পৌছানোটা হয় ভাঙা সিড়ি বেয়ে ওঠার মতোই।
ওপরে পৌছানো হয় ঠিকই।
কিন্তু চুড়াজয়ের আনন্দটা থাকেনা।

পুতুল
সমালোচনা গ্রহন করার ক্ষেত্রে আপনার একটু অসহিন্ষুতা চোখে পড়লো।
আমার এই কথাগুলো কোনভাবে আপনার বাজে লেগে থাকে
নির্দ্বিধায় জানাবেন। ভবিষ্যতে সতর্ক থাকবো।

ভালো থাকুন।
থাকুন বন্চিত মানুষের পাশে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

মূলত পাঠক এর ছবি

একটা মোটামুটি বড় চিঠি লিখেছিলাম আজ সকালে, সেটা হারালো, না কি এখনো কিউতে আছে বুঝছি না। এতো মেহনত মাঠে মারা গেলো বুঝি!

পুতুল এর ছবি

আরবের লোকেরা আমাদের দেশে বহু বছর আগে খুরমা খেজুর আর আতর বিক্রি করতে আসতো। তাদেরকে সম্ভবত গন্ধ-বণিক বলা হয়। সে সময় থেকে খিলজির ভারত বিজয় অনেক পরে হয়েছে। তা ঠিক।

পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময়ও বাংলায় কাব্য চর্চা হতো। আমার পূর্বপুরুষরা তা থেকে বেঁচে ছিলেন। স্বাধীনতার কয়েক বছর আগে আমার জন্ম। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ থেকে আমি বেঁচে উঠেছি। তখনো কাব্য চর্চা ছিল। তার একটা লাইন সম্ভবত "ভাত দে হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাব"। তবে ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ থেকে আমার ছোট বোন শেফালী রক্ষা পায়নি। সাত সন্তানের জননীর শেষ সন্তানের জন্য তার শরীরে নবজিতিকাকে দেবার মত তেমন কিছু থাকে না প্রকৃতিগত ভাবেই। তর ওপর দৈনিক বরাদ্দ মাথাপিছু দুটো রুটি। সে রুটির জন্য লাইনে দ্বারিয়ে সারাটা দিন অপেক্ষা করতে হত।

কিন্তু এখন জানি তখনো পৃথিবীতে যথেষ্ট খাবার ছিল। সে জন্য মাঝে মাঝে বলতে ইচ্ছে করে " যারা কেড়ে খায় তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস, আমার রক্তে লেখা হোক তাদের সর্বনাশ। শান্তি বিঘ্নিত হবে, সে জন্য চেপে যাই।

তো সেই আমি (আমার বয়সী অনেকে মরেছে), বেঁচে আছি সেটাই এক বিষ্ময়। তার পর কত কি করলাম। এখন উই টিউবে সেই ভয়ঙ্কর দিনের ছবি দেখে কেঁদে উঠি। তবু আমি বেঁচে আছি। আর লিখতে পারছি সেতো আমষ্ট্রং এর চাঁদে পা ফেলার মত!

গল্প যাদের মুখে শুনেছি তারা সবাই নিরক্ষর ছিলেন। বলার মত লেখা তো আর জন্মগত নয়। তাকে অর্জণ করতে হয়। লিখতে যখন এসেছি তখন সঠিক বানানেই লেখি উচিৎ। তবুও লেখার জন্য যারা বিভিন্ন ভাবে উৎসাহিত করেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ।
নীচের ভিডিওটি শিশু এবং দুর্বল চিত্তের লোকদের দেখা উচিৎ নয়। মূল্যবান মতামতের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

http://www.genocidebangladesh.org/?p=465
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।