মিতুল - পর্ব্ব ১

এক লহমা এর ছবি
লিখেছেন এক লহমা [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ০৬/০৩/২০১৫ - ৬:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেদিন কি হল বলি তবে। প্রথমে ত সকাল হল। আর তারপর, মিতুল - ও হো, বলাই ত হয়নি মিতুল কে। ঠিক ধরেছ। মিতুল একটা ছোট্ট মেয়ে। তুমি ত অনেক বড় হয়ে গেছ। কত কি জানো, কত কথা বল। মিতুল তোমার মত বড় নয়, কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কথা বলে যে সবাই বলে,
- বাব্বাঃ, মিতুল দেখি অনেক বড় হয়ে গেছে!
মিতুল এখনো অনেক কিছুই জানে না। কিন্তু জানতে চায় অনেক।

যেমন, সেদিন সকাল হতেই মিতুলের খুব জানতে ইচ্ছে করছিল বাইরেটা এখন কেমন। সে তাকিয়ে দেখল, মা ঘুমিয়ে আছে, বাবাও। মিতুলের নিজের একটা ছোট্ট বিছানা আছে, মা-বাবার বিছানাটার ঠিক পাশে। সেটা থেকে নেমে পড়ল ও। তারপর টুক টুক করে হেঁটে জানালার পাশে এসে দাঁড়াল।

জানালার সামনে মিতুলের বাবা ওর জন্য একটা ছোট টুল বসিয়ে রেখেছে। ও সেটার উপর উঠে পড়ে জানালার বাইরে তাকাল। সামনে বাগান। সকালের আলোয় বাগানটা কি সুন্দর দেখতে হয়েছে! আচ্ছা, বাগানে কি কেউ এসেছে!

ও মা! শালিক পাখিটা এসে গেছে! মিতুল শালিক পাখিটাকে ডাকল। মনে মনে ডেকেছে। কিন্তু শালিক ঠিক শুনতে পেয়েছে। সে ওর দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল। হাসল। মিতুল তখন তাকে জিজ্ঞেস করল
- আজকে কি নাম তোমার?
তুমি ভাবছ নাম আবার কারো পাল্টায় নাকি! ঐ শালিকটার পাল্টাত। রোজ না, যেদিন ইচ্ছে হত। মিতুল ঠিক বুঝতে পারত কবে ওর নাম পাল্টে গেছে। শালিক পাখিটা বলল
- আজকে আমার নাম কিচকিছুনা।
- কি করছ তুমি কিচকিছুনা?
- হটর খাচ্ছি।
এই বলে ঠোঁট দিয়ে ঘাসের ভিতর থেকে কি একটা তুলে দেখাল। মিতুল হাসল। কিচকিছুনা সব কিছুর নূতন নাম দ্যায়, খাবারেরও। আগে আরেকদিন এই খাবারটার নাম অন্য কিছু বলেছিল। হি হি। সে কিচকিছুনাকে বলল,
- জানো, কাল আমার জন্মদিন ছিল।
কিচকিছুনা বলল,
- জানি, কেক কাটা হয়েছে, কেক খেয়েছ সবাই।

কথা বলতে বলতে কিচকিছুনা হটর খেয়ে যাচ্ছিল। ওকে সমানে খেতে দেখে মিতুলেরও একটু খিদে পেল। কিন্তু মা না উঠলে ত খাবার পাওয়া যাবে না! থাক গে, আর একটু পরেই মা উঠে যাবে, তখন খাবে। মিতুল যখন এইসব ভাবছে তখন কিচকিছুনা উড়ে গিয়ে জানালার সামনে ডালটায় বসেছে। যেই বসেছে, ডালটা থেকে ধপ করে কি একটা নীচে পড়েছে। কাঠবিড়ালিটা! ওটাও রোজ সকালে আসে। আজকে ঐ ডালটায় সে একটা লাল ফল খেতে যাচ্ছিল। হঠাৎ কিচকিছুনা সেখানে উড়ে আসায় - কাঠবিড়ালি ধপাস!

এই কাঠবিড়ালিটার একটাই নাম - তর্পিও। মিতুল জানে। সে ওর দিকে তাকিয়ে হাসল। তর্পিও কিচকিছুনার উপর খুব রাগ করতে যাচ্ছিল। কিন্তু মিতুলকে হাসতে দেখে সেও হেসে ফেলল। এবার তর্পিও উপরে তাকিয়ে দেখে, কিচকিছুনাও একটা ডানা তুলে মুখটা একটু আড়াল করে হাসছে। তর্পিও তখন তার মোটা লেজটা গোল করে পাকিয়ে মাটিতে পেতে, সেটার উপর আর দু’পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে উঠল। তারপর হাতদু’টো সামনে বাড়িয়ে বলল,
- অত হাসবার কিছু হয়নি। চলতে গেলে সবাই পড়ে।
এই বলে তর্পিও আবার চার হাত-পায়ে হাঁটার মত হয়ে গেল। লেজটা পিঠের উপর কায়দা করে বাঁকিয়ে, খাড়া করে ধরে একটা ঝাঁকুনি দিল। তারপর লাফিয়ে সামনে এগিয়ে গেল। এদিক ওদিক তাকাল। আরো একটা ছোট্ট লাফ দিল। তারপর একবার ঘুরে তাকাল মিতুলের দিকে।

মিতুলের খুব ইচ্ছে করছিল তর্পিওর সাথে সেও ঘুরতে যায়। তর্পিও সেটা ঠিক বুঝতে পেরেছে। সে কি করল জানো? নিজের মোটা লেজটা মিতুলের দিকে বাড়িয়ে দিল। সেটা লম্বা হতে হতে যেই মিতুলের হাতের কাছে এসে গেল, মিতুল লেজটা ধরে ফেলল। তার পরেই তর্পিও তার লেজটা ছোট করে ফেলল। আর লেজের সাথে সাথে, লেজের টানে টানে মিতুল জানালা গলে বাইরে চলে এল।

মিতুল তর্পিওর দিকে তাকিয়ে একটা খুব খুশীর হাসি দিল। তর্পিও বলল
- কি, কোন দিকে যেতে চাও তুমি?
মিতুল সামনের দিকে হাত দেখিয়ে দিল।

চলতে চলতে কত রকমের গাছ দেখল ওরা, কত ফুল, কত সুন্দর গন্ধ, কত রকমের রং! কত পাখী, কত তাদের ঢং! কেঊ ছুটে বেড়াচ্ছে, কেউ দোল খাচ্ছে। কেউ উড়ে উড়ে গান গাইছে। চলতে চলতে একসময় ওরা একটা বিরাট ঝোপের সামনে এসে পড়ল। ঝোপের ভিতর থেকে হাতীর শুঁড়ের মত একটা প্রাণী বের হয়ে এলো।

না ভুল হ’ল। হাতীর শুঁড়ের মত না। মিতুল একদিন ওর বাবার সাথে অ্যাকোয়ারিয়াম দেখতে গিয়েছিল। সেখানে একটা প্রাণী দেখেছিল। তার নাম অক্টোপাস। আটটা শুঁড় ছিল তার। বাবা বাড়ি ফিরে এসে অনেক গল্প করেছিল অক্টোপাস নিয়ে। এই শুঁড়টা ঐ অক্টোপাসের শুঁড়ের মত দেখতে। শুঁড়টার হাতে একটা ঝুমঝুমি ধরা। কি সুন্দর ঝুমঝুমিটা! শুঁড়টা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঝুমঝুমি বাজিয়ে মিতুলকে ডাকছিল। মিতুল এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। ঝুমঝুমি নিয়ে আর খেলে না ও। কিন্তু এই ঝুমঝুমিটা এত সুন্দর, আর, শুঁড়টা এত ভাল করে ওটা বাজাচ্ছিল যে মিতুলের ইচ্ছে হল ওটার আরো কাছে গিয়ে দেখে। মিতুল পা বাড়াল।

ঠিক তখনি কানের পাশে কে যেন বলে উঠল,
- সাবধান! সাবধান!
মিতুল তাকিয়ে দেখে, একটা প্রাণী তার লম্বা গলা নামিয়ে মাথাটা মিতুলের কাছে নিয়ে এসেছে। মিতুল চিনতে পারল তাকে, বইয়ে তার ছবি দেখেছে, একটা জিরাফ। জিরাফটা একটা ছোট গাছের ডাল মুখে নিয়ে তার লম্বা গলাটা বাড়িয়ে ডালটা ঝুমঝুমির কাছে নিয়ে গেল। সাথে সাথে শুঁড়টা কিরকম একটা ঝটকা দিয়ে ডালটাকে পেঁচিয়ে ধরল। তারপর সেটাকে টেনে জঙ্গলের ও পাশে কোথায় নিয়ে গেল। আর তার এ পাশ ও পাশ থেকে আরো কত যে শুঁড় বেরিয়ে এলো। মিতুলের দিকে এগিয়ে আসতে থাকল শুঁড়গুলো।

মিতুল উল্টোদিকে ফিরে দৌড় দিতে যাচ্ছিল। জিরাফ বলল
- দাঁড়াও। মুখ ফিরিও না। মুখ ফিরালে ওরা আরো তাড়াতাড়ি এগিয়ে আসবে।
মিতুল আর জিরাফ সামনে তাকিয়ে একটু একটু করে পিছনে হাঁটতে থাকল। জিরাফটা এবার আরেকটা ডাল তুলে নিয়ে একটা শুঁড়ের দিকে লাঠির মত বাগিয়ে ধরল। শুঁড়গুলো এবার গর্জন করতে থাকল। আর, একটা শুঁড় কোথা থেকে কালো ধোঁয়ার মত কিছু ওদের দিকে ছুঁড়ে দিলো। চারদিক কালো কুয়াশায় ঢেকে অন্ধকার হয়ে এলো।

মিতুলের একটু একটু ভয় করছিল এখন। জিরাফকে আর ঠিকমত দেখতে পাচ্ছিল না ও। তর্পিও-কেও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। এখন কি হবে? এই সময় একটা নীল তারা ওর পাশে এসে দাঁড়াল। মিতুল পরিষ্কার শুনতে পেল তারাটা তাকে বলছে ভয় না পেতে। মিতুল তার দিকে সরে এলো। তাকে জিজ্ঞেস করল,
- তুমি কে?
সে বলল,
- আমায় চেনো না? আমি অভি।
মিতুল বুঝল, বাবা-মা এর কথাই কয়েকদিন ধরে বলছে। এই ত সবাইকে অন্ধকারে পথ দেখায়। মিতুল জিজ্ঞেস করায় মা একদিন বলেছিল এ একজন অনেক বড় তারা। বলেছিল, মিতুল বড় হলে সব বুঝতে পারবে। আর বলেছিল, এই তারার আলো যার কাছে থাকে তার মন থেকে ভয় চলে যায়। মিতুলেরও এখন আর ভয় লাগছিল না।

নীল-তারাকে আসতে দেখেই শুঁড়গুলো পিছোতে শুরু করেছিল। এখন মিতুল আর নীল-তারা একসঙ্গে সামনে এগোতেই সব কটা শুঁড় একসঙ্গে গুটিয়ে নিয়ে ভয়ানক প্রাণীটা কোথায় পালিয়ে চলে গেল। কালো ধোঁয়াগুলোও অনেকটা মিলিয়ে গেছে। চারদিকে এখন আবার দিনের আলো ফিরে এসেছে।

শুঁড়-ওয়ালা প্রাণীটা চলে যাওয়ার পর নীল-তারাও মিতুলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তার নিজের দেশে চলে গেল। যাওয়ার আগে মিতুলের হাতে এক টুকরো আলো তুলে দিল। আলোটা মিতুলের সাথে মিশে গেল। ঠিক এই সময় তর্পিও কোথা থেকে লাফাতে লাফাতে এসে হাজির। এসেই বলে কি
- অনেক দেরী হয়ে গেছে এখানে। চলো এবার অন্যদিকে যাই।

কিন্তু মিতুলের এখন আর কোথাও যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না। বাবা-মাকে কতক্ষণ দেখেনি! জিরাফের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মিতুল আর তর্পিও তাই মিতুলের ঘরের দিকে ফিরে চলল। বাড়ির কাছে যখন এসে গেছে, ততক্ষণে মিতুলের খুব খিদে পেয়ে গেছে। সে মনে মনে বলল
- আমি খাবো।
সেই শুনে তর্পিও বলল
- কি খাবে?
মিতুলের মনে হল কাল রাতে তার জন্মদিনের কেকটা আরো খেতে পারলে বেশ হয়। সে বলল
- কেক।

যেই মিতুল এই কথা বলেছে, সাথে সাথে চারদিক নানা রং-এর আলোয় ঝলমল করে উঠেছে। মিতুল চমকে এদিক ওদিক মাথা ঘুরিয়ে দেখে গাছের পর গাছে সরু সরু ডাল থেকে কত যে রং বেরং-এর ছাতা ঝুলছে! সব কটা ছাতার হাতল থেকে একটা করে কাপ ঝুলছে। আর, কাপের মধ্যে কি আছে? ঠিক ধরেছ - ছোট্ট ছোট্ট কেক, নানা রং-এর কাপ-কেক। একটা ছাতার মাথায় বসে তর্পিও সেই ছাতার নীচের কেকটা ধরতে চাইছে, পারছে না, ওর হাত পৌঁছচ্ছে না। তর্পিও বারে বারে মিতুল-এর দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু মিতুল কি করে পাবে কেকগুলো! সেগুলো ত অনেক উঁচুতে! কি হবে এখন!

এই সময় মিতুলের ঠিক পিছনে কে যেন বলে উঠল
- আমার সাথে এসো।
মিতুল ঘুরে দেখে কিচকিছুনা, তার একটা ডানা বাড়িয়ে রেখেছে। সে হাত বাড়িয়ে কিচকিছুনার ডানা ধরতেই কিচকিছুনা এত্ত বড় হয়ে গেল। মিতুল তখন কিচকিছুনার ডানা ধরে তার পিঠে চেপে বসল। কিন্তু মিতুল যদি পড়ে যায়! কিচকিছুনাকে সে কথা বলতেই কিচকিছুনা তার ডানা থেকে কয়েকটা পালক খাড়া করে মিতুলের চারদিকে একটা সুন্দর ঘর বানিয়ে ফেলল। তারপর মিতুলকে পিঠে নিয়ে কিচকিছুনা উড়তে শুরু করে দিল। দুজনেই উড়ে উড়ে অনেক কেক খেল। কি ভালো যে খেতে! খাওয়ার শেষে সুন্দর দেখতে দুটো কেক মিতুল মা আর বাবার জন্য নিয়ে নিল। তারপর সে আর কিচকিছুনা মাটিতে নেমে এল। মিতুল কিচকিছুনার পিঠ থেকে মাটিতে নেমে পড়ল।

তর্পিও এই সময়টা এ গাছে ও গাছে ছুটে ছুটে ফল খাচ্ছিল। এবার সে দৌড়ে চলে এল তাদের কাছে। বলল
- আমার জন্য কেক আনলে? খুব ভালো।
মিতুল বলল
- এই যা! আমি যে এ দুটো মা আর বাবার জন্য আনলাম? জানো, আমার বাব-মা দু’জনেই কেক খেতে খুব ভালোবাসে!
তর্পিও বলল
- তা হলে আজ আর আমরা ঘুরতে যাব না।
এই বলে সে মিতুলকে তার লেজে তুলে নিয়ে লেজটা জানালা দিয়ে ঢুকিয়ে মিতুলকে একেবারে ওর বিছানায় এনে শুইয়ে দিল।

তর্পিওর লেজটা জানালা দিয়ে মিলিয়ে যেতেই মিতুল বিছানায় উঠে বসল, বলল
- মা-বাবা, কেক।
মিতুলের বাবা-মা একটু আগেই ঘুম থেকে উঠে গিয়েছিল। বাবা টেবিলে বসে চা খাচ্ছিল। এখন মিতুলের দিকে তাকিয়ে হেসে বলল
- ঘুম ভেঙ্গেই কেক খেতে ইচ্ছে করছে?
মিতুল বাবার দিকে হাতের মুঠো বাড়িয়ে দিয়ে বলল
- তোমরা খাবে।

শুনে মিতুলের বাবার যে কি আনন্দ হল! বলল
- বাঃ বাঃ! মিতুল মামণি দেখছি অনেক বড় হয়ে গেছে!
মা ছিল বাবার পাশে। খুশীতে সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। আর বলছে,
- শুনেছ ও কি বলছে! ও আমাদের কেক খাওয়াবে বলছে। শুনেছ, শুনেছ!

মা-বাবার খুশী দেখে মিতুলের ইচ্ছে করছিল এক্ষুণি ওদের সমস্ত গল্পগুলো বলে। কিন্তু এ কি! মিতুলের মুঠো যে ফাঁকা! কেক কোথায় গেল? কেক-দুটো কি তবে জানালা দিয়ে ঢুকে আসার সময় বাগানে পড়ে গেল? তর্পিওটা এমন হুস করে ওকে ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে দিল! তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে টুলে উঠে জানালায় উঁকি দিল মিতুল। নীচে তাকাল। নাঃ! জানালাটার সামনে কোন কেক পড়ে নেই! মাথা তুলে দেখে তর্পিও অনেকটা দূরে বসে আছে। হাত দুটো সামনের দিকে তোলা, বুকের কাছে জড়ো করা। আর তার মুখটা ফোলা, নড়ছে মনে হয়, তার মানে কিছু খাচ্ছে।

এইবার মিতুল সব বুঝতে পারল। আহা রে! কিচকিছুনা আর মিতুল যখন উড়ে উড়ে কেক খাচ্ছিল, তর্পিও ত তখন একটা কেকও খেতে পায়নি। দৌড়ে দৌড়ে শুধু ফল খেয়ে বেড়িয়েছে। ভেবেছিল মিতুল ওর জন্য কেকে নিয়ে আসবে। তাও হয়নি। মিতুল ওর জন্য কোন কেক আনে নি। তাই বাগানে পড়ে থাকা কেক দেখে তর্পিও আর লোভ সামলাতে পারে নি।

বেচারা তর্পিও! মিতুলের এখন আর কেক আনতে পারেনি বলে অতটা খারাপ লাগছিলনা। ঠিক আছে, ছোট ঐ কেকদুটো তর্পিওই খাক। ওদের নিজেদের জন্য ত কালকের বড় কেকটার অনেকটা আছেই। সেইটা থেকেই ওরা সবাই খেতে পারবে। পরে, মিতুল যখন অনেক বড় হয়ে যাবে, মাকে-বাবাকে অনেক, অনেক কাপ-কেক কিনে দেবে। আর এখন, মা-বার কাছে গিয়ে সব গল্পগুলো বলতে হবে। বলতে হবে, নীল-তারা অভি কেমন করে তাড়িয়ে দিয়েছিল কালো ধোঁয়া ছুঁড়ে দেওয়া শুঁড়-গুলোকে। বলতে হবে, মিতুলের কাছেও এখন আছে নীল-তারার আলো।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অভি তারাটার আলো মিতুলের কাছে থেকে যাক, গাঢ় হয়ে আসা অন্ধকার দূর করে দিক আশপাশ থেকে। আর মিতুল নামটা আমার বন্ধু মিতুলের কথা মনে করিয়ে দিল, হুট করে এসে হুট করেই হারিয়ে গেছে পাগলীটা! এই মিতুলের জন্য শুভকামনা, ও হারাবে না নিশ্চয়ই-আলোটা তো কাছেই আছে ওর।

দেবদ্যুতি

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পড়বার আর আপনার শুভকামনার জন্য।
"অভি তারাটার আলো মিতুলের কাছে থেকে যাক, গাঢ় হয়ে আসা অন্ধকার দূর করে দিক আশপাশ থেকে।" - সমস্ত মিতুলদের জন্য এই-ই আকাঙ্ক্ষা।
আপনার বন্ধু মিতুলের কথা যদি শোনান কোনদিন, সাগ্রহে শুনব।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

মোবাইলে পড়েছিলাম, পোস্ট হবার পরক্ষণেই। বাচ্চাদের জন্য লেখা বা পিচ্চিতোষ লেখা খুব ভাল লাগে। তবে নিজেকে ওদের স্থানে দাঁড় করিয়ে লেখা আমার কাছে কঠিন মনে হয়। নিজে যে কয়টি লেখা বাচ্চাদের জন্য লিখেছি, ব্লগে দিয়েছিলাম দু একটি। পাঠকদের প্রতিক্রিয়া ছিল, মাঝে মাঝে নাকি বড়দের মত হয়ে গেছে। আসলে বাচ্চারা যে কতটা বড়দের চেয়েও বড় তা আমি অদ্ভুতভাবে টের পাই। আমার সাড়ে চার বছরের ছেলের ম্যাচুরিটি এখন এই পর্যায়ে যে, সে বিশ্বাস করে পাখি বা কাঠবিড়ালি কথা বলে না! আবার আমার আট বছরের মেয়ে বিশ্বাস করে, ওরা নিজেদের মধ্যে কথা বলে, নিজেদের মত।
ভাল লাগছে পড়তে, ঝরঝরে ভাষা। আমার মেয়েটা কাল দেখি হুমায়ূন আজাদের ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না বইটির বাইশ পৃষ্ঠা পড়ে ফেলেছে। সে নাকি অল্প অল্প বুঝেছে, যুক্তাক্ষর পুরো বোঝেনি! আমিই বুঝলাম না পুরো বই!
আপনার লেখাটা শেষ হলে মেয়েকে পড়তে দিবো প্রিন্ট করে, ওর খুব বই পড়ায় আগ্রহ। ফ্যান্টাসির জগতে থাকে আমার মেয়েটা।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

এক লহমা এর ছবি

বাচ্চারা বাচ্চাদের মত করে আসলেই অনেক বড়। নিজেকে ওদের স্থানে দাঁড় করিয়ে পিচ্চিতোষ লেখা তুলনামূলকভাবে কঠিন কি না জানিনা, খানিকটা অন্যরকমের অবশ্যই। আমার কাছে সব রকম লেখাই কঠিন।

গল্প পড়ার আর ভালো লাগা জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।

গল্পটা নিয়ে আপনার কন্যার মতামতের জন্য সাগ্রহ প্রতীক্ষায় রইলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

কিছকিছুনা, তর্পি আর মিতুল, নামগুলোই অনেক ভালো লেগে গেছে। চলুক।

রীতু

'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। ইচ্ছে ত আছে চালাবার, দেখা যাক।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

জন্মদিনের কেক খাব। হাসি

এক লহমা এর ছবি

নিশ্চয়ই। তর্পিও আর কিচকিছুনা আজ রাত পোহালেই আপনার জানালার পাশে হাজির হয়ে যাবে। বেরিয়ে পড়ুন ওদের সাথে। হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব এর ছবি

পাঁচতারা চলুক

আমরা সবাই বড়দের নিয়ে লেখি, ছোটদের এমন কল্পরাজ্যে নিয়ে যাওয়ার গল্প/লেখা সচলেও খুব কম আসে। আপনার এই চেষ্টাকে তাই সাধুবাদ। আশাকরি এমন লেখা আরো লিখবেন।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মাসুদ সজীব-ভাই।

সচলেই এর আগে নানা সময় পিচ্চিতোষ গল্প আরো আসার ইচ্ছে প্রকাশ হতে দেখেছি। সেই আদিযুগে হিমু একসময় নিয়মিত লিখেছেন (পরে হাবুলের জলদস্যু জাহাজ-এ অনেকগুলি সংকলিত হয়েছে)। হালে মর্ম লেখেন। মাঝখানের দিনগুলো থেকে যাযাবর ব্যাকপ্যাকারের লেখা-ও পাওয়া যাবে। (আগ্রহী পড়ুয়ার জন্যঃ এই পোস্টের পিচ্চিতোষ ট্যাগ-এ চিপি দিলে এদের পাওয়া যাবে)। দেখি, এদের সংখ্যা কিছুটা যদি বাড়াতে পারি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর! শিশুতোষ লেখা আরও লিখতে থাকুন ।

-------------
রাধাকান্ত

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। ইচ্ছে আছে, দেখা যাক।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আয়নামতি এর ছবি

দারুণ মিষ্টি পিচ্চিতোষ গল্প! কায়দা করে মিতুলের বন্ধু করে নেউ আমাকেও। নিবা দাদাই দেঁতো হাসি
পরের পর্ব আসতে আসতে যেন পিতিমি একচক্কর ঘুরে না যায় সেদিকে খেয়াল থাকে যেন হুউম!
অনেক ভালু থেকো।

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দিদিভাই।
তাই হবে গো দিদিভাই, নিয়ে নেব।
দেরী করতে ত আমারও ইচ্ছে করে না। তবু হয়ে যায়! মন খারাপ
হুঁঃ। তুমিও ভাল থেকো।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়েছি আগেই। এখন এসে মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।

স্বয়ম

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দারুণ!! হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ, সাক্ষী।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার ছাত্র (std-2) আমাকে কম্ফু পাণ্ডার গল্প শোনায় , আমি বললাম আজ কিছকিছুনা পাখির কথা (কিছুটা ইনাইয়া-বিনাইয়া ) , কপিরাইটের মামলা দিয়েন না দেঁতো হাসি
তবে এক লহমা - কী ? ছাত্রের প্রশ্ন, ওর অনেক প্রশ্নের উত্তর আমি জানি না তাই ......... ইয়ে, মানে...

মজিবুর রহমান

এক লহমা এর ছবি

আপনার ছাত্রকে কিচকিছুনা পাখীর গল্প শুনিয়েছেন জেনে ভাল লাগল, তবে তার ভাল লেগেছে কি না সেটা জানতে না পারায় মনে হচ্ছে তার ভালো লাগেনি। তার ভালো লাগলে আপনি নিশ্চয়ই জানতে পারতেন এবং আমায় জানাতেন। মন খারাপ

কপিরাইট - সময় পাইলে একবার আমার এই পোস্টে ঘুইরা আসেন, মজা পাইবেন।

লহমা = মুহুর্ত,
এক লহমা = এক মুহুর্ত = অতি অল্প সময়। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

গান্ধর্বী এর ছবি

মজারু হাততালি

------------------------------------------

'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।