এই বছর বাংলাদেশের আমড়া গাছে আম ফলবে কি?

এস্কিমো এর ছবি
লিখেছেন এস্কিমো (তারিখ: রবি, ২৬/০৮/২০০৭ - ১১:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জোট সরকারের তদন্ত ও রিমান্ডের গ্রেফতারকৃতগনআজ ঢাকার এক আদালত দুই জন শিক্ষকের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। অন্যদিকে রাজশাহীর আরেক আদালত তিন জন শিক্ষকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

একটা কথা উল্লেখ্য যে, আদালতগুলো চলে সরকারের তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে। সুতরাং বলা যায় - সরকার এই শিক্ষকদের গত সপ্তাহের বিক্ষোভের ইন্ধন দিবার অভিযোগে নির্যাতনের জন্যে গোপন স্থানে পাঠিয়েছে। সেখানে কে বা কারা তাদের দীর্ঘ দশ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করবে..সেই জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া কি, সেখানে তাদের পেটের কত গভীর থেকে তথ্য বের করার চেষ্টা চালানো হবো তা আমাদের কাছে পরিচ্ছন্ন নয়।

সাধারনত দাগী অভিযুক্ত বিশেষ করে পেশাদার অপরাধীদের রিমান্ডে নিয়ে তাদের স্বীকারোক্তি আদায় করা হয় - যাতে একটা বড় ধরনের অপরাধের পুরো চিত্রটা তদন্তকারীদের কাছে পরিষ্কার হয়।

যে পাঁচজন শিক্ষককে আজ রিমান্ডে নেওয়া হলো ..তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা একটা আদালতের মাধ্যমেই প্রমান করার চেষ্টা করা যেত ...কিন্তু যেহেতু তদন্তকারীদের কাছে কোন তথ্য নেই ..তাই তাদের দরকার জবানবন্ধী।

সরকার গতসপ্তাদের বিক্ষোভকে একটা বিরাট অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করে প্রায় লক্ষাধিক অজানা মানুষের নামে যে মামলা গুলো করেছে ..তাতে পুলিশ সহ অন্যান্যদের বানিজ্যের একটা বিরাট সম্ভাবনা তৈরী হবে। এর মধ্য দিয়ে পুলিশ নির্বিচারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের ব্লাকমেইল করা একটা বিরাট সুযোগ পাবে।

বিষয়টা হলো ...ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিক্ষোভতে সেখানেই সীমাবদ্ধ ছিল ....তাইলে বাইরের ঘটনার দায়দায়িত্ব কে নেবে?

একটু পিছনে ফিরে তাকাই...

ডেট লাইন ডিসেম্বর ৭, ২০০১। সদ্য বিজয়ী জোট সরকার ক্ষমতায়। ময়মনসিংহে চারটা সিনেমা হলে বোমা বিষ্ফোরনে মারা গেল ১৮ জন মানুষ আর আহত হলো ৩০০ জন।

সংসদে এক জামাত দলীয় এমপি সরকারের কাছে কিছু বিশিষ্ঠ নাগরিককে ধরে রিমান্ডে পাঠানোর দাবী জানালো।

করিতকর্মা গোয়েন্দাদল একটা রিপোর্ট দিল ...গ্রেফতার হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুন, মৌলবাদ বিরোধী শাহরিয়ার কবির, আওয়ামীলীগ নেতারা ..বিশেষ করে জেলা আওয়ামীলীগের নেতা মতিউর রহমান।

হতবাক সবাই...কিন্তু তাদের একই প্রক্রিয়ার রিমান্ডে নেওয়া হলো। তখন মানুষ জানলো রিমান্ডে নিলে জেআইসি নামম একটা গায়েবী বিষয় এসে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।

পরে বুড়িগঙ্গার পানি অনেক গড়িয়ে যখন বাংলা ভাই, শাইখ আব্দুর রহমান সেই বোমা হামলার দায়িত্ব স্বীকার করার পর ফাঁসীতে ঝুললো ...কিন্তু সরকারের কোন সংস্থা এগিয়ে এসে বললো না ..তাদের সেই সব বিশিষ্ঠ নাগরিকদের নির্যাতন করাটা ঠিক হয়নি।

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো ২১ শে আগষ্টের বোমা হামলায় বেচে যাওয়অ শেখ হাসিনাকে নিয়েও। জামাতের নেতা নিজামী দাবী করলেন আওয়ামীলীগের নেতাদের রিমান্ডে নিতে। জড়ানো হলো এক ওয়ার্ড কমিশনারকে ...সে আওয়ামীলীগের সমর্থক। কিন্তু সেটা ঠিক ঠাক মতো কাজ না করায় এক হিরোইন সেবী জজ মিয়াকে টাকার বিনিময়ে আসামী করলো বাংলাদেশের জনগনের টাকায় চলা গোয়েন্দারা।

এবার যে পাঁচজন শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়ে গোয়েন্দারা তাদের কর্মততপরতা দেখালো ..ঘটনা চক্রে এরা সবাই জামাত বিরোধী এবং অনেকে আওয়ামীলীগের সমর্থক।

বিষয়টা হলো ..যে গোয়েন্দারা এই পর্যন্ত একটা বোমা হামলার সুরাহা করতে পারেনি। বাংলা ভাই গংদের মিডিয়ার কারনে জনগন চিনেছে এবং তাদের অতি সাহস তাদের জন্যে বিপদ ডেকে এনেছে। নতুবা নিজামীর ভাষ্য অনুসারে বাংলা ভাই গংও মিডিয়ার সৃষ্টি হয়ে এখনও অপকর্ম চালিয়ে যেতে পারতো।

সেই গোয়েন্দা সংস্থা ৫ জন শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়ে গত সপ্তাহের বিক্ষোভের পিছনের একটা বিরাট ষড়যন্ত্রের সুরাহারা করে সত্যটা আলোর কাছে নিয়ে আসতে পারবে...সেটা বিশ্বাস করা কষ্ট।

একই পুলিশ, একই গোয়েন্দ সংস্থা - জোট সরকারের তৈরী করা জামাত - বিএনপি ক্যাডার দিয়ে সাজানো ( কোহিনুর - আকবর ) সেট আপ এই সুযোগে তাদের জাতশত্রুদের নিশ্চিত করতে সচেষ্ঠ হবে বলেই আমার বিশ্বাস।

জামাত-শিবিরের ক্যাডারদের আমড়া গাছে যদি সরকার আম আশা করে সেটা হবে ভুল।

আর যদি কেহ বাজী ধরতে চান ....এই বছর বাংলাদেশে আমড়া গাছে আম ফলবে..তার বিপক্ষে বাজী ধরতে রাজি আছি...

আছেন কেহ?


মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি

শাসকেরা এরমধ্যেই দেয়ালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
তারা ম্যানিপুলেটেড স্ক্রীনে দেশের সমৃদ্ধি ও শান্তির দৃশ্য দেখে তৃপ্ত হয়ে ঢেকুর তোলেন।

আর নাটক ম্যানিপুলেশন এর জন্যে টিমটাও তো পুরনো, মানে আগের সরকারের আমলে যারা ছিলো - তারাই তো।

কাজেই, আশা করার কিছু নেই।



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

কনফুসিয়াস এর ছবি

রঙ্গ ভরা বঙ্গ দেশ।
-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নজমুল আলবাব এর ছবি
বিপ্লব রহমান এর ছবি

একটা কথা উল্লেখ্য যে, আদালতগুলো চলে সরকারের তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চলে কার নির্দেশে, সেটা বললেন না!


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি বাজি দরতে চাই এবার আঙুর ফলবে আম গাছে ।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

তবে বাজির এ পর্যায়ে আমি ইঙিত দিতে চাই যে বিভিন্ন জিন টেকনোলজির মাধ্যমেই কিন্তু এই হাইব্রিড জাত জামাতকে বিলুপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করা হচ্ছে বহু যুগ ধরে।

-----------------------------------
ঢাকার ভূমে ফিরেছে একাত্তর/প্রস্তুতি নে,সময় হলো তোর..

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আম ভালোইবাসি আমরা
কিন্তু জানি এবারও ফলবে আমড়া।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অতিথি এর ছবি

আনোয়ার হোসেন কর্নেল তাহেরের ভাই | এর আগে স্বাধীনতার পরে সেই জাসদ-আওয়ামী যুদ্ধেও সক্রিয় ভূমিকা নিয়ে জেলে গেছেন। শামসুন্নাহার হলের ঘটনার পরে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিতে গিয়ে পুলিশের মারে পা ভেঙ্গেছেন। বুদ্ধিমান, কিন্তু বামপন্থী আদর্শে অবিচল। আজাদ চৌধুরীর মত ধূর্ত শৃগালের পরামর্শে ছাত্রদের রাজনৈতিক ধংসাত্মক কাজে ব্যবহার খুবই দুঃখজনক। এই সরকার অপটু, নির্বোধ, ক্ষমতালিপ্সু, অনিরপেক্ষ, বিদেশী শক্তির ভৃত্য; তবু ছাত্রদের ধংসাত্মক কাজে ব্যবহার করে এর বিরুদ্ধে আন্দোলন অনুচিত। হারুনর রশীদ আগাগোড়া দুর্নীতিতে আক্রান্ত; তার যে-কোন কাজ থেকে দূরে থাকা নিরাপদ।

এস্কিমো এর ছবি

এটা অপেন অফার....

অতিথি (২):

যদি এরা ছাত্রদের উস্কীয়ে থাকলেও রিমান্ডে নেওয়া কি সমর্থন করা যায়?

লেখতে চাই ..কিন্তু কি লিখবো?

অতিথি এর ছবি

কাকে রিমান্ডে নেওয়া সমর্থনযোগ্য ! যেখানে প্রতি মুহূর্তে মানবাধিকার লংঘিত হয় ? যেখানে বর্বরতম অত্যাচারের পরে মিথ্যা জবানবন্দী সই করিয়ে নেওয়া হয়? বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ নিশ্চয়ই সম্মানীয়, কিন্তু সুবিচার সবারই প্রাপ্য।

রেজওয়ান এর ছবি

পত্রিকান্তরে প্রকাশিত একটি খবরের দুষ্টি আকর্ষন করছি।

আপনারা যদি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত এই শিক্ষকদের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে দেখিয়ে প্রকাশিত খবর পড়েন তাহলে দেখবেন একই তথ্য ঘুরেফিরে সব পত্রিকায় এসেছে। যেমন আমার দেশআমাদের সময়ের রিপোর্ট দাড়ী, কমা সহ এক। ফলে মনে হচ্ছে একটি প্রেস রিলিজের মতো বিষয়টি সব যায়গায় এসেছে। মন্তব্য নিস্প্রয়োজন।

×××××××××××××××××××××××××××××××××××××××
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তিনি আরবান গেরিলা ও মাইন হ্যান্ডলিং এর ওপরে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত

স্যার, আপনি এত কাজে পারদর্শি তা শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আপনার বিপক্ষের প্রার্থী কিংবা নিন্দুকের কাছ থেকেও তো শুনিনি। এরচে উপাদেয় তথ্য বিগত জোট সরকারও কি বের করতে পেরেছিল? শাবাশ বাংলাদেশের পুলিশ, এ বিশ্ব অবাক তাকিয়ে রয়...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।