অদৃশ্য অন্ধকার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২১/০৪/২০১০ - ৮:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিচের কথোপকথনে 'ক' লেখক নিজেই এবং 'অ' অদৃশ্য অন্ধকার।

ক : চিনলাম না, আপনার পরিচয়টা ?
অ: আমি অদৃশ্য অন্ধকার, তোমাকে আমি চিনি না, তাই বলে কি তোমার বন্ধু হতে পারবো না?
অ: আমার কথা একটু বলি, আমি শিক্ষিত চাকুরিজীবী মেয়ে, কবিতা ভালবাসি, এক-আধটুকু কবিতা লিখতে চেষ্টা করি, আকাশ দেখতে ভাল লাগে, আজ পূর্ণিমা রাত- মিরপুরে আমিই হয়তো হব আজ সারারাত চাঁদের সাথী,ভালো লাগে পাহাড়ের নীরবতা আর খালি পায়ে বৃষ্টিতে ভেজা। আপাতত: এতটুকু জানলে কি বন্ধু হওয়া যাবে?
ক : হতে পারে.....আপনি কি কবি, কবিতা লেখেন ?
অ: লিখি, সেটা নিজের জন্যে, সেগুলো প্রকাশ করার জন্য নয়।
ক: আপনি কিন্তু লিখতে পারেন, আজকাল লেখালিখির অনেক সুযোগ আছে, স্পেস দিচ্ছে, বিশেষ করে অনলাইনে।
অ: আমি জানি, লিখব, ইচ্ছে আছে। আমাকে এখন যেতে হবে।আসি ।

..............................................................

অ: তুমি কি কবিতা লেখ?
ক: না তো
অ: মিথ্যে বলবে না ?
ক: আমি তো কবি নই আর ওটা আমি হতেও পারবো না।
অ: তাহলে সচলায়তনে অলকা-১ কার লেখা ?
ক: ওটা, ওটা আসলে কিছুই হয়নি, একটা আর্ট এক্সিবেশনে কিছু বিষণ্ণ ছবি দেখেছিলাম, আমি শুধু সেগুলোকে কিছু শব্দ দিয়ে আঁকতে চেয়েছিলাম। আপনি তাহলে সচলায়তনে লেখা-লিখি করেন। আপনার নিক কি সচলে?
অ: সেটা তোমাকে আমি পড়ে বলব। আজ আমার মন খারাপ।
ক: কেন?
অ: আজ চাঁদ দেখা যাচ্ছে না,তাই।

.....................১০ই এপ্রিল,১০..........................

ক: এতদিন কোথায় ছিলেন?
অ: অন্ধকারে। আচ্ছা তুমি সচলে নিয়মিত লেখ না?
ক: না। ভীষণ অলস, আসলে অতটা লিখতে শিখিনি এখনও। সচলে আপনার প্রিয় লেখক কে?
অ: অনেকেই। তিথীডোর, হিমুদা, দুষ্টু বালিকা,পিপিদা, রেশনুভা,সুহান,লীলেনদা। কাজী আফসিনের কবিতা। মুস্তাফিজ ভাই আর অনুপমদার ছবি । কি দারুণ সব ছবি তোলে। আর সবচেয়ে ভাল লাগে নজরুল ভাই আর ধুগোর লেখা। ওনাদের লেখা পড়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই।
ক: এবার পহেলা বৈশাখে কি করবেন?
অ: আমি এবার ঠিক করেছি কিছুই করব না, কোথায় যাবো না,আমি শাড়ি পরব না, খুব যত্ন করে চোখে কাজল দিব না, এমন কি টিপ ও পরব না।
ক: কেন?
অ: আজ যাই।একটু তাড়া আছে.......

ভাল লাগছে না, মনটা বেশ খারাপ। গতকাল (২০,০৪,১০ ইং) দুপুরে জানতে পারলাম উনি ১৪ই এপ্রিল, পহেলা বৈশাখে এই পৃথিবী ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছেন। কীভাবে, কেমন করে এখনও জানতে পারি নি।

খোমাখাতার আড্ডা ঘরে মাঝে-মধ্যে কথা হত, সব মনে নাই, যতটুকু আছে তাই উপরে লেখার চেষ্টা করলাম। ওনার ভাল নাম কি সেটাও কখনও জানা হয় নি। আমাদের কথাবার্তায় প্রায় চলে আসত সচল। সচল ওনাকে বেশ ভাবাতো, সচল ঘিরে ছিল ওনার এক ধরনের মুগ্ধতা।

অদৃশ্য অন্ধকার নামে সচলে কোনো লেখা খুঁজে পেলাম না। হতে পারে উনি হয়তো অন্য নামে লিখেছেন বা মন্তব্য করেছেন। আবার এমনও হতে পারে উনি নীরব পাঠক ছিলেন। হয়তো বা একদিন সচলে অদৃশ্য অন্ধকার লিখত-সেই আশা এখন গুড়ে বালি। ফেসবুক থেকে ওনার লেখা একটা কবিতা তুলে দিলাম।

............................................
'বন্ধু'

আমার এক বন্ধু আছে......
আছে কি ছিল তাই বা আমি কেমন করে বলি?

সময়ের দাবিতে আমি তার কাছে থেকে দূরে,
না মাত্রিক দূরত্ব নয়, দুজনের মনের মাঝখানে এক আলোকবর্ষ দূরত্ব।
এক সময় আমাকে বলেছিল, যখন সে সত্যিকারে ভালবাসবে,
তখন আবার কবিতা লিখবে, একটা পূর্ণ কবিতা।

ওকে আমি চিনতাম মায়াবতী হিসেবে,
ও কিন্তু খোলসের আড়ালে নিজেকে করে রাখতে ভালবাসে.........
আমি জানি-তার খুব গভীরে লালিত দুঃখ-গাঁথার গল্প ।
ফল আর পাথর যার নাম, সে বড্ড অভিমান করে শুধুই বেঁচে আছে।

কেমন আছিস রে তুই?
সত্যি করে বল তুই কেমন ছিলি........
আমি তোকে দেখতে চাই? কি করে দেখব.....
আমি তো এখন কিছুই পারি না.....শুধু কল্পনা করি
কিন্তু কল্পনা করে তোকে দেখতে পাচ্ছি না......
তুই কি আসবি???
............................................

স্বপ্নদ্রোহ
ব্যলকনি,৩০৫।


মন্তব্য

arr [অতিথি] এর ছবি
স্পার্টাকাস এর ছবি

সত্য ঘটনা নাকি?

-----------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।

জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।

অতিথি লেখক এর ছবি

জ্বী, কিছুক্ষন আগে জানতে পারলাম, সম্ভবত আত্মহত্যা করেছেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।