দ্বাদশ দারু-দ্বিপদী

মহাস্থবির জাতক এর ছবি
লিখেছেন মহাস্থবির জাতক (তারিখ: রবি, ০৯/০৫/২০১০ - ৫:৩৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

---মহাস্থবির জাতক---

খাদ্য বা পানীয়ের ব্যাপারে আমার মতামত রবিবাবুর সাথে মেলে: "খাবার জিনিস খাদ্য।"

এর মধ্যে নানা মতামতের ঝড় বয়ে গেলো খাদ্যের ধর্মীয় গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। পানীয় নিয়ে তেমন একটা নয়, কমই। আবার, একটা পোস্টে তাসনীম বড়দের বোতলকে বাই-বাই পার্টি করার আহ্বান জানালেন। তিথীডোর করলেন সমর্থন। নজরুল ইসলাম প্রতিমন্তব্যে তাঁর উদরে পদাঘাত না করার উদার করুণাঘন আহ্বান জানালেন। সব মিলিয়ে আনন্দ পেলুম।

নিজে ও-রসে বঞ্চিত। কারণটা সামাজিক বা ব্যক্তিগত রুচি বা অভিরুচির। তবে, এ-নিয়ে লেখালেখি আগ্রহ নিয়েই পড়ি।

আজ ভাবলাম আর গুরুগম্ভীর কিছু লেখার চেষ্টা করবো না, তাই কিছুটা হাল্কার ওপর ঝাপসা দিয়ে ক'টা এলোমেলো ছড়া ছিটিয়ে দিলাম। মজাটাই মুখ্য। এর মধ্যে কিছু লেখা হয়েছিলো প্রায় ৬/৭ বছর আগে। বাকিগুলো এই লেখার জন্যেই তৈরি। মা বোধহয় পছন্দ করতো না তেমন লেখাগুলো, কারণটা স্পষ্ট। তবে, মনে হয় রবিবাবু একেবারে হ্যাক-থু না-ও করতে পারতেন।

যাগগে...

বাক্কাসের ওই চরণতলে প্রসাদ সেবি স্রেফ দুদিন।
এক, যেদিনে বাদল ঝরে; অন্য, যেদিন বৃষ্টিহীন।

যেদিন যাবো মর্ত্য থেকে স্বর্গে সুরার Campaign-এ,
লাশ যেন হয় ধোওয়া আমার দশটি বোতল Champagne-এ। (উৎসর্গ: নজরুল ইসলাম, কাজী)

যতোই ছোটাক টম,
জিতবেই জেরি।
মজার এই খেলা দেখি
গ্লাসে ভরে Sherry।

জানতে যদি চাও আমার এই মেঘছায়াতে wish কী-
পাঁচটি চিকেন ঠ্যাঙের সাথে একটি বোতল Whiskey। (অনুপ্রেরণা: রবিবাবু)

কাল সারারাত স্বপন আবেশে কেটে গেছে খুব গ্র্যান্ড-ই।
হাতে গালিবের শের, সাথে বহু পাতিয়ালা পেগ Brandy।

রাইকিশোরীর বিরহে কাতর,
দুঃখদিনের ইয়ার
কেউ পাশে নেই,
সাথী শুধু বাতি, আর ক্যানে ভরা Beer।

প্রেমিকা বা হোক বিবি, নিশিদিন পরাধীন-
চিত্তেতে সুখ নেই, হাতে তুলি তাই Gin।

"মদ গিলছিস বাসায় বসে, কুত্তা, ব্লাডি সোয়াইন!"
"খাচ্ছি বাবা নিজের টাকায়, মদ তো না, Red Wine।"

কিয়ারা, জোলিকে দেখে দিল ধক ধকস-
সামলাতে খেতে হয় Scotch on Rocks।

এই দুনিয়া খতরনাকি, এই জমানা বদ কা;
দিন মে টানি ঘরের জোয়াল, রাত্রে কুছু Vodka।

জাপানি নারীরা শুনি বর চায় মার্কিনি-
রাগেতে গেলাসে ঢালি বেশি ড্রাই Martini।

"গোলাম আযম বাংলা ছাড়"
ওই দেখা যায় দেওয়াল-গায়।
"আমরা শুধুই নই একা, (হিঁক্)
গো আযমও বাংলা খায়!"

শেষদিকে এক দাগেস্তানি কবির কবিতার দুটো লাইন দিয়েই শেষ করি:

Drink your fill of fragrant foam
But don’t forget the way back home!

পু: ওমর খৈয়ামের এই রুবাইটা না দিয়ে পারলাম না:

কোরান-হাদিস সবাই বলে পবিত্র সে বেহেশ্‌ত নাকি,
মিলবে যেথায় আসল শরাব, তন্বী-হুরী ডাগর আঁখি।
শরাব এবং প্রিয়ায় নিয়ে দিন কাটে মোর দোষ তাতে কী?
বেহেশ্‌তে যা হারাম নহে, মর্ত্যে হবে হারাম তাকি!


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

"খাবার জিনিস খাদ্য।" হলেও "পানের জিনিস পাদ্য" নয় মন খারাপ
তাই মদ্যপানই ভালো চোখ টিপি

'মাস্তি কা পানশালা' নামে বহুত আগে একটা সিরিজ লেখছিলাম। ৩ পর্বের পর আর লেখা হয় নাই।

আর আপনার লেখা পড়ে সন্ন্যাসীদারে মনে পড়লো... 'সুরা পানের সুরা' পড়ি না কতদিন... মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

সুরাই চলুক, সুরের সাথে মিল আছে। অন্তত, অসুর থেকে তো দূরে। আর, জানেন তো দেবতারা সমুদ্রমন্থনে উঠে আসা সুরা ('বারুণী' নামে) গ্রহণ করেছিলেন বলেই তাঁরা পরিচিত হন 'সুর' হিসেবে, আর প্রত্যাখ্যান করায় অন্য দল হয় 'অসুর'। আপনি প্রথম দলে, তাই আপনার গন্তব্যও অচিরেই সুরলোকে হবে বুঝতে পারছি।

'সুরা পানের সুরা' পাঠে কৈত্তাম চাই।

---মহাস্থবির---

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সচলায়তনে যা খুঁজতে চান, সেটা লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন। ডানদিকের উপরে দেখেন একটা গুগল সার্চ ইঞ্জিন আছে। সেখানে 'সুরা পানের সুরা' লিখে সার্চান
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দময়ন্তী এর ছবি

মজার৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

অতিথি লেখক এর ছবি

নাউজুবিল্লাহ। কিন্তু শের জোশ হয়েছে।

হ্যাঁ, সন্ন্যাসীদারে মিস করি বড়ই...

কৌস্তুভ

অতিথি লেখক এর ছবি

মজা পেলাম।

-লাবণ্য-

তাসনীম এর ছবি

মজা পেলাম।

মদ্যপানে যথেষ্ট উপকার আছে যদি পরিমিত পরিমানে করা হয়। সমস্যা হচ্ছে "পরিমিত" ব্যাপারটা খুবই আপেক্ষিক হাসি

++++++++++++++
ভাষা হোক উন্মুক্ত

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

যথেষ্ট উপকার। কিন্তু, টাকা কৈ? আর স্বাদও পাই না তেমন। আয়ু চাই না। মরিতে পারিলেই বাঁচি।

ধন্যবাদ।

---মহাস্থবির---

তিথীডোর এর ছবি

"তিথীডোর করলেন সমর্থন।"
"কারণটা সামাজিক বা ব্যক্তিগত রুচি বা অভিরুচির।"

[/b]ঠিক তাই [b]

_______________________________________

"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

হুঁ। আসলে বার কয়েক দেখেছিলাম চেখে। কিন্তু, তেমন সুধাস্বাদ পাই নি। যাহোক, আমি বেরসিক। কিন্তু, পরিমিত মাত্রায় উপকারী বটে

---মহাস্থবির---

নাশতারান এর ছবি

শারাব প্রসঙ্গে একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল।

স্কুলের সায়েন্স ফেয়ারের শেষদিন। আমরা টিফিন ব্রেকে খাওয়া-দাওয়া করছি। একজন ভীষণ আয়েশি ভঙ্গিতে কোকের বোতলে চুমুক দিয়ে বলে: শারাব খাই। কেউ শারাবের গান জানলে গা। পাশ থেকে একজন গান ধরল:
♪♫ খোদার প্রেমে শারাব পিয়ে-এ-এ-এ-এ ...... ♫♪

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা... জটিল পরিস্থিতি!

কৌস্তুভ

অতিথি লেখক এর ছবি

শের-এ-শরাব প্রেমী সবাইকে শুভেচ্ছা।

---মহাস্থবির---

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার নানাভাই গ্রাম এলাকার নিরক্ষর ও মধ্যবিত্ত কৃষক ছিলেন । তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ব্যক্তি । আজ থেকে ষাট বছর আগে হজ্ব করেছিলেন । গত বছর তিনি মারা যান তিরানব্বই বছর বয়সে । তিনি প্রায়ই একটা কথা বলতেন, "কোরআনে ছিয়াশি বার বলা আছে যে তোমরা সুদ খেও না আর দুইবার বলা আছে তোমরা মদ খেও না । কিন্তু মানুষ প্রথমটাকেই খায় । যারা অনবরত সুদ খায় তাদের কেউ মুরতাদ ডাকে না কিন্তু কেউ একফোঁটা মদ খেলেই সে মুরতাদ হয়ে যায়.. এই হলো আমাদের ধর্ম !" এই কথাটা আমার খুব প্রিয় । ওমর খৈয়ামের শেরটা পড়ে আবারও মনে কিম্ভুত প্রশ্নের উদ্ভব হচ্ছে ।

(গ্রেট কিশোরইয়োসো)

অতিথি লেখক এর ছবি

আচ্ছা ভাইজান,
খাইতে কেমন ওই ইয়ে মানে সুরা?

(গ্রেট কিশোরইয়োসো)

অতিথি লেখক এর ছবি

মহাস্থবির দাদা,

ইয়ে মানে এই সুরা জিনিসটা খাইতে কেমন? সেরিল্যাক এর চেয়ে মজা?

(মহাউন্মাদের শিষ্য)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।