জুড়াইতে চাই, কোথায় জুড়াই অথবা, কেন আমি মহাস্থবির-১

মহাস্থবির জাতক এর ছবি
লিখেছেন মহাস্থবির জাতক (তারিখ: সোম, ০৭/০৬/২০১০ - ৮:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সবার, সবকিছুর একটা শুরু থাকে।

আবার শুরুরও একটা হয়তো শুরু থাকে অনেক ক্ষেত্রে।

জন্মের শুরুর শুরু, মৃত্যুর শুরুর শুরু, এইভাবে চলছেই...ধুত, আসলে আমার এই গল্পের, হ্যাঁ, গল্পের মতোই মনে হতে পারে অনেক জায়গায়, শুরুরও একটা প্রারম্ভ আছে, দীপ জ্বালানোর আগে সলতে পাকানোর মতো।

ধরা যাক, আমি একটা মানুষ বা তার কাছাকাছি জায়গায় ছিলাম অনেকটা...এই...২০০৬ সালের শুরুতে, মানে তখন অনুভূতিগুলো অনেকটা ওরকমই ছিলো। তখন একেবারে ১লা জানুয়ারিতেই আমি একটা খবর বা একটা দাপ্তরিক নির্দেশ পাই, যেটা আমায় গোটা দু’মাস ধরেই বেশ ভোগায়। আর তারপর আমার শহরে ফেরত আসার একটা পেশাগত ভুল সিদ্ধান্ত-যেটা আমায় হয়তো আজীবন ভোগাবে-নিয়ে ফেলি আর সেটা প্রায় ২০০৬ পুরোটা জুড়েই আমার গলায় কাঁটা না, বিষ হয়ে জমে থাকে, কিছুটা এখনো আছে।

আর ছিলো ‘শি’-এর ব্যাপারটা।

আমার জীবনে তার আগমন, অবস্থান এবং শেষ পরিণতি সবটাই বেশ কিছুটা নাটকীয়তায় ভরা।

প্রথম প্রেমের আমার অবসান ঘটেছে, আমার পৃথিবী তখন কষ্টময় এবং শূন্যতাময়। আমি হাত বাড়িয়ে বাতাস ছাড়া আর কিছূই পাই না, আবার প্রশ্বাস নিতে গেলে সেই বাতাসেরও যেন কমতি পড়ে যায়। যেদিন বা ঠিকভাবে বলতে গেলে যে-রাতে আমি আমার প্রথমার কাছ থেকে তীব্ররকমের বিষাক্ত অপমান পাই (ওভার ফোন, য়্যু নো) সে-রাতে বড্ড ভয় পেয়েছিলাম, মনে হচ্ছিলো সারা সংসারে আমার জন্যে কিছু নেই, কোন অবলম্বনও। আমার অস্তিত্ব বোধহয় তখন টিকে থাকা নিয়ে মহাচিন্তায় পড়ে যায়।

অনেক, অনেক, অনেক ভরসাহারা ছিলাম তখন।

যাহোক, সময় তো যায়। ওকে দাঁড় করিয়েও রাখা যায় না, আবার তাড়ানোও যায় না।

এই তথ্য অবশ্য পরে অনেক বেদনায় নীল হতে হতে বুঝি আরো ভালোভাবে, আরো রক্তে-মজ্জায়।

এমনি সময়ে সে আসে, ‘শি’ আসে। তারও কিছু গোপন বেদনা ছিলো, ছিলো লুকনো বিষের বালি, মুখ গুঁজেই সে ছিলো, মুক্তো ফলানো হয় নি। আমাদের দুজনের সূক্ষ্ম কিছু পারস্পরিক ভালোলাগা বোধহয় আগেই ছিলো।

তা, ভালোলাগা থাকতেই পারে। কিন্তু, তার দিক থেকে বোধহয় ব্যাপারটা আরো বেশিই ছিলো। কারণ, যদিও তার অভিযোগ ছিলো যে আমি ই-মেলে তাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলাম তার হৃদয়ের কথা জানাতে (কসম প্রকৃতির, আমি তা করি নি কো, আর এটা নিয়ে আমি বলতাম যে আমাদের বাচ্চাকাচ্চাদের আমরা দুজনের সব ই-মেল দেখাবো আর তারাই রায় দেবে, কিন্তু, শেষ অবধি আর...যাক, পরের কথা আগে বলছি), তথাপি পরে কোন এক দুর্বল মুহূর্তে সে স্বীকার করে যে, আমি যেন তার জীবনে আসি তার জন্যে সে ফেং-শুই চর্চা করে টানা বোধহয় প্রায় পঁয়তাল্লিশ দিন, বিশেষজ্ঞরা আরো ভালো বলতে পারবেন। ওই একটি কুসংস্কারই তার মধ্যে আমি দেখেছিলাম। অবশ্য পরে আমি যখন তাকে অনুরোধ করি আমার প্রবলতম দরকারের মুহূর্তে ওই রিচ্যুয়ালটি পালন করার জন্যে, সে কেন যেন তা আর করে নি।

আমরা এক হই।

আমার জীবনের প্রাপ্তবয়স্ক এবং পরিণত প্রথম প্রেমের যাত্রা সেই শুরু। সালটা ২০০৪। এর পর থেকে প্রায় বেশিরভাগ সময়েই আমি আমার পরিবারের সাথে তাকে নিয়ে বিরোধিতা করেই কাটিয়েছি। মানে, আমার পরিবারের সদস্যেরা, বিশেষত আমার মা, বিধর্মী একজনকে আমার অর্ধাঙ্গী হিসেবে দেখতে মোটেও রাজি ছিলেন না (“ছি, ছি, লোকে কী বলবে, মুখ দেখাতে পারবো না সমাজে” ইত্যাদি, ইত্যাদি এবং ইত্যাদি)। উপমহাদেশের একটি ধার্মিক সম্প্রদায়ের বিশাল সংখ্যক সদস্য তাঁদের ঘরে বা উপাসনাকক্ষে এমন একটি যুগল বিগ্রহ স্থাপন করে ভক্তিতে আত্মহারা হয়ে যান, যে-বিগ্রহ দু’টির মধ্যে সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে সমাজবিরোধী; যদিও প্রেমের টানেই তাঁরা দুজন একত্র হয়েছেন বলে বলা হয়। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাবিনম্র নতশির হওয়ার সময় সবাই বোধহয় কথাগুলো ইচ্ছে করেই ভুলে থাকেন। নইলে নিজেদের সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যের অনেক নীতিসম্মত প্রেমজ সম্পর্ক বিয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের বাধা তুলনাহীন কেন? অন্য বৃহৎ ধর্ম সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটির কোন ব্যত্যয় নেই। তাঁদের পূর্বতন অনেক সম্মাননীয় প্রেরিত পুরুষ এবং সর্বশেষ জনের জীবনে প্রেমের নজিরের অভাব সীমিত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। অবশ্য ধার্মিক জনেদের নানাবিধ স্ববিরোধিতা, ভাষান্তরে ‘ভণ্ডামি’-র এতো এতো প্রমাণ আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে পেয়েছি যে, সামগ্রিকভাবে ধর্ম এবং ধার্মিক বস্তুটির প্রতিই আমি আতঙ্কিত, বিতৃষ্ণ এবং অনীহ এবং যথাসম্ভব ওসব থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি, যদিচ সবসময় সফল নই।

‘শি’-এর রূপ অসাধারণ না হলেও সাধারণের বেশ কিছুটা দূরে, আর সৌন্দর্য বিচারে বাঙালিরা যে-বস্তুটিকে প্রথম এবং প্রায়ই একমাত্র ব্যাপার বলে গণ্য করেন সেটি তার মধ্যে ছিল চোখে পড়ার মতো সুপ্রচুর পরিমাণে। তবে, তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং বাস্তববুদ্ধি সাধারণ রমণীর চাইতে অনেক ঊর্ধস্তরের, তার মনোভাব প্রকাশের ভাষা এবং তেজস্বিতা সাধারণ বাঙালির চাইতে অনেক ওপরের সারির, তার স্যাটায়ার, সার্কাজম আর কৌণিক মন্তব্যপ্রকাশের ভাষার এখনো দ্বিতীয় তুলনা আবিষ্কৃত হয় নি আমার কাছে এবং তার ভালোবাসা পাওয়ার এবং ফিরিয়ে দেয়ার তুলনা আমি এখনো তেমন একটা পাই নি, আর পাবোও না কখনোই, জানি। পড়া, ছবি দেখা, গান শোনা, বেড়ানো, বাচ্চাকাচ্চা ইত্যাদি যে-ব্যাপারগুলো আমার পছন্দের, সেসব নিয়ে আমি তার সাথে কথা বলে আর স্বপ্নের জাল বুনে (পরে প্রমাণিত, ওটা জাল স্বপ্ন ছিলো) কাটিয়েছি অনেকটা সময়। আর, বিদগ্ধ রমণীকুলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলি, নারীদের মধ্যে রীতিমত বিরল একটা গুণ, অবিশ্বাস-ঈশ্বরে ও ধর্মে-ছিলো তার দ্বিতীয় প্রকৃতি।

যথারীতি তার দোষাবহ দিকও উপস্থিত। তার অতিরিক্ত বাস্তবসংলগ্নতা মাঝে মাঝে আমার রোম্যান্টিক চেতনায় বিঘ্ন ঘটাতো। তার ক্রোধ ছিলো অপরিমেয়। সে বেশ রেসিস্ট (মানে, বর্ণপ্রেমী), নিজের ওপর তার অপরিমেয় আত্মবিশ্বাস, এবং সবচে’ ভয়ঙ্কর যে-ব্যাপারটি সেটা হচ্ছে সে নিজের দুর্বলতা মোটেও প্রকাশ করতে রাজি ছিল না একবিন্দু।

হায়, যদি তার এই দিকটি না-ই থাকতো স্বভাবে!

এরপর এলো আমার জীবনের সবচাইতে খারাপ সময়ের দিকে অভিসারের লগ্ন। আমার বন্ধুরা (এবং আমি তারই মধ্যে অন্যতম) মিলে একটি পাঠশালা খুলি, যার চলতি নাম ‘কোচিং সেন্টার’। টাকা পেয়েছি মন্দ নয়, কিন্তু টাকার জন্যে নয়, বস্তুত বন্ধুরা সবাই মিলে আছি এবং আমার ছাত্র-ছাত্রীদের, যাদের আমি দারুণ ভালোবাসতাম, তাদের কাছাকাছি আছি, এটাই আমার সবচাইতে আকর্ষণের জায়গা ছিলো। অফিসে আর ঘরে যখন নানান যাতনায় আমি ক্লান্ত, তখন ওটা ছিল আমার মরূদ্যান। ভাবতাম, যাক। এমন একটা জায়গা তো আছে যেখানে অন্তত আমি নিশ্চিন্ত আশ্রয় পাচ্ছি। তখনো বুঝি নি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ কেন পদার্থবিজ্ঞানের গণ্ডি ছেড়ে সাধারণ্যেও এতো জনপ্রিয় বা সুপরিচিত।

আমার উদ্যোক্তা বন্ধুদের মধ্যে প্রায় সবাই (দু’তিনজন বাদে) কোচিং ছেড়ে অন্যদিকে নিবিষ্ট। যে-বন্ধুটি তুলনামূলকভাবে বেশি জড়িত, অভিভাবক ও ছাত্রমহলে বেশি পরিচিত এবং জনপ্রিয় এবং যে আমার সবচাইতে ঘনিষ্ঠ ও যার ওপর সঙ্গত কারণেই আমি এই ব্যাপারে সবচাইতে বেশি নির্ভরশীল, আঘাতটা এলো তার কাছ থেকেই।

নিজেকে একচক্ষু হরিণের মতো মনে হলো।

ছাড়তে হলো প্রায় পাঁচ বছরের অনেক স্মৃতিবিজড়িত কোচিং-এর জায়গাটা। সেখানে মাথা তুললো প্রিয় বন্ধুর নতুন কোচিং-এর সাইনবোর্ড। হারাতে হলো অনেক সুপরিচিত এবং অনেক অনুগত শিক্ষকদের, যাদের অনেকেই দেখা গেলো বিশ্বাসঘাতকতায় বিশ্বাস করে। আর বন্ধুত্বে বিশ্বাসও কমে এলো কিছুটা। জীবনে এতো বেশি আহত হই নি আর। মনে হচ্ছিলো সারা শরীর আমার বন্ধুর উপহার বিশ্বাসঘাতকতার বিষে তীব্র নীল হয়ে যাচ্ছে, ওঃ, প্রসঙ্গত, নীল আমার বড্ড প্রিয় রঙ।

মানসিকভাবে এতোটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম যে, প্রায় শারীরিকভাবেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম।

কিচ্ছু করতে পারছিলাম না, কিচ্ছু না।

না সৃষ্টি, না ধ্বংস।

অবশ্য, স্বীকার করতেই হয় সত্যের খাতিরে, অনেক আন্তরিক এবং অনুগত শিক্ষক আর ছাত্র-ছাত্রীরও দেখা পেয়েছি সেসময়। পড়াশোনা করার জন্যে বাইরের কোনো দেশে যাওয়ার স্বপ্ন আমার অনেকদিনের, এখনকারও। কিন্তু, স্বপ্ন মনে হলো স্বপ্নই থেকে যাবে। ওটাতেও মন দিতে পারছিলাম না। আর, ‘শি’-এর বিষয়টা নিয়ে পারিবারিক ঝামেলা তো নিত্যদিনকার ব্যাপারই।

যাকে বলে ত্রিমুখী আক্রমণ।

এমন সময়ে আরো কিছু, যা ওজনে আর আয়তনে আমার এতাবৎকালের সব অসুবিধা কয়েক আলোকবর্ষ দূরে ফেলে দিলো।

[হয়তো ক্রমশ, হয়তো নয়, হয়তো...]


মন্তব্য

কুলদা রায় এর ছবি

দেখার চেয়ে দেখানোর ভাষাটা আকর্ষণীয়।
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে ভাবলাম, আমার লেখাটাও দেই।

আপনার মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞতা ও বিনম্র শ্রদ্ধা।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অতিথি লেখক এর ছবি

জাতক ভাই, অনেক কষ্টের কথা তার চেয়েও অনেক সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় লিখে গেলেন। অনেক ভালো লাগলো। এর জন্যই বুঝি আমার লেখার শেষ লাইন কয়টা আপনার জীবনের কথা হয়ে ছিলো?

কামরুজ্জামান স্বাধীন।

বইখাতা এর ছবি

বুঝতে পারছি খুব তিক্ত, বেদনাময় একটা সময় গেছে আপনার । হয়তো ক্রমশ কেন, আরো কয়েক পর্ব লিখুন। আপনার লেখার ভঙ্গিটা খুব ভাল। পড়তে ভাল লাগে।

লেখার একটা জায়গায় একটা প্রশ্ন জেগেছে আমার মনে। বলতে পারেন একটা ছোট্ট কৌতুহল। হাসি ঈশ্বরে ও ধর্মে অবিশ্বাস / বিশ্বাস কি কারো গুণ বা দোষ হতে পারে? মানে এই বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ব্যাপারটাকে কি কারো চরিত্রের দোষ-গুণের মধ্যে ফেলা যায়?

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

দিদিভাই, বলতে তো চাই, চাইছি গত তিন বছর ধরে। জানি না বলতে পারবো কি না, আর কতটুকুই বা, তবুও চেষ্টা করবো। এই লেখাটা গত প্রায় বছরখানেক ধরে আমার কাছে অসমাপ্ত পড়ে আছে। কিছুটা ধুলো ঝেড়ে দিয়েই দিলাম শেষ অব্দি।

বুঝতেই পারছেন তার ব্যাপারে আমার নিরপেক্ষ থাকা কতোটা কঠিন।

আর, ঈশ্বর নামক প্রত্যয়টি মানুষের, বিশেষত আমাদের সমাজের মানুষের এবং নারীদের আরো বেশি করে যেখানে মানসিকভাবে বন্দী, নির্ভরশীল এবং সদাসন্ত্রস্ত করে, সেখানে তার বিপরীতে দাঁড়ানোর ক্ষমতা থাকাটা কি একটুও সমীহ আদায় করে না? আমার কাছে তো করে। একান্তুই ব্যক্তিগত মতামত।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

বইখাতা এর ছবি

নিরপেক্ষ থাকতে হবে কেন! আমিও তো আমার প্রিয়জনদের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নই। হাসি

স্রোতের বিপরীতে, প্রচলিত মতের বিপরীতে সপ্রকাশ অবস্থান করা ও তার সপক্ষে অন্য সবার সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়া অতি অবশ্যই সমীহ জাগানিয়া ব্যাপার। এমন দু'একজনকে আমিও চিনি। এতটা সাহস, মনের জোর সবার থাকেনা। আমার নাই। এই ব্যাপারটাতে আপনার সাথে আমি একমত। কিন্তু আমি আসলে ঠিক এই দৃষ্টিভঙ্গিতে কথাটা বলিনি। আমার মতে ধর্মে/ঈশ্বরে বিশ্বাস./অবিশ্বাস এর ব্যাপারটাকে কারো দোষ/গুণের তালিকায় ফেলা যায় না। এটা কারো দোষ বা গুণ, ঠিক এভাবে জেনরেলাইজ করে ফেলা যায় না ব্যাপারটাকে। যাইহোক, মতামতে ভিন্নতা তো থাকবেই। হাসি এই পর্বেই লেখা থামিয়ে দেবেন না এটাই প্রত্যাশা।

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্প ভেবে পড়তে তো বেশ মজাই লাগছে। আমি কিন্তু গল্প ভেবেই পড়বো।
এরপর.... ? বলুন.... শুনছি সবাই....

আপনি বলতে জানেন।

অভদ্র মানুষ

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ। কিন্তু, একতারা দিয়ে গেলেন কে? একটু বলে গেলেন না কারণটা কী?

সচলে আমার প্রথম একতারা প্রাপ্তিতে আমায় কেউ কি অভিনন্দন জানাবেন?
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অনিকেত এর ছবি

মহাস্থবির'দা,

আপনার লেখার ভঙ্গীটা এমন যে, আপনি যাই লেখেন না কেন, সেটা বড় শক্ত প্রভাববলয় তৈরী করে। সেটা এড়িয়ে যাওয়া যায় না।

আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ভীষন ব্যক্তিগত দুঃখের কাহিনী এইখানে লিখছেন। আমি অনুমান করতে পারি---এইটা এমন ভাবে মনের গহীন থেকে টেনে এনে সবার সামনে তুলে আনাটা আপনার জন্যে সহজ নয় মোটেই। কিন্তু তারপরও আপনার চমৎকার গদ্যভঙ্গী আর জীবনের নিষ্ফলা অকরুণ দিকটির প্রতি আপনার এক সহজাত কৌতুকময় উপলব্ধি আমার কাছে লেখাটিকে দুর্দান্ত রকমের আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

আমি জানি, আপনার লিখতে কষ্ট হচ্ছে। সামনে হয়ত আরো হবে।
কিন্তু আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ রইল, এরপরও লিখুন।
লিখে লিখেই হারিয়ে দিন ভেতরের কষ্টটাকে।

এমন অসাধারণ লেখার জন্যে বিশ লক্ষ তারাও কম হয়ে যায়---

পরের পর্বগুলোর জন্যে অপেক্ষায় রইলাম---

মঙ্গল হোক!

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

অনিকেত, আমি জানি আমি লিখে কোন পরিবর্তনই ঘটাতে পারবো না আমার এই বন্ধ্য সময়, জীবন আর মানসিকতার। তারপরও...একটু চাপটা হালকা করি।

কাঁদলেও তো নাকি কষ্ট কমে, কিন্তু যে কান্না বুকে চেপে বেড়ায়, তার কষ্টের মাপক কী?

আপনার মন্তব্যে, বিশ্বাস করুন, কিছুটা হলেও প্রেরণা পেলাম। আরো অনেক বেশি পেতাম, কিন্তু, কটা দিন ধরে মনটা চরম অসাড় হয়ে আছে, স্নায়ুবোধহীন শামুকের মতো।

ভালো থাকবেন।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

পড়তে পড়তে মনে হলো এটা গল্পই। আসলেই এটা গল্প। আপনার জীবনের জীবন্ত ঘটনা নয়। এই ভেবে পড়ে যে বেদনাবোধ হলো, তা কিছুটা লাঘব করলাম।

শহিদ এর ছবি

আসুক আরো সচল ভাষা সিরিজ, ক্ষতি নেই ! একে বলে কোয়ালিটি কন্ট্রোল, এভাবেই শোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা বেছে নিয়েছি পুর্বেও, ভবিষ্যতেও ব্যতিক্রম হবে না।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হচ্ছে এই গালিগালাজ পাকিদের দুয়ারে না পৌছে আমাদের ই বিভ্রান্ত করছে ।

পাঠক এর সাথে একমত।

শহিদ এর ছবি

আসুক আরো সচল ভাষা সিরিজ, ক্ষতি নেই ! একে বলে কোয়ালিটি কন্ট্রোল, এভাবেই শোধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা বেছে নিয়েছি পুর্বেও, ভবিষ্যতেও ব্যতিক্রম হবে না।
ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হচ্ছে এই গালিগালাজ পাকিদের দুয়ারে না পৌছে আমাদের ই বিভ্রান্ত করছে ।

পাঠক এর সাথে একমত।

শহিদ এর ছবি

ভুল এ । ঃ) কেউ কেটেদিন ।
মহাস্থবির জাতক আপনি দারুন লেখেন। মুগ্ধ!!

তিথীডোর এর ছবি

চমৎকার চলুক
লিখতে কষ্ট হচ্ছে হয়তো, তবু লিখুন প্লিজ....

পরের পর্বগুলোর জন্যে অপেক্ষা থাকবে!!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

আরো লিখুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

কষ্টের কথাগুলো কষ্ট করে জানান । জানিনা এতে কিছু হবে নাকি । কিন্তু তাও খুব ভালো লাগে ভাবতে, হবে... পরের পর্বের অপেক্ষায় ।

নিশা

অতিথি লেখক এর ছবি

কষ্টগুলো জমে জমে নীল হয়ে গেছে। হয়তো নীল আপনার প্রিয় রঙ দেখেই।
হয়তো এত কষ্ট হতো না যদি কেউ আপনার সাথে থাকতো। সময়, বন্ধু, প্রেয়সী, পরিবার যে কেউ।

মাঝে মাঝে আমার কষ্টগুলো নিয়েও বসার চেষ্টা করি, লিখি, মুছি, কাটি, আবার ছিঁড়েও ফেলি। কি লাভ বলে? যে কষ্ট সে কষ্টই থেকে যায়।
তবু আপনাকে দেখে একটু লিখতে ইচ্ছা করছে। দেখি লিখে ফেলবো।

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

আসিফ ইকরাম এর ছবি

'ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়' লেখাটার প্রথম মন্তব্য পড়ে আপনার আরেকটা লেখা পড়া হল। তারপর মাত্র তিন পাতা দেখে ইচ্ছে হল সব লেখা পড়ে ফেলার। পড়লাম।

সচলায়তনের নীরব/নিরব পাঠক আমি। কিন্তু আপনার অনুবাদগুলো আর কিছু লেখা পড়ে এত ভাল লাগলো!! মন্তব্য করার জন্য বেছে নিলাম অসমাপ্ত থাকা সিরিজটাকেই। আশা করি শেষ করবেন লেখাটাকে।

আপনার লেখার প্রতীক্ষায় থাকবো মহাস্থবির জাতক। ব্লাডি সিভিলিয়ানের সন্ধানেও নেমে যাব আজকালের ভেতর।

অ ট- এই ছোট মন্তব্যের মধ্যে কতগুলো বানান/ব্যাকরণের ভুল হলো সে চিন্তায় আছি!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।