আটলান্টিকের পাড়ে গড়ে ওঠা দাসত্ব ও Slave House গুলোর গল্প

রংতুলি এর ছবি
লিখেছেন রংতুলি [অতিথি] (তারিখ: রবি, ২৯/০৪/২০১২ - ২:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আফ্রিকার ইতিহাসের একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে মূলত দাসত্ব, যদিও এটা আমাদের সবার জানা। তবুও এই প্রথার ভেতরে থাকা প্রকৃত বাস্তবতার চিত্র এখনও রয়েছে আমাদের অনেকের চোখের আড়ালে, এখানকার কিছু Slave House এবং এগুলোর ভেতরের ইতিহাস কিছুটা কাছ থেকে উপলদ্ধি করে অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে। আর সেকারনেই আমার দেখা Slave House বা Slave Trade Center গুলো নিয়ে লিখার ইচ্ছাটা আমার অনেক দিনের, যদিও কখনই সময় করে উঠতে পারি নাই। ছবিগুলো দেখে কোথায় যেন একটা অপরাধবোধ জাগে, যেন কিছু একটা করার কথা ছিলো, কিন্তু হয় নাই! পুরনো সেই ইচ্ছাটা আবার মাথায় চেপে বসে, নাহ! আর সময় নষ্ট না! তাই উঠেপড়ে লাগলাম, আমার মূল উদ্দেশ্য Slave House গুলোর ভেতরে থাকা, দাসত্বের এর প্রকৃত রূপ তুলে ধরা।

পৃথিবীর প্রতিটি স্থানেরই নিজস্ব গল্প আছে, আছে নিজস্ব গন্ধ এবং পরিচিতি। আটলান্টিকের বুকে জেগে থাকা এই ছোট ছোট দ্বীপ ও কোস্টাল এরিয়া গুলো শত শত বছর ধরে হাজারো নির্মমতার গল্প বয়ে বেড়াচ্ছে, যেগুলো মূলত ব্যবহার করা হতো একসময় slave trade center হিসেবে।


[James Island, Juffureh, The Gambia]

James Island, Juffureh, The Gambia - যেখান থেকে পাচারকৃত অসংখ্য ক্রীতদাসের মধ্যে Kunta Kinte একজন। তাকে আনুমানিক ১৭৬৭ সালের দিকে Juffureh অঞ্চল থেকে বন্দি এবং পাচার করা হয়। পরবর্তীতে তারই বংশধর Alex Haley একটি বিখ্যাত উপন্যাস লিখেন, Kunta Kinte র জীবন অবলম্বনে, The Roots।


[James Island, Juffureh, The Gambia]

যদিও দ্বীপটির মূল আয়তনের অধিকাংশই ক্ষয়ে গেছে লবনাক্ত পানিতে, slave house টিও ভেঙ্গে পড়েছে। তারপরেও দীর্ঘকাল ধরে মানুষের প্রতি করা মানুষেরই অকল্পীয় বর্বরতা এবং নির্যাতনের ছাপ এখনও যেন জীবন্তই রয়ে গেছে।


[Goree Island, Dakar, Senegal]

আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও এই দ্বীপটি আমেরিকা থেকে আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে কাছের পয়েন্ট হওয়ায়, অবস্থানগত কারণে দাস বাণিজ্যে বিশাল ঐতিহাসিক গুরুত্ব রাখে। Goree Island এ পর্তুগীজরা প্রথম দাস বাণিজ্য শুরু করে ১৫৩৬ সাল থেকে। দ্বীপটির উপর নজর পড়তে থাকে অন্যান্য পশ্চিমা পরাশক্তি গুলোর। ১৫৮৮ সালে United Netherlands দ্বীপটি দখল নেয়, তারপর আবার Portuguese, আবার Dutch, দখল পাল্টা দখল চলতে থাকে। British রা দখল নেয় ১৬৬৪ সালে। এবং সবশেষে Frence রা তাদের শক্ত খুঁটি গাঁড়ে। ১৬৭৭ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ Senegal স্বাধীণ হবার আগ পর্যন্ত এখানে French কলোনি বজায় ছিলো।


[Goree Island, Dakar, Senegal]

প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময় ধরে নির্বিচারে এখান থেকে আনুমানিক ২০ মিলিয়ন নারী, পুরুষ ও শিশু পাচার করা হয় আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। যাদের বেশির ভাগকেই এখানে ধরে আনা হতো ওয়েস্ট আফ্রিকার দেশগুলো থেকে। Island টি ১৯৭৮ সালে UNESCO কতৃক World Heritage Site এ অন্তভুক্ত করা হয়। অনেক প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবন পরিবর্তিত হয় হোটেলে।


[Cape Coast Castle, Accra, Ghana]

দূর্গটি ১৬৫০ এর দিকে Swedish দের দারা নির্মিত হয় মূলত এ অঞ্চলের কাঠ ও স্বর্ণ রপ্তানির উদ্দেশে। প্রচুর পরিমানে প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে ভরা এ অঞ্চলটি নিয়ে ইউরোপীয় শুক্তিধর দেশগুলোর হানাহানির ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। একাধিক বার Dutch, Portuguese, Swedish ও British দের দ্বারা দখল পাল্টাদখলের পর, অবশেষে সবাইকে তাড়িয়ে castle টিতে বৃটিশরাই স্থায়ী আসন গেঁড়ে বসতে সক্ষম হয়। Castle টির নিচে ভূগর্ভস্থ ভয়ংকর Slave House টি প্রথম দিকে তৈরী করা হয় খনি ও কাঁচামাল উত্তোলন এবং রপ্তানীতে ব্যবহৃত দাসদের রাখার জন্য। পরবর্তীতে ব্রিটিশরা এখানে পাকাপাকি ভাবে দাস রপ্তানি বাণিজ্য যোগকরে এবং যা চলতে থাকে ১৬৬৫ থেকে ১৮০৭ সাল পর্যুন্ত। Cape Coast Castle এর এই Slave House টিকে নরকের সাথে তুলনা করা হয়, ভূগর্ভস্থ হওয়ায় সেখানে দিন-রাতের কোনো তফাৎ ছিলো না, ছিলো না বাতাস সঞ্চলনের কোনো ব্যবস্থা। যেকারনে সেখানে অকল্পনীয় সংখ্যক ক্রীতদাসের মৃত্যু হয়েছে শুধু দূষিত বাতাসে দম বন্ধ হয়ে অথবা আলো ও অক্সিজেন এর অভাবে! এখানে ধরে আনা বেশীর ভাগ আফ্রিকানকে পাঠানো হতো America, Caribbean অথবা European দেশ গুলোতে। Cape Coast Castle থেকে ৬ মাইল দুরে পর্তুগীজদের আর একটা দূর্গ আছে প্রায় একি আদলে তৈরী, সেখানকার Slave House টি থেকেও দাস বাণিজ্য চলতো সমানভাবে। ১৯৭৯ সালে Ghana র এইসব দূর্গ ও Slave House গুলো ইউনেসকো কতৃক World Heritage List এ আনা হয়।

ছোট ছোট গ্রাম ও গোত্র থেকে মূলত গোত্রপতিদের সহায়তায় অথবা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বন্দি করে দাসদের জোগাড় করা হতো। Cape Coast Castle এর Slave House টিতে আফ্রিকানদের জোগাড় করা হতো স্থানীয় গোত্র প্রধান অর্থাৎ যারা সেখানকার অধিকাংশ অঞ্চল গুলো নিয়ন্ত্রন করতো তাদের সহায়তায়, তারা ব্রিটিশ প্রভুদের সাথে করা চুক্তি মোতাবেক প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর ১০০০ পুরুষ ও ৩০০ মহিলার যোগন দিত। এভাবেই এদের এনে জড়ো করা হতো এসব slave house গুলোতে। তাদের বেঁধে রাখা হতো হাতে, পায়ে এমনকি গলায় লোহার শেকল দিয়ে।


[National Museum, Banjul, The Gambia থেকে নেয়া চিত্র - যেভাবে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দাসদের বন্দি করে নিয়ে আসা হতো।]


[National Museum, Banjul, The Gambia থেকে নেয়া চিত্র – দাসদের পরিবহনের জন্য যেভাবে Slave Ship এ ভরা হত।]

বন্দিকৃত দাসদের ছোট ছোট কার্গো বা Slave Ship এ ভরা হত পরিবহনের জন্যে। স্থল থেকে Trade Center গুলোতে, এবং Trade Centre গুলো থেকে গন্তবে নিতে এইসব Slave Ship ব্যবহার করা হতো। ব্যবসায়ীরা পরিবহন খরচ বাচাতে, তৎকালীন ক্রমবর্ধমান শ্রমবাজারে দাসের চাহিদা পূরণে ও অধিক মুনাফার লোভে একবারে যত বেশী সম্ভব দাস নেয়া যায়, সে চেষ্টাই করতো।


[National Museum, Banjul, The Gambia থেকে নেয়া চিত্র – কৃতদাসদের পরিবহনে ব্যবহৃত নৌকা বা Slave Ship.]

এরকম একটা ছোট কার্গোতে কমপক্ষে ৬০ থেকে ৯০ জনকে পরিবহন করা হত। দাসদের এতটাই ঠাসাঠাসি করে ভরা হত যে, “অনেকটা গুদামে ভরার মত, সেই কষ্ট বর্ণনা করা অসম্ভব। তাঁদের সামান্য নড়াচড়ার অবস্থা থাকতোনা। অসহ্য গরমে তারা চিৎকার করত এবং অজ্ঞান হয়ে পড়তো। পানির জন্য তাদের অবস্থা মৃতপ্রায় হয়ে যেত। অবস্থা আরও খারাপ হতো বর্ষাকালে, যেখানে নৌকাগুলোতে তাদের ঢাকবার কোনো ব্যবস্থা থাকতো না, অথচ সেখানে গোলা ঢাকবার তেরপল থাকতো। এমন অবস্থায় দম নেয়ার জন্যে তারা ছটফট করতে থাকতো” - Thomas Clarkson, Essay on the Slave Trade (1789). এভাবেই তাদের যাত্রা চলতে থাকতো দিনের পর দিন কখনো ২ থেকে ৩ মাস। অবশেষে যারা টিকে থাকতো তারা গন্তব্যে পৌঁছাত। আর কতজনের শেষ গন্তব্য যে আটলান্টিক এর বিশালতায় হয়েছিলো সে সংখ্যা সবার অজানা।


[National Museum, Banjul, The Gambia থেকে নেয়া চিত্র – বিদ্রোহ]

যারা যেতে অস্বীকৃতি জানাত অথবা বিদ্রোহ করতো, তাদের উপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন, তাদের হাত পা কেটে আলাদা করে ফেলা হতো, সাধারনত এমন করা হতো বাকীদের ভয় দেখনোর জন্যে - Thomas Phillips, A Journal of a Voyage (1746). Thomas Phillips ছিলেন একজন slave ship এর captain, এরকম একাধিক বর্বরতার কথা তিনি A Journal of a Voyage এ লিখে রাখেন।


[National Museum, Banjul, The Gambia থেকে নেয়া চিত্র - ভাস্কর্য]

একই পরিবারের নারী, পুরুষ এবং তাদের সন্তান পর্যন্ত ধরে এনে slave house এর ভিন্ন ভিন্ন ঘরে আটকে রাখা হতো। তারপর সেখান থেকে তাদের এক এক সময় এক এক জন কে পাঠানো হতো পৃথিবীর ভিন্ন প্রান্তে। অর্থাৎ জীবনের বাকী সময়টা তারা একে অন্যের খোঁজ পেতনা। বিষয়টা কতটা নির্মম ছিলো তা একটু চিন্তা করলে বোঝা যায়, হয়ত একই slave house এর এক ঘরে বাবা, এক ঘরে মা, আর এক ঘরে সন্তান কে আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ কাউকে দেখতে পর্যন্ত পাচ্ছে না, জানতেও পাচ্ছেনা কি ঘটছে তাদের অতি প্রিয় মানুষটির সাথে!

প্রায় প্রতিটি slave house এর মধ্যে থাকত নারী, পুরুষ এবং শিশু দের রাখার আলাদা আলাদা dungeon বা কক্ষ। এগুলোর বেশির ভাগেরই কোন জানালা থাকতো না, মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত শক্ত পাথরের তৈরি, থাকতো না বসা বা শোয়ার কোন ব্যবস্থা, থাকতো না পয়ঃনিষ্কাশনের কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থার । এক একটা কক্ষে গাদাগাদি করে দাসদের এনে রাখা হতো, তাদের হাত পা বাঁধা থাকত শেকল দিয়ে, বেঁচে থাকার জন্যে dorm এর উপরের দিকে থাকা ফুটো দিয়ে নাম মাত্র খাবার ফেলে দেয়া হত। এছাড়াও অবাধ্যদের শাস্তির জন্যে থাকতো অন্ধকার দমবন্ধ করা একদম ছোট্ট সেল, যার ভেতরে থাকার অনুভূতি সাথে আসলে কেবল কবর এর তুলনা দেয়া চলে। শিশুদের নেয়ার ব্যাপারে ঠিক কত বছর সর্বনিম্ন ছিল, বা আদৌ কোন নিয়ম ছিল কিনা জানিনা। কারন Goree Island এর slave house টিতে ২/৩ থেকে ৬ বছর, এবং ৬ থেকে ১২ বছর এর ইনফ্যান্ট এর জন্যে আলাদা dungeon দেখেছি।


[Cape Coast Castle, Ghana. পুরুষ ক্রীতদাস রাখার কক্ষ, সামনে guide।]

মাটির নিচের এই Slave House টিতে পুরুষ দের রাখার জন্যে ৫ টি ও নারী দের রাখার ২ টি Dungeon আছে, যেগুলো দেখতে অনেকটা আদিমকালের গুহার মতো। এগুলোর এক একটাতে প্রায় ২০০ জন করে ক্রীতদাস আটকে রাখা হতো। বর্তমানে পর্যটকদের দেখার সুবিধার জন্যে রুমগুলোর ভেতর বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানো হয়েছে, যা এগুলোর ভেতরে থাকা অন্ধকার যেন আরও বাড়িয়েছে!


[Cape Coast Castle, Ghana. মেয়ে ক্রীতদাসদের রাখার কক্ষ।]

মেয়েদের প্রভুরা সাধারনত তাদের যৌন চাহিদা পূরণে ব্যবহার করতো। slave house গুলোর headmen বা অফিসার, কমান্ডারদের দ্বারা নারী ও শিশুর উপর যৌন নির্যাতন একটা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। Ghana-র Cape Coast Castle, slave house টিতে মেয়ে ক্রীতদাসদের ধর্ষণ এবং নির্যাতনের এর জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান ছিলো। Goree Island এ একটা মজার নিয়ম ছিলো যে কোন মেয়ে যদি সাদা প্রভুদের দ্বারা গর্ভবতী হয়ে পরতো তখন তাকে সেই island এই ছেড়ে দেয়া বা মুক্তি দেয়া হতো। দাসত্বের ভয়াবহতার থেকে মুক্তির আশায় বরং সাদা প্রভুদের দ্বারা গর্ভবতী হওয়াও সেসব দাস মেয়েদের কাম্য ছিলো।


[Maison des Esclaves, Goree Island, Senega. শিশুদের রাখার কক্ষের সামনে আমদের guide।]


[Maison des Esclaves, Goree Island, Senegal]

অবাধ্যদের শাস্তির জন্য সেল। প্রতিটি Slave House এই অবাধ্য বা বিদ্রোহীদের শাস্তির জন্য এরকম সেল থাকতো। এই ছোট্ট গুমোট সেলটিতে এক সাথে ২০ জনকে পর্যন্ত আটকে রেখে শাস্তি দেয়া হতো, যাদের বেশির ভাগেরই মৃত্যু হতো দম বন্ধ হয়ে। Nelson Mandela তাঁর Goree Island সফরে এই সেলটি তে নিজেকে ৫ মিনিট এর মতো অবরুদ্ধ রাখেন, এবং বেরহয়ে তিনি অঝরে কেঁদেছিলেন সেই সব হতভাগ্যদের সাথে ঘটে যাওয়া অসহনীয় নির্মমতা উপলদ্ধি করে!

দাসদের দাম নির্ভর করত প্রধানত তাদের ওজনের উপর। যার বয়স যত কম এবং ওজন বেশী তাকে ততবেশী দামে বিক্রি করা হতো। আমাদের দেশে কোরবানীর হাটের মত একসময় এসব slave trade center গুলোতে হতো মানুষের হাট। বিভিন্ন জায়গা থেকে পণ্যের মত জড় করা হতো মানুষ, প্রদর্শিত হতো কেনাবেচার জন্যে। চিহ্নিত করার জন্যে তাদের গায়ে দেয়া হতো গরম লোহার সীল। বিদেশি বণিকরা আসত দাসদের বাণিজ্য করতে, পণ্যের মতই দাসদের গা টিপে দেখে যাছাই-বাছাই করে জাহাজ ভরে তারা মানুষ এর সওদা করে নিয়ে যেত।


[James Island, Juffureh, The Gambia - যে স্থানটি একসময় প্রকৃতই ছিল মানুষ বেচা-কেনার হাট! এটি ছিলো দ্বীপটির Slave yard]


[Accra Museam থেকে নেয়া চিত্র - দাসদের চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত লোহার সীল! ]

অসুস্থ অথবা দুর্বলদের এতটাই অপ্রয়জনীয় মনে করা হতো যে, তাদের হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে ফেলে দেয়া হতো সাগরে, সাথে পায়ে অথবা গলায় বেঁধে দেয়া হত ৫ কিলগ্রাম ওজনের গোলা। এই কারনে সহজ শিকার এর আশায় এই slave house গুলোর আশেপাশে হাঙ্গর ঘুরাফেরা করতো সবসময় এবং পানিতে তলাবার আগেই হয়তো সেই সব হতভাগ্য দের করুন পরিনতি হত হাঙ্গরের হিংস্রতায়। বস্তুত গাদাগাদি করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাব, পয়ঃনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থার অভাবে অধিকাংশ দাসই অসুস্থ হয়ে পড়তো, আর চিকিৎসার চেয়ে তাদের হাঙ্গরের খাদ্য হিসাবে সাগরে ফেলে দেয়াই সহজ সমাধান ছিলো দাস প্রভুদের জন্যে। এছাড়াও ছিল এসব অঞ্চলে নানা রকম প্রাকৃতিক রোগবালাই যেগুলোর মধ্যে ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, গুটিবসন্ত ছাড়াও আরও নানা প্রকার জ্বরের প্রকোপ ছিলো অত্যন্ত বেশী। ফলে উল্লেখজনক হারে দাসদের প্রান হানি ঘটতো এই সব মহামারীর কারণেও। অবশ্য এই সব আফ্রিকান আঞ্চলিক প্রাণনাশক জ্বরের বিপক্ষে টিকে থাকা দুষ্কর হয়ে যেত পশ্চিমা দাস প্রভুদের পক্ষেও।


[Cape Coast Castle, Ghana]

ছবিতে যে সরু নালাটি দেখা যাচ্ছে মুলত তা ছিলো dungeon টির একমাত্র পয়ঃনিষ্কাশনের পথ, অর্থাৎ এই কক্ষে প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর ২০০ জনের বর্জের জন্য রাখা হয় এই উন্মুক্ত সরু নালাটি, যা দেখে সহজে অনুমান করা যায় ব্যাপারটি কতটা অস্বাস্থ্যকর ছিলো। পরবর্তিতে এই নালার মাটি পরীক্ষা করে দেখা যায় সেখানে খাদ্য, মল-মুত্র, রক্ত ও পুঁজ মিশ্রিত!


[The Door of No Return, Maison des Esclaves, Goree Island]

প্রতিটি slave house এ The Door of No Return নামে একটা দরজা থাকত। এই দরজার তাৎপর্য হলো slave house এ আনা প্রতিটি দাসকে অবশেষে এই একটি দরজা দিয়েই বের করা হবে, হয় জাহাজযোগে অজানার পথে নয়তবা সাগরে নিক্ষিপ্ত হয়ে সলিল সমাধিতে! The Door of No Return নামের অর্থ হলো যাকে একবার এই দরজা দিয়ে বের করা হবে সে আর কখনই ফিরতে পারবেনা তার প্রিয় জন্মভূমিতে আপনজনের কাছে! ১৯৮১ সালে France এর প্রধানমন্ত্রী Michel Rocard, Goree Island এর এই Door of No Return এর সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, “It is not easy for a white man, in all honesty, to visit this Slave House without feeling ill-at-case.”

(চলবে)

---------------
রংতুলি


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

Goree Island এ একটা মজার নিয়ম ছিলো যে কোন মেয়ে যদি সাদা প্রভুদের দ্বারা গর্ভবতী হয়ে পরতো তখন তাকে সেই island এই ছেড়ে দেয়া বা মুক্তি দেয়া হতো।

আপনি কি "মজার" বিশেষণটা ভেবেচিন্তে লিখলেন?

রংতুলি এর ছবি

'মজার' শব্দটা আসলে দাসত্বের ভয়াবহ্তা বোঝাতেই ব্যবহৃত হয়েছিলো, খানিকটা ironoc অর্থে। হয়তো লিখার সময় guide এর বর্ননার 'intersting' শব্দটা মাথায় ছিলো। লিখাটি আসলে আমার নিজের ভিতরেরে দায়বদ্ধতা থেকেই, অতএব এই প্রথায় ব্যবহৃত অসহায় মানুষগুলোকে আমি খাটো করতে পারিনা কোনো ভাবেই! প্রথম লেখা হিসেবে কোনো শব্দের ভুল প্রয়োগ হলে আমি দুঃখিত। মন্তবের জন্য ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

আপনাকে বিব্রত করা আমার উদ্দেশ্য ছিলো না। গোটা লেখাটার সাথে ঐ অংশটুকুই খুব সামঞ্জস্যহীন মনে হচ্ছিলো, তাই বললাম। লিখে চলুন, আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে! আশা করছি দ্রুত লেখার বাকী অংশটা দিতে পারবো, আপনাদের ভাল লাগলে লেখাটি সার্থকতা পাবে।

তারেক অণু এর ছবি

চলুক উত্তম জাঝা!

ভাল লিখেছেন, আরো বিস্তারিত জানতে ইচ্ছে করে, সম্ভব হলে আইভরি কোস্ট নিয়ে। দাস ব্যবসায় ব্যবহৃত একাধিক দুর্গ দেখা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে, বেশী নির্মম আর করুণ।

আর মজার নিয়ম ছিল - বাক্যটিতে মজা শব্দটি ব্যবহৃত হবার কথা না।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে! আইভরি কোস্ট এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ যাওয়া হয় নাই। তবে আমার এই লিখাটা এখানেই শেষ না, বেশী বড় যাওয়ায় একবারে দিলাম না। আশা করছি পরের পর্বটিতে আরো বিস্তারিত পাবেন।

'মজার' শব্দটা আসলে দাসত্বের ভয়াবহ্তা বোঝাতেই ব্যবহৃত হয়েছিলো, খানিকটা ironoc অর্থে। হয়তো লিখার সময় guide এর বর্ননার 'intersting' শব্দটা মাথায় ছিলো। লিখাটি আসলে আমার নিজের ভিতরেরে দায়বদ্ধতা থেকেই, অতএব এই প্রথায় ব্যবহৃত অসহায় মানুষগুলোকে আমি খাটো করতে পারিনা কোনো ভাবেই! প্রথম লেখা হিসেবে কোনো শব্দের ভুল প্রয়োগ হলে আমি দুঃখিত।

রব এর ছবি

শ্রমসাধ্য একটা লেখা। চলুক

ঐ হতভাগ্যদের জন্য আপনার মায়া টের পাওয়া যাচ্ছিল। মনে হচ্ছে 'মজার নিয়ম' কথাটা আপনার হাত দিয়ে অন্য কেউ লিখিয়ে ফেলেছে!

এই ২০১২ তে এসেও ত মানুষ অন্যকে দাস বানানোর জারজিপণা থেকে মুক্ত হতে পারলো না। আজও নানাদেশ থেকে বিশেষ করে নারীদের ধরে নিয়ে যৌনদাসী বানানো হয়। কদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম এক বেজন্মা বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে স্ত্রীকে পতিতালয়ের দালালের কাছে বিক্রি করে দিয়ে এসেছে! আরও নানা ফরম্যটের দাসত্ব ত আছেই।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে! কিছুটা শ্রমসাধ্য, বাংলা টাইপ করতে না পারায় আরও কষ্ট হচ্ছিলো। তবে লিখাটা শেষ করতে পারায় ভালো লাগছে। কিছুটা বড়ো হয়ে যাওয়ায় একবারে দিতে পারি নাই। প্রথম লেখা হিসেবে কোনো শব্দের ভুল প্রয়োগ হলে আমি দুঃখিত।

আপনার সাথে আমি একমত দাসত্ব আসলে রয়ে গেছে, শুধু বদলেছে এর কৌশল। বর্তমানে ব্যাপকহারে মেধা পাচারও, দাসত্বের নতুন ফরমেট বলে মনে হয় আমার কাছে। যেখানে মানুষ স্বেচ্ছায় গ্রহন করছে দাসত্ব!

অমি_বন্যা এর ছবি

আফ্রিকার দেশগুলোকে পশ্চিমা বিশ্ব আজীবন দাশ হিসেবে ব্যবহার করেছে এখনও করছে। আপনার লেখাটি সেই কথাগুলোই আবার মনে করিয়ে দিল। অনেক ভাল লেগেছে।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে! লেখাটিতে এই বিষয়ে আরও কিছু আলোচনা আছে আশা করছি দ্রুত সেটা দিতে পারবো, আপনাদের ভাল লাগলে লেখাটি সার্থকতা পাবে।

মাহবুব রানা এর ছবি

দুর্বল চিত্তের মানুষ, তাই পরের পর্ব হয়তো পড়া হবে না।
লিখে চলুন। চলুক

রংতুলি এর ছবি

চিত্ত মজবুত করুন, অনুরোধ করছি পরের পর্বটি পড়ার! হাসি

শান্ত এর ছবি

ভালো লেগেছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে! পরের পর্বটি দ্রুত দিবো আশা করছি।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

লেখার জন্য ধন্যবাদ।
দাসদের চিহ্নিত করার লোহার সিলটা দেখলাম, সিলের মাথাটার আকৃতি এখন বহুল প্রচলিত 'হার্ট শেপ' বা ভালোবাসার চিহ্ন রূপে!

ভাস্কোদাগামার বদৌলতে আমাদের এই ভুখণ্ডেও এরকম দাস ব্যবসা ছিলো। আমাদের পূর্ব পুরুষরাও শিকার হয়েছে এমনি অত্যাচারের। কিন্তু আমরা ভুলে যাওয়া জাতি, আমরা সেগুলোর কথা লিখি না।
আশা, কেউ একদিন না একদিন লিখবে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তারেক অণু এর ছবি

ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশী দাস গেছিল ব্রাজিলে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে, বিশেষ করে ব্রাজিলের বাহিয়াতে। এখনো এক ব্রাজিলেই ১ মিলিয়ন সেই দাসদের বংশধরেরা থাকে। ভাল বলেছেন নজু ভাই, নিশ্চয়ই লিখতে হবে।

রাগিব এর ছবি

অণু, এরা কি আফ্রিকার মডেলের দাস, নাকি একটু ভিন্ন? মানে, আফ্রিকার দাসদের যেমন শিকার করে ধরে শিকল পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো, ভারতীয়দের কি ব্রাজিলে বা ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে একই ভাবে নেয়া হয়েছে? নাকি দারিদ্র‍্য
এড়াতে দাসখত লিখে এরা নিজেরাই গিয়েছিলো (বা দালালের খপ্পরে পড়ে)? (http://en.wikipedia.org/wiki/Indo-Caribbean#Migration_history)

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

তারেক অণু এর ছবি

বাহিয়া নিয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একটা লেখায় এই নিয়ে বিস্তারিত ছিল, একটু দেখে জানাতে পারব।

দক্ষিণ আফ্রিকাতেও অনেক ভারতীয় ইমিগ্র্যান্ট হয়েছিল, বিশেষ করে গুজরাট থেকে, যদিও অন্য কারণে।

চিলতে রোদ  এর ছবি

প্রেমেন্দ মিত্রের 'ঘনাদা তস্য তস্য অমনিবাস' বইটি পড়লেও এই সম্পর্কে কিছু ধারণা পাওয়া যায়। পড়েছেন নিশ্চই? হাসি

দুর্দান্ত এর ছবি

এখানে ভারতসাগরের দাসবানিজ্য় নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা আছে। বাংলা‌‌য় মোঘলদের আগমনের আগে মগ ও পর্তুগিজরা নিয়মিতভাবে বাংলা ও আরাকান থেকে দাস সংগ্রহ করেছে।

রব এর ছবি

দুর্দান্তদা,
সত্যপীরের পোস্টে ষষ্ঠ পাণ্ডবদার একটা মন্তব্যে ছিলোঃ 'দাস ব্যবসাতে ইউরোপীয়রা তো বটেই, মগ'রা এমনকি ভারতীয়রা পর্যন্ত খুব ভালোভাবে জড়িত ছিলো।'

এ মন্তব্য থেকে মনে হচ্ছে দাস সংগ্রহ, পরবর্তিতে বিক্রির কাজটা ভারতীয়রাও করেছে। এ ব্যাপারে কিছু জানেন কি? বিশেষ করে নেটে পড়ার মত কোন সূত্র পেলে খুবই সুবিধা হয়।

(ওই পোস্টে ষষ্ঠ পাণ্ডবদার কাছেও সূত্র চাওয়ার ইচ্ছা ছিলো।কিন্তু মন্তব্যটা কেনো যেনো যায়নি। এই পোস্টে উনি এলে এই মন্তব্যটা চোখে পড়ার সম্ভাবনা বাড়াতে পান্ডবদার নামটা রঙ্গিন করে দিলাম) হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ভারতীয় দাস ব্যবসায়ীদের সাথে ইউরোপীয় দাস ব্যবসায়ীদের বড় পার্থক্য হচ্ছে এরা ভারতের এক অঞ্চল থেকে দাস সংগ্রহ করে ভারতেরই অন্য অঞ্চলে বিক্রি করতো। ফলে ভারতীয় দাসদেরকে আমেরিকায় আফ্রিকান দাসদের মতো সহজে সনাক্ত করা যায় না। ১৮৪৩ সালে 'ইন্ডিয়ান স্লেভারি অ্যাক্ট'-এর মাধ্যমে ভারতে দাসপ্রথা আনুষ্ঠানিকভাবে উচ্ছেদের কালেও ভারতে আশি নব্বই লাখ দাস ছিল। যেটা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩.২৫%-এর মতো।

দক্ষিণ আমেরিকা (যেমন, গায়ানা), ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ (যেমন, ত্রিনিদাদ) , ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ (যেমন, মরিশাস) ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে (যেমন, ফিজি) যেসব ভারতীয়দের দেখা যায় তাদের পূর্বপুরুষেরা আলেক্স হ্যালীর পূর্ব পুরুষদের ন্যায় বলপূর্বক ধরে এনে বাজারে বিক্রি করা নয় - কৌশলে বিপদে ফেলে আত্মবিক্রি করতে বাধ্য করা। এর হোতা ইউরোপীয়রা, ভারতীয়রা নয়।

নেটে পড়ার মতো সূত্র এই মুহূর্তে দিতে পারছি না। পরে পেলে জুড়ে দেব।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রব এর ছবি

এরা ভারতের এক অঞ্চল থেকে দাস সংগ্রহ করে ভারতেরই অন্য অঞ্চলে বিক্রি করতো

আমিও এমন ধারণাই করেছিলাম।

পান্ডবদা, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। সূত্রগুলোর আশায় থাকলাম। আমি নিজেও হ্যাজাক জ্বালিয়ে খুঁজছি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

একটা বই পেয়েছি। আমার প্রোফাইলে আমার ই-মেইল অ্যাড্ড্রেস পাবেন। মেইল করুন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ইসলাম আপনার মন্তব্যের জন্য। আশা করছি উপমাহাদেশের দাসত্বের প্রকৃত ইতিহাস নিয়ে নিশ্চই কেউ না কেউ লিখবো।

সত্যি বলতে এতটা পুরনো ইতিহাস হয়তো আমাদের জানা নাই, কিন্তু ব্রিটিশদের দ্বারা উপমাহাদেশ জুড়ে সামন্তবাদের নামে চালানো দুইশত বছরের শোষণ ও বঞ্চনার যে ইতিহাস, তা দাসত্বের আরেক উদাহরণ এবং তা আমাদের অজানা নয়। এই লেখাটি কিন্তু ওয়েস্ট আফ্রিকার দাসত্বের পাশাপাশি, সেই সুবিধাবাদী জাতিরই পৃথিবীজুড়ে রেখে যাওয়া বঞ্চনার নানা রূপ তুলে ধরে।

নরাধম এর ছবি

অনেক নির্মম সত্য জানতে পারলাম।শ্রমসাধ্য লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। চলুক

রংতুলি এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ লিখাটি পড়ার জন্য। কষ্ট অনেকটাই সফল হলো।

কীর্তিনাশা এর ছবি

আমার চোখও 'মজা' শব্দটায় আটকে গিয়েছিল, যা হোক আপনার মন্তব্য পড়ে মনটা শান্ত হলো।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

রংতুলি এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য।

ধুসর জলছবি এর ছবি

অনেক শ্রমসাধ্য লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম পড়ে । পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীদের মধ্যে মানুষই বোধকরি সবচেয়ে বর্বর মন খারাপ । আপনার পরবর্তী লেখার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম। চলুক

রংতুলি এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ লেখাটি পড়ার জন্য। কষ্ট অনেকটাই সফল হলো।

'মানুষ বর্বর' - সহমত, আবার মানুষ মধ্যেই আছে, মাদার তেরেসা, ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের মতো মানুষেরা হয়তো তাদের সংখ্যাই বেশী।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে এক ঘর ভর্তি ভালো মানুষের মধ্যে একজন বন্দুক হাতে খারাপ মানুষই বর্বরতা ফুটিয়ে তুলতে যথেষ্ট!

ধুসর জলছবি এর ছবি

চলুক চমৎকার বলেছেন।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

এবিএম এর ছবি

অনেক কষ্ট করে লিখেছেন বোঝা যায়। চলুক
ক্লাস এইটে পড়ার সময় "আঙ্কেল টমস কেবিন" বইটা পড়েছিলাম। দাস প্রথার নির্মমতার গল্পটা পড়ে মন খারাপ হয়েছিল খুব। আপনার লেখা পড়ে আবার খারাপ লাগল।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে, কষ্ট অনেকটাই সফল হলো। 'আঙ্কেল টমস কেবিন' প্রাসঙ্গিক ভাবেই চলে আসছে লেখাটির পরের অংশে।

জাবেদুল আকবর এর ছবি

উত্তম জাঝা! হাততালি লেখা পড়ে ভালো লাগলো, লিখতে থাকুন।

রংতুলি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ! হাসি

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আপনার লেখাটি পড়ে মন খারাপ লাগছে। আমরা ভুলে যাই, আমরা কত নৃশংস জাতি। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকছি। লেখার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রংতুলি এর ছবি

একমাত্র মানুষই একটি জাতি, যার মধ্যে নৃশংসতাও ভয়ংকর পরিমানে থাকতে পারে, আবার ভালবাসাও ভয়ংকর পরিমানে থাকতে পারে!

ধন্যবাদ আপনাকেও লেখাটি পড়ার জন্য। হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পরিশ্রমী লেখা। তাড়াহুড়া করে শেষ না করে আরো বিস্তারিত লিখুন। দুই পর্বের বদলে দশ পর্ব হলে ক্ষতি কী? বাংলা ভাষায় 'দাস ব্যবসা' নিয়ে খুব কম লেখা আছে। সুতরাং চালিয়ে যান, আমরা সাথে আছি।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রংতুলি এর ছবি

সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ! ভীষণভাবে অনুপ্রানিত হলাম! হাসি

রব এর ছবি

তা ত বুঝলাম। কিন্তু পরের কিস্তি কো?

নাশতারান এর ছবি

চমৎকার পোস্ট। লিখতে থাকুন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রংতুলি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ! হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।