মনোটোনাস মনোলোগস (০/৪)

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: শনি, ২৯/০৬/২০১৩ - ৪:০০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'হে ম্লান মেয়ে, প্রেমে কী আনন্দ পাও , কী আনন্দ সন্তান ধারনে'

না, ঠিক প্রেম নয়। সন্তান ও নয়। ম্লান কেউ নয়- আমার আসলে বৃষ্টির কথা মনে পড়ছিলো। বৃষ্টি ও ক্লিশে হয়ে আসছে, বৃষ্টি ও একঘেয়ে, বৃষ্টি ও বহুল চর্চিত। বৃষ্টি ও এখন কেবল স্মৃতিতে সজীব। ভাস্কর ডি কস্তা সাথে ছিলো, চেরাপুঞ্জি’র বৃষ্টি মিশিয়ে একবার মাতাল হয়েছিলাম। ভাস্কর পরে মরে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় , এই মুহুর্তে এটা মনে হওয়ার কথা নয়। ভাস্কর শুধু বিয়ার খেতো। বিয়ারের সাথে তো আর বৃষ্টি মেশানো হয়নি নিশ্চয়, কী ছিলো তবে?
মনে নেই!

এই তো মাত্র কাল কিংবা পরশু আমরা চারজন ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় ফিরলাম। কনিষ্ঠজন দুবছর পার করেছেন, জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ধরতে চান।
বৃষ্টিতে ভিজে কী আনন্দ পায় মানুষ?

দুটো মেয়ে মারা গেলো, একজন মা ও মারা গেলেন। মেয়েগুলো বৃষ্টিতে ভিজেছিলো। সেইদেশের বৃষ্টি কেমন? এইদেশের বৃষ্টির মতোই মায়াময়, নরোম, আদরপ্রবণ? তাহলে দুই কিশোরীকে, তাদের মাকে কেনো মরতে হলো? মৃত্যু তো এতো আদর জড়ানো নয়!
বৃষ্টির জন্য খুন হয়ে যাওয়া মেয়ে দুটোর নাম জানিনা। দেশটির নাম পাকিস্তান। দেশটির নাম ভারত, শাইনিং ইন্ডিয়া। আশেপাশের দেশ তো বটেই- সারা দুনিয়া সেই শাইনে ঝলকে উঠে ফ্যাশন, স্টাইল, নাচে গানে। মেয়েটার নাম গুঞ্জন। ২০ বছরের মেয়েটি জিন্স পড়েছিলো শখ করে। মাকে প্রতিবেশীরা পিটিয়ে মেরে ফেললো- তার জিন্স পড়ার অপরাধে।

ব তে বৃষ্টি, ব তে বাংলাদেশ।

আমার বিবমিষা জাগে।


মন্তব্য

সুমাদ্রী এর ছবি

নারীকে দেখার দৃষ্টি সৌদি পুরুষের চেয়ে এই ভারতীয় উপমহাদেশীয় পুরুষের চোখ কম লোলুপ, কম নিষ্ঠুর, কম ভয়ংকর নয়। সে পুরুষের ধর্মবিশ্বাস হিন্দু হোক কি মুসলমান।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
আমার বিবমিষা জাগে
*** ***
আমি বমি করতে থাকি।
আমার চারপাশে দেখতে-না-পাওয়া বমি,
বমির ঝাঁঝে আমার দমবন্ধ লাগে।
এ-সব-বিচ্ছিন্ন-ঘটনা নামের নামকরা পিল
গেলান হয় আমাকে একটার পর একটা আর,
মেয়েরা পিষে যেতে থাকে।

আমি ওয়াক তুলেই চলি

আমার মুখ থেকে কোন দিন কি
আগুন বেরোবে না?
*** ***
- একলহমা

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অনেকদিন পর আপনার নতুন লেখা পড়লাম। নীড়পাতায় দেখতে ভালো লাগল।
লেখাটা চিন্তাজাগানিয়া। সেদিন খবরটা চোখে পড়লেও ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গিয়েছিলাম। নেতিবাচক খবরে ধাক্কা খাওয়া থেকে বাঁচতে আজকাল আর সেগুলো পড়ি না। শিরোনাম দেখেই অন্য কিছুতে চোখ রাখি, ফানি কিছু, সাময়িকভাবে ভুলে থাকার মতো কিছু। ডিনায়ালের চেয়ে সুখকর আর কী হতে পারে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।