ফুটোস্কোপিক গল্প ০৭

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৬/০৩/২০০৮ - ১২:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রবি ইলোরাকে গম্ভীর হয়ে প্রশ্ন করলো, "ঘটনা কী? বুড়ো ডেকেছে কেন?"

ইলোরা কাঁধ ঝাঁকালো ফরাসী কায়দায়। "আমি কী জানি? এক্ষুণি ডাক পড়বে, তখন বুড়োর কাছ থেকেই জেনে নিতে পারবে।"

রবি কিছু বলতে যাবে, এমন সময় ইন্টারকমটা খনখন করে বেজে উঠলো। "ইলোরা! রবিকে ভেতরে পাঠাও!"

ইলোরা মিষ্টি করে বললো, "জ্বি স্যার!" তারপর রবির দিকে ফিরে চোখ টিপলো। "মেজর ঠাকুর, স্যার আপনাকে ডাকছেন!"

রবির হাতের তালুটা ঘেমে উঠলো ঘরের ভেতরে ঢুকেই। মেহগনি কাঠের টেবিলের ওপাশে চেয়ারে বসে আছেন মেজর জেনারেল (অব.) রাহাত খান, কাঁচাপাকা ভুরুর নিচে চোখ দু'টো কটমটিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে।

"বোসো!" বাঘা গলায় ডাক এলো।

রবি একটু নার্ভাস ভঙ্গিতে চেয়ার টেনে বসলো।

"আর টি টেন!" রাহাত খান গম্ভীর গলায় ডাকলেন।

রবি চমকে উঠলো। খুব সিরিয়াস কিছু না হলে তো বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের চীফ তাকে কোডনেম ধরে ডাকবেন না! ঘটনা কী?

"জ্বি স্যার!"

"তোমার নামে এসব কী শুনি?" চাবুকের মতো প্রশ্ন ভেসে এলো ডেস্কের ওপাশ থেকে।

"কী স্যার?" রবি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো পুরোপুরি।

"তোমার সম্পর্কে অভিযোগ এসেছে এজেন্ট সোহানা চৌধুরীর কাছ থেকে! তুমি নাকি তার সাথে কীসব ঝামেলা করেছো?"

রবি একটু চটলো মনে মনে সোহানার ওপর। আশ্চর্য তো! এসব আবার চীফের কাছে চুকলি কেটেছে! স্পাইদের মধ্যে তো এসব আকচার হচ্ছে, এ কি বসের কাছে নালিশ দেয়ার মতো কিছু?

"আমি ঠিক বুঝতে পারছি না স্যার!" আমতা আমতা করে বললো রবি।

"ন্যাকামি কোরো না রবি! ভেবেছিলাম তোমার চরিত্র অন্তত এম আর নাইনের চেয়ে ভালো হবে, কিন্তু দেখছি যে লাউ সে-ই কদু!"

রবি মনে মনে সোহানাকে গালি দিতে লাগলো। হতচ্ছাড়া মেয়ে, চীফের কানে কী পানি দিয়েছে কে জানে?

"এর আগে তোমার নামে বিদেশ থেকে অভিযোগ এসেছিলো, পাত্তা দিইনি। এমআইসিক্সের সেই মেয়েটা, কী যেন নাম ... ভিকি ... ভিকি ...।"

"ভিকি ওকাম্পোর কথা বলছেন স্যার?" বিমর্ষ গলায় বললো রবি। আজ কপালে খারাবি আছে তার, মনে মনে ভাবলো সে।

"হ্যাঁ, ওকাম্পো! ... তখন পাত্তা দিইনি! কিন্তু আজ তুমি নিজের অফিসের কলিগদের সাথে এসব কী শুরু করে দিলে!"

রবির মেজাজ চড়ে ওঠে। সে বলে, "স্যার, এ কেমন একচোখা নীতি আপনার? রানা তো প্রতি পর্বেই এরকম হরদম করছে! আর আমি একটু করলেই দোষ?"

রাহাত খানের চেহারা রাগে লালচে হয়ে উঠলো, "কাম অন, রবি! শাক দিয়ে মাছ ঢেকো না! তুমি জানো যে আজকাল তোমাদের কাহিনী স্কুলের বাচ্চারা পড়ে! তারপরও তুমি এসব করে বেড়াও কোন বিবেচনায়?"

...


মন্তব্য

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হেহে মজা হৈছে।
astrix-এর ডাবল ও six-এর কথা মনে পড়লো।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

অনিন্দিতা এর ছবি

রানা ও রবি সব একাকার মনে হচ্ছে।
এত অল্পতেই শেষ করে দিলেন কেন?
দীর্ঘ সিরিজের অপেক্ষায় আছি।

অতিথি লেখক এর ছবি

রবি জানেনা রানা করলেই ওইটা মুদ্রণযোগ্য হয়, তার আরো ভাল করে করার জন্যই এত বকাবকি।
- খেকশিয়াল

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

মোল্লায় আংগুল তুলে দূরের অন্ধকার সীমান্তে কি জানি দেহায়, আর একেকজন ভাবে মোল্লা বুঝি তারা দেহায়। গাছ দেহায়। রাইতের আন্ধার দেহায়। আরো কতো কি যে লোকে ভাবে।
মোল্লা কিন্তু আঙ্গুল তুইল্যা রাইখা মিটি মিটি হাসতেই থাহে... ... যার যা খুশী দেহুক আর ভাবুক হের কি?!!

হাসি

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

সৌরভ এর ছবি

ঝি কে মেরে বউকে শেখানোর এই পন্থায় বিপ্লব ভাইয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ প্রদান করা হইলো।

আমিও এই কথাটাই কইতে চাইছিলাম। আইজকাল স্কুল ফেরত পুলাপান বাড়িত বাপ-মা না থাকলে লুকায় লুকায় "সচলায়তন" পড়ে শুনি।
তাই কই, একটু রয়েসয়ে, ভাইজানেরা, রয়েসয়ে..



আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

রাহাত খানের চেহারা রাগে লালচে হয়ে উঠলো, "কাম অন, রবি! শাক দিয়ে মাছ ঢেকো না! তুমি জানো যে আজকাল তোমাদের কাহিনী স্কুলের বাচ্চারা পড়ে! তারপরও তুমি এসব করে বেড়াও কোন বিবেচনায়?"

রবি হাত কচলায়- স্যার। গোয়েন্দার কাম করি বলে বাচ্চাদেরকে শিক্ষা দেওয়াও কি নিষেধ?

অতিথি লেখক এর ছবি

এইটারে টাইনা লম্বা করা যায়না ?

রাকিব হাসনাত সুমন

ধুসর গোধূলি এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

বয়ঙকর ছুন্দর ওইছে। উত্তম জাজা। বিপ্লপ

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অতিথি লেখক এর ছবি

এবার তাহলে সোহানাকে নিয়ে রানা বনাম রবি কাহিনী তৈরি হবে?
_ ক্যামেলিয়া আলম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।