তিতিক্ষা-২

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি
লিখেছেন জুলিয়ান সিদ্দিকী (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৭:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto'বেয়াই দেহি ঘাড় ফালায় দিছেন!'

একটি নারীকন্ঠে চমকিত হয়ে ফিরে তাকায় রবিউল।

পাশে দাঁড়িয়ে আছে গয়নার চাচাতো বোন খইয়া। খইয়ার ভালো নাম অবশ্য একটি আছে। খায়রুন নেছা। আদর করে বা সংক্ষেপ করে ডাকতে গিয়ে নামের এমন বিকৃতি ঘটেছে। রবিউলের কাছে নামটা বিকৃত বা তাৎপর্যহীন বলে মনে হয় না। খলসে বা খইলসা মাছের চালু বা আঞ্চলিক নাম খইয়া। তাই সে বলে, 'খইলসা কহন ভাইস্যা উঠলো?'

নামের মত আকৃতিও সংক্ষিপ্ত খইয়ার। শাড়িতে তাকে কাপড়ের পুটলির মত দেখায়।

খইয়া বললো, 'পানি যেমন ঘোলা আর গরম করছেন, না ভাইস্যা করমু কি?'

খইয়ার কথায় রীতিমত ঝড়ের আভাস পায় রবিউল। তবুও বলে, 'বেয়াইনের কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না!'

খইয়া ঠোঁট বাঁকায়। বলে, 'বুঝছেন ঠিকই, অখন বিপদ দেইখ্যা চোখ বুইঞ্জা রইছেন আর কি!'

রবিউল কী বা বলতে পারে? এখন মাথা গরম করে ঝগড়ায় মাতলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। সে খইয়ার সুন্দর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

খইয়া পাটির এক কোণে হাঁটু গেঁড়ে বসে ফের কথার ছুরি শানায়। 'একটা কথা কই বেয়াই, মনে কিছু কইরেন না!'

রবিউল হাসিহাসি মুখ নিয়ে খইয়ার কথা ধরতে চেষ্টা করে।

'আপনেরা পুরুষ হইয়া পয়দা হইছেন দেইখ্যা কি এতটাই বে-শরম হইতে হইবো? নাকি আল্লাতালাই এমন নিলাইজ্যা মাটি দিয়া বানাইছে বুঝি না! কিন্তু তাই বইল্যা কি সইর্ষার দানার মতন লাজ-শরমও থাকবো না?'

রবিউল খইয়ার সুন্দর মুখের বিশ্রি ভাবভঙ্গি আর কথার তিক্ততায় অস্থির হয়ে বললো, 'আপনে এমন কইরা কইতাছেন য্যান আমিই হাতেম আলি!'

'নাম আর সুরত আলাদা হইলেই কি সব আলাদা হয় বেয়াই? হয় না! ওই মানুষটার মুখের উপরে দরজা দিয়া দ্যাওনের পরও কোন মুখে আবার আপনে আইলেন? গয়না কি আপনের ভাত খাইবো, না আপনের লগে ঘর করবো?'

রবিউল কিছুটা ভাবে। খইয়া তাকে যে প্রশ্নের ফাঁদে ফেলেছে, জবাব না দিয়ে তার নিষ্কৃতি নেই। তবুও সে বর্তমান জটিল পরিস্থিতিকে লঘু করার জন্য বলে, 'বেয়াইন, মানুষ রাগ অইলে বা চেতলে অনেক কিছুই করে, কয়ও! পরে মাথা যখন ঠান্ডা হয় সবই ভুইল্যা যায়! এই যেমন আপনে আমারে কতগুলা কথা কইলেন, সবগুলাই রাগের কথা!'

'আমি রাগের কথা কইতাছি না, কইতাছি বিচারের কথা! ন্যায় অন্যায় বইল্যা কথা আছে না!'

'তাইলে বেয়াইন আপনে আমার উপরে অবিচার করতাছেন! অন্যায়ও করতাছেন!'

খইয়া হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে হাঁটুর উপর ভর করে সোজা হয়ে বললো, 'উচিত কথায় মাঙ্গে ব্যাজার! উচিতটা আমার বাপেরেও ছাড়ি না!'

খইয়ার কথায় রবিউল হেসে ওঠে। একবার চারদিকে চোখ বুলায়। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। আর কিছুক্ষণ পরই দৃশ্যমান সবকিছু তলিয়ে যাবে গাঢ় অন্ধকারে।

আশপাশের ঘর আর গাছ-গাছালির আড়ালে অনেক কৌতুহলী মুখ। সবাই নারী। বিভিন্ন বয়সের। এরা খইয়ার কন্ঠের ঝাঁঝালো বাক্যে আকৃষ্ট হয়ে মজা দেখতে এসেছে। এমন একটি সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। উচিত কথার প্যাঁচে পড়ে খইয়া কেমন জব্দ হয়, তা দেখার লোভ সংবরণ করতে পারে না রবিউল। উপস্থিত সবাই যাতে কথাগুলো শুনতে পায় তাই সে কিছুটা জোরেই বলে, 'উচিত তো আমিও কইতে পারি বিয়াইন, আপনেও যে দুধের ধোওয়া কলাপাতা না, তাও জানি! তয়, আপনেও শুইনা রাখেন বেয়াইন, পায়েস যত মজা কইরাই পাক করেন না ক্যান, পচলে কিন্তু সবটাই ফালানি যায়!'

খইয়া এতটাই আত্মবিস্মৃত হয়ে পড়েছিলো যে, রবিউল কী বোঝাতে চাচ্ছে, তা ভালো মত খেয়াল না করেই বলে উঠলো, 'আপনে আবার কী উচিত কইবেন, আমি কি চাড়াল-নাপিতের মাইয়া? এমন কিছু করি না যে, মুখ তুইল্যা কেউ কিছু কইতে সাহস পাইবো!'

রবিউল কন্ঠস্বর পরিবর্তন না করেই বললো, 'হেই কথা কি ভুইল্যা গেছেন? যেইবার আপনে শ্বশুরবাড়ি থাইক্যা পলাইয়া আইসা পড়ছিলেন? আপনের সোয়ামী কিন্তু আপনেরে নিতে আসে নাই! একমাস বাদে বুঝাইয়া শুনাইয়া আপনেরে নিয়া গেছে আপনের ভাশুরের পোলা আমিনুল। আপনে তো তার ভাতও খান না তার লগে ঘরও করেন না! তার চাচার লগেই সংসার করতাছেন! তাইলে উল্টা-সিধা কথা কইয়া আমারে ক্যান শরমিন্দা করেন?'

খইয়া হঠাৎ করেই কোনো জবাব দিতে পারে না। কিছু বলতে চেষ্টা করতে গিয়েও কাশির দমকে তার কন্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায়। সঙ্গেসঙ্গে আড়াল থেকে কারো চাপা হাসির শব্দ ভেসে আসে।

রবিউল বেশ মজা পায়। মনেমনে বলে, এহন তোমার ফটফটানি কই?

খানিক পর ধাতস্ত হয়ে খইয়া বললো, 'ওইডা আমার ভাশুরের পোলা। আপন মানুষ! আপনে হইলেন গিয়া বিনারা পুরুষ। আপনের লগে এই রাইত বিরাইতে গয়নারে যাইতে দিলে মানুষে কইবো কি?'

'আমিও গয়নার কম আপন না! তয় আমার লগে তারে নিয়া যাওনের মত না-হক কথা আমি কইতে যামু ক্যান? গয়নার সোয়ামী আছে, ভাই-বইন আছে, তারা কেউ লগে যাইবো!'

রবিউলের কন্ঠস্বর কিছুটা ঝিমিয়ে আসে যেন। মিয়ানো কন্ঠে আবার বলে, 'যেই কাম করলে দশজনে মন্দ কইবো, এমন কাজ করতে যামু ক্যান?'

খইয়া যেন কথা হাতড়ে ফেরে। কিছু বলতেও উৎসাহ হারিয়ে ফেলে যেন। বারবার ঢোক গিলে পূর্বেকার উৎসাহ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করে। হয়তো বা মনে মনে পালাবার পথ খোঁজে। কিন্তু হঠাৎ করেই বা সে যায় কি করে? তাই আপসের সুরে বলে, 'বেয়াই, মনে কইরেন না আমি আপনের দুশমন। আমি কিন্তু এত কথা কইলাম কথার কথা। মনে রাইখেন না কিছু!'

রবিউল বললো, 'আমি কি কমু, আপনে আইসাই তো ঝগড়া শুরু কইরা দিলেন!'

খইয়া সেই কথার ধারে কাছেও না গিয়ে বলে, 'গয়নার লগে আপনের দেখা হইছে?'

'হইছে।'

'কি কথা হইলো?'

'তেমুন কিছু না। কইলো দেরি করতে। আমার লগে নাকি তার অনেক কথা আছে!'

'তাইলে আপনে বাইরে বইসা আছেন ক্যান? ঘরে গিয়া বসেন!'

'মাওই মায় নমাজ পড়তাছেন। তাছাড়া বাইরেই ভালা লাগতাছে। গরম কেমুন পড়ছে দেখতাছেন না! এখন ঘরে ঢুকন মানে জেলখানায় ঢুকন!'

ওদের কথার মাঝখানেই গয়না কুপির আলো হাতে এসে বলে, 'রবিউল ভাই, কল পাড়ে চলেন। হাত-পাও ধুইয়া লন!'

তারপর খইয়ার দিকে ফিরে বলে, 'তর কাইজা শ্যাষ হইছে?'

খইয়া অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে গয়নার মুখের দিকে।

গয়না বিরক্ত হয়ে বলে, 'চোখ পাকাইয়া দেখস কি?'

'কী আর দেখুম!' বলে, খইয়া দু'হাত নাড়ে।
তারপর একই ভঙ্গীতে বলে, 'যার লাইগা চুরি করলাম, হ্যায় কয় চোর!'

কিন্তু গয়না খইয়ার সাথে বিতর্কে না গিয়ে ফের রবিউলকে তাড়া দিয়ে বলে, 'উঠতাছেন না ক্যান?'

'আমি তো বেশি দেরি করতে পারমু না! জনুরে কিছু কইয়া আসি নাই!'

গয়না বললো, 'একলা পুরুষ মাইনষ্যের দিন কি আর রাইত কি! মাইয়া মানুষের না যত রকম বিপদ!'

'হেই লাইগাই তো রাইত বাইড়া যাওনের আগে আগে বাইত্যে ফিরা যাইতে চাইতাছি!'

'রাইতে জোনাক আছে, যাইতে পারবেন।'

'আপনে বুঝতে পারতাছেন না। জনু...'

গয়না রবিউলকে থামিয়ে দিয়ে বললো, 'এত পাগল হইছেন ক্যান?'

রবিউল আপন মনে হাসে। কিন্তু কিছু বলে না। গয়নার পিছুপিছু কল-পাড়ের দিকে হাঁটতে থাকে।

কলের পাশে এসে গয়না এক হাতে কুপি ধরে অন্য হাতে কল চাপে।

রবিউল বললো, 'আপনে সইরা খাড়ান ভাবি, আমি নিজেই চাপতে পারমু!'

গয়না হয়তো বিরক্ত হয় বা প্রিয় মানুষের জন্য কিছু করার বাসনায় বলে, 'এত কথা কইয়েন না তো!'
কলের হাতলে চাপ দিতেই গলগল করে পানি উঠে আসে।

রবিউল কিছু না বলে সেই পানিতে হাতমুখ ধোয়। চোখে-মুখে পানির ঝাঁপটা দিতেই পানির শীতল পরশের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় তার। ইচ্ছে হয় বেশ কিছুক্ষণ শরীর ভিজিয়ে গোসল করতে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা বিরূপ বলেই হয়তো তার ইচ্ছেটা তত প্রবল হয় না। পা ভিজিয়ে এক হাতে ডলেডলে পরিষ্কার করে। এরই মাঝে বার কয়েক গয়নার আঁচল খসে পড়লে তা সামলানোর ফাঁকে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হলেও রবিউল মুখ তোলে না।

পাশাপাশি দুটো মানুষ। অথচ কলের হাতলের ভৌতিক শব্দ আর পানির ছপছপ শব্দ ছাড়া ভিন্ন কোনো শব্দ শোনা যায় না। আশপাশের অনেক গ্রাম পল্লী বিদ্যুতায়ণের আওতায় চলে এলেও এ গ্রামে এখনও বিদ্যুৎ এসে পৌঁছোয়নি। যে কারণে সন্ধ্যার পরপরই ঝুঁপ করে রাত্রির গভীরতা এসে হামলে পড়ে পুরো গ্রামের উপর। ঘন ঝোঁপ-ঝাড়ের কাছাকাছি চোখে পড়ে জোনাকীদের উল্লাস। গয়নার হাতে কুপির আলো ধরা থাকলেও গয়নার মুখ দেখতে সংকোচ হয় রবিউলের। সে নিচু হয়ে আস্তে আস্তে পা রগড়ায়।

'পোলাপানগুলা কি বেশি কান্দাকাটি করতাছে?'
কলের হাতল চাপতে চাপতে গয়না হঠাৎ কথা বলে উঠলো।

রবিউল তেমন নিচু থেকেই বলে, 'হুঁ।'

'রান্দা-বাড়া করে কেডা? ময়না?'

'না।' নির্বিকার ভাবে মিথ্যা বলে রবিউল।

গতকাল সকালের দিকে ভাতের ফ্যান ঝড়াতে গিয়ে হাঁড়ি ফেলে দিয়েছে ময়না। ভাতের ফ্যান আর গরম ভাত লেগে তার হাত-পায়ে ফোস্কা পড়ে গেছে। সেই পোড়া ক্ষতে বাতেনের কাছ থেকে বার্ণল এনে লাগিয়ে দিয়েছে রবিউল। ময়নার হাত-পা পোড়ার কথা গয়নার কাছে উত্থাপন করে না সে। হয়তো সত্যি কথা না বলে ভুলই করলো। কিন্তু কেন যে কথাটা গোপন করলো, তার কোনো ধরনের ব্যাখ্যা তার জানা নেই। তবুও বলে, 'রান্দা-বাড়া সব হাতেম ভাইই করে!'

'মানিকরে কি খাওয়ায়? চাইলের গুড়ি করতে লইছিলাম...'

গয়না কথা শেষ না করেই কি মনে করে থেমে যায়।

মানিক ভাত খেতে পারে না তা নয়। সে ভাত খেতে চায় না। তরকারি বা ডাল মেখে ভাত মুখে দিয়ে দিলে সে হা করে থাকে। চিবোতে চায় না। হয়তো ঝালের ভয় তাকে ভাত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। হাতেম আলি পুরুষ হিসেবে কাঠ-খোট্টা বলেই হয়তো গয়নার মত বাবা না! সোনা না! বললেও মানিক উৎসাহ পায় না। শেষে হাতেম আলির ধমক খেয়েই মূলতঃ সে খাওয়া আরম্ভ¢ করেছিলো। কিন্তু সঙ্গেসঙ্গে কান্নাও জুড়ে দিয়েছিলো। রবিউল সেই দৃশ্যটাই দেখেছে। তাই সে গয়নাকে বলতে পারে, 'দেখছি ধমক-ধামক দিয়া ভাত খাওয়াইতে!'

এ কথা শুনে গয়নার বুক ফেটে যায়। মানিকের ভীত আর অসহায় মুখ কল্পনা করে তার হাত আপনা আপনিই স্থির হয়ে পড়ে। দু'চোখ ভেসে যায় পানিতে।

রবিউল বুঝতে পারে গয়নার মানসিক অবস্থা। তাই সে নিজেই কল চেপে হাত-পা ধোওয়া শেষ করে বলে, 'চলেন ভাবি!'

রুদ্ধকন্ঠে গয়না বললো, 'আপনের হইছে?'

'হ, হইছে! আপনে আগান!'

কাল দুপুর থেকেই গয়নার মন কেমন অস্থির অস্থির হয়ে আছে। ভেতরে ভেতরে ছটফট করে মরছে। মনে হয় সারা শরীরে কেউ মরিচ মাখিয়ে দিয়েছে।
গতবার বাবার মৃত্যু সংবাদ শুনে তড়িঘড়ি ছুটে এসেছিলো গয়না। কিন্তু এই বাড়িতে আসার পর বিকেলের দিক থেকেই তার সারা গায়ে আরম্ভ হয়েছিলো মরিচের জ্বলুনি। সেই সঙ্গে কিছুক্ষণ পরপরই বুক ফেটে আসছিলো কান্না। ইচ্ছে হচ্ছিলো আকাশ-বাতাস ফাটিয়ে চিৎকার করে মাটিতে গড়িয়ে কাঁদতে। কিন্তু সে ভেবেছিলো যে, বাবার মৃত্যুর কারণেই বুঝি তার এমন মনে হচ্ছে। অথচ পরদিন রবিউলই খবর নিয়ে এসেছিলো যে, তার ছোট মেয়ে কুসুম পানিতে ডুবে মারা গেছে।

মায়ের মন সন্তানের অমঙ্গলের কথা বিপদ-আপদের কথা আগে থেকেই বুঝতে পারে। যে দেহের জঠর থেকে রস শুষে নিয়ে একটি ভ্রƒণ রূপান্তরিত হয় মানব শিশুতে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তার খারাপ কিছু হলে জঠরধারী শরীরেই সর্বাগ্রে সংকেত আসে। অনেক সময় বিক্ষিপ্ত থাকার কারণে সেই বার্তা মনে পৌঁছুতে পারে না। তখন শরীরের বিভিন্ন স্নায়ূতে অনিয়মিত সংকেত সঞ্চালনের ফলেই মরিচের মত জ্বালা অনুভূত হয়। কিন্তু মাতৃমন বুঝতে পারে না সন্তানের বিপদের ধরন। গয়নার মনও হাতেম আলির দুর্ব্যবহারের কারণে আগে থেকে বিক্ষিপ্ত ছিলো বলে, সে কেবল অনুভবই করতে পারছিলো যে, একদা তার জঠর বাসিনী কেউ বিপদগ্রস্ত। কিন্তু সেটা কোন ধরনের বিপদ তা আগাম অনুমানের ক্ষমতা বিধাতা তাকে দেন নাই। এখন যদিও সে বুঝতে পারছে যে, তার কোনো একটি সন্তানের খারাপ কিছু ঘটে গেছে, কিন্তু কী ধরনের খারাপ সেটা তার জানা নেই। সবচেয়ে বড় ভরসা রবিউল। কারণ খারাপ কিছু হলে রবিউল নিশ্চয়ই তাকে বলতো। যেহেতু রবিউল এমন ধরনের কিছু বলেনি, তাহলে তারা ভালই আছে। তার অস্থিরতা হয়তো ভিন্ন কোনো কারণে। তবুও তার চোখ দিয়ে কেবল পানি গড়িয়ে পড়ে। মাঝেমাঝে চোখে আঁচল চেপে ধরে। ঘরে ফিরবার পথে বিনবিন করে কিছু বলে। হয়তো বিলাপই করে। রবিউল পেছন থেকে কিছু বুঝতে পারে না।


মন্তব্য

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

জুলিয়ান ভাইয়ের লেখায় মন্তব্য করার দরকার হয় না। পড়তে পড়তে কখন যে শেষ হয়ে যায় ।
বরাবরের মতো ভালো হয়েছে
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

আবু রেজা এর ছবি

দারুণ গল্প লিখেছেন তো!
খইয়া ও গয়না চরিত্র দুটিও বেশ।
সাধু! সাধু!

যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।